স্কুলের_একটি_ভয়ঙ্কর_রাত পার্ট ১
লেখকঃ আহাম্মেদ
স্যার আসতে এখনো দেরি আছে। আমরা কেউ স্যারের পড়া শিখিনি।মাইরের ভয়ে আমি ক্লাস রুম থেকে বের হয়ে গেলাম, আমার পেছন পেছন ৫/৬ জন চলে আসলো। সবাইকে নিয়ে একটা গোপন জায়গার খোঁজ করতে লাগলাম। সচরাচর আমাদের স্কুলের ল্যাবরেটরিটা তেমন খোলা হয়না। কিন্তু আজ দেখলাম ল্যাবরেটরি রুমের তালা খোলা। যায় হোক, ভালোই হলো। আমরা ল্যাবরেটরি রুমে ঢুকে একটা বড় আলমীরার পেছনে লুকিয়ে পড়লাম।কিন্তু আহাম্মদউল্লাহ’র সাথে আলমীরা লেগে আলমীরার উপর থেকে ক্লোরোফোম জাতীয় কিছু একটা নিচে পড়ে ভেঙ্গে গেলো।নাকে একটা গন্ধ অনুভব করলাম।তারপর আর কিছুই মনে নেই।
আমার জ্ঞান ফিরল। উঠে দেখি ল্যাবরেটরি রুমটা পুরোই অন্ধকার। আমার সিগারেট খাওয়ার অভ্যাস ছিল। তাই সবসময় সাথে লাইটার রাখতাম। লাইটারটা জ্বালালাম। দেখলাম বাকিদেরও জ্ঞান ফিরতে শুরু করেছে।
একজন আরেকজনের দিকে চেয়ে আছি। কিছুই বুঝছিনা আমাদের কি হয়েছে। বাবু লাইটের সুইচ দিতে গেল কিন্তু বিদুৎ নেই।
এখন রুমে বলতে আমি(সিফাত), বাবু, আহাম্মদউল্লাহ, মারুফ, প্রনব, সামির, জয়রাম এবং তারেক। তারেকের কাছে ঘড়ি ছিল।
জিজ্ঞেস করলাম,
– তারেক কয়টা বাজে দেখত।
– ১০ টা ৩১(চোখ বড় বড় করে)
টাইমটা শুনে সবার মাথা ঘুরে গেল।
তারাতারি করে দরজা খুলতে চলে গেলাম।
কিন্তু একি! দরজাতো খুলছেনা।
সবার মনে অজানা ভয় ঢুকে গেল।
জয়রাম বলল,
– সেই চারটায় স্কুল ছুটি হল, এখন দরজা খুলা থাকবে কোন দুঃখে?
কি করবো বুঝতে পারছিনা।
হঠাৎ সামির পেছন থেকে দৌড়তে দৌড়তে এসে বলল,
– এই দেখ এটা কি পেয়েছি।সেল্ফের নিচ থেকে একটা আরাব্লেড পেলাম।
প্রনব কোনো কথা না বলে আরাব্লেডটা নিয়ে দরজার লক কাটটে চলে গেল।
অবশেষে দরজার লক খুলল।
আমরা নিচ তলায় চলে গেলাম, লাইটারের অল্প আলোতে সামনে চলতে লাগলাম। নিচে নেমে সবার মাথা খারাপ হয়ে গেল। নিচের মেইন দরজা বন্ধ, যেটা বাইরে যাওয়ার একমাত্র দরজা।
১০ মিনিট ধরে সিড়িঁর উপর দাঁড়িয়ে আছি।
কি করব কিছুই বুঝতে পারছিনা। সবার খুব খিদে পেয়েছে। কিন্তু সবার মনে এখন একটায় চিন্তা। কিভাবে বাড়িতে যাওয়া যায়।
এদিকে সবার খুব ঘুম পাচ্ছে। সবাই স্টোর রুমে চলে এলাম।কিন্তু রুমটা খুব অপরিষ্কার এবং ঘুটঘুটে অন্ধকার। আমার লাইটারটা কিছুক্ষণ আগে নিভে গেছে। অন্ধকারের মধ্যে কয়েকটা চেয়াল-টেবিল সরিয়ে জায়গাটা পরিষ্কার করলাম এবং সবাই মিলে শুয়ে পড়লাম।
হঠাৎ একটা গোঙানির শব্দে ঘুম ভাঙ্গল। কয়টা বাজছে জানিনা।গোঙানির শব্দটা আরও জোরালো হতে লাগলো। সবাইকে ডেকে তুললাম।
– কিরে? শব্দটা শুনছিস?
– এটা কারো গোঙানির শব্দ মনে হচ্ছে।
হঠাৎ একটা ঠান্ডা হাওয়া গায়ে লাগলো।কারো ছায়া দেখলাম বলে মনে হলো। জানালাটা কেট-কেট শব্দে খুলে যাচ্ছে এবং খোলা মাত্র অনেক জোরে বন্ধ হয়ে গেল। যেন মনে হলো কেউ জানালা খুলে পালিয়ে গেছে।
সবাই ভয় পেয়ে গেলাম।
স্টোররুমের একপাশে একটা ভাঙ্গা চেয়ারটেবিলের স্তূপ। তার পেছন থেকে একটা আলো আসছে। সবাই ওই আলোর উৎসের কাছে গেলাম। ভাঙ্গা চেয়ারটেবিল সরিয়ে যা দেখলাম তাতে আমাদের চক্ষু ছানাবড়া হয়ে গেল।
চলবে……