#গল্পঃহঠাৎ_একদিন
#পর্বঃশেষ
#লেখকঃরিয়াজ
আমি তাকে এতোদিন ধরে ফলো করছি প্রেমের প্রপোজাল পাঠিয়েছি আর সে আমাকে চিনতেই পারছে না??এটা কেমন কথা??তারপর আবার বল্লাম কি আজিব তুমি কলেজে আসার সেই প্রথম দিন থেকেই আমি তোমাকে ফলো করছি প্রেমের প্রপোজালও পাঠিয়েছি আর তুমি বলছো তুমি আমাকে চিনোনা??
সে উত্তর না আপনাকে তো আমি চিনিনা।আপনি তো সবসময় আড়ালে ছিলেন কখনো সামনে এসেছিলেন আমার??নিজের প্রপোজাল নিজে কি আমার সামনে নিয়ে এসেছিলেন?আনেন নি তাহলে আমি কিভাবে আপনাকে চিনবো বলেন??
এর আগে কি কখনো কথা হয়েছে আমি বল্লাম না সে বলছে তাহলে কিভাবে চিনবো বলেন??
আমিঃআসলে সরি।আমি ভাবলাম আপনি আমাকে চিনেন।সেজন্য কথা বলতে আসলাম।
জান্নাতঃহুম আমিতো আপনাকে ঠিকই চিনি আপনি যেমন আমাকে কলেজের প্রথম দিন থেকেই দেখছেন আমিও আপনাকে সেই কলেজের প্রথম দিন থেকেই দেখে আসছি।
আমিতো এটা শুনে পুরাই অবাক।যে এতক্ষন বল্লো আমাকে চিনেনা।এখন সেই আবার বলছে সেই কলেজের প্রথম দিন থেকেই নাকি আমাকে দেখছে।
রহস্য আছে মেয়েটার ভিতরে।
জান্নাতঃআসলে এতক্ষন আমি মজা করছিলাম আপনার সাথে।আর আমি আপনাকে ভালো করেই চিনি।আমার ক্রাশ কে আমি চিনবো না এটা কি করে হয় বলুন??
আমিঃআপনার ক্রাশ মানে??আপনার ক্রাশ কে আবার??
জান্নাতঃকেনো আপনি আর কি।।।।।
আমিঃআমি এটা শুনে স্টোক করার মতো অবস্তা হয়ে গেলো।ও মা এতো দেখছি মেঘ না চাইতে বৃষ্টি।
এতোদিন তার নাম্বার ফেসবুক আইডি কিছুই ছিলো না।কিন্তু ওইদিন ওর নাম্বার ফেসবুক আইডি সব নিয়েছিলাম।বাসায় এসেই ফেসবুকে মেসেজ দিয়ে রাখি।
সেদিন থেকেই আমার কথা বলা শুরু হয় জান্নাতের সাথে।৪’৫ দিন পরে মেসেঞ্জারে প্রপোজ করে দেই।সেও রাজি হয়ে যায়।এভাবেই চলতে থাকে আমাদের রিলেশন। ১ বছর ২ বছর ৩ বছর ৪ বছর ৫ বছর। ৫ বছর আমাদের রিলেশন স্থায়ী ছিলো।মানে ট্রেনে যখন দেখা হয়ে তখন অলরেডি আমাদের দশ বছরের পরিচয়।
লাস্ট ইয়ার মানে যে বছর আমাদের রিলেশন ব্রেকাপ হয় সে বছরের শুরু থেকেই জান্নাতের সাথে আমার প্রচুর জগড়া হতো।সে কথায় কথায় আমাকে খোঁটা দিতো আমার চাকরি হয় না।চাকরি পাই না।বাপের টাকায় বসে বসে খাই।আচ্ছা চাকরি যদি না হয় সেটা কি আমার দোষ??
আমার কপালে চাকরি ছিলো না তাই হয়নি।একদিন রাতে জান্নাত আমাকে কল দিয়ে বলে ওকে দেখতে কাল পাত্র পক্ষ আসবে।আর এইবার কিন্তু ওর বিয়ে টা হয়েই যাবে।আমি তাকে বল্লাম আগে বিয়ে হোক তারপর বলিও। মূলত আমক হাসির ছলে তার সব কথা উড়িয়ে দিয়েছিলাম।কারণ আমার বিশ্বাস ছিলো ওর বিয়েটা হবে না।কিন্তু যেদিন পাত্র পক্ষ ওকে দেখতে আসে ওইদিন থেকেই আমার জান্নাতের সাথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
৭ দিন ধরে আমার সাথে তার কোনো যোগাযোগ নেই।ফোন দিলে ফোন বন্ধ ফেসবুক আইডিতে কাওকে এক্টিভ দেখাচ্ছে না।ওইদিন রাতে যে কথা বলছিলাম সেটাই ছিলো আমাদের শেষ কথা।
৭ দিন পর কলেজে জান্নাতের এক ক্লাসমেট এসে আমাকে একটি কাগজ ধরিয়ে দিয়ে বল্লো এটা আপনাকে জান্নাত দিতে বলেছে।আমি ওইদিন বাসায় চলে এসে ফ্রেশ হয়ে শুয়ে চিঠি পড়া শুরু করলাম।
প্রিয়,রিয়াজ
আশা করি ভালো আছো।আমি ভালো আছি কিনা সেটা জানার প্রয়োজন নেই।আমি তোমাকে সেদিন রাতে বলেছিলাম না আমাকে দেখতে আসবে।আর সেটা তুমি হাসির ছলে উড়িয়ে দিয়েছিলে।ওইদিন তারা আমকে দেখতে এসে তাদের আমাকে পছন্দ হয়ে যায়।আর সেদিনই আমাকে আন্টি পড়িয়ে দিয়ে যায়।আর সেদিন তারা আমাকে নতুন ফোন নতুন সিমে কিনে দিয়ে গিয়েছে। আর সবার সাথে যোগাযোগ বন্ধ তাছাড়া আব্বু আম্মু আমাকে কসম দিয়ে দিয়েছে আমি যাতে অন্য কারো সাথে কোনো সম্পর্ক না রাখি।তাই তোমার সাথে আমার আর রিলেশন কন্টিনিউ করা সম্ভব নয়।ভালো থাকবে।
চিঠিটা পড়ে কান্নায় আমার পুরো বালিশ ভিজে গিয়েছে। সেদিন সারারাত কান্না করেছিলাম।১ মাস আর কলেজে যাইনি।কিন্তু মনে মনে সিধান্ত নিয়েছিলাম আমি ওই স্বার্থপরের চাইতে ভালো সুন্দর একটি মেয়েকে বিয়ে করবো আর জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়ে তাকে দেখিয়ে দিবো।
সেদিনের পর থেকে আমার সাথে জান্নাতের আর কোনো দিন দেখাও হয়নি কথাও হয়নি।আর আজ এই ট্রেনে তার সাথে দেখা হয়ে গেলো।এগুলো চিন্তা করতে করতে কখন যে ট্রেন চট্টগ্রাম চলে এসেছে বুঝতেই পারিনি।
কিন্তু জান্নাতের সাথে আমার কোনো প্রকার কোনো কথা হয়নি।তবে তাকে দেখার পর আমি বুজতে পেরেছি তার প্রতি আমি মনের ভিতরে এখনো অনেক ভালোবাসা রয়ে গিয়েছে। আমার এই জীবনে ওর সাথে আর দেখা না হলেই ভালো হতো। কিন্তু দেখা হয়ে মস্ত বড় ভুল হয়ে গিয়েছে।তার সাথে কাঁটানো সেই পূরনো স্মৃতি গুলো মনে পরে গিয়েছে। ট্রেন থেকে নেমে দুজনে দুদিকে চলে গেলাম।আমি আমার ওয়াইফ কে শ্বশুর বাড়ি। আর সে তার হাজবেন্ড এর সাথে কোথায় যাচ্ছে সেটা আমি জানিনা।
………………সমাপ্ত…………