#হৃদয়হরণী
#পর্ব:৩৬
#তানিশা সুলতানা
মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছেন সেলিম এবং সাদি। সেলিমের অবয়নে ক্রোধ স্পষ্ট। কখনো কটমট চোখে তাকাচ্ছে আবার কখনো পায়চারি করে রাগ কমানোর চেষ্টা করছে। চাচার এরূপ দেখে সাদির হাসি পাচ্ছে। কথায় কথায় হাসি পাওয়ার স্বভাব ছিলো না সাদমান চৌধুরীর। ঠোঁটের কোণায় এক চিলতে হাসি লাগিয়ে রাখতে শিখিয়েছে তার আধপাগল বউটা।
সাদি গোলাপি ওষ্ঠদ্বয় মেলে দেওয়া দেখে সেলিমের ক্রোধ বেরে যায়। গম্ভীর রগচটা সাদমান চৌধুরী হাসতে শিখে গেছে? তার শিশু বাচ্চা মেয়েকে পাগল করতে?
“আমার মেয়ের আশেপাশে ঘেসবে না তুমি।
আঙুল তুলে সেলিম। ক্রোধে আঙুলটাও কাঁপছে। আঁখিপল্লব বরাবরের তুলনায় বেশ খানিকটা বড় করে ফেলেছেন। নিশ্বাস দ্রুত পড়ছে তার।
সোজা হয়ে দাঁড়ায় সাদি। বুক টানটান করে মাথা তুলে তাকায় চাচার মুখপানে। উচ্চতায় চাচাকে ছাড়িয়েছে আরও বারো তেরো বছর আগে। বলা বাহুল্য পুরো চৌধুরি বংশে সব চেয়ে লম্বা পুরুষটি সাদমান চৌধুরী। তাই বলে বাকি সবাই খাটো এমনটা কিন্তু নয়। সকলেরই উচ্চতা মানানসই। সাদি একটু বেশিই লম্বা। ছয় ফুট ছুঁয়েছে সে। বুকের বা পাশে হাত চাপে সাদি। চোখ বন্ধ করে শ্বাস টেনে জবাব দেয়
” ইদানীং আপনার মেয়েকে ছাড়া থাকতেই হচ্ছে করে না। এখানে চেপে রাখতে ইচ্ছে করে।
সাদির এহেন কথায় বিষম খায় সেলিম। আঙুল নামিয়ে ফেলে। ওষ্ঠদ্বয়ের মধ্যে কিঞ্চিৎ ফাঁকা হয়ে যায়। রাগে লাল হয়ে থাকা মুখখানা এখন থমথমে রূপ ধারণ করে।
সাধারণ সাদি কখনো এভাবে কথা বলে না। সেলিম চৌধুরীর সাথে সাদির শত্রুতা বহুবছর আগে থেকে। ছোঁয়ার বয়স তখন ছিলো দশ বছর।
প্রচন্ড চঞ্চল এবং দুষ্টু মেয়েটি সারাক্ষণ ভয় পেতো সাদিকে। কখনো আশেপাশে ঘেসতো না। তবে দূরে থেকে উঁকি ঝুঁকি মারতো। কখনো খাটের তলায় লুকিয়ে থাকতো, তো কখনো পর্দার আড়ালে। সাদি সবটাই বুঝে যেতো কিন্তু কখনো কিছু বলতো না। কখনো খাবার দিতে আসতো মায়ের সাথে, কখনো মায়ের সাথে মিলে জামাকাপড় ধুয়ে দিতো, কখনো বিছানা গুটিয়ে রাখতো। খুব ভালো লাগতো সাদির। মনে হতো পিচ্চিটার গন্ধ মিশে আছে রুমটাতে।
দুই পায়ে নুপুর পড়ে সারা বাড়ি ঘুরঘুর করতো। আর সেই নুপুরের শব্দে দেওয়ানা হতো সাদমান চৌধুরীর মন৷ বাইশ বছরের যুবক ছিলো তখন সে। বাড়ন্ত বয়সের অনুভূতি একটু বেশিই প্রবল হয়।
সাদির ক্ষেত্রেও তেমন হয়েছিলো। ছোট্ট ছোঁয়া অগোছালো চঞ্চল, বেহায়াপনা স্বভাব মনের মধ্যে দাগ কেটে গিয়েছিলো। অনুভূতি জন্মেছিলো প্রবল রূপে। সেই অনুভূতির কথা জানিয়েছিলো সেলিম চৌধুরীকে। বলেছিলো “চাচা ছোঁয়া বড় হলে আমি তাকে বিয়ে করবো”
সেলিম ভীষণ বকে ছিলো সাদিকে। তারপর থেকে একটু কমই দেখতে পারতো। আদরের ছোট মেয়ের দিকে কেউ তাকালেও তার সয্য হতো না।
সাদিও বুঝেছিলো তার চাওয়াটা ঠিক নয়। সে ভুল করছে। সম্পর্কে জড়ায় মিহির সাথে। দুষ্টুপরিকে ভুলে যাওয়ার শপথ নেয়। কিন্তু পারে নি। কঠোর হয়ে ওঠে। ছোঁয়া আশেপাশে ঘেসলে কঠিন চোখে তাকাতো তাতেই ছোঁয়ার ছোট্ট সত্তা ভয়ে কেঁপে উঠতো। আশেপাশে ঘেসতো না কখনো।
তবে দুষ্টুপরি সাদিকে দেখা কমিয়ে ফেলে না।
সে লুকিয়ে ঝুঁকিয়ে তবুও দেখে যেতো সাদিকে।
সেলিম চৌধুরী দাঁতে দাঁত চেপে বলে
“সাদি তোমাকে আমি ওয়ার্নিং দিচ্ছি
দীর্ঘ শ্বাস ফেলে সাদি।
” আপনার মেয়েই নেচে-কুঁদে এগিয়ে যায়। পুরুষ মানুষ তো আমি। উসকালে দমে থাকতে পারি না।
থমথমে মুখে আশেপাশে তাকায় সেলিম। কেউ শুনে ফেললো না কি? শুনে ফেললে মানসম্মান থাকবে? ভাতিজার ভাষার ছিঁড়ি শুনলে আশেপাশের মানুষজন নিশ্চয় বলবে “ছিহহ সেলিম ছিহহহ
কি সব কথাবার্তা”
জিভ দ্বারা ঠোঁট ভিজিয়ে নেয় তিনি।
থেমে থেমে বলে ওঠে
“ঠিক করে কথা বলো সাদি। আমি তোমার চাচা।
” আপনিও চুপচাপ কাকিমার সাথে সংসারে মনোযোগ দিন৷ এই বয়সে আমার শা*লা শালি*কা হলে কোনো আপত্তি নেই৷ নিজ দায়িত্ব কোলে পিঠে করে বড় করে দিবো।
পরপর কয়েকবার শুকনো ঢোক গিলে সেলিম চৌধুরী। পানির পিপাসায় গলা শুকিয়ে কাঠ।
লজ্জাও পাচ্ছেন ঢেড়। মুখ থেকে কথা হারিয়ে যাচ্ছে।
চাচার মুখখানা দেখে হাসি পায় সাদি। হাসি চেপে বলে
“আপনি তাহলে চেষ্টা শুরু করে দিন। আমাদেরও একটু রিলাক্স দিন। আব্দুল কুদ্দুস এবং দিয়াকে তো আনতে হবে বলুন।
আনকমন নাম দুটো শুনে হালকা একটু মুখ তুলে সেলিম। রিনরিনিয়ে জিজ্ঞেস করে
” এরা কারা?
“আপনার ফুল পাগল মেয়ে তার ফিউচার বাচ্চার নাম ঠিক করেছেন আব্দুল কুদ্দুস এবং দিয়া।
আসছি চাচা।
চিন্তা করবেন না। খরচ আমিই চালাবো।
বড়বড় পা ফেলে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে সাদি। প্যান্টের পকেট থেকে রুমাল বের করে কপালে জমে থাকা বিন্দু বিন্দু ঘাম মুছে নেয় সেলিম৷ শেষবারের মতো শুকনো ঢোক চিপে
” ডেঞ্জারাস
যেমন মেয়ে আমার তেমনই ঠোঁট কাটা জামাই
দু’জনই আমার হার্ট দুর্বল করে দিচ্ছে। এদের ছানাপোনা এলে আমার কি হবে?
সারাক্ষণ পানির বোতল নিয়ে ঘুরতে হবে।
ছোঁয়া আড়াল থেকে বাবা এবং সাদির কথপোকথন শোনার চেষ্টা করেছিলো কিন্তু পারে নি। তবে মশার কামড় খেয়েছে ইচ্ছে মতো। মশারও কোনো আক্কেল নেই। যখন তখন কামড়ে দিবে?
চোখ মুখ কুঁচকে মশার চোদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করতে থাকে ছোঁয়া।
বাবাকে বাড়িতে ঢুকতে দেখে বেরিয়ে পড়ে ঝোপের আড়াল থেকে।
আসলে যখন সাদি এবং সেলিম কথা বলায় ব্যস্ত ছিলো ছোঁয়া তখন চুপি চুপি এখানে এসে লুকিয়েছিলো।
🌸🌸
মায়া এবং মিহি উপস্থিত হয়েছে সাদির বাড়িতে। তাদের সাথে সামিরও আছে। ভীষণ বিরক্ত সাদি। একটা সেকেন্ডও রেস্ট নিতে পারছে না সে বাংলাদেশে পা ফেলার পর থেকে।
দরজার সামনেই দাঁড়িয়ে ছিলো তারা। সাদি ওদের সাথে কথা না বলে চাবি ঘুরিয়ে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে যায়। এখানে একটা সিনক্রিয়েট হবে এখন।
সাদির পেছন পেছন ওরাও ঢুকে পড়ে। সামির ঔশির ফ্ল্যাটের দিকে বার বার তাকাচ্ছে। কিন্তু হায়য়য় মহারাণীর দেখা নেই।
সাদি নিজের রুমে ঢুকতে যেতেই মিহি বলে ওঠে
“কথা বলতে এসেছি তোমার সাথে বুঝতে পারছো না?
সাদি দাঁড়িয়ে যায়। তাকায় সামিরের দিকে। সামির শুকনো ঢোক গিলে
” তোর আইফোন ছুঁয়ে বললাম বিশ্বাস কর
আমি ওদের চিনি না।
সাদি নিজের পায়ের জুতো খুলতে যায়। সামির এক লাফে সোফার পেছনে লুকিয়ে পড়ে
“ভাই ওরা আমারে কিডন্যাপ কইরা আনছে এইহানে। আমি তো তোরে আর তোর বউরে চিনি ক?
মিহি বিরক্ত
” ভয় কেনো পাচ্ছিস সামির? আমি এসেছি তোমার সাথে কথা বলতে।
সাদি কথা না বলে নিজের রুমে ঢুকে পড়ে। ঠাসস করে দরজাটাও লাগিয়ে দেয়। অপমানে গা রিনরিন করে ওঠে মিহির।
সাদি পকেট থেকে ফোন বের মেসেজ দেয় ছোঁয়াকে।
“মিহি চলে আসছে আমার কাছে। বলছে আমাকে রান্না করে খাওয়াবে”
ব্যাস ফোন রেখে কাবাড থেকে জামাকাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ে সাদি। বাকিটা ছোঁয়াই সামলে নিবে। সাথে আজকে রাতে পাগলীটা সাদির সাথেই থাকবে। এটা শিওর সাদি।
চলবে
#হৃদয়হরণী
#পব:৩৭
#তানিশা সুলতানা
ফ্রেশ হয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিয়েছে সাদি। এবার একটু ঘুম দরকার। শরীরটা ম্যাচ ম্যাচ করছে। সকাল থেকেই দৌড়াদৌড়ি করে যাচ্ছে কন্টিনিউসলি। খাওয়াটাও হয় নি ঠিকঠাক। খিধেও পেয়েছে প্রচুর। তবে এই মুহুর্তে খেতে ইচ্ছে করছে না।
নভেম্বরের শুরুর দিক। ঘন কুয়াশার দেখা না মিললেও শীত পড়েছে ভালোই। কম্বল মুড়ি দেওয়ার মতোই শীত। সাদি গলা ওবদি কম্বল টেনে এসির পাওয়ার বাড়িয়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নেয়। বাইরে থেকে আবছা কথার আওয়াত ভেসে আসছে। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে না ঠিক কি কথা বলা হচ্ছে।
তবে সাদি আন্দাজ করে নেয় সামিরকে ধুয়ে দিচ্ছে মিহি এবং মায়া।
চোখ দুটো বন্ধ করতেই ফোনটা বেজে ওঠে। বিরক্ত হয়ে বালিশের তলা থেকে ফোনটা বের করে। ইডিয়েট নামটা ফোনের স্কিনে জ্বল জ্বল করছে।
ফোঁস করে শ্বাস টেনে কলটা রিসিভ করে নেয় সাদি।
“হ্যালো আব্দুল কুদ্দুসে পাপা?
আমি না যেতে পারবো না। আম্মু প্রেগন্যান্ট।
এক লাফে উঠে বসে সাদি। চোখ দুটো বড়বড় হয়ে যায়। ছোঁয়ার আম্মু মানে তো সাদির শাশুড়ী। তিনি প্রেগন্যান্ট?
জিভ দ্বার ঠোঁট ভিজিয়ে খানিকক্ষণ চিন্তা করে সাদি। মনে মনে আওড়ায়
“মুখের কথা মুখেই রয়ে গেলো। এরই মধ্যে সুখবর?”
শুকনো ঢোক গিলে সাদি। না মানে অফিসে যদি ব্যাপারটা লিক হয়ে যায় মুখখানা দেখাবে কিভাবে? শশুড়কেও বলি হারি। বুড়ো হয়েও এতো একটিভ?
ওইদিকে ছোঁয়া হ্যালো হ্যালো করেই যাচ্ছে। সাদির সেদিকে হুশ নেই।
“আছেন না কি আপনি? কি হলো? আব্বুর মতো সেন্সলেস হয়ে গেলেন না কি?
সাদি দীর্ঘ শ্বাস ফেলে।
” চাচ্চু সেন্সলেস হয়েছে?
“পরপর দুইবার।
আপি তো কথাই বলছে না। সবাই মুড অফ করে বসে আছে। শুধু পরি খুশিতে লাফাচ্ছে।
সাদির হাসি পায়। খুব কৌশলে হাসি চেপে যায়।
“ভেবেছিলাম আমাদের বেবি হবে৷ কিন্তু কি হলো? আমার না ভালো লাগছে না।
আবার এর মধ্যে মিহি ফিহি। পাগল পাগল লাগছে
” আচ্ছা
” আমি আসছি।
খুশিতে ছোঁয়ার চোখ দুটো চিকচিক করে ওঠে। যাকক তাহলে মিহির সাথে থাকছে না।
“তাড়াতাড়ি আসুন প্লিজ। মিষ্টি নিয়ে আসিয়েন।
” মিষ্টি কেনো?
“আমার নতুন ভাই বোনের জন্য।
” রাখো তুমি।
“শুনেন
” বলো
“রাতে থাকবেন?
” তোমার কাছে রাখবা?
ছোঁয়া লজ্জা পায়।
“হুমমম
” আচ্ছা থাকবো।
“বুইঝো কিন্তু
” বুঝেছি
আনমনে জবাব দেয় ছোঁয়া।
সাদি ফিসফিস করে বলে
“আমি থাকলে তুমি শেষ।
কেঁপে ওঠে ছোঁয়ার সত্তা। দেয় জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে জবাব দেয়
“বাজে হয়ে যাচ্ছেন।
ছোঁয়া ফোন রেখে দেয়। সাদি একটু হেসে নেয়। বউয়ের কাছে থাকবে আজ? শশুড় মশাই কিভাবে রিয়েক্ট করবে?
শশুড়ের উঁচু নাক এবার থেঁতো করা যাবে। নাকের ডগায় রাগ নিয়ে ঘুরে লোকটা। সাদির থেকে ছোঁয়াকে আলাদা করার পরিকল্পনা আঁটে। এবার সাদি নিজের বউকে শশুড়ের নাকের ডগা দিয়ে নিজের কাছে নিয়ে আসবে৷
দরজা খুলতেই দেখতে পায় সামির ফ্লোরে শুয়ে আছে। মিহি সোফায় বসে ফোন দেখছে। আর মায়া এদিক সেদিক তাকাচ্ছে। দরজা খোলার আওয়াজে সকলের দৃষ্টি পড়ে সাদির দিকে। সামির এক লাফে উঠে বসে।
“ভাই ওরা তোর সাথে কথা না বলে যাবে না।
অসহায় সুর সামিরের। সাদি সামিরের দিকে চাবি ছুঁড়ে মারে। ক্যাচ ধরে ফেলে সামির।
” আমি যাচ্ছি। বউ প্রেগন্যান্ট।
তোরা কথা বল
বলেই হনহনিয়ে চলে যায়। মিহি বড়বড় চোখ করে তাকায়। সামিরও হতদম্ভ। এত দ্রুত প্রেগন্যান্ট? বিয়ের কয়মাস হলো?
“প্রেগন্যান্ট মানে?
মিহি দাঁড়িয়ে গিয়ে বলে। সামির ভেংচি কাটে
” প্রেগন্যান্ট মানে পোয়াতি। বাচ্চা হবে। পেটের মধ্যে আরেকজন বড় হচ্ছে।
এর থেকে ভেঙে বলতে পারবো না। নিজের বউ হলে কিভাবে বাচ্চা এলো এটাও তোকে বলতাম
মিহি বিরক্ত হয়। অতিরিক্ত কথা বলে ছেলেটা। মায়া মুখ টিপে হাসে।
“আপু একটা কথা বলি তোকে। সাদি ভাইয়ার পেছন ছেড়ে দে।
” আমি ওর জীবনটা জাস্ট হেল করে ছাড়বো। ওর জন্য সব হারিয়েছি আমি।
___
নাজমা বেগম এই পর্যন্ত চার বার বমি করেছে। মাথা ঘুরছে সকাল থেকেই। প্রথমেই তিনি স্বামীকে বলেছিলো। তিনি কথা না বলে বেরিয়ে গিয়েছিলো বাসা থেকে। স্বামীর থেকে এমন অবহেলা পেয়ে নিজের রুমেই ঘাপটি মেরে শুয়ে ছিলো।
তারপর সাবিনা বেগম খোঁজ নিতে এসে দেখে এই অবস্থা।
সকলের সন্দেহ মোতাবেক ডাক্তারের কাছে যেতে ভয় পাচ্ছেন। বাচ্চা দুনিয়াতে আসা খুশির সংবাদ। কিন্তু এই বয়সে এসে কেউ খুশি হতে পারছেন না।
সেলিম বাগানে দাঁড়িয়ে আছে এখনো। তিনি ভীষণ ভয় পাচ্ছে।
নাজমা বেগমের পাশে বসে আছে ছোঁয়া সিমি এবং সাবিনা৷
সাদি গেইট পেরিয়ে বাড়িতে ঢুকতেই নজর পড়ে সেলিমের দিকে। চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। সাদি গিয়ে পাশে দাঁড়ায়।
“বললাম কি না বললাম তাতেই সুখবর? বাহহ এই না হলো আমার শশুড় মশাই।
সেলিম কপালের ঘাম মুছে তাকায় সাদির দিকে। কাঁদো কাঁদো ফেস করে বলে
” বিশ্বাস করো আমি কিচ্ছু করি নি।
সাদির হাসি পায়। তবুও হাসি চেপে বলে
“এটাকে কিছু করা বলে না তো। ভালো কাজ তো। ভয় কেনো পাচ্ছেন?
” মেয়ে বিয়ে দিয়েছি। নাতনি আছে আমার। এই বয়সে ছি ছি ছি
“এসব কি আর আপনার ভাবনায় ছিলো শশুড় মশাই? আপনি তো ভেবেছিলেন সদ্য যৌবনে পা দিয়েছেন।
সেলিম কটমট চোখে তাকায় সাদির দিকে
” হাতি কাঁদায় পড়লে চামচিকায়ও লাথি মারে।
“আপনি হাতি?
দীর্ঘ শ্বাস ফেলে সেলিম। এর সাথে কথা বলার মানেই হয় না।
” যাও তো এখান থেকে।
“হুমম যাচ্ছি শাশুড়ী মাকে চেকআপ করাতে নিয়ে যেতে হবে তো।
সাদি চলে যায়। সেলিম মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ে।
চলবে