হৃদয়হরণী পর্ব-১২+১৩

0
12

#হৃদয়হরণী
#পর্ব:১২
#তানিশা সুলতানা

ভালোবাসলে না কি মানুষ অন্ধ হয়ে যায়? ছোঁয়াও কি অন্ধ হয়ে গেলো? সাদির দোষ গুলো সে দেখতেই পায় না। তার শুধু ভালো দিক গুলোই মনে থাকে। ভালো ব্যবহার?
সাদি কখনো ছোঁয়ার সাথে ভালো ব্যবহার করেছে? কথাই বলে না ঠিকঠাক ভাবে আবার ভালো বিহেভিয়ার করবে? হুহহ এটা হাস্যকর। ছোঁয়া আয়নায় নিজেকে দেখছে। ভালো করে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে থাকে। কোথায় ভুল আছে তার?
হুমম ভুল আছে তো। নাকটা বোচা। মায়াবী চেহারা না। চোখ দুটো টানাটানা নয় বড়বড়। গোলাপি ঠোঁট নেই তার। তার তো কালচে ঠোঁট। কোনো ছেলেকে আকৃষ্ট করার মতো রূপ নেই তার। তাহলে তাকে সাদি কি করে ভালোবাসবে? কি দেখে বিয়ে করবে?
এই প্রথমবার নিজের চেহারা নিয়ে অসন্তুষ্ট ছোঁয়া। মনে হচ্ছে আর একটু সুন্দর হলে কি হতো?
তবুও সে সাদিকে ভালোবাসে। ভীষণ ভালোবাসে। একটু বেশিই ভালোবাসে।

চোখ বন্ধ করে লোকটার পাশে অন্য কাউকে চিন্তা করলেই অস্বাভাবিক ভাবে বুক কাঁপতে থাকে। অস্থির লাগে। মরে যেতে ইচ্ছে করে।
নিজের এই পাগলামি ধরণের অনুভূতি সে কার কাছে শেয়ার করবে? কাকে বলবে সে তার এই কঠিন রোগের কথা? কে বুঝবে তাকে?

“ছোঁয়া এখনো চেঞ্জ করিস নি? এভাবে তোকে হলুদ কে মাখালো? এই হলুদ উঠবে? তুই একটু বেশিই বাড়াবাড়ি করিস সব সময়। বড় হবি কবে তুই? এরকম বাচ্চামি কিন্তু এখন আর মানায় না তোকে।

সিমি চোখ পাকিয়ে বলে। ছোঁয়ার কানে সিমির কথা গুলো ঢোকে না। সে তার ভাবনার জগতে বিভোর।
সিমি খানিকক্ষণ তাকিয়ে থাকে ছোঁয়ার দিকে। তারপর এগিয়ে গিয়ে ছোঁয়াকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নেয়।

” আপি আমি না পাগল হয়ে যাচ্ছি। ভালো লাগে না আমার। হাসতে পারছি না। দম বন্ধ লাগে।
সিমি দীর্ঘ শ্বাস ফেলে। ছোঁয়ার থুতনিতে হাত দেয়।

“দেখ ছোঁয়া তুই এখনো অনেক ছোট। ভালো মন্দ বোঝার বয়স তোর হয় নি। বয়স কতো তোর? ষোলো পেরিয়ে সতেরো। আর সাদি ভাইয়ের বয়স জানিস? ত্রিশ পেরিয়ে যাবে কিছুদিন পরেই। তোদের দুজনকে মানাবো বল?
এখন তো তুই বুঝতে পারছিস না। কিন্তু কিছুদিন পরে যখন অরেকটু বড় হবি বান্ধবীদের বর দেখবি তখন আফসোস করবি।

ছোঁয়া গম্ভীর গলায় বলে
” ওনাকে না পেলে আমি আফসোসে আফসোসে মরেই যাবো।
“এমন কথা বলবি না আর। বাবা মা শুনলে তোকে আস্ত রাখবে না। নিজের অনুভূতি কন্ট্রোল করতে শিখ।

ছোঁয়া বিছানায় গিয়ে বসে পড়ে।
” তুই আমাকে বুঝতেই পারিস না আপি। তোর কাছে কিছু শেয়ার করা মানে বিপদে পড়া। যা তুই এখান থেকে।

সিমি আর কিছু বলে না। একে বোঝানোর ক্ষমতা তার নেই। তাই সে কাপড় পাল্টে নিতে বলে চলে যায়।

___

সাদি সেলিম চৌধুরীর রুমে এসেছে। সেলিম খবরের কাগজ পড়ছে। সকালে পড়তে পারে নি। সময় পায় নি। তাই এখন একটু সময় বের করে পড়ছে। আজকে সে অনেকটাই খুশি। কালকে সাদির বিয়েটা হয়ে গেলে মেয়েকে নিয়ে ঢাকার শহর ছেড়ে দিবেন তিনি। সব ব্যবস্থা হয়ে গেছে।
সাদি সেলিম চৌধুরীর সামনে নিজের ফোনটা ধরে। মুহুর্তেই চোখ দুটো বড়বড় হয়ে যায় ওনার। খবরের কাগজ রেখে ফোনটা নিজের হাতে নেয়। এক পলক সাদির দিকে তাকিয়ে ফোনে থাকা পিকটা ভালো করে দেখতে থাকে। এতোখন খুশি মনে থাকলেও এখন তার মুখটা থমথমে হয়ে যায়।
ফোনটা খাটে রেখে সাদির দিকে তাকায় তিনি

“প্রাক্তন তো থাকতেই পারে। ইটস নরমাল সাদি।

সাদি বুকে হাত গুঁজে সেলিমের চোখে চোখ রেখে বলে
” পাস্ট তো থাকতেই পারে। ইটস নরমাল চাচ্চু। ছোঁয়াকে দিয়ে দিন আমায়।

সেলিম রেগে যায়। হাত মুষ্টিবদ্ধ করে ফেলে। কটমট চোখে তাকায় সাদির দিকে।
“সাদি চুপচাপ বিয়েটা করে নে। আমায় রাগিয়ে দিস না।

” আপনিও চুপচাপ বিয়েটা ভেঙে দিন। আমায় রাগিয়ে দিয়েন না।
রাগে সেলিমের চোখ দুটো লাল টকটকে হয়ে যায়।
“সাদি ভুলে যাস না আমি তোর চাচ্চু
” আপনিও ভুলে যাবেন না আমি আপনার ভাইয়ের ছেলে।
সেলিম আর বলার মতো কথা খুঁজে পায় না।
“আমাকে চোখ না রাঙিয়ে নিজের মেয়েকে সামলে দেখান। মৌমাছির মতো সে ঠিক ছুঁটে আসবে।

বলেই সাদি নিজের ফোনটা নিয়ে চলে যায়। সেলিম নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে না পেরে খবরের কাগজ ছিঁড়ে ফেলে। তাতেও রাগ কমে না তার।

__
সারা রাত দুজন চাতক পাখির ঘুম হয় না। একজন বিছানায় এপাশ ওপাশ করে রাত পার করে আরেকজন ছাঁদে বসে। ফজরের নামাজ শেষে ছোঁয়া জায়নামাজ গুটিয়ে গায়ে পাতলা চাদর জড়িয়ে ছাঁদে চলে যায়। ভালো লাগছে না তার। আর মাত্র কিছুখন তারপরেই সাদি হয়ে যাবে অন্য কারো। ছোঁয়া সয্য করবে কি করে?
আনমনে ছাঁদের দরজা খুলে সামনে পা ফেলতেই চমকে ওঠে ছোঁয়া। কেনোনা সাদি দোলনায় বসে আছে। দৃষ্টি তার ফ্লোরে। এলোমেলো চুল কুঁচকানো টিশার্ট খালি পায়ে। এরকম সাদিকে ছোঁয়া প্রথমবার দেখছে। বরাবরই লোকটা গোছানো।
ছোঁয়া মুখটা মলিন করে জুতো খুলে সিঁড়িতে রেখে গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে যায় সাদির দিকে। সাদির পাশে বসে পড়ে। সাদি তাকায়ও না একবার। ছোঁয়া বিরক্ত হয়। মনে মনে কয়েকটা গালিও দেয়।
একবার তো পাশ ফিরে তাকাতে পারতো।
ফ্লোর বেশ ঠান্ডা।

ছোঁয়া একটা কাশি দিয়ে নিজের উপস্থিতি জানান দেয়। তবুও সাদির কোনো ভাবান্তর হয় না।
ছোঁয়া এবার নাক ফুলিয়ে বলে ওঠে
” বিয়েটা সত্যি সত্যিই করবেন তাহলে?

এবার সাদি ঘাড় বাঁকিয়ে তাকায় ছোঁয়ার দিকে। ছোঁয়া তাকিয়েই ছিলো তাই চোখাচোখি হয়ে যায়। চোখ নামিয়ে নেয় ছোঁয়া। লোকটার চাহনি ভয়ংকর। ওই চোখে তাকিয়ে থাকা সম্ভব না।
সাদি জবাব দেয় না।
ছোঁয়া মাথা নিচু করে আবারও বলে ওঠে
“আপনি কি আমাকে বুঝবেন না? না কি একটুখানি পেছন পেছন ঘুরছি বলে ভাব দেখাচ্ছেন? আমি না হয় একটু অসুন্দর। কিন্তু মানুষ তো। তাই না? এভাবে ইগনোর কেনো করছেন আমায়? প্রবলেম কি আপনার? আমি য
ছোঁয়ার বলার মাঝেই সাদি ফট করে বলে ওঠে
” পালাবে আমার সাথে?
বলেই সাদি দাঁড়িয়ে যায়। বা হাতে নিজের চুল গুলো পেছনে ঠেলে পা বাড়ায় ছাঁদ থেকে নামার জন্য। ছোঁয়াও দাঁড়িয়ে যায়। সাদি কি বললো বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে তার। জিজ্ঞেস করবে কি? না থাক
আবারও বসে পড়ে দোলনায়।

সাদি দরজা ওবদি গিয়ে থেমে যায়। পেছন ঘুরে তাকায় ছোঁয়ার দিকে। মেয়েটা ভাবছে। সাদি ফোঁস করে শ্বাস টেনে বলে
“আমার থেকে কখনো কিছু পাবে না। লাভ, কেয়ার, সিমপ্যাথি, এটেনশন কিছুই পাবে না।
জাস্ট আমার পাশের রুমে থাকার জায়গা পাবে। ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নাও।
আর হ্যাঁ আমার বয়স ৩১ ছুঁই ছুঁই।

বলেই বড়বড় পা ফেলে চলে যায় সাদি। ছোঁয়া ভাবতে থাকে সাদির কথা। কি বলে গেলো?

চলবে

#হৃদয়হরণী
#পর্ব:১৩
#তানিশা সুলতানা

টেনশনে ছোঁয়া শান্তিতে নিঃশ্বাসও নিতে পারছে না। কিভাবে যাবে? কোথায় যাবে? কোথায় থাকবে? বিয়ে করবে কি করে? টাকা পাবে কোথায়?
পায়চারি করতে করতে ছোঁয়ার পা ব্যাথা হয়ে গেছে৷ সেই সকাল থেকে পায়চারি করছে। একটা দানাও তার পেটে পড়ে নি৷ কিন্তু সাদি দিব্যি আছে৷ গাণ্ডেপিণ্ডে গিললো। এখন বেলকনিতে দাঁড়িয়ে প্যান্ডেল দেখছে। প্রচুর টাকা খরচ করেছে তার বাবা৷

“সাদি তুমি কোনো গন্ডগোল করবে না।

সেলিমের আওয়াজ শুনে সাদি পেছন ঘুরে তাকায়। কিন্তু কোনো কথা বলে না।
সেলিম এগিয়ে আসে। দাঁড়িয়ে যায় সাদির মুখোমুখি
” দেখ সাদি মায়া ভালো মেয়ে। রিলেশন এখনকার মেয়েরা দুই একটা করেই থাকে। আর একটা সেলফি তোলা খারাপ কিছু না। হতে পারে ছেলেটা মায়ার কোনো কাজিন।

সাদি সেলিমের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। লোকটা ভীষণ স্বার্থপর। নিজের স্বার্থের জন্য যা খুশি করতে পারে।
সেলিম আবারও বলে
“আমার মেয়ে আমার কলিজা। সাদি তুই ভালো করেই জানিস তুই স্বাভাবিক না। তোর সাথে আমার মেয়ে ভালো থাকবে না। তুই কোনো কথাবার্তা ছাড়া মায়াকে বিয়ে করে নিবি।

সাদি রেলিং এর ওপর বসে পড়ে। জবাব দেয় না। সাদির থেকে জবাব না পেয়ে সেলিম বিরক্ত হয়। সাথে এটাও বুঝে যায় এই ছেলে জবাব দেবে না।
” আমার মেয়ের চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে বিয়ের জন্য প্রস্তুতি নে।

বলেই সেলিম চলে যায়। ছোঁয়া সাদির রুমে আসছিলো। সেলিমকে দেখে চুপটি করে ফুলদানির পেছনে লুকিয়ে পড়ে। কারণ বাবা একটু আগে পই পই করে বলে দিয়েছে “সাদির আশেপাশে না যেতে”
বাবা তো আর জানে না তার মেয়ে সাদির সাথে পালানোর প্লানিং করছে৷
সেলিম সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতেই ছোঁয়া পা টিপে টিপে সাদির রুমে ঢুকে পড়ে। রুমে সাদিকে না দেখে বেলকানিতে চলে যায়।
সাদিকে রেলিং এর ওপর বসে থাকতে দেখে বুক কেঁপে ওঠে ছোঁয়ার। আতঙ্কে উঠে সাদির হাত ধরে টেনে নিচে নামায়। সাদি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে থাকে। ছোঁয়ার হাত পা কাঁপছে। ঠিক ভাবে শ্বাস টানতে পারছে না মেয়েটা। যেনো এই মুহুর্তে ভয়ংকর কিছু ঘটে গেছে।

সাদি দৃষ্টি সরিয়ে ফেলে। এই টুকুনি মেয়ে এতোটা গভীর ভাবে কি করে ভালোবাসতে পারে ভেবে পায় না সাদি।
“আই এম ওকে

সাদির কথায় ছোঁয়া ছলছল চোখে তাকায় সাদির দিকে।
” এখানে আর বসবেন না প্লিজ।
সাদি ফোঁস করে শ্বাস টেনে বেলকনিতে থাকা চেয়ারে বসে পড়ে। চোখ দুটো বন্ধ করে প্রশ্ন করে
“ভেবেছো?

” নাহ
আমার ভাবতে হবে না। আমি আপনার সঙ্গ চাই না, আপনার সঙ্গী হতে চাই। আপনার ভালো সময়ে না আপনার খারাপ সময়ে আপনার কাঁধে হাত রাখতে চাই। পাশের রুম কেনো আমাকে কিচেনে থাকতে দিলেও হবে। আপনার থেকে কখনো কিছু পাওয়ার আশা করি না আমি। আপনাকে শুধু দিতে চাই। অফুরন্ত ভালোবাসা দিয়ে আপনার জীবনটা রাঙিয়ে দিতে চাই।

সাদি মন দিয়ে ছোঁয়ার কথা শুনে। কিন্তু সাথে সাথে কোনো জবাব দেয় না। মনে মনে কিছু একটা চিন্তা করে বলে
“পার্লারে চলে যাও। সেখান থেকে সামির তোমায় নিয়ে আসবে।
ছোঁয়া মাথা নারায়।
সে ভীষণ খুশি। দুটো লাফ দিতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু সাদি সামনে বলে পারছে না।

” আর শুনো
জেনে বুঝে আগুনে ঝাঁপ দিচ্ছো। পরে আফসোস করতে পারবে না।

ছোঁয়া সাদির ঘন কালো চাপ দাঁড়ির দিকে তাকিয়ে জবাব দেয়
“আফসোস যখন করবো তখন নাহয় বাবু সোনা বলে আফসোস মিটিয়ে দিয়েন।

বলেই ছোঁয়া এক দৌড়ে চলে যায়। সাদি ছোঁয়ার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।

__

ছোঁয়া সেলিমকে পার্লারে যাওয়ার কথা বলতেই তিনি না করে দেয়। কিন্তু তার এই না বেশিখন টিকে থাকে না। ছোঁয়ার ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করা তার মনটা গলিয়ে দেয়। অনুমতি দিয়ে দেয় পার্লারে যাওয়ার।
ছোঁয়ার সাথে পার্লারে যাচ্ছে সাদির মামাতো বোন সুইটি।
সিমিকেও যেতে বলেছিলো কিন্তু সিমি যাবে না। সে বাড়িতেই সেজে নিবে।
তাকে সাজাবে সিফাত।
এদের ভালোবাসা দেখে ছোঁয়া বরাবরই মুগ্ধ হয়। ছোঁয়ার থেকে নয় বছরের বড় সিমি। ছোঁয়া ছোট থেকেই দেখছে তাদের ভালোবাসা। এই দুটো মানুষকে কখনোই ঝগড়া করতে দেখে নি ছোঁয়া। একটু কথা কাটাকাটি ও হয় নি। মাঝেমধ্যে সিমি রেগে গেলে সিফাত চুপচাপ অভিযোগ শোনে আর সিফাত রেগে গেলে সিমি চুপচাপ শুনে। রাগ পড়ে গেলে আবার সরি বলে দেয়।
ছোঁয়া প্রাণ ভরে দোয়া করে বোনের জন্য। সারাজীবন তারা এইভাবেই থাকুক।

__

ছোঁয়ার সাজা হয়ে গেছে বেশ কিছুখন আগে। এখন সুইটি সাজছে। ছোট্ট পার্লার। নতুন নতুন দিয়েছে। এখানে সাজানোর লোক একজনই। তাই আগে পড়ে সাজতে হচ্ছে।
ছোঁয়া বাইরে একটু উঁকি দিয়ে দেখে সামির দাঁড়িয়ে আছে।

” সুইটি আপু তুমি সাজো আমি একটু আসছি।

সুইটিকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ছোঁয়া বেরিয়ে যায়। সামির বাইক নিয়ে এসেছিলো। সামিরের বাইকে বসে মুহুর্তেই হাওয়া হয়ে যায়।

কাজি অফিসের সামনে বাইক থামে। ছোঁয়া বাইক থেকে নেমেই এক দৌড়ে ভেতরে ঢুকে যায়। সেখানে আশিক শিপন আর দুটো মেয়ে। এদেরও চেনে ছোঁয়া। সাদির বন্ধু। রিমি এবং আফরা।
সাদি বাড়িতে পড়ার টিশার্ট আর টাউজার পড়েই এসেছে। ছোঁয়া গিয়ে রিমির পাশে দাঁড়ায়।

“আপু আমাকে কিউট লাগছে না?

ঘুরে ঘুরে রিমিকে দেখাতে থাকে।

রিমি কিছু বলতে যাবে তার আগেই সাদি ধমক দিয়ে বলে ওঠে
” চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাক ইডিয়েট

ছোঁয়া মুখ বাঁকিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যায়। এখনই বিয়ে করবে তবুও ধমক দিতে হবে। বজ্জাত লোক একটা।
একটু পরেই কাজি চলে যায়। নিয়ম মেনে দুজনের বিয়ে পড়িয়ে দেয়। ছোঁয়ার ঠোঁটের কোণা থেকে হাসি সরছেই না। সে আজকে ভীষণ খুশি। এতোদিনের কান্নার ফল বুঝি আজকে পেয়ে গেলো?

সাদি আর ছোঁয়া পাশাপাশি বসানো হয়েছে।
ছোঁয়া সাদির দিকে একটু চেপে বসে ফিসফিস করে বলে
“দেখলেন আমাদের বিয়েটা হয়ে গেলো? বলেছিলাম না আপনাকে আমিই পাবো? পেলাম তো?

সাদি জবাব দেয় না। তাকিয়ে থাকে সদ্য বিয়ে করা বালিকা বধুর দিকে।

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে