স্বর্ণকেশী মায়াবিনী পর্ব-২৫+২৬+২৭

0
21

#স্বর্ণকেশী_মায়াবিনী
#লেখনীতে-বর্ণ(Borno)
#পর্ব-২৫

ধোয়া ওঠা এক কাপ কফি সমেত অফিস রুমের জানালার সামনে দাড়িয়ে আছে মেহরাব।জানালার ওপাশে ব্যাস্ত শহরের কিছুটা অংশ দেখা যাচ্ছে।সেদিক টা চেয়ে আনমনে ভাবছে অনেক কিছু।আর একটু পর পর কফিতে চুমুক দিচ্ছে।বাইরে ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি পরছে,সকাল থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে তাই ঘুমোট ভ্যাপসা গরম দূর হয়ে একটু ঠান্ডা আবহাওয়া বইতে শুরু করেছে।কিছু ক্ষণের মধ্যে বৃষ্টির পরিমাণ বেড়ে যায়।
বৃষ্টি দেখতে দেখতে মেহরাবের বৃষ্টি নিয়ে অতিতের কিছু স্মৃতি মনে পর যায়।
মায়ার সাথে বৃষ্টি ভেজা একদিনের কথা ভেবে আনমনে হেসে ফেলে।সময়টা ভালোই ছিলো ইশ যদি সময়টা ধরে রাখা যেতো কতোই না ভালো হতো।

“আজ দু দিন হলো মায়া ওর গ্রামের বাড়ি গেছে।সে রাতে মেহরাব রাগ করে আরেক রুমে চলে গেলে মায়া বেশ কান্না কাটি করে।মনে মনে পাহাড় পরিমান অভিমান জমে।খুব সকালে মেহরাব রেডি হয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়।আর যাওয়ার সময় ড্রাইভার কে বলে যায় মায়া আর ওর পরিবারের সবাইকে গ্রামে পৌছে দেওয়ার জন্য।মেহরাব একদমই চায় না মায়া যাওয়ার সময় ও থাকুক।কেনোনা মেহরাব চায়নি মায়া এই মুহূর্তে ওর বাবার বাড়ি যাক।তা ছারা যে সব কথা ওকে মায়া শুনিয়েছে তাতে করে ওর না থাকাটাই ভালো।
সকালে সবাই রেডি হয়ে নেয়।সিতারা আর শায়লা মেহমানদের জন্য নাস্তা বানিয়ে দেয়।সবাই নাস্তা করলেও মায়া করতে চায় না।কিন্তু সিতারার জোড়াজুড়িতে একটু খেয়ে নেয়।মেহরাবের সাথে ওর যাই হোক না কেনো যাওয়ার সময় দু চোখ মেহরাব কে দেখতে চেয়েছে।সব রুমেই খুঁজেছে না পেয়ে বুঝতে পেরেছে মানুষটা ওর সামনে আসতে চায় না তাই আগেই বেরিয়ে পরেছে।এতে করে অভিমানের পাল্লাটা বেড়ে আরো দ্বিগুন হয়।যাওয়ার সময় সিতারা ওকে খুব করে বলে দিয়েছে বেশি দিন না থাকতে।মায়া তার কথার প্রেক্ষিতে কিছু বলেনি।

সেদিন দেরি করে বাসায় ফিরে মেহরাব।ক্লান্ত দেহে শূন্য বাসায় মনটা কেমন হা হা কার করে ওঠে।সারাদিন কাজে মন দিতে পারেনি।আর এখন বাসায় এসে মনে হচ্ছে না ফিরলেই ভালো হতো।কিন্তু নিজের আপন ঠিকানা এখানে ওকে ফিরতে তো হবেই।দিন গিয়ে রাত চলে আসলো একটা বার মায়া মেহরাবের খোঁজ নেয়নি কিন্তু মেহরাব ঠিকই ওর কাছে না হোক পুষ্পের কাছে কল করে খোঁজ নিয়েছে।ভালো ভাবেই পৌছেছে ওরা।রুমে ডুকে চারপাশ চোখ বুলিয়ে কিছু একটা খুব করে মিস করছে।আজ যে দিক তাকায় সেদিকটাই খালি খালি লাগছে।গলার টাই টা খুলে বুকের কাছের কয়েকটা বোতাম খুলে ওভাবেই বসে রয়।মন চাচ্ছে এ ভাবেই বিছানায় গা এলিয়ে দিতে কিন্তু ফ্রেশ হওয়াটা জরুরী।
ফ্রেশ হয়ে সে রাতে না খেয়েই ঘুমিয়ে যায় মেহরাব।”

ফিরোজের ডাকে মেহরাবের ভাবনার ছেদ ঘটে।হাতের কফি কাপটা টেবিলে রেখে দেয়

-কিছু বলবে ফিরোজ?

-বলতে চাই তো অনেক কিছু।

-বেশি কিছু বলতে যেও না কাজের কথা বলো।

বলতে চাওয়া কথাটা চেপে গিয়ে কাজের কথা বলতে শুরু করে ফিরোজ

-আগামী কাল গাজীপুরে একটা ফ্যাক্টরিতে ভিজিট করার কথা কি করবেন ?

-কনফার্ম করে দেও

-আর বিকেলের মিটিং ওটা কি করবো?

-ওটাও ফিক্সড করে দেও।

-বলছিলাম কি বড়োভাই একসাথে দুটো কাজ সারতে পারবেন?

-কেনো কি সমস্যা?পারবো না কেনো?আগে তো অনেক বার করেছি।

-আসলে বলছিলাম কি এই দুই দিন ধরে দেখছি আপনার মনটা ভালো নেই।আনমনে থাকেন আর কি কি যেনো ভাবেন।শরির খারাপ নাকি বড়োভাই? তা হলে সব কিছু ক্যানসেল করে দিয়ে অন্য একদিনের ডেট ফিক্সড করি?

-ফিরোজ আজকাল তুমি একটু বেশিই চিন্তা করছো।আমি ঠিক আছি আর কিছু ক্যানসেল করতে হবে না।এই মুহূর্তে ক্যানসেল করলে অনেক বড়ো ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।এখন তুমি যাও।

ফিরোজ চলে যায় তবে মেহরাবের মন ভালো নেই এটা ও বেশ বুঝতে পারছে।কিন্তু মেহরাবের পেট থেকে সহজে কোনো কথা বের করতে পারবে না।যতোক্ষণ না নিজেই সবটা শেয়ার করবে।এ সব ভেবে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে ফিরোজ।মেহরাব মুখে কিছু না বললেও এতোদিনে ফিরোজ ওকে অনেকটাই চিনতে পেরেছে।ওর আনমনে ভাবনায় থাকা চেহারার পেছনে অবশ্য ই কিছু লুকিয়ে আছে যেটার উওর এক জনেরই জানা।আর সে হলো মায়া।হা ওকেই জিজ্ঞেস করতে হবে।দুজনের মধ্যে কিছু হলো কিনা।বড়োভাই এর এ রকম নিরবতা আর মনে মনে কষ্ট পাওয়াটা ফিরোজ একদমই সহ্য করতে পারছে না।

~~~~~

গ্রামের বাড়ি আসার পর থেকে মায়ার মনেও শান্তি নেই।মনে হচ্ছে ওর সব শান্তি শহরে রেখে আসছে।অথচ অভিমান আর এক রাশ রাগ ক্ষোভ নিয়েই চলে এসেছিলো।মনে মনে এটাও ঠিক করে নিয়েছে ঐ ইট পাথরে ঘেরা শহরে আর ফিরবে না।মেহরাব তো ওকে ভালোই বাসে না,ভালোবাসলে এমন খারাপ ব্যাবহার করতেই পারতো না।তা ছাড়া ওর সাথে যা হয়েছে এটার জন্য এখন অব্দি মনে মনে মেহরাব কেই দায়ী করে আসছে।এই তিনটা দিন কারো সাথে ভালো করে কথা বলা,খাওয়া দাওয়া,ঘুম কিছুই ঠিক ঠাক করছে না।আয়মন আর পুষ্প জোড় করেই করিয়েছে সবটা।কেউ তো আর ওর মনের খবর জানে না।সবাই ভাবছে দূর্ঘটনার জন্যই মন খারাপ থাকে তাই যতোটা পারছে বাবা মা বোন সব সময় সান্তনা দিয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু পর পর রাএি জাগার কারনে মায়ার শরির দূর্বল হতে থাকে।পুষ্প কিছু জিজ্ঞেস করলেও বলে না।অন্য দিকে মেহরাব কে পুষ্প এ সব কথা বললে ও তেমন কিছু বলে না।আবার মেহরাব আর মায়াকে কখনও কলে ও কথা বলতে দেখে না।মেহরাব ওর কাছ থেকেই খবরাখবর নেয়,তাই পুষ্প কিছু একটা আন্দাজ করে নেয়।ঘটনা টা কি হতে পারে।

**গাজীপুরের একটা ফ্যাক্টরিতে মেহরাব আর ফিরোজ এসেছে।এখানে ওদের অর্ডার কৃত মালে প্রস্তুতকরণ প্রসেস দেখছে।সব কিছুই ঠিক ঠাক হচ্ছে।ঘন্টা খানেক সেখানে থেকে ওরা আরেক জায়গায় যাওয়ার জন্য রওয়ানা হয়।আজ ভিষণ জ্যাম বেশ বিরক্ত লাগছে মেহরাবের।কি আর করার জ্যাম একটা নিত্য নৈমিওিক ব্যাপার।তাই বিরক্ত হলেও সহ্য করে নিতে হবে।অবশেষে জ্যাম পেরিয়ে সময় মতো মিটিং এর স্থানে পৌছে যায়।
মিটিং চলছে কিন্তু মেহরাব ঠিক ঠাক কিছু করতে বা বলতে পারছে না।কয়েক বার চেষ্টা করেও ব্যার্থ হচ্ছে।মনে হচ্ছে ও এখানে আর ওর মন অন্য খানে।বিদেশি বায়ারদের সাথে মাল এক্সপোর্ট এর ব্যাপারে চুক্তি বদ্ধ হওয়ার কথা।
ফিরোজ ওর ব্যাপারটা বুঝতে পেরে মেহরাব কে থামতে বলে।আজ আর মেহরাব ফিরোজকে থামায়নি।বরং চুপচাপ টেবিলে হাতের কনুই ঠেকিয়ে কপাল ডলতে থাকে।সে দিনের মতো ফিরোজ মিটিংয়ের সবটা সামলিয়ে বায়ারদের সাথে মিটিং শেষ করে।

মেহরাব কে আর একা ছাড়েনি ফিরোজ।বাসায় ফিরতে অনেক রাত হয়ে যায় তাই সঙ্গে করে বাসা পর্যন্ত আসে।মেহরাব রুমের দিকে পা বাড়াবে এমন সময় ফিরোজ ওকে থামায়

-বড়োভাই আপনার কি হয়েছে?

-কই কিছু না একটু শরির খারাপ লাগছিলো জাস্ট এটুকুই।

-মিথ্যে কেনো বলছেন?আর আপনি তো আমাকে বলেছিলেন অফিস বাদে সব খানে আমি আপনার ছোটো ভাই তাই এই টুকু তো জানার অধিকার আছে নাকি?

-অনেক রাত হয়েছে ফিরোজ বাসায় যাও কিছু জানতে চেওনা।

-কিন্তু আজ আমি সবটা না জেনে যাবো না আর যদি না জানতে পারি তা হলে আজকের পর থেকে এই ফিরোজ কে আর আপনি দেখতে পাবেন না বলে দিলাম।

ফিরোজের এমন কথায় মেহরাব একটু ঘাবড়ে যায়।চাইছে না ব্যাক্তিগতো ব্যাপার গুলো শেয়ার করতে।আবার না করেও পারছে না..অবশেষে ফিরোজ কে সবটা খুলে বলে।ফিরোজ শুনে মনে বেশ কষ্ট পায়।এই মানুষটার মনে এতো দুঃখ কষ্ট অথচ কাউকে বুঝতে দেয় না আর মায়ার প্রতিও ওর রাগ লাগে।আবার ভাবে সেও তো একটা বড়ো আঘাতের সম্মুখীন হয়েছে।কিন্তু তাই বলে এ ভাবে ভাইকে দোষারোপ করে তার কথা উপেক্ষা করে চলে যাবে?এটা মায়া আপু একদমই ঠিক করেনি।
ওর ভাবনার মাঝেই মেহরাব বলে ওঠে

-সবটা তো শুনলে আর দেরি করো না বাসায় যাও।

-বড়োভাই আজ আমি আপনার সাথে থাকি?

-না ফিরোজ আন্টি বাসায় একা,এমনিতেই তার শরির ভালো নেই।ড্রাইভার কে বলে দিচ্ছি তোমাকে পৌছে দিবে।

ফিরোজ আর কথা বাড়ায় না চলে যায়।মেহরাব রুমে এসে প্রতিদিনের মতো ফ্রেশ হয়ে নেয়।সারা দিনের ব্যাস্ততার পর চোখের বিশ্রাম দরকার।কিন্তু চোখে ঘুম ধরা দিচ্ছে না।অনেকক্ষণ চুপ চাপ চোখ বন্ধ করে কপালে হাত রেখে শুয়ে থাকে।কিন্তু অস্থির মন রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যেনো আরো অস্থিরতা বিরাজ করে।খুব করে কাছের মানুষটিকে কাছে পেতে মন চাইছে।ঠিক কবে মায়ার সাথে বিছানায় ঘনিষ্ট হয়েছে সেটা মনে করতে পারছে না।আম্মিজানের মৃত্যুর পর থেকে মেহরাব চেন্জ হয়ে গেছে।এতোটাই মানসিক কষ্ট পেয়েছিলো যে সংসার আর সংসারের বউ এ দুটো জিনিস কে উপেক্ষা করতো।বলতে গেলে ভবঘুরে হওয়ার মতো অবস্থা হয়েছিলো।

এখন বুঝতে পারছে মায়ার সাথে সত্যিই ও অন্যায় করেছে।কিন্তু যে মানুষটা ছোটো থেকে একটার পর একটা জীবনের মূল্যবান জিনিস হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে আম্মিজানের আশ্রয়ে বড়ো হয়েছে।সেই মানুষটার মৃত্যুতে ওর অবস্থা এমনটা হওয়া কি স্বাভাবিক নয়..?
যদিও টয়ার সেদিনের বেশি বেশি বলাটা মেহরাব এর মনে প্রভাব বিস্তার করেছিলো।হা সে তার মায়াবিনীকে একটু নয় অনেকটাই কষ্ট দিয়ে ফেলেছে।আর ধীরে ধীরে মেহরাব আবার আগের মতো স্বাভাবিক হতে লাগছিলো।কিন্তু সেটা মায়ার চোখে পরেনি।হয়তো মায়া অন্য কিছুই ভেবে নিয়েছিলো।মেয়েরা বরাবরই একটু আবেগ প্রবন,সে হিসেব করলে মায়া একটু বেশিই কষ্ট পেয়েছে।তাইতো সেটার ফল স্বরুপ আজ দু জন দু প্রান্তে আছে।
শোয়া অবস্থায় ফোন হাতে নিয়ে গ্যালারির ছবি গুলো স্ক্রোল করতে থাকে।একে একে ওর নিজের হাতে তোলা মায়ার ছবি গুলো দেখতে থাকে।মায়ার অজান্তে অনেক ছবি মেহরাব তুলেছে।এ সব যদি মায়া দেখতো তবে অবাক হতো।আর ভাবতো

“কখনও তাকে ছবি করার মুডে দেখিনি তা হলে এতো ছবি কখন আর কিভাবে করলো?

ভারি নিঃশ্বাস ছেরে বিরবির করে বলতে থাকে মেহরাব

“আমার মনটা কেমন তা তুমি বুঝলে না প্রিয়।বরং কখনও বোঝার চেষ্টা করোনি।অথচ আমি জানতাম তুমি আমাকে বোঝো।আমার ইশারা আমার চোখ দেখেই বুঝতে পারো আমি কি চাই।মায়াবিনী কেনো আমাকে এ ভাবে রেখে চলে গেছো? এই কয়েকটা রাত খুব কষ্টে কেটেছে তোমাকে ছাড়া।হা মানছি কষ্ট দিয়েছি তাই বলে এই শাস্তি দিবা।আর একটু সময় নিলে কি এমন ক্ষতি হতো বলো?”

কিছু একটা ভেবে বিছানা ছেরে আবার উঠে পরে।আলমারি খুলে ভেতরের সেই ড্রয়ার টি খুলতে থাকে।ব্যাস্ততায় অনেকদিন ধরে মেহরাব এই ড্রয়ারটা খোলে নি।বা খোলার প্রোয়োজন পরেনি।ড্রয়ার খুলে মায়ার ব্যাবহৃত রাখা জিনিস গুলো দেখতে থাকে।তার পাশেই একটা খামের দিকে চোখ পরে।এটা কি ভেবে হাতে নিয়ে দেখে খামের ওপর কোনো একটা ক্লিনিকের নাম লেখা।

“সেদিন মায়া ড্রয়ারে রিপোর্ট রাখার জন্য খুললে ওর জিনিস গুলো দেখতে পায়।তারপরই মেহরাবের ফোনে টয়ার কল আসলে মায়া রিসিভ করে।আর কথা বলতে বলতে বেখেয়ালি ভাবে রিপোর্ট টি ড্রয়ারে রেখেই ড্রয়ার লক করে দিয়েছিলো।কথা বলা শেষে আলমারিটা ও লক করে দেয়।ঐ সময় মায়া খামের কথাটা ভুলেই গিয়েছিলো।“

মেহরাব কৌতুহল বশত খামটি খুলে পড়ে দেখে এটা মায়ার প্রেগনেন্সি রিপোর্ট।বুকের মধ্যে মোচর দিয়ে ওঠে।হার্ট বিট বেড়ে যায়।চোখ বন্ধ করে লম্বা নিঃশ্বাস নিতে থাকে।এই সেই রিপোর্ট?ইশ যদি আরো আগেই ড্রয়ার খুলতো তা হলে হয়তো জীবনে এতো বড়ো ক্ষতি টা হতো না।হাত কাঁপতে থাকে ওর,একটা সময় কাগজ টা হাত থেকে পরে যায়।মেহরাব আলমারি ঘেষে ফ্লোরে বসে পরে।চোখ থেকে অজস্র ধারায় টপ টপ করে পানি পরছে।

কিছু সময়ের জন্য হলেও অনুভব করছে

“ও বাবা হতো।ছোট্ট একটা বেবি পৃথিবীর আলো দেখতো।হাঁটি হাঁটি পা পা করে একটা সময় ওর সারা বাড়ি ঘুরে বেড়াতো।মীর ম্যানশন আরো পূর্ণতা পেতো।একটা সময় ও বাবা ডাকটা শুনতো।ওর জীবনের সকল দুঃখ কষ্টরা বিদায় নিতো।কিন্তু ওর ভাগ্যে যে এ সব নেই।তাই এটা শোনার আগেই সব শেষ হয়ে গেছে।প্রিয় মানুষ গুলো ওকে রেখে দূরে পাড়ি জমিয়েছে।কাগজ টা হাতে তুলে অনেকক্ষণ বুকে জড়িয়ে কান্না করে।”

“আচ্ছা আপনার জানা মতে পুরুষ মানুষ কি এমনটা করে?বা করতে পারে? হয়তো সব পুরুষ এক নয়।কিছু পুরুষ জীবনের সব কিছু হারিয়ে আবার নতুন করে জীবন শুরু করে।একটা সময় কিন্তু বউ বাচ্চা সংসার এটাই হয় তার জীবনের সুখী সুন্দর আর সুস্থ্যভাবে বাচার একমাএ অবলম্বন।কিন্তু ভেবে দেখবেন এদের মধ্যে কারো কিছু হলে সেই পুরুষটা যতোই কঠোর আর পাথর মনের হোক না কেনো,একটা সময় প্রিয় মানুষ বা জিনিসের সামান্য ক্ষতি টুকু সহজে সহ্য করতে পারে না।”

মোট কথা হারানোর ভয়টা তার ওপর ঝেকে বসে।

একটা সময় নিজেকে সংবরন করে নেয় মেহরাব।কাগজটির দিকে চেয়ে ভাবে এটা একটা সময় মুল্যবান কাগজ থাকলেও এখন আর এই কাগজ টার মুল্য নেই।তাই এটাকে ছিড়ে কয়েক টুকরো করে বাস্কেটে ফেলে দেয়।এটা আবার কখনও চোখে পরলে একই কাজের পুনরাবৃত্তি ঘটবে।এ জন্য এটা না রাখাই ভালো।

“সুখের স্মৃতি গুলো মানুষকে আনন্দ দেয় কিন্তু কষ্টের স্মৃতি গুলো মানুষকে পেছনের কথা গুলো মনে করিয়ে শুধু পো’ড়ায়।”

চলবে…….

#স্বর্ণকেশী_মায়াবিনী
#লেখনীতে-বর্ণ(Borno)
#পর্ব-২৬

নিজের স্বামীকে বেশি বেশি আদর ভালোবাসা দিয়ে আচলে বাইন্দা রাখতে হয়।না হলে সে অন্য নারীর প্রতি আসক্ত হওয়ার সুযোগ থাকে।

আয়েশার মুখে এমন কথা শুনে মায়ার বুকটা ধক করে ওঠে।

মায়ার বান্ধবী আয়েশার ও বিয়ে হয়ে গেছে।ভালো ঘরেই বিয়ে হইছে।বর কোম্পানী চাকুরী করে।আয়েশা বাবার বাড়িতে কয়দিনের জন্য বেড়াতে আসলে মায়ার আসার খবর টাও শুনে।বিকেল বেলা আয়েশা মায়াদের বাড়িতে আসে।দু জন দুজনাকে পেয়ে অনেক গল্প গুজবে মেতে ওঠে।কিন্তু মায়ার মনে কি চলছে সেটা একদমই বুঝতে দেয় না আয়েশা কে।তবে মায়ার এমন একটা এক্সিডেন্ট এর কথা শুনে আয়েশা খুব আফসোস করে।তারপর আবার ওকে অনেক বুঝায় শান্তনা দেয়।কথায় কথায় মায়া ওর বরের কথা জিজ্ঞেস করেলে আয়েশা খুব লজ্জা স্বরে বলে “ওর বর ওকে অনেক ভালোবাসে,ওকে ছারা নাকি কিছু বুঝে না।আর আয়েশা ও তাই বরের কথা ছাড়া উঠবস করে না।ওর মতে বর যা যা পছন্দ করে আর যেমনে থাকতে কয় তেমনি থাকতে হয় না হলে তার মন ঘুরে যেতে সময় লাগবে না।এ জন্য বরকে বেশি বেশি ভালো বাসা দিয়ে নিজের করে রাখতে হয়।
বলা যায় আয়েশা এক রকম বর পা’গল বউ।এ রকম আরো অনেক কথাই আয়েশা মায়াকে শোনায়।

মায়া শুধু নিরবে শুনে যায়।ভালো লাগে ওর বান্ধবী সুখে আছে এটা জেনে।কিন্তু ও কি সুখে আছে?মনে মনে এ সব ভাবতে থাকে।মেহরাব কে তো ও অনেক ভালোবেসেছে এখনও বাসে।আর মেহরাব সেও তো বাসে তা হলে ওদের মধ্যে এখন কেনো এতো দূরত্ব?মায়ার অন্যমনস্ক ভাব দেখে আয়েশা ওকে ডাকে।মায়ার ধ্যান ভাঙ্গলে আয়েশা জিজ্ঞেস করে

-তোর আর ভাইয়া সম্পর্ক কেমন যাচ্ছে?

মায়া কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না তবুও মুখের হাসি বজায় রেখে বললো

-খুব ভালো রে আর সে আমাকে অনেক অনেক ভালোবাসে,অনেক যত্নে রাখে।কোনো সময় চোখের আড়াল হতে দেয় না।এই যে আসার আগেও নিষেধ করেছিলো আসতে তারপরও তার কথা উপেক্ষা করে চলে আসলাম।

কথা গুলো শুনে আয়েশা খুব খুশি হয়।শুধু তাই না আয়েশা মায়াকে আরো কিছু টিপস্ শিখিয়ে দেয়।

-শোন স্বামীর চোখে নিজেকে সুন্দর রাখার জন্য সব সময় চেষ্টা করতে হবে।একা বেশি দিন স্বামীকে ছাড়া থাকা যাবে না।পুরুষ মানুষ বলা তো যায় না বউ কে যতোই বেশি ভালোবাসুক না কেনো বউ বেশি দিন চোখের আড়াল হলে মনের আড়াল হতে কতক্ষণ।আর তখন আরেক জনকে ভালো লাগতে শুরু করে দিবে।

এ কথা শুনে মায়ার এবার দম বের হয়ে যাবার মতো অবস্থা।কোনো মতে নিজেকে ঠিক রাখে।দুজনের গল্প গুজব শেষ হতেই আয়েশা চলে যায়।কিন্তু মায়ার মনে অন্য কিছু চলছে।এই কয়দিনে এ সব ভুলেও ভাবেনি।বরং মনে মনে রাগ পুষে ভেবেছে সে একা আছে যা মন চায় তাই করুক ও আর মেহরাবের কথা ভাববে না।কিন্তু এখন কতো কি ভেবে ফেলছে।তা হলে মেহরাব কি ওকে ভুলে গেছে?যদি ভালোবাসতো অন্তত একবার হলেও কল করতো।সরি বলতো না হয় আগের বারের মতো চলে আসতে পারতো।কিন্তু কোনোটাই করেনি মেহরাব।তারমানে সে আমাকে ভুলে গেছে।এ সব ভেবে নিরবে কান্না করে চোখের পানিতে বালিশ ভিজাচ্ছে।
এমন সময় পুষ্প মায়াকে ডাকতে ডাকতে ঘরে ঢোকে।পুষ্পের কথা শুনে চোখ মুছে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করে।

-বুবু এই সন্ধ্যা বেলা শুয়ে আছো শরির খারাপ নাকি কও তো?

-না আমি ঠিক আছি বোন।

-আচ্ছা বুবু তোমার আর ভাইয়ার মধ্যে কিছু হইছে নাকি কও তো?

-কই না তো কি হইবো?

-কিন্তু আমার মনে হইতাছে,কারন এই কয়েক দিনে তোমার সাথে ভাইয়ার কথা কইতে দেখি নাই।আবার বেশির ভাগ সময়ই তোমায় মন খারাপ করে বসে থাকতে দেখেছি তাই জিজ্ঞেস করলাম।

-সে ব্যাস্ত মানুষ তাই কথা কম হয় আর সব সময় কি সবাইকে দেখিয়ে কথা বলতে হবে নাকি?

-আচ্ছা টিক আছে সবই মানলাম কিন্তু তুমি কান্না করছো কেনো?

মায়া এবার কি বলবে নিজেকে সামলে নিলেও পুষ্প ঠিক ধরে ফেলেছে।

-কান্না করবো কেনো আর এখন যা তো ভালো লাগছে না।

-হুম যাইতাছি আর তোমার যে কি হইছে সেটাও আমি দেখতেছি বলেই পুষ্প ঘর থেকে বের হয়ে যায়।

মায়া এবার মেহরাব কে নিয়ে গভির ভাবে ভাবতে থাকে।মন চাচ্ছে এখনই শহরে ছুটে যেতে।রাগ করে চলে আসলেও ওর মনটা মীর ম্যানসনে পরে আছে।একা একা কি করছে মানুষটা মূলত এই কয়দিন ওর শোকে নাওয়া খাওয়া ঘুম কিছুই ঠিক ঠাক করতে পারেনি।যতোই ভেবেছে মেহরাব কে মনে করবে না ততোই বেশি করে মনে পরছে।কিন্তু আজ আয়েশার কথা গুলো বারবার মনের দরজায় উকি মারছে।মনটা বিষন্নতায় ভরে উঠছে।মেহরাব যদি ওকে ছেরে অন্য কাউকে জীবন সঙ্গী করে নেয়?তা হলে ওর কি হবে?না ও এ সব একদমই সহ্য করতে পারবে না।এ সব ভাবতেই কান্নায় গলা জড়িয়ে আসছে।মোবাইল টা হাতে নিয়ে মেহরাব কে কয়েকবার কল করতে গিয়ে ও সাহোস হয়নি কল করার।অবশেষে চোখ নাক খিচে কলটা করেই বসে।কল ডুকতেই ওপাশ থেকে রিসিভ করে মেহরাব।হ্যালো হ্যালো কন্ঠ স্বর শুনে মায়া পাথরের ন্যায় জমে যায়।কতো দিন পর মানুষটার কন্ঠ শুনতে পেরেছে।মনে অন্যরকম ভালো লাগা অনুভূত হচ্ছে।হার্টবিট বেড়ে যাচ্ছে মনে হচ্ছে ওর শ্বাস আটকে যাচ্ছে,মেহরাবের কথার প্রেক্ষিতে ও কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না।কিছু বলতে না পেরে নিজের অপরাগতা প্রকাশ করে একটু শব্দ করে কান্না করে দেয়।এমন টা হওয়াতে সাথে সাথে নিজের মুখ নিজেই চেপে রেখে কল কেটে দেয়।
এর পরে মায়া অনেক ক্ষণ অপেক্ষা করে ওপর প্রান্ত থেকে কোনো কল আসে কিনা তার জন্য।কিন্তু কল আর আসে না।এবার মায়া বুঝতে পারে মেহরাব এই কয়দিনে সত্যিই পরিবর্তন হয়ে গেছে।তা হলে কি সত্যিই সে ওকে ভুলে গেছে?
এবার নাকের পানি চোখের পানি এক করে খাটের ওপর বসে হাটু জড়িয়ে অতি সাবধানে কান্না করতে থাকে।
কান্নার আওয়াজ সবাই শুনলে আবার নানা ধরনের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে তাই।ও চায় না ওদের এই ব্যাপার টা কেউ জানুক।নিজের মধ্যেই সবটা লুকিয়ে রেখে কষ্ট পাবে তাও কাউকে জানিয়ে তাদের চিন্তায় ফেলতে চায় না।

রাতে খাবারের আগে কয়েক বার কাশেম মিয়া আয়মন ওকে ডেকে যায়।কিন্তু ও খাবে না জানায়,কাশেম মিয়া মেয়ের মন খারাপ ভেবে পুষ্প পাঠায়।পুষ্প কয়েকবার ডাক দিলে মায়া এবার রেগে পুষ্প কে ধমক দেয়।কি আর করার পুষ্প ও ফিরে আসে বোনের ধমক খেয়ে।না খেয়েই থাকে পেটে ক্ষুদা থাকা সত্বেও না খেয়ে আছে শুধু মাএ মেহরাবের ওপর রাগ করে।পাশে জগে থাকা পানি গ্লাসে ঢেলে এক গ্লাস পানি খেয়ে নেয়।কিছুটা ভালো লাগলেও রাত তো বড়ো যদি আবার ক্ষিদে পায়? তা হলে তো ঘুমও হবে না।আবার চিন্তা করে এক রাত মা খেয়ে থাকলে কিছুই হবে না ভেবেই শুয়ে পরে।এইটা সেইটা ভাবতে ভাবতে গভির ঘুমে তলিয়ে যায় মায়া।

আস্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে গলার কাছে ঘনো ঘনো নিশ্বাস ফেলার শব্দে মায়ার ঘুম ভাঙ্গে।কিন্তু ও নড়তে পারছে না।প্রথমে ভাবছে স্বপ্ন দেখছে কিন্তু না চোখের পলক কয়েক বার ফেলেছে শিওর হয় ও ঘুমে নেই সজাগ আছে।রুমের হলুদ বাতির সাথে লাগানো ড্রিম লাইটি জ্বলছে।কিন্তু ও তো সব লাইট বন্ধ করেই শুয়ে পরেছিলো।এখন নড়াচড়া করতে পারছে না কেনো?ঘুম ঘুম চোখে প্রথমে রুমের কিছুই দেখতে না পারলেও আস্তে আস্তে কিছুটা দেখতে পায়।মনে হচ্ছে কেউ ওকে জোড়ে চেপে ধরে রেখেছে কিন্তু বুঝতে পারছে না।এবার অজানা ভয় মনে উকি দিয়েছে।তার মানে ওকে কি বোবা ভূতে ধরেছে?আগে এমনটা ওর সাথে হয়েছে অনেকবার।দোয়া দূরুদ পড়লে ছেরে দিতো কিন্তু আজ মনে মনে কয়েকবার পড়া শেষ করলেও ছাড়ছে না।আর সহ্য করতে না পেরে যেই না চিৎকার করতে যাবে অমনি শক্তপোক্ত একটা হাতের তালু দিয়ে ওর মুখ আটকে দেয়।মায়া বুঝতে পারে এটা ভূত না মানুষের হাত।
কানের কাছে ফিসফিস করে বলতে থাকে

-উফ রোমান্টিক মুহূর্ত টা এ ভাবে ভেস্তে দিও না তো।আমাকে আমার কাজ করতে দাও।

কথাটা শুনে মায়া স্তব্ধ হয়ে গেছে।বিশ্বাস হচ্ছে না কিছু কন্ঠস্বর শুনেই বুকের মধ্যে হাতুরি পেটা হচ্ছে।এর আগে কোনো কিছু না বুঝতে পারলেও এখন পুরোপুরি নিশ্চিত মানুষটা আর কেউ নয় এ তো মেহরাব।মায়া ওর মাথার চুল গাল সব কিছু স্পর্শ করতে থাকে।বুঝতে পারে চুল গুলো বাবরি টাইপের নেই আগের স্টাইলে কাটা হয়েছে।মুখেও দাড়ি নেই ক্লিন সেভ করা হয়েছে।এবার মানুষটা ওকে নিজের দিকে ফিরিয়ে বুকের মধ্যে জড়িয়ে নিয়েছে।অনেক দিন পর সেই আগের পরিচিতো গায়ের গন্ধ টা নাকে পেয়ে মন ভরে নিঃশ্বাস নিতে থাকে মায়া।আপন মনে চোখ থেকে পানি পরতে থাকে।এটা দুঃখের নয় সুখের কান্না।আকস্মিক এমন কিছু পেলে খুশিতেও চোখের পানি ঝরে।মেহরাব বুঝতে পারছে মায়া নিরবে কান্না করছে।কান্না ভেজা চোখে চুমু খেয়ে থুতনি ধরে নিজের দিকে ফেরায়।অল্প আলোতে বুঝতে পারে মায়ার ঠোঁট কাঁপছে।
মোহমায়া ঘোরলাগা দৃষ্টিতে ধীর কন্ঠে মেহরাব বলতে থাকে “ইশ আজ মনে হয় সারা দিন ধরে আমার মায়াবিনী টা আমার শোকে কান্না করে কাটিয়েছে।সব দুঃখ কষ্ট এই রাতেই ঘুচে দিতে চাই বলেই মায়ার অধরে মেহরাবের অধরদ্বয় মিলিত করে।মায়া ওকে খামচে ধরে।প্রিয় মানুষটার এমন স্পর্শ অনেকদিন পায়না।ব্যাকুল হয়ে ছিলো মন।শুধু মাএ একটু ভালোবাসার পরশ পাওয়ার জন্য।মিনিট খানেক পরেই মেহরাব মায়ার অধর ছেড়ে দেয়।মায়া লজ্জায় ওর দিকে চাইতে পারছে না।মেহরাব উঠে হুট করেই মায়াকে পাজা কোলে নেয়।আচমকা এমন টা হওয়াতে মায়া একটু চমকে যায়।শার্টের কলার আকড়ে ধরে।মেহরাব ওকে নিয়ে দরজার সামনে এসে দাড়ায়।চোখ দিয়ে ইশারা করে দরজার খিলটা খোলার জন্য।মায়া বুঝতে পারছে না এই লোকটার মনে কি চলছে?ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করে “কেনো?মেহরাব এবার একটু বিরক্ত ভাব নিয়ে বলে
-আরে আগে বের হতে দাও না বলে বুঝবে কেমনে বাইরে গিয়ে তোমাকে নিয়ে করবো।

মায়া দরজার খিল টা খুলে দিলে মেহরাব ওকে আস্তে ধীরে বের হয়।এবার মায়া মেহরাবের গলা জড়িয়ে ধরে ওর দিকে চেয়ে থাকে।আজকের রাতটা ও বরাবরের মতো চাঁদনী রাত।বাইরে জোস্নার আলোতে সামনা সামনি হলে সব কিছু স্পষ্ট দেখা যায়।অনেক দিন বাদে মায়া আবার আগের মেহরাব কে দেখছে।মনে মনে ভাবছে ইশ কি হ্যান্ডসাম লাগছে আমার বর টা কে।মেহরাব ওর পানে দৃষ্টিরত দেখে বলে উঠলো

-এ ভাবে গভীর নজরে দেখো না মায়াবিনী তা হলে রুমে না নিয়ে এখানের কোনো ঝোপঝাড়ে নিয়ে পরের কাজটা আগেই সেরে নিবো কিন্তু।

বলেই মুচকি হাসতে লাগে।মায়ার কথার মর্মটা বুঝতে একটু দেরি হলে এক হাতের সাহায্যে ওর বুকে আলতো কি’ল মা রে।মেহরাব একটু দুষ্টুমি স্বরে বলতে লাগে

-আরে কি করছো এমনিতেই এই বুকটা হাজারো ব্যাথায় জর্জরিত আর তার ওপর তুমি যদি ব্যাথা দাও তা হলে তো আমি শেষ।
কথাটা বলতেই মায়া ওর হাত দিয়ে মেহরাবের মুখ বন্ধ করে দেয়।মাথা নাড়িয়ে বুঝায় এমন কথা যেনো আর না বলে।মেহরাব ওকে নিয়ে মাদের বাড়ির সামনে সেই খাল পাড়ের কাঁঠ দিয়ে পাটাতন করা ঘাটলাতে আসে।ওকে কোল থেকে নামায়।প্রথম সিঁড়ির ওপর ওকে পা ঝুলিয়ে বসিয়ে দিয়ে নিচের সিঁড়িতে মেহরাব নামে।
-এখানে কেনো আনলেন বলেন তো?

-প্রেম করতে শান্তি মতো এ যাবত প্রেমই করতে পারিনি তাই চুপি চুপি নিয়ে এলাম প্রেমের মজা কেমন সেটা বুঝতে।

-ইশ কি সব যে বলেন।আর এতো রাতে কেউ দেখলে কে কি ভাববে বলেন তো?

-কে কি ভাববে?আমার কবুল বলা বউকে নিয়ে আমি দিন রাত ভোররাত কখন কি করবো সেটা আমার একান্ত নিজের ব্যাপার।যাই হোক সময় নষ্ট করতে চাই না বউ।
বলেই প্যান্টের পকেট থেকে একটা বক্স বের করে সেখান থেকে কিছু একটা বের করে ওর চোখের সামনে ধরে।
মায়া দেখে বুঝতে পারে এটা একটা পায়েল।
-পায়েল
-হুম
এবার মেহরাব পাটাতনের ওপর এক হাটু গেড়ে আরেক হাটু উঁচু করে বসে।ওর এক পা মেহরাবের এক পায়ের ওপর রাখে।ওর এমন কাজে মায়া একটু অপ্রস্তুত হয়।কিন্তু এতে মেহরাবের মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া নেই।পা থেকে প্লাজোটা ধরি কিছুটা উপরে উঠিয়ে নেয়।ফর্সা ধবধবে পা দৃশ্যমান।মায়ার হার্ট বিট আবার বাড়তে থাকে।মেহরাব অতি সন্তুপনে পায়েলটি ওর পায়ে পরিয়ে দেয়।বেশ মানিয়েছে।যদিও চাঁদের আলোতে আর কতোটুকু দৃশ্যমান তাও ওর মনে হচ্ছে এই ফর্সা পায়ে পায়েলটি জ্বলজ্বল করছে।আকস্মিক মেহরাব ওর পায়েল পরিহিতো অংশে ঠোঁট ছুয়ে দেয়।মায়া এবার আর সহ্য করতে পারে না।মানুষটার এমন পরশে মেহরাবের চুল মুট করে চেপে ধরে।হাপসাতে থাকে ও মেহরাব ওর পা ছেরে ওকে স্বাভাবিক ভাবে বসিয়ে দেয়।উপরের সিড়িতে ওঠে ওর গা ঘেষে বসে দু হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে কাঁধে মুখ লুকায়।

-এতো কষ্ট কেনো দিলে?এতোটাও না দিলে পারতে।জানো প্রতিটা দিন আর রাতের প্রহর গুলো বড্ড বেসামাল আর কষ্টে পার করেছি।
এমন কথায় মায়া চুপ থাকে মন চাচ্ছে ও কিছু মেহরাব কে শুনাতে পারতো তা হলে আগের রাগ গুলো মিটতো।কিন্তু ও তা বলতে চায় না।সত্যি লোকটা একা ছিলো কতো কষ্টই না পেয়েছে।বরং যা ভুল সব ওরই হইছে।আজ আর কোনো অভিযোগ নয় বরং নতুন করে আবার সবটা শুরু করবে।মেহরাব কে আর কষ্ট দিয়ে নিজেও কষ্ট পেতে চায় না।
মায়া ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে

-চলুন এবার ঘরে যাওয়া যাক

মেহরাব আবার ওকে কোলো তুলে নেয়।

-আমার বউটার ওজন দেখছি অনেক কমে গেছে।ভেরি ব্যাড,আজ থেকে ওজন বাড়ানোর প্রসেসিং শুরু করে দিতে হবে।

মায়া লজ্জায় আবার ওর বুকে মুখ লুকায়।
আজ আর নিজেকে একবিন্দু দূরে সরিয়ে রাখবে না।বিলিন হতে চায় মায়া মেহরাবের মাঝে।রাত বাড়তেই বিনিময় হতে থাকে দুজন মানব মানবীর প্রতি জমানো আদর ভালোবাসা গুলো।একটা সময় দুজন দুজনার মাঝে হারিয়ে যায়।রাত জাগা ঝি ঝি পোকারাও একটা সময় নিরব নিস্তব্ধ হয়ে যায়।

চলবে…….

#স্বর্ণকেশী_মায়াবিনী
#লেখনীতে-বর্ণ(Borno)
#পর্ব-২৭

খুব সকালে মায়ার ঘুম ভাঙ্গে।কিন্তু ঘন্টা পার হলেও মেহরাব ওকে কিছুতেই উঠতে দেয় না।ওর চওড়া বুকের সাথে মায়ার পিঠ ঠেকানো অবস্থাতেই শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে।মায়া মনে মনে ভাবছে বাড়ির কেউ তো জানে না মেহরাব আসছে।আবার দেরি করে বের হয়ে সকাল সকাল শাওয়ার নিলে কারোর না কারোর চোখে তো পরবে সেটা ভেবে কেমন লজ্জা লাগছে।কি করবে ও ভেবে পাচ্ছে না।অবশেষে আর জোড়াজুড়ি না করে স্থির হয়ে রয়।
মনে মনে ভাবে কে কি বলবে ওর নিজের স্বামীই তো আসছে।রাতে কেউ না দেখলেও বের হলে দিনের বেলা তো দেখবেই ভয় কিসের?
এ দিকে মেহরাব আবার ওর সাথে দুষ্টুমি করা শুরু করে দেয়।জড়িয়ে ধরেই গলায় ঘারে চুলে অধর ছোয়াতে থাকে।

বাহির থেকে দরজায় কড়া নারার আওয়াজে মেহরাব একটু বিরক্ত স্বরে বলে ওঠে
-আরে শ্বশুর বাড়ি এসেও শান্তি নেই।বউকে ঠিকঠাক আদর করতে পারছি না।

মায়া ওর কথা শুনে ওর বাহু বন্ধন থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে সামনে ঘুরে বলে

-ছাড়ুন তো রাতে অনেক জ্বা’লিয়েছেন এখন উঠতে দিন।ফ্রেশ হতে হবে।তা ছাড়া আপনি আসছেন এটা তো জানাতে হবে নাকি।

-জানাতে হবে না এমনিতেই জেনে যাবে আসো একটু স্বামী সেবা করো।না হলে কিন্তু পাপ হবে।
ওর কথা শুনে মায়া ওকে ধাক্কা দিয়ে উঠে পরে আর বলে

-হইছে রাত ভর স্বামী সেবা করে অনেক সওয়াব অর্জন করেছি আর না।
মেহরাব আর আটকায় না।ঠিক ঠাক শুয়ে পরে।মায়া গায়ে কাপড় জড়িয়ে দরজা খুলে দেখে পুষ্প দাঁড়িয়ে আছে।মায়ার দিকে চেয়ে একটু রহস্যময় ভাবে ওকে চেয়ে চেয়ে দেখে।ওর এমন চাওনি দেখে মায়ার ভ্রু কুচকে যায়।

-বুবু তোমার এই অবস্থা ক্যান?রাতে ঘুম হয় নাই?

-কি অবস্থা আবার আর ঘুম হবে না কেনো?

-নাহ এমনি বললাম তা দরজা খুলতে দেরি হলো যে?কি করছিলে বুবু এতোক্ষণ?

-কিছু না শুয়ে ছিলাম।

-ওহ আমি আরো ভাবলাম কি না কি।

-আজকাল একটু বেশি ভাবোস তুই।আচ্ছা শোন না একটা কথা কইতাম

-কি কথা বুবু?

-তোর ভাইয়া এসেছে

-আরে কি কও কখন আইছে?জানাও নি কেনো বুবু?

-এই তো অনেক রাতে,এ জন্য কাউকে ডাকিনি।বোন আমার শোন না বাজান আর মাকে একটু বল না সে এসেছে।বুঝিস তো খাবার দাবারের একটু ব্যাবস্থা করা লাগবে তো।

-হুম তা তো লাগবে।তয় আমি মায়রে কিছু কইতাম না বাজান রে গিয়া কইতাছি।

-আচ্ছা যা একজনকে বললেই হলো।
পুষ্প চলে যায়।মায়া ফ্রেশ হয়ে নেয়।মেহরাব এখন ঘুমাচ্ছে।মায়ার আর রুমে থাকতে মন চাচ্ছে না।নিশব্দে বের হয়ে রান্না ঘরের দিকে যায়।আয়মন রান্না করছে ওকে দেখে কাছে ডেকে বসায়।অনেক কিছুর আয়োজন করছে।এ সব দেখে মায়া অবাক।কিছুক্ষণ আগে পুষ্প কে বলেছিলো মাকে বলতে মেহরাবের কথা।কিন্তু ও নিশ্চিত এই টুকু সময়ে পুষ্প মাকে কিছু বলেনি আর বললেও এতো আয়োজন করা টাও সম্ভব নয়।

-জামাই কি উঠেছে

-না মা ওঠেনি,তোমার জামাই এসেছে তুমি জানো?

-বা রে জানবো না কেনো?

-ওহ আচ্ছা
এটুকু বলে নিশ্চুপ হয়ে যায় মায়া।মায়ের সাথে রান্নার কাজে সাহায্যে করতে থাকে।একটা সময় মেহরাব ওঠে ফ্রেশ হয়ে নেয়।জামাইয়ের জন্য সকালের নাস্তায় অনেক পদ রান্না হয়েছে।সবাই একসাথে খাওয়ার জন্য বসেছে।কাশেম মিয়া পাশ থেকে জামাইয়ের উদ্দেশ্যে বলে

-রাতে ভালো করে খাও নি এখন কিন্তু পেট ভরে খাবে।

কথাটা শুনে মায়া অবাক হয় কি বললো ওর বাবা?রাতে ও খাইছে তার মানে মেহরাব বেশি রাতে না তার ও আগে আসছে।এবার ও পুষ্পের দিকে চায়।পুষ্প মায়ার দিকে চেয়ে মিটি মিটি হাসে।পুষ্প ফিস ফিস করে বলে

-বুবু তোমারে কিন্তু রাতে অনেক বার ডাকছি তুমি নিজেই আসোনি এতে কিন্তু আমাগো কারোর কোনো দোষ নাই।

মায়া ভেবে দেখে হা সত্যিই সবাই ডেকেছিলো কিন্তু ও নিজেই বের হয়নি।খাওয়া শেষ করে রুমে চলে আসে মেহরাব।মায়া ওর সামনে এসেই বলতে লাগে

-আপনি কাল সন্ধ্যার পরেই আসছেন তা হলে আমাকে কেনো জানান নি?

-আগে যদি জানতাম আমার কথা শুনে তুমি এমন অস্থির হবে তা হলে তো সোজা তোমার কাছেই আসতাম।বাই দ্যা ওয়ে “দেরি করে কাছে আসাতে কি আদরের কমতি হয়েছে? তা হলে আসো যে টুকু সময় নষ্ট হয়েছে আদর দিয়ে সেটা পুষিয়ে দিবো।

ওর কথা শুনে মায়ার কান গরম হয়ে ওঠে।কি সব বলছে মুখে লাগাম ছারা কথা লেগে থাকে।

-কি হলো চুপ আছো যে তা হলে কি ধরে নিবো নিরবতা সম্মতির লক্ষণ”

মায়া এবার শব্দ করেই বলে ফেলে

-এই না না একদম এ সব কিছু করবেন না।

মেহরাব একটু শব্দ করেই হাসে।মায়ার হাত ধরে ওর কোলে বসিয়ে দু হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে।আর বলে

-গতো কাল তোমার কল পেয়ে শুধু মাএ কান্নার একটু শব্দ কানে ভেসে আসতেই নিজেকে আর স্থির রাখতে পারিনি সোনা।আমি এই একটা কলের অপেক্ষায় ছিলাম।আমার বিগত দিন গুলো তোমাকে ছাড়া কি ভাবে কেটেছে তুমি জানো না মায়া।প্রতিটা মুহূর্ত নিজেকে নিঃস্ব লেগেছে।অফিস সামলিয়ে বাড়ি ফিরলে পরের সময় গুলো আর পার হতে চাইতো না শুধু মাএ তোমার স্মৃতি তোমার ছবি এ সব দেখেই সময়টা পার করতাম।তোমার পরিবারের সবাইকে জিজ্ঞেস করে দেখো রোজ সময় করে তোমার খবর নিয়েছি।আমার বিশ্বাস আমার মতো তোমার ও একই অবস্থা ছিলো।

কথা গুলো শুনে আপন মনে মায়ার চোখ থেকে পানি পরতে লাগে।ও কি ভাবে পারলো এমন একটা মানুষকে কষ্ট দিতে?হিসেব করে দেখলে যা যা হয়েছে তার বেশির ভাগ দোষ ওর নিজেরই।

-আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন প্লিজ।আমি ভুল করেছি।

মেহরাব ওর হাতের তালুতে অধর ছোয়ায়।

-নাহ তুমি কোনো ভুল করোনি এটা আমাদের ভাগ্য।তা ছাড়া আমারও ভুল ছিলো।সে সব কথা ছাড়ো আমি পিছনের কথা মনে করতে চাই না মায়া।অতিত জিনিস টা আমার কাছে বরাবরই ভয়ংকর কিছু মনে হয়।যেটার কথা ভাবলে আমি ঠিক থাকতে পারিনা।এতো টুকু রিকোয়েস্ট আমাকে কষ্ট দিও না।আমি তোমাকে আমার সর্বস্ব দিয়ে হলেও খুশি করার চেষ্টা করবো মায়া।

মাথা নেড়ে মায়া ওর কথার সম্মতি জানায়।দু দিন শ্বশুর বাড়ি কাটিয়ে মেহরাব মায়া কে নিয়ে কলিমউল্লাহ মামুর বাড়ি আসে।সেখান থেকে প্রথম বারের মতো মায়াকে ওর নামু বাড়ি নিয়ে আসে।সব কিছু ঘুরে ঘুরে দেখে মায়া।খুব ভালো লাগে ওর।অনেক জায়গা নিয়ে এতো সুন্দর বাড়ি অথচ থাকার মতো মানুষ নেই।
এ দিকে এতোদিনে মেহরাবের প্রজেক্টের কাজ শেষ হয়ে গেছে।দুস্থ্যহীনদের আশ্রয় আবাস স্থল তৈরি করা শেষ।এমনকি সেখানে অনেক গুলো পরিবার থাকতে শুরু করেছে।ওরা ওখানে গিয়ে সবার সাথে দেখা করে।মেহরাবের এমন কাজে ওখানের সবাই খুশি।মন ভরে দোয়া করে দেয় ওদেরকে।এর পরে ওরা শহরে চলে আসে।

~~~~~

দেখতে দেখতে অনেক দিন কেটে যায় দুজনের। দিন কাল আগের থেকে খুব ভালো যাচ্ছে ওদের।এর মাঝে মেহরাব মায়াকে নিয়ে ইউরোপের কয়েকটা দেশে গিয়ে ট্যুর দিয়ে এসেছে।মেহরাব আবার কাজে ব্যাস্ত হয়ে যায়।শতো ব্যাস্ততার মাঝেও মায়ার জন্য সব সময় মেহরাব আলাদা সময় বের করে নেয়।প্রতি সপ্তাহে মায়াকে নিয়ে লং ড্রাইভে বের হয়।মোট কথা মায়াকে সবসময় মেহরাব আনন্দে রাখার চেষ্টা করে।তা হলেই যেনো মেহরাবের শান্তি।

কয়েকদিন পরেই ওদের জীবনে একটা ভালো দিন আসতেছে।হুম বিয়ের এক বছর পূর্ণ হতে চলছে।আর এই দিনে মেহরাব ভেবে রেখেছে বাসায় বড়ো করে একটা অনুষ্ঠান করবে।বিয়ে উপলক্ষ্যে নিজের বাড়িতে তেমন বড়ো আয়োজন করতে পারেনি তাই ও এটার কথা চিন্তা করে।মায়া ও মেহরাবের পরিকল্পনা শুনে খুশি।
আজ মায়ার বাড়ির সবাই এসেছে।মায়া বাবা মা বোনকে পেয়ে খুব খুশিতে আছে।
এদিকে বাসার সব আয়েজনের অনেকাংশের দায়িত্বটা ফিরোজ পায়।আর দুদিন পর অনুষ্ঠান তাই কি কি করা লাগবে সে জন্য মীর ম্যানসনে আসে।এসেই প্রথমে একটা ঝটকা খায়।বাসায় এসে পুষ্প কে দেখেই আগের থেমে যাওয়া প্রেম টা আবার নতুন করে জেগে ওঠে।বড়ো ভাইয়ের ভয়ে এতোদিন চুপ ছিলো কিন্তু আর চুপ থাকবে না।সুযোগ মতো এই খুশির দিনেই মনের কথাটা বলে দিতে চায়।তার আগে পুষ্প কে বোঝাতে হবে ও কতোটা ভালোবাসে পুষ্পকে।কিন্তু পুষ্পের সাথে কথা বলতে গেলেই মনের সব কথা গরমিল হয়ে যায়।ইনিয়ে বিনিয়ে এই নিয়ে কয়েক বার বলতে গিয়েও বলতে পারেনি।ওর এমন কান্ডে পুষ্প বিরক্ত হয়।বেচারা ফিরোজ মনে মনে নিজের মনের ওপর ও বিরক্ত।

“সামান্য কথাটা এই পুঁচকে মেয়েটাকে বলতে পারছে না?ও কেমন পুরুষ মানুষ?আসলে ও পুরুষ মানুষ ঠিকই কিন্তু দেখবেন প্রিয় মানুষটার কাছে গেলে সাহসী পুরুষটাও ভিতু দূর্বল হয়ে যায়।হয়ত এটা অতিরিক্ত ভালেবাসার ফলে হয়ে থাকে”

চলবে….

(লেখার ভুলত্রুটি মার্জনীয়)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে