হ্যাকারের_লুকোচুরি
.
সিজন_৩ পর্ব – ১
.
.
রাফির কপাল কুঁচকে যায়। কি! নিউক্লিয়ার এক্টিভেশন কোড ও চুরি হয়েছে! রাফির মাথা ঘুরে যায়। মাফিয়া গার্ল তাহলে ঠিকই সন্দেহ করেছিলো! তাহলে মাফিয়া গার্ল যা বলেছিলো সব সত্যি!
রাফির চলার গতি মন্থর হয়ে যায়। মোবাইলের স্ক্রীনে তাকিয়ে থাকে একদৃষ্টিতে। পিকাচু একের পর এক এনক্রিপটেড মেসেজ ক্রাক করে রাফিকে সেন্ড করছে, এবং সবগুলোই ভয়াবহ। কিন্তু রাফি তো পিকাচু কে এমন কোন কমান্ড দেয় নি। তাহলে পিকাচু কেন এভাবে ইনফরমেশন এনালাইসিস করছে। ভাবতে ভাবতে ঘরের দরজার সামনে চলে আসে রাফি, দরজার ধার ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে তোহা। রাফি ফোন থেকে চোখ তুলে তোহার দিকে তাকায়, চোখমুখ শুকিয়ে গেছে, চোখদুটো টলটল করছে।
রাফি – কেমন আছেন?
তোহা – জানি না।
রাফি – (আপাদমস্তক দেখে) এ কি হাল বানিয়েছেন নিজের?
তোহা – যে হাল ই বানাই, খোঁজ রেখেছে কেউ! হুহ। একটা অভিমানী চাহনি দিয়ে ঘরের ভেতর চলে যায় তোহা। তোহার পেছন পেছন রাফির বাবা মা ও ঘরে ঢোকে। রাফি কিছুক্ষন নির্বাক দাড়িয়ে থেকে নিজের রুমে চলে যায়। রুমে ঢুকতেই তোহা তোয়ালে বাড়িয়ে দিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিতে বলে রাফিকে। অভিমানে গাল ফুলিয়ে থাকলেও রাফির দেখভাল ঠিকই করে তোহা।
তোহার হাত থেকে তোয়ালেটা নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো রাফি। বালতিভর্তি ঠান্ডা পানি একটু একটু করে মাথায় ঢালতে লাগলো আর এক ভয়াবহ যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে পৃথিবীর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আন্দাজ করতে লাগলো রাফি। অনেকগুলো পাজল একসাথে করে মেলাতে মেলাতে গোসল শেষ করে রাফি, তোয়ালেটা বিছানায় ছুড়ে মারতে গিয়ে দরজায় চোখ পড়ে রাফির, তোহা দাঁড়িয়ে আছে। গামছাটা তাই আর বিছানায় ছুড়ে ফেলা হলো না। তোহা রাগে বা অভিমানে গজ গজ করতে করতে রাফির কাছে এসে তোয়ালে টা হাত থেকে নিয়ে নেয়, রাফি বিছানায় গিয়ে বসে গা এলিয়ে দিতে যাবে বিছানায় তখন,
তোহা – খাবার বেড়েছি, খাবে। এসো।
রাফি – (অন্যমনষ্ক) খিদে পায় নি।
তোহা – এটা কোনো রিকুয়েষ্ট ছিলো না যে তোমার হাতে রিজেক্ট করার অপশন আছে। সোজা ডায়নিং টেবিলে যাও, এক্ষুনি।
তোহার কথা বলার ভংঙ্গি শুনে রাফি তোহার দিকে তাকিয়ে পড়লো, মেয়েটা রাগে ফুঁসছে নাকি! হঠাৎ অর্ডার দেয়া শুরু করলো যে।
রাফি – খেতে যদি ইচ্ছা না হয় তো কিভাবে খাবো।
তোহা – ওসব আমাকে বলে লাভ নেই। মা বলেছে তোমাকে যেন কিছুতেই না খাইয়ে বিছানার কাছে ঘেষতে না দেই।
রাফি – (অনিচ্ছায় উঠে যেতে যেতে) এতদিন পর ঘরে এলাম, একটু রেষ্ট না নিয়েই জোরাজুরি খাওয়ার জন্য।
রাফি দরজার কাছাকাছি যেতে যেতে টেবিলের দিকে নজর দিলো। টেবিলের উপর রাফির ল্যাপটপটা রাখা। রাফি কিছুটা অবাক হয়ে টেবিলের দিকে এগিয়ে গিয়ে তোহার দিকে তাকায়, ল্যাপটপটা হাতে তুলে একটা হাসি দেয় রাফি।
তোহা ও রাফিকে ল্যাপটপ এর জন্য হাঁসতে দেখে গম্ভীরতা ছেড়ে হালকা হলো।
তোহা – মা তোমার ল্যাপটপটা জায়নামাজে মুড়িয়ে নিজে বয়ে নিয়ে এসেছেন এতদূর পর্যন্ত।
রাফি ল্যাপটপটার দিকে ফিরে তাকায়। ল্যাপটপটা টেবিলে রেখে চলে যায় ডাইনিং টেবিলে, অনেকদিন হলো মায়ের হাতের রান্না খাওয়া হয় না।
খাওয়াদাওয়া শেষ করে রুমে ফিরে আসে রাফি। বিছানায় যেতে গিয়ে ফিরে তাকায় টেবিলের উপর ল্যাপটপটার দিকে। কি যেন ভেবে টেবিলের দিকে এগিয়ে যায় রাফি। চেয়ারটা টেনে নিয়ে বসে ল্যাপটপটা ওপেন করে রাফি। এক অভিনব কায়দায় ল্যাপটপের সিকিউরিটি দিয়ে রাখে রাফি, ল্যাপটপের লীড যদি নিদৃষ্ট সময়ের ভেতর নিদৃষ্ট এংগেলে খোলা না হয় তাহলে সঠিক পাসওয়ার্ড দিলেও ল্যাপটপ ওপেন হবে না। নিজের উদ্ভাবন তাই রাফি ছাড়া আর কেউ জানে না যে রাফির ল্যাপটপে এমন লক ইনস্টল করা আছে। ল্যাপটপ খোলার পর সিস্টেম মেসেজ শো করে যে কয়েকবার ল্যাপটপটি ওপেন করার চেষ্টা করা হয়েছিলো, পাসওয়ার্ড ঠিক ছিলো কিন্তু লীড সঠিক এংগেলে খোলা হয়েছিলো না বিধায় ল্যাপটপ আনলক হয় নি। রাফির সিকিউরিটি প্রোটোকল অনুযায়ী কম্পিউটারের ওয়েবক্যাম প্রতিবার আনলক ট্রায়ালে ইউজারের ছবি তুলে রাখার কথা, কিন্তু মাফিয়া গার্লের ভয়ে ক্যামেরার উপর পর্দা দিয়ে দেয়ায় ছবিগুলো সব কালো হয়ে আছে। রাফির অনুপস্থিতিতে কেউ রাফির ল্যাপটপে হাত দেয়ার কথা না, তাহলে!!!
তোহা – ( পেছন থেকে) বাহ, এই নাকি তার খেতে ইচ্ছা করছিলো না আর এখন খেয়ে দেয়ে বসে পড়েছেন তিনি তার ধ্যানে।
রাফি – (এক হাত চেয়ারের উপর দিয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে) আচ্ছা আমি যাওয়ার পর আমার ল্যাপটপে কে কে হাত দিয়েছিলো?
তোহা – (কপাল কুঁচকে) কেন? জেল জরিমানা করবে?
রাফি বুঝতে পারে তোহা কোন কারনে তেঁতে আছে। তাই চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় রাফি, তোহার দিকে এগিয়ে যায়। রাফিকে এগিয়ে আসতে দেখে বিছানায় বসে পড়ে তোহা। রাফি তোহার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে।
রাফি – কি হয়েছে, এত ক্ষেপে আছো কেন?
তোহা – (অন্যদিকে তাঁকিয়ে) …………।
রাফি – এতো রাগ আমার উপর। এইযে দেখো, আমি চলে এসেছি তো।
তোহার চোখ টলটল করতে থাকে।
তোহা – এভাবে কেউ উধাও হয়ে যায়! ট্রেনিং এ যাচ্ছো বলে বিমানে উঠলে তারপর থেকে প্রতিটা দিন আমার কাছে এক এক বছর মনে হয়েছে। একদিকে তোমার বাবা মা অন্য দিকে আমার বাবা মা। সবার কি হাল হয়েছে দেখেছো!!!
রাফি দেখলো তোহা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে সবটুকু বলে যাচ্ছে কিন্তু রাফির দিকে তাকাচ্ছে না। রাফি গালটা ধরে তোহার মুখটা ঘুরিয়ে সামনাসামনি করে।
রাফি – কিছু ভুল ছিলো। কিছু বিশ্বাস ছিল। আর কিছু ভালোবাসা ছিলো। তাই তো এখন আমি তোমার সামনে দাঁড়াতে পেরেছি। এইযে দেখো আমি চলে এসেছি, আর কোন সমস্যা হবে না।
বলে তোহার মাথাটা বুকে টেনে নিলো রাফি। বুকের মাঝে জায়গা পেয়ে তোহা আরো কিছুক্ষণ চোখের জল নাকের জল ঝড়িয়ে শান্ত হয়।
রাফি – এখন কি বলা যায় মহারানী ? কে ওপেন করতে চেয়েছিলো ল্যাপটপটা?
তোহা – (বুক থেকে মাথা বের করে নাক টানতে টানতে) আমি কয়েকবার ওপেন করতে চেয়েছিলাম। তোমার মা বাবা আমার বাবা মায়ের সাথে কথা বলতে চেয়েছিলেন ভিডিও কলে। ল্যাপটপে সুবিধা হবে জেনে ট্রাই করেছিলাম। বাবা পাসওয়ার্ড বলে দিয়েছিলেন, হয়তো তার পর তুমি চেন্জ করে দিয়েছো। তাই আর খুলতে পারি নি। পরে ফোন দিয়েই কাজ চালিয়েছি।
রাফি – (কিছুক্ষন চুপ করে) আচ্ছা ঠিক আছে। তুমি রেষ্ট নাও। আমি একটু আপডেট নেই।
রাফির কথা শুনে তোহা শুয়ে পড়ে বিছানায়। রাফি কিছুক্ষণ তোহার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে উঠে পড়ে। টেবিল থেকে ল্যাপটপটা তুলে নিয়ে পারিবারিক লাইব্রেরীর দিকে চলে যায় রাফি। রাফির দাদা ইংরেজ আমলের লোক ছিলেন। জাঁদরেল আর রাশভারী টাইপ। তার নেশা ছিলো বই পড়া, ব্যাস! নিজের পড়া বইগুলো দিয়ে পুরোদন্তু একটা পাদিবারিক লাইব্রেরী করে ফেলেন। রাফি এখন যে কাজগুলো করববে তা তোহার সামনে না করাই ভালো কারন তোহাও একজন কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাফি চায় না যে তোহা কোনভাবে বুঝতে পারুক রাফি একটা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সাথে কথা বলছে। পারিববারিক লাইব্রেরীতে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয় রাফি। চারিদিকে বুকসেল্ফ আর জানালার মাঝখানে রাখা টেবিলে ল্যাপটপটি রেখে বসে পড়ে রাফি। ল্যাপটপের স্ট্যাটাস চেক করে দেখতে থাকে, কোন সমস্যা নেই বুঝে ল্যাপটপটার সাথে নিজের ফোনকে কানেক্ট করে রাফি। ফোনের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে পিকাচুর সাথে কানেক্ট করে রাফি।
পিকাচু – হাই, রাফিউল। what next?
রাফি – পিকাচু, নিউক্লিয়ার এক্টিভেশন কোড সংক্রান্ত কোন কমান্ড আমি তোমাকে দেই নি। তাহলে তুমি কেন এই রিলেটেড ইনফো সংগ্রহ করেছো?
পিকাচু – পিকাচু তার knowledge থেকে বলছে, একটি নিউক্লিয়ার ওয়্যারহেড এক্টিভেট করতে হলে বেশ কিছু স্টেপস রয়েছে যার ভেতর অন্যতম হলো নিউক্লিয়ার এক্টিভেশন কোড। রাশিয়ান নিউক্লিয়ার সাবমেরিন রিলেটেড সকল ডাটাতে শুধুমাত্র এই একটা জিনিস ই বাকি ছিলো যা সাবমেরিনে থাকা নিউক্লিয়ার ওয়্যারহেডগুলোকে এক্টিভেট করতে পারে।
রাফি – আর ডিক্রিপটেড মেসেজগুলো?
পিকাচু – শেষবার যখন মিলিটারি নেটওয়ার্কে একসেস করা হয়েছিলো তখন প্রথমবারের জন্য পিকাচু ওই এনক্রিপটেড মেসেজগুলো পায় যা ডিক্রিপশন কোড পিকাচুর knowledge এ ছিলো না। কিন্তু প্রতি মিনিটে মিলিটারি নেটওয়ার্ক থেকে পাঠানো এনক্রিপটেড মেসেজ এবং সেই অনুযাই মিলিটারি মুভমেন্ট ও এক্টিভিটিস ফলোআপ করে পিকাচু এনক্রিপশন ক্রাক করতে সক্ষম হয়েছে।
পিকাচু নিজেকে ইভল্ভ করছে দেখে রাফি যার পর নাই অবাক হলো। মিলিটারি নেটওয়ার্কে যে এনক্রিপশন ব্যবহার করা হয় তা সাধারণত এনালগ হয়ে থাকে এবং নিদৃষ্ট এনক্রিপটেড মেসেজের অর্থ শুধুমাত্র তারাই বুঝতে পারবে যাদের উদ্দেশ্যে মেসেজটি পাঠানো হয়েছে। এমন এনালগ এনক্রিপশনের অর্থ কয়েক হাজার রকমের হতে পারে অথচো পিকাচু অবলীলায় লুকোচুরি ধরে ফেললো।
রাফি – that’s brilliant, Pikachu. কিন্তু নিউক্লিয়ার সাবমেরিন খোয়া গিয়েছে এমন রিপোর্ট তো কোথাও আসে নি। স্যাটেলাইটের কথাও বলা হয় নি কোথাও। এতকিছু ঘটে গেলো অথচো কোন রিপোর্টিং হবে না, এটা কেমন কথা?
পিকাচু – Searching new data……. accessing newsfeeds…….
রাফি অপেক্ষা করতে থাকে পিকাচুর সার্চ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত।
পিকাচু – search complete ……. No public records found.
রাফি এমনটাই আশা করছিলো, আগেরবারও যখন পিকাচু এইসব নিয়ে সার্চ করেছিলো তখনও কোন রেকর্ড পাওয়া যায় নি। তবে এবার মিলিটারি নেটওয়ার্ক থেকে বেশ কিছু ইনফরমেশন পাওয়া গিয়েছে। রাফি পিকাচুর ডিক্রিপ্ট ডেটা নিয়ে গবেষণা করতে বসে যায়। প্রতিটা মেসেজ শুধুমাত্র দুইটা স্টেশনের ভেতর আদান প্রদান হয়েছে। অন্য কোন স্টেশনে এই সাবমেরিন অথবা স্যাটেলাইট নিয়ে কোন ধরনের আলোচনা হচ্ছে না। ব্যপারটা বেশ ঘোলাটে লাগলো রাফির কাছে।
রাফি আরো ডিপলী এনালাইসিস শুরু করলো। এত বড় ঘটনার বর্ননা শুধুমাত্র দুইটি স্টেশনের ভেতর আদানপ্রদান কেন হবে! আর যে কোন মিলিটারি চেইন অব কমান্ড অবশ্যই ফলো করার কথা। সেক্ষেত্রে অবশ্যই দুইটি স্টেশনে বেশী চ্যানেলে এই এনক্রিপটেড মেসেজ ট্রান্সমিট করার কথা।
রাফি – পিকাচু, নিউক্লিয়ার সাবমেরিন যেদিন প্রশান্ত মহাসাগরে যাত্রা করেছিলো সেইদিনকার ওই এলকার স্যাটেলাইট ফুটেজ বা ওই রিলেটেড যে কোন ভিডিও ফুটেজ থাকলে খুঁজে বের করো।
পিকাচু – accessing satellite control…….
Searching for related images and videos …..
Feeding satellite images ……..
পিকাচু ল্যাপটপের স্ক্রীনে সপ্তাহ তিন আগের স্যাটেলাইট ইমেজ দেখায় যেখানে নেভাল কমান্ডের সিকিউর বেজ এর পল্টুন এ একটি সাবমেরিন দাড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ছবিগুলোতে আরো দেখা যায় নেভাল বেজের আনুষ্ঠানিকতা শেষে কয়েকজন অফিসার সাবমেরিনটিতে প্রবেশ করেন এবং পন্টুন ছেড়ে সমুদ্রের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে এবং এক সময় ডুব দেয়।
ছবিগুলো থেকে বিশেষ কোন ক্লু না পাওয়া গেলো না, কারন সাবমেরিন সাগরে ডুব দেয়ার পর কোন দিকে গিয়েছে তা স্যাটেলাইট ইমেজিং এ ধরা একেবারে অসম্ভব বলা চলে। উত্তর মেরুর শীতল শ্রোতের কারনে থার্মাল ইমেজ ও কাজ করবে না এখানে। সাবমেরিনকে ট্রাক করতে হলে সাবমেরিনের ট্রাকিং ডিভাইস কোড ক্রাক করতে হবে যার একসেস শুধুমাত্র স্যাটেলাইট স্টেশন ও স্যাটেলাইটটিতই আছে। স্যাটেলাইট স্টেশনকে ভাইরাস দিয়ে ডিজেবল করে দেয়ার ফলে একসেসটি চলে যাওয়ার কথা সন্ত্রাসী হ্যাকারদের হাতে।
কিন্তু এখানে ব্যপারটা তো আরো ঘোলাটে হয়ে যায়। সাবমেরিনটি সাগরে ডুব দেয়ার পর সাবমেরিনের ভেতরে কারো ঢোকা সম্ভব না। সাবমার্জ হবার পর এমন কি ঘটলো যাতে সকল কমিউনিকেশন বন্ধ হয়ে গেলো। হতে পারে ভেতর থেকেই কেউ এই কাজ করেছে!!!!
রাফি – পিকাচু, সাবমেরিনটি কাকে কাকে নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলো তার লিষ্ট বের করো।
পিকাচু – Accessing Military Database………
Searching primary data………
NO DATA FOUND…..
রাফি – মানে কি? মিলিটারি ডাটাবেসে কোন রিপোর্ট নেই!.
পিকাচু – সকল ডেটা অফ দ্যা গ্রীড করে ফেলা হয়েছে। কোন ডেটা পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি সাবমেরিনের অস্তিত্ব ও খাতা কলম থেকে মুছে ফেলা হয়েছে।
রাফি – তাহলে এই ছবি কোথা থেকে কালেক্ট করলে?
পিকাচু – এগুলো বৃটিশ ইন্টেলিজেন্স নিয়ন্ত্রিত একটি সার্ভেইল্যান্স স্যাটেলাইট থেকে সংগ্রহ করা। স্যাটেলাইটের রেকর্ড আনুযায়ী রিপোর্টেড সাবমেরিন চুরি হবার কিছুদিন আগ থেকে বৃটিশ ইন্টেলিজেন্স তাদের স্যাটেলাইটের সাহায্যে ওই নেভাল বেজের উপর নজর রাখছিলো।
রাফি – ব্রিটিশ ইন্টেলিজেন্স হঠাৎ সেই নেভাল বেসে কেন নজরদারি বাড়ালো যেই বেজ থেকে সাবমেরিন চুরি হয়েছে? তাহলে কি বৃটিশ ইন্টেলিজেন্স কিছু আঁচ করতে পেরেছিলো!
পিকাচু – সেটা ক্লিয়ার নয় তবে সাবমেরিন সাবমার্জ হবার পর বৃটিশ ইন্টেলিজেন্সের স্যাটেলাইটটি নেভাল বেসের উপর সার্ভেইল্যান্স বন্ধ করে দেয়।
রাফির মনে খটকা লাগে। রাশিয়ান বেসের উপর বৃটিশ ইন্টেলিজেন্স নজরদারি শুরু করলো কেন, তাও আবার সেই বেজ যেখান থেকে সাবমেরিনটি যাত্রা শুরু করেছিলো!!!
রাফি – পিকাচু, বৃটিশ ইন্টেলিজেন্স এর কাছে কি তাহলে সাবমেরিন চুরির ব্যপারে আগ থেকেই কোন ইনফরমেশ ছিল!
পিকাচু – Analyzing …….
বেশ কিছুক্ষণ পর পিকাচু রিপোর্ট জানায়,
NO RESULTS FOUND.
রাফি – এটা কেমন কথা! স্যাটেলাইটে নেভাল বেজের ছবি রয়েছে অথচো অন্য কোথাও এর মেনশন নেই!!!
পিকাচু – স্যাটেলাইট ইমেজগুলো নেয়া হয়েছে ব্যাকআপ মেমরী সার্ভার থেকে। প্রাইমারি মেমরী থেকে এই ছবিগুলো সরিয়ে দেয়া হয়েছে অনেক আগেই। ব্যাকআপ মেমরী থেকে ডাটা রিমুভ হতে সময় লাগবে। তবে আনঅথরাইজড লগইন একসেস দেখা যাচ্ছে।
রাফি স্যাটেলাইট একসেস লগ চেক করতে শুরু করলো। আনঅথোরাইজড লগইন মানে হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা। বৃটিশ ইন্টেলিজেন্স এর স্যাটেলাইট হ্যাক!! কারা এরা! ব্রিটিশ রাশিয়ান কাউকেইই ছাড়ছে না! রাফি চেক করলো সাবমেরিন ডুব দেয়ার পর ব্রিটিশ ইন্টেলিজেন্স স্যাটেলাইটটির কন্ট্রোল আবার নিয়ে নেয়। বলা যায় সাবমেরিন সাবমার্জ হবার পর যারা আনঅথরাইজড ভাবে স্যাটেলাইটটি ব্যবহার করছিলো তারা ছেড়ে দিয়েছিলো স্যাটেলাইটের কন্ট্রোল। তারাই মুছে দেয় স্যাটেলাইটে থাকা প্রাইমারি মেমরী।
রাফি ল্যাপটপ থেকে হাত তুলে নেয়। চেয়ারে হেলান দিয়ে চুলের ভেতর হাত গুঁজে দিয়ে ঘরের সিলিং এর দিকে তাঁকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ।
রাফি – কোন ক্লু ই ক্লিয়ার না পিকাচু। খুবই সতর্কতার সাথে প্রতিটি কাজ সমাধান করেছে হ্যাকারগুলো।
রাফির ভাবনায় বাধ সাধলো মাফিয়া গার্ল। রাফি ভাবতে থাকলো মাফিয়া গার্ল এতো ইনফরমেশন কোথায় পেলো? কোথাও তো এত ইনফরমেশন নেই! প্রতিটা ইনফরমেশন লীড বের করতে রাফি এবং পিকাচুর যথেষ্ট নাকানিচুবানি খেতে হচ্ছে। তাহলে মাফিয়া গার্ল কিভাবে এত সব ইনফরমেশন পেয়ে গেলো!!
.
.
ব্যস্ততা র জন্য এখন থেকে ৪৮ ঘন্টা অন্তর গল্পের পর্ব পোষ্ট করা হবে। গল্পের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
আর হ্যাঁ, গঠনমূলক মন্তব্য করবেন আশা করি।