সাদা মেঘের আকাশ পর্ব-১৬+১৭

0
808

#সাদা_মেঘের_আকাশ
(১৬)
লেখক: হানিফ আহমেদ

আজ নিজের বাসায় তালা ভেঙে ঢুকতে হচ্ছে নাওশিনকে।
নাওশিন বাসার ভিতর ঢুকে কয়েক ফোটা চোখের জল ফেলল। এই সেই বাসা, যেখানে তার জন্ম। কিন্তু আজ সেই বাসায় ঢুকতে হয়েছে তালা ভেঙে। হায়রে দুনিয়া!
নাওশিন বাসার চারদিকে তাকিয়ে দেখছে। তার প্রিয় বাবার হাতে গড়া সুন্দরে মুড়ানো এই বাসাটি। কতো যত্নেই না বানিয়েছিলেন তিনি৷ কিন্তু বাসা আজ বাসার জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু বাসার মালিক আজ দুনিয়ায় নেই। মানুষ মাটির ঘরে থাকতে চায় না, তাদের প্রয়োজন বিশাল অট্টালিকা প্রয়োজন। চারদিকে তাকালে তো তাই দেখা যায়, কিন্তু অট্টালিকা থাকলেও এক সময় বিদায় নিতে হয় মানুষদের। মানুষগুলোর ঠাঁই হয় মাটির নিচেই।
কতো রাজাই তো অপচয়ে ছিলেন পারদর্শী। এইযে বিশাল বিশাল প্রাসাদ, আরো কতো কী তাদের পছন্দের। কিন্তু আজ তা শুধুই পরিত্যক্ত।
মানুষ সুন্দরে মুগ্ধ। তাই তো মানুষ জীবনের সবটা সময় কাটিয়ে দেয় সুন্দর খুঁজতেই। কিন্তু হায়! মুগ্ধতা তো মানুষের ভালো আচরণেও। সেই আচরণ সুন্দর করতে কখনো কাউকে অতোটা দেখা যায় না।
নাওশিন দীর্ঘশ্বাস নেয়। তাকে বাঁচতে হবে, এই স্মৃতিগুলো নিয়েই বাঁচতে হবে তাকে। নতুন করে সব শুরু করবে সে। কিন্তু সেই নতুনত্বে থাকবে না কোনো বাবা নামের মানুষ, থাকবে না কোনো মা নামের মানুষ।

আদিব তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে বাসা, কতোই না সুন্দর এই বাসা। কিন্তু আজ খুব নীরব। দেয়াল গুলো সাক্ষী কিছু ঘটনার। যা খুবই কষ্টদায়ক।
নাওশিন আমি আসি তাহলে।
নাওশিন বলল,
ভাইয়া আসবেন কিন্তু এই বোনটিকে দেখতে।
আদিব একটু এগিয়ে নাওশিনের কাছে এসে দাঁড়ায়। নাওশিনের ওড়না দিয়ে ঢাকা মাথায় নিজের হাত রেখে বলল,
আমরা সাত ভাই, ৭দিনে ৭জন আসবো। কতো মিল দেখেছো।
নাওশিন কিছু বলল না।
আদিব বিদায় নেয়।
আতিকা বেগম বেশ কিছুক্ষণ ধরে বাসার প্রতিটা জায়গা দেখছেন। নাওশিন তো নিজের বাসায় আসতে পেড়েছে। কিন্তু তিনি?
আতিকার ভিতরটা চিৎকার দিয়ে কান্না করছে আজ। মানুষ বলে শব্দ করে কান্নায় কেউ ম’রে না। কিন্তু ভিতরে ভিতরে কান্নায় মানুষ একটু একটু করে ম’রে যায়। আর সেই মৃ’ত্যু হয় ভিতরে থাকা মনের।
আতিকার চোখে আজ নিজের স্বামীর গড়া সেই বাসাটিই ভেসে উঠছে। যা দখল করে নিয়েছে আনিকের চাচারা। একটুও প্রতিবাদ করেন নি। কারণ তাদের ভাইকে যে মানুষগুলো খু’ন করেছে, ওই খু’নিরা যে নিজের আপন ভাই। তাহলে ওরা তো বাসা দখল করবেই।

