হৃদয়ের সন্ধিক্ষণ পর্ব-১৩+১৪

0
519

#হৃদয়ের_সন্ধিক্ষণ
#পর্বঃ১৩
#ফারিহা_খান_নোরা
আফসানের সাথে পাশের বাড়ির করিমের ব‌উয়ের গ’ভী’র সম্পর্ক রয়েছে যা নিষ্প্রভ কোনো ভাবে জেনে গেছে।যার ফলে করিমের ব‌উকে নিয়ে খোঁ’চা দিলো নিষ্প্রভ।তা নয়তো করিমের ব‌উয়ের কথা বলবে কেন?একেই বুঝি বলে সঠিক সময়ে উচিত জবাব।

আশা বেগম সদর দরজা দিয়ে তুরকে ভিতরে আসতে দেখে ইচ্ছে মতো কথা শুনতে শুরু করে। কিন্তু পিছনে যে নিষ্প্রভ আসে সেদিকে খেয়াল করে নি।ভেবেছে তুর হয়তো একাই এসেছে।তিনি যদি কোনো ভাবে নিষ্প্রভ কে দেখতো তাহলে কিছুতেই এসব বলতো না।কারণ তিনি বুঝে গেছে নিষ্প্রভ আশা বেগমের এতো দিনের লুকিয়ে রাখা রহস্য সম্পর্কে জেনে ফেলেছে।কতোটা জেনে ফেলেছে তা এখনো বুঝতে পারে নি।তাই এখন নিষ্প্রভ কে না চেতিয়ে দেওয়াই তার জন্য ভালো। হয়েছেও তার একটা ছেলে যে তাকে সারাজীবন জ্বা’লি’য়ে খেলো।এই ছেলের জন্য আর কার না,কার কাছে ছোট হতে হয়।এই বজ্জাত ছেলের রুচির কোনো লেভেল নেই।কাজের মেয়ের থেকে শুরু করে রিকশা ওয়ালার ব‌উ কে অবধি ছেড়ে দেয় না।তা না হলে অই করিমের ব‌উয়ের পিছনে কি করে লেগে থাকে।একে নিয়ে যে কি করবে সে!

নিষ্প্রভ তুরের দিকে তাকিয়ে বলে,

‘এখানে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকার মানে হয় না,ভিতরে চলো।’

তুর কোনো কথা না বলে দাড়িয়ে থাকে।এ বাড়িতে এসে তার কম কথা শুনতে হয় নি এই মহিলার মুখ থেকে।তুরকে এমন ভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখে নিষ্প্রভ নিজ দায়িত্বে তুরের হাত ধরে নিজের সাথে করে নিয়ে যেতে ধরে। এর মধ্যে আশা বেগম পিছন থেকে চিবিয়ে চিবিয়ে তুরকে উদ্দেশ্য করে বলে ওঠে,

‘স্বামীকে দেখছি হাতের মুঠোয় করে নিয়েছো।’

নিষ্প্রভ যেতে যেতে বলে,

‘ঠিক যেমন আপনি নিয়েছেন মিসেস মির্জা।’

তুর অপলক দৃষ্টিতে নিষ্প্রভ কে দেখছে।আর কতো রূপে এই মানষটাকে দেখবে সে।এই পুরুষ এক এক সময় এক এক রূপ ধারণ করছে। কখনো তুরকে সবার বিরুদ্ধে যেয়ে প্রটেক্ট করছে।তখন মনে হয় তুর নিষ্প্রভের কাছে বড্ড বেশি আপন।আবার কখনো তুরকে দূরে সরে দিচ্ছে।কোনটা তার আসল রূপ?

_________________________

তানিয়া বেগম চিৎকা’র চেঁ’চা’মে’চি করছে। তাঁর চিৎকা’রে সবাই যে যার রুম নিচে নেমে আসে।এখন রাত নয়টা, এই রাতের বেলা চিৎ’কা’র চেঁ’চা’মে’চি কারো ভালো লাগছে না। সারাদিন পরিশ্রম করে ক্লান্ত হয়ে সবাই নীড়ে ফিরে আসে একটু বিশ্রামের জন্য কিন্তু এই বাড়ির মানুষ গুলোর বিশ্রাম বুঝি চিরতরের জন্য উঠে গেছে তা না হলে আজ এক সপ্তাহ যাবৎ রোজ রোজ এসব অশান্তি কারো সহ্য করতে হতো না। নুরুল সাহেব এবার বেশ বি’র’ক্ত হলেন। তিনি বি’র’ক্তে’র সহিত তুরফা কে উদ্দেশ্য করে বলে,

‘এই মহিলাকে এখুনি আমার চোখের সামনে থেকে নিয়ে যা।’

তুরফা তার মায়ের দিকে তাকিয়ে দেখে তানিয়া বেগম অসহায় ভাবে দাড়িয়ে আছে।পাশেই দাঁড়িয়ে আছে তাঁর ভাই তুষারের ব‌উ দূর্বা মেয়েটা, যার চোখে মুখে ভ’য়ে’র রেশ। তুরফা কোনো কিছু না ভেবে তার মাকে বলে,

‘কি হয়েছে মা,রাতের বেলা এমন চিৎ’কা’র চেঁ’চা’মে’চি করছো কেন।ভাগ্গিস ভাইয়া বাড়িতে নেই থাকলে আরও অ’শা’ন্তি হতো।কি হয়েছে?’

তানিয়া বেগম তীক্ষ্ণ কন্ঠে বলে,

‘কি আর হবে সব আমার কপাল।এই বয়সে স্বামী ও আমার পাশে নেই, আমার কোনো কথাই শোনে না। আমি কি সব সময় ভুল কাজ করি,নাকি এমনি এমনি চিৎ’কা’র চেঁ’চা’মে’চি করি?’

‘আহা সব বুজলাম মা এবার আসল ঘটনা বলো।’

তানিয়া বেগম শ’ক্ত কন্ঠে বলে,

‘আছে না তোর ভাই? সারাজীবন জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরে বেরিয়ে পাহাড়ে গেল তুষারপাত করতে সেখানে থেকে ধরে নিয়ে এলো এই দূর্বা ঘাস কে। সারাদিন খায় আর ঘুমায়,আজ আমি ওকে সবার জন্য রাতের খাবার রান্না করতে বলেছিলাম সে কি করেছে জানিস?’

নুরুল সাহেব এবার আগ্রহী হোন।তুরফা উসখুশ করে, না জানি মেয়েটা কি করেছে।বলে,

‘কি করেছে ?’

তানিয়া বেগম চি’বি’য়ে চি’বি’য়ে বলে,

‘সে রাতের খাবার হিসাবে চাল,আলু,লাতা পাতা যেখানে যা পেয়েছে এক সাথে সব পানি দিয়ে সিদ্ধ করে রেখেছে।এই খাবার খেয়েছিস কখনো? এখন দেখ আমি কেন চিৎ’কা’র করছি।তোর বাপের তো আমায় নিয়ে সমস্যা, আমার কথা বলা নিয়ে সমস্যা।এক কাজ কর এই মেয়ের এসব ঘাস লতা পাতা রান্না তোর বাপকেই খাইয়ে দে।’

বলেই মুখ ঝা’ম’টা দিয়ে চলে গেল তানিয়া বেগম। নুরুল সাহেব সব কথা আগ্রহ নিয়ে শুনলেও শেষর কথা শুনে তিনি শুকনো ঢুক গিলে।তুরফা অবাক হয়ে দূর্বাকে দেখতে থাকে।দূর্বা বেচারির নিজেকে নিরীহ হরিণীর মতো মনে হচ্ছে,যে কিনা এতো কিছু এক সঙ্গে দিয়ে রান্না করেও শাশুড়ির মন পেলো না।হায় কপাল!
_______________

তুর শুয়ে থেকে রা’গে ফুঁ’স’ছে কারণ প্রাই ত্রিশ মিনিট যাবৎ নিষ্প্রভ বারান্দায় যেয়ে কোনো মেয়ের সাথে হেসে হেসে কথা বলছে।যার হাসির সাউন্ড তুরের কানে বাজছে।কেন রে ভাই এতো হেসে হেসে কথা বলার কি আছে! ক‌ই কোনোদিন তো তার সাথে হেসে হেসে কথা বলে না।তাহলে কি নিষ্প্রভের পছন্দ আছে।এসব উল্টা পাল্টা কথা ভাবতেই তুরের মনে এক রাশ খা’রা’প লাগায় ছেয়ে যায়।নিষ্প্রভের কথা বলা শেষ করে তুরের দিকে এগিয়ে এসে কৈফিয়ত দেওয়ার ভঙ্গিতে একটু হেসে বলে,

‘ছোট বেলার ফ্রেন্ড অনেকদিন পর কথা হলো।’

তুর হঠাৎ করেই বেডের উপর দাঁড়িয়ে পড়ে দুই হাতে নিষ্প্রভের শার্টের কলার ধরে তে’জ নিয়ে বলে,

‘ক‌ই আমার সাথে কোনোদিন এভাবে হেসে হেসে কথা বলেন নি।’

তুরের এমন ব্যাবহার নিষ্প্রভকে বেশ ভাবায় তুর এমন মেয়ে না,সে বেশ নাজুক তাহলে হঠাৎ তার কি এমন হলো যে,এমন বিহেভ করছে।নিষ্প্রভ তুরকে শার্টের ক’লা’র ছাড়তে বলে তুর আরও শক্ত করে ধরে,সে কোন উপায় না পেয়ে তুরের হাতের উপর হাত দেয় নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে যায় ঠিক তখনি খেয়াল করে তুরের শরীর অসম্ভব গরম।এবার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে তুরের চোখ মুখ অসম্ভ লাল।নিষ্প্রভ তুরের কপালে হাত দিয়ে অস্থির কন্ঠে বলে,

‘তোমার তো বেশ জ্বর এসেছে।কখন থেকে এমন হলো! একটু আগেও ঠিক ছিলে।’

তুর নিষ্প্রাণ কন্ঠে বলে,

‘মনের জ্বর ই বড় জ্বর।’

বলেই জো’রে জো’রে হাসতে থাকে।নিষ্প্রভ বুজতে পারছে তুর জ্বরের ঘোরে এসব আবল তাবল ব’ক’ছে।সে তুরকে ধরে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে বলে,

‘তুমি এখানে থাকো তোমার ওষুধ খেতে হবে।খালি পেটে ওষুধ খাওয়ানো যাবে না। আমি নিচ থেকে তোমার জন্য খাবার নিয়ে আসি।’

বলেই নিষ্প্রভ চলে যায়। নিচে যেয়ে দেখে সিতারা ড্রয়িং রুমে বসে মনযোগের সহিত বাংলা সিনেমা দেখছে এখনো ঘুমায় নি।নিষ্প্রভ সিতারার কাছে যেয়ে তাকে তিন থেকে চার বার ডাকলে সে তারপর জবাবা দেয়,

‘বড় ভাইজান কিছু লাগবো।’

‘তোর ভাবি অসুস্থ একটু স্যুপ করে দে।’

‘কি ভাবির কি হয়ছে?’

‘তেমন কিছু না একটু জ্বর তুই তাড়াতাড়ি স্যুপ করে দে খাইয়ে দিয়ে ওষুধ খাওয়াতে হবে।’

সিতারা রান্না ঘরে যায় তার আগে নিষ্প্রভ কে বলে যায়,

‘ভাইজান আপনি ভাবির কাছে যান আমি রুমে যেয়ে দিয়ে আসুম নি।’

নিষ্প্রভ অন্য সময় হলে যেতো কিন্তু আজ ভয়ে যেতে চাইছে না,কারণ রুমে গেলে তুর জ্বরের ঘোরে তার সাথে আর কি না কি করে।সেটা ভেবে নিষ্প্রভ দুই ঢুক গিলল।দশ মিনিট সময় নিয়ে সিতারা স্যুপ করে বোল নিষ্প্রভের হাতে তুলে দেয়।সে নিয়ে রুমে যেয়ে দেখে তুর বেডে চুপচাপ বসে আছে।নিষ্প্রভ তুরের পাশে বসে তাঁর মুখের কাছে স্পুন ধরে বলে,

‘খেয়ে নেও।’

তুর নিষ্প্রভের আরও কাছে যেয়ে তাঁর দুই হাত নিষ্প্রভের গালে রেখে নেশা মিশানো কন্ঠে বলে,

‘খা’বো তো আপনাকে।’

নিষ্প্রভ চমকে উঠে বলে,

‘হোয়াট!’

তুরের কাছে কি আর এতো কিছুর সময় আছে নাকি? সে হঠাৎ অপ্রত্যাশিত কাজ করে ফেলে।নিষ্প্রভের ঠোঁ’টে নিজের ঠোঁ’ট বসিয়ে দেয়।

চলমান।

#হৃদয়ের_সন্ধিক্ষণ
#পর্বঃ১৪
#ফারিহা_খান_নোরা

তুরের করা অপ্রত্যাশিত কাজে প্রথম দিকে নিষ্প্রভ বাঁধা দিলেও পরবর্তীতে সেও তুরের মত বেসামাল হয়ে প’ড়ে।সে তুরের সাথে তাল মিলিয়ে নে’শা’য় মেতে ওঠে।তুরের ওষ্ঠ জো’ড়া থেকে সমস্ত রস নিংড়ে নিচ্ছে নিষ্প্রভ।জেনো কতো জন্মের খরার পর এক পশলা বৃষ্টি স্নিগ্ধ করে দিচ্ছে তাঁদের।নিষ্প্রভের এক হাত তুরের মাথায় অন্য হাত দিয়ে তুরের পিঠে অগোছালো ভাবে বিচরণ করে।এ এক অন্য রকম অনুভুতি যার সাথে নিষ্প্রভ জীবনের ফার্স্ট টাইম পরিচিত হলো।তুর জ্বরের ঘোরে সে এই অনুভূতি মনে রাখতে পারবে কি না,জানে না।হঠাৎ করেই তুর এক ধা’ক্কা’য় নিষ্প্রভ কে সরিয়ে দেয়।নিজের মুখ দুই হাত দিয়ে ধরে বেড থেকে নিচে নামতে নেয় কিন্তু তাঁর আগেই শরীর কাঁপিয়ে গল গল করে পুরো মেঝে ভাসিয়ে বমি করতে শুরু করে।

নিষ্প্রভ অস্থির হয়ে উঠে বলে,

‘ওহ শীট!’

পিছন থেকে সে তুরের দুই কাঁধ ধরে ব্যালেন্স ঠিক রাখতে সাহায্য করে।বমি করতে করতে তুর সেন্সলেস হয়ে নিষ্প্রভের উপর ঢলে প’ড়ে।নিষ্প্রভ কোনো উপায় না পেয়ে তুরকে কোলে তুলে আলগোছে বেডে শুইয়ে দেয়।এতো রাতে বাড়িতে কেউ জেগে নেই।এবাড়িতে হেল্প করার মত একমাত্র সিতারা আছে এতো রাতে তাঁকে ডাকতে গেলে বাড়িতে সবাই জেগে যাবে হয়তো একটা সিনক্রিয়েট হবে।নিষ্প্রভ কোনো উপায় না পেয়ে নিজেই ফ্লোর পরিষ্কার করে এক বালতি পানিতে মেডিসিন নিয়ে মুছে দেয়।তখন তুরকে ধরতে নিয়ে তাঁর শরীরেও বমির কিছু অংশ লেগেছে যার ফল স্বরূপ শরীর থেকে কেমন বিদঘুটে গন্ধ বের হচ্ছে।নিষ্প্রভ টিশার্ট ও ট্রাউজার নিয়ে দশ মিনিট সময় লাগিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসে।ওয়াশরুম থেকে বাহিরে এসে দেখে ম্যাডাম এখনো অই অবস্থায় আছে।সে তুরের কাছে যেয়ে কপালে হাত দেয় জ্বর চেক করে। তাপমাত্রা স্বাভাবিক তার মানে জ্বর তেমন নেই।তবে তুর ঠান্ডায় কাঁপছে,এখন নিষ্প্রভের সব চেয়ে বড় কাজ হলো তুরের ড্রেস চেঞ্জ করে দেওয়া নয়তো তুরের ঠান্ডা লেগে যাবে কারণ তাঁর ড্রেস ও নোং’রা হয়ে গেছে।ড্রেস চেঞ্জ করে দেওয়ার কথা ভাবতেই ভ’য়ে তার গলা শুকিয়ে যায়। কিভাবে সম্ভব তাছাড়া তুর যদি তাকে ভুল বুঝে।এই অজ্ঞান রাণীর তো আর এসব কিছু মনে থাকবে না,ম্যাডাম এখন প’ড়ে প’ড়ে সেবা নিবে।নিষ্প্রভ মহা ঝামেলায় প’ড়ে তারপর ভাবে নাহ আগে মানুষের জীবন তারপর বাকি সব।

নিষ্প্রভ আলমারির দিকে এগিয়ে যায় অনেক ভাবনা চিন্তা করে ঢিলে ঢালা একটা কামিজ ও প্লাজু বের করে নিয়ে আসে।তার বেশ অস্বস্তি হয় কি ভাবে কি করবে বুঝতে পারে না।যত‌ই তাঁর বিয়ে করা ব‌উ হোক না কেন তাদের মধ্যে এখনো স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক স্থাপন হয় নি।আর কিছু না ভেবে নিষ্প্রভ রুমের লাইট অফ করে পুরো রুম অন্ধকার করে দেয় অস্বস্তি নিয়ে এগিয়ে যায় কাঁপা কাঁপা হাত তুরের দিকে বাড়িয়ে দেয়।ড্রেস চেঞ্জ করে দিয়ে নিষ্প্রভ হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। রুমের লাইট অন করে দিয়ে টাওয়াল ভিজে নিয়ে তুরের মুখ মন্ডল মুছিয়ে দেয় চোখে একটু পানির ঝাপটা দেয়।তুরের সেন্স ফিরেছে তবে সে জ্বর ও বমি করে বেশ দূর্বল।যার জন্য চোখের পাতা খুলতে পারছে না চোখ বন্ধ করেই কি জেনো বলছে।নিষ্প্রভ তুরের গায়ে কম্বল টেনে দিয়ে সেও পাশে শুয়ে পড়ে।নিষ্প্রভ তুরের দিকে একপলক তাকিয়ে বিরবির করে বলে,

‘মানুষ বিয়ে করে ব‌উ এর সাথে বাসর করার পর ব‌উ বমি করে প্রেগন্যান্ট এর সংকেত দেয়।আর আমার ব‌উ! এখনো বাসর‌ই করতেই পারলাম না তার আগেই নিজের ইচ্ছায়,সামান্য কিস করে বমি করে ভাসিয়ে দিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকে।’

তারপর ভাবুক কন্ঠ নিষ্প্রভ আবার ও বলে,

‘আমার ব‌উ তাহলে কিসের সংকেত দিচ্ছে?’

_____________________

নুরুল সাহেব কারো সাথে কোনো কথা না বলে রাতের খাবার বাহিরে যেয়ে খেয়ে এসেছে। তানিয়া বেগম সেই যে রুমে যেয়ে দরজা দিয়েছে আর বের হয় নি। তুরফা না খেয়ে শুকনো মুখেই মুখ ভার করে বসে আছে।তার হয়েছে যতো জ্বা’লা এখন রান্না বসিয়ে দিলে তাঁর উপর মায়ের ঘূর্ণিঝড় প’ড়’বে কারণ মা প‌ই প‌ই করে বলে দিয়েছে কোনো মতেই জেনো রান্না না করে কারণ তুষারকে আজ তাঁর নতুন ব‌উয়ের হাতের রান্না খাইয়ে বুঝিয়ে দিবে মা কেন এই দূর্বাকে ব‌উ হিসাবে মেনে নিতে পারছে না।নামটাও কি দূর্বা? তানিয়া বেগম তো দূর্বা ঘাস ছাড়া কথাই বলে না।এতো ফল ফুলের নাম থাকতে ঘস লতা পাতার নাম রাখলে যা হয়। তুরফা বিস্কুট ও চা খেয়ে কিছুটা হলেও খুদা নিবারণ করে।এর মধ্যে তুষার এসে পড়ে ফ্রেশ হয়ে তার ব‌উকে সাথে করে টেবিলে বসে প’ড়ে।তুরফাকে উদ্দেশ্য করে বলে,

‘তুরফা খাবার দে।’

তুরফা ভ্রু কুঁচকে ফেলে। হিসহিসিয়ে বলে,

‘এখন বিয়ে করছে তোমার সব দিকে খেয়াল রাখার দায়িত্ব তোমার ব‌উয়ের।ব‌উকে বসিয়ে রেখে বোন কে ডাকছো কেন?’

তুষার চুপ হয়ে যায় দূর্বা উঠে খাবার নিয়ে এসে তুষারের প্লেটে দেয়। তুষার খাবারের দিকে তাকিয়ে চোখ মুখ কুঁচকে ফেলে। কিছুটা রে’গে বলে,

‘এসব কি?’

তুরফা একটু হেসে স্বভাবিক কন্ঠে বলে,

‘কেন খাবার তোমার ব‌উ রেঁধেছে।’

তুষার কিছু না বলে দূর্বার হাত ধরে টেনে রুমে নিয়ে যায়।দরজা জো’রে লাগিয়ে দেয় দূর্বা কেঁপে উঠে বলে,

‘কি হয়েছে স্বামী আমি কি কিছু ভুল করেছি?’

‘তোমার এই স্বামী স্বামী বলা দয়া করে বন্ধ করো।’

‘কেন স্বামী?’

তুষার চটে যেয়ে দূর্বাকে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরে।ক’ড়া কন্ঠে বলে,

‘তোমার এই স্বামী স্বামী বলে মুখের ফোনা তোলা বন্ধ করো।আর খ’ব’র’দা’র! বাবা মায়ের সামনে আমাকে স্বামী স্বামী বলে সম্মধন করছো তো তোমার একদিন কি আমার যে কয়দিন লাগে।’
____________________

এখন মধ্যে রাত! নিষ্প্রভের বুকের উপর গুটিশুটি মেরে শুয়ে আছে তুর। কিছু আগেই নিষ্প্রভ তুরের মাথায় পানি ঢেলেছে কারণ তুরের জ্বর আবার এসেছিলো।ম্যাডাম সারারাত নিষ্প্রভের সেবা নিয়েছে।

‘আমায় একটু জড়িয়ে ধরেন না, খুব শীত করছে।’

তুরের কথা শুনে শুকনো ঢুক গিলে নিষ্প্রভ।তুর নিষ্প্রভকে টাইম না দিয়েই নিজেই ঝাপটে জড়িয়ে ধরে মিন মিন করে বলে,

‘তখন অই মেয়েটার সাথে হেসে হেসে কথা বলছিলেন কেন? আমার খুব রা’গ লেগে ছিলো।’

‘আমার তার সাথে হেসে হেসে কথা বলায় তোমার কেন রা’গ লেগেছিল?’

তুর নিজের ঠোঁট উল্টে বলে,

‘জানি না।’

নিষ্প্রভ তুরকে তার বুকের উপর থেকে নামিয়ে বিছানায় শুইয়ে দেয়।তুর নিষ্প্রভকে টেনে নিজের উপর ফে’লে যার ফলে নিষ্প্রভের শরীরের আশি পার্সেন্ট ভার তুরের উপর গিয়ে পরে।নিষ্প্রভ উঠতে নিলে তুর তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আদুরে গলায় বলে,

‘আপনি এমন কেন! সব সময় আমায় শুধু ইগনোর করেন।এমন ভাব করেন জেনো আমি অন্যের ব‌উ।আমায় একটু আদর করলে কি হয়?’

নিষ্প্রভের গলা শুকিয়ে যায়।জ্বরের ঘোরে মেয়েটা কি বলছে জানলে নিজের‌ই হুঁশ থাকতো না। নিষ্প্রভ শুকনো ঢুক গিলে তুরের কানের কাছে তার মুখ এগিয়ে এনে বলে,

‘আচ্ছা আচ্ছা তুমি আমার‌ নিজেরই ব‌উ।এখন আমি তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়, তুমি এখন ঘুমাও ব‌উ। ভালো ব‌উয়েরা কিন্তু স্বামীর কথা শুনে।’

তুর ঘোর লাগা কন্ঠে বলে ওঠে,

‘সব কথা শুনবো তার আগে আমায় একটু আদর করেন।’

নিষ্প্রভ কিছু একটা বলে তুরকে মানতে চাইছিলো তার আগেই এই রাতের বেলা নিচে থেকে চিৎ’কা’র এর আওয়াজ ভেসে আসে।

‘চলমান।

বিঃদ্রঃ ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে