#স্তব্ধের_স্নিগ্ধতা
#মাশফিয়াত_সুইটি(ছদ্মনাম)
পর্ব:১৮
স্নিগ্ধতা এখন ঠিক উপলব্ধি করতে পারছে বাবার মৃত্যু। পাগলামী বন্ধ হয়ে গেছে কার কাছেই বা পাগলামী করবে নিজের বলতে তো এখন কেউ নেই। অশান্ত স্নিগ্ধতা আগের মতো চুপচাপ হয়ে গেছে কারো সঙ্গে কথা বলছে না, স্তব্ধ অনেক চেষ্টা করেও কথা বলতে ব্যর্থ হয়েছে।
সারাটা দিন পানি ছাড়া মুখে কিছু তুলেনি স্নিগ্ধতা জোর করেও খাওয়ানো যায়নি কেউ তার উপর জোর খাটাতে পারছে না। স্তব্ধের ঘরের বেলকোনির মেঝেতে হাঁটু মুড়ে বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে স্নিগ্ধতা।স্তব্ধ এসে পাশে বসলো কিছুক্ষণ নিরব থেকে বলল,
– তোমার নিরবতা আমার সহ্য হচ্ছে না একবার তো কথা বলো।
স্নিগ্ধতা নিশ্চুপ।স্তব্ধ অসহায় কন্ঠে বলল,
– আমার উপর রাগ করেছ? তুমি তো উপস্থিত ছিলে দেখলে তো মম কিভাবে ব্ল্যাকমেইল করেছিল আমি কি করতাম নিজের জীবনের থেকেও মম আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তবে তোমায় ছাড়া একটুও ভালো ছিলাম না অনেক খুঁজেছিলাম তোমায়, ভেবেছিলাম মমকে বুঝিয়ে সব ঠিক করে নিব কিন্তু কি থেকে কি হয়ে গেল।
স্নিগ্ধতা পুর্বের মতো বসে আছে,স্তব্ধ অসহায় কন্ঠে বলল,
– বাবার কথা মনে পড়ছে?
স্নিগ্ধতা এবার নিরবতা ভেঙ্গেছে,দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলতে লাগলো,
– আমার বাবা আর মা দু’জন দু’জনকে অনেক ভালোবাসতো পরিবারের বিপক্ষে গিয়ে দু’জন বিয়ে করেছিল নানার বাড়ির লোকেরা কখনও মেনে নেয়নি পরবর্তীতে দাদা মেনে নিলেও দাদী আর ফুফু মেনে নেননি মা’কে তারা সহ্য করতে পারতেন না শুধু দাদার জন্য বাধ্য হয়ে মেনে নেওয়ার নাটক করছিলেন তবে বাবা-মায়ের সংসার ভালোই চলছিল হঠাৎ একদিন মা জানতে পারেন তিনি মা হতে চলেছেন তারপর তাদের জীবনে আরও খুশি আসে সময় চলতে থাকে মায়ের শরীর খারাপ হতে থাকে আমাকে জম্ম দিয়েই মা পৃথিবীতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আমাকে আর বাবাকে একা রেখে চলে যান।
স্তব্ধ মনোযোগ সহকারে কথাগুলো শুনতে লাগলো কথার ফাঁকে জিজ্ঞেস করল,
– তাহলে শাহিলী ওয়াজেদ কে?
স্নিগ্ধতা আবারও বলতে লাগলো,
– বাবা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আমাকে নিয়েই বাকি জীবনটা পার করবেন কিন্তু বাঁধ সাধলো আমার দাদী বাবাকে বিভিন্ন ভাবে বুঝিয়ে জোর করে নিজে মেয়ে পছন্দ করে বিয়ে দেন, মা মা’রা যাওয়ার একমাস পরেই বাবা নতুন বউ নিয়ে বাড়িতে আসেন আমি তখন দুধের শিশু বাবা বিয়েটা মূলত আমার জন্যই করেছিলেন যাতে আমার মায়ের জায়গা পূরন হয়, কিন্তু মা আমায় কখনও নিজের সন্তানের চোখে দেখেনি শুভ আমার থেকে দেড় বছরের ছোট শুভ জম্মানোর পর থেকেই মায়ের আসল রূপ বের হতে থাকে শুরু হয় আমার প্রতি অনাদর আর খারাপ ব্যবহার তখন ছোট ছিলাম কিছু বুঝতাম না ধীরে ধীরে বড় হতে লাগলাম সবটা জানতে পারলাম বুঝতে শিখলাম দাদীও আমায় সহ্য করতেন না সৎ মায়ের সঙ্গে মিলে আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করতেন কিন্তু বাবা কিছু জানতেনও না তারপর দাদীও মা’রা যায় আমার প্রতি মায়ের ব্যবহার বাবার কাছে প্রকাশিত হতে থাকে প্রথম প্রথম বাবা প্রতিবাদ করলেও মায়ের প্রতি ভালোবাসার কারণে প্রতিবাদ করা বন্ধ করে দেয়।
স্নিগ্ধতার গলাটা এবার ভারি হয়ে আসে চোখে পানি চলে এসেছে তারপরেও বলতে থাকলো,
– জানেন এমনও অনেক দিন গেছে বাঁশের কঞ্চির মা’র খেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে ছিলাম শরীরে অজস্র আঘাত আর ব্যথা নিয়ে গাধার মতো ঘরের সব কাজ করেছি অনেক গালিগালাজ শুনেছি, জ্বর নিয়ে সারারাত ছটফট করেছি কেউ ঘরে উঁকি দিয়েও দেখেনি খাওয়া নিয়ে খোটা শুনেছি কেউ একটুও ভালোবাসেনি শুভকে কখনও মা আমার সঙ্গে কথা বলতে দিত না তবে শুভ মায়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে আমাকে খাবার দিয়ে যেত মাঝে মাঝে কিভাবে যেন আমার কষ্ট বুঝে যেত আর ব্যথার ওষুধ দিয়ে যেত, একসময় বাড়িতে আমার জন্য বিয়ের প্রস্তাব আসা শুরু হলো মা আমাকে তাড়ানোর জন্য বিয়ে দিতে উঠে পড়ে লাগলেন পড়াশোনা বন্ধ করে দিতে চাইলেন তখন বাবা মা’কে আটকে দিয়েছিলেন আমিও কলেজে উঠে টিউশনি করে নিজের পড়াশোনা চালিয়েছি তারপর ভেবেছিলাম চাকরি করবো সাথে মাস্টার্সে ভর্তি হব দুঃখ কষ্ট হয়তো এবার ঘুচবে মা হয়তো একটু হলেও ভালোবাসবে কিন্তু হঠাৎ করে বিয়ে ঠিক করে ফেলে আমাকে ভয় দেখায় অদ্ভুত ব্যাপার বাবাও কিছু বলেনি নিরুপায় হয়ে অচেনা একটা লোককে বিয়ের জন্য বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়।
স্তব্ধের চোখের কোণেও পানি জমে গেছে স্নিগ্ধতা ঢুকরে কেঁদে উঠে বলল,
– তারপরেও উনাকে আমি মা বলে সম্বোধন করি কারণ বুঝ হবার পর থেকে উনাকেই মা হিসেবে জানি চিনি, উনি মা উনার দুই রূপ আমায় পেটে ধরেননি বলে আমি সৎ মেয়ে বলে আমার উপর অত্যাচার করেছেন অথচ অন্যদিকে শুভ উনার ছেলে বলে ছোট থেকে যত্ন সহকারে বড় করেছেন কোনো আচর লাগতে দেননি কই আমি তো কখনও উনাকে সৎ মা ভাবিনি সবসময় মা বলে ডেকেছি সম্মান দিয়েছি তারপরেও আমার প্রতি মনুষ্যত্বের খাতিরে একটু মায়া জন্মায়নি? এই তেইশ বছরের জীবনে আমি এতটুকু বুঝেছি নিজের মা না থাকলে জীবনের রঙ হয় বিবর্ণ সব সুখ হারিয়ে যায় কষ্ট ছাড়া কিছুই থাকে না।
স্নিগ্ধতা কাঁদতে লাগলো এই কান্না থামার না আপনজনদের হারালে চোখের পানি গুলো জলাধারে বইতে থাকে।স্তব্ধ স্নিগ্ধতাকে জড়িয়ে ধরলো স্নিগ্ধতাও স্তব্ধের বুকে মাথা রাখলো এসময় তার একটা বিশ্বস্ত জায়গা দরকার ছিল যা হয়তো পেয়ে গেছে কথাগুলো শুনে স্তব্ধের মনে আক্ষেপ হানা দিয়েছে,’মা এতটা নিষ্ঠুর হতে পারে? সৎ মা হয়তো পারে।’
স্নিগ্ধতা বলতে লাগলো,
– যত যাই হোক না কেন কেউ তো আপন বলতে দুনিয়াতে ছিল কেউ তো আমার ভালো চাইতো কিন্তু এখন বাবা নামক সেই মানুষটাও আর নেই আমি সম্পূর্ণ একা বেঁচে থাকার কোনো কারণ নেই আমার।
স্তব্ধ আরো শক্ত করে স্নিগ্ধতাকে ধরে,
– কে বলেছে তোমার আপন কেউ নেই আমি আছি তো আমার জন্য বাঁচবে তুমি, তুমি শুধু আমার হয়ে থাকবে।
– সেই তো আবার ছেড়ে চলে যাবেন আর আমি কষ্ট পাবো একা একা।
– কখনও ছেড়ে যাব না কথা দিলাম, একদিন তোমাকে ছাড়াই আমার অবস্থা খারাপ ছিল খুব একা লাগছিল জীবনটা এলোমেলো হয়ে গেছিল ভুল করেও তোমায় ছাড়বো না সবসময় বুকে আগলে রাখব।
স্নিগ্ধতার কান্নার বেগ কমে গেছে সেও স্তব্ধকে শক্ত করে ধরে আছে ছেড়ে দিলেই যেন চলে যাবে।
স্নিগ্ধতা না খাওয়ায় স্তব্ধও না খেয়ে আছে মনে মনে ভেবে নিয়েছে যতক্ষন না স্নিগ্ধতা মুখে কিছু তুলবে ততক্ষন নিজেও খাবে না।অরিত্রি শিকদার ছেলে এবং ছেলের বউয়ের জন্য খাবার সাজিয়ে ট্রে তে করে নিয়ে এসেছিলেন দরজা খোলাই ছিল তাই ভেতরে ঢুকতে অসুবিধা হয়নি। কিন্তু ভেতরে প্রবেশ করেই স্নিগ্ধতার জীবনের তিক্ত যন্ত্রনা দায়ক কথাগুলো শুনতে পেলেন, প্রত্যেকটা কথা শুনে উনার চোখ ভিজে গেছে।
রাতুল শিকদার অরিত্রিকে খুঁজতে খুঁজতে স্তব্ধের ঘরে দাড়িয়ে থাকতে দেখতে পেলেন কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
– এখানে এভাবে দাড়িয়ে আছো কেন?
অরিত্রি শিকদার কোনপ্রকার উওর না দিয়ে নিঃশব্দে ট্রে টি- টেবিলে রেখে ঘরের দিকে চলে গেলেন। রাতুল শিকদার মনে মনে বললেন,’এর আবার কি হয়েছে?’
অরিত্রি শিকদার বিছানায় বসে আছেন রাতুল শিকদার পাশে বসে বললেন,
– কি হলো? ছেলের ঘরে গিয়ে মন খারাপ করে চলে এলে কেন?
– স্নিগ্ধতার বয়সটা অনেক অল্প এই অল্প বয়সেই মেয়েটার জীবনে এত কষ্ট? যতই সৎ মা হোক না কেন মা তো,মা হয়ে কিভাবে মেয়ের সঙ্গে এমন করে মানুষ? মানছি আমি অপরাধ করেছি কিন্তু আমি নিজের ছেলের ভালো চেয়েছিলাম তবে ওই মেয়েটার তো কোনো ক্ষতি করিনি চাইওনি।
রাতুল শিকদার বিষয়টা উপলব্ধি করতে পারলেন আক্ষেপের নিঃশ্বাস ছেড়ে বললেন,
– এতটুকু শুনেই কষ্ট পাচ্ছো বাকি ঘটনাগুলো তো জানোই না আমি আর মি. সানজিদ ছাড়া কেউই জানতো না।
– আর কি ঘটনা?
– মি.সানজিদ আমার অফিসে অনেক বছর ধরে কাজ করছিলেন এই সূত্রেই একটা বন্ধুত্বের মতো সম্পর্ক ছিল সেই ক্ষেত্রেই উনার কাছ থেকে স্নিগ্ধতার সম্পর্কে সবটা জানতে পারি, জানো স্নিগ্ধতার বিয়ে ঠিক করেছিল শাহিলী ওয়াজেদ,যেই ছেলের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল সেই ছেলেটা ভালো না জেনেও টাকার লোভে এবং স্নিগ্ধতার ক্ষতির জন্য বিয়ে দিতে চেয়েছেন।
– টাকার লোভে!
– হ্যা, বিয়েটা ছিল নামমাত্র লোক দেখানো আসল কাহিনী তো ছিল অন্যকিছু শাহিলী রিয়াদ নামক ছেলেটির কাছে স্নিগ্ধতাকে বিক্রি করে দিয়েছিলেন অনেক টাকার বিনিময়ে, রিয়াদকে দিয়ে অন্য একজন স্নিগ্ধতার ক্ষতি করতে চেয়েছিল তাদের প্লান ছিল বিয়ের পর স্নিগ্ধতাকে বিদেশে পাচার করে দেওয়া, স্নিগ্ধতা আমাকে একবার বাঁচিয়েছিল ব্যবহারও অনেক ভালো তারপর থেকেই ওকে স্তব্ধের জন্য পছন্দ করেছিলাম কিন্তু তোমার উপর কথা বলতে পারিনি যখন সানজিদ ওয়াজেদ এসে আমায় সবটা জানায় তখনি আমি লোক দিয়ে রিয়াদের খোঁজ খবর নেই আর সবটা জানতে পারি।
– তারপর!
– তারপর আর কি পুলিশকে খবর দিয়ে রিয়াদকে ধরিয়ে দেই আর স্তব্ধের সঙ্গে স্নিগ্ধতার বিয়ে দিয়ে বাড়িতে আনি, ভেবেছিলাম এবার হয়তো মেয়েটার কষ্ট কমবে আমার ছেলেটাও বদলাবে, স্নিগ্ধতা তোমার থেকে মায়ের ভালোবাসা পাবে কিন্তু সব হলো শুধু তোমার মনে জায়গা করে নিতে পারলো না।
অরিত্রি শিকদারের মনটা আরও খারাপ হয়ে গেল অপরাধবোধ ভেতরটা পুড়াচ্ছে। রাতুল শিকদার আক্ষেপ করে বললেন,
– স্নিগ্ধতা ভালো একটা মেয়ে আর ওর জীবনেই এত কষ্ট সানজিদ ওয়াজেদও মা’রা গেলেন বাবার মৃত্যু হয়তো সহ্য করতে পারেনি মেয়েটা।
অরিত্রি শিকদার চোখের পানি মুছে বললেন,
– আগে যদি পুরো ঘটনা আমায় বলতে তাহলে কখনো এমন ভুল করতাম না দু’জনকে আলাদা করতাম না।
_____________
স্তব্ধের বুকে মাথা রেখেই স্নিগ্ধতা ঘুমিয়ে গেছে আর স্তব্ধ দেওয়ালে হেলান দিয়ে বসে আছে যত্ন করে স্নিগ্ধতাকে আগলে রেখেছে।স্নিগ্ধতার এমন অবস্থা দেখে খুব কষ্ট হচ্ছে তার।স্নিগ্ধতার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে স্তব্ধ আস্তে করে বলল, ‘তোমার সব কষ্ট আমি দূর করে দিব কখনো আমার থেকে দূরে যেতে দিব না মম যদি তোমায় মেনে না নেয় তাহলে আমরা দূরে কোথাও চলে যাব।
শাহিলী ওয়াজেদকে ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে রাখা হয়েছে। শাহিলী ওয়াজেদের ছোট ভাই, ভাইয়ের বউ আর ভাইয়ের ছেলে থেকে গেছে এতে শুভর ভার কিছুটা কমেছে।
স্নিগ্ধতাকে জাগিয়ে জোর করে নিজ হাতে অল্প কিছু খাবার খাইয়ে দিয়ে নিজেও খেয়ে নিয়েছে স্তব্ধ।স্নিগ্ধতার চোখগুলো ফুলে গেছে মুখটাও শুকিয়ে গেছে, স্তব্ধ স্নিগ্ধতার ক্ষত জায়গায় মলম লাগিয়ে দিয়ে বলল,
– নাও এবার শুয়ে পড়।
– আপনি কোথায় শুবেন?
স্তব্ধ ব্রু জোড়া কুঁচকে নিয়ে বলল,
– এতদিন যেখানে শুয়েছি সেখানে।
– তাহলে আমায় এখানে শুতে বলছেন কেন?
– তুমি তো এতদিন আমার পাশেই শুতে এখনও শুবে।
– তখন আমরা স্বামী-স্ত্রী ছিলাম কিন্তু এখন আমাদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই আমাদের ডিভোর্স হয়ে গেছে।
স্তব্ধ কিছু বলার মতো পেল না স্নিগ্ধতা বিছানা থেকে নেমে গিয়ে বলল,
– আপনি আপনার ঘরে ঘুমান আমি দিদানের ঘরে শুয়ে পড়বো।
বলেই স্নিগ্ধতা ঘর থেকে বেরিয়ে গেল,স্তব্ধ কিছু একটা ভেবে পেছনে ছুটে গেল। রাতুল শিকদার এবং অরিত্রি শিকদার হল ঘরে ছিলেন স্নিগ্ধতাকে আসতে দেখে মৃদু হেসে জিজ্ঞেস করলেন,
– স্নিগ্ধা মা কেমন আছো? খাবার খেয়েছ?
– জ্বি।
স্তব্ধকে অস্থির হয়ে পেছনে আসতে দেখে রাতুল শিকদার কিছু একটা আঁচ করতে পেরে বললেন,
– স্নিগ্ধা মা ঘরে গিয়ে বিশ্রাম করো অসুস্থ শরীর নিয়ে ছুটোছুটি করা উচিত নয়।
স্তব্ধ স্নিগ্ধতার পাশে এসে বলল,
– আমিও এটাই বলছিলাম।
– আজ রাতটা আমি দিদানের ঘরে থাকি।
– স্তব্ধের ঘর থাকতে মায়ের ঘর কেন?
– উনার সঙ্গে তো আমার ডিভোর্স হয়ে গেছে এক ঘরে থাকব কেন? এছাড়া এ বাড়িতেও আমি আর থাকতে চাই না কাল সকাল হলেই এখান থেকে চলে যাব আমাকে নিয়ে কারো ভাবার দরকার নেই।
অরিত্রি শিকদার দৃষ্টি নত করে ফেললেন ছেলে আর ছেলের বউয়ের দিকে তাকিয়ে থাকার সাহস নেই।স্তব্ধ রাগমিশ্রিত কন্ঠে বলল,
– মামার বাড়ির আবদার নাকি বাড়ি থেকে চলে যাবে মানে? একবার বাড়ি থেকে বের হয়ে পাখনা গজিয়ে গেছে? আমি ছাড়া তুমি আর কোথাও যেতে পারবে না আর কিসের ডিভোর্স ওইটা আমি সংশোধন করে নিব।
চলবে……