#স্বামীর_অধিকার
.
#পর্ব_০৭
.
#writter_সোহানুর_রহমান_সোহান
.
নিজেকে সংযত করে নিশিকে ছেড়ে দিয়ে তাড়াতাড়ি উঠে পড়লো।শাড়ির আচল দিয়ে নিশিকে ঢেকে দিয়ে বিছানা থেকে লাফিয়ে নেমে পড়লো।তার মনে হচ্ছিলো কারো ইচ্ছার বিরুদ্ধে সে লোভ করতে যাচ্ছিলো।সোহানের স্পর্শ না পেতেই নিশি তার হুশে ফিরে আসলো।যখন সে দেখলো তার এই অবস্হা।সাথে সাথে নিজেকে শাড়ির আচল দিয়ে লুকিয়ে ফেললো।নিশির মুখটা লজ্জাই লাল হয়ে গিয়েছে।সে ভাবতেও পারছে না সে সোহানের সাথে?অথচো একবারো ভাবলো এদেরকেই সারাজীবন একসাথে কাটাতে হবে।নিশির হটাৎ কেমন যেন একটা পরিবর্তন চলে এলো।পিছন থেকে বলে উঠলো,,
—তুমি যা করছিলে সেটা কি ভেবেছিলে?
—নিশি ভাবতেও পারিনি হটাৎ এমন হয়ে যাবে?আমিতো ওই?
—থাক আর বলতে হবে না।অভিও আমাকে তোমার ইচ্ছাটা পূরন করতে বলেছে।আর জানোতো আমি অভিকে ছাড়া কিচ্ছু ভাবতে পারিনা তবে আমি তোমাকে কখনোই সামি হিসেবে মেনে নিতে পারবো না।(চোখে পানি নিয়ে)
—নিশি তুমি কি করে ভাবলে আমি তোমার সাথে প্রতারনা করবো?কিন্তু অভি কোথাই আছে আর তুমি ওকে পেলে কিভাবে?
—সেটা জেনে তুমি কি করবে?ওতো তোমার শত্রু।কিন্তু ভালোবাসার থেকে কিছু আড়াল হইনা আমি ও কে ঠিকই খুজে নিয়েছি।(কান্না করতে করতে)
—নিশি আমি ভাবতেই পারিনি এমন হয়ে যাবে।তবে আমি কথা দিচ্ছি তোমাকে আমি তোমার অভির কাছেই পৌছে দেব কিন্তু আমাকে কখনো পর ভেব না।
সোহানের কথা খানিকটা অবাক হয়ে নিশি বেশ অদ্ভুতভাবে সোহানের দিকে তাকিয়ে রইলো।সোহান নিশির পাশে গিয়ে,,
—আমি তোমাকে কখনো কষ্ট দিতে ও কষ্টে দেখতে চাইনা।তবুও যদি তুমি চলে যেতে চাও তাহলে তোমাকে আমি আটকাবোনা শুধু একটু ভেবে চলবে।
—তুমি আমাকে কি বোঝাতে চাইছো?
—জানি তুমি আমাকে মেনে নেওনি কিন্তু আমার সাথে তুমি যেরকম আচরন করছো সেটা কি ঠিক?একটু ভালো করে কথা বললেও তো পারতে?
নিশি আর কিছু বললো না।চুপ করে মাথা নিচু করে দাড়িয়ে রইলো।ভাবতেও পারছে না সোহান তাকে এতো তাড়াতাড়ি ছেড়ে দিতে চাইছে।
—গাড়ি রেডি আছে তোমার দেরি হয়ে যাচ্ছে।
কথাটা শুনতেই রুম থেকে বেরিয়ে গেলো নিশি।সোহান কপালের ঘাম মুছে ফেলে তাড়াতাড়ি করে ফ্লোর থেকে একটা খাম উঠিয়ে তাড়াতাড়ি করে আলমারিতে লুকিয়ে রাখলো।নিশির পায়ের তলে একটা খাম ছিলো যেটা নিশি একদমই খেয়াল করেনি।যার কারনেই নিশিকে কথার মাঝে ভুলিয়ে বাইরে নিয়ে গেলো।
খামটাই এমন কি ছিলো যেটা সোহান গোপন করে রাখলো।
নিজেকে ঠিক করে বাসা থেকে বেরোনোর সময় সে খেয়াল করলো নিশি তার মায়ের সাথে কথা বলছে।সে যেতেই নিশি তার সাথে চলতে শুরু করলো।বাসা থেকে বেরিয়েই খেয়াল করলো পাশের বাড়ির ভাবিরা দাড়িয়ে আছে।সে বুঝতে পেরেছে এখানে তার জন্যই এরা অপেক্ষা করছে।মুখ লুকিয়ে যাবার চেষ্টা করতেই,,
—নিশি কেমন আছো?দিনকাল ভালোই চলছে তো?
—হ্যা ভালো চলছে।(বুঝতে না পেরে নিশি)
—হুম।ভাইকে পেয়ে তো ঘর থেকে বের হতেই দেখিনা।খুব ভালোই চলছে তাইনা?
–আপনাদের কথাটা বুঝলাম না?(নিশি)
–বিড়ালটা মারা বুঝি শেষ হইনি?
পাশ থেকে সোহান কথাটা শুনে চুপিচুপি তাদের কাছে গিয়ে,,
–দেখছো না মেয়েটা শুকিয়ে যাচ্ছে তাই নিয়মিত ফুডিং দিতে হচ্ছে বুঝলা।আপনারা যদি চান..
কথাটা বলার পর সোহান খেয়াল করলো তার আশেপাশে আর কেউ নেই।হাসতে হাসতে গাড়িতে গিয়ে উঠে বসতেই,,
—আচ্ছা তুমি ওদের কি বললে যে কথাটা শুনেই এরা পালিয়ে গেলো।
—কিছুনা শুধু বললাম ফুডিং দিচ্ছি।
—খাবার দিচ্ছো এটা শুনেই পালিয়ে গেলো?কিন্তু কেন?
—এটা তুমি বুঝবেনা।
নিশি গিয়ে সোহানের পাশে গিয়ে বসলো।সোহান খানিক খুশিই হয়েছে কার নিশি তার প্রতি কিছুটা বিশ্ষাশ রেখেছে।এখন যা করার তাকে খুব তাড়াতাড়িই করতে হবে।
গাড়িটা নিয়ে রওনা দিলো তারা।নিশিকে অফিস ছেড়ে দিতেই।
—সোহান ফিরতি পথে আমাকে নিয়ে যাবেতো?
—তোমার জন্য এটুকু তো করতেই পারি(মুচকি হেসে)
নিশিকে বিদায় দিয়ে সোহান রওনা দিয়ে দিলো।হইতো খুব তাড়াতাড়িই সে নিশিকে হারাতে যাচ্ছে কারন তাদের মাঝে একটা চুক্তি হয়েছে যেটা সোহান মেনে নিয়েছে।যদিও তেমন করার কোনো ইচ্ছাই নেই সোহানের।
গাড়ি নিয়ে সরাসরি সে হসপিতালে চলে গেলো।ডাক্তার রুমটা দেখাতেই রুমে গিয়ে দেখে সবাই হাত পা ভাঙা অবস্হায় পড়ে রয়েছে।হ্যা এরাতো সে ছেলেগুলো যাদেরকে সোহানকে মারার জন্য পাঠানো হয়েছিলো।রুম থেকে বেড়িয়ে সে একটা চাকু নিয়ে অভির রুমের দিকে এগোতে থাকলো।কিন্তু কেন?নাকি সে অভিকে হত্যা করতে যাচ্ছে?
রুমে ঢুকেই নার্স কে রুম থেকে বের করে দিলো।সে দেখলো অভি বসে রয়েছে।দুজনের মুখেই হাসি ফুটে উঠলো।ছুরিটা নিয়ে পাশ থেকে কিছু ফল কেটে অভির সামনে রাখলো।
—এতক্ষন পর তোর আসার সময় হলো?
—তোর নিশিকে বোঝাতে গিয়ে অনেক দেরী হয়ে গেলো।
—কেন কাছে তো পেয়েই গেছিছ।এখন কি ওর মুখে অভির মুছে যায়নি।
—তোর জন্য ও এখন আমাকে পরলোকেও পাঠিয়ে দিতে পারে।
—তূই কি ওকে এখনো কিছুই বলিসনি?
—বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমি দেখতে চাই ও আমাকে কতোটা ভালোবাসে।
—সোহান এটা কিন্তু একটু বেশিই হয়ে যাবে।
—তোর এখন রেষ্ট নেওয়ার সময়।এসব কথা বলার তোর সময় নেই।
—হুম।তুই থাকলে আর কোন সমস্যাই হবেনা।
বেশকিছুক্ষন কথা বলেই সোহান অভির থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলো।
রাতে সোহান ছাদে বসে রয়েছে।তার গিটারের সুরগুলো বেজে চলেছে অদূরে।হটাৎ সে খেয়াল করলো নিশি তার পাশেই দাড়িয়ে আছে।
—কি ব্যাপার দাড়িয়ে আছো কেন?
—তোমার সুর শুনছিলাম।এটা তুমি কার থেকে শিখেছো?
—অভির থেকে শিখেছি।
—সেজন্য ঠিক অভির মতোই সুর তোমার গলা থেকে বের হচ্ছে।
—কেন অভি কি তোমাকে গান শোনাতো?
—হুম।প্রতিদিন শোনাতো কিন্তু আমাকে শিখাতো না আর আমাকে কক্ষনোই ওর মুখ দেখতে দিতোনা।
—এখনো কি তোমার শেখার ইচ্ছা আছে?
—হ্যা।
—তাহলে আসো শিখিয়ে দেই।
নিশি দ্বিমত করতে পারলো না।কেন যানি ধীরে ধীরে সে সোহানের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ছিলো।সোহান নিশির হাতে গীটারটা ধরিয়ে দিয়ে পিছন থেকে নিশির গলার কাছে মুখটা নিয়ে নিশির হাতদুটো চেপে ধরলো।নিশি চোখদুটো বন্ধ করে নিজেকে সামলিয়ে নিলো।গীটারে নিশির হাতটা বসিয়ে ধীরে সে তার হাত দিয়ে সুরগুলো শিখাতে চাইছিলো।কিন্তু কেন যেন সুরটা জমছিলো না তাই শাড়ির আচলের ভিতরে নিশির কোমরটা চেপে ধরে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরলো
,
চলবে
,