#হৃদয়হরণী
#পর্ব:৬
#তানিশা সুলতানা
ছোঁয়া ড্রয়িং রুমে সোফায় বসে ছিলো। তার মন খারাপ। মনটা কখনো ভালোই হয় না। লোকটার মায়া তাকে এমন ভাবে বস করে রেখেছে য়ে ছোঁয়া আস্তে আস্তে ভালো থাকতেই ভূলে যাচ্ছে। বেহায়া হয়ে গেছে। তার বিয়ের কথা যতবার মাথায় আসছে ততবারই হাত পায়ের কাঁপন বেড়ে যাচ্ছে। কোথাও লুকিয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে তাকে।
ছোঁয়া কি করে সয্য করবে? বিকেলে মেয়ে দেখতে যাওয়া হবে। মেয়ে সবার পছন্দ হবে সেটা ছোঁয়ার জানা।
তারপর?
সাদির বিয়ে হয়ে যাবে। মেয়েটা সাদিকে টাচ করবে। সাদির সাথে থাকবে। গম্ভীর মানবটার হৃদয়েও মেয়েটা এক সময় জায়গা করে নিবে। হয়ে উঠবে মেয়েটার হৃদয়হরণী। আর ছোঁয়া সারাজীবন হতাশা নিয়ে বেঁচে থাকবে?
কান্না পায় ছোঁয়ার। ভীষণ কান্না পাচ্ছে। ভীষণ অসহায় লাগছে। কি করবে? কোথায় গেলে সাদিকে পাবে? কার কাছে বলবে? কে সাহায্য করবে?
চোখের পানি মুছে নেয় ছোঁয়া। কেউ দেখলে কি জবাব দেবে?
মন ভালো করতে বাসা থেকে বের হয়। বাড়ির সামনে বিশাল বড় বাগান। এই বাগানটা তুষার চৌধুরী বানিয়েছে। সব ধরণের গাছ আছে এই বাগানে। খুব সুন্দর বাগানটা।
“আরেহহহ তুমি ছোঁয়া না?
ছোঁয়া চমকে পেছনে তাকায়। সাদির সাথে একটা ছেলে। বাইরে থেকে আসলো মনে হচ্ছে। এই ছেলেকে চেনে ছোঁয়া। ছোট বেলায় দেখতো সাদির সাথে। সাদির একমাত্র বন্ধু সে।
” আরেহহ আপনি সামির ভাই না?
ছোট বেলায় সারাক্ষণ আপনার নাকে সর্দি লেগে থাকতো?
সামিরের হাসি মুখটা চুপসে যায়। সাদির সামনে লজ্জায় পড়ে যায় সে।
ছোঁয়া আসলে কথাটা বলতে চায় নি। মুখ ফসকে বেরিয়ে গেছে।
” তোমার তো সর্দিতে গাল দুটোও টইটুম্ব হয়ে থাকতো।
এভাবে পাল্টা ছোঁয়াকে ফাঁসানো হবে ছোঁয়া বুঝতেও পারে নি। সাদির সামনে অপমান। প্রসঙ্গ পাল্টে বলে
“কোথায় গিয়েছিলেন ভাইয়া?
” বন্ধু আমার বউ দেখতে যাবে। তাই পার্লারে নিয়ে গিয়েছিলাম।
মশকরা করে বলে সামির। সত্যিই সেলুনে গিয়েছিলো। ঘন চাপ দাঁড়ি গুলো পরিপাটি করে কেটেছে। চুল গুলোও অনেকটা ছোট করেছে। মেজাজ বিগড়ে যায় ছোঁয়া। সাদির দিকে এক পলক তাকিয়ে চলে যায়।
বেছে বেছে সব থেকে বড় আম গাছটাই উঠে পড়ে ছোঁয়া। ছোট থেকেই গাছে ওঠাতে পটু ছোঁয়া।
জৈষ্ঠ্যমাস। গাছে পাকা পাকা আমগুলো ছোঁয়ার দিকেই যেনো তাকিয়ে আছে। ছোঁয়া আম খেতে থাকে। আর কাঁদতে থাকে।
মনে মনে সাদিকে হাজারখানা গালি দেয়।
সাদি নিজের রুম থেকে ছোঁয়াকে দেখতে পায়। বিরক্তিতে কপালে তিনটে ভাজ পড়ে তার। একটা মানুষ কতোটা ইডিয়েট হলে এতো বড় গাছে উঠতে পারে?
সাদি বেলকনিতে আসে।
“ওইখান থেকে নামো ইডিয়েট
হঠাৎ সাদির ধমকে চমকে ওঠে ছোঁয়া। আমের আঁটি পুরোটা মুখে ঢুকিয়ে ফেলেছিলো। ফেলে দেয়। গাল ফুলিয়ে বলে
” নামবো না আপনার কি?
“আমি আসলে চাপকে চাপকে নামাবো স্টুপিট।
সাদির ঠান্ডা ধমকে মুখ বাঁকিয়ে নেমে পড়ে ছোঁয়া। লোকটা পাষাণ। ভীষণ পাষান।
বিকেলে সবাই মিলে বের হয়। সাদি যেতে চায় নি। মায়ের জোরাজোরিতে যেতে বাধ্য হচ্ছে।
গাড়িতে সাদির পাশেই ছোঁয়া বসেছে। অবশ্যই ইচ্ছে করে বসে নি। পরিস্থিতির চাপে বসতে হয়েছে।
সিফাত ড্রাইভ করছে তার পাশে সিমি বসেছে পরিকে কোলে নিয়ে।
“জিজু আমি বিয়ে করবো।
” হ্যাঁ করবে তো। রাজপুত্র এনে দিবো তোমার জন্য।
“আমার এখুনি বিয়ে করতে মন চাচ্ছে।
সিফাত সিমির দিকে এক পলক তাকায়। সিমি দাঁতে দাঁত চেপে বলে ওঠে
“বাবাকে বলবে?
” অবশ্যই বলবা। এখনি কল করো। আমি বিয়ে করবো তো করবোই।
সাদি এতখন চুপচাপ থাকলেও এখন আর পারছে না। মেয়েটা অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করে। সব কিছুতেই তার বাড়াবাড়ি। ইচ্ছে করছে আরেকটা থাপ্পড় বসিয়ে দিতে। কিন্তু বেপারটা খারাপ দেখায় তাই পারছে না।
“বয়স কতো তোমার?
গম্ভীর গলায় জিজ্ঞেস করে সাদি।
ছোঁয়া ভেংচি কেটে বলে
” সতেরো বছর দুই মাস পাঁচ দিন বয়স আমার। বিয়ের জন্য পারফেক্ট বয়স। আমার একটা বন্ধুর বিয়ে হয়েছে চোদ্দ বছরে। তার একটা মেয়ে হয়েছে। সেই হিসেবে আমার বিয়ের বয়স পার হয়ে গেছে। এখুনি বিয়ে না করলে পিছিয়ে পড়বো আমি। আমাকে বিয়ে করতে হবে।
সাদি ফোঁস করে শ্বাস টানে। সিফাত শুকনো ঢোক গিলে। পরিও এতোখন ছোঁয়ার কথা শুনছিলো। সে বলে ওঠে
“মাম্মা আমিও বিয়ে করবো।
সিমি হতাশ হয়। সিফাত হেসে ফেলে মেয়ের কথা শুনে।
সাদি পকেট থেকে হেডফোন বের করতে করতে বিরবির করে বলে
” ইডিয়েট
ছোঁয়া আবার বলে ওঠে
“হয় আমাকে বিয়ে দাও। নাহলে বাবার কাছে দিয়ে আসো। আমি এখানে থাকতো চাই না। এসেছিলাম শান্তি পেতে। অশান্তি পেছন পেছন হাজির। আমি না জাস্ট পাগল হয়ে যাচ্ছি।
সাদি ফোনে গান চালিয়ে হেডফোন ছোঁয়ার কানে গুঁজে দিয়ে ফোনটা ছোঁয়ার কোলের ওপর রাখে।
ছোঁয়া বড়বড় চোখ করো সাদির দিকে তাকায়। সাদি চোখ বন্ধ করে সিটে মাথা ঠেকিয়ে আছে।
সিমি মুচকি হাস। ঠিক করেছে।
রাগে দুঃখে অভিমানে ছোঁয়ার চোখে পানি চলে আসে। কেউ কেনো তাকে বুজছে না?
কেনো?
সাবিনা বেগমের ঠোঁটের কোণা থেকে হাসি সরছেই না। তুষারও বেশ খুশি। মেয়ে তারা আগেও দেখেছে। মাশাআল্লাহ অনেক ভালো মেয়ে। আজকেই আংটি পড়াবে বলে ঠিক করে ফেলেছে।
ড্রয়িং রুমে বসেছে সবাই। ছোঁয়ার ভীষণ বিরক্ত লাগছে। তারা খোশ গল্প শুরু করে দিয়েছে। যেটা ভালো লাগছে না ছোঁয়ার। সাদি নিচের দিকে তাকিয়ে বসে আছে।
একটু পরে মেয়েকে নিয়ে আসা হয়। সাবিনা বেগম আর মমতা বেগমের মাঝখানে মেয়েকে বসানো হয়। কথার এক পর্যায়ে সাদিকে বলা হয় তাকে আংটি পড়িয়ে দিতে।
“মা তুমিই পড়িয়ে দাও।
ছেলের কথায় খুশিতে গদগদ হয়ে সাবিনা আংটি পড়িয়ে দেয় মায়াকে।
বিয়ের কথা ফাইনাল করেই খাবার মুখে তুলবে ওনারা। তাই তাড়াতাড়ি ঠিক করে ফেলা হয়। সামনে শুক্রবারেই বিয়ে।
এবার সাদি এবং মায়াকে আলাদা কথা বলতে পাঠানো হয়।
ছোঁয়ার ভীষণ অস্থির লাগছে। সকালে একটু খেয়েছিলো সারাদিন একটা আম ছাড়া আর পেটে কিছুই পড়ে নি। ছোঁয়া বেশ বুঝতে পারছে যে কোনো মুহুর্তে সে মাথা ঘুরে পড়ে যাবে। এখানে সে সিনক্রিয়েট করতে চাই না।
তাই কাউকে কিছু না বলে আস্তে আস্তে বেরিয়ে যায় এই বাড়ি থেকে। কেউ তাকে খেয়ালই করে না।
গাড়ির কাছাকাছি যেতেই মাথা ঘুরে আসে। চোখ দুটো অন্ধকার হয়ে আসে। গাড়ির চাবি আনে নি সে। ভেবেছিলো গাড়িতে বসে থাকবে। কিন্তু এবার?
এতো কিছু ভাবার সময় ছোঁয়ার হয় না। আস্তে আস্তে ঢলে পড়ে সে। মাটিতে পড়ার আগেই কেউ একজন খুব যত্ন করে ধরে ফেলে ছোঁয়াকে। নরম তুলতুলে দেহ খানা বুকের মধ্যে চেপে ধরে।
চলবে
#হৃদয়হরণী
#পর্ব:৭
#তানিশা সুলতানা
ছোঁয়াকে গাড়িতে বসিয়ে ফোঁস করে শ্বাস টানে সাদি। ওয়ালেট ফেলে গিয়েছিলো সে। সেটাই নিতে এসেছিলো। ছোঁয়াকে পড়ে যেতে দেখে না ধরে পারে নি।
চোখ বন্ধ করে সিটে মাথা ঠেকিয়ে বসে আছে ছোঁয়া। ঘামে শরীর ভিজে গেছে। অস্থির লাগছে তার। স্পষ্ট বুঝতে পারছে পাশে সাদি বসেছে কিন্তু কিছু বলতে পারছে না।
ইচ্ছে করছে চিৎকার করে বলতে “আপনি বিয়েটা করবেন না সাদি। প্লিজ বিয়েটা করিয়েন না। আপনাকে অন্য কারো সাথে সয্য করতে পারবো না আমি। কিন্তু গলা দিয়ে কথা বেরুচ্ছে না।
” আর ইউ ওকে?
সাদি জিজ্ঞেস করে। ছোঁয়া জবাব দেয় না। সাদি ছোঁয়ার দিকে তাকাতেই দেখতে পায় মেয়েটার শরীর ঘামে ভিজে যাচ্ছে। হাঁসফাঁস করছে মেয়েটা।
সাদি কাঁচ বন্ধ করে এসি চালিয়ে দেয়। ছোঁয়ার গলার সাথে পেঁচানো ওড়নাটা খুলে দেয়। পিঠের ওপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা চুলগুলো এলোমেলো ভাবেই ঝুঁটি করে দেয়। পানির বোতলের সিপি খুলে ছোঁয়ার মুখের সামনে ধরে। হা করে পানি খেয়ে নেয় ছোঁয়া।
এবার একটু ভালো লাগছে।
ছোঁয়া ঘাড় বাঁকিয়ে সাদির দিকে তাকায়। কিছু একটা ছিলো ছোঁয়ার চোখে যা সাদিকে অস্থির করে তুলছে।
সাদি নিজের কপালে হাত বুলায়। বলার মতো অনেক কথা থাকলেও সে বলতে পারছে না।
“থাকো আসছি আমি
সাদি নেমে যায়।
ছোঁয়া তাকিয়ে থাকে। মানুষটা চলে গেলো। হারিয়ে যাচ্ছে ছোঁয়ার থেকে৷ অনেক দূরে চলে যাচ্ছে। এখান থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে মায়া ছাঁদের রেলিং ঘেসে দাঁড়িয়ে আছে। তার দৃষ্টি সাদির দিকেই।
মায়ার চোখে মুখে খুশির ঝিলিক। সাদমান চৌধুরীকে জিতে নিচ্ছে যে। খুশি হবে না? ছোঁয়ার কান্না পায়। কিন্তু এখন আর কাঁদে না।
মনে মনে বিরবির করে বলে
” আমার অনুভূতি যদি মিথ্যে হয় তবে তিনি অন্যের হোক। কিন্তু আমার মনে যদি তার প্রতি অসীম ভালোবাসা থেকে থাকে। সে আমারই হবে। আমার আল্লাহ আমাকে হতাশ করবেন না। আমি তাকে পাবোই পাবো।
ছোঁয়ার খারাপ লাগছে জেনে সিমি চলে আসে। পরিকে রেখে দিয়েছে সাবিনা। সিমি ড্রাইভ করতে জানে। সে ছোঁয়াকে কোনো প্রকার প্রশ্ন না করে ড্রাইভ করে বাড়ি চলে আসে।
পরের সকালটা হয় একদম অন্য রকম। আড়মোড়া ভেঙে চোখ খুলতেই ছোঁয়া একটু হাসে। সারা রাত ভেবেছে। একটা ছেলের জন্য আর যাই হোক এভাবে ভেঙে পড়া ঠিক না। বাবা অনেকবার কল করেছে। ছোঁয়া হাসি মুখে কথা বলতে পারি নি। ছোঁয়া বুঝতে পারে তার জন্য তার বাবারও মন খারাপ। আজকে তিনি আসছে বাড়িতে। আর যাই হোক বাবার সামনে মন খারাপ করে থাকলে বাবা কষ্ট পাবে।
সে বিয়ে করছে করুক। এরকম কান্না কাটি করে তো আর বিয়ে আটকানো যাবে না। কপালে থাকলে এমনিতেই বিয়ে আটকে যাবে। সবটাই ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিয়ে নিজেকে ফ্রেশ রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
বিছানা থেকে নেমে ফ্রেশ হয়ে নেয় ছোঁয়া। হাতের ব্যাথা অনেকটাই কমে গেছে। ঘা শুকিয়ে গেছে।
গলায় ওড়না পেঁচিয়ে এক দৌড় দেয় ছোঁয়া। সাদি সিঁড়ি বেয়ে নামছিলো। ছোঁয়া তাকে খেয়ালই করে নি। দৌড়ে নামতে গিয়ে সাদির সাথে ধাক্কা লেগে যায়। সাদি বসে পড়ে। ছোঁয়া গিয়ে সোজা ফ্লোরে পড়ে যায়।
খুব একটা ব্যাথা পায় নি সে। সাদির দিকে এক পলক তাকিয়ে মুখ বাঁকিয়ে উঠে পড়ে ছোঁয়া।
“চোখে দেখেন না? না কি বিয়ের খুশিতে চোখ খেয়ে ফেলছেন? আজাইরা
সাদি দাঁতে দাঁত চেপে দাঁড়িয়ে যায়। ছোঁয়ার দিকে এক পলক তাকিয়ে সোফায় গিয়ে বসে। বেশ অবাক হয়েছে সে ছোঁয়াকে দেখে। আবার ভালোও লাগছে যাক মেয়েটা তাহলে স্বাভাবিক হয়েছে।
ছোঁয়া রান্না ঘরে ঢুকতে ঢুকতে বলে
” বড় মা খেতে দাও। কাল থেকে যে আমি না খাওয়া একবারও তো খোঁজ নিলে না? আমার আপন আপি আপন দাদি আপন বড়বাবা কেউ ই খোঁজ নিলো না আমার।
আমি কি বোঝা হয়ে গেছি? না কি একদিন খাই নি বলে তোমাদের চাল বেচে গেছে কোনটা?
সাবিনা মুচকি হাসে। ছেলের বিয়ের চিন্তায় মেয়েটার কথা ভুলেই গিয়েছিলো তিনি।
সিমি পরোটা নিয়ে ছোঁয়ার সামনে আসে। ছিঁড়ে তাতে ডিম পুরে মুখের সামনে ধরে
“এভাবে খাবো না আমি। আমাকে কি তোমার বাচ্চা মনে হয় না কি? টেবিলে বসে পানি নিয়ে আরামসে খাবো আমি। বাচ্চাদের মতো ঘুরে ঘুরে খাওয়ার স্বভাব আমার নেই।
বলেই টেবিলে গিয়ে বসে ছোঁয়া। সাদি পেপারে চোখ বুলাচ্ছে। ভাঙা রেডিওর জন্য পড়তে পারছে না।
সিমি মুচকি হেসে ছোঁয়ার পেছন পেছন এসে তাকে খাইয়ে দিতে খাবে। খাওয়া শেষে সিমি চলে যায়।
ছোঁয়া টিস্যু দিয়ে মুখ মুছে বলে
” বড় মা আমার জন্য সুন্দর ছেলে দেখবা। ত্রিশ বত্রিশ বছরের খুনখুনে বুড়ো খ্যাটখ্যাটে স্বভাবের ছেলে আমার পছন্দ না
আমি একটা সুন্দরী মেয়ে। আমি সুন্দর স্মার্ট হ*ট ছেলে ডিজার্ভ করি আমি। সেরকম একটা ছেলে জলদি খুঁজে আনো।
সাদি ছোঁয়ার দিকে তাকায়। নিজেকে বুড়ো বলাতে বেশ গায়ে লেগেছে তার। ইচ্ছে করছে মেয়েটাকে তুলে ছাঁদ থেকে ফেলে দিতে। বা দুই চারটা কথা শুনিয়ে দিতে। কিন্তু এটা তার স্বভাবের সাথে যায় না।
তাই সরু চোখে তাকিয়েই থাকে। ছোঁয়া ভুলেও সাদির দিকে তাকায় নি।
সাবিনা টেবিলে খাবার রাখতে রাখতে বলে
“ঠিক আছে ঠিক আছে। তুই যা বলবি তাই হবে
” ইডিয়েট
বলেই সাদি চলে যায়। সে এসেছিলো খেতে। কিন্তু তার খাওয়ার মুড চলে গেছে। ছোঁয়া সাদির চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ভেংচি কাটে।
সাজ্জাদ এসে ছোঁয়ার পাশে বসে
“মামনি চলো তোমাকে আজকে ভর্তি করিয়ে দিয়ে আসি।
ছোঁয়া চেয়ার টেনে সাজ্জাদের একদম কাছাকাছি বসে
” বড় বাবা তোমার ছেলের ফোন ভেঙে ফেলেছি আমি। ল্যাপটপও ভেঙেছি। সে এখন আমার ফোন চালাচ্ছে। তাকে টাকা দিও বা কিনে দিও। সে তো জীবনেও চাইবে না।
সাজ্জাদ খুশি হয়। তখনই বেরিয়ে পড়ে। তার ছেলের অসুবিধা হচ্ছে নিশ্চয়। জীবনেও সাদি তাকে বাবা বলে ডাকে নি। কখনো কোনো আবদার করে নি। বাবার হাত ধরে স্কুলে যায় নি। ছেলের আবদার পূরণের জন্য অপেক্ষা করে সাজ্জাদ।
তার ছেলেটা এমন স্বভাবের কেনে হলো বুঝতে পারে না তিনি।
ছোঁয়া নিজের রুমে যাচ্ছিলো। প্রথমে সাদির রুম তার পরেই ছোঁয়ার রুম।
সাদি গম্ভীর গলায় বলে
“তোমার সাথে কথা আছে এখানে এসো
ছোঁয়া যেনো কথাটা শুনতেই পায় নি। তেমন ভাব করে চলে যেতে নেয়।
সাদি ছোঁয়ার হাত ধরে
” ইডিয়েট বলছি না কথা আছে।
ছোঁয়া সাদির দিকে তাকায়
“সরি ভাইয়া। আমি দেশের প্রেসিডেন্ট না যে আমার সাথে আপনার কথা থাকবে। আপনার সাথে কথা বলার এতোটুকুও ইন্টারেস্ট নেই আমার। আর আপনার রুমে তো আরও যাবো না। ছোঁয়া চৌধুরী যার তার রুমে যায় না।
বলেই সাদির হাত ছাড়িয়ে নিতে চায়। পারে না। সাদি শক্ত করে ধরে রেখেছে। ছোঁয়া গোল গোল চোখে তাকায় সাদির দিকে
” হাত ছাড়ুন ভাইয়া।
“ড্রামা বাদ দিয়ে এসো
সাদির গম্ভীর গলা
” যাবো না।
বলেই ছোঁয়া সাদির হাতে কামড় বসিয়ে দেয়। সাদি কোনো শব্দ না করে ছোঁয়ার হাত ছেড়ে দেয়।
চলবে