স্বর্ণকেশী মায়াবিনী পর্ব-০৩

0
108

#স্বর্ণকেশী_মায়াবিনী
#লেখনীতে-বর্ণ(Borno)
#পর্ব-৩

সময়টা সূর্যদয়ের আগ মুহূর্ত-

স্নিগ্ধ ভোরের মুক্ত হাওয়ায় পাকা রাস্তা ছেরে মাটির রাস্তায় কেউ দৌড়াচ্ছে।তার পিছু আরেক জন চলছে কিন্তু সামনের ব্যাক্তিটির সাথে পেরে উঠতে না পেরে রাস্তার ঘাসের ওপরই বসে পরে।হাঁক ছেরে ডাকে “মেহরাব ভাইজান আমি আর পারছি না আপনেই যান।মেহরাব তার কথায় কর্ণপাত না করে সামনের দিকে এগিয়ে যায়।এতো সুন্দর সকাল ও শহরে দেখতে পায় না যেটা এখানে এখন উপভোগ করছে।
মেহরাবের ভিষণ ভালো লাগে।এমনিতেও সকালে হাঁটার অভ্যাস আছে ওর।আর আজ হাটা কম দৌড়াচ্ছে বেশি।

মেহরাব সকাল সকাল বেরোবে বলে ট্রাউজার পরে রেডি হয়ে নিলো।ফজরের নামাজ শেষ করে কলিমউল্লাহ মামুও তখন এ বাড়িতে চলে আসে।তার সম্পর্কে চাচাতো ভাইয়ের ছেলে রাসেল কে ডাকে।রাসেল এর পরিবার দরিদ্র হওয়ায় কলিমউল্লাহ ছোটো থেকেই রাসেল কে তার বাড়িতে রেখে বড়ো করেছেন।যখন যেটা বলবে তখনই সেটা করে।কিন্তু ছেলেটাকে লেখা পড়া করাতে পারেনি এ বিষয়ে রাসেলের একদমই মন নেই।
রাসেল চাচার কথা মতো সামনে আসতেই তার নির্দেশ মতো মেহরাবের সঙ্গে বের হয়।মেহরাব নিষেধ করা স্বত্বেও কলিমউল্লাহ শোনেনি ,তার কথা হলে মেহরাব এখানের তেমন কিছুই চিনে না।রাসেল ছেলেটা সাথে থাকলে ভালো হবে।এর পরে মেহরাব আর কিছু বলে না।দুজনে একসাথে বের হয়ে যায়।

অনেকটা পথ সামনে চলে আসলে মেহরাব দৌড় থামিয়ে পিছন ফেরে।দম ফেলে ভালো করে পরখ করে রাসেল ওর চক্ষু সীমানার মধ্যে নেই।বুঝতে পেরেছে ছেলেটা হাফসিয়ে গিয়ে হয়তো কোথাও বসে আছে।গ্রামের ছেলেপেলে হলেও এভাবে সকাল সকাল যৌগিন করার অভ্যাস নেই তাই হয়তো কষ্ট হয়ে গেছে।মনে মনে ভাবলো থাক আর সামনে যাবে না।এমনিতেই অনেকটা পথ সামনে চলে আসছে এবার ফেরা যাক।আবার আগের পথ ধরে দৌড়াতে লাগলো,সামনে এসে দেখে রাসেল ঘাসের ওপরই শুয়ে আছে।রাসেল ওর উপস্থিতি টের পেয়ে উঠে বসে “ভাইজান আরো দৌড়াবেন নাকি বাড়িতে যাইবেন? মেহরাব ওর কথা শুনে বললো “আর নাহ চলো এবার ফেরা যাক”

সকালের নাস্তা সেরে কলিমউল্লাহর সঙ্গে বের হলো মেহরাব।উদ্দেশ্য আজ জমি গুলো দেখতে যাবে।বাড়ি থেকে পাঁচ মিনিটের হাঁটা পথ শেষ করেই জমির সীমানায় পৌছে যায়।রাস্তার সাথে লাগোয়া জমি গুলো পজিশন মতো।মেহরাব ভেবে ফেলে এখানে বাড়ি করলে বেশ সুন্দর হবে।কলিমউল্লাহ কে উদ্দেশ্য করে বলে
“মামু এই মাসেই বাড়ি গুলোর কাজে হাত দিতে চাই আপনি কি বলেন?
মেহরাবের কথা শুনে কলিমউল্লাহ অমত করে না বরং খুশি মনে বলে
“তুমি যেটা ভালো মনে করো সে মতেই হবে”

মেহরাব আবার বলে “তবে হা আমি চাই এই পুরো কাজের দায়িত্ব ও আপনিই নিবেন।আমি তো সব সময় আসতে পারবো না সবটা আপনিই দেখা শুনা করবেন যেমনটি আগেও করেছেন।

কলিমউল্লাহ আর না করতে পারে না মেহরাব কে কথা দেয় তা ছাড়া এমন একটা মহৎ কাজে নিজেকে নিয়োজিতো করতে পারলে তার কাছেও ভালো লাগবে।
এরপর কলিমউল্লাহ ফুলপুরের স্থানিয় বাজারে ওকে নিয়ে যায় সেখানটা ঘুরিয়ে দেখায়।ওখানের চেয়ারম্যান মেম্বার আরো নাম ডাক ওয়ালা লোকদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় মেহরাব এর সাথে।সবাই বেশ আন্তরিকতার সাথে মেহরাবের সাথে কথা বলে।সব কিছু মেহরাবের বেশ ভালো লাগে।মেহরাবের মহৎ কাজের উদ্যোগের কথা শুনে তারাও খুশি হয়।
আরো ভালো লাগতো যদি এই সময়টাতে পরিবারের প্রিয় মানুষগুলো কাছে থাকতো।মনের মধ্যে চাপা একটা আর্তনাদ বয়ে যায় “প্রিয় মানুষ বলতে এখানের ঐ এক মামাই আছে সেও দূরে।যাদের উছিলায় আজ এখানে আসা সেই নানা নানি বাবা মা কেউ নেই সবাই পরপারে চলে গেছে।

কলিমউল্লাহর ডাকে মেহরাব নিজেকে স্বাভাবিক করে।
“চলো এবার যাওয়া যাক।
“হুম চলেন মামু

দুপুরে কলিমউল্লাহর বাড়িতে খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করা হলো।আগে থেকেই মেহরাব কে বলা ছিলো তাই গোসল সেরে বেশ পরিপাটি হয়ে অপেক্ষা করছে কখন যাবে।ঠিক তখনই রাসেল এসে ডাকতে লাগলো “ভাইজান ও ভাইজান কই আপনি?
রাসেলের ডাক শুনে মেহরাব বের হয়ে আসে।ওকে দেখে রাসেল বলতে লাগে” ভাইজান আপনেরে তো পুরাই হিন্দি ছবির নায়ক এর মতো লাগে।
ওর কথা শুনে মেহরাব মুচকি হাসি দেয় ছেলেটা আসলেই সরল মনের মনে যা আসে বলে দেয়।
“কি হিন্দি ফিল্ম দেখো বুঝি?

মাথা চুলকে রাসেল বলতে থাকে “ঐ একটু আধটু দেখি আমার তো বাটন মোবাইল তাই পাশের বাড়ির এক ভাইয়ের টাচ মোবাইলে দেখি।অনেক ভালো লাগে ছবি গুলান।
“ওহ তাই বুঝি?
“হুম
“রাসেল তুমিও কিন্তু দেখতে সুন্দর যখন আরো বড়ো হবে তখন হিরোদের মতোই লাগবে তোমাকে দেখতে।

কথা গুলো শুনে রাসেল তো মহা খুশি লজ্জা পাওয়ার ভঙ্গিতে বললো “সত্যি ভাইজান কিন্তু এতো সুন্দর হওয়াতেও পাশের বাড়ির বিলকিস কেনো আমারে পাওা দেয় না হেইডাই বুঝলাম না।

ওর বলা কথা গুলো শুনে মেহরাব বললো “কি বললে ?
বোকা হাসি দিয়ে মাথা চুলকে রাসেল বললো না ভাইজান তেমন কিছু না বাদ দেন এহোন চলেন চাচা আমাগো লাইগ্যা অপেক্ষা করতেছে।

হুম চলো বলে চোখে সানগ্লাস টা পরে মেহরাব রাসেল কে সঙ্গে নিয়ে হাঁটা দেয়।পাঁচ থেকে ছয় মিনিট হাঁটার পরেই কলিমউল্লাহর স্যারের বাড়ি পৌছে যায়।একতলা ছাদ বিশিষ্ট পাকা ঘর বেশ সুন্দর করে সাজানো গোছানো বাড়িটি।মেহরাব যেতেই ওকে নিয়ে উঠানে বেশ কিছুক্ষণ গল্প করলেন কলিমউল্লাহ।তার দুই ছেলে দুই মেয়ে সবাই শহরে থাকে।বাড়িতে সবসময়ের জন্য সে আর তার সহধর্মিনী থাকে।তবে আজ এক ছেলে বাড়িতেই আছেন।তার সাথে মেহরাবের পরিচয় হয় সে ব্যাংকে জব করে বেশ নম্রভদ্র একজন।সবাই দুপুরের খাবার একসঙ্গে খেয়ে আরো কিছুক্ষণ খোশ গল্প করে নেয়।মেহরাব একটু বের হতে চাইলে কলিমউল্লাহ রাসেলকে ডাক দেয়।ও আসলে মেহরাবের সঙ্গে ওকে যেতে বলে।মেহরাব ওকে সঙ্গে নিয়ে বের হয় গ্রামটি ঘুরে দেখার জন্য।

———-

কয়েকদিন ধরে মায়ার বান্ধবী আয়েশা কলেজ যাচ্ছে না।মায়া এ বিষয়ে একটু চিন্তিত আছে আর থাকারই কথা একমাএ আয়েশা ই ওর বেস্টু তাই আজ ও মনে মনে স্থির করেছে ওর বাড়ি যাবে।মেয়েটার খারাপ কিছু ও তো হতে পারে।
দুপুরে খেয়ে দেয়ে মায়া আয়েশার বাড়ি চলে যায় সেখানে গিয়ে জানতে পারে সত্যিই মেয়েটার খারাপ কিছুই হয়েছে।আজ পাঁচ দিন ধরে ওর জ্বর।মায়াকে দেখে আয়েশা অনেক খুশি হয় শোয়া থেকে উঠে বসে।মায়ার বেশ খারাপ লাগে ওর এমন অবস্থা দেখে।মায়া প্রায় বিকেল পর্যন্ত আয়েশার কাছে থাকে।এবার বাড়ি যাওয়া দরকার তাই আয়েশার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ওদের বাড়ি থেকে বের হয়।
কিছু দূর আসতেই সামনে কেউ দু হাত মেলে পথ আগলে দাঁড়ায়।হঠাৎ এমনটা হওয়াতে মায়ার বুকটা ধক করে ওঠে।সামনে দিকে নজর দিতেই দেখে ওদের এলাকার মদন মুন্সির ছেলে রমজান।ওরা জাতে মুন্সি হলেও কাজে কর্মে একেবারেই দুষ্টু প্রকৃতির।মদন মুন্সির অনেক গুলো বিয়ে আর এইটা তার বড়ো ঘরের ছেলে।যেমন বাপ তেমন তার ছেলে বলতে গেলে পুরাই চরিএহীন ল”ম্পট প্রকৃতির।দিন আর রাত নেই মেয়ে দেখলেই ওদের জি”বে জল আসে।

একটা শ”য়”তানি হাসি দিয়ে মায়ার উদ্দেশ্যে বলতে লাগে”কি গো সুন্দরী এই ভর বিকেলে একা একা কোন জায়গা থেইক্যা আইলা?
কথা গুলো শুনে মায়ার শরির ঘৃণায় রি রি করে উঠলো।গায়ের ওরনাটা টেনে ভালো করে মাথা আর চারপাশ পেচাতে লাগলো।
“কি হলো কথার উওর দিবা না?
মায়া এবার ও কিছু বলে না শুধু ও যাওয়ার জন্য সুযোগ খুঁজছে কিন্তু রমজান সেই সুযোগ দিচ্ছে না মনে হচ্ছে মায়াকে এমন ভিতু হওয়া দেখে ও খুব মজা পাচ্ছে।

এবার না পেরে মায়া বলতে লাগে

“পথ ছাড়েন আমারে যাইতে দেন।

আবারও কুৎসিত হাসি দিয়ে রমজান বলতে লাগে

“যাও তোমারে কি আমি আটকাইয়া রাখছি ?বলেই জোড়ে হাসতে লাগে।
আর সহ্য হয় না মায়ার একটু পাশ কেটেই কোনো প্রকার দৌড় দেয় তবে রমজান ওর পিছু নেয় না।ওর উদ্দেশ্য ছিলো এভাবে ভয় দেখানোর।

প্রায় আধ ঘন্টা হাঁটার পর ওরা আরেক টি এলাকায় চলে আসে।তখন রাসেলের পরিচিতো এক ভাইর সাথে দেখা হলে রাসেল তাকে ডাক দিয়ে কথা বলতে লাগে।মেহরাবের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলে মেহরাব ওদের বলে

“তোমরা কথা বলো আমি সামনে যাই।
রাসেল মেহরাব কে দশ মিনিট এর কথা বললে মেহরাব সায় দিয়ে সামনের দিকে আগাতে থাকে।
কিছুদূর আসতেই হঠাৎ মেহরাব দেখতে পায় একটি মেয়ে পিছন ফিরে তাকাচ্ছে আর সামনের দিকে দৌড়ে আসছে।মেয়েটিকে কিছু বলার আগেই ওর সাথে ধাক্কা লাগে এর ফলে মেয়েটি পরে যেতে লাগলে মেহরাব ওর ডান হাত দিয়ে তার পিঠ জড়িয়ে রাখে।হঠাৎ ধাক্কা আবার কেউ তাকে পরে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচালো এসব দ্রুতই ঘটে যাওয়ায় ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে।কি থেকে কি ঘটে গেলো?থরথর করে শরির কাঁপছে যেনো।

এদিকে মেহরাব মেয়েটিকে একনজর দেখেই ওর মনের মধ্যে ঝড় তুফান শুরু হয়ে গেছে।মনে মনে বলে ফেলেছে মা শাহ আল্লাহ এতো সুন্দর পরী এই গ্রামেও থাকে?মুহূর্তে যেনো ওর হৃদস্পন্দন থেমে গেছে মনে হচ্ছে ওর অক্সিজেনের অভাব দেখা দিয়েছে শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে ওর।মনে হচ্ছে কোন মায়া জালে ফেসে গেছে ও।কি একটা মনে করে সামনের পরীটির দিকে একটু গাড়ো নজরে ঝুকে বাম হাতের সাহায্যে মেয়েটির চুলের খোপার কাঠিটি এক টানে খুলে ফেললো।আর তখনই তার খোপায় পেচানো চুল গুলো ছুট পেয়ে হাটু অব্দি গিয়ে পরেছে।হালকা সোনালী রংয়ের দীর্ঘ চুল দেখে মেহরাবের সত্যিই এবার হার্ট এটাক হওয়ার উপক্রম।একটু শব্দ করেই বলে ফেলে “স্বর্ণকেশী মায়াবীনি এ কোন মায়ার বেড়াজালে আবদ্ধ করে ফেললে আমায়”

পুরো কথাটা মেয়েটার কানে না গেলেও মায়া কথাটা শুনতেই মেহরাবের বাহুবন্ধন থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে ওড়না টেনে ঠিক করে বলতে লাগলো

“আমার নাম জানলেন কি করে?
মেহরাব এবার সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে মুচকি হেসে বলতে লাগলো

“ওহ তোমার নাম মায়া বুঝি?

এবার মায়া মুখে না বলে মাথা নাড়িয়ে বুঝায়।মেহরাব স্পষ্ট বুঝতে পারছে এই মেয়ের নাম মায়াই।সত্যি নামের মতো মেয়েটা কে এক দেখায় যে কারোর মায়ায় পরে যাবার মতো।তবে যে কারোর নয় ওর মনে ধরেছে মানে ওরই একান্ত চাওয়া পাওয়া হবে এই মেয়ে আর কারোর নয়।এ সব ভাবনার মধ্যে মেহরাবের মনে পরে যায় মায়া দৌড়ে আসছিলো কিন্তু কেনো?

আর কিছু না ভেবে বলেই ফেললো আচ্ছা তখন দেখলাম তোমাকে দৌড়ে আসতে কি হয়েছে বলো তো?মায়া এ কথা শুনেই চমকে যায় ।কিছুক্ষনের জন্য ও তো ভুলেই গিয়েছিলো রমযানের কথা।তবে ও চায় না অপরিচিতো কারোর সাথে এসব কথা শেয়ার করতে তাই বলে

“না এমনি কুকুর দেখে দৌড় দিয়েছিলাম ।

কিন্তু কথাটা মেহরাবের কেমন জানি বিশ্বাস করতে মন চায় নি।তাই আবার বলে

“গ্রামের মেয়েরা কুকুর দেখেও ভয় পায় জানতাম না তো?

মায়া কিভাবে ওকে বলবে এই রমজান একটা কুকুরের চেয়েও খারাপ।তবুও আবার বলে

“আসলে ওইটা পাগলা কুকুর তাই।

“ওহ তাই বুঝি?

মায়া এবার আর কিছু না বলে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে লাগলে মেহরাবের ডাকে থেমে যায়।কিন্তু মায়া পেছন ফিরে চায় না মেহরাব ওখানেই স্থির হয়ে মনে মনে বলে “মেয়ে তুমি জানো না প্রথম দর্শনেই একজনের মন নিয়ে নিছো”

“কিছু বলবেন?
মেহরাব কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না তাই বললো
“কিছুনা তুমি যেতে পারো আর হা কুকুর থেকে সাবধানে থেকো।

মায়া এবার হাফ ছেরে বাচে ভেবেছিলো ধাক্কা লাগার ফলে হয়তো বেশি কথা শুনতে হবে কিন্তু না লোকটি সে রকম কিছু বললো না।মায়ার মেহরাব কে ভালো মানুষ বলেই মনে হয়েছে।আর বেশি কিছু না ভেবে বাড়ির পথে হাঁটা দেয় মায়া।

মেহরাব মায়াকে দেখতে থাকে চোখের আড়াল হওয়া পর্যন্ত।হঠাৎ বাম হাতে মায়ার চুলের কাঠিটি দেখতে পায়।”ইশ এটা তো দিতে মনে নেই তবে মনে মনে বেশ খুশি হয়।একটা তার প্রথম চিহ্ন এ সব ভাবনার মাঝেই রাসেলের ডাক শুনতে পায়।মেহরাব ওর প্যান্টের পকেটে কাঠিটি রেখে দেয়।রাসেল ওর সামনে আসতেই মেহরাব বলে
“আজ আর না চলো ফিরে যাই রাসেল ও সায় দিলে দুজন মিলে বাড়িতে চলে আসে।”

——
রাতে পড়তে বসে মায়া ঠিক ঠাক পড়ায় মনোযোগ দিতে পারে না।শুধু ঐ তিক্ত সময়টাকে কথা মনে পরছে।রমজান ওকে প্রায়ই পথ আটকে দাঁড়ায় আর লোলুপ দৃষ্টিতে নজর দেয়।মায়া এ সব কথা কাউকে বলতে পারে না।কিন্তু আজ আর পারছে মারে না হয় এ সব বলে লাভ নেই কিন্তু বাবাকে বলতে হবে আবার চিন্তা করে বাবার শরির ভালো নেই বলবে না।এ সব ভাবনার মাঝে পুষ্প এসে মায়ার সামনে বসে।বোনকে কেমন চিন্তা যুক্ত দেখে জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে ?প্রথমে মায়া কিছু নি বলতে চাইলে পুষ্পের জোড়াজুড়িতে সব বলে দেয়।শুনে পুষ্প রাগে গজগজ করতে থাকে।আর বলে

“ধা’মরা খাটাশ একটা বাপের মতো দুই তিন টা বিয়া কইরাও মাইয়্যা মানুষ দেখলে হুঁশ থাকে না।ওরে পাইলে একটা না দুইডা চর দিতাম আমি।
বোনের কথা শুনে মায়া আৎকে ওঠে এসব করলে যে হিতে বিপরীত সেটা ও জানে কিন্তু মায়া ভিতু হলেও পুষ্প ঠিক এটাই করে ছাড়তো।
“বুবু একটু সাহোস আনো মনে আর কতোদিন এমনডা থাকবা প্রতিবাদ করা লাগবো।
কিন্তু এ সব কথা মায়া কানে নেয় না ওর যে সত্যিই ভয় লাগে।
ভয় পায় এসব মানুষ রূপি জা”নো”য়ারদের।

চলবে…..

(ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে