স্যার যখন স্বামী সিজন২
শেষ_পার্ট
#লিখা জান্নাতুল ফেরদৌস
ফারিদ- ছাদ থেকে এসে দেখি তমা ঘুমিয়ে গেছে।ওর কাছে আর ক্ষমা চাইতে পারালাম না।ভাবলাম কাল সকালে ঠিকইই ক্ষমা চেয়ে নিব।নাহলে আমার বউটা একরাশ রাগ আর অভিমান নিয়ে বসে থাকবে।
সকালে ঘুম থেকে উঠতেইই দেরি হয়ে গেল।তাড়াতাড়ি করে আমিসহ তমাকে খাইয়ে দিয়ে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।সারাদিনের ক্লাস শেষ করে বিকালে ঘামের শরীর নিয়ে বাসায় আসলাম।বাসায় এসে সোজা খাটে এসে শুয়ে গেলাম।সারাটাদিন এত পরিশ্রম করার সত্ত্বেও বাসায় এসে আমার বউটার মায়াবি মুখটা দেখলেই আমার সব ক্লান্তি নিমিষেই দূর হয়ে যায়।আশ্চর্য এতক্ষণ হল বাসায় এসেছি মেয়েটা কোথায়?এইসময় তো ওর রুমে থাকার কথা।পুরো বাড়ি খুঁজেও ওকে পেলাম না।এই অবস্থায় ও কোথায় গেল আমাকে কিছু না বলে।টেনশনে পড়ে গেলাম।হঠাৎ টেবিলের উপর একটা কাগজ দেখতে পেলাম।কাগজ খুলে দেখি তমা আমার জন্য একটা চিঠি লিখে গেছে।
প্রিয় ফারিদ,
আপনাকে না জানিয়ে আমি আপনার সংসার থেকে চলে যাচ্ছি। আমার পক্ষে এই সংসার করা সম্ভব না।এত টেনশন এত চিন্তা আর প্রিয়জনদের হারাতে হারাতে আমি বেঁচে থাকার আশাটা হারিয়ে ফেলেছি।কিন্তু আপনার কাছ থেকে যেদিন জানতে পারলাম আমি মা হতে যাচ্ছি বিশ্বাস করেন নিমিষেই আমার সব কষ্ট দূর হয়ে গেল।মা হওয়ার খুশিতে নিজেকে দুনিয়ার সবচেয়ে সুখী মানুষ মনে হচ্ছিল। কিন্তু তা শুধু ক্ষণিকের জন্য।এই মা হওয়া বিষয়টার সাথে আমার অতীতের ভয়ানক স্মৃতি লুকিয়ে আছে।যা আমি আপনাকে প্রথমে বলতে চাইলেও পরে তা লুকিয়ে রাখি।কেন জানেন শুধু আপনার জন্য।আপনার ভালোবাসা হারিয়ে ফেলার ভয়ে আমি এই কাজটা করতে বাধ্য হই।ভেবেছিলাম অতীত অতীতের মাঝে রেখে দিব তা কখনো আপনার সামনে আসতে দিব না।কিন্তু আমি মন থেকে এই কষ্টের বোঝার পাল্লা আর বয়ে বেড়াতে পারছি না। তাই আপনাকে আজকে সব খুলে বলব।আপনার সামনে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলা উচিত ছিল কিন্তু আপনার সামনে এই ভয়ানক কথাগুলো বলার দুর্সাহস আমার কোনকালেই ছিল না আর আজো নেই।তাছাড়া আমার নিজের আত্মসম্মানের একটা ভয় আছে।যার কারণে আজকে এই চিঠির সাহায্য নিচ্ছি।সব জানার পর আমাকে আর মেনে নিতে পারবেন না তা আমি জানি।আর আপনার ভালো মানুষিকতার সুযোগ নিয়ে আপনাকে সারাজীবন কষ্টের মধ্যে রাখার কোন মানেই হয় না।তাই আমি নিজেই আপনার জীবন থেকে সরে যাচ্ছি। পারলে ভালো একটা মেয়ে দেখে বিয়ে করবেন যে ঘরের সব কাজ করতে পারবে, আপনার সংসার সামলাতে পারবে আর তার পবিত্র ভালোবাসা দিয়ে আপনার জীবনকে সুখের কানায় কানায় ভরিয়ে দিবে।ভালো থাকবেন আর নিজের যত্ন নিবেন।
ইতি
আপনার তিলোত্তমা
.
.
চিঠিতে তমার জীবনের অতীতের ঘটনা জানতে পেরে বুঝতে পারলাম মেয়েটা কেন এই সংসার আর ভালোবাসা থেকে নিজেকে সবসময় গুটিয়ে নিত।ওর কষ্টগুলো দূর করার সর্বাত্মক চেষ্টা করতাম ভাবতাম আমি ওর কষ্টগুলো দূর করতে সফল হয়েছি কিন্তু না আমি ভুল ছিলাম। আমি সত্যিই ওর কষ্টগুলো এখনো মুছে ফেলতে পারিনি
ব্যর্থ হয়েছি আমি।এতদিন আমার সাথে সংসার করেও ও এখনো বাকি সব পুরুষদের সাথে আমার তুলনা করছে।যেটা ওর মন থেকে আমাকে দূর করতেই হবে।
দেখি কতদিন ও আমার থেকে নিজেকে দূরে রাখে।আমিও বসে থাকার পাত্র নয় ওর মনের ভিতরে নিজের জায়গা আরো ভালোভাবে গড়ে তুলতে হবে। যাতে আর কখনো ও আমাকে ভুল বুঝে এই ফালতু কাজটা করার পদক্ষেপ আর দ্বিতীয়বার না তুলে।ওকে কিভাবে নিজের বশে আনতে হবে তা আমার বেশ ভালোভাবেই জানা আছে।এখন থেকে ওকে আগের থেকেও আরো অনেক বেশি বেশি ভালোবাসব যে ও আমার ভালোবাসার মায়াবন্ধন থেকে কিছুতেই ছুটে পালাতে না পারে।বাবুর আম্মু….. এত সহজে আমার থেকে তুমি পালাতে পারবে না।তোমার অতীত জানার আগে তোমার প্রতি আমার যে ভালোবাসাটা ছিল সেটা অতীত জানার পরেও থাকবে।এত সহজে তোমাকে আমি ছাড়ছি না বাবুর আম্মু।
.
.
তাড়াতাড়ি করে রেলস্টেশনের রওনা দিলাম।বাসে করে ও কোথাও যাবে না সেটা আমি ভালো করেই জানি।তাই রেল স্টেশনের দিকে রওনা দিলাম।আর আমার বোকা বউটাকেও অনেক খোঁজার পরে পেয়ে গেলাম।
ফারিদ- কি ব্যাপার এখানে কেন?আমাকে ছেড়ে আমার সংসারকে ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার এত শখ কেন?
ওর মুখের দিকে তাকিয়ে দেখি আমার এমন কথা শুনে ও অনেক বড় একটা শকড খেল। বিষণ্ন চোখ দিয়ে আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে আবার মাথাটা নিচু করল।
তমা- আপনি এমনভাবে কথা বলছেন মনে হয় যেন কিছু জানেন না।কেন এখানে আসলেন?প্লিজ চলে যান এখান থেকে।
ফারিদ- হ্যা যাবতো এখান থেকে।এখানে থাকার আমার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নাই।এখানে থেকে বউয়ের সাথে রোমান্স করা যায় নাকি?চল বাসায় চল।বাসায় গিয়ে রোমান্সের কাজটা শুরু করব।
ও আবারো বিস্ময় চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।ভাবছে আমি ওর অতীতের কথা শুনে অতিরিক্ত শকড খেয়ে পাগল টাগল হয়ে গেলাম নাকি!
আরে….. আমার দিকে এইভাবে তাকিয়ে আছে কেন? এই আমি কিন্তু এখনো আমি সুস্থ আছি।পাগল হয়নি।কিন্তু মাই ডিয়ার বাবুর আম্মু তুমি আমাকে ছেড়ে চলে গেলে হয়ত সত্যিইই আমি পাগল হয়ে যাব। আমাকে ছেড়ে চলে যাবা এতবড় ডিসিশনটা তুমি একা নিতে পার না।আমি কি কখনো তোমাকে এই অনুমতি দিছি যে নিজের যখন ইচ্ছা হল তখন আমাকে ছেড়ে চলে যাবা।যেখানেই যাও আমাকেও সাথে করে নিয়ে যাবে নাহলে তুমি যেখানে যাবে আমিও ভূতের মতন তোমার পিছু পিছু যাব। কিছুতেই তোমার পিছু ছাড়ছি না।
.
.
ও মাথা নিচু করে কাঁদছে সেটা বেশ বুঝতে পারছি।
ফারিদ- এই কাঁদছ কেন বোকার মতন?
তমা- আপনি এখানে এসে আমার সাথে কি মশকরা করছেন?
ফারিদ- আজব এখানে মশকরা করার কি হল?
তমা- প্লিজ অবুঝের মতন কথা একদম বলবেন না।আমার সাথে যা হয়েছে সে পাপজনক কথাগুলো আমার মুখ দিয়ে আসবে না বলে আমি আমার অতীতের কথাগুলো চিঠিতে লিখে রেখে এসেছি।আমি জানি আপনি সবকিছু জেনে গেছেন তারপরও কেন আমার মুখ দিয়ে সে কথাগুলো খুলাতে চাচ্ছেন।আপনি আসলে কি চাচ্ছেন?
ফারিদ- আমার তোমাকে চাই আর বাবুকে চাই।কি সুন্দর করে চিঠি লিখে বলেছেন আপনি আমাকে ফেলে চলে যাচ্ছেন। যাচ্ছ তো যাচ্ছ সাথে আমার বাবুকে নিয়েও যাচ্ছ। এই বাবুটা কি শুধু তোমার একার আমার কিছু হয়না না?তুমি যেমন ওর মা তেমনি আমি ওর বাবাও। বাবার ভালোবাসা থেকে আমার বাবুকে কেন বঞ্চিত করছ?
তমা-………….
ফারিদ- তোমাদের দুইজনকে ছাড়া এই লাইফে একা চলা আমার জন্য অনেক কষ্টকর।আর হ্যা আমি চাচ্ছি তুমি মুখ দিয়ে তোমার অতীত বল।তাতে সমস্যাটা কি?
তমা- …………
ফারিদ- তোমার কাছে এই সমস্যা মনে হচ্ছে না তুমি খারাপ, অপবিত্র একটা মেয়ে।তুমি এমন ভাব করছ মনে হয় যেন তোমার নিজ ইচ্ছাতে সবকিছু হয়েছে।
তমা- …………
ফারিদ- তোমার সাথে খারাপ হয়েছে, দোষ ওরা করেছে আর তার মাশুল তুমি দিয়েছ। এখানে আমি তোমার কোন ভুল,দোষ দেখছি না।আমার নিজেরও দুই বোন আছে।সেটা থেকে আমি ভালো করেই বুঝি একটা মেয়ের সাথে এইসব হলে কতটা কষ্ট লাগে। আরেকটা কথা তুমি ভুলে যাচ্ছ তুমি অপবিত্র না।যেদিন আমার ভালোবাসা দিয়ে আমি তোমাকে স্পর্শ করেছি,পবিত্র ভালোবাসায় আমরা সিক্ত হয়েছি সেদিনি তুমি আমার কাছে পবিত্র হয়ে গিয়েছিলে।আমার ভালোবাসার স্পর্শ দিয়ে আমি তোমাকে অপবিত্র অপবাদ থেকে পবিত্র করেছি।আমার কাছে সবসময় তুমি যেমন ছিলে আজো ঠিক তেমনটাই আছ।
আর আমি কাউকে দয়া করছি না।ভালোবাসার মানুষকে দয়া, করুণা কোনটাই করা যায় না।ভালোবাসি বলেই তোমাকে আমার সাথে থাকতে হবে।তোমার মা বাবা আমার উপর ভরসা করে তোমাকে আমার হাতে দিয়ে গিয়েছে আর তুমি…….!তুমি আর বাবু এখন আমার দায়িত্ব।তোমাদের উপর আমার সব দায়িত্ব আমি ঠিকভাবে পালন করতে চাই।যাই হোক এখন চল বাসায় চল।
ওর হাত ধরাতে ও আমার মুখের দিকে দ্বিধানিত্ব দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।কি করা উচিত এই মূহুর্তে ও ভেবে উঠতে পারছে না।
ফারিদ- বাবুর আম্মু তুমি একটাবার আমার উপর বিশ্বাস করে দেখ।শুধু একটাবার।আমাদের লাইফের সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। তোমার একটাই ভয় না যদি কখনো আমি ভুল করে এইসব অতীতের কথা তোমাকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে তোমাকে সেই আঘাতটা আবারো দিয়ে ফেলি।
বিশ্বাস কর এমন কিচ্ছু হবে না।এই মূহুর্তে আমি তোমার অতীত আমার মন থেকে মুছে ফেলছি সাথে তুমিও মুছে ফেল।এগুলো তোমার মন বা আমার মনে আজকে আর এখনের পর থেকে আসতে দিব না।এখন থেকে আমি তুমি আর আমাদের বাবু নিয়ে আমাদের পরিবার হবে।তুমি শুধু আমাদের নিয়ে আমাদের পরিবার নিয়ে ভাববে আমাদের ভালোবাসবে বাকি সব আলতুফালতু কথা বাদ।প্লিজ একটাবার বিশ্বাস করে আমার হাতে হাত রাখ।শুধু একটাবার।
.
.
তমা- আর কোনকিছু না ভেবেই ওর হাতে হাত রেখে দিলাম।
ফারিদ- থ্যাংকস বাবুর আম্মু।তোমার কাছে আমি এই আশাটাই করেছিলাম।
তমাকে সাথে সাথে কোলে তুলে নিলাম।
তমা- এই কি করছেন?এইভাবে পাব্লিক প্লেসে আমাকে কোলে তুলে নিলেন কেন?মানুষ কি ভাববে!
ফারিদ- হায়রে তুমি মানুষের টেনশনে আছ।আর আমি আমার বাবু আর বাবুর আম্মুর টেনশনে আছি।মানুষের কথা ভাবা তুমি বাদ দাও আর আমাকে নিয়ে ভাব।
তমা- ………..
ফারিদ- বাবুর আম্মু একটা কথা বলার ছিল……
তমা- হ্যা বলেন….
ফারিদ- আসলে কালকে তোমার সাথে বাজে ব্যবহারের জন্য আমি সত্যি দুঃখিত।তোমার মনখারাপ চেহেরাটা দেখে খুব কষ্ট হচ্ছিল তাই রাগের মাথায় তোমাকে অনেককিছু বলে ফেলেছি।প্লিজ এই বিষয় নিয়ে তুমি আর মন খারাপ কর না।
তমা- আমি মন খারাপ করেনি।
ফারিদ- সত্যি…..
তমা- হুম সত্যি……
ফারিদ- যাক বাবা বাঁচা গেল।আচ্ছা শোন কালকে ইউটিউব থেকে রান্নার একটা নতুন আইটেম শিখেছি আজকে নিজ হাতে আমি সেই মজার আইটেমটা রান্না করে তোমাকে খাওয়াব।ঘরের সব কাজ আমি আগের মতনই করব তোমাকে কিচ্ছু করতে হবেনা তুমি শুধু নিজের আর আমাদের বাবুর খেয়াল রাখবে।
তমা- হুম
ফারিদ- ইশ দেখ মুখটার কি হাল বানিয়েছে।দুপুরে কিছু খাওনি না?কেন খাওনি?এতক্ষণ ধরে না খেয়ে ছিলে?আগে তোমাকে বাসায় নিয়ে যাই তারপর তোমার খবর আছে।এতক্ষণ ধরে না খেয়ে থেকে নিজেও কষ্ট পেলে আমাদের বাবুটাকেও না খাইয়ে কষ্ট দিলে।
.
.
তমা- বেচারা রেল স্টেশন থেকে আমাকে কোলে নিয়ে হাঁটছে আর বকরবকর করে আমাকে আর আমাদের বাবুকে নিয়ে কথা বলছে আর একটুপর পর বকা দিচ্ছে,শাসন করছে, উপদেশ দিচ্ছে।আমার পাগল স্বামী আর পাগল স্যার।উনাকে নিয়ে বাকিটা জীবন সুন্দর করে পাড়ি দিতে চাই।বিশ্বাস করে উনার হাতে হাত রেখে সংসার জীবনে আবারো নতুন করে পা রাখলাম।দেখি না একবার বিশ্বাস করে।হয়ত সব দুঃখের পর আমার সাথে ভালো কিছু হবে। আমার বাবার ভুলের কারণে আমার মা বাবাকে যে কষ্ট পেতে হয়েছে সে একি ভুল ফারিদ করবে না এই বিশ্বাস রেখে ওর হাত ধরেছি।ফারিদ আমার এই বিশ্বাসটা যাতে সারাজীবন অটুট রাখে আল্লাহর কাছে সে প্রার্থনা করি।
মূলকথা- বিশ্বাসের উপর সবকিছু টিকে থাকে।একবার বিশ্বাস ভেঙ্গে গেলে হাজার চেষ্টা করেও ভালোবাসার মানুষের মন জয় করা যায় না।এক্ষেত্রে সম্পর্কে শুধু ফাটল ধরে।আর পর মানুষের থেকে ঘরের মানুষকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত।তৃতীয় কোন ব্যক্তির কারণে যদি সম্পর্কে ফাটল ধরার সম্ভাবনা থাকে তাহলে তৃতীয় ব্যক্তিকে তার আসল জায়গা দেখিয়ে দেয়া উচিত।সে যেমন তার সাথে তেমন ব্যবহার করা উচিত।
বি.দ্র.- গল্পটা তোমাদের কাছে কেমন লাগল তা জানি না।কিন্তু সত্যি বলতে এই গল্পে কিছু বাস্তব দিক তুলে ধরে গল্প লিখতে পারায় আমি নিজের উপর অনেক সন্তুষ্ট। বাস্তবধর্মী গল্পগুলোই লিখতে আমার বেশি ভালো লাগে।তারপরও সিজন ২ তোমাদের কেমন লেগেছে অবশ্যই জানাবে।
তোমাদের কিছু কথা বলতে চাই।আগে আমার গল্প কপি করায় আমাকে কপিবাজ বলায় ভিষণ খারাপ লাগত সেকারণে আমি বারবার গ্রুপে পোস্ট দিতাম আমি আর গল্প লিখব না।আমি গল্প লিখায় একেবারে নতুন তাই এইরকম বিষয় যে প্রায় ঘটবে আর কপিবাজরা এইরকম কাজ প্রায় করে সেটা আমার জানা ছিল না।পরে বুঝতে পারলাম এইরকম কারণে গল্প লিখা ছেড়ে দেওয়াটা ঠিক হবে না।তাই গল্প লিখাটা পরে চালু করলাম। কিন্তু এই গল্পের সিজন ১ এ গল্প লিখার মাঝখানে আমি অনেক বড় একটা প্রবলেমে পড়ি।তাই আমাকে আইডিটা ডিএক্টিভ করতে হয়।আইডি ডিএক্টিভ করার কারণ আমার কাছের কয়েকটা ফ্রেন্ড জানে।কিছু ভাবতে না পেরে আমি আর গল্প লিখছি না এই পোস্ট আরেকজনকে দিয়ে দিয়েছিলাম।আমার এই গল্পের পাঠক অনেক ছিল তাই পরে অনেক কিছু ভেবে অনেক কষ্টে একজনকে ঠিক করলাম আর তার সাথে যোগাযোগ করে তাকে বলছি তিনি যাতে আমার গল্প পোস্ট করেন।কিন্তু আমি ঠিক টাইমে আমি তাকে গল্পের পার্টগুলো দিতে পারিনি।যেটা আমার আরেকটা ব্যর্থতা ছিল।গল্পের পার্টগুলো তাকে না দেওয়ার কারণ হচ্ছে আমার অসুখটা আগের থেকে আরো বেড়ে যায়।।আমার কাশির প্রবলেম ছিল। সেটা গল্প লিখার আগ থেকেই ছিল।হাই পাওয়ারি ঔষুধ খেয়েও অসুখ সারছিল না।পরে কাশির আওয়াজ আর ব্যথাটা আস্তে আস্তে অনেক বাড়তে থাকে। এই কাশিটা উঠলেই গলা বুক প্রচন্ড ব্যথা করত আর একনাগাড়ে কাশতে থাকতাম।খাওয়া দাওয়াও প্রায় অফ হয়ে যাওয়ার মতন অবস্থা।এইরকম কাশি যাদের হয় একমাত্র তারা জানে এইরকম অসুখ হলে কত কষ্ট হয়।পরে ফৌজদারহাট হসপিটালে গিয়ে ডাক্তার দেখালাম।বাসায় পুরা দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে ঔষুধের উপর ছিলাম।খাওয়া দাওয়ার কথাতো বাদ দিলাম।এর সাথে ঠাণ্ডা, জ্বর প্রায় উঠত।এই হল আমার গোপন অসুখের বিবরণ।ইভেন এখনো এই অসুখের কিছু কিছু লক্ষণ আমার এখনো আছে।আমার অসুখ ছিল সেটা সবাইকে বলছি কিন্তু অসুখটা কি ছিল সেটা না বলায় অনেকে বলছেন আমি নাটক করছি।যেটা শুনে সিরিয়াসলি খুব খারাপ লেগেছিল।অসুখটা কি ছিল তা কাউকে না বলায় এইরকম কথা আমাকে শুনতে হয়েছে।কাউকে এইরকম অসুখের কথা বলতে চাই নি তাই কথাটা চেপে গেছি সবসময়।যদি কারোর কাছে মনে হয় আমি অসুস্থতা নিয়ে নাটক করছি তাহলে আমার আর কিছু বলার নাই।সবাইকে আমার সরি বলা উচিত ছিল।যেটা আমি বলি নি।কিছুটা সঙ্কোচ ছিল তাই।আজকে যেহেতু সিজন ২ টা শেষ করে দিলাম তাই সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।আমার ব্যবহারে কেউ কষ্ট পেলে আমি সত্যিই আন্তরিকভাবে দুঃখিত।আর ধন্যবাদ সবাইকে আমার গল্পের সাথে থাকার জন্য।
ধন্যবাদ সবাইকে।
সমাপ্ত