সিক্রেট এজেন্ট পর্বঃ ০৬

0
2267

সিক্রেট এজেন্ট পর্বঃ ০৬
– আবির খান

আফরান পুরো শপিং মল খুঁজেও রূপাকে পেলো না। আফরান হতাশ হয়ে বসে পরে। চারদিকটা কেমন অন্ধকার হয়ে আসছে। কোথায় রূপা?? কোথায় তুমি?? আফরান একজন শক্ত মানুষ হলেও তার জীবনের প্রথম ভালোবাসা রূপা যখন এভাবে নাই হয়ে গেলো তখন ও আর নিজেকে সামলে রাখতে পারছে না। প্রচন্ড কান্না পাচ্ছে। চোখ ভেঙে কান্না আসছে। আফরান কষ্টে মাথা নিচু করে যেইনা চোখের জল গুলো ছাড়বে ওমনি,

রূপাঃ কি হয়েছে আপনার?? এমন করে আছেন কেনো??

আফরান যেন ওর নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না। ঠাস করে মাথা তুলে অশ্রুসিক্ত নয়ন নিয়ে রূপার দিকে তাকায়। হ্যাঁ এতো সত্যিই ওর রূপা। আফরান বসা থেকে উঠে রূপার কাছে গিয়ে ওকে শক্ত করে ওর সাথে জড়িয়ে ধরে। রূপা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে। আফরান আর চোখের পানি ধরে রাখতে পারলো না। কাঁদো কণ্ঠে প্রশ্ন করলো,

আফরানঃ তুমি কোথায় গিয়েছিলে?? কতোক্ষন যাবত তোমাকে খুঁজছি। কোথায় গিয়েছিলে??

রূপাঃ না মানে আসলে একটু ওয়াশরুমে গিয়েছিলাম। খুঁজতে একটু দেরি হয়েছিলো তাই আসতে দেরি হলো।

আফরানঃ আমি কতটা ভয় পেয়েছি জানো?? ভেবেছি তোমাকে বুঝি হারিয়ে ফেললাম। কাঁদতে কাঁদতে।

রূপাঃ অাহ এভাবে কাঁদছেন কেন!! সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। আস্তে করে বলল।

আফরান আশেপাশে তাকিয়ে দেখে আসলেই সবাই তাকিয়ে তাকিয়ে মজা নিচ্ছে।

আফরানঃ আচ্ছা চলো এখান থেকে। আর এখানে বসবো না। হোটেলে গিয়ে লাঞ্চ করবো ওদের সাথে।

রূপাঃ আচ্ছা।

আফরান রূপার হাত শক্ত করে ধরে ওকে আগলে নিয়ে শপিং মল থেকে বেরিয়ে আসে। এসে গাড়ি নিয়ে চলে যায়। অবশ্য আফরানের নজর থেকে কিন্তু একটা বিষয় আড়াল হয়নি। আফরানরা যখন গাড়ির কাছে আসে তখন সেই ব্লাক কালারের গাড়িটা কিন্তু আর ছিলো না। বিষয়টা নরমাল হলেও কিছুটা রহস্যময়।

রূপা আফরানের দিকে তাকিয়ে আছে। এতো কঠিন লোকের চোখে ও আজ পানি দেখেছে৷ এই নোনা জল একান্ত ওর জন্য আর কারো জন্য না। এটা রূপা ভালো করেই বুঝেছে। রূপা ভাবছে, উনি কি আমাকে ভালোবেসে ফেলেছেন?? আমারও যে ওনাকে এই অল্প সময়ের মধ্যে অনেক ভালো লেগে গেছে। ওনার কেয়ার, ওনার স্পর্শ আমার অনেক ভালো লাগে। আমিও কি তাহলে তার ভালোবাসায় আটকে গেলাম?? কিন্তু এও কি সম্ভব। কিভাবে তাকে বাঁচাবো আমি?? আমিও তাকে…পারছি না। আমার কাজই আমি করতে পারছি না। আমি কি জবাব দিবো। কি করতে এসে কি হয়ে গেলো। ওনাকে ছাড়াতো আমি বাঁচতে পারবো না। কি করবো আমি। কিভাবে আমার কষ্ট আমি তাকে বুঝাবো?? কিভাবে?? রূপারও এখন কান্না পাচ্ছে এসব ভেবে। তাও নিজেকে সামলে নিয়ে পুরোটা পথ আফরানকে মন ভরে দেখতে দেখতে চলে আসলো। হয়তো আর নাও দেখতে পারে আফরানকে।

এরপর ওরা নেমে হোটেলে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে সবাই একসাথে লাঞ্চ করে একটা ঘুম দেয়। বিকেলে আফরানের ঘুম ভেঙে যায়। আফরান উঠে ফ্রেশ হয়ে রূপার কাছে যায়। রূপা এখনো ঘুমাচ্ছে৷ একদম ঘুম কুমারী ও। আফরান আস্তে করে রূপার একদম কাছে গিয়ে মাটিতে বসলো। রূপাকে খুব কাছ থেকে দেখছে ও। এই রূপাকে আজ হারিয়ে ফেলার জন্য কতো ভয়ই না পেয়েছে। আচ্ছা রূপা কি বুঝে না আমি ওকে ভালোবাসি। নাকি আমার বলার অপেক্ষায় আছে ও। ভালোবাসি বললেই কি ভালোবাসা প্রকাশ পায়?? বুঝে নিতে হয় রূপা। তুমি আমার এই যত্ন তোমাকে আগলে রাখা দ্বারা কি বুঝোনা আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি। ভালোবাসি রূপা অনেক ভালোবাসি। আফরান মনে মনে কথা গুলো বলল।

আফরান হাতে ভর দিয়ে রূপার দিকে তাকিয়ে আছে। রূপার মিষ্টি ঠোঁটটা ওকে খুব আর্কষন করছে। আফরানের খুব ইচ্ছে হচ্ছে একটু স্বাদ নিতে এই মিষ্টি ঠোঁটের। কিন্তু কিভাবে?? ও যদি জেগে যায়। তাহলে ও কি ভাববে। আফরান মনের অজান্তেই রূপার একদম কাছে চলে যায়। আফরানের উত্তেজিত ঘন গরম নিঃশ্বাস রূপার মুখের উপর পরছে। রূপার গোলাপি ঠোঁটটা যেন আফরানকেই আহ্বান করছে একটু ছুঁয়ে দিতে। আফরান কি করবে বুঝে উঠতে পারছে না। ভালোবাসার মানুষটা এরকম অপ্সরা হলে নিজের আবেগটাকে আটকে রাখা অনেক কঠিন হয়ে পরে। আফরান আজ আবেগের বসে ওর একান্ত নিজের ভালোবাসার মানুষটার ওই মিষ্টি স্বাদটা নিতে চায়। কি করবে কি করবে ভাবতে ভাবতে আফরান সে মিষ্টি নরম ঠোঁটে ওর পরশ বুলিয়ে দেয়। পরম আনন্দে সে পরশ উপভোগ করছে আফরান। আফরান এখন এক ঘোরের মধ্যে চলে গিয়েছে। কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার হলো রূপা ঘুম থেকে উঠছেনা। আফরানের সেদিকে খেয়াল নেই। সে বিপরীত পাশ থেকে কোনো সাড়া না পেলেও নিজ থেকে পরম আনন্দে পরশ বুলিয়ে যাচ্ছে। তবে রূপার ঘন নিঃশ্বাস আফরানকে আরো পাগল করে দিচ্ছিলো। দীর্ঘ ১০ মিনিট এই পরশ বুলিয়ে দেওয়ার পর এবার রূপা একটু নড়েচড়ে ওঠে। আফরানের এবার হুশ আসে। ঠাস করে রূপাকে ছেড়ে দেয়। লাল হয়ে গিয়েছে ঠোঁটটা রূপার। আফরান নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না ও এটা করলো। এখন রূপা ওকে কি ভাববে?? আচ্ছা রূপাতো এখনো ঘুমানো। ওকি কিচ্ছু টের পায়নি?? নাকি টের পেয়েও লজ্জায় ঘুমের ভান ধরে শুয়ে আছে। ওকে ডাক দি। আফরান মনে মনে এসব বলে রূপাকে ডাক দেয়৷

আফরানঃ রূপা… রূপা ওঠো।

রূপা আস্তে আস্তে করে চোখ মিলে তাকায়। দেখে আফরান ওর অনেক কাছে। আফরানের দিকে কেমন করে যেন তাকিয়ে আছে রূপা। আফরানের নিজেরই এখন লজ্জা লাগছে। একটু আগে যা করেছে তার জন্য এখন লজ্জিত ফিল হচ্ছে। আফরান রূপার লাল ভিজা ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে বলল,

আফরানঃ উঠে ফ্রেশ হয়ে নেও তোমাকে নিয়ে বিচে ঘুরতে যাবো। আমি বারান্দায় আছি।

রূপা মাথা নাড়িয়ে আচ্ছা বলে। আফরান বারান্দায় চলে যায়। আফরানের কাছে রূপাকে মাঝে মাঝে অন্যরকম লাগে। রূপাকে একটু আগে দেখে মনে হলো ও সবটা বুঝতে পেরেছে। ওর পরশ আমাকে পাগল করে দিচ্ছিলো। ওকে আমার সাড়া জীবনের জন্য চাই। ওর ভালোবাসা আর এই পরশ নিয়েই এই তিক্ত জীবনটা পাড় করতে চাই। কাল রূপাকে প্রপোজ করবো ডিরেক্ট বিয়ের জন্য। আমার বিশ্বাস ও কখনো না করবে না। হঠাৎ পিছন থেকে আফরানকে….

চলবে….

সবার কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি। অনেক ব্যস্ত তাই এই পর্বটা ছোট হলো। আর কেমন লেগেছে জানিয়েন কিন্তু।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে