সম্পৃক্ততা পর্ব ৬

0
631

সম্পৃক্ততা – ষষ্ঠ পর্ব।

রিফাত হোসেন।

১৪.
বাস্তবতার যদি মানুষের করুণ আকুতি বুঝার ক্ষমতা থাকতো, তাহলে আজ কারোর প্রেম হারিয়ে যেতো না। পৃথিবীতে যত প্রেম ছিল, সব পূর্ণতা পেতো। কিন্তু
প্রেমিক-প্রেমিকাদের দূর্ভাগ্য এটাই যে, তাঁদের প্রেম বারবার হেরে যায় বাস্তবতার কাছে। কারণ বাস্তবতা সবার প্রেম, তাঁদের ভেজা কণ্ঠের আকুতি বুঝতে পারে না।

আসমা বসে আছে কুয়ো তলায়। মাথার উপরে আছে পেয়ারা গাছ। গাছের একটা ডালে ছোট্ট চড়ুই পাখি বসে আছে। আসমা দীর্ঘক্ষণ ধরে তাকিয়ে আছে চড়ুই পাখির দিকে। তাঁর মনে হচ্ছে, এই চড়ুই পাখিটা ঠিক তাঁর প্রেমের মতো। দেখা যাচ্ছে, অনুভব করা যাচ্ছে, কিন্তু কাছে পাওয়া যাচ্ছে না। কিছুক্ষণ আগেও সজলের সাথে কথা হয়েছে তাঁর। কিন্তু সে তৃপ্তি পায়নি। মানুষটা তাঁর থেকে খুব দূরে চলে গেছে। চাইলেই আর খপ করে তাঁর হাতটা ধরা যাচ্ছে না। চোখে চোখ রেখে ইশারায় স্পর্শ করা যাচ্ছে না! কাঠফাটা রোদের মতো খটখটে হয়ে আছে মন। শূন্যতায় দুমড়েমুচড়ে যাচ্ছে বুকের ভিতরটা। অদ্ভুত এক হাহাকার বয়ে যাচ্ছে শরীর জুড়ে, মন জুড়ে।

রাইশা মেজো আপাকে সারা বাড়ি খোঁজ করার পর অবশেষে কুয়ো তলায় পেলো। সে দৌড়ে কুয়ো তলায় এসে মেজো আপার পাশে দাঁড়ালো। বোনকে কেমন অন্যমনস্ক দেখাচ্ছে। মুখটা কালো হয়ে আছে। মনে হচ্ছে কী নিয়ে যেন বড্ড দুশ্চিন্তায় আছে! রাইশার হাতে মোবাইল। ফোনের ওপাশে এখনো তাঁদের বড় আপা অপেক্ষা করছে।
রাইশা ডাকল,
– মেজো আপা, শুনছ।

আচমকা রাইশার কথা শুনে হকচকিয়ে উঠল আসমা। বিব্রত মুখে রাইশার দিকে তাকালো। রাইশা ঝটপট কী যেন বুঝে ফেলে মর্মান্তিক কণ্ঠে বলল,
– আপা, তুমি কী কাঁদছিলে?

আসমা আরও চমকে উঠল। সজলের কথা ভাবতে গিয়ে কখন যে চোখের কোণায় জল এসে গেছে, সে বুঝতেই পারেনি। দ্রুত চোখমুখ মুছে স্বাভাবিক হয়ে বলল,
– কী হয়েছে রাইশা?

রাইশা চিন্তিত চাহনিতে আসমার দিকে তাকিয়ে ফোনটা বাড়িয়ে দিলো। বলল,
– ফাতেমা আপু ফোন দিয়েছে। আমি কথা বলেছি, এখন তুমি বলো।

আসমা ফোনটা হাতে নিলো। কানে ধরশেই ওপাশ থেকে ফাতেমা আহ্লাদী গলায় বলতে লাগল,
– কিরে পাগলি, কেমন আছিস? তোর ফোনে কতবার যে কল দিয়েছিলাম, তাঁর হিসেবে নেই। সারাদিন নাকি মনমরা হয়ে কুয়ো তলায় বসে থাকিস। কী হয়েছে?

– না আপু, তেমন কোনো ব্যাপার না। এমনিতেই কুয়ো তলায় বসে থাকি। আমি ভালো আছি; তুমি কেমন আছো?

– আমি তো ভালো আছি। তোকে একটা কথা বলব, যা শুনলে তুই খুব খুশি হবি।

– কী কথা?

– আমরা আজকেই আসছি।

কথাটা বোধহয় আসমার ভিতর পর্যন্ত পৌঁছালো না। সে খুবই স্বাভাবিক ভাবে উত্তর দিলো।
– ওহ্।

ফাতেমা অবাক হলো। বলল,
– ওহ্ মানে?

– কিছু না আপু।

– আসমা, তোর কণ্ঠটা ভারী শোনাচ্ছে। কী হয়েছে?

ফাতেমার কণ্ঠে গম্ভীর্যতা প্রকাশ পেলো। আসমা নিজেকে সামলে নিয়ে বলল,
– কিছু হয়নি আপু। তুমি এসো বরিশালে। আমি অপেক্ষায় থাকবো।

ফাতেমার হাসিমুখটা ইতোমধ্যেই মলিন হয়ে গেছে। বোনের মারাত্মক ভারী কণ্ঠস্বর শুনে তাঁর বুক কাঁপছে বারবার। যদিও সে জানে এর কারণ কী। তবুও আসমাকে কখনো এতটা ভেঙে পড়তে দেখেনি ফাতেমা। সে কিছুটা কড়া গলায় এবার বলল,
– আমাকে মিথ্যা বলছিস কেন? তোর যে কিছু একটা হয়েছে, সে আমি জানি। সজল মাস্টার ঢাকা চলে এসেছে, সেজন্য তুই এইরকম হয়ে আছিস, তাই না? আমি রাইশার কাছে শুনেছি মাস্টারের কথা।

আসমা বাক্যব্যয় করতে পারল না। ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল শুধু। ওর কান্নার আওয়াজ শুনে ফাতেমা স্তব্ধ হয়ে কিছুক্ষণ ‘থ’ মেরে রইল।
দীর্ঘক্ষণ পর ফাতেমা নিজেকে সামলে নিয়ে, আসমাকে আশ্বস্ত করে বলল,
– চিন্তা করিস না। ও যদি তোকে সত্যিই ভালোবেসে থাকে, তাহলে তোকে ছাড়া দ্বিতীয় কারোর কাছে যাবে না।

আসমা শাড়ির আঁচল দিয়ে চোখ মুছে বলল,
– আমি এই কারনে কষ্ট পাচ্ছি না আপু। উনি যে আমাকে কতটা ভালোবাসেন, তা আমি জানি। আমাকে কখনোই ঠকাবেন না উনি। আসলে উনার অনুপস্থিতি আমার মনকে কুঁকড়িয়ে দিচ্ছে বারবার। যাওয়ার জন্যও আমি জোর করেছিলাম। এখন এমন মুহূর্ত এসেছে যে, মনে হচ্ছে তাকে দেখার জন্য এক্ষুনি ঢাকা ছুটে যাই।

– আসমা, ধৈর্য ধারণ কর।

– আমি পারছি না আপু।

– তোকে পারতে হবে। তুই একটু অপেক্ষা কর, আমি দুপুরেই পৌঁছে যাবো।

– আচ্ছা আপু।

আসমা ফোনটা কেটে দিলো। কুয়োর দেয়ালে ঝুঁকে দাঁড়িয়ে আবার মনমরা হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। রাইশা কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ফোন হাতে নিয়ে চলে গেল।

১৫.
আফজাল হোসেন খাবার টবিলে বসে হঠাৎ বললেন,
– সজল, এবার তাহলে একটা সিদ্ধান্তে আসা যাক। সঠিক সময় তো পেরিয়ে যাচ্ছে। আর কতো দেরি করবে?

সজল জানতে চাইল,
– কীসের সিদ্ধান্ত মামা? চাকরির সিদ্ধান্ত; আমি তো বলেছিই চাকরি আমি করব।

– আরে সেটা তো করবেই। কিন্তু এখানে তো শুধু চাকরির জন্য আসোনি তুমি।

– তাহলে?

আফজাল হোসেন হাসলেন। স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বললেন,
– দেখো নুপুরের মা, তোমার মেয়ের জামাই রসিকতা করছে আমার সাথে। এমন ভান ধরছে, যে কিছুই বুঝতে পারছে না।

সজল বুঝল। মনে মনে এই ভয়টাই পাচ্ছিল ও। এখানে এলে যে নুপুরের সাথে তাঁর বিয়ে নিয়ে সবাই জোড়াজুড়ি করবে, সেটাও সে অনুমান করেছিল। তবে নিজের প্রতি তাঁর বিশ্বাস আছে। সেজন্যই এখানে এসেছে।
সজল বলল,
– মামা, আপনারা যা ভাবছেন, সেরকম কোনো ব্যাপার আমাদের মধ্যে নেই। আপনি নুপুরকেই জিজ্ঞাসা করুন।

পাশেই নুপুর ছিল। সজলের কথা শুনে মাথা তুলে তাকালো সে। চুপ থেকে দীর্ঘঃশ্বাস ছাড়ল শুধু। সজলের কপাল কুঁচকে গেল। নুপুর কিছু বলবে; এইরকমটাই আশা করেছিল সে। আফজাল হোসেন নুপুরকে চুপ থাকতে দেখে নিজেই আবার বললেন,
– ও আবার কী বলবে? ও যে তোমাকে পছন্দ করে, সেটা তো আমরা আগে থেকেই জানি। তুমিও যে ওকে পছন্দ করো, সেটাও আমরা জানি।

– আপনারা ভুল জানেন মামা। সত্যিটা নুপুরকেই জিজ্ঞেস করেন।

আফজাল হোসেন নুপুরের দিকে তাকালেন। নুপুর নড়েচড়ে বসে দৃঢ় গলায় বলল,
– তোমরা আমার বাবা-মা; তোমরা যা ভালো বুঝো, তাই করো?

মেয়ের কথা শুনে আফজাল হোসেনের মুখটা ঝলমলে হয়ে উঠল। তিনি উল্লাসী মুখ করে বলে,
– বাহ্! তাহলে তো আর সমস্যাই রইল না। মেয়ে যখন রাজি, তখন আর দেরি করে কী লাভ?

সজল অবাক হলো নুপুরের কথা শুনে। নিজের মনেমনে বলতে লাগল,
কালকে ওর কথা শুনে মনে হয়েছিল, বোধহয় আমার প্রতি ভালোবাসার ঝোঁক থেকে কিছুটা বেরিয়ে এসেছে। তাই সেভাবে জোর দেখাচ্ছে না। অথচ এখন বলছে, তোমরা যা ভালো বুঝো, তাই করো! আরে ভাই, তাঁরা তো সেই কবে থেকেই চাচ্ছে বিয়ে দিতে। তাই বলে কি আমরা বিয়ে করে নেবো?
সজল চোখ-মুখ গম্ভীর করে বসে রইল। মামার সাথে তর্ক জড়ানোর সাহস তাঁর নেই৷ যা বলার, সরাসরি নুপুরকে বলবে।

খাওয়াদাওয়া শেষে সজল চুপচাপ নিজের ঘরে চলে গেল।

১৬.
– হেই লেডি, আপনাকে কী জোর করে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে? এভাবে মুখটা গোমড়া করে দাঁড়িয়ে আছেন কেন?

আসমা গোসল করে আবার কুয়ো তলায় এসেছিল চুল শুকোতে। কুয়ো তলার সামনের দিকটা ফাঁকা। তাই খুব ভালোভাবেই ওখান দিয়ে বাড়ির ভিতরে বাতাস প্রবেশ করে। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর হঠাৎ পিছন থেকে একটা পুরুষালী কণ্ঠ শুনতে পেলো।
আসমা পিছনে তাকিয়ে দেখল লম্বাচওড়া দেখতে একটা লোক দাঁড়িয়ে আছে। দুই গালে দুই ঝাক দাড়ি। হাতে দু’টো বই-ও আছে। চোখে চশমা নেই। থাকলে কবি হিসেবে বেশ মানাতো৷ আজকাল অবশ্য চশমা ছাড়াও অনেক কবিকে দেখা যায়। কিন্তু আসমার মনে হচ্ছে, সামনের লোকটার চোখে চশমা থাকলে কবি হিসেবে বেশ ভালো দেখাতো৷
লোকটাকে আসমা চেনে। তাঁর দুলাভাইয়ের ছোট ভাই। যদিও অনেকবছর আগে শেষ দেখেছিল। কিন্তু এখন চিনতে খুব একটা অসুবিধে হয়নি।

আসমা একগাল হেসে বলল,
– আপনি, আপনাকে আমি চিনি। আপনার নাম তাহমিদ।

– আপনি, আপনাকেও আমি চিনি। আপনার নাম আসমা।

কথাটা বলে হাসল তাহমিদ। আসমাও হাসল।
তাহমিদ আবার বলল,
– আপনি চাইলে আমাকে অন্য নামে ডাকতে পারেন।

আসমা কপালে সুক্ষ্ম ভাজ করে বলল,
– অন্য নাম..।

– হ্যাঁ। সেক্ষেত্রে সৌজন্যের খাতিরে আমিও আপনাকে একটা অন্য নাম দিবো।

– তো এতে লাভটা কী হবে শুনি?

– লাভ তো অনেক হবে। তাঁর মধ্যে অন্যতম লাভ হলো, একই নাম শোনার এক ঘেয়েমি স্বভাবটা কেটে যাবে। আমি একদিন তুলিকে বলেছিলাম, তুলি, আমি তো তোকে তৃষ্ণা থেকে তুলি বানিয়ে দিয়েছি। তুই আমাকে তাহমিদ থেকে কিছু একটা বানা। এই নামটা আর ভালো লাগছে না। তুলি রাজি হলো। ভাবতে লাগল, কী নাম দেওয়া যায় আমাকে। শর্ত একটাই, সবগুলো নামের শুরুতে ‘টি’ অক্ষর থাকা চাই। তুলির সে কী চিন্তা! কিছুক্ষণ ভেবে শুরুতেই ও বলল, তুমি যেহেতু নিয়মিত চা পান করো, তাই তোমার নাম ‘টি’। বাংলাতে এর অর্থ যা-ই হোক, উচ্চারণ তো বাংলাতেও ‘টি’ আছে। তুলি নামের অর্থ তো বাংলাতে পাহাড়, সমুদ্র, জঙ্গলও হতে পারে। উচ্চারণে প্রথম অক্ষর টি থাকলেই হলো।
ওর কথা শুনে তো আমার মাথা গরম হয়ে গেল। অদ্ভুত তো; ‘টি’, ‘চা’ এইসব আবার নাম হয় নাকি! আমি ধমক দিয়ে বললাম, ভিন্ন কিছু ভাব। ও কিছুক্ষণ ভেবে আবার বলল, তুমি ভীষণ অদ্ভুত মানুষ ভাইয়া। তাই তোমার নাম আজ থেকে অদ্ভুত। যদিও এখানে প্রথম অক্ষর ইংরেজি ‘টি’ নেই; শেষে আছে। আচ্ছা ভাইয়া, অনেকেই তো ভুল করে সাবজেক্ট, অবজেক্ট-এ জগাখিচুরি পাকিয়ে ফেলে। সেভাবে কী অদ্ভুত নামের শেষ অক্ষরের ‘টি’ আগে আনা যায় না?
আসমা, একবার জাস্ট ভাবেন মেয়েটা কী পরিমাণ বোকা বোকা কথা বলছিল। একটা নামের অক্ষরগুলো নিয়ে কী শুরু করেছিল। আসল কথা হলো, ওর খুব খিধে পেয়েছিল। আমিও যেতে দিচ্ছিলাম না। তাই উল্টো পাল্টা বলছিল। এরপর আরও আধঘন্টা ভাবল। তারপর বলল, ভাইয়া, আমার না প্রচণ্ড খিধে পেয়েছে। পেট শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে৷ এখন না খেলে আমি আর বাঁচবো না। আমি পরে তোমাকে একটা নাম দেবো।
এরপরই ও চলে যায়।

তাহমিদ থামল। আসমা বড় করে নিঃশ্বাস ছেড়ে বলল,
– এরপর কী আর নাম দিয়েছিল?

তাহমিদ হতাশ গলায় বলল,
– না।

খুশি হলো আসমা। কথাগুলো হাস্যকর হলেও তাঁর হাসার মতো মানসিকতা নেই এই মুহূর্তে। একগাল মলিন হাসি দিয়ে বলল,
– যাক, বাঁচলাম। আপনি যে এত কথা বলতে পারেন, তা আমার জানা ছিল না। আগে কিন্তু খুব চুপচাপ ছিলেন আপনি।

– গতকাল পর্যন্ত আমি নিজেও ভাবতাম, আমি চুপচাপ একজন মানুষ। চুপচাপ না ঠিক, কিন্তু অযৌক্তিক কিছু বলি না। কিন্তু আজ আপনার সামনে একটু বেশিই বকবক করে ফেললাম।

– সমস্যা নেই। মেয়েদের দেখলে ছেলেরা এমনিতেই একটু বেশি বকবক করে। এই স্বাভাব তো ছেলে জাতির ঐতিহ্য।

তাহমিদের রাগ হলো। সে নিজের অপমান সহ্য করতে পারে না। আর এই মেয়ে তো পুরো ছেলে জাতিকে টিপ্পনী কেটে অপমান করল। চোখমুখে রাগী একটা ভাব এনে তাহমিদ কঠিন গলায় বলল,
– আপনার ধারণা ভুল। যে মেয়েরা নিজেদের একটু বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভাবে, তাঁরাই ছেলেদের এইরকম ভাবে। আপনাকে দেখে আমার বকবকানি শুরু হয়নি। গতকাল সন্ধ্যায় একজন খুব বকবক করছিল আমার সামনে। আমি তখন তাকে আড়ালে বাচাল বলে সম্মোধন করেছিলাম। এরপর থেকেই এই বাচালতা আমি নিজের মধ্যেও উপলব্ধি করতে পেরেছি। সারারাত শুধু বকবক করেছি। বাই দ্যা ওয়ে, ওই একজন কিন্তু একটা মেয়ে।

আসমা মৃদু হেসে বলল,
– ওহ্ আচ্ছা। তাঁর মানে আপনি বুঝাতে চাচ্ছেন, এই বকবকানি স্বভাবটা মেয়েদের থেকেই আপনি পেয়েছেন।

তাহমিদ মাথা ঝাঁকিয়ে বলল,
– আজ্ঞে হ্যাঁ।

আসমা এ প্রসঙ্গে আর কথা বাড়ালো না। প্রসঙ্গ পাল্টিয়ে বলল,
– আচ্ছা, আপনি কখন এসেছেন?

– একটু আগে এলাম।

– তুহিন ভাই, বড় আপা, তুলি, ওরা কোথায়?

– ওরা ঘরে গেছে। আমি আপনাকে দেখে এখানে এলাম।
হাতে বইদুটি এগিয়ে দিয়ে তাহমিদ আবার বলল,
– ভাবীর কাছে শুনেছিলাম আপনি বই পড়তে খুব পছন্দ করেন। যেহেতু আমি খুব গরীব মানুষ। মূল্যবান কিছু কেনার সাধ্য নেই। তাই মহা মূল্যহীন বই দু’টো আপনার জন্য নিয়ে এলাম।

আসমা আপ্লুত হয়ে বইদুটি নিজের হাতে নিলো। হেসে বলল,
– দারুণ বলেছেন তো। বই তো মূল্য দিয়ে বিচার করা যায় না। তাই একে মহা মূল্যহীন বই বলাই উচিত।

– কোথায় যেন শুনেছিলাম জোড়া সংখ্যা খুব শুভ। যেহেতু বিয়েটা খুব শুভ একটা কাজ। তাই আপনার বিয়েতে দু’টোই বই দিলাম। নাহলে তিনটে দিতাম।

কথাটা বলে হাসল তাহমিদ। আসমা বলল,
– আমার বিয়ে?

– হ্যাঁ।

মুখ চেপে হাসি আটকিয়ে আসমা বলল,
– বেশ। চলুব এবার ভিতরে যাই।

– আচ্ছা।

দু’জনে কুয়ো তলা থেকে ভিতরে গেল।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে