#হৃদয়হরণী
#পর্ব:৪২
#তানিশা সুলতানা
সেলিম ডিপ্রেশনে পড়ে গিয়েছে। এতো তাড়াতাড়ি তিনি মেয়েকে বদমাইশটার হাতে তুলে দিতে চায় না। এমনিতেই তার মেয়ের বয়স কম। তার ওপর পড়ালেখায় ভালো না। এখনই স্বামীর সাথে বেঁধে দিলে কখনোই সে পড়তেই চাইবে না। এই বছর বিয়ে পরের বছর বাচ্চা। মেয়েটার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে। সেলিম চায় না তার ছোঁয়া সিমির মতো সংসার নিয়ে পড়ে থাকুক। তার ইচ্ছে মেয়েকে প্রতিষ্ঠিত দেখা।
আর রইলো পড়ে সাদির কথা?
সে আরেক বেয়াদব। শশুড়কে যে ছেলে হুমকি দিতে পারে। অবশ্যই সে ছেলে ভালো নয়।
বুড়ো বয়সে মান সম্মান নিয়ে টানাটানি লাগিয়ে দিয়েছে। কয়েকদিনে জীবনটাকে তছনছ করে দিয়েছে।
সেলিমের কলিগ সুফিয়া। সে সেলিমের ছোট বেলার বান্ধবী। দুজন এক সাথে বড় হয়েছে। এবং এখন একই অফিসে চাকরি করছেন। দুজন এসেছিলো এক সাথে লান্স করতে। কিন্তু বদমাইশটা এতো দূরে থেকে ব্যাপারটা জানলো কি করে?
টেনশনে কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে সেলিমের। সে হাত মোছা টিস্যু দিয়েই কপালের ঘাম মুছে নেয়। সেলিমের অবস্থা দেখে সুফিয়া জিজ্ঞেস করে
“আর ইউ ওকে সেলিম?
চমকে ওঠে সেলিম। তাকায় সুফিয়ার দিকে। সুফিয়ার একটা ছেলে এবং একটা মেয়ে আছে। বরকে ডিভোর্স দিয়ে দিয়েছে আরও কয়েক বছর আগে। ডিভোর্স বলতে কাগজে কলমে ছাড়া খাড়া হয় নি। মুখে মুখে দুজন দুজনকে ডিভোর্স দিয়েছে এবং এক সাথে থাকে না। সুফিয়ার স্বামী সুফিয়াকে বোঝানোর দায়িত্ব দিয়েছেন সেলিমকে। বুড়ো বয়সে বউ ছাড়া থাকতে পারছে না সে।
তাই তো সেলিম কাজ ফেলে এসেছে লান্স করতে।
আর বদমাইশ সাদি এটারই সুযোগ দিচ্ছে।
বুড়ো বয়সে পরক্রিয়া ট্যাগ লাগিয়ে দিচ্ছে। ডেঞ্জারাস ছেলে।
সেলিমের থেকে জবাব না পেয়ে সুফিয়া সেলিমের হাতের ওপর হাত রাখে। চমকে নিজের হাতটা সরিয়ে নেয় সেলিম৷ নাজমা এই ব্যাপার জানতে পারলে তেলের মধ্যে চুবিয়ে ভাজি করবে তাকে।
শুকনো ঢোক গিলে তুতলিয়ে বলে
” স্বামীর কাছে ফিরে যাচ্ছো না কেনো?
সুফিয়া দীর্ঘ শ্বাস ফেলে।
“সেলিম তোমার ইচ্ছে করে না প্রেম করতে?
সুফিয়ার মুখ থেকে এমন কথা শুনে কেশে ওঠে সেলিম। সুফিয়া তাকে পছন্দ করে ছোট বেলা থেকে এটা তার জানা। ছোট বেলায় অনেকবার প্রপোজও করেছে। সেলিমের বিয়ের দিনও প্রচুর কান্না করেছিলো।
সেলিম আশেপাশে তাকায়। সাদি কি আশেপাশে আছে? জানতে পারলে হালুয়া টাইট করে ছাড়বে। কপাল করে জামাই পেয়েছে কি না?
সেলিম তারাহুরো করে দাঁড়িয়ে যায়।
” আআমি আসছি। তোমার বর খুব ভালো মানুষ তার কাছে ফিরে যাও
বলেই এক প্রকার দৌড়ে চলে যায় সেলিম।
__
অফিস বাদ দিয়েই বউকে নিয়ে শপিং মলে আসতে হয়েছে সাদিকে। কিচ্ছু করার নাই। বাচ্চা কাচ্চা বিয়ে করলে এমনটাই হবে। বসের মেয়ে ঈশিতা বারবার কল করে যাচ্ছে সাদিকে। আজকে তাদের ইমপটেন্ট একটা মিটিং ছিলো। ঈশিতা ভীষণ বিরক্ত সাদির প্রতি। বউ আসবে আর নাচতে নাচতে চলে যেতে হবে? কাজের থেকে বউ বড় হয়ে গেলো?
ছোঁয়াকে একটা দোকানে ঢুকিয়ে সাদি একটু সাইডে গিয়ে ফোন রিসিভ করে।
ভেসে আসে ঈশিতার রাগান্বিত কন্ঠ
“কাজের থেকে বউ বড়? তুমি জানো না মিটিং আছে?
সাদি শান্ত গলায় জবাব দেয়
” হ্যাঁ কাজের থেকে আমার কাছে আমার বউ বেশি। প্রতিদিন কাজ করি। আমার বউ প্রতিদিন আবদার করে না।
ঈশিতা দাঁতে দাঁত চেপে হাত মুষ্টিবন্ধ করে ফেলে।
“তুমি জানো তোমার এই গফিলতির জন্য তোমার চাকরি চলে যেতে পারে?
” গেলে যাবে। ডিস্টার্ব করবেন না আমায়।
সাদি কল কেটে দেয়। কয়েকদিন ধরেই মেয়েটা জ্বালাচ্ছে। বসের মেয়ে বলে কিছু বলতেও পারছে না। আবার সয্য করতেও পারছে না। গায়ে পড়া মেয়েদের বরাবরই সাদির অপছন্দ।
ছোঁয়া জামা পছন্দ করে ফেলেছে। হাতা কাটা একদম হাঁটুর পর্যন্ত জামাটা কালো রংয়ের। দেখতে দারুণ। ছোঁয়াকে বেশ মানাবে।
সাদি এগিয়ে যায়।
“পছন্দ হয়েছে?
ছোঁয়া হেসে মাথা নারায়।
” প্রাইজ কতো?
সাদি দোকানদারকে জিজ্ঞেস করে।
“পাঁচ হাজার।
সাদি পকেট থেকে ওয়ালেট বের করে।
” একটা লম্বা জামার দাম যদি হাজার টাকা হয়। তাহলে হাঁটু ওবদি জামার দাম ৩০০ টাকা হওয়ার কথা। জানি আমার বরটাকে দেখতে বোকা বোকা লাগে। তাই বলে দিনে দুপুরে ডাকাতি?
বলেন তো কয়টা এক টাকার নোটে পাঁচ হাজার টাকা হয়? জীবনে চোখে দেখছেন?
৩০০ টাকার এক টাকা বেশি দিবো না।
ছোঁয়ার কথা শুনে দোকানদার শুকনো ঢোক গিলে। সাদিও ঘাবড়ে যায়। সিনক্রিয়েট করে ফেলবে এবার তার আধপাগল বউ।
“দেখো
সাদি কিছু বলতে যায়।
” দেখাদেখির কিছুই নাই। দেড় ফুট জামার দাম এতো টাকা কখনোই হতে পারে না। মামলা করবো আমি ওনাদের নামে। একদম বোকা ভাববেন না আমায়।
দোকানদার কিছু বলতে যায়
“ম্যাম এটা
সাদি হাত উঁচু করে দোকানদারকে থামিয়ে দেয়। ওয়ালেট থেকে ক্রেডিট কার্ড বের করে দোকানদারের হাতে দেয়
” ৩০০ টাকার এক টাকাও বেশি রাখবে না ঠিক আছে।
ইশারায় বলে দেয়। যা দাম তাই রাখতে।
দোকানদার হেসে চলে যায়।
ছোঁয়া জামা দেখতে ব্যস্ত। তার ইচ্ছে করছে এখুনি জামাখানা গায়ে চাপাতে। এই রকম জামা সে ফল্ট মুভির নায়িকা নোয়ার গায়ে দেখেছিলো। ছোঁয়াকেও কি একদম নোয়ার মতো লাগবে?
কেনাকাটা শেষে ছোঁয়াকে বাসায় ড্রপ করে সাদি আবারও অফিসে চলে যায়। বউয়ের চক্করে তার খাওয়াটা হয় না।
তবুও এতটুকুও রাগ হচ্ছে না আধপাগল বউয়ের ওপর। বড্ড আদরের তার বউটা।
__
ছোঁয়া আজকে ভীষণ খুশি। খুশি হওয়ার দুটো কারণ আছে। এক. সাদি আজকেও বাড়িতে আসবে। দুই. হাঁটু কাটা জামা পেয়েছে। সাদির ফুপি বাড়িতে আজকে দাওয়াত ছিলো। সেখানেই সকলে চলে গিয়েছে। সাদি এবং ছোঁয়াকে রাতে যেতে বলেছে। কিন্তু ছোঁয়া তো যাবেই না। আর সাদিও যাবে না ছোঁয়া জানে।
আজকে একটু সাজুগুজু করা যাক।
কখনো বরকে ইমপ্রেস করার জন্য সাজুগুজু করা হয় নি।
জামা খানা শরীরে চাপিয়ে সাজতে বসে ছোঁয়া। চুল গুলো উঁচু করে ঝুঁটি বেঁধে নেয়। ঠোঁট টকটকে লাল লিপস্টিক। চোখে হালকা কাজল। উঁচু জুতো। হাতে কালো একটা ব্যাচ।
আয়নায় নিজেকে দেখে নিজেই শুকনো ঢোক গিলে ছোঁয়া। সাদি দেখে কি বলবে? “হট, কিউট, সুইট, নাইস”
কোনটা বলবে?
ছোঁয়ার ভাবনার মাঝেই খট করে দরজা খোলার আওয়াজ পায়। ছোঁয়া দাঁড়িয়ে যায়। পেছনে ঘুরে তাকায়।
সাদি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। হাতে থাকা ফাইল খানা পরে যায়। চোখ দুটো বড়বড় করে ফেলে। দুই ঠোঁটের মাঝখানে কিঞ্চিৎ ফাঁকা হয়ে যায়। এ কাকে দেখছে?
ছোঁয়া এক গাল হেসে এগিয়ে আসে।
“আমায় কেমন লাগছে?
সাদির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করে।
সাদি জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নেয়। এদিক সেদিক দৃষ্টি ঘোরায়। নিজেকে স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টা চালায়।
” ভভভালো
ছোঁয়া বিরক্ত হয়।। আরও একটু এগিয়ে যায় সাদির দিকে৷ কলার টেনে কাছাকাছি নিয়ে আসে
‘”ভালো করে দেখে বলুন।
সাদি আবারও শুকনো ঢোক গিলে।
তাকায় ছোঁয়ার লাল টকটকে ওষ্ঠদ্বয়ের দিকে।
শুকনো কশি দিয়ে বলে
“হ
ছোঁয়া হাসে। আরও একটু টানে নিজের দিকে।
” তারপর
“টটট
” এক সাথে কি হয়?
“হহহটটটট
চলবে
#হৃদয়হরণী
#পর্ব:৪৩
#তানিশা সুলতানা
ইতিহাসের কোথাও লেখা আছে বউকে দেখে বর নার্ভাস হয়ে যায়? হয়ত লেখা নেই। তবে সাদমান চৌধুরী নামটা গোটা গোটা অক্ষরে লিখে রাখা উচিত। এই যে বেচারা বউকে দেখে নার্ভাস হয়ে যাচ্ছে। তার গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। এই মুহুর্তে সে ভীষণ পানি পিপাসায় ভুগছে।
অথচ সারাদিন ছোট ছোট ড্রেস পড়া মেয়েদের সাথে তার ওঠাবসা। কখনো তাদের দিকে ভালো করে তাকানোও হয় নি।
কিন্তু বউকে দেখে অবস্থা খারাপ।
সাদির আধপাগল বউটা বুকের সাথে লেপ্টে আছে। শার্টের কয়েকটা বোতাম খুলে ছোঁয়া নাক ডুবিয়ে দেয় লোমশযুক্ত বুকে। ছোট ছোট কিছু চুমুও খেয়ে নেয়।
মানুষ কতো কিছুতে আসক্ত হয়। আর ছোঁয়া আসক্ত এই বুকটাতে। এতো ভালো লাগে। যেনো জাদু মিশে আছে। সারাদিন এখানে লেপ্টে থাকতে পারলো মন জুড়াতো। কিন্তু কিপ্টা বর তো থাকতেই দেয় না।
সাদি এখনো ছোঁয়াকে ধরে নি। বিরক্ত ছোঁয়া। একা একা ব্যালেন্স রাখতে হিমশিম খাচ্ছে।
“আমাকে জড়িয়ে ধরছেন না কেনো?
কেরোসিন মেখেছি কি?
ছোঁয়া সাদির হাতটা তার পিঠে রাখে। আবারও শুকনো ঢোক গিলে সাদি। মনে মনে বলেও ওঠে
” কেরোসিন কি মাখো নি? জ্বালিয়ে পুরিয়ে দিচ্ছে আমায়।
ছোঁয়া চোখ দুটো বন্ধ করে অনুভব করছে মুহুর্তটা। প্রিয় মানুষটিকে আলিঙ্গন করতে এতোটা সুখ সুখ লাগে কেনো?
পৃথিবীর সব থেকে সুখী ব্যক্তি কেনো মনে হয় নিজেকে?
“আই লাভ ইউ সাদু বেবি।
আপনাকে ছাড়া আমি দুটো সেকেন্ডও কেনো চিন্তা করতে পারি না? আপনার একটু ইগনোরও আমি সয্য করতে পারি না। আমার না টাকা পয়সা বাড়ি গাড়ি কিছুই লাগবে না। আপনি শুধু আমার হয়ে থাকুন।
ভালোবাসতে হবে না।শুধু আমার ভালোবাসা টুকু গ্রহণ করিয়েন।
প্রায়প্রিয় স্ত্রীকে আরও একটু গভীর ভাবে আলিঙ্গন করে সাদি। মাথায় অধর ছোঁয়ায়। বড্ড বেশি বলতে ইচ্ছে করছে
” তুমি আমার শখের নারী ছোঁয়া। তোমাকে পাওয়ার জন্য হাজারবার তোমার বাবার কাছে হাত পেতেছি। তিনি ফিরিয়ে দিয়েছিলো আমায়। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম তোমায় ভুলে যাওয়ার। কিন্তু পারি নি।
তোমায় আমি বড্ড বেশি ভালোবাসি।
মনের কথা মনেই রেখে দেয় সাদি। বলা হয় ছোঁয়াকে। বরাবরই অনুভূতি প্রকাশ কাঁচা সাদি। মন খুলে সবাই বলতে পারে না দুঃখ কষ্ট বা ভালোলাগা খারাপ লাগা। সবটা নিজের মধ্যে পুষে রাখে।
ছোঁয়াকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে নেয় সাদি। দুই হাতে ছোঁয়ার মুখখানা তুলে ধরে। বন্ধ চোখের পাতায় ফু দেয়। পিচ্চিটা কেঁপে ওঠে। হাসে সাদি। অন্য রকম সুন্দর লাগছে ছোঁয়াকে। চোখেমুখে ভর করেছে অন্য রকম মুগ্ধতা। আবেদময়ী লাগছে। হঠাৎ বড় হয়ে গেলো না কি? চোখে মুখের সেই বাচ্চামি ভাবটা কোথায় চলে গেলো?
না কি সাদিই ঘোরের মধ্যে চলে গিয়েছে। এবং ছোট্ট ছোঁয়াকে পরিপূর্ণ নারী ভাবতে শুরু করেছে।
জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নেয় সাদি। দৃষ্টি তার ছোঁয়া অধরপানে।
“ইই..ডিয়েট ক্যান আই
চোখ খুলে তাকায় ছোঁয়ার। সাদির ইশারা বুঝতে পেরে লজ্জায় নুয়িয়ে পড়ে। অধর কামড়ে দুই দিকে মাথা নেরে না করে। চোখে তার ভয়।
মনে পড়েছে একবার সাদির কথা পাগলামির কথা। দম বন্ধ হয়েই যাচ্ছিলো প্রায়।
আজকেও এমন করবে কি?
সাদির থেকে নিজেকক ছাড়াতে চেষ্টা করে ছোঁয়া। সাদি ছাড়ে না। বরং আরও একটু চেপে দাঁড়ায়।
” জান প্লিজজ
একটু
বলতে বলতে ছোঁয়া অধর জোড়া নিজের অধরের আয়ত্তে নিয়ে নেয়।
তখনই ছোঁয়া মুখটা পিছিয়ে নেয়। সাদি ভ্রু কুচকে তাকায়। বিরক্ত সে। নিজেই উসকাবে। তার পিছিয়ে যাবে।
ছোঁয়া মাথা নিচু করে ফেলে
“আগে ভালোবাসি বলেন।
মুখ বাঁকায় সাদি। হাতের মুঠোয় পুরে নেয় ছোঁয়া ঝুঁটি বাঁধা চুল গুলো।
দাঁতে দাঁত চেপে বলে
” ভালোবাসি বললে কিন্তু তুই আজকে শেষ।
শুকনো ঢোক গিলে ছোঁয়া। আজকে থেকে সাদির থেকে ভালোবাসি শুনেই ছাড়বে। ঢেড় জানো লোকটা তাকে অনেক ভালোবাসে। তবুও কেনো এতো লুকোচুরি? সে কি বোঝে না তার থেকে ভালোবাসি শুনতে ছোঁয়া কতোটা পাগল হয়ে আছে?
“প্লিজজ
একবার বলুন।
একদম নরাচরা করবো না। স্টং হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবো।
হাসে সাদি।
কপালে পড়ে থাকা ছোঁয়ার ছোট চুল গুলো কানের পেছনে গুঁজে দেয়। মাথা নুয়িয়ে ছোঁয়ার কানের কাছে ঠোঁট নেয়।
“ভালোবাসি তোমায় ছোঁয়া। বড্ড বেশি ভালোবাসি। তুমি আমার শখের নারী।
চোখ বন্ধ করে শুনতে থাকে ছোঁয়া। এই প্রথমবার সাদি তার নাম ধরে ডাকলো। লোকটার মুখে ছোঁয়া নামটা একটু বেশিই সুন্দর শোনালো।আর কি বললো? “শখের নারী”
এটাও লিখা ছিলো কপালে?
ছোঁয়ার চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছো “সবাই শুনো
আমার সাদমান চৌধুরী আমাকে ভালোবাসি বলেছে। আমি তার শখের নারী। যে পুরুষটাকে আমি পাগলের মতো ভালোবাসি। সেই পুরুষটাও আমাকে ভালোবাসে।
তোমরা শুনো সবাই।।
আমাদের জন্য দোয়া করো। আমি যেনো এই পুরুটার বুকেই মাথা রেখে দূনিয়া ছাড়তে পারি।”
ছোঁয়া চোখ খুলে। সাদির চুল গুলো মুঠো করে ধরে অধরে অধর ছোঁয়ায়। প্রেয়সীর সাড়া পেয়ে উম্মাদ হয়ে ওঠে গোমড়ামুখো সাদি। ভালোবাসায় ভরিয়ে দিতে থাকে পাগলীটাকে।
হাতের লাগামহীন ছোঁয়া এবং প্রেমিক রূপি স্বামীর চুম্বনে পাগল প্রায় অবস্থা ছোঁয়ার। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। তল পেটে মোচর দিচ্ছে। সুখ কষ্ট ভালো লাগা খারাপ লাগার এক অদ্ভুত অনুভুতিতে ভাসতে থাকে। মুঠো করে চুল ধরে রাখা হাতটা আরও শক্ত হয়ে আসে। দুই চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ে দু ফোঁটা নোনাজল।
সাদি ছোঁয়ার চোখের পানির মূল্যায়ন না করে কোলে তুকে নেয়। বউটাকে।
আর তখনই ভেসে আসে সেলিমের কন্ঠ
“মামনি দরজা খুলো। আব্বু চলে এসেছে।
ছোঁয়া হাঁসফাঁস করতে থাকে। সাদি বিরক্ত। ঠাসস করে কোল থেকে নামিয়ে দেয় ছোঁয়াকে।
” আজকে শশুড়ের মুখোশ উন্মোচন না করলে আমার নামও সাদি না।
রোমাঞ্চটাও করতে দিচ্ছে না।
চলবে