নাওশিন তার বাবার রেখে যাওয়া সংসারটি আবারও সাজাবে। কিন্তু তার কাছে যে একটা টাকাও নাই। কি দিয়ে দাঁড়াবে সে? পড়ালেখাও জানে না অতো, যা জানে তা দিয়ে তো চাকরি করতে পারবে না। আর বয়সটাও মাত্র ১৬, কী ভাবে কী করবে এই বিষয় চিন্তা করে খুঁজে পাচ্ছে না নাওশিন।
নাওশিন রান্না ঘরে যায়। কেমন বিশ্রী গন্ধ আসছে। দেখতে পেলো বেশ কিছু জিনিশ পঁচে আছে।
নাওশিন সময় নিয়ে রান্নাঘর পরিষ্কার করল। আতিকাকে সে কোনো কাজ করতে দেয় নি। ছোট্ট করে একটি বাক্য শুধু বলেছে।
আপা আপনি শুধু বসে বসে দেখুন, এই ছোট্ট নাওশিন কীভাবে সংসারটি আবার জীবন্ত করে।
আতিকাও চুপচাপ শুনেছেন নাওশিনের কথা। কারণ আজ উনি খুব ক্লান্ত। দু তিনদিন যাক, তার পর না হয় নাওশিনকে সাহায্য করবেন।
নাওশিন অনেক সময় নিয়ে রান্নাঘরটি গুছিয়ে নেয়।
ঘরে চাল ছাড়া আর কিছু পায় নি নাওশিন। ফ্রিজ খুলে অল্প কিছু মাছ এবং মাং’স পায় নাওশিন। রান্নার যা প্রয়োজন তা আছে৷ নতুন করে কিনতে হবে অনেক কিছু, কিন্ত টাকা? নাওশিনের চোখ ভিজে যায়। সে টাকা কোথায় পাবে।
হেটে নিজের বাবার রুমে যায়। বাসায় আসার পর দীর্ঘক্ষণ পর সে এই প্রথম বাবার রুমে এসেছে। ভিতরটা কেঁদে উঠল তার, এই রুমেই তার বাবাকে খু’ন করা হয়েছিল। আর এই রুমেই তার স্বার্থপর মা নিজের দ্বিতীয় স্বামীকে নিয়ে থেকেছেন।
রুমটার চারদিকে তাকিয়ে দেখছে নাওশিন। তার বাবার রেখে যাওয়া সেই রুমটি যেন আগের মতো নাই। মনে হচ্ছে রুমটি কান্না করছে।
নাওশিনের মুখে হাসি ফুটে উঠে। কারণ সে সফল হয়েছে। তার খুব করে মনে ছিলো তার বাবা আলমারির চাবি কোথায় রাখতেন। তাই নাওশিনও সেই জায়গা দেখতে ইচ্ছা করল, তার স্বার্থপর মা ঠিক একই জায়গায় চাবি রেখেছেন। আলনাতে থাকা অনেক গুলো কাপড়ের মধ্যে একটি কাপড়ে সে চাবি খুঁজে পায়। তার বাবা বলতেন, ঘরে ডা’কাতের হানা পরলে, চাবি খুঁজতে খুঁজতে যেন সকাল হয়ে যায়। তাই আলনার কোনো কাপড়ে রেখে দিতেন চাবি।

নাওশিন আলমারি খুলে। আলমারির একটি অংশ ভরা কিছু গহনায়। এগুলো কী সব সোনা৷ তা সে বুঝতে পারছে না। আতিকাকে ডেকে আনে সে।
আপা এগুলো কী সব সোনা?
আতিকা বেশ কিছুক্ষণ হাতে নিয়ে দেখলেন।
সোনার গহনা গুলো আলাদা করলেন,
এইগুলো হলো সোনা। অন্যগুলো সোনার মতোই নকল গহনা।
নাওশিন বলল,
আপা এই সোনা বিক্রি করে আমরা অনেক দিন চলতে পারবো।
আতিকা কিছু বললেন না। নাওশিন আবারও বলল
আপা এখানে কতটুকু সোনা?
আতিকা আন্দাজে বললেন,
মনে তো হচ্ছে চার ভরির উপর হবে।
নাওশিন বলল,
তাহলে আমরা অনেক টাকা পাবো।
আতিকা এবার ধমক সুরে বললেন,
নিজের বাবার সংসার সাজাতে চাচ্ছিস, কিন্তু বাবার সোনা গুলো বিক্রি করে দিতে চাস কেন?
এই কথাটি শুনে নাওশিন চুপ হয়ে যায়। সত্যিই তো কেন সে এই সোনা বিক্রি করবে? কিন্তু চলবে কীভাবে? টাকা পাবে কোথায়।
আপা এগুলো যে আমার আব্বার সোনা, আমি বুঝব কীভাবে?
আরে পা’গলী কোনো খু’নী কখনো তার স্ত্রীকে সোনা উপহার দেয় না। ওই যে বললাম না, দেখতে সোনার মতো। কিন্তু নকল। ওইগুলো আনিছুর দিয়েছে। কারণ ওগুলো নকল। কিন্তু অবুঝ মহিলা বুঝল না।
নাওশিন আতিকার কথা চোখ বন্ধ করেই বিশ্বাস করে নেয়৷ কারণ কোনো খা’রাপ মানুষ কীভাবে নিজের স্ত্রীকে সোনা উপহার দিয়ে টাকা খরচ করতে চাইবে?
নাওশিন আলমারি খুঁজে অনেক টাকা পায়।
সব টাকা সে আর আতিকা গুনে। সব মিলে ৮৯হাজার টাকা। নাওশিনের মনটা মুহূর্তে ভালো হয়ে যায়। আতিকাও হাসলেন। আর বললেন,
আরো খুঁজে দেখ, পাস কি না।
নাওশিন খুঁজতে থাকে। আরো কয়েক হাজার টাকা পায়। সব মিলে ৯৪হাজার টাকা।
এই টাকায় অনেক দিন চলে যাবে দুজনের। লোভী দুই ব্যক্তির টাকা।
লোভী শব্দটি নাওশিনের মনে আসতেই মুচকি হাসে।
এই পৃথিবীতে লোভী মানুষের অভাব নাই। কিন্তু ওই মানুষ গুলোর জ্ঞানের ভীষণ অভাব। লোভ মানুষের জ্ঞান খেয়ে ফেলে। লোভ হলো সাপের মতো। সাপ সামনে যতো বড় প্রাণীই দেখুক না কেন, সে সেটা খেতে চাইবেই। লোভও তেমন, লোভ চিনে শুধু বড় আর বড়। তাদের চোখে ছোট বলতে কিছু নাই। কিন্তু মানুষ ভুলে যায়। লোভ মানুষকে শান্তিতে বাঁচতে দেয় না। এই যে তার স্বার্থপর মায়ের আলমারি ভরা শাড়ি। এটা ওটার ফাঁকে ফাঁকে টাকা। কিন্তু আজ সেই মানুষটি জেলে। সত্যিই লোভ মানুষকে বেশি পাওয়ার আশা দেখিয়ে ধ্বংস করে ফেলে। আপনার মুরগি ডিম দেয়, বেশ কয়েক টাকা পেয়ে যাচ্ছেন হালি হালি ডিব বিক্রি করে৷ হঠাৎ কোভ হলো মাং’স খাওয়ার, তখন ঘরের মুরগিকেই খেয়ে নিলেন ডিম দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়৷ এই লোভ কিন্তু ভালো৷ খা’রাপ লোভ এটি নয়।
এই মুরগি যদি অন্যের হতো, আর সেটা আপনি চুরি করতেন। তাহলেই এই লোভ হতো খা’রাপ।

