স্পর্শতায় তুমি পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব

0
1137

#স্পর্শতায়_তুমি
#অন্তিম_পব
#অধির_রায়

নিরবে নিভৃতে বসে আছে তিন জোড়া চোখ৷ একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে৷ নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে অজান্তা, প্রকৃতি, অর্পণের মাঝে৷ অজান্তা নিস্তব্ধতা ভেঙে বলল,

“ছোঁয়াকে রাজি করাতে পারছি বিয়েতে৷ ঋষিকে কিভাবে বিয়েতে রাজি করাব? ঋষি কি আজও রাজি হবে বিয়েতে?”

প্রকৃতি চকিত হয়ে বলল,

“ছোঁয়ার আবারও বিয়ে মানে! ছোঁয়ার তো একবার বিয়ে হয়ে গেছে৷”

অজান্তার প্রকৃতির দিকে এক পলক তাকায়৷ তারপর অজান্তা প্রকৃতি আর অর্পনকে সমস্ত বিষয় খুলে বলে৷ দু’জনে অজান্তার কথা শুনে আকাশ থেকে পড়ে৷ অজান্তা মুচকি হেঁসে বলল,

“সৃষ্টিকর্তা যা করেন ভালোর জন্যই করেন৷ তিনিও চান ছোঁয়া ঋষিকে মিলিয়ে দিতে৷ উনার চাওয়া না থাকলে আমার দাদা কখনও বাড়ি ছেড়ে যেত না৷ প্রকৃতি ছোঁয়া আজও ঋষির ভালোবাসার জন্য পা” গ”ল৷ তাকে ছাড়া কিভাবে বেঁচে আছে, তুমি তাকে দেখলে বুঝতে পারতে?”

অজান্তার কথা শেষ হতেই অর্পন আহত কন্ঠে বলল,

“সবার ভালোবাসা বুঝলেও আমার ভালোবাসা কেউ বুঝে না৷”

প্রকৃতি সন্দেহ কন্ঠে বলল,

“আপনার ভালোবাসা কে বুঝল না? আমার জানা মতে আপনি কারোর সাথে রিলেশনে যাননি৷”

ছোঁয়ার হাতের উপর হাত রেখে অজান্তা বলল,

“তার কথা ছেড়ে দাও৷ আমাদের মিশন হলো ঋষি ছোঁয়াকে এক করা৷ অর্পণ তুমি ঋষিকে বুঝিয়ে বলবে৷ আমি যতটুকু ঋষিকে জানি ঋষি অনেক বেশি দুর্বল ছোঁয়ার প্রতি৷ তোমার কথায় রাজি না হলে তাকে বলবে ছোঁয়া তোমাকে না পেয়ে এখন সুইসাইডও করতে পারে৷ তাদের ভালোবাসাকে পূর্ণতা দেওয়ার জন্য একটু না হয় ব্লাকমেইল করলাম৷”

“আমি তোমার কথা বুঝতে পারছি৷ আমি আজই ঋষির সাথে কথা বলব৷ অফিসে ঋষিকে কিছু বলার দরকার নেই৷ কোন কারণে ঋষি যদি অফিসে সিনক্রিয়েট করে তাহলে ছোঁয়ার মান সম্মান যাবে৷ আমি তোমাকে সন্ধ্যায় ফোন দিব৷ বরং তুমিই বলবে কথাগুলো।”
প্রকৃতিকে উদ্দেশ্য করে বলল,

“তুমি তোমার পরিবারের সাথে কথা বলবে৷ তোমার পরিবারের কাছে বিয়েটা মেনে নিতে কষ্ট হবে৷ কারণ ছোঁয়া একজন ডিভোর্সী মেয়ে৷”

প্রকৃতি অভয় দিয়ে বলল,

“আমি মা বাবাকে ঠিক মানিয়ে নিতে পারব৷ আপনারা দাদাকে মানিয়ে নেন৷ আমিও চাই আমার দাদা সুখে থাকুক৷ ছোঁয়াকে ছাড়া দাদাও ভালো নেই৷”

—– ”পারব না আমি ছোঁয়াকে কিছুতেই নিজের বাড়ি বউ হিসেবে মেনে নিতে। যে মেয়ের জন্য আমার ছেলের এতো কষ্ট করল তাকে আমি এ বাড়িতে দেখতে পারব না৷”

প্রকৃতির মা নিজের ভিতরের ক্ষোভ থেকে বলে কথাগুলো৷ প্রকৃতি করুন দৃষ্টি নিক্ষেপ করে মায়ের কথা গুলো মনোযোগ সহকারে শুনে যাচ্ছে৷ প্রকৃতি মা’কে সব সময় কোমল হৃদয়ের মানুষ হিসেবে জেনে আসছে৷ এমন অগ্নিমূর্তি ধারণ করতে কখনও দেখেনি৷ প্রকৃতি ভয়ে ভয়ে বলল,

“ঋষি যেখানে ভালো থাকবে সেদিকে খেয়াল রাখা আমাদের জরুরি। দাদা কোনদিন অন্য কাউকে বিয়ে করবে না ছোঁয়াকে ছাড়া৷ তুমি বলছো ছোঁয়া বিবাহিত! হে মানলাম ছোঁয়া বিবাহিত। বিশ্বাস করো মা ছোঁয়ার সাথে স্বচ্ছের কোন সম্পর্ক নেই৷ স্বচ্ছ ছোঁয়াকে রেখেই বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে৷ ছোঁয়ার হাত পর্যন্তও ধরেনি৷”

কর্কশ কন্ঠে বলল,

“সমাজে আমাদের একটা সম্মান আছে৷ ছোঁয়াকে বাড়ির বউ হিসেবে আনলে আমরা সমাজের চোখে ছোট হয়ে যাবো৷”

“তুমি কোন সমাজের কথা বলছো? যে সমাজ বিপদ দেখলে মুখ ঘুরিয়ে নেয়৷ যে সমাজ অন্যের দোষ গুণ বিচার না করে মানুষের নামে নিন্দা করে৷ তিল থেকে তাল করা সেই সমাজের কথা বলছো?”

“প্রকৃতি তুমি বুঝতে পারছো না৷ এমন কথা লুটে বেড়াবে, সমাজে মুখ দেখাতে পারব না৷”

“ব্যাস মা৷ আমি সমাজের কোন কথায় কান দিচ্ছিনা৷ তারা আমার ভাইয়ের ভালোবাসা বুঝবে না৷ কাটা স্থানে মলম না লাগিয়ে অন্য স্থানে লাগাতে আঘাত সেরে উঠে না৷ আজ তুমি দাদাকে অন্যত্র বিয়ে দিলে৷ পারবে তাদের খুশি করতে৷ আমরা সবাই চাই দাদা ভালো থাকুক৷ তার ভালো মন্দের খেয়াল আমাদের রাখতে হবে৷ মহল্লার কাকিমাদের রাখতে বলিনি৷”

প্রকৃতির মা মলিন কন্ঠে বললেন,

“আমার তেমন মত নেই৷ ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে আমি এই বিয়েতে মত দিলাম৷ কোন কিছু হলে আমাকে দোষারোপ করতে পারবে না৷”

মা’কে আলতো করে জড়িয়ে ধরে বলল,

“মা সীতাকে রাবণ হরণ করার পর সীতার নামে ক’ল’ঙ্ক দিয়েছিল৷ সীতার কল”ঙ্ক যেহেতু মুছে গেছে তেমনই তোমার ভাবনা পাল্টে যাবে৷ তোমার চোখের মণি হবে ছোঁয়া।”

————হাতিরঝিল লেগের পাশে পাশাপাশি বসে আছে অর্পন, ঋষি৷ এখনও অজান্তা এসে পৌঁছায়নি৷ অর্পন অনেক আগেই অজান্তাকে ফোন দিয়ে বলে দিয়েছে। অজান্তা অর্পনের পাশে এসে বসে৷ অজান্তা অর্পণের পাশে বসাতে অর্পন কিছুটা অবাক হয়৷ ঋষি সন্দেহের কন্ঠে বলল,

” ম্যাম আপনি এখানে৷ আপনি কখন আসলেন ?”

“আমি অনেক আগেই এসেছি৷ আপনার সাথে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা আছে৷ আশা করি আপনি আমাদের কথাগুলো মন দিয়ে শুনবেন৷”

ঋষির এদিক ওদিক তাকিয়ে পরিস্থিতি বুঝার চেষ্টা করে৷ চকিত হয়ে মিহি কন্ঠে বলল,

“আমার সাথে গুরুত্বপূর্ণ কথা! তার আগে বলেন, আপনি অর্পনকে কীভাবে চিনেন? ”

“সেসব পরে হবে৷ আগে আমার সাথে আসেন৷ একটা নিরিবিলি জায়গায় এসব কথা বলতে হবে৷”

“আমি ছোঁয়ার বিষয়ে কোন কথা বলতে চাইনা৷ ম্যাম আমাকে ক্ষমা করে দিবেন আপনার বিষয়েও কোন কথা শুনতে চাইনা৷ আমি ছোঁয়াকে ভুলতে পারব না৷ আপনাকে আমার মনে জায়গা দিতে পারব না। আমার মন বড় নয়৷ আমি ছোঁয়ার স্মৃতি নিয়ে বাকি জীবন পার করে দিতে চাই৷”

অজান্তা মুচকি হেঁসে বলল,

“আপনাকে এসব বিষয়ে কোন কথা বলব না৷ আপনার সাথে অন্য বিষয়ে কথা আছে৷”

ঋষি, অজান্তা, অর্পণ একটি ক্যাফেডিয়ামে যায়৷ অজান্তা কফির কাপে চুমু দিয়ে বলল,

“মা ছোঁয়ার বিয়ে ঠিক করেছেন।”

বিয়ের কথা শুনে ঋষি বসা থেকে দাঁড়িয়ে পড়ে৷ হাতে থাকা কাপ ফ্লোরে পড়ে যায়৷ ওয়েটার কিছু বলার আগেই অর্পণ বলে উঠে, ‘আমি দাম দিয়ে দিব৷ এ নিয়ে কোন সিনক্রিয়েট করবে না৷’ ঋষির নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না৷ ঋষি অজান্তার দিকে ঝুকে বলল,

“এসব কি বলছেন? ছোঁয়া বিবাহিত। আপনার মা ছোঁয়ার সাথে এমন অন্যায় করতে পারে না৷”

ঋষির ইচ্ছা করছে অজান্তার গালে কষিয়ে কয়েকটা থা’প্পড় বসাতে৷ অর্পন ঋষির হাত ধরে টেনে বসায়৷ কোমল গলায় বলল,

“ঋষি নিজেকে শান্ত কর। অজান্তা কি বলতে চাচ্ছে তা শুনি?”

অজান্তা পুনরায় বলতে শুরু করল,

“আমার মা মনে করেন উনার জন্য ছোঁয়ার এমন অবস্থা৷ ছোঁয়া সারা দিন ডিপ্রেশনে থাকে৷ ঠিকমতো খাবার খায়না। মায়ের জন্য ছোঁয়ার এমন অবস্থা। নিজের ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে ছোঁয়ার জীবন শেষ করে দিয়েছে৷ উনার ভুল সংশোধনের জন্য ছোঁয়ার অন্যত্র বিয়ে দিতে চান৷”

ঋষি আহত কন্ঠে বলল,

“ছোঁয়া এ বিয়েতে রাজি হয়ে গেল। ছোঁয়া আমার ভালোবাসার কোন মূল্য দিল না৷”

“হ্যাঁ! ছোঁয়া এ বিয়েতে রাজি। আপনি যদি ছোঁয়াকে বিয়ে করতে চান তাহলে এই বিয়ে আটকানো যাবে৷”

টলমল চোখে বলল,

“পারব না ছোঁয়ার মন ভাঙতে৷ আমি ছোঁয়াকে বিয়ে করতে পারব না৷ ছোঁয়া আমাকে ছাড়া খুশি থাকলে আমিও ভালো থাকব৷”

অজান্তা রাগী গলায় বলল,

“মানুষ ভালোবাসা দেখায় ভালোবাসতে পারেনা৷ আপনার ভালোবাসা সত্যি হলে আপনি ছুটে যেতেন ছোঁয়ার কাছে৷ তাকে এ বিয়ে করতে মানা করতেন৷ না আপনি অভিনন্দন জানাচ্ছেন৷”

অর্পন ঋষির দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলল,

“গার্লফ্রেন্ডের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে বিয়ে হোক৷ এমন গার্লফ্রেন্ড ছেড়ে যাওয়া লোক ঋষি৷ তোর মন বলতে কিছু আছে৷ তোর ভালোবাসা খাঁটি নয়৷ খাঁটি হলে এমন করতে পারতি না৷ তোর ভালোবাসা হিন্দি সিরিয়ালকেও হার মানাবে৷ বাহ বাহ।”

ঋষি রাগী গলায় বলল,

“আমি কি করব? আমি ছোঁয়াকে উঠিয়ে নিয়ে আসব৷ তার বিয়ের আসরে গোন্ডামী করব। যেখানে ছোঁয়া নিজে থেকে এই বিয়েতে রাজি৷”

অজান্তা মাথা নিচু করে বলল,

“ছোঁয়া বিয়েতে রাজি কিন্তু বিয়ের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করতে৷ ছোঁয়ার ঋষিকে ছাড়া দ্বিতীয় কাউকে বিয়ে করবে না৷ ঋষি যদি তাকে মেনে নিতে না পারে তাহলে ছোঁয়া সু’ই’সা’ই’ড করবে৷”

“আমি কিছুতেই ছোঁয়ার ক্ষতি হতে দিব না৷ আমি ছোঁয়াকে বিয়ে করতে রাজি৷ আমি আজ রাতেই আপনাদের বাসায় যাবো বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে৷ আমি নিজে ম্যামের সাথে কথা বলব৷”

“বাড়িতে যান৷ আঙ্কেল আন্টিকে নিয়ে বাসায় আসেন৷ তারা এই বিয়েতে রাজি৷ প্রকৃতি তাদের বিয়েতে রাজি করিয়ে নিয়েছে৷”

ঋষির মা বাবা, ছোঁয়ার মা বাবা, অজান্তার মা বাবা, স্বচ্ছ ও তার স্ত্রী৷ প্রকৃতি পুষ্প স্যার সোফায় মুখ গোমড়া করে বসে আসে৷ এক পাশে চো’রের মতো বসে আছে ঋষি৷ ঋষির পাশে দাঁড়িয়ে আছে ছোঁয়া৷ পরিবারের লোক কি তাদের বিয়ে মেনে নিবে৷ বিশ মিনিট হয়ে যাচ্ছে সকলের মুখে নিরবতা। শুধু চোখের ইশারায় কথা হচ্ছে৷ অজান্তা হাতে মিষ্টি নিয়ে আসতে আসতে বলল,

“অভিনয় করতে হবে না৷ ঋষি ছোঁয়ার দিকে তাকানো যাচ্ছে না৷ বলে দাও আমরাাাা এএএএ বিয়েেে মেমমমনেেেেে নিয়েছি৷”

অজান্তার কথায় সকলেই উচ্চ স্বরে হাসিতে মেতে উঠে৷ ছোঁয়া ঋষির বিয়ে ঠিক করে সাতদিন পর৷ এর মাঝে কেউ কারোর সাথে দেখা করতে পারবে না৷

—– মুখ গোমড়া শুয়ে আছে প্রকৃতি। অপর পাশে অন্য দিকে কাঁধ হয়ে শুয়ে আছে পুষ্প স্যার৷ প্রকৃতির অভিযোগ পুষ্প স্যার তাকে একটুও ভালোবাসে না৷ প্রকৃতির ভালোবাসার কোন দাম নেই পুষ্প স্যারের কাছে। প্রকৃতি নিজে থেকে পুষ্প স্যারকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে। পুষ্প স্যার নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে প্রকৃতির দিকে ঘুরে৷ ব্রু নাচিয়ে বলল,

“কি হচ্ছে এসব? আমাকে ঘুমাতে দাও৷ ঋষির বিয়ের সব কাজ আমাকেই করতে হচ্ছে৷ আমি অনেক ক্লান্ত৷”

প্রকৃতি রাগী অভিমানী কন্ঠে বলল,

“হু”নু’মা’ন বা’ন’র আমি তোর সামনে আছি আমাকে চোখে পড়ে না৷ তুই ঋষির বিয়ে নিয়ে পড়ে আছিস৷ তোর বিয়ে কিভাবে বাঁচাবি এটা ভাব৷ তিথি ঠিকই বলত নিজের বয়সের থেকে বড় কাউকে বিয়ে করলে আন রোমান্টিক হয়৷ লাগবে না আপনার ভালোবাসা। আমি আজ থেকে মাটিয়ে থাকব৷”

প্রকৃতি বালিশ নিয়ে নিচে নামতে নিলেই পুষ্প স্যার প্রকৃতির হাত ধরে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়৷ প্রকৃতি ছুটার চেষ্টা করছে৷ পুষ্প স্যার প্রকৃতির কানে ফিসফিস করে বলল,

“আমি রোমান্টিক হলে সামনে বছরেই বাবা ডাক শুনতে পারব৷ তার জন্য তুমি প্রস্তুত তো৷”

“আপনি আসলেই একটা লু”চু পোলা। আমাকে লজ্জায় ফেলতে ভালো লাগে৷”

প্রকৃতি কোন কথা বলে পুষ্প স্যারের বুকে মুখ লুকায়৷ মান অভিনয় শেষে ভালোবাসায় পূর্ণ হয়৷

—— বউ সেজে বসে আছে ছোঁয়া। কাঁচা ফুলের গন্ধ সারাঘর মৌ মৌ করছে৷ নিজেকে আজ ভাগ্যবান মনে হচ্ছে৷ তিথি ছোঁয়াকের কোলে মাথা রেখে,

“আজ থেকে আমার ক্রাশকে তোকে লিখে দিলাম৷ আমার একটা ক্রাশ কমে গেল৷ চিন্তা করিস না৷ অর্পির চাচাতো ভাইয়ের দিকে নজর দিব এখন থেকে৷”

অর্পি রেগে বলল,

“কু”ত্তী তুই আমার ভাইয়ের দিকে নজর দিলে চোখ তুলে ফেলব৷ মা বলেছে তার সাথেই আমার বিয়ে দিবে৷”

তিথি অর্পিকে জড়িয়ে ধরে,

“আরে বোনু অভিনন্দন। আমার দুইটা দুলাভাই হলো৷ একটা তো ক্রাশ ছিল৷ যা আজ থেকে তাকেও দুলাইয়া বলে ডাকব৷”

প্রকৃতি বলে উঠল,

“তিথি পাখি এখন তোরা রুম থেকে বের হু৷ নতুন বউকে একটু সময় দেয়৷ দাদা বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে৷”

“তিথি ক্ষেপে বলল,

“তোর ভাই আমার ক্রাশ ছিল৷ আমি কিছুতেই রুম থেকে যাবো না৷ হিন্দি সিরিয়ালে দেখিস না এক্সরে বিয়েতে বাসর করতে দেয়না৷ আমিও তাদের বাসর করতে দিব না৷”

অজান্তা মুচকি হেঁসে বলল,

আস্তে বলো৷ বাহিরে সবাই আছে৷ ঋষি বেচারা বহু কষ্টে ছোঁয়াকে পেয়েছে। তাদের একটু সময় দিতে হবে৷

তিথিকে এক প্রকার টেনে রুম থেকে নিয়ে যায়৷ ঋষির রুমে এসে ছোঁয়ার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে৷ ছোঁয়ার কপালে ভালোবাসার পরশ একে বলল,

“যাও এগুলো চেঞ্জ করে আসো৷ তোমার চেঞ্জ করা শেষ হলে আমি চেঞ্জ করব। দুই জনেই ভারী পোশাক ছেড়ে হালকা পোশাক পড়ে৷ ঋষি ছোঁয়ার হাত নিজের বুকে রেখে বলল,

” আমি তোমাকেই কিছুতেই হারাতে পারব না৷ তুমি আমার হৃদয়ের সাথে মিশে গেল৷ আমার শ্বাস প্রশ্বাস তুমি৷”

“আমিও আপনাকে ছাড়া অন্য কাউকে কল্পনা করতে পারিনা৷ আপনার পাশে আমি সারাজীবন থাকব৷ শুধু এই জীবনে নয়৷ পরের জীবনেও আপনার সাথে থাকতে চাই৷”

ছোঁয়ার কানে ফিসফিস করে বলে উঠল,

“আমি তোমাকে প্রতিটি স্পর্শতায় পেতে চাই৷ আমার স্পর্শের কারণ হবে৷ কারণ আমার স্পর্শতায় তুমি থাকবে৷”

ছোঁয়া লজ্জা পেয়ে ঋষিকে জড়িয়ে ধরে। ঋষি ছোঁয়াকে পাঁজা কোলা করে বিছানায় শুয়ে দেয়। ছোঁয়া লজ্জায় দুই হাত দিয়ে নিজের মুখ লুকানোর চেষ্টা করে। ঋষি রুমের লাইট বন্ধ করে দেয়৷

সমাপ্ত……৷

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে