Monday, October 6, 2025







স্বপ্ন হলেও সত্যি পর্বঃ-৯

স্বপ্ন হলেও সত্যি পর্বঃ-৯
আফসানা মিমি

হঠাৎ আমাকে ছেড়ে দিয়ে বিস্ফোরিত চোখে
তাকালো আপু আমার দিকে।

—সে মেয়েটা ভাইয়াকে কোন মূল্যই দেয়নি। কিন্তু ভাইয়াকে দেখলে আমি ঠিকই বুঝে যাই যে ভাইয়া মেয়েটাকে তার অমূল্য সম্পদ ভাবে।
—আচ্ছা মেয়েটার নাম কি বলতে পারো?
—ভাইয়া বলেছিল তার নাম নাকি আরাদ্ধা। তবে
পুরো নাম জানিনা।
—জানতে পারি মেয়েটার ওপর তোমার এত রাগের কারন?
—ভাইয়া নিজ থেকে আমাকে কখনোই এসব কথা বলতো না। কিন্তু আমি বুঝে গেলাম কারন খুব ভালবাসি ভাইয়াকে। মেয়েটা ছেড়ে চলে যাওয়ার পর ভাইয়া পুরো পাগলপ্রায় হয়ে গিয়েছিল। কতটা ভালবাসলে মানুষ এত কষ্ট পায় তা আমি বুঝতে পেরেছিলাম। মেয়েটার ওপর রাগ একারনেই যে আমার ভাইয়া কি এমন দোষ করেছিল যার মাশুল দিচ্ছে এখনো! যখন ভাইয়া কাজের অবসরে বাসায় আসতো তখন দেখতাম সারাটাক্ষণ গম্ভীর হয়ে থাকতো। আম্মু তো ভাইয়ার এ অবস্থা দেখে মাঝে মাঝে খুব কান্না করতো। ঐ মেয়েটার জন্য আমরা তিনজন মানুষ কষ্ট পাচ্ছি। সেজন্য অনেক রাগ জেদ ঐ মেয়েটার ওপর। ভাইয়া আগের থেকে একটু স্বাভাবিক হয়েছে শুধু আমাদের জন্য। আমি আর আম্মু খুব বুঝিয়েছি ভাইয়াকে। আমাদের মুখের দিকে তাকিয়ে ভাইয়া আমাদের সাথে হাসিমুখে কথা বলে। কিন্তু আমি ভাইয়ার সামনে দাঁড়িয়ে তার চোখের দিকে তাকালেই বুঝতে পারি সেই মেয়েটাকে ভাইয়া এখনো মন থেকে সরাতে পারেনি। তার পুরোটা জুড়ে শুধু ঐ মেয়েটার অস্তিত্ব বিদ্যমান। হয়তো সত্যিকারের ভালবাসাটা এরকমই। মেয়েটা অনেক ভাগ্যবতী হতো যদি না ভাইয়াকে ছেড়ে না যেতো। কারন আমার ভাইয়াকে আমি চিনি। সবটা উজার করে ভালবাসতো।

আপুর দিকে তাকিয়ে দেখি আপু এখনো কাঁদছে।
—আমার ভাইয়ার কথা বাদ দাও আপু। এখন বলো লন্ডন থেকে আসার পর যাকে ভালবাসতে তার
সাথে দেখা হয়েছে কথা হয়েছে?
—হুম দেখা হয়েছিল একবার। তবে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকতে পারিনি। কারন ঐ যে বললাম না তার চোখের মায়ায় আর পড়তে চাইনি। হয়তোবা সে আমাকে ঘৃণা করে। পুরো ৪ বছর ১ মাস ১৭ দিন পর দেখা পেয়েছিলাম তার। কিন্তু আমার সাথে একটা কথাও বলেনি। আগের থেকে গোছালো হয়ে গেছে। একটা প্রাপ্তবয়স্ক ভাব এসেছে শরীরে। তবে মুখটা খুব গম্ভীর ছিল। চোখদুটো কেমন যেন মৃত মনে হচ্ছিল। আমার দিকে একবার তাকানোর পর আর তাকায়নি।
—আপু ছেলেটির নাম কি বলবে? ছেলেটির কোন
ছবি আছে তোমার কাছে অথবা আমাকে দেখাতে
নিয়ে যাবে একবার ছেলেটিকে?

আমার কথা শুনে আপু চমকে উঠলো। থতমত খাওয়া গলায় বললো
—কেন?
—খুব জানতে ইচ্ছে করছে কে সেই ছেলে যাকে এতটাবছর ভালবেসে কষ্ট পেয়ে যাচ্ছো! তাকে
একবার দেখতে ইচ্ছে করবে এটাই তো স্বাভাবিক।
—সময় হোক সব জানতে পারবে।

এটা বলেই আপু হনহন করে দ্রুত পায়ে আমার সামনে থেকে চলে গেল। আপুর এহেন কান্ড দেখে আমি খানিক বিস্মিত হলাম বৈকি। তবে একটা ব্যাপার খুব ভাবাচ্ছে আমায়। ভয়ে আপুকে তা জিজ্ঞেস করতে পারিনি। আমার ভাইয়া যে মেয়েকে ভালবাসতো সে মেয়েটা ভাইয়াকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল স্টাডি কমপ্লিট করে কেরিয়ার গড়ার উদ্দেশ্য। আর আপুও স্টাডি করার জন্য তার ভালবাসার মানুষকে ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছিল লন্ডনে। দুয়ে দুয়ে চার হচ্ছে। তবে কি ভাইয়া আর ফাল্গুনী আপু……..! না না তা কি করে সম্ভব? আপুর নাম তো ফাল্গুনী আর ঐ মেয়েটার নাম ছিল আরাদ্ধা। আর তাছাড়া যদি এটা সত্যিই হতো
তাহলে তো ভাইয়া অথবা আপু আমার থেকে না লুকিয়ে বলতোই। অতএব এ ব্যাপারটা মাথা
থেকে ঝেড়ে ফেলে দেওয়াই উত্তম।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share

—“কখনো ভাবতেও পারিনি আবার তোমার
মুখোমুখি হবো। তোমার জন্য আমার মনের লুকানো অনুভূতিগুলো আমার মনেই নিবদ্ধ করে রাখতে চেয়েছিলাম আমরন। তোমার সাথে যে অন্যায় আমি করেছি তার ক্ষমা নেই জানি। তাই এই পোড়ামুখ দ্বিতীয়বার দেখানোর কোন ইচ্ছে আমার ছিল না। কারন আমার জন্য তোমার গোছালো জীবনটা অগোছালো হয়ে গেছে। আমি করে দিয়েছি অগোছালো নিজের কথা ভেবে। কিন্তু দেখো বিধাতার কি লীলাখেলা! আবারো তোমার মুখোমুখি হলাম। এতটা বছর তোমায় স্বার্থপরের মতো ছেড়ে চলে আসা আমায় পুড়িয়েছে সারাক্ষণ। আজ এতো বছর বাদে যখন তোমায় দেখলাম বিশ্বাস করো সেই প্রথমদিনের মতো অনুভূতি হয়েছে আমার। বুকের ভিতর ঢিপ ঢিপ আওয়াজটা গাঢ় হচ্ছিল, সারা শরীরে কাঁপন ধরে গিয়েছিল, পা দুটো অবশ হয়ে আসছিল আর হৃদপিণ্ডটা ক্ষণে ক্ষণে জানান দিচ্ছিল ‘তার ভালো থাকার কারন তুই ছিলি। কিন্তুভালো করে দ্যাখ আজ তাকে নিষ্প্রাণ লাগছে’ তোমায় দেখে সত্যিই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। যে চোখে আমার জন্য এক সমুদ্র ভালবাসা ছিল একসময়। সেই চোখ দুটো আজ নিষ্প্রাণ মনে হচ্ছিল। যতক্ষণ তাকিয়েছিলাম ততক্ষণই মনে হচ্ছিল ঐ আঁখিযুগল অনেক না বলা কথা বলতে চায়। অনেক হিসাব নিকাষ বাকি আছে।”—

—“সেদিনের পর থেকে খুব পোড়াচ্ছে আমায়।
বারবার শুধু ঐ চেহারাটা আমার চোখে ভেসে উঠছে। আর মন বলছে ‘তুই অন্যায় করেছিস তার সাথে,
তাকে ঠকিয়েছিস তুই, তাকে একদম ভিতর থেকে মেরে ফেলেছিস তুই। যে অন্যায় তুই তার সাথে করেছিস তার কোন ক্ষমা নেই।’ তাকে দেখার পর থেকেই পাগলপ্রায় লাগছে নিজেকে। আচ্ছা সে আমাকে ক্ষমা করেছে তো! নাকি এখনো রাগ পুষে রেখেছে আমার প্রতি! অবশ্য রাগ করতেও তো অধিকার লাগে, সম্পর্ক লাগে। তার সাথে তো এখন আমার কোন সম্পর্কই নেই, আর না আছে কোন অধিকার। স্বার্থপর আমি একটা। শুধু নিজের কথাই ভেবেছি। যে আমাকে মনপ্রাণ উজার করে ভালবাসত তার কথা ভাবিনি আমি। খুব খারাপ আমি। খুব খারাপ।”—

—“আবারো আজকে তোমাকে দেখলাম। আচ্ছা
তুমি কি আজও আমাকে ভালবাসো একটু হলেও? জানো তোমার চোখে এখনো ভালবাসা খুঁজি আমি। কিন্তু কেন যেন খুঁজে পাই না। ভালবাসাটা কি তুমি লুকিয়ে রেখেছো নাকি আমিই ব্যর্থ খুঁজে পেতে?
‘যা মরে যাওয়ার আগেই মরে গেছি। একেবারে মেরে রেখে চলে গিয়েছিল আমাকে। আর অবশিষ্ট নেই।’ জানো তোমার এই শেষের কথাটায় খুব কষ্ট পেয়েছি। অবশ্য আমার কাছ থেকে পাওয়া তোমার কষ্টের
কাছে এই সামান্য কষ্ট কিছুই না।”—

ফাল্গুনী আপুর রুমে এসেছিলাম একটা কাজে। আপু রুমে ছিল না। চলে আসার সময় চোখ আঁটকে গেল টেবিলের ওপর রাখা খয়েরি রঙের ডায়েরিটার ওপর। আমার আবার অন্যের ডায়েরির ওপর লোভটা একটু বেশিই কাজ করে। যতক্ষণ না পড়তে পারবো ততক্ষণ শান্তি নেই। কালকে আপু অনেক কাঁদছিল তার এক্স বফের কথা মনে করে। দেখি ডায়েরিতে কিছু লেখা আছে কিনা অথবা সেই ছেলেটার কোন ফটো পাই কিনা!

ডায়েরির প্রথম পৃষ্ঠায় আপুর জীবনবৃত্তান্ত লেখা। আপুর পুরো নাম আরাদ্ধা জান্নাত ফাল্গুনী। নামটা দেখে কিছুটা চমকে উঠলাম। আরাদ্ধা তো ভাইয়ার এক্স গফের নাম ছিল। তাহলে কি……..! আমার
সন্দেহ হচ্ছে। তাই এক কাজ করলাম। আগের
অনেক লেখাই ছিল কিন্তু সেগুলো না পড়ে শেষেরটুকু পড়লাম। পড়ে আমি স্তব্ধ, নির্বাক হয়ে রইলাম বেশ কিছুক্ষণ। ভাইয়ার সেদিনের বলা কথাটা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। ডায়েরিটা বন্ধ করে থুতনিতে ঠেকিয়ে ভাবতে লাগলাম। হঠাৎই একটা ফটো ডায়েরির ভিতর থেকে ফ্লোরে পড়লো। আচ্ছা এটা কি ভাইয়ার ফটো হবে নাকি অন্যকারো!

ফটোটা উল্টো হয়ে পড়ে আছে। হাতে নিয়ে দেখলাম উল্টোপাশে ডেট লিখা। ০২/০৯/২০১৪
বাপরে এ তো অনেকদিন আগের তোলা! ফটোর মালিককে দেখে আমি যারপরনাই বিস্মিত হলাম।
এ যে কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বেড়িয়ে এলো সামনে! আমার সন্দেহটাই কারেক্ট। ফাল্গুনী আপুই তাহলে
সেই মেয়ে!

ব্যালকনিতে বসে ছিলাম তখন রেহানের ফোন হাজির
—কিরে আফসু তুই ফ্রি আছিস আজকে?
—আমার ফ্রি থাকা দিয়ে তোর কি কাজ?
—আরে বল না! কথা পেঁচাচ্ছিস কেন এতো?
—সারাদিন ফ্রি নেই তবে বিকালের দিকে ফ্রি আছি। এবার বল কেন?
—আমার সাথে একবার শপিংমলে যেতে পারবি?
—তোর সাথে গিয়ে আমি কি করবো? তোর কাজ
তুই যা।
—আরে তোর দরকার আছে বলেই তো বলছি। মেয়েলি কোন জিনিস আমি পছন্দ করে কিনতে পারবো না বলেই তো তোকে বলছি।
—ওয়েট ওয়েট ওয়েট…মেয়েলি জিনিস কিনবি মানে? তুই মেয়েলি জিনিস কিনে কি করবি?
—এখন বলবো না। সারপ্রাইজ।
—যা তোর সারপ্রাইজ নিয়ে তুই বসে থাক। আমার কাছে কি তোর?
—আরে আগে তো মলে আয় তারপর নাহয় বলছি।
—আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে। কিন্তু আমি যে কষ্ট
করে যাব আমাকে কি দিবি?
—তোর আবার কি লাগবে?
—আগে এসে নিই তারপর বলবো।
—ঘুষখোর একটা!
—সামনে পেলে নাক ফাটাবো তোর বান্দর।

—মহারাণীর এতক্ষণে আসার সময় হলো তাহলে!
—জ্বী আপনি তো জানেনই মিস্টার যে আমাদের দেশের রাস্তাঘাটের যা অবস্থা! তাতে করে তাড়াতাড়ি আসার উপায় নেই একদম।
—লেকচার ছারা বন্ধ কর এবার। পুরো একঘন্টা লেট।
—তোর সামনে যে একঘন্টা লেট করেও হাজির হয়েছি তার জন্য তোর আমাকে ধন্যবাদ দেওয়া প্রয়োজন।
—ধন্যবাদ দিতে যাব কেন শুধুশুধু। একে তো লেট লতিফ তার ওপর আবার ধন্যবাদ খুঁজছিস।
—বহুল পেঁচাল পেরেছিস এবার ক্ষ্যামা দে ভাই।
কারন তোর দরকারেই এত কষ্ট করে এসেছি। এখন আমাকে এক কাপ কোল্ড কফি খাওয়া।
—আয় আগে তোর মাথা ঠান্ডা করে নিই।

—তো এবার বল মলে কেন আসতে বললি?
—আসলে স্বর্ণার জন্য একটা গিফ্ট কিনবো।
—কেন?
—পরশু স্বর্ণার বার্থডে তাই।
—শুধু কি তাই? নাকি অন্যকোন কারনও আছে?
লজ্জায় লাল হয়ে রেহান বললো
—ও আমার প্রপোজাল এক্সেপ্ট করেছে।
—তলে তলে টেম্পু চালাও আর আমরা বললেই হরতাল! তা কতদূর এগোলো?
—এই তো সবেমাত্র পাঁচ দিন হলো।
—আচ্ছা স্বর্ণা কি জানে যে তুই……

“এখানে কি করা হচ্ছে?”

আমার কথার মাঝখানে হঠাৎ রাগী কণ্ঠে কেউ
একজন উপরোক্ত কথাটি বলে উঠলো। কণ্ঠটা খুব পরিচিত মনে হচ্ছে। পিছনে ফিরে দেখি মিঃ কাঠখোট্টা দাঁড়িয়ে আছে। উনি এসময় এখানে কি করছে?

—একি আপনি এখানে? এখানে কি করছেন আপনি?
—একই প্রশ্ন তো আমারো। তুমি এখানে কি করছো?
—আমার ফ্রেন্ডের সাথে আসলাম একটা দরকারি কাজে।
—তা দরকারি কাজটা কি ডেট করা?
—ছিঃ কি বলছেন এসব?
—আমি বললেই ছিঃ তাইনা? আর তুমি এসব
করলে কোন দোষ নেই!
—কিসব আজেবাজে বকছেন?
—আচ্ছা বলো তো তোমার কি একটা দিয়ে হয় না?
—একটা দিয়ে হয় না মানে? কি হয় না? কি বুঝাতে চাচ্ছেন আপনি?
—ন্যাকামো করা হচ্ছে এখন তাইনা? এমন ভাব করছো যেন ভাজা মাছটি উল্টে খেতে জানো না। অথচ পুরো মাছটিই যে গিলে খেতে পারো সেটা স্বীকার করবে না।
—আজেবাজে বকা বন্ধ করে এক্স্যাক্টলি কি বলতে চায়ছেন একটু খুলে বলুন তো!
—প্রথমে তো ছিল আকাশ। তাকে দিয়ে তোমার হয়নি। তারপর আবার এই ছেলেটা। রেহান নাকি কি নাম যেন! তুমি তো বলেছিলে সে তোমার খুব ভালো বন্ধু। কিন্তু তার নমুনা দেখতে পাচ্ছি সেই প্রথম থেকেই। তারপর সেদিন জ্বরের ঘোরে বলেছিলে তুমি আমায় ভালবাসো। শুনেছি জ্বরের ঘোরে মানুষ নাকি সত্যি কথাই বলে। তাহলে কি সেদিন ভুল ছিল তোমার কথাগুলো? এই ছেলের সাথে তোমার এত কিসের মাতামাতি হ্যা? শুধু
ফ্রেন্ড হলে কেউ রেস্টুরেন্টে আসে ডেট করতে?

শ্রাবনের কথা শুনে আমার মাথার ভিতর কয়েকটা চক্কর দিয়ে উঠলো। এগুলো উনি কি বলছেন?
আকাশ এখানে কোত্থেকে আসলো? সেতো আমার স্বপ্নের দেখা। আর… আর আমি সেদিন জ্বরের ঘোরে সত্যিই উনাকে ভালবাসার কথা বলেছিলাম? আরো কিছু বলতে যাচ্ছিল। তাকে থামিয়ে দিয়ে বললাম

—এটা আপনার বাসা নয়। পাবলিক প্লেসে কোন সিনক্রিয়েট করবেন না দয়া করে।
—ওহ তুমি যার তার সাথে ডেটে যেতে পারবে আর আমি বললেই দোষ তাই না?
—জাস্ট কিপ ইউর মাউথ শাট, ওকে? রেহান জাস্ট আমার ফ্রেন্ড। তাও সেই ছোটবেলার। আপনার আর একটাও বাজে কথা আমি টলারেট করবো না বলে দিচ্ছি।
—তোমরা মেয়েরা এসবই পারো। একজনকে ঠকিয়ে আরেকজনের সাথে খুব ভালো করেই আন্ডারস্ট্যান্ডিংটা মজবুত করতে পারো। খুব নিখুঁত ভাবে অভিনয় করে যেতে পারো। যা কিনা আমার মতো সহজ সরল ছেলেরা বুঝতে পারে না তোমার মতো মেয়েদের ছলচাতুরী।
—আরে আজব তো! কাকে ঠকিয়েছি আমি?
—কেন? আকাশকে।
—আরে আকাশ তো আমার……
—হ্যা হ্যা জানি তোমার এক্স বফ। তোমার ডায়েরি পড়েই জেনেছি।

কথাটা শুনে আকাশ থেকে পড়লাম। উনি আমার ডায়েরি পেল কোথায়? নিরব দর্শক হয়ে এতক্ষণ সবকিছু অবলোকন করছিল রেহান। এতক্ষণে বললো

—আপনি আফসানাকে ভুল বুঝছেন। আসলে সে এখানে আসার…..
রেহানের ঠোঁট থেকে চৌম্বকের মতো কথা কেড়ে
নিয়ে বললো
—আমি ঠিকটাই বুঝেছি। এখন ভুলটা বুঝাতে হবে
না আমাকে। ছিঃ তুমি যে আসলেই এতোটা চিপ
মাইন্ডের আমি টেরই পাইনি।
—হ্যা আমার মাইন্ড এতো চিপই। আপনাকে আমার কোন ব্যাপারে নাক গলাতে হবে না। আর মনে রাখবেন মানুষের চোখের দেখায়ও কিছু ভুল থাকে। সেই দেখার আড়ালে সত্যিটা লুকিয়ে থাকে। সবসময় আমাকে শুধু ভুলই বুঝে গেলেন। আল্লাহ্ আপনাকে হেদায়েত দান করুন। তবে একদিন এর জন্য আপনাকে পস্তাতে হবে। এই বলে রাখলাম। মিলিয়ে নিবেন আমার কথাটা।

রেহানের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে তাদেরকে সেখানে রেখেই রেস্টুরেন্ট থেকে বেড়িয়ে আসলাম। চারপাশ অন্ধবার হয়ে আসছে। দু’চোখ টলমল করছে। তবে কি চোখ থেকে বৃষ্টি ঝড়বে নাকি প্রকৃতি আমার সাথে তাল মিলিয়ে বৃষ্টি ঝড়াবে? কাঁদবো না আমি। কেন কাঁদবো? কার জন্য কাঁদবো? যে কিনা আমাকে একশ ফোঁটার মধ্যে এক ফোঁটাও বিশ্বাস করে না তার জন্য? মানুষটা শুধু ভুলই বুঝে গেল আমাকে। কখনো আমার ভিতরটা বুঝার চেষ্টা করেনি। ভিতরে হওয়া তোলপাড়
দেখার প্রয়োজন মনে করেনি!

চলবে…….

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