হৃদয়_কোঠায়_চাঁদের_পূর্ণিমা পর্ব-১৮+১৯

0
751

#হৃদয়_কোঠায়_চাঁদের_পূর্ণিমা|১৮|
#শার্লিন_হাসান

নিবরাস হুট করে আনায়াকে কোলে তুলে নিয়ে হাঁটতে থাকে। আনায়া তার গলা জড়িয়ে ধরে বলে,

-অসভ্য লোক নিচে নামা তো।

-বউ আজকে আর ছাড়ছি না কিন্তু। একবারে বাবুর পাপা হওয়ার মতো অসভ্যতামী করেই ছাড়বো।

মেইন ডোরের সামনে আসতে আনায়া বলে,

-আমার গিফ্ট গুলো চোর নিয়ে যাবে।

-মনেই ছিলো না। আচ্ছা চলো গিফ্টগুলো নিয়ে আসি।

-আমাকে নিচে নামান।

-আরে তুমি যা চিকন আমি এরকম কোলে নিয়ে পুরোবাড়ী দশবার ঘুরলেও আমার কিছু হবে না।

নিবরাস আনায়াকে নিয়েই টেবিলের কাছে আসে। ফুল,গিফ্টগুলো আনায়া হাতে নিয়ে কেক আর ড্রিং দেখে খেতে মন চায় তার। নিবরাস তাকে কোল থেকে নামাতে আনায়া চেয়ারে বসে পড়ে। কেক খেয়ে কোল্ড ড্রিং এর বোতল নিয়েই বসে পড়ে আনায়া। নিবরাস তার দিকে তাকিয়ে বলে,

-এতো পেটুক তুমি?

-আরে আমার প্রিয় কেক আপনি জানেন?

-আচ্ছা খাও ভালো করে বাবুর মাম্মাম হবে না।

আনায়া মাঝপথে খাওয়া অফ করে দেয়। নিবরাস চোখ দিয়ে ইশারা করতে কেক খাওয়া আরম্ভ করে। আনায়া খাচ্ছে নিবরাস বসে,বসে তার খাওয়া দেখছে। তাঁদের খাওয়াদাওয়া শেষ হতে নিবরাস রেহিতকে মেসেজ দিয়ে বলে দেয় এদিকটা সামলে নিতে। ফোন পকেটে ঢুকিয়ে আনায়াকে পুনরায় কোলে নিয়েই বাড়ীর ভেতরে প্রবেশ করে।

করিডোর পেড়িয়ে যেতে তারিশা পেছন দিয়ে আসে। আনায়া নিবরাসকে দেখে আবারো রুমে চলে যায়।

রুমে এসে দরজা লক করে দেয় নিবরাস। আনায়া ফ্রেশ হয়ে শাড়ী চেন্জ করে নেয়। নিবরাস ও চেন্জ করে নেয়। অতঃপর দু’জন শুয়ে পড়ে। আনায়া ভাবছে আজকের মতো সে বেঁচে গেলো। কিন্তু নিবরাস তো নিবরাসই! আনায়াকে নিজের দিকে টেনে নিয়ে আসে। কপালে অধর ঠেকিয়ে বলে,

-চলো বউ বাবা-মা হওয়ার কাজে নেমে পড়ি।

-আজকে আমি বেশী খেয়ে ফেলেছি। রিলেক্স করি!

-ডোন্ট এক্সকিউজ সোনা।

আনায়া আর কথা বাড়ায়নি। নিবরাস বুঝে চুপ থাকা সম্মতির লক্ষণ! সেও সময় ব্যায় করে না। আনায়ার তনুর আংশুক আবরণ ছাড়াতে উদ্বুদ্ধ হয়ে পড়ে। নিজের প্রেয়সীকে সবটা উজাড় করে ভালোবাসা। নিবরাসের ভালোবাসার পরশ নিশ্চুপে নিজের গায়ে মাখে আনায়া। প্রণয়ের ঢেউ থামাতে ব্যস্ত দু’টো তনু।

সকাল,সকাল শাওয়ার নিয়ে রুম গুছাচ্ছে আনায়া। নিবরাস শাওয়ার নিয়ে রুমে প্রবেশ করে। ড্রয়ার থেকে ঔষধ বের করে আনায়ার হাতে দেয় নিবরাস।

-খেয়ে নিও মনে করে। স্যরি হ্যাঁ রাতে কষ্ট দিতে চাইনি।

আনায়া মাথা নাড়িয়ে শাড়ী ভাজ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। রুমটা গুছিয়ে নিজের জমা ফ্লাওয়ার গুলো নিয়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে নাড়াচাড়া করছে। নিবরাসের দেওয়া গিফ্টগুলো খুলে দেখে। হাতে একটা রিং পড়ে আর চেইনটা রাখে পড়ার জন্য। বাকীগুলো ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারে রেখে দেয়। নিবরাস পান্জাবি পড়ে আয়নার সামনে এসে নিজের চুল ঠিক করছে। আনায়া তখন চেইন হাতে নেয় পড়ার জন্য। নিবরাস তাকে থামিয়ে দেয়। নিজ হাতে আনায়ার গলায় চেইন পড়িয়ে দেয়।

আয়নায় দু’জন দু’জনকে দেখে। তখন নিবরাস বলে,

-তুমি আগের থেকে বেশী সুন্দর হয়ে গেছো।

-আগে আমি অসুন্দর ছিলাম নাকী?

-না আমার ভালোবাসা পেয়ে তোমার রুপ খুলে গেলো দেখছি।

-এহহ! সরুন তো! সবসময় ঢং করে নিজের থোতমা নিয়ে।

-তো করবোনা? নাহলে বউ আমায় গাধা,আনস্মার্ট ভেবে পাত্তা দিবে না।

-আপনার এতো ঢং কোথা থেকে আসে জানি না। সরুন তো আমার ভালো লাগছে না।

-বেশী খারাপ লাগছে?

-তো কী? যান আপনি পাষাণ।

-স্যরি!

আনায়া উঠে দাঁড়ায়। সোজা খাটের উপর গিয়ে শুয়ে পড়ে। নিবরাস হাত ঘড়ি পড়তে,পড়তে বলে,

-আমি নাস্তা নিয়ে আসছি। ঔষধ খেয়ে নিবে।

নিবরাস বেড়িয়ে পড়ে। আনায়া নিজের পায়ের দিকে তাকিয়ে আছে।
কিছুক্ষণ পর নিবরাস ট্রে নিয়ে ভেতরে আসে। আনায়ার জন্য ব্রেড,জেলি, কফি এনেছে। খাটের পাশে ছোট্ট টেবিলটায় ট্রে রেখে নিবরাস বসে পড়ে। আনায়াকে ব্রেডে জেলি লাগিয়ে দেয়। নাস্তা শেষ হতে ঔষধ খাইয়ে নিবরাস উঠে দাঁড়ায়।

-আজকে রুমেই থাকো বের হতে হবে না।

-আপনি এখন চলে যাবেন?

-হ্যাঁ কিছু কাজ আছে। তবে তাড়াতাড়ি ফিরবো।

-আচ্ছা সাবধানে যাবেন আর নাস্তাটা করে যাবেন।

-আচ্ছা।

নিবরাস দরজার কাছে আসতে আনায়া ডাক দেয়। নিবরাস ফিরে তাকায়। আনায়া তাকে হাত দিয়ে ইশারা করতে নিবরাস আনায়ার সামনে বসে।

-আমার কপালে চুমু না দিয়ে চলে যাচ্ছেন? রুলস দেইনি মনে হয়? প্রতিদিন বাইরে বের হওয়ার সময় আমার কপালে চুমু খেয়ে যেতে হবে।

-তোমার মুখ থেকে এটা শোনার অপেক্ষায় ছিলাম বউ।

নিবরাসের কথায় আনায়া ভ্যাবাছ্যাকা খেয়ে যায়। নিবরাস হেঁসে বলে,

-ঠোঁট, কপাল দুটোতে আমি চুমু খেতে চাই। একটার পারমিশন পেয়েছি আরেকটা পারমিশন যদি দিতে খুব উপকৃত হতাম।

-যান বদলোক আপনার চুমু খেতে হবে না। বাঙালি মানুষ বসতে দিলে শুতেও চায়। অস*ভ্য!

-অসভ্যতামী একটু করাই যায় বউ।

নিবরাস জোর করে আনায়ার ঠোঁটে চুমু খায়। যাওয়ার সময় কপালে চুমু খেয়ে বেড়িয়ে যায়। আনায়া রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করে নিবরাসের দিকে। সে পড়েছে মহাবিপদে। মনে,মনে ভাবছে,
-জামাই এতোটা রোমান্টিক না হলেও পারতো। ধুর! আমি ভেবেছিলাম নেতা মানুষ সারাদিন জনগনের চিন্তায় বউ আছে যে সেটাই ভুলে যাবে এখন দেখি ষোলো কলা পূর্ণ করছে।

******

তাসরিফ খান,তিয়াশ খান সহ সীতারা আহম্মেদ তারা নাস্তা করতে বসেছে। জায়ানও আছে তাঁদের সাথে। নাজিয়া চুপচাপ নিজের কফিতে চুমুক দিচ্ছে। তখন বন্যা বলে,

-বড় স্যার ম্যাডাম আমি আর আপনাদের বাড়ীতে চাকরীটা করবো না।

বন্যার এহম কথায় জায়ানের মুখশ্রী মূহুর্তে চেন্জ হয়ে যায়। নাজিয়া তাকায় জায়ানের দিকে। তখন তাসরিফ খান বলেন,

-হঠাত করে বন্ধ কেন? আর তোমার মায়ের তো ঔষধ লাগে প্রতিমাসে আবার তোমাদের চলতেও হিমশিম। চাকরী ছেড়ে দিলে কীভাবে কী হবে?

-নতুন আরেকটা চাকরী পেয়েছি। সেটা আমার বাড়ীর পাশেই। আপনাদের বাড়ী তো দূরে মাকে দেখতে যাওয়ার জন্য ছুটি ফেলেই যেতে হয়। আর সেখানে আমি কাজ শেষ করে রাতেই নিজের বাসায় চলে যেতে পারবো।

তখন জায়ান বলে,
-এই সমস্যার কথা আগে বললেই পারতা। প্রয়োজনে রাতে আমি তোমায় ড্রপ করে দিয়ে আসতাম তোমার বাসায়।

-তার মনে হয় আর প্রয়োজন নেই জায়ান ভাইয়া। আগে ভেবে বলতে বন্যা আন্টির প্রয়োজন অপ্রোয়জন। যেহেতু তাকে নিয়ে একটু বেশী ইন্টারেস্টেড তুমি।

নাজিয়া বলে। তখন জায়ান বলে,

-আয়াত পাখি ব্যপারটা এরকম না।

-আমি শুনতে চাইনি ব্যপারটা কেমন।

জায়ান চুপসে যায়। তখন সীতারা আহম্মেদ বলে,

-বেশী কষ্ট হয় নাকী বন্যা?

তখন তিয়াশ খান বলেন,
-কিসের কষ্ট সীতারা? ও তো বাড়ীর একজন সদস্য!

-হুম সেজন্যই তো বললাম। কাজ করে বেতন দেই বাড়ীতে থাকে সেই হিসাবে কিছু চাওয়া-পাওয়া তো পূরণ করতে হয়।

সীতারা আহম্মেদের কথার আগামাথা তারা দুই ভাই বুঝতে পারেনা। তবে নাজিয়া ঠিকই বুঝে। জায়ান সীতারা আহম্মেদের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে। নাজিয়ার মন চাচ্ছে এখনি তার মায়ের আর জায়ানের পর্দা ফাঁস করতে। কিন্তু তার মায়ের বিরুদ্ধে তেমন প্রমাণ জোগাড় হয়নি। বিশেষ করে তার অবৈধ বিজন্যাস যেটা জায়ান সহ করে সেটার প্রমাণ জায়ানেরটা মিললেও তার মায়েরটা মিলাতে পারেনি। এই মহিলা দূর্তবাজ। সবচেয়ে বেশী খারাপ লাগছে নাজিয়ার তার মা একজন নারী হয়ে কী করে আরেকজন নারীর ক্ষতি জেনেও কিছু বলেনি।

তখন বন্যা বলে,
-আজকে রান্না করে দিয়ে আমি চলে যাবো। আপনারা নতুন কাজের লোক খুঁজে নিবেন।

তিয়াশ খান গম্ভীর কণ্ঠে বলে,
-ঠিক আছে।

সবাই যে যার মতো নাস্তা করে নিজেদের গন্তব্যের জন্য নেমে পড়ে। জায়ান,সীতারা আহমেদের এক অফিস তারা একই কারে করে যাবেন। তাশরিফ খান এবং তিয়াশ খান আরেক অফিস তারা এক কারে করে যায়। নাজিয়াকে ড্রপ করে দেয় বাড়ীর গাড়ী দিয়ে ড্রাইভার। সুহাসিনী একটা কিন্ডারগার্টেন সামলায় সেও তার কাজে চলে যায়। খান ভিলা ফাঁকা। বন্যা রান্না করে চলে যাবে গেটে তালা লাগিয়ে। চাবি দারোয়ানকে দিয়ে যাবে।

জায়ান গাড়ী ড্রাইভ করছে সীতারা আহমেদ পেছনে বসা। ফোন টা ব্যাগে ঢুকিয়ে সীতারা আহম্মেদ বলেন,
-মনে হয়না বন্যা তোমার জন্য চলে যাচ্ছে।

-হবে হয়ত! বাট কখনো কাউকে কিছু বললে ওকে মে*রে দেবো।

-উফফ এসব মারা মারি বাদ দাও! ওই তাহিয়ার কাছে আমার কিছু প্রমাণ ছিলো যা ফাঁস করলে আমি কেস খেতাম। জানি ভাইয়ের মেয়ে হলে কী হবে! একসময় না একসময় আমায় ফাঁসাত সেজন্য রাস্তা থেকে সরিয়ে দিলাম।

-শুভ কাজটা প্লানিং করে করেছি আমি।

-মে*রেছি কিন্তু আমি।

-মাঝখানে জনগনের নেতা তোমার একমাত্র মেয়ের জামাই ফেঁসে গেছে।

-ধুর! ওরা জাহান্নামে যাক আমার কী?

-কাম্মা আনায়াকে নিয়ে ভাবো না? মায়া লাগে না?

-তোমায় বলবো নাকী মায়া লাগে নাকী লাগে না।

-আরে বলো না?

-ও আমার সন্তান! তুমি জানো সন্তানদের প্রতি মায়ের ভালোবাসা অকৃত্রিম। সো…”

-এতো ভালোবাসো তো ছেড়ে আসলে কেন? ওইখানে কিন্তু জীবনটা গুছিয়ে নিতে পারতে।

-সেটা আমি জানি। আমার লাভ ছিলো তিয়াশ খান ওর জন্য আমি সব করতে পারি। ইউ নো হোয়াট এই সীতারা না আসলে খানদের এতো উন্নতি হতো না। লাইফে টাকা ইনকাম করা প্রচুর দরকার। এতো,এতো টাকা দরকার যাতে বুড়ো বয়সে আরাম আয়েশ করে কাটিয়ে দিতে পারি। টাকা যাতে শেষ না হয়! আমার ছেলের ভবিষ্যত ও যাতে চলে যায়।

-বুড়ো বয়স যদি জেলে বসে কাটাতে হয়?

-আমার টাকা আর লোকের অভাব নেই প্রয়োজনে পুলিশদের মা*র্ডার করে দিবে। আর সীতারাকে জব্দ করা ওতো সহজ না! শকূনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলতে পারি আমি।

-নিবরাস কিন্তু ঠান্ডা মাথার প্লেয়ার। ওর সাথে জীবনে কেউ টেক্কা দিতে পারে না।

-ওর ও গোপন টিম আছে। ইভেন আমাদেরও আছে। ও ইট ছুঁড়লে আমিও পাটকেল মারতে তৈরী।

-মেইন প্লেয়ার সীতারা আহম্মেদ আর সবাই ভাবে শামিম সরদার।

-ওরা ও আমাদের দলের লোক।

-সেদিন মনে হয় নেতার জানপ্রাণকে বাঁচিয়ে দেওয়া উচিত হয়নি।

-ও আমার মেয়ে ভুলে গেলে? ওর গায়ে একটা আঁচড় লাগলে তোমায় খু*ন করতে একবার ও ভাবতাম না আমি।

-স্যরি আমি কিছু করবো না ওর।

-হুম! আমার কথার থেকে এক চুল পরিমাণ নড়চড় হলে তোমায় জেলে ঢুকিয়ে যাবত জীবন কারাদন্ড দিতে আমার দুই সেকন্ড সময় ও লাগবে না।

-তুমিও ফাঁসবা কিন্তু!

-হাহা! আমি আমার বিজন্যাস নিয়ে কোন ইনফরমেশন বা কেস দিবো না। দিবো তো কাজের মেয়েকে রেপ করার কেস। তুমি জানো সব ভিডিও প্রমাণ আমার কাছেও আছে।

-তুমি আমার দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছো?

-তাছাড়া তোমায় জব্দ করার জন্যই আমি কিছু বলিনি। নাহলে আমায় তোমাদের এসিস্ট্যান্ট হতে হতো। মেইম পয়েন্টে আসি! মেইন পয়েন্ট এখন আমি তোমাদের বস আর তোমরা আমার কথা মতো সব করবা।

-সে তো করছি এখনো।

-ভাবতে পারিনি আমি টাকা, শো অফ,প্রাচুর্য আমায় এতোটা অন্ধ করে দিবে খারাপ পথে চলেই গেলাম। অবৈধ জিনিস পাচার করা দেশে আনা। কোটি,কোটি টাকা ইনকাম করা। সাথে দু একটা টিম রাখা। দু’একটা খু*ন ও নিজের হাতে করা।

-নিবরাস মনে হয় না এতো সহজে আমায় ছেড়ে দিবে।

-আমাদের কোন তথ্যই বাইরে পাচার হয়না। বাড়ীরটা বাড়ীতে,ফোনেরটা ফোনে আর অফিসেরটা অফিসেই থাকে।

#চলবে

#হৃদয়_কোঠায়_চাঁদের_পূর্ণিমা|১৯|
#শার্লিন_হাসান

আনায়া শুয়ে,শুয়ে ফোন স্ক্রোল করছে। আজকে আর সে নিচে যায়নি। তখন তারিশা আসে রুমে। আনায়ার এতো সুখ সহ্য হচ্ছে না তার। তারিশাকে দেখে আনায়া বলে,

-তারিশা আপু! বসো! নিশ্চয়ই আমার বানানো রুটিগুলোকে মিস করছো।

-তোমার বানানো রুটি আমার গলা দিয়ে নামে না।
বসতে,বসতে বললো তারিশা। আনায়া ফোন রেখে তারিশার দিকে তাকায়। তখন তারিশা বলে,

-খুব সুখে আছো মনে হয়?

-না গো সুখে নেই। তোমার মতো ছ্যাচড়া যেভাবে আমার জামাইয়ের পেছনে পরেছে চিন্তায় থাকতে হয়।

-আমি তোমার জামাইয়ের পেছনে পড়িনি তোমার জামাই আমার পেছনে পড়েছে।

-এতোটা খারাপ সময় আসেনি আমার জামাইয়ের যে তোমার পেছনে পড়বে।

-হাহা! দেখা যাবে।

আনায়া কথা বাড়ায়না। তারিশা উঠে দাঁড়ায় এসেছিলো আনায়াকে কয়টা কথা শোনাবে এখন আনায়া তাকে শুনিয়ে দিলো। রাগ-ক্ষোভে রুম থেকে বেড়িয়ে যায় তারিশা।

তার কিছুক্ষণ পর নিবরাস চলে আসে। রুমে প্রবেশ করে কলে কথা বলতে,বলতে।
আনায়া উঠে নিবরাসের কাছাকাছি গিয়ে দাঁড়ায়। নিবরাস কলে কথা বলায় ব্যস্ত। আনায়া হাত বাড়িয়ে দেয় নিবরাসের দিকে। নিবরাস তাকে টেনে একবাহু দিয়ে জড়িয়ে ধরে। আনায়া পুনরায় নিজের হাত নিবরাসের সামনে ধরতে নিবরাস পকেট থেকে ছোট্ট একটা বক্স বের করে আনায়ার সামনে ধরে।

আনায়া বক্সটা খুলে দেখে কাপল রিং। নিবরাসের কল কাটার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রয় আনায়া। কল কাটতে নিবরাস ফোনের দিকে তাকিয়ে বলে,

-গিফ্ট পেয়েছি আমি আনিনি।

-কে এতো বড়লোক শুভাকাঙ্ক্ষী?

-এই তোমার বোন।

-আপনি ডেইলি ওর সাথে দেখা করেন?

-আরে না। ও হোস্টেলে চলে যাবে আর আমার কিছু ইনফরমেশন লাগতো।

-ওহ! ওর মনে হয় টাকা বেশী সেজন্য দু’দিন পরপর গিফ্ট পাঠায়।

-ওর বাপ মায়ের যা টাকা আছে না এসব ওর কাছে বিলাসিতা ব্যপার।

নিবরাস রিং দু’টো হাতে নেয়। আনায়ার আঙুলে একটা পড়ায় আরেকটা নিজের আঙুল পড়ে নেয়। ডায়মন্ডের রিং দু’টোর দিকে তাকিয়ে নিবরাস বলে,

-একটু পর রেখে দেবো।

-এমা কেন?

-আরে আমি কত জায়গায় যাই। আর এসব অলংকার ব্যবহার করা আমার পছন্দ না। তুমি করলে করো।

-ওর থেকে প্রতিদিন গিফ্ট নিয়ে চলে আসেন ওকে তো কিছুই দিলেন না।

-তুমি পছন্দ করে দিও আমার এসবে আইডিয়া নেই।

-ক্রেডিট কার্ড?

-নিও!

-আচ্ছা আমরা আগামীকাল যাবো ওর জন্য গিফ্ট কিনতে। তারপর একদিন ওর হোস্টেলে যাবো ওকে নিয়ে বাইরে কোথাও ঘুরতে বের হবো।

-আচ্ছা যেও।

******

সন্ধ্যার দিকে নাজিয়া ওর বাবাকে ক্রেডিট কার্ড ফেরত দেয়। তিয়াশ খান কার্ড হাতে নিয়ে বলেন,

-আর কেনাকাটা আছে?

-হ্যাঁ হোস্টেলে যাবো। আম্মুর ক্রেডিট কার্ড আমায় দিও। আপাতত তোমারটা ফাঁকা।

তখন সীতারা আহম্মেদ বসা থেকে উঠে আসেন। তিয়াশ খানের থেকে ক্রেডিট কার্ড হাতে নিয়ে বলেন,

-দুইদিন আগে না নিলা। দুইদিনে টাকা শেষ?

-আরে আম্মু আমি ডায়মন্ড কিনেছিলাম। একটা লকেট আরকী।

-কই দেখাও তো?

-ওটা বড় আম্মুর কাছে।

-আমাকে বললে আমি নিয়ে আসতাম নাজিয়া।

-আমি আর বড় আম্মু মিলেই কিনে এনেছি।

-যাও এবার থেকে টাকা হিসাব করে ভাঙবে।

-একমাত্র মেয়ে আমি এটা বলছো তুমি? একটু টাকাই তো খরচ করি তোমার ব্রেন না। বাবাই আম্মুকে কিছু বলো! তোমরা দু’জন জব করো আমি একজন মাত্র খরচ করার। আর তোমরা না দিলে কী হবে? জায়ান ভাইয়ার ক্রেডিট কার্ড আছে না? তাই না জায়ান ভাইয়া।

তখন জায়ান মাথা নাড়িয়ে বলে,
-হ্যাঁ আছে তো তোমার যখন খুশি নিও।

-দেখো আবার আমায় ক্রেডিট কার্ড দিলে ফূর্তি করতে পারবা না। ভাগ্যিস বন্যা আন্টি নেই নাহলে তারউপর দিয়েই সব যেতো।

নাজিয়ার কথায় জায়ান কটমট চোখে তাকায়। নাজিয়া মুখ বাকায়। সীতারা আহম্মেদ এসবে পাত্তা দেয়না। হয়ত নাজিয়া আন্দাজি ঢিল ছুড়ছে। ওতোটুকু মেয়ে এতোকিছু বুঝে না। সে তো বারণ করে দিয়েছে কখনো কারোর ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ বা কারোর পার্সোনাল লাইপ নিয়ে জানার আগ্রহ না দেখায়।

নাজিয়া তার পোষা পাখি। ছোটবেলায় থেকে যেভাবে বলেছে ঠিক সেভাবে এসেছে একচুল ও এদিকওদিক হয়নি। তার শখের মেয়ে নাজিয়া! নাজিয়ার উপর আলাদা বিশ্বাস ভরসা আছে সীতারা আহম্মেদের।

সীতারা আহম্মেদ উঠে রুমে চলে যান। কিছুক্ষণ পর ক্রেডিট কার্ড নিয়ে নাজিয়াকে দেয়। আর পড়তে বসার আদেশ জারি করতে নাজিয়া প্রস্থান করে।

স্কুলের টিফিন টাইমে পাশের শপিংমলে গিয়েছিলো নাজিয়া। তাকে চিনে অনেকে বিশেষ করে তার বাবা-মা,জায়ান,জেঠু তাদের সুত্রে। সেখান থেকেই আনায়া নিবরাসের জন্য কাপল রিং কিনে আনে। এরই মাঝে নিবরাসের সাথে দেখা করার অনুমতি আসে। জায়ান সম্পর্কে সব তথ্যই সংগ্রহ করা শেষ। সব নিবরাসের কাছে আছে সাথে তার কাছেও আছে। তবে তার মাকে নিয়ে কোন তথ্যই সে দিবে না। অবশ্য নিবরাসই বারণ করেছে। সে বলেছে,

-জায়ানের অধঃপতন হলে নাজিয়ার আফসোস হবে না। কিন্তু ওর দেওয়া প্রমাণের ভিত্তিতে যদি ওর মাকে আজীবন কারাদন্ডে দন্ডিত করা হয়। জেলে বসে,পঁচে মরবে ওর মা তখন মাকে দেখলে হয়ত ওর আফসোস হবে, ‘কেনো সেদিন নিবরাসের কথায় ইনফরমেশন জোগাড় করে দিলো। শত হোক মা তো! তার এমন অবস্থা কোন সন্তানই মেনে নিতে পারবে না। নিনরাস চায়না নাজিয়া কখনো অপরাধবোধে নিজেকে নিঃস্ব ভাবুক,অসহায় ভাবুক। নিজেকে দায়ী করুক।

আপাতত নাজিয়া আর এসবে নেই। শুধু অপেক্ষা জায়ানের মুখোশ টেনে ছেঁড়ার অপেক্ষায়।
মনোযোগ দিয়ে পড়ছে নাজিয়া। এক্সামের আর বেশীদিন নেই তার।

সকাল বেলা নাস্তা খেয়ে রেডি হয়ে নেয় আনায়া। নিবরাস সহ বাইরে বের হবে। করিডোর দিয়ে নিচের দিকেই আসছিলো তারা। তারিশার রুম সোজা আসতে তখন তাড়াহুড়োয় তারিশা বের হয়। অল্পের জন্য নিবরাসের গায়ের উপর পড়েনি। তারিশা নিনরাসকে জিজ্ঞেস করে,

-তোমরা কোথায় যাচ্ছো?

-আপাতত জাহান্নামে যাচ্ছি। যাইবা আমাদের সাথে?

-জাহান্নামে কেনো যাবো? আরে ঠাট্টা করছি না বলো কোথায় যাচ্ছো?

-এই তো তোমার ভাবীকে নিয়ে ঘুরতে,শপিং করতে।

-ওহ যাও তাহলে।

-তুমি কোথায় যাচ্ছো?

-এই আপনার শত্রুর সাথে দেখা করে নতুন প্লানিং মাথায় নিয়ে আসতে।

আনায়া বলে। তখন আবার মরিয়ম নওয়াজ সেখানে উপস্থিত হোন। আনায়ার কথায় তিনি ব্রু কুঁচকে তাকান তারিশার দিকে। তারিশার চোখেমুখের অবয়ব মূহুর্তে পরিবর্তন হয়ে যায়।

-তারিশা কয়েকদিন পর পর কোথায় যাও?

প্রশ্ন করেন মরিয়ম নওয়াজ। তখন তারিশা বলে,

-মামনি আমার আমার বান্ধুনী তুলি,তুলির সাথে দেখা করতে যাই।

-এতো তোতলাচ্ছো কেন?

-না আসলে!

-তুলিকে বলো মির্জা ভিলায় আসতে। আমার সাথেও পরিচিত হয়ে যাবে। কী বলো?

-না ও এতোদূরে আসবে না।

-শোনো তোমায় আমার মেয়ের মতোই বড় করেছি।সবটা দেখভাল করেছি। এমন কিছু করোনা যাতে তোমায় রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলতে দুইবার না ভাবি। একটা কথা কান খুলে শুনে রাখবে এটা আমি অন্যদেরও বলি আগেও বলেছি এখন আনায়া আছে তার সামনেও বলছি। দুনিয়া একদিকে আমার ছেলে একদিকে। আমার ছেলের জন্য আমি সব করতে রাজী। আর তারিশা তো ছোট বেলা থেকে দেখেছো নিবরাস আমার কাছে কী।

আমার ছেলের যে ক্ষতি করতে চাইবে তার খেসারত হিসেবে জীবনটাই দান করে দিতে হবে।

-এতো দেখি আরেক ভিলেন! মনে হয় ছেলের মতো ওনার ও গ্যাং আছে। যেভাবে বলছে মনে হয় খু*ন করে ফেলবে। এই মহিলা আসলেই তেজী! একবার ধরা খেলে তারিশা তোর আর রক্ষে নেই।

মনে,মনে বলে তারিশা।
নিবরাস তার মায়ের দিকে তাকিয়ে আছে। আনায়াও তাকিয়ে আছে মরিয়ম নওয়াজের দিকে। তখন মরিয়ম নওয়াজ বলেন,

– সাবধানে যাও। তোমরা কোথায় জেনো যাবে?

তখন নিবরাস বলে,
-আড়ংয়ে যাবে।

-তারিশা আবার ওদের পেছনে দৌড় দিও না। তোমার ভাব ভালো ঠেকছে না।

-না,না ওদের সাথে কেনো যাবো?

নিবরাস তার মায়ের থেকে বিদায় নিয়ে আনায়াকে নিয়ে বেড়িয়ে পড়ে। তারিশাও আস্তে,আস্তে কেটে পড়ে। গেট পেড়িয়ে রিকশা ধরে তারিশা। অবশ্য আনায়া নিবরাসকে ফলো করতে,করতে যায়। তার শপিংমলেই গিয়েছে। তারিশা সেসব রেখে নিজের গন্তব্যে ছুটে। এসবে সময় ব্যায় করে লাভ নেই তার।

নিবরাস বসে আছে। আনায়া নাজিয়ার জন্য গিফ্ট দেখছে। তার আইডিয়া আসছে না কী দিলে ভালো হবে। অনেক খুঁজাখুঁজি করার পর সিদ্ধান্ত নেয় শাড়ী, সাথে জুয়েলারি সহ একবক্স হিজাব,চকলেট সাথে গোল্ডের কিছু দিবে।

নাজিয়ার গিফ্ট কেনা শেষ হবে আনায়া নিজের জন্য জামা দেখছে। নিবরাস তখন বলে,

-নাজিয়ার গিফ্ট কেনা শেষ এবার বাড়ী চলো।

-আমি কিছু কিনবো না?

-আমার ক্রেডিট কার্ডের দম আসে আর যায়। সামনের মাসে শপিং করো আপাতত আমার টাকা পয়সা সংকটে।

-চাঁদাবাজি করেন না?

-ভাগ্যিস এটা পাবলিক প্লেস নাহলে এই শব্দটার জন্য তোমার ঠোঁটের উপর অত্যাচার হতো।

-সত্য কথা বলছি।

-তোমার আর সত্য! আমাকে দেখে কোন এঙ্গেলে চাঁদাবাজ মনে হয় তোমার?

-আমার মুখের দিকে তাকালে চো*র ভাবটা আসে এই ধরুন জনগনের থেকে চাঁদাবাজি করে সেটা ঢাকা দিতে চাইছেন।

-ভাবছি তোমার বাপের থেকেই চাঁদাবাজি করবো। ইডিয়েট একটা। তোমার এই কথায় আমার কান জ্বালা ফালা হয়ে গেছে। এমপি আমি একটু তো সন্মান দাও?

-আমাকে শপিং করিয়ে দিতে গেলে আপনার টাকা শেষ হয়ে যাবে। মাসে,মাসে যে সরকার টাকা দেয় সেগুলো কী করেন?

-বেতন দিয়ে খানদান পালন করি।

-আপনাদের না ইন্ডাস্ট্রি আছে।

-তো? সেখানে আমি জব করি নাকী? সেসব তো তোমার শশুর মশাই নিজের পকেট আর একাউন্টে তুলে রাখে।

-আরে আসুন না আমার একটা ঘড়ি পছন্দ হয়েছে।

-আচ্ছা চলো ঘড়িটা কিনে চলে যাবো। ক্রেডিট কার্ড ফাঁকা আট হাজার মনে হয় আছে।

-শা*লা কিপ্টা।
বিড়বিড় করে বলে আনায়া। তখন নিবরাস বলে,

-কিছু বললে?

না বোধকে মাথা নাড়ায় আনায়া। নিবরাসকে নিয়ে ঘড়ির দোকানে প্রবেশ করে আনায়া। দোকানদার নিবরাসকে দেখে হ্যান্ডশেক করে। আনায়া একটা ঘড়ি নিয়ে নিবরাসের দিকে ধরে। ঘড়ির প্রাইস বারো হাজার টাকা। নিবরাস প্রাইস দেখে বলে,

-কী একটা ঘড়ি। একদম বাজে! অন্যটা দেখো।

-এটা বেশী সুন্দর।

-তুমি চিনো কী?

নিবরাস দেকানদারকে বলে অন্য ঘড়ি দেখাতে। আনায়া দাঁড়িয়ে, দাঁড়িয়ে ঘড়ি পছন্দ করবে কী নিনরাসের চৌদ্দ গুষ্টি তুষ্টি উদ্ধার করছে।

-শালা কিপ্টা দেখছি তোর মতো একটাও দেখিনি। শুনেছি এমপিদের টাকার অভাব থাকে না। এখন মনে হচ্ছে সম্পূর্ণ ভুল। ওর টাকা পয়সা সব কোথায় যায়? কী করে?

-এদিকে আসো আমার গুষ্টি পরে উদ্ধার করো।

আনায়া নিবরাসের কাছে যায়। সে একটা ঘড়ি চুজ করেছে আনায়া প্রাইস দেখে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা।

-কী একটা পছন্দ আপনার। এটা একদম বাজে। আংকেল আগের ঘড়িটাই প্যাক করে দিন। যেটা বারো হাজার টাকা প্রাইস।

দোকানদার মিষ্টি হেসে ঘড়ি প্যাক করে। আনায়া হাসে, নিবরাস হাতের ঘড়িটা রেখে দিয়ে আনায়ার দিকে কটমট চোখে তাকায়। দোকানদার নিশ্চয়ই তাকে কিপ্টা ভাববে। যে বারো হাজার টাকার ঘড়ি বাজে বলে রেখে পাঁচ হাজার টাকা ঘড়ি নিয়েছে। আনায়া এভাবে তার সন্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেলে।

দোকানদার প্যাকেট এগিয়ে দিতে আনায়া সেটা নেয়। নিবরাস তার আরেকটা ক্রেডিট কার্ড বের করে যেটায় টাকা বেশী আছে। আট হাজার টাকার কার্ডটা পকেটেই থাকে সেটা আর বের করে না।

কার্ড হাতে শক্ত মুখ করে নিবরাস বিদায় নিয়ে বেড়িয়ে আসে। আনায়া তার দিকে তাকিয়ে বলে,

-কার্ডে আট হাজার নিয়ে ঘুরেন এখন বারো হাজার টাকা পেমেন্ট করলেন কীভাবে?

-তোমার বাপের থেকে চাঁদাবাজি করে পাঁচ হাজার টাকা নিয়েছিলাম সেটা ভুলবশত পকেটের এক কোণে পড়ে ছিলো। এখন সেটা দিয়েই পেমেন্ট করেছি।

-বাকী তো একহাজার থাকে সেটা?

-শহরে মাইকিং করে জানানোর জন্য রেখেছি। মুয়াম্মার নিবরাস মির্জার বউ তাকে চাঁদাবাজ বলে আখ্যায়িত করে সাথে তার সন্মান নিয়ে যেখানে সেখানে ফুটবল খেলে।

-ভাগ্যিস খেলিনি ফুটবল খেললে এতেদিন এভাবে বাঘের মতো না ঘুরে কাঁথার নিচে মুখ লুকাতেন।

-তোমার আঁচল থাকতে কাঁথা কেন?

-কিপ্টা লোককে আমি আমার আঁচলে মুখ লুকাতে দেব না।

-আমি মোটেও কিপ্টা না। তুমি পছন্দ করে কিনলে সেটায় ইন্টারেস্ট পাইবা না। আমি পছন্দ করে কিনে দিলে সেটায় এক্সাইটমেন্ট কাজ করবে বেশী।

-আর ভাষণ দিতে হবে না। কিপ্টা দেখেছি আপনার মতো একটাও দেখিনি।

-অনেকদিন হলো তোমার বাপের থেকে চাঁদাবাজি করতে পারিনি সেজন্য পকেট ফাঁকা।

#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে