#সামীর_অধিকার
.
#পর্ব_০৮
.
#writter_সোহানুর_রহমান_সোহান
,
,
গীটারের সুরটা জমছিলো না দেখে নিশির আচলের নিচে আলতো করে ছোয়া দিতেই নিশি কেমন যেন নড়েচড়ে উঠলো।ঠান্ডা হাতের স্পর্শ পেতেই গীটারটা শক্ত করে চেপে ধরলো। কোমরটা চেপে ধরে তার বুকের সাথে নিশিকে টেনে নিয়ে গীটারে আবার হাত রাখলো সোহান।কুলকুল কন্ঠে নিশির সুরটাও বয়ে চললো একি সাথে।দুজনের ভিতরই চলছে ভালোবাসা।চারদিকে হালকা বাতাস গায়ে এসে লাগছে তাদের।ধীরে ধীরে সুরগুলো আকাশের গায়ে বাসা বাধতে লাগলো।
কিছুক্ষন পর গান শেষ হতেই শরীরে কিছুটা গরম অনুভব করতেই নিশির কোমরটা আবারো চেপে ধরলো।পিছন থেকে মুখটা তার কাধে নিয়ে চুমু দিতেই নিশি সোহানকে জড়িয়ে ধরলো।নিশির ঠোট দুটো এগিয়ে যেতেই সোহান এক ঝটকা দিয়ে নিশিকে সরিয়ে দিলো।নিশি মুখ নিচু করে দৌড়ে রুমে গেলো।মাঝে মাঝে এদের কাছে আসলে কি হয় এরা নিজেও বুঝতে পারেনা।হইতো এজন্য নিশি সবসময় সোহানের থেকে দুরে দুরে থাকে।
গান শেষ করে সোহান রুমে চলে গেলো।খেয়াল করলো নিশির চোখে পানি।বুঝতে পেরেছে নিশির চোখে পানি কেন?তাই পাশ থেকে একটা বালিশ নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য পা বাড়িয়ে দিলো।হটাৎ পিছন থেকে,,
—কোথাই যাচ্ছো?
নিশির কথাই বেশ অবাক হলো সে।যে নিশি তাকে ঘার ধাক্কা দিয়ে বের করে দেই সে আজ ডাকছে?
—বাইরে ঘুমাতে যাচ্ছি।
—না মানে রুমে থাকলে হতো না?
—কিন্তু তোমার যদি কিছু হয়ে যাই?তাছাড়া এর আগেও তো তুমি নিজেই আমাকে বের করে দিয়েছো।
—তখন আর এখনের মধ্যে অনেক তফাৎ রয়েছে।যখন এতো কাছে এসে কি করোনি তাহলে এটুকু বিষ্শাষ তো করতেই পারি।
সোহান আর কিছু বললো না।
চুপিচুপি বালিশ নিয়ে সোফাই বসে রইলো।ভাবতেই পারেনি নিশি তাকে এতোটা কাছে নিয়ে আসবে।সোফাই হেলান দিয়ে সে নিশির কাজ গুলো দেখছিলো।এমনিতেই নিশির পরীর মতো চেহারাটা সে ভুলতে পারেনা সাথে আয়নার কাছে বসলে তাকে একদম পরীর চেয়েও সুন্দর লাগে।নিশি যখন বিছানাই উঠে ঘুমাতে যাবে তখনি,,
—নিশি?
—হ্যা বলো
—তোমার বালিশটা আমার কাছে।
কিছুক্ষন সোহানের দিকে তাকিয়ে রইলো সে।
—ঠিক আছে আসতে পারে কিন্তু দুরে থাকবা আর মাঝখানে একটা কোলবালিশ রেখে দিবা।
কথাটা বলতে না বলতেই এক লাফে সোহান বিছানার উপর।নিশি এমন দেখে লাফিয়ে উঠলো।মনে মনে বলতে লাগলো,,
—এর হাত থেকে আমাকে তাড়াতাড়ি মুক্তি দাও খোদা।
দুজনেই দু পাশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।কিন্তু সোহান ঘুমালো না।পাশ থেকে ঘুরে নিশির দিকে তাকিয়ে রইলো।নিশি মুখ ঘুরিয়ে নেওয়াই,,
—ওই বুটকি?(ফোনটা কানে ধরে)
শব্দটা শুনতেই,,
—ওই কি বললে তুমি?
পরক্ষনেই সোহানের হাতে ফোন দেখে আবার ঘুরে অন্যপাশ হয়ে গেলো।লজ্জা পেয়ে নিশি নিজের জিহ্বা কামড়ে ধরলো।একটা হাসি দিয়ে সোহান ভাবতে লাগলো,,এখনো বুটকি কথাটা শুনলেই ঠিক আগের মতোই ক্ষেপে উঠে দেখছি।
.
ধীরে ধীরে রাতটা কাটতে লাগলো সোহান ওভাবেই কোলবালিশটা জড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
মাঝ রাতে নিশি হাতের কাছে কি যেন খুজছিলো।পাশ কেটে সোহানের দিকে ফিরে খুজতে লাগলো।হটাৎ হাত লাগতেই সেটা নিশি টানতে লাগলো।কিন্তু কেন যানি সোহান নড়তেছে।তারা তো ঘুমিয়ে পড়েছে কিন্তু তাদের আত্তা গুলো বিছানার উপর বসে রয়েছে,,
—ওই তুমি আমার কোলবালিশ আমাকে দেও?
—কেন এটা আমি আগে থেকে কাছে রেখে ঘুমিয়ে রয়েছি।
এটা বলেই সোহানের আত্তা নিশিকে ধাক্কা মারলো।এটা দেখে নিশির আত্তা রেগে গিয়ে কোলবালিশটাই অদৃশ্য করে ফেললো।ভুলটা বুঝতে পেরে দুজনের আত্তাই ভয়ে ফুরুত হয়ে গেলো।এদিকে কোলবালিশের উদ্দেশ্যে দুজনের হাত এদিক ওদিকে চলতে লাগলো।কিন্তু কোলবালিশ তো নেই আর।হটাৎ নিশির হাতটা গলাই লাগতেই কোলবালিশ ভেবে তাকে টানতে লাগলো।ওদিকে নিশির কোমরে হাত লাগতেই নরম অনুভব পেয়ে কোলবালিশ ভেবে নিশিকে সোহান টানতে শুরু করেছে।টানতে টানতে দুজন দুজনকে ঝাপটে ধরেছে।বেশ গরম লাগাতে কোলবালিশ ভেবে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো দুজন দুজনকে।নিশির মন বলতে লাগলো,,
—বেহায়া নরম পাইলেই কোলবালিশ ভাবতে হবে?ওটা অন্য কিছূও তো হতে পারে?
কিন্তু এর কথা হইতো কেঊ শুনতে পাইনি তাই ওরা ওদের মতোই ঘুমিয়ে যাচ্ছে।রাতে এভাবে এদের একসাথে দেখে খুব সুখি মনে হচ্ছিলো এদের মন দেরকে।
সকালে ঘুম থেকে উঠে নিশি খেয়াল করলো সে সোহানের বুকে ঘুমিয়ে আছে।সে সোহানের বুক থেকে উঠতেই সোহানের ঘুম ভেঙে গেলো।নিশি তাড়াতাড়ি করে সরে গিয়ে,,
—সুযোগ পেয়েই আমাকে জড়িয়ে ধরেছেন?
—কিন্তু এটা কিভাবে হলো?আমিতো কিছুই করিনি।
—তুমি ইচ্ছা করে এরকম করেছো নাহলে কোলবালিশটা মাঝখানেই থাকতো।
সোহান খেয়াল করলো কোলবালিশটা নিশির পাশেই রয়েছে।
—কোলবালিশটা তো তুমি নিজেই সরিয়ে রেখেছো।
—কি বললে?আমি সরিয়েছি?
—হ্যা ওইযে তোমার ওপাশে বালিশ দেখা যাচ্ছে।
নিশি তার পাশে কোলবালিশ দেখে চমকে গেলো।তাহলে কি রাতে সে নিজেই কথাটা ভাবতেই লজ্জাই বিছানা থেকে নেমে পড়লো।
সোহান একটা হাসি দিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেলো।এদিকে চারু নিচে চলে গেলো।সকালের খাবার খেয়ে সোহান নিশিকে নিয়ে রওনা দিয়ে দিলো।
.
.
এভাবে কেটে গেলো প্রাই দু মাস।এদিকে অভি পুরোপুরি সুস্হ হয়ে গিয়েছে।অন্যদিকে নিশির আর সোহানের সম্পর্ক এতোটা গভির হয়ে গিয়েছে যে একজন আরেকজনকে ছাড়া থাকতেই পারেনা।কিন্তু নিশির মনে অভির জন্য ঠিক আগের মতোই জাইগা রয়ে গিয়েছে।সোহান কি পারবে নিশিকে আপন করে নিতে?সেদিন সকালে দুজনেই রেডি হয়ে গেলো তখনি,,
.
চলবে,,
.