#হৃদয়_জুড়ে_শুধু_আপনি[২]
#বোনাস_পর্ব
#জান্নাত_সুলতানা
[পর্ব টা কিছু টা রোমান্টিক পড়তে না চাইলে স্কিপ করতে পারেন]
-“আমি জানি না তোকে কবে কখন কিভাবে ভালোবেসেছি। ছোট বেলা যখন তুই আমার পেছন পেছন ঘুরতি তখন আমার বিরক্ত লাগতো।তোকে এ নিয়ে অনেক বার বকাঝকাও করেছি।তার পর যখন তুই আস্তে আস্তে আমার সাথে কথা বলতি না। বিরক্ত করতি না অন্য ছেলেদের সাথে খেলতে যেতি তখন আমার রাগ লাগতো।আর সেই জন্যই পরে তোকে কোনো ছেলের সাথে মিশতে দিতাম না।
তবে তুই তখন আমার আবেগ, মোহ নাকি ভালোবাসা সে টা বুঝতে পারি নি। দিন এভাবেই যেতে লাগলো। কিন্তু
আমি একটা সময় বুঝতে পাড়লাম আমি তোকে ভালোবাসি।
আর সেই থেকে তোকে আগলে আগলে রাখতাম। তবে তুই তখন আমাকে ভালোবেসে নয়। একটা নেশা ছিলাম আমি তোর। তাই তুই সব সময় আমার সাথে সাথে থাকতি।
আর তুই যখন একটু বড় হলি তখন আমি তোর জেদে পরিণত হলাম।তবে সে টা শুধু পড়া লেখা থেকে বেচে যাওয়ার জন্য আমাকে চাইতি। ভাবতি একবার যদি বিয়ে হয়ে যায় তবে হয়তো আর পড়তে হবে না(হালকা করে একটু হাসে মিশান )
কিন্তু তোর সব কারসাজি বাবাই বুঝতে পেরে যায়।
এটা আমাকে বাবাই বলেছিল। আর এটা শুনার পর আমার অনেক রাগ হয়েছিল। তখন বাবাই আমাকে শর্ত দিলো। তোর সাথে আমি যেনো খারাপ ব্যবহার করি। Even আমি যেনো তোর সাথে বিদেশ যাওয়ার পর কোনো রকম যোগাযোগও না করি।আমি অবশ্য প্রথম এ এসব মানতে চাই নি।কিন্তু বাবাই বলছিল এতে নাকি তুই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবি। আর হলোও তাই।
এতে অবশ্য আমার কোনো লাভ হয়নি। তুই ভুল বুঝলি। তবে ভালো তো বেসে ফেলেছি এটাই ভেবেই অনেক শান্তি লাগতো।
আর এখন তুই আমার অর্ধাঙ্গিনী। তুই চাইলেও আমার সাথে থাকতে হবে আর না চাইলে তোকে কি করে আমার কাছে রাখতে হবে সে পথও আমার জানা আছে, সুইটহার্ট।
কথা গুলো এক নিশ্বাসে বলেই মিশান সায়রা ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ছোঁয়া দেয়।
সায়রা এতোখন মন দিয়ে কথা গুলো শুনছিল। ওর বাবা এসব করেছে।এই জন্যই বুঝি মা বিকেলে ফোনে কোনো সত্যি কথার কথা বলছিল।
তবে মিশানের লাস্ট কথায় এসব ভাবনা আর ভাবা হলো না।
ভ্রু কুঁচকে আসে।
এটা কি প্রপোজ বলে নাকি বন্দি করে রাখার হুমকি?
সায়রার বোধগম্য হলো না। মিশান দোলনায় বসে আছে আর সায়রা মিশানের কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে।
মিশান একটু কাত হয়ে নিজে পরিহিত থ্রি কোয়ার্টার পেন্ট এর পকেট হাতিয়ে একটা রিং বের করে।
তার পর সায়রার বাম হাত টা টেনে ধরে সেটা অনামিকা আঙুলে পরিয়ে দেয়।
সায়রা হাতের দিকে তাকালো রিং টা আবছা আবছা আলোয়ে সে টা চিক চিক করছে।
সায়রা বুঝলো এটা ডায়মন্ড এর রিং। রিং টা যে যথেষ্ট দামি সে টা এটা দেখেই বুঝা যাচ্ছে। এর মধ্যে মিশান পকেট থেকে আরও একটা কিছু বের করে। অতঃপর সায়রা কে দোলনায় বসিয়ে একটা লকেটও পরিয়ে দেয় ওর গলায়।
সায়রা এবার বেশ অবাক হলো।
-“আপনি এসব কোথা থেকে এনেছেন? ”
-“এগুলো লন্ডন যাওয়ার পড় থেকে মাঝে মাঝে কিছু কাজ করতাম আর তখন থেকেই টাকা জমিয়ে এসব বানিয়ে রেখেছি।
আরও আছে বাসায়। এগুলো সাথে নিয়ে এসেছিলাম তাই দিয়ে দিলাম।”
-“আপনি ওখানে কাজ করতেন?”
অবাক হয়ে প্রশ্ন করে।
-“হুম মাঝে মাঝে যেতাম তবে সে টা কেউ জানে না।
আজ তোকে বললাম। ”
-“কিন্তু এসব কেন করতেন? ”
-“তুই ওইসব বুঝবি না, ইডিয়েড।
তবে এটা জেনে রাখ পুরুষ তার শখের নারীর জন্য সব করতে পারে।
পুরুষ মানুষের ভালোবাসা যদি সত্যি হয়।সেটা সুন্দর সাথে ভয়ংকরও বটে।
সে টা তোকে একটু পরেই বুঝিয়ে দেবো, সুইটহার্ট। ”
কথা গুলো বলেই এক টানে সায়রা কে দাঁড় করিয়ে আবারও কোলে নিয়ে হাঁটা ধরে রুমের উদ্দেশ্যে।
সায়রা কিছু বুঝতে পারছে না মিশান কি করবে। আর কি সব বলছিল তখন।
সায়রার ভাবনার মাঝেই মিশান ওকে রুমে এনে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে দরজা আটকে বড় লাইট অফ করে ড্রিম লাইট অন করে।
তার পর ফিরে এসে সায়রা সামনে হাঁটু গেড়ে বসে ওর এক টা হাত নিজের হাতের মুঠো নিয়ে আলতো করে ঠোঁটের পরশ দিলো হাতের পাতায়।
অতঃপর ধীরে কন্ঠে বলতে লাগলো
-“আমার তোকে চাই জান।
একান্তই নিজের করে। তোকে আমাতে আবদ্ধ করতে চাই।
আমি যখন থেকে বুঝতে পেরেছে তোকে ভালোবাসি ঠিক তখন থেকে আমার পুরুষালী সত্ত্বা তোকে চাইতো।
আমি জানি এটা শোনার পর তোর মনে প্রশ্ন জাগবে যে এটা আবার কেমন ভালোবাসা তবে আমার ভালোবাসার একটা অংশ এটা আর এটা শুধু তোকে ঘিরে।আর মরণের আগে পযন্ত তোর মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকবে।
ভালোবাসি সুইটহার্ট। ”
কথা টা বলে আর এক সেকেন্ডও দেড়ি করে না মিশান এক ধাক্কা সায়রা কে বিছানায় ফেলে নিজের দু হাত দ্বারা সায়রার মুখ খানা নিজের হাতের মাঝে বন্দী করে নিজের পুরুষালী ঠোঁট জোড়া দিয়ে মেয়ে টার ঠোঁট জোড়া আয়েত্তে নিয়ে নেয়।
সায়রা আবেশে চোখ বন্ধ করে। বেশ কিছুখন পর মিশান সায়রা কে ছেড়ে দিয়ে হাত রাখে শাড়ীর আঁচলে।
সায়রা তখন শ্বাস নিতে ব্যস্ত। মিশান তার প্রেয়সীর দিকে পূরণ দৃষ্টি দিলো যদিও সব আবছা আবছা দেখা যাচ্ছে।
যার ফলে মিশান আরও উন্মাদ হলো সাথে নিজের এলোমেলো স্পর্শ সামনের রমণী টাকেও পাগল করে দিলো।
সায়রাও জড়িয়ে ধরলো মিশান কে।
তবে মিশানের ওজন হাইট দুটি সায়রার তোলনায় আকাশচুম্বী।
যার ধরুনে মেয়ে টার কষ্ট টা একটু বেশি হলো।তবে অজানা এক আনন্দে পেয়েছ।
সাথে সামনে থাকা স্বামী নামক ভালোবাসার মানুুটাকেও বাঁধা দিয়ে তা নষ্ট করতে পারে নি।
-“সরি সুইটহার্ট।
আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে।”
কথা টা বলেই মিশান সায়রার গলায় মুখ গুঁজে।
-“ভালোবাসি মিশান ভা,,
-“উঁহু, স্বামী হই তোর।”
-“হুম, ছোট বেলার অভ্যাস। ”
আর কোনো রকম উত্তর আসে না মিশানের দিক হতে। সায়রাও আর কিছু বলে না সঙ্গ দেয় স্বামী নামক একান্ত নিজের পুরষ টার পাগলামিতে।
————–
সায়রা মিশানের গলায় মুখ গুঁজে ঘুমিয়ে আছে।মিশান এক হাতে ফোনে কিছু করছে। আর মিট মিট করে হাসছে। আর অন্য হাতে প্রেয়সী কে আগলে রেখেছে।
আবার একটু পর পর সায়রার মাথার তালুতে চুমু খায়।
সায়রা নড়েচড়ে ঘুম ঘুম চোখে পিটপিট করে তাকায় তার পর আবারও ঘুমের দেশে তলিয়ে যায়।
কিন্তু এবার মিশানের দিকে তাকিয়ে আর চোখে ঘুম সব উড়ে গেলো।চটপট উঠে পাশ হতে শাড়ী টা কোনো রকম গায়ে পেচিয়ে নিলো।
মিশান হো হা করে হেসে দিল।
-“তোর সব কাল রাতেই আমি দেখে নিয়েছি, সুইটহার্ট। ”
বলেই এক টানে সায়রা কে নিজের কোলের উপর এনে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে অতঃপর বিছানায় পরে থাকা ফোন টা হাতে নিয়ে সায়রার সামনে ধরে।
সায়রা চোখ বড় বড় করে ফোনের দিকে তাকিয়ে হুট করে ফোন টা কেড়ে নিতে গেলেই মিশান তা হতে দিলো না।
-“আপনি এটা কখন কেরেছেন অসভ্য মানুষ?
প্লিজ কেটে দিন।”
অসহায় ফেস করে বলে সায়রা। যা দেখে মিশান আবারও এক দফা হেসে নিয়ে বলে
-“দেখতে কিন্তু অনেক হট লাগছে।
ভাবছি এটা বড় করে প্রিন্ট করে আমাদের ব্রেড রুমে ঝুলি রাখবো।
কি বলিস?”
কথা গুলো বলেই মিশান এক টা চোখ টিপ দিলো।
আর সায়রা লজ্জা রংধনু হয়ে মিশানের বুকে মাথা রেখে তা আড়ালে করে।
#চলবে…