#হৃদয়হরণী
#পর্ব:৪০
#তানিশা সুলতানা
সূর্যের আলো চোখে পড়তেই ঘুম হালকা যায় ছোঁয়ার। গতরাতে অস্বস্তির সাগরে ভাসতে ভাসতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছিলো মনে নেই।
বিরক্ত হয় সূর্যের ওপর। হাত দিয়ে আড়াল করার চেষ্টা চালায় মুখখানা। তবুও কাজ হয় না। আলোটা আসছে কোথা থেকে?
টেনে টুনে চোখ খুলে। দেখে জানালা খোলা। এটা তার নিরামিষ জামাইয়ের কাজ ভালোই বুঝতে পারছে। কিন্তু সাহেব কোথায়?
আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসে ছোঁয়া। পরিপাটি রুম এবং বেলকনিতে মেলে দেওয়া শার্ট দেখে বুঝতে পারে লোকটা অফিসে চলে গেছে। ছোঁয়া হামি দিয়ে বিছানা থেকে নামে। এলোমেলো চুল গুলো হাত খোপা করতে করতে রুম থেকে বের হয়।
প্রথমেই চোখ পড়ে সাবিনা বেগমের দিকে। সে ড্রয়িং রুম ঝাঁড়ু দিচ্ছে।
ছোঁয়াকে দেখে তিনি ঝাঁড়ু রেখে এগিয়ে আসে। ছোঁয়ার পা থেকে মাথা পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে রিনরিনিয়ে বলে
“গোছল করে নে গিয়ে।
ছোঁয়া আবারও হামি দেয়। তার ঘুমই সম্পূর্ণ হয় নি। এখন নিজের তুলতুলে বিছানায় গিয়ে আরেক দরফা ঘুমিয়ে নিবে এটাই তার প্ল্যানিং।
কিন্তু নিরামিষ বরের নিরামিষ মা গোছল করতে বলছে?মারতে চায় না কি?
” জ্বালিয়ো না বড়মা। আমি শুধু আজকে কেনো? কালকেও গোছল করবো না। পানি দেখেছো? যে ঠান্ডা। শীত পড়ে যাচ্ছে। তুমি কি ফিল করছো না?
দুই দিন পরপর গোছল করা শীতকালের নিয়ম।
সাবিনা ভ্রু কুচকে ফেলে। এরকমই ছোঁয়া। ঠান্ডার দিনে সে গোছল নিয়ে বায়না করবে। কিছুতেই গোছল করতে চাইবে না। একদিন বা দুইদিন পরপর তিনি গোছল করবে।
“ছোঁয়া কথা বাড়াস না। জলদি গোছল সেরে আয়। এখুনি সকলে চলে আসবে খেতে।
ছোঁয়া বিরক্ত। চোখ মুখ কুঁচকে ফেলে।
” রাতে তোমার ছেলে ঘুমতে দেয় নি। জ্বালিয়ে মেরেছে। এখন তুমি জ্বালাচ্ছো? তোমরা দুজন কি ঠিক করে রেখেছো আমাকে শান্তি দিবে না?
লজ্জা পেয়ে যায় সাবিনা। মাথা নিচু করে ফেলে। অস্বস্তিতে হাঁসফাঁস করছেন তিনি। ছেলে এবং ছেলের বড়য়ের পারসোনাল কথা শোনার মতো ধৈর্য তার নেই।
“বেশি কথা বলিস না ছোঁয়া।
ছোঁয়া দীর্ঘ শ্বাস ফেলে
” বলবো না? তোমার ছেলে কি করেছে শুনবে না? বজ্জাত ছেলে তোমার। তুমি তো জানো আমি ঘুম কতো ভালোবাসি। তোমার নিরামিষ ছেলে আমার ঘুমের বারোটা বাজিয়েছে।
সাবিনা বেগম কিছু বলতে পারে না।
নাজমা বেগম চলে আসেন। তিনি রান্না করছিলো। ছোঁয়া এবং সাবিনার ফুঁস ফুঁস শুনে টিকতে পারলো না।
“কি হয়েছে ছোঁয়া?
মাকে পেয়ে ছোঁয়া আহ্লাদী হয়ে ওঠে। গাল ফুলিয়ে বলে
” দেখো না বড় মা গোছল করার জন্য চাপ দিচ্ছে। এই ঠান্ডায় গোছল করা যায়? আমাকে আর বড়মার পছন্দ হচ্ছে না। সে আমাকে ঠান্ডা পানিতে ডুবিয়ে মা*রতে চাচ্ছে। ভালোবাসে না আমায়।
নেকা কান্না করে বলে ছোঁয়া।
নাজমা বেগম মেয়ের অবস্থা দেখে শুকনো ঢোক গিলে। গলার খানিকটা নিচে স্পষ্ট কামড়ের দাগ। টিশার্টের গলা বেশ খানিকটা নেমে আছে৷ পাগল মেয়ের এসবে খেয়াল নেই।
জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিয়ে বলে
“ছোঁয়া এক সাথে থাকলে ফরজ গোছল করতে হয়। ন্যাকামি না করে চুপচাপ যাও গোছল সেরে আসো।
এতখনে ছোঁয়ার মাথায় কথাটা ঢোকে। চমকে চোখ দুটো বড়বড় করে ফেলে। একসাথে ছিলো তারা? এটাকে এক সাথে থাকা বলে? এখন এদের কি করে বোঝাবে? তাদের নিরামিষ ছেলে একটা চুমু পর্যন্ত খায় নি? দুঃখের কথা তো সবাই বলে বেড়ানো যায় না।
আড়চোখে মা এবং চাচিমার মুখখানা দেখে নেয়। তারপর মুখ গোমড়া করে বলে
” সেরকম কিছু না। আমি গোছল করবো না প্লিজ। তোমরা ভুল ভাবছো।
বলেই ছোঁয়া এক দৌড়ে নিজের রুমে চলে যায়। সাবিনা এবং নাজমা একে অপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করে ফিক করে হেসে ফেলে।
রুমে এসে ছোঁয়া আয়নার সামনে দাঁড়ায়। প্রথমেই তার চোখ পড়ে গলার দিকে। দাগ আসলো কোথা থেকে? হাত চলে যায় গলায়। কেউ রাক্ষসের মতো কামড়ালে যেমন দাগ হয় তেমন দাগ। এটা দেখে ফেলেছে মা এবং বড়মা? এটা দেখেই ভেবেছে সামথিং সামথিং?
তাদের নিরামিষ ছেলে যে ছোঁয়ার ঘুমের সুযোগ নিয়ে দাঁত বসিয়েছে এটা তারা বুঝবে না তো।
রেগে যায় ছোঁয়া।
বিছানা থেকে ফোনখানা উদ্ধার করে কল দেয় সাদিকে।
রিং হতে হতে কেটে যায়। ধরে না। কিন্তু না ধরা ওবদি ছোঁয়া তো থামবে না।
আবারও কল করে। এভাবে পাঁচ বার কল করার পরে রিসিভ হয়।
ওপাশের মানুষকে কিছু বলতে না দিয়ে ছোঁয়া বলে ওঠে
“আমাকে কামড়িয়েছেন কেনো আপনি? দাঁত বড় হয়ে গেছে? বজ্জাত লোক। আপনার জন্য সবাই আমাকে দেখে হেসেছে। আসুন আজকে বাড়িতে কামড়ে আপনার নাক ছিঁড়ে ফেলবো আমি৷
নিজের কথা শেষ করে থামে ছোঁয়া। হাঁপিয়ে গেছে সে তার লম্বা বক্তব্য প্রেষণ করে।
তখনই ওপাশ থেকে ভেসে আসে একটা মেয়েলি ভয়ার্তক কন্ঠ
” সরি ম্যাম স্যার মিটিং এ ঢুকেছে। আমি ওনার
বাকি টুকু শেষ করতে পারে না মেয়েটা। ছোঁয়া কর্কশ কন্ঠে বলে ওঠে
“শাঁকচুন্নি তোর সাহস হয় কি করে আমার বরের ফোন হাতে নেওয়ার।
মেয়েটা আরও ভয় পেয়ে যায়। সে আমতা আমতা করে বলে
” অনেকখন বেজে চলেছিলো। ভেবেছিলাম ইমপটেন্ট কল কি না
” ভাবতে কে বলেছে? ফোন বাজতে বাজতে ভেঙে যাবে। আপনি কেনো ধরবেন? জানেন না এটা ছোঁয়া চৌধুরীর স্বামীর ফোন?
মেয়েটা জবাব দিতে পারে না। সে ঘনঘন ঢোক চিপছে। ছোঁয়া একটু থেমে বলে
“আসছি আমি। তোর চুল যদি না ছিঁড়েছি আমার নামও ছোঁয়া চৌধুরী নয়। আমার বরের ফোন ধরা না?
খট করে কল কেটে দেয়। রাগে তার শরীর কাঁপছে৷ ফঁস ফঁস করে শ্বাস টানছে। আজ ওবদি ছোঁয়াই ফোনটাতে হাত লাগাতে পারলো না। আর ওই মেয়ে কি না ধরে নিলো?
হাত আজকে কেটেই দিবে মেয়েটার।
রাগ দমন করে কাবাড থেকে জামাকাপড় বের করে নেয়। গোছল সে করবেই না। ঠান্ডা পানি দিয়ে গোছল করার চেয়ে বিষ পান করে কোমায় যাওয়া বেটার।
ব্রাশ করে চোখে মুখে পানি দিয়ে জামা পাল্টে নেয়। তারপর কলেজ ব্যাগটা কাঁধে চেপে বেরিয়ে পড়ে শাঁকচুন্নি দমন করতে।
সাদির অফিস চেনে ছোঁয়া। চিনবে না? একমাত্র বর বলে কথা। সামিরের থেকে ঠিক জেনেছে অফিসের ঠিকানা। সাদি তো আর বলবে না। নিরামিষ কি না।
চলবে
#হৃদয়হরণী
#পর্ব:৪১
#তানিশা সুলতানা
বিশাল বড় বিল্ডিং। কয় তালা হবে? কড়া রোদ বিধায় তাকানো যাচ্ছে না। নাহলে ছোঁয়া গুনে নিতো। বড়বড় গাড়ি দাঁড় করানো বিল্ডিং এর সামনে। গেইটে দুজন দারোয়ান পায়চারি করছে। হাতে তাদের লাঠি। ছোঁয়া চিন্তা করে। তাদের হাতে লাঠি কেনো? ডাকাত আসলে তো বন্দুক বোমা ছুড়ি এসব নিয়ে আসবে। তখন এরা এই লাঠি দিয়ে তাদের কিচ্ছু করতে পারবে না। তাহলে লাঠি কেনো হাতে নিয়েছে?
নিজের চিন্তায় নিজেই বিরক্ত ছোঁয়া। ধুরর এসব কি তার ভাবার বিষয় না কি?
মাথার ঘোমটা টা ভালো করে ঠিক ঠাক করে এগোয় ছোঁয়া। মাথায় ঘোমটা দেওয়ার কারণ আছে। এলোমেলো চুল তার। চুল গুলো পরিপাটি করার সময় ছিলো না।
দারোয়ান দুটোকে দুই দিকে যেতে দেখে হুরমুরিয়ে ঢুকতে যায় ভেতরে। দারোয়ান দৌড়ে এসে লাঠি এগিয়ে দিয়ে থামায় ছোঁয়াকে। ছোঁয়া ভ্রু কুচকে তাকায় দারোয়ানের দিকে।
“এভাবে ঢোকা নিষেধ।
দারোয়ানের শক্ত কন্ঠ।
ছোঁয়া দারোয়ানের পা থেকে মাথা পর্যন্ত একবার পর্যবেক্ষণ করে নেয়।
” তাহলে কিভাবে ঢুকতে হবে? মাথায় শিং লাগিয়ে আসবো? না কি পেছনে লেজ?
দারোয়ান হকচকিয়ে যায় ছোঁয়ার কথা শুনে। দুজন দুজনের মুখ চাওয়া চাওয়ি করে নেয়।
ছোঁয়া আবারও বলে
“দেখুন ভেতরে আমার একমাত্র বর নিয়ে টানাটানি শুরু হয়ে গিয়েছে। আমাকে যেতেই হবে।
ছোঁয়ার কথা তারা বুঝতে পারে না। তাকিয়েই থাকে শুধু।
বিরক্ত ছোঁয়া। কে এরা? কথা কি বুঝতে পারে না?
” সরি ম্যাম
আপনাকে ভেতরে যেতে দেওয়া হবে না।
রেগে যায় ছোঁয়া। রাগ দমানোর চেষ্টা চালায়। সরু চোখে তাকিয়ে দাঁত কটমট করতে থাকে। এদের সাথে কড়া কথা বললে কখনোই ঢুকতে দেবে না। একটু অন্য ভাবে চেষ্টা করতে হবে।।
মুহুর্তেই ছোঁয়ার রাগান্বিত মুখখানা কাঁদো কাঁদো হয়ে যায়। ওড়নার আঁচল টেনে নাক মুছে নেয়।
“আমার একমাত্র স্বামী এই অফিসে চাকরি করে। নাম সাদমান চৌধুরী। ছোট ছোট দুইটা বাচ্চা আছে আমার। আরেকটা হবে। তিন মাস চলছে।
পেট দেখে বোঝা যাচ্ছে না তাই না?
দারোয়ান শুকনো ঢোক গিলে। আকপটে মাথা নারিয়ে জবাব দেয় ” না”
ছোঁয়া দীর্ঘ শ্বাস ফেলে।
“কি করে বোঝা যাবে? স্বামী যত্ন নেয় না। সংসারে টাকা দেয় না। প্রেগন্যান্সির সময় ভালো মন্দ দুটো খাওয়া উচিত কিন্তু আমি তো মন্দ মন্দ খাবারই পাই না। ভালো মন্দ পাবো কই?
খবর পেয়েছি অফিসের একটা মেয়ের সাথে তার সম্পর্ক আছে। আমি সেই কাল নাগিনীকেই ধরতে এসেছি।
আপনারা প্লিজ একটু সাহায্য করুন। এই অসহায় পোয়াতি মেয়েটার একটা উপকার করুন।
ছোঁয়ার আহাজারিতে মন গলে যায় দারোয়ানদের।
” আহারে
এই টুকুনি মেয়ে। তার কতো কষ্ট। যাও মা।
সাদমান চৌধুরী এতো খারাপ? ছিহহ ছিহহ
ছোঁয়া এক গাল হাসে।
দারোয়ানের দুই গাল টেনে দিয়ে বলে
“থ্যাংক ইউ টাক দাদু
বলেই এক দৌড়ে ভেতরে ঢুকে পড়ে। দারোয়ান বড়বড় চোখ করে তাকায়। এখনো বিয়ে করে নি সে। অল্প বয়সেই চুল পড়েছে। চাচা বলতে পারতো তিনি মাইন্ড করতো না। তাই বলে দাদু?
সাদি ডায়াল করে শশুড়ের নাম্বারে। রিং হতে না হতেই কলটা রিসিভ হয়। সাদি নিজের হাসি লুকিয়ে বলে
” ছিহহ শশুড় মশাই ছিহহহ
আপনি প্রেম করছেন?
সেলিম সবেই মুখে কফি নিয়েছিলো। সাদির কথা শুনে ফুসস করে বের করে দেয় মুখে থাকা কফি। এমনিতেই গতরাতে গেস্ট রুমে কাটাতে হয়েছে তার। এখন এই কথা নাজমার কানে গেছে বাড়ি ছাড়া করবে তাকে।
“ততোমার প্রবলেম কি? এমনিতেই গতকাল রুমে ঢুকতে দেয় নি। আজগবি কথা পাও কোথায়?
হাসে সাদি।
” নিজের কষ্টটা দেখলেন। আমার কষ্ট দেখলেন না? একদিন বউ ছাড়া থাকতে পারছেন না। আমি কি করে থাকছি চিন্তা করুন।
“অসভ্য ছেলে। আমি তোমার শশুড় হই।
” কিছু পিকচার আমার হাতে আছে। আপনি দেখলাম একটা মেয়ের সাথে রিকশায় ঘুরছেন। রোমান্টিক দৃশ্য
কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে যায় সেলিমের। কলিগের সাথে রিকশায় বসেছিলো। সেই কলিগ আবার সেলিমের বাল্য কালের বান্ধবী।
“ভাবছি ছোট মায়ের হোয়াটসঅ্যাপ এ পাঠাবো।
” তুই আমার মেয়েকে নিয়ে যা বাপ। আমি আজকেই বাড়িতে গিয়ে সবাইকে বলবো। সামনে শুক্রবারে তোদের আবার বিয়ে দিবো। তবুও আমাকে মাপ কর। তোদের হানিমুনে যাওয়ার খরচ আমার।
সাদি এবার শব্দ করে হেসে ওঠে।
“আই লাভ ইউ শশুড় মশাই
সেলিম কল কেটে দেয়। বিরবির করে বকা দেয় সাদিকে
” শয়তাম ছেলে। গোটা দুনিয়াকে দেখায় সে ভাজা মাছ উল্টে খেতে পারে না। অথচ আমার জানটা জ্বালিয়ে খাচ্ছে। এই অসভ্য ছেলের বাচ্চা কাচ্চা কতোটা অসভ্য হতে পারে?
__
মিটিং শেষে নিজের জন্য বরাদ্দকৃত কেবিনে বসে আছে সাদি। ঠোঁটের কোণে তার মিটিমিটি হাসি। শশুড় মশাইকে জ্বালানোর আরও একটা ফয়দা পেয়ে গেছে সে। এতোদিন শশুড় জ্বালিয়েছে এবার সাদি জ্বালাবে। শশুড়ের ভীতু মুখখানা বড্ড ভালো লাগে সাদির। শশুড়কে দেখতে সুইটও লাগে।
ছোঁয়া দেখতে পায় রিমিকে। পানির বোতল হাতে নিয়ে এদিকেই আসছে। ছোঁয়া এক দৌড়ে চলে যেতে নেয় রিমির কাছে। তখনই দেখে ফেলে এক অবিশ্বাস্য জিনিস। মেয়েদের ড্রেসআপ। হাঁটু ওবদি ড্রেস। কি সুন্দর হাঁটু বেরিয়ে আছে। উঁচু জুতো পড়েছে৷ দেখতে জোশশ লাগছে। মনে মনে ছোঁয়া ভেবে ফেলে এরকম একটা ড্রেস ছোঁয়া পড়লে তাকে কেমন লাগবে? সাদি নিশ্চয় তাকে দেখে ফিদা হয়ে যাবে।
লজ্জা পায় ছোঁয়া। মুহুর্তেই মনটা খারাপ হয়ে যায়।
এতো এতো হাঁটু বের করা রমণীর মধ্যে তার বরটা থাকে। কতোটা রিক্স? নেহাত বেডা নিরামিষ।
“তুমি এখানে?
হঠাৎ সাদির গলা শুনে ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসে ছোঁয়া। তাকায় সাদির দিকে। সাদি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে। সে বেরিয়েছিলো বসের কেবিনে যাবে বলে তখনই নজর পড়ে ছোঁয়ার দিকে। এক মুহুর্তের জন্য ঘাবড়ে গিয়েছিলো সাদি। যে পাগল বউ তার।
” আপনার ফোন যে মেয়ে ধরেছিলো তার হাত কাটতে এসেছি। কোন কাল নাগিনী? দেখান আমায়?
সাদির চোখ দুটো বড় বড় হয়ে যায়। সে শুকনো ঢোক গিলে ছোঁয়ার হাত ধরে টেনে নিয়ে যায় তার কেবিনে।
“আমারই ভুল। আমি ফোন রেখে গিয়েছিলাম মিটিং এ।
” আমি ঠিক ভুল জানি না। মেয়েটার হাত কাটবোই কাটবো আমি। জীবনে আমাকে দিয়েছেন কখনো ফোনটা ধরতে? ওই মেয়ে কেনো ধরবে?
সাদি দুই হাতে ছোঁয়াকে জড়িয়ে ধরে। বুকের মাঝখানে ছোঁয়ার ছোট্ট মাথাখানা চেপে ধরে। চুমু খায় মাথায়।
আদূরে গলায় বলে
“জান পাগলামি করে না। আমি তো তোমারই।
ছোঁয়া গলে যায়। নারীর পাহাড় সমান রাগ গলিয়ে দিতে শখের পুরুষের দুটো আদূরে কথাই যথেষ্ট।
ছোঁয়া সাদির বুকে চুমু খায়।
” ঠিক আছে পাগলামি করবো না। আমাকে একটা হাঁটু বের করা জামা কিনে দিবেন?
“ঠিক আছে দিবো।
” আই লাভ ইউ
আরও একটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে ছোঁয়া। সাদি জবাব দেয় না।
চলবে