স্যার যখন স্বামী পার্ট_১৩

0
4605

স্যার যখন স্বামী
পার্ট_১৩
#লিখা জান্নাতুল ফেরদৌস
আজকে সকালে শাওয়ারে গিয়ে উনি সেখানে চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে গান গাওয়া শুরু করে দিলেন।

মে ফির ভি তুমকো চাহোঙ্গা
মে ফির ভি তুৃমকো চাহোঙ্গা
ইস চাহাত মে মার যাওয়োঙ্গা
মে ফির ভি তুমকো চাহোঙ্গা।

আর এদিকে উনার গান শুনে আমার কান ফেটে যাচ্ছে।গান গাইতে না পারলে এরকমভাবে চিল্লিয়ে গান গেয়ে মানুষের কান খারাপ করার কি দরকার।দুহাত দিয়ে কান চেপে ধরলাম।
কিছুক্ষণ পর উনি বের হয়ে এলেন।
“মেঘ তুমি এখানে (অবাক আর লজ্জা মুখে)।তুমি না রান্নাঘরে ছিলে?”
“হ্যা…হ্যা…ছিলামতো ঘর গুছানোর জন্য এখানে এসেছি”
“আচ্ছা,তুমি কিছু শুনো নি তো”
“না কিছু শুনি নি,”
“ও,থ্যাংক গড,”
“তবে হ্যা বাথরুম থেকে কে যেন কাকের কণ্ঠে কা কা করে গান গাচ্ছিল সেটা শুনেছি”
“উহুম উহুম”(লজ্জিত হয়ে)।
উনার লজ্জা মাখা মুখ দেখে আমি ফিক করে হেসে দিলাম।আহারে কি লজ্জা এই বলে আমার মুখ দুইহাত দিয়ে চেপে ধরলাম।মেঘ এই কথাটা মনে মনে বলতে পারতি,জোরে বলার কি দরকার ছিল।তাড়াতাড়ি করে কেটে পড়ি।না হলে কপালে দুঃখ আছে।
চলে যাওয়ার জন্য পাটা বাড়ালাম আর ওমনি উনি আমার হাত ধরে টেনে আমাকে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরলেন।
.
.
“কি বলছিলে জানি?”
“কিছ..ছু.. না…”
“কিছু না,তাই না?শুনো পিচ্চি, ছেলেদের লজ্জা থাকতে নেই।ছেলেদের মধ্যে লজ্জা কাজ করলে অনেক কিছু তাকে মিস করতে হয়।আর আমার গানকে কাকের সাথে তুলনা করলে?ছেলেদের গানের কণ্ঠ এরকম একটু হয়ই।এতে লজ্জার কিছু নায়।তোমার গানের কণ্ঠ মনে হয় যেন কোকিলের।আজকে বাসায় এসে নি এরপর তোমার কোকিল কণ্ঠের গান শুনব,
…..
“এরপর আমার কপালে,চোখে ভালবাসার পরশ দিয়ে দিলে আমি সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে ফেলি।এর কিছুক্ষণ পর চোখ খুলে দেখি উনি কেমন যেন নেশাকর চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।উনার চোখ দুটি কি গভীর।এই চোখের দিকে তাকালে মনে হয় উনার এই চোখে কারোর জন্য গভীর প্রেম জমা আছে।
“মেঘ এই যে আমার লক্ষ্মী বউ আমার চোখে ওমন করে কি দেখছ?”(আমার কানে খুব নরম কণ্ঠে কথাটা বললেন)
“আপনার চোখ দুইটা এত গভীর কেন?”
“কারোর জন্য জমাট প্রেম এই চোখে বেধে রেখেছি তাই হয়ত।কেন আমার এই চোখের প্রেমে পড়ে গেলে নাকি বলে কানের লতিতে একটা কামড় মারলেন।”
“উহ,এত জোরে কেউ কামড় মারে।”
“বউ এখন তুমি আমার চোখের দিকে এইভাবে তাকিয়ে থাকলে আমি ভার্সিটিতে যাব কেমন করে?”
“এই যে আমি আপনাকে আটকিয়ে রাখছি নাকি?”
“তো আটকিয়ে রেখেছ তোই।এভাবে তাকালে আমার তোমার সাথে রোমান্স করতে ইচ্ছে করে” এই বলে উনার মাথার চুলগুলো ঝাড়লেন। আর এতে আমার মুখে পানির ছিটা এসে লাগল।
“এটা কি করলেন!”
“ভালবাসার রং মাখিয়ে দিলাম।”(মুচকি হেসে)
.
.
“আচ্ছা একটা কাজ কর এখন আমার এই নীল শার্টটা আয়রন করো।আজকে এটাই পড়ে যাব”
“কালকে না এই শার্ট পড়ে গেলেন”
“হ্যা পড়েছি, কিন্তু এই শার্টের কালারটা প্রিয়ার অনেক প্রিয় তাই আজকেও পড়ে যাব”
“তাই না। দাঁড়ান এই শার্ট পড়া আমি বের করছি”
“মেঘ কি হল,এখনো আয়রন হয় নি আমার শার্টটা।”
এই যে নেন”
“ওমা এই শার্ট পুড়লো কি করে। এত কেয়ারলেস কেমন করে হও তুমি।এটা প্রিয়ার প্রিয় শার্ট ছিল।এখন আমি কি পড়ে যাব”
“(আহারে,প্রিয়ার প্রিয় শার্ট যত্তসব,ন্যাকা।)হায় হায় এখন আপনি কি করবেন(হেসে)।একটা কাজ করুন আজকে এই কালো শার্টটা পড়ে যান। এই রং আপনাকে খুব মানায়।আর হ্যা আজকে থেকে আমি নিজে আপনার জন্য শার্ট বের করে রাখবো। আপনার পছন্দমতন কোন শার্ট পড়তে পারবেন না এখন থেকে।ইটস মাই অর্ডার বুঝতে পারছেন।”
“হ্যা করতে পারি একটা শর্তে”
“কি শর্ত!”
“প্রতিদিন আমার টাইটা বেঁধে দিতে হবে।”
“আচ্ছা”
“মেঘ তুমি কি এইভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে?”
“কেন কি হয়েছে”
“আমি এখন চেঞ্জ করব।অবশ্য তুমি চাইলে তোমার সামনে চেঞ্জ করতে পারি আমার কোন সমস্যা নেই”
“এই না,আমি যাচ্ছি,”
.
.
“মেঘ এই মেঘ,”(চিল্লিয়ে)
“এই তো আসছি।কি হয়েছে আবার”
“আরে ভুলে গেলে আমার টাই”
“এখনি লাগবে”
“হ্যা….কারণ আজকে তোমার দেওয়া শার্টটা পড়েছি তাই আজকেই টাই পড়িয়ে দিতে হবে”
“কিন্তু….”
“বাটি মেয়েদের এই এক সমস্যা,”
“কি বললেন” (রেগে)
“কয় কিছু না,বলছি এমনেতো পারবে না, তাই আমার পায়ের উপর উঠে আমাকে টাই পড়িয়ে দিতে পারো”
…….
“দেখো আমার আবার দেরি হয়ে যাচ্ছে। তাড়াতাড়ি টাই বেঁধে দাও”
উনার পায়ের উপর পা দিয়ে টাই পড়িয়ে দিচ্ছি।আর উনি আমাকে জড়িয়ে ধরে আছেন।
“নেন হয়ে গেছে।এবার আমাকে ছাড়েন”
“এত তাড়াতাড়ি হয়ে গেছে”
“জ্বী,”
“আচ্ছা মেঘ আসি।”
“জ্বী।”
“মেঘ,শুনো তোমাকে না আজকে সুন্দর লাগছে, আচ্ছা আসি।”
….
“মেঘ আপনি এখনো যান নি।”
“না,মেঘ বলছিলাম যে, আজকে আমি তাড়াতাড়ি চলে আসবো”
“আচ্ছা,”
“আবারো আপনি,এবার কি বলবেন”
“আমার কানে এসে,আমার বউটাকে আজকে সত্যিকারের বউ বউ লাগছে।”এই বলে আমার কপাল,চোখ আর গালে ভালবাসার স্পর্শ দিয়ে দিলেন।
.
.
রাতে,,
“আরে আপনি গিটার বাজাতে পারেন।”
“হুম, কলেজ লাইফে অনেক বাজিয়েছি।এতদিন এটা লুকিয়ে রেখেছিলাম।আজকে আবার বের করলাম।সকালের কথা মনে আছে নিশ্চয়।”
“মানে,,”
“ওমা এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে,সকালে বলেছিলাম না তোমার কোকিল কণ্ঠের গান আজকে শুনব।তাই এই গিটারটা আজকে বের করেছি।আজকে আমি গিটার বাজাবো আর তুমি গান গাবে।”
“আমি গান পারি না।”
“সে কথা বললে তো হবে না।গান তো আজকে তোমাকে গেতেই হবে।আর তোমার প্রিয় গানটায় গাবে। নাহলে,,”
“নাহলে কি,”
“কালকে সকালে ঘরের সব কাজ তোমাকে দিয়ে করাবো।আম্মু কোন কাজ করবে না আর তোমাকে সাহায্যও করবে না।রাজী আছো,,”
“না, না,আমি গান শুনাচ্ছি।”
“হুম তোমার প্রিয় গানটা শুনাও।”
“আমার প্রিয় গানটা বাদে আরেকটা গাই।”
“হবে না,যেটা শুনতে চেয়েছি সেটাই শুনাও।”

বহত পেয়ার কারতিহো তুমকো সানাম(||)
কাসাম চাহে লেলো,কাসাম চাহে লেলো,
খোদাকি কাসাম।
বহত পেয়ার কারতিহে তুমকো সানাম(||)
সাগারকি বাহুমে মোজিহে জিতনি
হামকোভি তোমসে মুহাব্বাত হে উতনি
কেয়ে বেকারারিনা,কেয়ে বেকারারিনা
আব হোকি কাম,
বহত পেয়ার কারতিহে তুমকো সানাম(||)

“এখন কাকে ভালবাসো মেঘ,”
“মানে!?”
“আমি বলছি এখন কাকে ভালবাস।তুমি তো এখন বিবাহিত।আর বিবাহিত মেয়েরা তাদের স্বামীকেই ভালবাসে।তাহলে তুমি কি আমাকে…..?আমার জন্য তোমার মনে কিছু অনুভূত হয়।”
“না,একবার ভালবেসেছি ঠকেছি আর না।ভালবাসা মানে কারও বিশ্বাস নিয়ে খেলা তা চুরমার করে ভেঙ্গে ফেলা।একবার এই ভুল করে অনেক কেঁদেছি, দ্বিতীয়বার এই ভুল করার সাহস নেই।”
“মেঘ তুমি আগে যাকে ভালবেসেছিলে তার ভালবাসা মিথ্যা ছিল এ কথা আমি আগেও বলেছি এর এখনো বলছি।কিন্তু তাই বলে তোমার জীবনে সত্যিকারের ভালবাসা যখন তোমাকে হাতছানি দিয়ে ডাকবে তখন তাকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার কোন মানে হয় না।যখন তোমার মনে হবে কেউ তোমাকে সত্যিই চায় তাকে ফিরিয়ে দিও না কারণ সত্যিকারের ভালবাসা সবার কপালে জোটে না।আর আজ নাহয় কাল তুমি এই কথাটা মেনে নিতে বাধ্য হবে যে তুমিও আমাকে ভালবাসো আর এই কথাটা খুব শীঘ্রই তুমি নিজের মুখ আমাকে বলবে।আমি সেদিনের অপেক্ষায় থাকব।”
.
.
শুক্রবার বিকালে,,
“মেঘ এখনো রেডি হওনি?”
“এইতো হব।”
“মেঘ তুমি কি এই থ্রিপীচ পড়ে বের হবে।”
“হ্যা”
“আজকে বরং শাড়ি পড়।নতুন বউ তুমি সবসময় না পারো মাঝেমাঝে তো শাড়ি পড়তে পার।”এই বলে আলমারি থেকে নীল রঙয়ের শাড়ি বের করলেন।আজকে এই শাড়িটা পড়।
“শুনুন”
“হ্যা বল”,
“আমি শাড়ি পড়তে পারি না।”
“আচ্ছা আমি পড়িয়ে দিচ্ছি।”
“না না চিৎকার করে খাটে উঠে গেলাম।”
ওমা কি হল?”(অবাক হয়ে)
“আমাকে শাড়ি পড়াতে হবে না”
“দেখ একতো শাড়ি পড়তে পারনা।তারউপর আবার না না করছ।তুমি কি চাও আজকে তোমাকে নিয়ে ঘুরতে গেলে সবাই বলে বেড়াক আমি গার্লফ্রেন্ড নিয়ে ঘুরে বেড়ায়।টিচার মানুষকে নিয়ে যদি সবাই এরকমভাবে বলে বেড়ায় আমার মান সম্মান সব যাবে। তুমি শাড়ি পড়লে তোমাকে বউ বউ লাগবে।তখন আর কেউ বলবে না আমি গার্লফ্রেন্ড নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি।এমনেতেই সবাই বুঝবে তুমি আমার বউ।”
“এটা কোন কথা হল।শাড়ি না পড়লে আমাকে আপনার গার্লফ্রেন্ড আর পড়লে আমাকে আপনার বউ লাগবে।”
“হ্যা এটা কথা হল।নাও শাড়ি পড়িয়ে দিচ্ছি”
“না আমাকে শাড়ি পড়ানোর দরকার নাই আর কোথাও ঘুরতে যাওয়ারও দরকার নাই।”
“কালকে যে আমাকে প্রমিস করছ সেটা মনে আছে”
“ও আচ্ছা তাইতো বলি এত প্রমিস প্রমিস করার কথা কেন বলছেন।হায় আল্লাহ প্রমিস করতে যে কেন গেলাম।এইভাবে যে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করবেন ভাবতেও পারিনি।”
“কি হল কি ভাবছ।”
“না কিছু না।”
“এত ভেবে লাভ নাই।প্রমিস করছ এর মর্যাদা রাখতেই হবে।”
একবার ভাবলাম শাশুড়িমার কাছে যাব কিন্তু উনি কেমন করে জানি আমার মনের কথা ধরে ফেললেন।
“আমার মা এর কাছে গেলে যেতে পারো। কিন্তু তিনি ভাববেন উনার এই অকর্মণ্য মেয়ে রান্না জানে না আবার শাড়িও পড়তে পারেনা।তখন উনি তোমাকে নিয়ে কি ভাববেন।”
আসলেইতো স্যার ঠিক বলছেন।ভেবে দেখলাম শাশুড়ি মার কাছে গেলে আমার মান সম্মান যাবে। উনাকে এই ব্যাপার বুঝতে দেওয়া যাবে না।তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই প্রমিসটা রাখতে হল আর শাড়ি পড়তে হল। উনি আমাকে সুন্দর করে শাড়ি পড়িয়ে দিলেন।নিজ হাতে আমাকে সাজিয়ে দিলেন।
“এইতো এখন না তোমাকে আমার বউ বউ লাগছে।এখন থেকে শাড়ি পড়ার চেষ্টা করবে।”
.
.
পুরোটা বিকাল উনার সাথে ঘুরলাম।একমুহূর্তের জন্যও উনি আমার হাতটা ছাড়েননি।আমার হাত ধরে উনি গল্প করে যাচ্ছেন আর আমি বাধ্য ছাত্রীর মতন চুপচাপ শুনে যাচ্ছি।
“আচ্ছা মেঘ তোমার কাছে ভালবাসা মানে কি?”
…..
“থাক আর ভাবতে হবে না।যেদিন এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজে পাবে সেদিন আমার প্রশ্নের উত্তর দিও।”

আস্তে আস্তে উনার আর আমার সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল।এখন আর উনাকে আমার সেই রাক্ষস আর শয়তান মনে হয় না।আগেতো অনেক বকা দিত কিন্তু এখন আমার উপর এখন তেমন রাগ দেখায় না আর বকাও দেয় না।কিন্তু খুব মিস করি বকাগুলো এখন।শাশুড়ি মা যতদিন এখানে ছিলেন ততদিন আমাকে রান্নার কাজটা একটু একটু শিখাত।কিন্ত আমি রান্নায় এতটা জোর দিতাম না।আমাদের বাসায় প্রতিদিন ছোট্ট সানজা মণির আনাগোনা লেগে থাকত আর এটা খাব ঔটা খাব বলে বায়না ধরত।আমিও এই ছোট্ট মেয়েটার জন্য রান্না করতাম। নিজ হাতে রান্না করে ওকে খাওয়াতে ভালো লাগত।আস্তে আস্তে ওর কারণে আমি এখন মোটামুটি ভালো রান্না পারি।ইদানীং স্যারের কাছ থেকে নিজের রান্নার প্রশংসা শুনার জন্য রান্না করি।এখন সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠি।সকালে নাস্তা বানানো,উনার শার্ট আয়রন করে দেওয়া,নিজ হাতে উনার জন্য শার্ট পছন্দ করে দেওয়া,টাই বেঁধে দেওয়া এইসব করি।অবসর সময়ে উনি আমাকে গিটার বাজানো শিখান,কখনো বা উনি গিটার বাজান আর আমি গান গাই।আর প্রতিদিন রাতে আমরা বারান্দায় ঝোলানো দুলনায় বসে ধোয়া উঠা গরম কফি খেতে খেতে গল্প করি।গল্পে তিনি হচ্ছেন কথার ঝুড়ি।উনার ছোটবেলার গল্প, বন্ধুবান্ধবদের গল্প সব বলেন।উনি একবার কথা বলা শুরু করলে আমি আর নিজের কথাগুলো বলতে পারিনা।চুপচাপ উনার কথাগুলো শুনতে হয়।অবশ্য উনার গল্পগুলো শুনতে ভালোই লাগে।
.
.
কয়েকদিন পর,,,
আজকে ভার্সিটিতে যাব।সকালে উঠে উনি আমাকে নিয়ে নাস্তা করিয়ে ম্যাথ করাতে বসলেন।উনার কথামত এখন সবকথা শুনা আর মানার চেষ্টা করি।শুধুমাত্র ম্যাথ বাদে।এই ম্যাথে আমার একটুও মনোযোগ নাই।আমাকে নিয়ে পুরো ১ ঘন্টা ম্যাথ করলেন।১ ঘন্টা পর,,
“মেঘ তোমার হল”
“হ্যা এইতো রেডি।”
“হুম চল।”
উনার সাথে গাড়িতে করে ভার্সিটিতে গেলাম।
“মেঘ ক্লাস শেষ হলে আমার জন্য অপেক্ষা করবে।তোমাকে নিয়ে একসাথে বাসায় যাব।”
“আচ্ছা।”
“মন দিয়ে ক্লাস করবে।”
“জ্বী”
“আচ্ছা তাহলে ক্লাসে যাও। আর শুনো আজকে তোমার ডিপার্টমেন্টে আমার ক্লাস নেই। তাসপিয়া বা অন্য কারো থেকে আমার পড়াগুলো নোট করে নিও।”
“জ্বী”
“শুধু জ্বী,জ্বী এই শব্দ ছাড়া কি আর কিছু বলতে পারো না।”
…..
“আচ্ছা তাহলে ক্লাসে যাও।”
অনেকদিন পর এখানে আসছি।ক্লাসে এসে বসামাত্র তাসপিয়া এসে ধরল।
“কিরে বিয়ে করে তোর বান্ধবীকে ভুলে গেছিস একেবারে।একটাবারও তো খুঁজ নিলিনা।”
“সরি দোস্ত আসলে সময় হয়ে উঠেনি।তাছাড়া বিয়ের পর ভুলে মোবাইলটাও বাবার বাড়ি রেখে আসছি তাই।”
“ও…, তুই আর দুলাভাই কেমন আছিস?”
“ভালো’
“হুম জানতাম সাগর ভাইয়া তোকে সুখে রাখবে।”
“সাগর!”
“হুম, সাগর ভাইয়াতো। ভালবেসে বিয়ে করেছিস সুখেতো থাকার কথা”
“তাসপিয়া তোর সাথে পড়ে কথা বলছি। আমি আজকে ক্লাস করব না।বাসায় চলে যাব।”
“কিরে মাত্র ১ টা না ক্লাস করলি?অনেকদিন পর আসছস একটু থেকে যা না।অনেক কথা আছে তোর সাথে,”
“পরে না হয় তোর কথা শুনবো। খুব খারাপ লাগছে। বাসায় যাব। ”
.
.
ক্লাস থেকে বেড়িয়ে আসার সময় দেখি স্যার আর প্রিয়া ম্যাডাম হেসেহেসে কথা বলছে।আজব এত হেসেহেসে কথা বলছে কেন?উনারা ক্লাস করাতে আসছেন নাকি গল্প করতে!অসহ্য।
হেঁটে হেঁটে যাচ্ছি। কোন রিক্সাও পাচ্ছি না।এমনিতেই তাসপিয়ার কথা শুনে এবং স্যার আর প্রিয়া ম্যাডামের হেসেহেসে গল্প করা দেখে অনেক রাগ উঠে গেছে।আর এখন রিক্সা পাচ্ছি না।
“আরে মেঘ বাসায় যাচ্ছ নাকি?”
“হ্যা”
“ক্লাস না করে বাসায় চলে যাচ্ছ। কিন্তু এইসময়তো কোন রিক্সা পাবে না।আমিও আজকে ক্লাস করব না।আমার বাইকে উঠ।আমি তোমাকে বাসায় পৌঁছে দিচ্ছি।”
“সাব্বির আমার হেল্পের জন্য এগিয়ে আসছ ধন্যবাদ।সরি তোমার বাইকে যেতে পারবো না।
কিছুক্ষণ দাঁড়ালে একটা রিক্সা পেয়ে যাব।”
“তুমি এমন কেন বলত?কোনদিনও আমার হেল্প নিতে চাও না।আচ্ছা আরেকটা কথা তুমি এতদিন ধরে ভার্সিটিতে আসোনি কেন?জানো তোমাকে কতদিন ধরে দেখি নি।খুব মিস করেছি তোমাকে,”
“আ…সাব্বির ওইতো রিক্সা পেয়ে গেছি।আসি তাহলে।”
“আচ্ছা।এতকিছু বললাম কোনকিছুর জবাব না দিয়ে ও চলে গেল।”(সাব্বির)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে