#স্নিগ্ধ প্রেমের অনুভূতি
#সূচনা_পর্ব
#Writer:#মারশিয়া_জাহান_মেঘ
১.
অবশেষে তুই ইচ্ছের প্রেমে পড়লি আদ্র? তাও যেই মেয়ে কিনা তোকে ভালোইবাসেনা?
‘আদ্র বাইকে হেলান দিয়ে আনমনে গিটার বাজাচ্ছিলো বেষ্ট ফ্রেন্ড রুপের কথা শুনে গিটার টা এক পাশে রেখে রুপের দিকে তাকিয়ে করুন চোখে বললো,
‘আমিতো ভালোবাসি রুপ’।
‘আদ্র তুই আর কতো পাগলামো করবি ইচ্ছের জন্য? ইচ্ছেতো সেই ঘুরেফিরে কাব্যকেই ভালোবাসে।
কাব্য’র নাম শুনতেই চোখ দুটো লাল হয়ে যায় আদ্রের। নিজেকে সামলে রুপকে কিছু একটা বলতে যাবে হঠাৎ চোখ যায় কলেজের গেইটের দিকে। সাদা কূর্তি পড়ে হেসে হেসে কয়েকটা মেয়ের সাথে কথা বলে বলে ইচ্ছে ক্যাম্পাসের দিকে আসছে। আদ্র রুপের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো,
‘তুই থাক আমি একটু আসছি।
‘আদ্র শোন….কোথায় যাচ্ছিস? এই আদ্র….
২.
‘কেমন আছো ইচ্ছে?
‘ইচ্ছের পথ আটকে সামনে দাঁড়িয়ে কথাটা বললো আদ্র।
‘ভালো ছিলাম আদ্র ভাই। তবে আপনাকে দেখে সব ভালো উধাও।
‘ইচ্ছে আমি এই কলেজে না পড়েও প্রতিদিন কার জন্য আসি আশা করি জানো?
‘জানিনা। আর জানতেও চায়না। এইবার আমাকে আপনার এই উত্ত্যক্ত থেকে মুক্তি দিন আদ্র ভাই অনেক হয়েছে আর নয়।
‘মুক্তি! হ্যাঁ দিবো মুক্তি তবে আমি যেইদিন এই পৃথিবী থেকে লিভ নিবো ইচ্ছে।
‘এইটা বলেই আদ্র ইচ্ছের অগোচরে চোখের পানি মুছে নিয়ে হাঁটা শুরু করলো রুপের দিকে।
২.
কিরে ইচ্ছে এইভাবে চুপচাপ বসে আছিস কেনো?
‘অয়নি আমার সিরিয়াসলি আর আদ্র ভাইয়ের বিরক্ত করাগুলো ভালো লাগছেনা।
‘এইগুলো বিরক্ত করা বলেনা ইচ্ছে। এইগুলো হলো ভালোবাসার পাগলামি। নয়তো তুই’ই ভেবে দেখ আদ্র ভাইয়া বিজনেস এর সব কাজ সামাল দিয়ে অফিস থেকে সবসময় এই সময়ে কলেজ ক্যাম্পাসে এসে বসে থাকে কার জন্য বলতো? শুধুই তোর জন্য।
‘ওফ অয়নি তুই থামবি? তুই কি ওনার ঘটকালি করছিস?
‘আরে ইচ্ছে তুই রেগে যাচ্ছিস কেনো? আমিতো এমনিতেই তোকে জাস্ট….
‘অয়নিকে আর কিছু বলতে না দিয়ে ইচ্ছে বিরক্ত কন্ঠে বললো,
‘অয়নি তোর এইসব কথা শেষ হলে ক্লাসে আয়। আমি গেলাম।
‘এইটা বলেই ইচ্ছে কলেজ ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে হাঁটা দিলো ক্লাসের দিকে। অয়নি ইচ্ছের যাওয়ার পানে তাকিয়ে মনে মনে বললো, ‘তুই ভুল পথে হাঁটছিস ইচ্ছে। কাব্য মুটেও ভালো ছেলে নয়।
৩.
আদ্র বাসায় ফিরতেই..কোনো কথা না বলে সোজা নিজের রুমে চলে যায়। দুম করে রুমের দরজা লাগিয়ে বিছানায় দুই হাত মাথায় চেপে ধরে বসে পড়ে। আদ্রের এই গম্ভীরতা নিয়ে যথেষ্ট ভয় পেয়ে আছেন মিসেস আনেয়া নীড়। আদ্রের এই গম্ভীরতা মানেই ভবিষ্যৎ ঝড়ের আভাস। তিনি রান্না ঘর থেকে এইসব ভাবতেই হঠাৎ উপর তলা থেকে জিনিস ভাঙ্গার শব্দ পেলেন।
৪.
‘কালো শার্ট, কালো প্যান্ট, হাতে দামি ব্রান্ডের ঘড়ি, চুলগুলো স্পাইক করা..একটা ছেলেকে দেখতে পেয়েই সব বন্ধু বান্ধব থেকে সরে দৌড়ে গিয়ে ছেলেটিকে জড়িয়ে ধরে ইচ্ছে। জড়িয়ে ধরতেই ছেলেটি একটা ডেবিল স্মাইল দিয়ে বললো,
‘হেই সুইটহার্ট..কি হয়েছে?
‘কাব্য আমিতো ভেবেছিলাম আজকেও তুমি অফিস থেকে লেইটে ফিরে আসবে আমার ক্যাম্পাসে।
‘সবসময় লেইটে আসলে যে আমার কপালে ভালোবাসা জুটবেনা সে কথা কি আর আমি জানিনা ভেবেছো?
‘কাব্যের কথায় ইচ্ছে খিলখিল করে হেসে বলে,
‘বিয়ের পরে ভাত’ও জুটবেনা মিস্টার।
দূর থেকে অয়নি এইসব এক ধ্যানে দেখছিলো৷ অয়নির কাঁধে বৃষ্টি আলতো ধাক্কা দিয়ে বললো,
‘এইসব দেখে লাভ নেই অয়নি। ইচ্ছে কাব্যের মিথ্যে ভালোবাসায় ব্লাইন্ড হয়ে আছে। আমরা চাইলেও ওকে বুঝাতে পারবোনা যে কাব্য চৌধুরী ড্রেস চেইঞ্জ করার মতো মেয়ে চেইঞ্জ করে। চল বাসায় চল।
‘অয়নি ভাববিলাসী হয়ে ছোট্ট করে উত্তর দেয় ‘হুম’
৫.
খাবার টেবিলে আদ্র বসতেই আদ্রের হাতের দিকে তাকিয়ে মিসেস আনেয়া নীড়ের কলিজা কেঁপে উঠে। আদ্রের হাতে ব্যান্ডেজ পেঁচিয়ে রাখা। কিন্তু ব্যান্ডেজ ভেদ করে টুপ টুপ লাল আবরণের রক্ত ওনার চোখ এড়ালোনা। টপ করে হাত থেকে খাবারের বাঁটিটা পড়ে টুকরো টুকরো হয়ে গেলো। আদ্র তাড়াতাড়ি চেয়ার থেকে উঠে মাকে উত্তেজিত কন্ঠে বলে,
‘কি হয়েছে মা? বলো কি হয়েছে?
‘আনেয়া বেগম ফুঁপিয়ে কান্না করতে করতে আদ্রের হাত ইশারা করলো। আদ্র ব্যাপারটা বুঝতে পেরে বললো,
‘আমার কিছু হয়নি মা। সামান্য একটু হাত কেটেছে মাত্র।
‘কেনো এমন করলি বাবা কেনো? আমি তোকে ওই মেয়েটার থেকেও আরো ভালো মেয়ে এনে দিবো।
‘মা আমি ইচ্ছের জন্য কিছু করিনি। আর তাছাড়া যতোই এইটা ওইটা বলোনা কেনো এইটাতো আর অস্বীকার করার নয় যে ইচ্ছে তোমারি ভাইয়ের মেয়ে।
চলবে,,