সিক্রেট এজেন্ট পর্বঃ ০৫
– আবির খান
রুপা চুপচাপ শুয়ে পরে অন্যদিকে ফিরে। আফরানের মনে কেন জানি অনেক শান্তি লাগছে। ভালোবাসার মানুষটা একদম ওর কাছে। শুধু ছুতে পারছে না। এরপর আফরানও শুয়ে পরে। শুয়ে শুয়ে রূপার কথা ভাবতে ভাবতে একসময় ঘুমিয়ে পরে। কিন্তু হঠাৎ মধ্যেরাতে আফরান ঘুমটা কারো ডাকে ভেঙে যায়। আফরান ঘুম মাখা চোখে তাকিয়ে দেখে রূপা ওর চোখের সামনে ওর দিকে কেমন ভাবে যেন তাকিয়ে আছে। আফরান তাড়াতাড়ি লাফ দিয়ে উঠে বসে। হঠাৎ ওর কানে বজ্রপাতের শব্দ ভেসে। আফরান জানালার বাইরে তাকিয়ে আবার রূপার দিকে তাকালে দেখে রূপা ভয়ে চোখ বুঝে আছে।
আফরানঃ কি হয়েছে এভাবে করে আছো কেনো কোনো সমস্যা??? চিন্তিত কণ্ঠে।
রূপা অসহায়ের মতো মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে।
আফরানঃ কি হয়েছে বলো?? কোনো ভয় নেই। বলো আমাকে। অস্থির হয়ে।
রূপা মাথা নিচু করে বলে,
রূপাঃ আমার খুব ভয় করছিলো। বজ্রপাত আর তার শব্দ আমাকে অনেক ভয় দিচ্ছে। তাই ভয়ে ঘুমাতে পারছিনা। ভীতু গলায়।
আফরানঃ আচ্ছা বুঝলাম। তা এখন কি করবে?? না ঘুমিয়ে এভাবে বসে থাকবে???
আরেকটা বজ্রপাত হলো। রূপা অনেক ভয় পেলো। রূপা কাঁদো কণ্ঠে মাথা নিচু করে বলল,
রূপাঃ প্লিজ আমাকে একটু আপনার পাশে ঘুমাতে দিবেন?? মাঝে কোলবালিশ দিয়ে রেখেন। আমি ভুলেও ও পাশে যাবো না। লজ্জাসিক্ত কণ্ঠে।
রূপার কথা শুনে আফরান কি বলবে আর কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। মনের মানুষটা নিজ থেকে কাছে আসতে চাচ্ছে, না তো আফরান জীবনেও করবে না। কিন্তু রাতে যদি আবার কিছু হয়ে যায়। নাহ কিচ্ছু হবে না। আমি ওই পুরুষ না যে একটা বিপদগ্রস্ত মেয়ের সব লুটে নিবো। তার সমস্যা তার দুঃখ গুলো নিজের করে নেওয়াই আমার লক্ষ্য। নাহ ওকে সম্মতি দি আমার বিছানায় শুতে। আফরান এসব ভেবে রূপাকে বলল,
আফরানঃ আচ্ছা ঘুমাও। কোনো সমস্যা নেই। আমি তোমার কাছে যাবো না সিওর।
রূপাঃ আমি জানি বিষয়টা খুবই খারাপ। কিন্তু ওই খাটে একা কোনো ভাবেই ঘুম আসছিলো না। তাই আপনাকে ডিস্টার্ব করলাম। মাফ করবেন প্লিজ। আমার খুব ভয় করে বজ্রপাত। অসহায় ভাবে।
আফরান হাসি দিয়ে বলল,
আফরানঃ আচ্ছা বাবা হয়েছে তো। বুঝেছি সব আর বলতে হবে না। এবার শুয়ে পরো। আমি পাশে আছি সবসময়।
রূপাঃ ধন্যবাদ। আপনি সত্যিই অনেক ভালো।
এরপর মাঝে একটা কোলবালিশ দিয়ে আফরান অন্যদিকে আর রূপা অন্যদিকে ফিরে ঘুমিয়ে পরে। বাইরে প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে। সামনে শীত আসছে তাই এই বৃষ্টি। আফরানদের রুমটা অনেক ঠান্ডা হয়ে যায় বৃষ্টির কারণে। ওদের রুমের বড় জানালা বন্ধই ছিলো। শুধু বারান্দার দরজাটা খোলা ছিলো। সেখান থেকেই মধুর ঘ্রাণ যুক্ত মন মাতানো ঠান্ডা বাতাস এসে ওদের রুমে প্রবেশ করছে। এসময় অনুভূতিটা দারুণ হলেও সে অনুভূতিকে আফরান সাড়া না দিয়ে নিজের পুরুষত্বকে দামিয়ে রেখে একটা মেয়েকে সম্মান দেখিয়েছে। তাকে তার স্বাধীনতা দিয়েছে। তার ইচ্ছাকে গুরুত্ব দিয়েছে। এটাই আমাদের আফরান।
সকাল ৭.৩৪ মিনিট,
আফরানের মাথার উপর যে বড় জানালাটা আছে সেখানে থেকে বৃষ্টি শেষে মিষ্টি রোদ এসে আফরানের মুখের উপর পরে। আফরানের ঘুম ভেঙে যায়। চোখটা খুলে তাকিয়ে দেখে রুমটা রোদের আলোতে ঝলমল করছে। আফরান একটু নড়াচড়া করতে নিলেই নিজেকে কেমন বন্দী বন্দী লাগছে। মনে হচ্ছে কেউ শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে। এবার আফরান ওর ডান হাতটা দিয়ে ওর বুকের উপর হাত চালালে বেশ নরম কিছুর স্পর্শ পায়৷ হাত বুলিয়ে বুঝতে পারে এটা কারো হাত। কে হতে পারে?? আফরান আর না ভেবে মাথাটা নিচু করে তাকিয়ে দেখে রূপা আফরানকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বুকের উপর হাত রেখে ঘুমিয়ে আছে।
এই দৃশ্য আর অবস্থা দেখে আফরানের চোখদ্বয় ভয়ে আর লজ্জায় বড় বড় হয়ে যায়। এতো সাহসী মানুষ আফরান। সেই তার কপালে এখন ঘাম জমেছে। আফরান ভাবছে সে রূপার কাছে চলে গেছে। এখন কি হবে?? রূপাতো আফরানকে খারাপ ভাববে। আফরান এখন একদম পাথরের মতো শুয়ে আছে। ওর বিশ্বাসই হচ্ছে না ও এমন একটা কাজ করলো। আফরান ওর ডানে তাকিয়ে দেখে খাটের শেষ প্রান্তে ও। আবার বামে তাকিয়ে দেখে রূপার ওপাশটায় অনেক জায়গায় রয়েছে। তারমানে সীমানা পাড় করেছে রূপা আফরান না। আফরান সস্থির নিশ্বাস ফেলে। এখন আফরানের একটু ভালো লাগছে। একটু না অনেক বেশি ভালো লাগছে। মনের মানুষটা এখন আফরানের বুকের সাথে লেগে আছে। আফরানের কাছে এই মুহূর্তটা বেশ স্মরণিয় হয়ে যাচ্ছে৷ কি করবে বুঝতে পারছে না। আফরান দেখে রপার ঘনকালো চুলগুলো ওর মুখ ঢেকে রেখেছে। একটু যে দেখবে তার কোনো অবকাশ নেই। বেচারা আফরানের মনটা খারাপ হয়ে যায়। খুব ইচ্ছে হচ্ছে আঙুল দিয়ে দুষ্ট চুল গুলো কানের লতির পিছনে গুজে দেই। কিন্তু পরক্ষণেই মনে হয় যদি ও জেগে যায়। তাহলেতো বেশ লজ্জা পাবে। কি করবে কি করবে ভাবতে ভাবতে আফরান যেন নিজের সাথেই যুদ্ধ শুরু করে। শেষমেশ মন বিজয়ী হলো। আফরান আস্তে করে ওর ডান হাত দিয়ে রূপার মুখের উপর পরে থাকা চুল গুলো কানের পিছনে গুজে দেয়৷ এখন রূপার কপাল, চোখের বড় বড় পাপড়ি, সুন্দর নাক আর মিষ্টি ঠোঁটটা দেখা যাচ্ছে।
কিন্তু বলেনা যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই রাত পোহাতে হয়। ঠিক সেটাই হলো। আফরানের হাতের স্পর্শ পেয়ে রূপার ঘুম ভেঙে যায়। রূপা আস্তে করে চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে সে এক পুরুষের সাথে মিশে শুয়ে আছে। আফরানের হমদস্পন্দন ক্রমশ বেড়েই চলছে। রূপা ভয়ে ভয়ে আফরানের দিকে তাকায়। আফরানও রূপার চোখের দিকে তাকায়।
আফরান এবার রূপার মায়াবী মুখটা খুব স্পষ্ট দেখছে। মাত্র ঘুম থেকে উঠা রূপাকে যা লাগছে না। আফরান দেখলো রূপার ঠোঁটের নিচে একটা সুন্দর তিল আছে। সেই তিলটা যেন ওর রূপ আরো বাড়িয়ে দিচ্ছিলো। আফরান এরপর রূপার চোখের দিকে তাকায়। চোখ দুটো একদম মুক্তার মতো। কিন্তু এখন জ্বলজ্বল করছে। আফরান দেখে রূপা কাঁদো ভাবে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। আফরান একটু দুষ্টামি করার জন্য রূপাকে বলল,
আফরানঃ কি এখানে কি?? আমার সীমানায় ঢুকে পরেছেন দেখি। তাও আবার ঢুকে জায়গা দখল করে আছেন। মজা করে।
আফরান রূপাকে এটা বলে নিজেরই প্রচুর হাসি পাচ্ছে। রূপা অসহায়ভাবে আফরানের দিকে তাকিয়ে মাথা নিচু করে উঠে বসে। আফরানও উঠে বসে। আর বলে,
আফরানঃ আমি কিছু মনে করিনি। ঘুমের ঘোরে হয়তো এপাশে চলে এসেছো সমস্যা নেই। উঠে ফ্রেশ হয়ে নেও।
আফরান বলেই একটা হাসি দিয়ে উঠে ফ্রেশ হতে চলে যায় জামা নিয়ে৷ রূপা এখনো বিছানায় বসে আছে। ওর কাছে আফরানকে অন্য রকম লাগছে। সবার থেকে আলাদা আফরান। এতো সুযোগ পাওয়ার পরও আফরান রূপাকে স্পর্শ পর্যন্ত করেনি। আফরান এতো ভালো যে ওর ক্ষতি করা অসম্ভব। রূপা এসব ভাবতে ভাবতে বারান্দায় চলে যায়। আফরান ওকে ফ্রেশ হতে বলে নিজেই ফ্রেশ হতে চলে গেছে। এখন ও কি করে যাবে। তাই রূপা বারান্দায় দাঁড়িয়ে বিশাল সমুদ্রের সৌন্দর্য উপভোগ করছে। কিছুক্ষণ পর রূপা ওর পিছন থেকে কারো হাল্কা কাশির শব্দ শুনতে পেলো। রূপা পিছনে তাকিয়ে দেখে আফরান ট্রাউজার আর একটা টিশার্ট পরে তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছছে আর বলছে,
আফরানঃ আসলে সরি। আমি তোমাকে ফ্রেশ হতে বলে আমি নিজেই চলে গেলাম বোকার মতো। তোমাকে অপেক্ষা করতে হলো।
রূপা আস্তে করে বলল,
রূপাঃ না না কোনো সমস্যা নেই। আপনি আমার জন্য যা করছেন তাই অনেক। এতো কে করে বলুন??
আফরানঃ হুম। একটা কথা কি জানো??
রূপাঃ কি??
আফরানঃ এ দুনিয়ায় কেউ কারো স্বার্থ ছাড়া কারো সাহায্য করে নে। এই স্বার্থ কারো কাছে ভালো আবার কারো কাছে খারাপ।
রূপাঃ আপনার স্বার্থ কি তাহলে??
আফরানঃ আছে অবশ্য। তবে আজ বলবো না। অন্য আরেক দিন। আমি বাইরে যাচ্ছি। তুমি দরজা দিয়ে ফ্রেশ হয়ে বসো। আমি আসলে একসাথে নাস্তা খেয়ে শপিং এ যাবো।
রূপাঃ অামার কিছু লাগবে না প্লিজ।
আফরানঃ চুপ। যা বলছি তাই করো। আমি বাইরে যাচ্ছি দরজাটা দেও।
আফরান মাথা মুছে চুলটা আঁচড়ে নিয়ে যেই দরজাটা খুলে ওমনি ওর বাকি বন্ধুরা হুমড়ি খেয়ে রুমের ভিতরে এসে পরে। এ হাস্যকর দৃশ্য দেখে আফরান আর রূপা হেসে দেয়। আসলে ওরা বাইরে কান পেতে ভিতরে শুনার চেষ্টা করছিলো। অবশ্য আফরান তখন মুগ্ধ হয়ে শুধু রূপার হাসিই দেখছিলো। কাল থেকে আজ প্রথম রূপার হাসি দেখলো ও। প্রাণটা জুড়িয়ে গিয়েছে আফরানের। রূপা হাসতে হাসতে আফরানের চোখে চোখ পরতেই হাসি থামিয়ে মাথা নিচু করে অন্য দিকে তাকায়। আফরান ওর বন্ধুদের তুলে সবগুলোকে কান ধরে বাইরে নিয়ে যায়। বদের হাড্ডি গুলা মজা করছিলো। কি একটা অবস্থা। রূপা মিটিমিটি করে হাসতে হাসতে দরজা লাগিয়ে দিয়ে বিছানায় গিয়ে বসে। বসে ভাবতে থাকে,
রূপাঃ আমি কিভাবে?? ওনি খুবই ভালো একজন মানুষ। ওনাকে আমার মনে ধরেছে৷ কিন্তু… নাহ আর ভাবতে পারছি না৷ জানি না কতদিন।
রূপা এরপর ফ্রেশ হতে চলে যায়। অন্যদিকে আফরান বাইরে বন্ধুদের সাথে সবাইকে নিয়ে সালমানের রুমে যায়। সবাই একসাথে বসে আছে।
শামিমঃ মামা রাতের খবর কি হুম?? মজা করে।
আফরানঃ আরে ধুর আমি ওমন ছেলে নাকি??চুপচাপ ঘুমিয়েছি শুধু। (সকালের বিষয়টা লুকালো)
নিলয়ঃ আচ্ছা বাবা মানলাম।
মামুনঃ দোস্ত মিশনের কি হবে??
আফরানঃ সকালে স্পাই ম্যাসেজ দিলো যে কোনো একটা রহস্য ঘটছে। বাট কিছুই ধরা পরছে না। জাফর খান নাকি ওর সব ব্যবসা আর সিক্রেট আস্তানা গুলো বন্ধ করে দিয়েছে।
সবাইঃ বাহ তাহলেতো ভালো।
আফরানঃ কিন্তু ওদের ধরতে হবে। আমার স্পাই আমাকে আরেকটা খবর বলেছে।
রাফিঃ কি দোস্ত??
আফরানঃ আমি আগে সিওর হই তারপর তোদের বলবো। আচ্ছা শোন, রূপাকে আমি কদিন সময় দি। ওর মন জয় করতে পারি কিনা দেখি।
সবাইঃ হ্যাঁ হ্যাঁ দেখ। অবশ্যই পারবি তুই।
আফরানঃ হুম। মামুন আর সালমান তোরা দুজন সিক্রেট বেইসে যাবি গিয়ে সবটা একটু দেখে আসবি। আর কোনো ইনফরমেশন পাঠিয়েছে কিনা দেখে আসবি।
সালমানঃ ওকে দোস্ত।
আফরানঃ শোন আজ রূপাকে নিয়ে শপিং এ যাবো। তোরা যাবি??
রাফি কিছু বলতে নিলে সবাই ওকে থামিয়ে বলে,
সবাইঃ না না দোস্ত তোরা যা। আমরা গিয়ে কি করবো। বরং আমরা এদিকে মজা করবো নে।
আফরানঃ আচ্ছা। থ্যাংকস দোস্ত তোদের। চল এখন উঠি।
সবাইঃ হ্যাঁ।
আফরানঃ তোরা নিচে যা আমি রূপাকে নিয়ে আসছি।
সবাইঃ ওকে।
আফরানের বন্ধুরা সবাই নিচে নাস্তা করার জন্য চলে গেলো। আফরান ওর রুমের সামনে গিয়ে দরজায় নক করে। কিছুক্ষন পরই রূপা দরজা খুলে দেয়। রূপাকে দেখেতো আফরান হা করে আছে। ওর কিনে দেওয়া কালো একটা ড্রেস পরে আছে রূপা। মাথায় ওড়না দেওয়া। একদম বাংলার খাঁটি বউ। আফরানকে দেখে রূপা প্রশ্ন করলো,
রূপাঃ এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো?? আস্তে করে।
আফরান তাড়াতাড়ি নিজেকে সামলে বলে,
আফরানঃ সত্যিই তোমাকে আজ যা লাগছে না। চোখ ফিরানো যাচ্ছে না। সবচেয়ে ভালো লাগছে, এইযে মাথায় ওড়না দিয়েছো এটা। মনে হছে এই সাত সকালে রাতের চাঁদ আমার সামনে নেমে এসেছে।
রূপা আফরানের কথা শুনে লজ্জা পেয়ে ওর মুখ গোলাপি আভা লাভ করছে। রূপা আস্তে করে বলে,
রূপাঃ যাবেন না??
আফরান রূপার একটু কাছে এসে বলে,
আফরানঃ মনতো চাচ্ছিলো আজ সারাদিন তোমাকে দেখি। কিন্তু শপিং এ তো যেতেই হবে চলো। আগে নাস্তা করে তারপর যাবো।
রূপাঃ আচ্ছা।
এরপর আফরান রূপাকে আর সাথে ওর বন্ধুদের নিয়ে জমিয়ে নাস্তা করে বেড়িয়ে পরে শপিং মলের উদ্দেশ্য।
আফরান গাড়ি চালাচ্ছে রূপা জানালার বাইরে তাকিয়ে আছে। রূপাকে কেমন উদাসীন লাগছে। কি নিয়ে যেন ওকে বেশ চিন্তিত মনে হচ্ছে৷ আফরান গাড়ি চালাচ্ছে আর রূপাকে দেখছে। আফরান বুঝতে পারছে না এই চিন্তিত ভাবের কারণ কি। তাই আফরান বলল,
রূপাঃ কি হয়েছে কোনো সমস্যা??
আফরানের ডাকে যেন রূপা এ জগতে ফিরে এসেছে। রূপা একটু হেসে মাথা নাড়িয়ে না বলে। আফরানও কিঞ্চিৎ হেসে সামনে তাকিয়ে গাড়ি চালাচ্ছে। হঠাৎ ওর গাড়ির সাইট মিররে নজর যায়। আফরান দেখে একটা ব্লাক কালারের গাড়ি ওদের পিছনে পিছনে আসছে। আফরান গাড়ির গতি একটু বাড়িয়ে দিলো। ওই গাড়িটাও তার গতি বাড়ালো। আফরান এবার গাড়ির গতি একটু কমালো সাথে ওই গাড়িও গতি কমালো। আফরানের এখন সন্দেহ হচ্ছে। কিন্তু হঠাৎই আফরানকে অবাক করে গাড়িটা ফুল স্পিডে ওদের ক্রস করে সামনে চলে যায়। আর এক টানে অনেক দূর চলে যায়৷ আফরান হাপ ছেড়ে বাঁচে। কারণ ও চায়না রূপার কোনো ক্ষতি হোক। এরপর বাকিটা সময় দুজন দুজনের মাঝে চোখাচোখি করতে করতে শপিং মলে এসে পৌঁছায় ওরা।
শপিং মলে এসে আফরান রূপার হাত শক্ত করে ধরে পুরো মার্কেট ঘুরে ঘুরে অনেক কিছু কিনে দিলো রূপাকে। রূপাতো বেশ অবাক আফরানকে দেখে। কোনো ভাবেই রূপার হাত ছাড়ছে না। যেন মনে হয় রূপা ওর স্ত্রী। রূপা কিন্তু ব্যাপারটা বেশ উপভোগ করছে। আসলে করবেই বা না কেনো?? এত্তো হ্যান্ডসাম এবং ভালো মনের মানুষ ওর হাত ধরে আছে। রূপা কিছুটা হলেও আঁচ করতে পেরেছে যে আফরানের মনে ওর জন্য অন্যকিছু আছে৷ এমন কিছু অনুভূতি আছে যা সবার থেকে আলাদা। কিন্তু রূপা কি এই মানুষটাকে পাবে?? নাকি…রূপা আর ভাবতে পারছে না। অনেক শপিং শেষে রূপাকে নিয়ে একটা ফুড কোডে বসে আফরান। আফরান রূপাকে বলে,
আফরানঃ তুমি একটু এখানে বসো আমি এই শপিং ব্যাগ গুলো গাড়িতে রেখে আসি।
রূপা মাথা নাড়িয়ে আচ্ছা বলে।
আফরানঃ কোথাও যেও না কিন্তু।
রূপাঃ আচ্ছা।
আফরান শপিং ব্যাগগুলো নিয়ে সোজা আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং এ চলে গেলো। ব্যাগ গুলো গাড়িতে রেখে আফরান চলে যাবে ঠিক তখনই ওর নজর যায় একটা গাড়ির দিকে। হ্যাঁ সেই ব্লাক কালারের গাড়ি। কিন্তু এখানে?? হয়তো শপিং এ এসেছে। আফরান বেশি কিছু না ভেবে সোজা ফুড কোডে চলে যায়। কিন্তু এখানে এসে যেন আফরান বিশাল এক ধাক্কা খায়। ওর বুক সাথে সাথে শূন্য হয়ে যায়। মাথার ভিতর একশত একটা চিন্তা এসে ভীড় জমায়৷ কারণ রূপা এখানে নেই। আফরান পুরো শপিং মল খুঁজেও রূপাকে পেলো না। তাহলে রূপা কোথায়??…
চলবে….
সবার অনেক বেশি সাড়া চাই। আর কেমন লেগেছে জানিয়েন কিন্তু।