#হৃদয়হরণী
#পর্ব:২৮
#তানিশা সুলতানা
উড়নচণ্ডী ছোঁয়া এইটুকু বুঝে গেছে যে সাদমান চৌধুরী তাকে অনেকটা ভালোবাসে। এবং সেটা আজকে থেকে নয়। অনেক আগে থেকেই। পাষাণ লোক একটা। সারাক্ষণ ইগনোর করে গেছে এবং এখনো করছে। তবে এখন ছোঁয়ার একটাই লক্ষ। পাষাণ লোকটার মুখ থেকে ভালোবাসি কথাটা শুনবে। এবং গম্ভীর লোকটাকে ছোঁয়ার পেছনে মৌমাছির মতো ঘুড়াবে।
মনে মনে বুদ্ধি করে নেয় ছোঁয়া। কি করবে? সব ভেবে নিয়েছে। প্ল্যানিং সাকসেসফুল। এবার শুধু এপ্লাই করার অপেক্ষা।
রাতের খাবার খেয়ে সকলেই চলে গিয়েছে। ছোঁয়া তার দাদিমার সাথে ঘুমিয়েছে। মনে মনে সাদির সাথে ঘুমানোর ইচ্ছে থাকলেও সেটা প্রকাশ করতে পারে নি। কিভাবেই বলবে?
হনুমান লোকটা তো মুখের ওপর না করে দিতো।
কেটে গেছে কয়েকদিন। সাদি তার পরেরদিনই চলে গিয়েছিলো তার বাসায়। একটা কল পর্যন্ত দেয় নি ছোঁয়াকে। ছোঁয়া দিয়েছিলো কল। কিন্তু পাষাণ লোক রিসিভ করে নি। মেসেজও দিয়েছিলো রিপ্লাই দেয় নি। লোকটার প্রবলেম কি ঠিক বুঝতে পারে না ছোঁয়া।
ছোঁয়ার পায়ের ব্যান্ডেজ খুলে ফেলা হয়েছে। মোটামুটি হাঁটতে পারে সে। শুধু দৌড়াতে পারে না।
শুক্রবারের দিন। সাবিনা বেগমের চেচামেচিতে ঘুম ছুঁটে যায় ছোঁয়ার। কেনো চেঁচামেচি করছে চতুর ছোঁয়া বুঝে যায়।
মূলত তার সাদু বাসায় ফিরেছে গতকাল মাঝরাতে। সকাল সকাল তার খাবারের আয়োজন চলছে। যদিও সে করলা আর রুটি ছাড়া কিছুই খাবে না। তবুও তার এতো আয়োজন।
এমনি দিন হলে ছোঁয়া দৌড়ে চলে যেতো ফ্রেশ না হয়েই। কিন্তু আজকে যায় না ছোঁয়া। ধীরে সুস্থে আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসে। চুল গুলো গতকাল পার্লার থেকে সেটআপ করে এসেছে। দারুণ একটা কার্ট দিয়েছে।
চুল গুলো উঁচু করে বাঁধে। তারপর ওয়াশরুমে ঢুকে। ব্রাশ করে মুখ ধুঁয়ে বেরিয়ে আসে।
আলমারি খুলে বেছে বেছে নীল রংয়ের একটা টপস এবং সাদা আর নীলের মিশ্রণে একখানা স্কার্ট নিয়ে নেয়। সাথে সাদা রংয়ের পাতলা ওড়না।
ড্রেস চেঞ্জ করে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সময় নিয়ে সাজতে থাকে।
মুখে ফেইস পাউডার, চোখে কাজল ঠোঁট টকটকে লাল রংয়ের লিপস্টিক।
ব্যাস ছোঁয়া রেডি।
আয়ানায় একখানা চুমু দিয়ে বেরিয়ে য়ায় রুম থেকে।
সিঁড়ি বেয়ে নামার সময় এক পলক তাকিয়ে দেখে সাদি সোফায় বসে ফোন দেখছে। পরিও তার পাশে বসে গেমস খেলছে। সাবিনা বেগম এবং নাজমা বেগম টেবিলে খাবার সাজাচ্ছে।
মমতা বেগমকে রুম থেকে ধরে নিয়ে আসে সিমি। একা একা হাঁটাচলা করতে তার কষ্ট হয় কি না?
সাজ্জাদ এবং সেলিম খাবার টেবিলে বসে গেছে। সিফাত খালি রুটি চিবচ্ছে।
“গুড মর্নিং গাইস
ছোঁয়া এক গাল হেসে বসে পড়ে সাজ্জাদের পাশে। সাদি আড়চোখে তাকায় ছোঁয়ার দিকে। তবে কিছু বলে না।
সাজ্জাদ ছোঁয়ার চুল এলোমেলো করে দিয়ে বলে
” এতো সাজুগুজু? কোথাও যাবে?
“না না
বাবা কাল এনে দিয়েছে। তাই তোমাদের দেখানোর জন্য পড়ে আসলাম। সুন্দর লাগছে না?
মুচকি হাসে সাজ্জাদ। সেলিমও হাসে। সে প্রায় সময়ই মেয়ের জন্য এমন জামা জুতো নিয়ে আসে। পছন্দ হলেই নিয়ে নিবে।
” মাশাআল্লাহ মাশাআল্লাহ পরিটাকে অনেক সুন্দর লাগছে।
সাজ্জাদের প্রশংসা শুনে ছোঁয়া খুশিতে গদগদ হয়ে ওঠে
“বাবা এরকম আরও কয়েকটা টপস কিনে আনবে।
” ঠিক আছে।
সাবিনা বেগম সবাইকে খাবার দিয়ে দেয়। এবার ছোঁয়া সাদির দিকে তাকায়
“আরেহহ ছোট ভাইয়া। আপনি কখন এসেছেন? আসুন খাবেন?
আপনার পছন্দের করলা সিদ্ধ রেডি।
সাদি দাঁতে দাঁত চেপে তাকায় ছোঁয়ার দিকে। বাকিরা মুখ টিপে হাসছে।
সাদি এসে বসে সিফাতের পাশে ছোঁয়ার মুখোমুখি।
ছোঁয়ার সেদিকে খেয়াল নেই। সে খাচ্ছে এবং বাবাকে বলছে
“আব্বু আমাকে একটা আই ফোন কিনে দিও।
” ঠিক আছে
সাদি খেতে খেতে তাকিয়ে থাকে ছোঁয়ার দিকে। আই ফোন লাগবে তার। গতকাল যে ঘটনা ঘটিয়েছে তার পর তো ছোঁয়াকে বাটন ফোনও দেবে না সাদি।
ফেসবুকে পিক আপলোড দিয়েছে। এবং ক্যাপশন দিয়েছে “আজ সিঙ্গেল বলে
কাশফুল দেখতে কেউ নিয়ে গেলো না”
প্রোফাইল পাবলিশ করে দিয়েছে। সেখানে ছেলেদের কমেন্টের ধুম পড়েছে।
সেই জন্যই তো সাদি বাড়িতে এসেছে। নাহলে সে কখনোই আসতো না। রবিবার সে দেশের বাহিরে যাবে। এই সময়ে বাড়িতে আসা মানেই সময় নষ্ট।
কিন্তু এখন ছোঁয়াকে কিছু বলতেও পারছে না সাদি।
খাওয়া শেষে সাদি হাত ধুঁয়ে ছোঁয়াকে বলে
“রুমে এসো কথা আছে।
ছোঁয়া সাথে সাথে জবাব দিয়েছে
” কেনো ভাইয়া? কি কথা? আমি টিচার ঠিক করে নিয়েছি। আপনার কাছে পড়বো না। তাই কোনো কথাও নেই।
সাদি রেগে চলে যায়। কাউকে বুঝতে দেয় না তার রাগ। ছোঁয়া বাবা চাচার সাথে লুডু খেলতে শুরু করে। সাদি নিজের রুমে বসে ছোঁয়ার জন্য অপেক্ষা করছে। কখন আসবে ছোঁয়া?
অবশেষে বিরক্ত হয়ে রুম থেকে বের হয়। আর দেখে তার বউ লুডু খেলছে।
সাদি গিয়ে ছোঁয়ার পাশে বসে। ছোঁয়া একবার তাকিয়েও দেখে না। সে তার খেলায় ব্যস্ত৷
পাক্কা এক ঘন্টা পরে ছোঁয়ার খেলা শেষ হয়। সাদি ভেবেছিলো এবার হয়ত কথা বলতে পারবে। কিন্তু সাদির ভাবনায় বালতি পানি ঢেলে ছোঁয়া গান গাইতে গাইতে চলে যায় বাড়ির বাইরে। গানটা ছিলো
“পাশের বাড়ির চ্যাংড়া পোলা প্রেম করিতে চায়”
সাদি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে থাকে। পাশের বাড়ির কেউ কি ছোঁয়াকে প্রপোজ করেছে? প্রপোজ না করলে এমন গান কেনো গাইবে?
ছোঁয়ার পেছনে চলে যায় সাদি। ছোঁয়া বাড়ির সামনে ছোট ছোট কয়েকটা বাচ্চা ছেলের সাথে গল্প করতে থাকে। সাদি ভাবতে থাকে এদের মধ্যে কে ছোঁয়াকে প্রপোজ করতে পারে?
ওদের কাছাকাছি চলে যায় সাদি। ছোঁয়া হেসে হেসে কিছু বোঝাচ্ছে ওদের।
সাদি গম্ভীর গলায় বলে ওঠে
“এই মেয়েটাকে বাচ্চা বাচ্চা দেখতে হলেও ও বাচ্চা না। বিয়ে হয়ে গেছে ওর। আমি ওর বর”
চলবে
#হৃদয়হরণী
#পর্ব:২৯
#তানিশা সুলতানা
ছোঁয়া দিব্যি ছেলেগুলোর সাথে হেসে হেসে কথা বলছে৷ হাত ধরছে৷ ছেলেগুলোও হা করে ছোঁয়াকে দেখছে৷ প্রচন্ড রাগ হয় সাদির৷ হাত মুষ্টি বদ্ধ করে ফেলে৷ চেংড়া পোলা বলতে এদের মধ্যেই কাউকে বুঝিয়েছে৷ কিন্তু সাদি কি করে বুঝবে কোন ছেলেটা ছোঁয়াকে পছন্দ করে? কারণ সকলেই তাকিয়ে আছে ছোঁয়ার দিকে৷ সাদি যে বললো ছোঁয়া বিবাহিত এসব ওরা কানেই তুললো না
এবার সাদি দু পা এগিয়ে যায়
“ইডিয়েট চেংরা পোলা বলতে কাকে বুঝিয়েছো সত্যি করে বলো?
ছোঁয়ার হাত ধরে দাঁতে দাঁত চেপে বলে সাদি। ছোঁয়া হাতে থাকা ফোনের স্কিনে নিজের ফেইসটা একটু দেখে নেয়। পাউড করে করে চুমু দেয় ফোনের স্কিনে৷
বাচ্চারা সাদির দিকে তাকিয়ে আছে৷ মূলত এই আংকেলটা ডিস্টার্ব কেনো করছে এটাই তারা বুঝে চাইছে। ওরা ফুলবল খেলতে যাবে। এর মধ্যে এরকম ডিস্টার্ব মেনে নিতে না পেরে সাদির প্রতি রাগ জন্মায়।
ছোঁয়া সাদির হাতটা নিয়ের হাত থেকে ছাড়িয়ে বলে
” চেংরা পোলা বলতে আপনাকে বুঝিয়েছি। প্রেম করার জন্য আমার পিছে পিছে ঘুরছেন। আপনাকে পাত্তা দিবো আমি?
বুড়ো কোথাকার। সরুন সামনে থেকে। ভীমরতি ধরেছে৷
সাদি ভেবাচেকা খেয়ে যায়। কি বলে এসব?
ছোঁয়া মাঝারি সাইজের একটা ছেলের হাত ধরে। ছোঁয়ার থেকে বয়সে একটুখানি ছোটই হবে।
“এটা আমার বয়ফ্রেন্ড
আর ডিস্টার্ব করবেন না আমায়। প্রেম আমি করবো না আপনার সাথে।
ছেলেটা নিজের চুল গুলো বা হাতে পেছনে ঠেলে শার্টের কলার তুলে দু পা এগিয়ে এসে ছোঁয়াকে নিজের পেছনে নিয়ে বলে
” আংকেল আপনার সমস্যা কি? আপুকে কেনো ডিস্টার্ব করেন? আপু আপনার জন্য বাড়ি থেকে বের হতে ওবদি পারছে না৷ আপনাকে পছন্দ করে না আপু। সে আমাকে পছন্দ করে।
ছোঁয়া মুখ টিপে হাসছে৷ সাদি দাঁতে দাঁত চেপে তাকিয়ে আছে ছোঁয়ার দিকে৷
সাদির তাকানো দেখে ছোঁয়া শুকনো ঢোক গিলে
“চলো চলো সবাই৷ আমাদের দেরি হয়ে যাচ্ছে।
ছোঁয়া এখান থেকে যেতে পারলেই বাঁচে। সে এক পা বাড়াতেই সাদি আচমকা কোলে তুলে নেয় ছোঁয়াকে। চিৎকার করে ওঠে ছোঁয়া। সকলে এগোতে নিলে সাদি ধমককে ওঠে
” এক পা এগোলে সবার বাড়িতে কমপ্লেইন দিয়ে আসবো।
ভয়ে আর কেউ এগোয় না। সাদি ছোঁয়াকে কোলে নিয়ে ওই সরু রাস্তা ধরে এগোতে থাকে। তার ভাড়া বাড়িতে নিয়ে যাবে। বাড়িতে এখন সকলে রয়েছে। এই অবস্থায় কোলে করে ছোঁয়াকে নিয়ে যাওয়াটা বেমানান দেখায়।
রাস্তা ঘাটে লোক সংখ্যা নেই বললেই চলে। শুক্রবারের দিন। সকলের অফিস ছুটি। এই সময়টা তারা আরাম করে ঘুমচ্ছে বা পরিবারের সাথে আড্ডা দিচ্ছে।
ছোঁয়া সাদির গলা জড়িয়ে আরামসে সাদিকে দেখছে। লোকটার গম্ভীর মুখখানা। কন্ঠনালির পাশের ওই তিলটা দারুণ ভাবে টানছে ছোঁয়াকে। টুপ করে একটু ঠোঁট ছুঁয়িয়ে দিতে মন চাচ্ছে। কিন্তু লোকটা যাদি ঠাসস করে ফেলে দেয়?
আরেহহহ ফেললে ফেললো তাতে কি হয়েছে?
একটা চুমু খাওয়াই যায়।
ছোঁয়া আরও একটু শক্ত করে গলা জড়িয়ে নেয়। চোখ দুটো বন্ধ করে ওষ্ঠদ্বয় ছুঁয়িয়ে দেয় সাদির গলায়। সাদি থামে না এবং কিছু বলেও না। ছোঁয়া ভেংচি কাটে। পাথর লোক একটা।
এবার ছোঁয়া ছোট করে কামড়ে দেয় সাদির গলায়। থেমে যায় সাদি। চোখ পাকিয়ে তাকায় ছোঁয়ার দিকে। ছোঁয়া লজ্জায় চোখ নামিয়ে নেয়।
“আপনার গলা থেকে গন্ধ আসছে। ভাবলাম রাক্ষস টাক্ষস না কি তাই একটু কামড়ে পরিক্ষা করে নিলাম। জাস্ট এতটুকুই।
আপনার মতো বুড়োর প্রতি আমার কোনো ইন্টারেস্টি নেই।
সাদি আবার হাঁটতে থাকে। ছোঁয়া মুখ টিপে হাসে। একবার চিমটি কেটে দেয় সাদির বুকে টিশার্টের ওপর দিয়ে। পরে কি মনে করে টিশার্টের ভেতরে হাত ঢুকিয়ে দিয়ে বুকের বা পাশে শক্ত করে হাত চেপে ধরে।
সাদি আবারও তাকায় ছোঁয়ার দিকে। ছোঁয়া দাঁত কেলিয়ে জবাব দেয়
” চেক করছি আপনি মানুষ না কি এলিয়েন।
“আমারও চেক করা দরকার তোমাকে ঠিক কিসে লাড়ে।
” চেক করার কি আছে। আমি নিজেই বলে দিচ্ছি আমাকে শয়তানে লাড়ে। আর আপনাকে মানুষ বানাতে বলে।
সাদি দীর্ঘ শ্বাস ফেলে। কপাল করে বউ পেয়েছিলো। জাদু ঘরে তুলে রাখার মতো।
সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে দরজার সামনে নামিয়ে দেয় ছোঁয়াকে।
পকেট থেকে চাবি বের করে দরজা খুলে। ছোঁয়া ভেতরে ঢুকে টিভি চালিয়ে দেয়।
“যাকক এখানে এনে ভালোই করেছেন। এখন আমি মুভি দেখবো। উফফফফ গবুকে দেখবো। আমার জন্য চিপস নিয়ে আসুন ছোট ভাইয়া।
সাদি বিরক্তিতে চোখ মুখ কুঁচকে ফেলে। ছোঁয়ার মাথায় গাট্টা মেরে কিচেনে চলে যায়। ছোঁয়া মাথায় হাত বুলিয়ে টিভি অন করে চিল্লিয়ে বলে
” ভাবছি গ্যাব্রিয়েল এর নেক্সট মুভির নায়িকা আমি হবো।
সাদি রান্না ঘর থেকেই একটা টমেটো ছোঁয়ার মাথা বরাবর ছুঁড়ে মারে। সত্যিই মাথায় গিয়ে লাগে।
ছোঁয়া গাল ফুলিয়ে তাকায় সাদির দিকে।
“গ্যাব্রিয়েল ওর শার্ট ধোঁয়ার জন্যও নিবে না তোমার। তুমি বরং জায়েদ খানের পেছনে লেগে যাও। দুই পাগলে মানাবে ভালো। মুভি হিট হবে।
ছোঁয়া ভেংচি কাটে।
“জায়েদ খানও আপনার থেকে ভালো। অন্তত রোমান্টিক গান গাইতে পারে। আপনি তো করলা গেলা ছাড়া আর কিছুই পারেন না।
” তোমাকেও গিলতে পারি। গিলে দেখাবো?”
সাথে সাথে ছোঁয়া দুই হাতে মুখ চেপে ধরে। মনে মনে সাদিকে শ-খানিক গালি দিয়ে টিভির চ্যানেল পাল্টাতে থাকে।
সাদি দুইজনের জন্য দুই মগ কফি বানিয়ে এসে ছোঁয়ার পাশে বসে।
ছোঁয়া তাকায়ও না সাদির দিকে। সাদি তাকিয়ে আছে।
“সানডে আমি সিঙ্গাপুর যাচ্ছি”
সাদির নরম গলা। সে ভাবে ছোঁয়া রিয়েক্ট করবে। সাদিকে জড়িয়ে ধরবে। যেতে না করবে। কিন্তু ছোঁয়া উল্টে হাতে কফির মগ নিয়ে গোল হয়ে বসে পড়ে।
“সত্যি?
আমার জন্য একটা রোমান্টিক সুন্দর জামাই নিয়ে আইসেন।
সাাি হতাশ হয়। হাত বাড়িয়ে ছোঁয়ার কাঁধ জড়িয়ে ছোঁয়ার মাথাটা বুকের সাথে চেপে ধরে। ছোঁয়াও ভদ্র মেয়ের মতো পড়ে থাকে সাদির বুকে।
” তোমাকে ভালোবাসি না আমি। তুমি শুধুমাত্র আমার বউ।
ভালোবাসি শোনার জন্য তুমি যা যা করছো এতে কাজ হবে না।
বুক ভাড়ি হয়ে আসে ছোঁয়ার। চোখেও পানি টলমল করে
“ভালোবাসা লাগবে না আমার। শুধু একটা বেবি দিন। যাতে বেবিটার মুখের দিকে তাকিয়ে আপনি কখনো আমাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা না ভাবতে পারেন।
সাদি কিছু বলতে যাবে তখনই কলিং বেল বেজে ওঠে। ছোঁয়া সাদির বুক থেকে মাথা তুলে। সাদি উঠে গিয়ে দরজা খুলে। আর তখনই হুরমুরিয়ে ঢুকে পড়ে সামির। সোজা গিয়ে ছোঁয়ার পাশে বসে
” আমার সর্বনাশ হয়ে গেছে।
সাদি মাথায় হাত দিয়ে বলে। সাদি বিরক্ত। আবার ড্রামা শুরু করবে। ছোঁয়া আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছে। কি হয়েছে সামিরের জানতে চায় সে।
“কি হয়েছে ভাইয়া?।
” একটা মেয়ে আমাকে খেয়ে ছেড়ে দিয়েছে। এই মুখ আমি সমাজে কিভাবে দেখাবো? আমার কি আর এই জীবনে বিয়ে হবে? অকালে কপাল পুড়লো আমার।
ছোঁয়া এক পলক সামিরের দিকে তাকাচ্ছে তো আরেক পলক সাদির দিকে তাকাচ্ছে। খেয়ে ছেড়ে দেওয়ার বেপারটা আসলে ছোঁয়া বুঝতে পারছে না।
সামির তো কেঁদেই যাচ্ছে।
ছোঁয়া শুকনো ঢোক গিলে জিজ্ঞেস করে
“ভাইয়া খেয়ে ছেড়ে দেয় কিভাবে?
সামিরের কান্না শেষ। চোখে কোনো পানি নেই।
” বোঝো নাই বেপারটা?
একটা মাইয়া আমাকে চুমু খেয়ে ব্রেকআপ করে দিয়েছে। তাহলে বেপারটা খেয়ে ছেড়ে দেওয়া হলো?
এখন অন্য পোলার লগে ঘোরাঘুরি করছে। আমার কি হবে?
ছোঁয়া এবার সামিরের দিকে একটু এগিয়ে বসে বলে
“ভাইয়া আমারও একই অবস্থা। খেয়ে ছেড়ে দেওয়ার বেপারটা আমার সাথে ঘটেছে। আপনার কষ্টটা আমি বুঝতে পারছি।
চলবে