৬টা মাস কেটে যায়। আজ নাওশিন দাঁড়িয়ে আছে এমন একজন মানুষের সামনে, যেই মানুষটি তার গর্ভধারিণী মা। কয়েক মিনিটের জন্য দেখা করার সুযোগ পেয়েছে নাওশিন।
তার একটুও খা’রাপ লাগছে না উনাকে দেখে।
কারণ একজন খু’নিকে দেখে সে একটুও মন খা’রাপ করবে না। কার জন্য করবে? যে তার বাবার খু’নি।
নাওশিনকে জিজ্ঞেস করকেন সাজেদা।
কেমন আছিস মা?
এমন বাক্য শুনে নাওশিন হেসে দিলো।
এমন ভাক্য আপনার মুখে খুবই বেমানান। হ্যাঁ আমি ভালো আছি। আমার আব্বার খু’নির এই অবস্থা দেখে আজ আমার মনটা খুব ভালো।
সাজেদা বেগম ম’রা চোখে তাকিয়ে আছেন। কিছু বললেন না। নিজের ভাগ্যের দিকে তাকিয়ে সব মেনে নিলেন তিনি।
জানেন? আপনার ওই চোখে আমি এক সময় ভালোবাসা দেখতাম। তারপর দেখলাম আমার মৃ’ত্যু, আজ দেখতেছি আপনার চোখটাই আজ মৃ’ত।
সাজেদা বললেন,
মারে আমায় ক্ষমা করে দিস।
নাওশিন কিছু বলতে চাওয়ার পূর্বেই একজন পুলিশ বলে উঠলেন,
আপনার আরো সাত মিনিট আছে।
নাওশিন তাকায়,
ক্ষমা? কী ছিলো আমার আব্বার দোষ? আমার কী দোষ ছিলো? এতো অ’ত্যাচার। কতো আর্তনাদ করেছিলাম। কিন্তু আপনি শুনেন নি। আজ ক্ষমা চাচ্ছেন? হ্যাঁ আমি ক্ষমা করে দিয়েছি আপনাকে। তবে আইন আপনাকে তো ক্ষমা করবে না।
কয়েক মিনিট থাকা সত্ত্বেও নাওশিন বিদায় নেওয়ার জন্য পিছন ফিরতে চায়, তবে আবারও স্থির হয়ে দাঁড়ায়।
আমি আপনার ফাঁ’সির অপেক্ষা করছি। আমাকে এতিম করা মানুষটির ফাঁ’সি হোক।
সাজেদা চোখে আসা জল মুছলেন না। অতীত মনে করে সারাক্ষণ ভীষণ কষ্টে থাকেন। কিন্তু এই কষ্ট কেউ দেখে না৷ কেউ দেখতেও চায় না।
নাওশিন একজন অপরিচিত মানুষের সামনে দাঁড়ায়।
সালাম দেয়।
উনি সালামের উত্তর দিলেন।
আপনার জন্য দোয়া করি৷ যদিও আপনি খু’নি। তবুও মন থেকে চাই আপনার যেন ফাঁ’সি না হয়।
আমিনা হাসলেন, কিন্তু সামনে থাকা নাওশিনকে চিনলেন না।
আমি হলাম নাওশিন আনবার। আপনার ওই খা’রাপ স্বামীর দ্বিতীয় স্ত্রীর প্রথম স্বামীর মেয়ে। কতো কঠিন না শব্দ গুলো?
আমিনা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছেন নাওশিনের দিকে। বায়েজিদ এর মুখে নাওশিনের কথা শুনেছেন। কিন্তু কখনো দেখতে পান নি।
নাওশিন বলল,
আপনি সত্যিই একজন প্রতিবাদী নারী। আমার সার্থক হতো আমি যদি আপনার গর্ভে হতাম। আর আপনি যদি আমার বাবার স্ত্রী হতেন।
আমিনা শুধু বললেন,
মাঝেমধ্যে তুমি আমার ছেলে মেয়ে দুটোকে দেখে রেখো। ওরা খুব অসহায়।
আমিনা নিজের বাসার ঠিকানা নাওশিনকে বলে দিয়েছেন। নাওশিন বিদায় নেয়।
অনেক অপরাধীর ভীড় থেকে সে বের হয়ে এসেছে।

চলবে,,,

#সাদা_মেঘের_আকাশ
(১৭)
লেখক: হানিফ আহমেদ

এখন নাওশিনের বয়স আঠারো বছর এক মাস। নাওশিন আরো সুন্দর হয়েছে। অতীতের সৌন্দর্যের থেকে তার সৌন্দর্য আরো অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। সুন্দর এমন একটি শব্দ, যা দিন দিন বৃদ্ধি পায়। তাইতো মানুষ সুন্দরের এতো ভক্ত।
সে তার বাবার এই বাসাটিকেও নিজের মতো সুন্দর রূপ দিয়েছে।
নাওশিন মাস শেষে ১২হাজার টাকা পায়। এই টাকায় তার এবং আতিকার জীবন সুন্দর ভাবেই চলছে।
আদিব নিজের পরিবার থেকে মাস শেষে ১২হাজার টাকা নাওশিনকে দেয়। নাওশিন ততোদিন টাকা নেয় নি। যতোদিন তার কাছে আলমারিতে পাওয়া সেই টাকা গুলো ছিলো। টাকা শেষ হওয়ার পর যখন নাওশিন চাকরি করতে চায়, কিন্তু কোনো চাকরি পাচ্ছিল না। নাওশিন চাকরি খুঁজছে, এই খবর আদিব সহ তার পরিবারের সবাই শুনে খুব রাগ দেখায়।
আদিব মাস শেষে ১২হাজার টাকা দিবে এটা বলেছে। সপ্তাহ শেষে বাজার করে দিবে।
কিন্তু নাওশিন চায় কিছু করতে৷ সব শেষে সে আদিবের কথায় রাজি হয়। রাজি না হলে ওরা কষ্ট পাবে। এই দিকে তার এই সুন্দর জীবন ওদের জন্যই পাওয়া। তাই সে রাজি হয়।
আদিব সহ তার পাঁচ ভাই দুই হাজার টাকা করে মোট বারো হাজার টাকা নাওশিনকে দেয়। নিয়াজও চাকরি করে, সেও নাওশিনকে টাকা দেয়। সাইফ শুধু কোনো চাকরি করে না।
নাওশিন এই টাকা থেকে অল্প কিছু হলেও জমায়। কারণ দুজনের এতো টাকা লাগে না, সুন্দর ভাবেই এই টাকায় তারা চলতে পারে।

আতিকা বসে বসে সবজি কা’টছিলেন, নাওশিন এসে পাশে বসে উনার।
আপা এখন আবার সবজি কেন?
আদিব আসবে, তাই তরকারি রান্না করতে হবে।
নাওশিন কিছু বলল না। সে বসে বসে উনার কাজ দেখছে। একটি মৃ’ত সংসারকে এতো সুন্দর ভাবে জীবন্ত নাওশিন একা করে নি। আতিকা তাকে সাহায্য করেছেন। একটি সংসার কীভাবে সাজাতে হয় সেটা তাকে দেখিয়ে দিয়েছেন।
আপা বছরের পর বছর চলে যায়, কিন্তু অপরাধীদের কোনো শাস্তি হয় না কেন?
নাওশিনের প্রশ্ন শুনে তিনি সবজি গুলো হাত থেকে রেখে বললেন,
এক মিনিটে মানুষ খু’ন করার মতো অপরাধ করা যায় রে নাওশিন। কিন্তু সেই অপরাধে অপরাধীর শাস্তি হতে হতে কয়েক বছর চলে যায়।
নাওশিন দীর্ঘশ্বাস নিলো। সত্যিই তো।
আপা আমি শুনেছি, চৌধুরী পরিবারের কম বয়সী পুরুষদের কয়দিন পূর্বেই ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। ওরা নাকি এসবের সাথে জড়িত না।
আতিকা চুপ থাকলেন। খবরটি তিনিও শুনেছেন আদিবের মুখে। ৫জনকে আইনের মাধ্যমে ছাড়িয়েছে চৌধুরী পরিবারের মানুষগুলো। এই পাঁচজন শুধুই যুবক যাদের বয়স ২৬ বা ২৭ হবে। কিন্তু অন্য কাউকেই ছাড়েনি পুলিশ। এই পাঁচজন কোনো খা’রাপ কাজের সাথে জড়িত, এরকম কোনো প্রমাণ পায় নি পুলিশ৷ অন্যরা অপরাধী, সেটা তারা স্বীকার করেছে পুলিশের অ’ত্যাচারে।

রাতের খাবার খেয়ে যেতেই হবে আদিবকে। কোনো ভাবেই ছাড়তে রাজি না আতিকা এবং নাওশিন। আদিবও এতো জোরাজুরিতে রাজি হয়। কারণ সে এসেছে একটি প্রস্তাব নিয়ে। সেটা রাতে খাবার টেবিলেই বলবে বলে ঠিক করেছে সে।
বিকেল থেকে অনেক গল্প করে আদিব ওদের সাথে। তাদের দিনগুলো এখন খুব সুন্দর। স্বাধীন ভাবে চলতে পারে তারা। পূর্বের মতো মনে আর ভয় নেই, নেই কোনো শত্রু। এরকম জীবন তো চায় সবাই। কিন্তু জীবন হলো একটি যু’দ্ধের ময়দান। এই ময়দানে জয়ী না হওয়া পর্যন্ত সুখ স্পর্শ করা যায় না। জীবন তার ধাপে ধাপে এগিয়ে যেতেই ব্যস্ত থাকবে, আমাদের কাজ করতে হবে সেই ধাপগুলোতে, যেন ধাপগুলো হয় খুব সুন্দর।
প্লেটে ভাত নড়াচড়া করছে আদিব। আজ কোনো এক ফাঁকে আতিকাকে মনের কথা বলেছে আদিব। এখন নাওশিনকে বলা প্রয়োজন।
আদিব বলল,

নাওশিন তোমায় কিছু বলতে চাই আমি।

নাওশিন মুখের ভিতর ভাত রেখেই বলল,
ভাইয়া ভাত খেয়ে নেই আমরা। তারপর চা খেয়ে খেয়ে আপনার কথা শুনবো।
আদিব কিছু বলল না। নিজের খাবারের দিকে মন দেয় সে।

নাওশিন তিন কাপ চা নিয়ে এসে বসে ওদের সাথে।
আদিব চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বলল,

নাওশিন আমি চাই তোমাকে নিয়াজের বউ বানিয়ে আমাদের বাসায় নিয়ে যেতে।

হঠাৎ এমন কথা শুনে নাওশিন খুব অবাক হয়। এমন কথা কখনো সে কল্পনাতেও নিয়ে আসেনি। নাওশিন কিছু বলল না, ধোঁয়া উঠা চায়ে নিজের মনের মতো চুমুক দিতে থাকে নাওশিন।
আদিব আতিকার দিকে তাকায়। আতিকা ইশার দিলেন, সে যেন আবার এই কথা নাওশিনকে বলে।
আদিব বলল,
নাওশিন আমি কিছু বলছি তোমায়?
নাওশিন চায়ের কাপ হাত থেকে রাখতে রাখতে বলল,
কী বলেছেন ভাইয়া?
বাব্বাহ, তুমি তো দেখি খাওয়ার সময় খাবারের দিকেই খুব মন দাও।
আদিব কথাটি বলে হেসে দেয়।
নাওশিন চুপ হয়ে বসে আছে। সে আজ লজ্জা পাচ্ছে। আদিব বলল,

নাওশিন তোমাকে নিয়াজের বউ বানাতে চাই। আমাদের সবার মত আছে তোমাকে নিয়াজের বউ বানাতে।

নাওশিন ছোট্ট করে প্রশ্ন করল।

নিয়াজ ভাইয়ার মত?

নিয়াজেরও মত আছে। প্রথমে না করলেও সবার কথায় সে রাজি হয়। এখন তোমার মতামত শুনতেই আজ আমি এসেছি।

নাওশিন নিচের দিকে তাকিয়ে বলল,
ভাইয়া আমি বিয়ে করব না। আমি এভাবেই থাকতে পারবো। এভাবে একা এখন খুব ভালো লাগে।
আদিব একটু সময় চুপ থেকে বলল,
তুমি একা?
হ্যাঁ ভাইয়া, আমি একা খুব একাকীত্ব জীবন আমার। এভাবেই জীবন কাটিয়ে দিতে পারবো আমি।
আদিব হেসে বলল,
তাহলে আতিকা আপা?
নাওশিন চুপ থাকে। আদিব বলল,
আপা তোমার সাথে থাকেন, তবুও বলছ তুমি একা।
ভাইয়া আপাও আমার মতো একাকীত্বের সঙ্গী। আমিও আপার মতো এভাবেই থাকতে চাই।
আদিব হাসলো নাওশিনের কথায়। আর বলল,

নাওশিন এটা একাকীত্ব না। তোমার মতো লক্ষ লক্ষ মানুষ বলে তারা একা, খুব একা। কিন্তু তারা কখনো একা না। আমরা একাকীত্ব বলতে বুঝি সবার মধ্যে থাকা, চলাফেরা করা, কথা বলা, কিন্তু দিন শেষে বলি আমি একা খুব একা, আমাকে একাকীত্ব খুব আপন করে নিয়েছে। কিন্তু এই কথা কোনো ভাবেই সত্য না।
তুমি বছরের পর বছর একা বেঁচে থাকতে পারবে না। একটু একটু করে হারিয়ে যাবে। একাকীত্ব জীবন ভাবতে হবে এমন। যে লোকালয়ে থাকে না। বছরের পর বছর মানুষের দেখা পায় না। সেটাই একাকীত্ব নাওশিন। এই যে তুমি আমাদের দেখতে পারছো। ঘুমানোর পূর্বে আপাকে দেখতে পাও, ঘুম থেকে উঠে আপাকে দেখতে পাও। তুমি কখনো একা না। কিন্তু নিজেকে একা দাবি করছ। মানুষের ভীড়ে মানুষ বসবাস করে কখনো একা হয় না নাওশিন। হয়তো একাকীত্বের অভিনয় করে। আশেপাশে এতো মানুষ থাকার পরেও কেউ যদি বলে সে একা তাহলে তা কেউ বিশ্বাস করবে না।

নাওশিন চুপ থাকে। কিছুই বলল না সে। তার মনের মধ্যে একাকীত্ব বলতে ভিন্ন কিছু। সবার মধ্যে থেকেও একা মনে হওয়াই একাকীত্ব। আপনদের ভীড়ে থেকেও মানুষ খুব একা অনুভব করে নিজেকে।
আদিব আবার বলল,

সবাই চায় তুমি নিয়াজের স্ত্রী হও। তোমারও কোনো পুরুষের প্রয়োজন নাওশিন। তোমার জীবন আরো সুন্দর হবে যখন তুমি একজন বিবাহিত নারী হবে। কারো উপর ভরসা করতে পারবে। মাথার উপর একটি সুন্দর আকাশ পাবে। কেউ তোমায় ভালোবাসবে। তার দুনিয়া বানাবে তোমায়। এই দুনিয়ায় খা’রাপ সময়ে এগিয়ে আসা মানুষটি তোমার স্বামীই হবে নাওশিন। এই যে তুমি বলছ তুমি একা। এই কথা বলতে পারছো, কারণ তোমার জীবনটা এখনো পূর্ণতা পায় নি। বিয়ের মাধ্যমে তুমি নিজেকে আরো পূর্ণতা দিতে পারবে নাওশিন।

নাওশিন এতো কথার উপরে শুধু একটি কথাই বলল,

নিয়াজ ভাইয়া খুব রাগী। উনার খুব রাগ। চোখের দিকে তাকানো যায় না।

আদিব আর আতিকা দুজনেই হেসে দেয় নাওশিনের কথা শুনে। আতিকা হেসেই বললেন

তুই জানিস আমি কতোটা রাগী ছিলাম। কিন্তু আনিকের বাবা আমার রাগকে জয় করেছেন। বিয়ের পর একজন মানুষ অনেকটা পরিবর্তন হয়ে যায় রে নাওশিন। যেই মেয়ে বাবার বাড়ি সারাক্ষণ হৈচৈ করে, খাবার খেতে অমনোযোগী থাকে। সেই মেয়েই স্বামীর বাড়ি হয়ে উঠে খুব শান্তশিষ্ট । খাবারে অমনোযোগী থাকা মেয়েটা খুব মনোযোগী হয়ে যায় স্বামীর বাড়ির প্রতিটা মানুষের খাবারের প্রতি। যেই মেয়ে অল্পতে রেগে যেত, সেই মেয়ে একসময় ভুলে যায় রাগ কী। রাগ শব্দের পরিবর্তন আছে, আর সেটা হলো নতুনত্ব। নতুনত্ব এর স্বাদ পেলে মানুষ পরিবর্তন হয়। তখন মানুষের সব কিছুই পরিবর্তন হয়।
একজন ছেলে বেপরোয়া থাকে। বাবার পকেটের টাকা উড়ানোই তার কাজ। খাবার না পেলে মাথা গরম করে ফেলে। একটি ছেলে যতক্ষণ একা থাকে ততক্ষণ সে খুব রাগী, মনে করে এসবই তার সব।
কিন্তু সেই ছেলেও পরিবর্তন হয়। পরিবার নিয়ে ভাবে। স্ত্রীকে নিয়ে ভাবে। বাবার টাকা উড়ানো ছেড়ে দিয়ে কীভাবে সেই পকেটে আরো বেশি টাকা রাখা যায় সেটাই চিন্তা করে। বেপরোয়া ছেলেটি হয়ে উঠে একজন দ্বায়িত্বশীল পুরুষ। এতো দ্বায়িত্বের ঠেলায় ভুলে যায় রাগ কী।
নিয়াজকে তুই রাগী বলছিস। দেখবি বিয়ের পর তার রাগ উধাও। কারণ মানুষ যখন পরিবর্তন হয়, তখন অনেক কিছু পরিবর্তন করে।

নাওশিন চুপ। সে কোনো ভাবেই বলতে পারছে না তার মা বাবার কথা। একটি ধাক্কা তো সে খেয়েছে। বিয়ে শব্দে তার এতো মনযোগ নাই। ঘৃণা জন্মেছে তার। এতো ভালোবাসা এতো এতো ভালোবাসা। কিন্তু শেষে যদি হয় সেই ভালোবাসার খু’ন তাহলে কী হবে একটি বিয়ে নামক সম্পর্কে নিজেকে গেঁথে।
নাওশিন বলল,

আমি বিয়ে করতে পারবো না ভাইয়া। চোখের সামনে আমি আমার আব্বার লা’শ এখনো দেখতে পাই। উনিও তো বিবাহিত ছিলেন। আম্মা এতো ভালোবাসা পেয়েও খা’রাপ সম্পর্কে জড়িয়েছেন। আব্বাকে উনার প্রেমিক খু’ন করেছে উনার সামনে। এতো সব দেখে বিয়ে শব্দের প্রতি আমার ঘৃণা জন্মেছে অনেক পূর্বেই। আমি পারবো না বিয়ে শব্দে নিজেকে আবদ্ধ করতে।

আদিব এতক্ষণে বুঝতে পারছে মূল কারণটি। আদিব বলল,

দু একটা সম্পর্ক দেখে কী এমন ডিসিশন নেওয়া ঠিক নাওশিন? তুমি তোমার বাবা মায়ের সম্পর্কটাই দেখেছো৷ এই পৃথিবীতে কী আর কারো বিবাহ জীবন সুখে যাচ্ছে না? তুমি আমাদের দিকে তাকাও। আমরা পাঁচটা ভাই বিবাহিত। কোথাও দেখেছো আমাদের মধ্যে খা’রাপ কিছু। এই পৃথিবীতে বিয়ে শব্দ যেমন আছে, তেমন ভাঙা একটি শব্দও আছে। কয়টা সম্পর্ক ভাঙে? দুই একটা কারণে একটি শব্দের প্রতি ঘৃণা জন্মে যাওয়া ঠিক না নাওশিন।
তুমি চোখ হাটিয়ে দেখো, এই বিয়েতে কতো মধুর সম্পর্ক। বিয়েতে যদি শুধুই কষ্ট থাকতো, তাহলে কী কেউ বিয়ে করত? নাওশিন তুমি বড় হয়েছো। বুঝতে তো অনেক পূর্বে শিখেছো। কিন্তু আজ এই কথাটি তুমি অবুঝের মতো বললে। এভাবে কখনো জীবন চলে না নাওশিন। মানুষ ধাক্কা খায় আবার ঘুরে দাঁড়ায়। তুমি বিয়ের মধ্যে নিজেকে জড়িয়ে দেখো না কতোই না সুখ তাতে।

নাওশিন চুপ থাকে। এই বিয়ের প্রতি তার বিশ্বাস নেই।
নাওশিন না শব্দতেই থাকে। আতিকা কিংবা আদিব তাকে রাজি করাতে পারেন নি।
আদিব শুধু বলল,
নাওশিন বোন আমার ঠান্ডা মাথায় ভাবো। ভাবনার পূর্বে নিজের চোখের সামনে যতোগুলো ভালো সম্পর্ক দেখেছো, সেগুলো চোখের সামনে রেখে ভাবো। আমরা তোমার উত্তরের অপেক্ষায় থাকবো।

আদিব কথাটি বলে মনের মধ্যে চাপা কষ্ট রেখে বিদায় নেয়। রাত তখন ১০টা বাজে। আতিকা বুঝতে পেরেছেন আজ আদিব খুব কষ্ট পেয়েছে। মনে জোর নিয়েই এসেছিল। কিন্তু নাওশিন সেই মন ভেঙে দিয়েছে।

নাওশিন বসে আছে, সে ভাবছে। তার কী করা উচিত? বিয়ে, সে তো এটাই ভেবেছে কখনো বিয়ে করবে না। না শব্দটি তো বলেই দিয়েছে। বিয়ে নিয়ে অন্তত ভাবতে চায় না সে।

সকালের আলো ফুটেছে। পাখির কিচিরমিচির শব্দে নিয়াজের ঘুম ভেঙেছে। তার সাথে এখনো আদিবের সাক্ষাৎ হয় নি। আদিব বাসায় ফিরার অনেক পূর্বেই সে ঘুমিয়ে গিয়েছিল।
নাওশিনকে যখন তার বউ বানানোর কথা সবাই বলেছিল। তখন সে খুব অবাক হয়েছিল। নাওশিনকে নিয়ে এতোটা ভাবেনি সে, বাসায় যখন ছিলো নাওশিন। তখন দু একবার তার মনে এসেছিল নাওশিনকে নিয়ে রূপকথার আকাশে উড়াল দিতে। কিন্তু সেটা ভাবনা পর্যন্তই রেখেছিল। কিন্তু সবার কথা শুনে কোনো ভাবেই রাজি হচ্ছিল না। কারণ নাওশিনের কেউ নাই। এটাই বলেছিল সে। কিন্তু তার ভাইগুলোর একটিই কথা।
নিয়াজ তুই আমাদের ভাই হয়ে কীভাবে বলতে পারলি নাওশিনের কেউ নাই। আমাদের কে আছে বল? আমাদের পরিবারকে যারা হ’ত্যা করেছে, নাওশিনের বাবাকেও তো তারাই করেছে। তোর কাছে অন্তত এই কথা শুনতে চাই নি। নাওশিনের ছয় ছয়টা ভাই আছে। আমরা ওর ভাই, আর তুই হবি ওর স্বামী।
নিয়াজ এই কথাগুলোর উত্তরে শুধু বলছিল, আচ্ছা আমি রাজি।
সকালের সুন্দর আকাশের দিকে তাকিয়ে নিয়াজ ভাবতেছে৷ নাওশিনকে কল্পনায় আঁকার চেষ্টা করতে চাচ্ছে। কিন্তু সে নিজের রুম থেকে বের হয়ে ড্রয়িং রুমে যায়। আর মনে মনে ভাবলো, মনকে এতো ক্লান্ত না করে একবারে বিয়ে করাই ভালো।

ভাইয়ের মুখে নাওশিন রাজি না, শব্দটি শুনে নিয়াজ খুব অবাক হয়। আদিব নিজের ভাইয়ের মুখপানে তাকিয়ে দেখলো। না তার ভাই আজ রাগে নি। শুধু অবাক হয়েছে।
ভাইয়া নাওশিন রাজি না?
আদিব বলল,
ও বলছে তোর খুব রাগ। তোর চোখের দিকে সে তাকাতেই পারে না।
নিয়াজ এবার হেসে দেয়। ভাইয়ের পাশে নিজের মিনহাকে দেখে তার দিকেই তাকিয়ে বলল,
বুঝলে ভাবি। তোমার বর বুঝল না, নাওশিন যে রাজি। বড় ভাইকে কীভাবে বলবে আমি রাজি। তাই আমার রাগকেই দেখালো। আমাকে নিয়ে কখনো ভেবেছে বলেই তো রাগটা তার মনের মধ্যে গেঁথে আছে। ভাবি তোমরা কথা বলে দেইখো, ঝর্ণার পানির মতো গড়গড়িয়ে বলে দিবে আমি রাজি।

কথাটি বলে কেমন এক লজ্জা মাখা মুখে সে বিদায় নেয়।
মিনহা স্বামীর দিকে তাকায়।
সব সত্যটা শুনলে হয়তো নিয়াজ কষ্ট পেতো তাই না?
আদিব মাথা নাড়ায়।
আচ্ছা শুনো, ও কী সত্যিই রাজি হবে না?
আদিব চুপ থাকে।
মন খা’রাপ করে থেকো না। দেখবে ও ঠিকই রাজি হবে। ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে যখন পেরেছে। সেই ধাক্কাটাও ভুলতে পারবে।
আদিব কিছুই বলল না। সে তার ভাইয়ের কথা ভাবতেছে৷ হয়তো সে নাওশিনকে নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে। এখন যদি কষ্ট পায়, তাহলে এসবের জন্য আদিব সহ তার সব ভাই ভাইয়ের বউ দায়ী।
নাওশিন কীভাবে থাকবে বিয়ে ছাড়া। এভাবে নিজের মনের কথা বলে দেওয়ার পূর্বে হাজারো বিয়ের সম্পর্ক দেখা উচিৎ ছিলো তার।
আদিব চুপ করে বসে শুধুই ভাবছে, নাওশিন কী বিয়েতে হ্যাঁ বলবে না?

চলবে,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে