সম্পর্ক পর্ব-০৯

0
935

#সম্পর্ক
#Tasfiya Nur
#পর্বঃ৯

মেয়ের কাছে গিয়ে মেয়েকে ডাক দেয় মহুয়া জিগাসা করে,
তিথিয়া কার সাথে কথা বলছো?
মায়ের ডাকে পিছন ফিরে তাকায় তিথিয়া তারপর হাসিমুখে মহুয়ার দিকে তাকায় পিছনেই সাগর দাড়িয়ে আছে। তিথিয়া হেসে সাগরের হাত ধরে উত্তর দেয়
মাম্মাম এই আঙ্কেলটার সাথে কথা বলছিলাম অনেক ভালো ইনি আমাকে অনেকগুলো চকলেট কিনে দিয়েছেন আমাকে বলেছে বাবার কাছে নিয়ে যাবে তোমার নাকি ফ্রেন্ড হয়,এটা সত্যি তো মাম্মাম?
সাগরকে দেখে মহুয়া মনের ভিতর ঝড় বইছে মনে হচ্ছে মেয়ের কোন কথা তার কানে যাচ্ছে নামনের ভিতর প্রশ্নেরা আঁকিবুঁকি কাটছে যে সাগর কেন এখানে তার মেয়েকে আলাদা করে দিবে না তো শতহোক বাবা এটা অস্বীকার করার জো নেই। একপলকে তাকিয়ে আছে সাগরের দিকে সাইত্রিশ বছরের সাগরকে দেখে তার বুকের ভিতর জ্বলে যাচ্ছে ফরমাল ড্রেসআপ এ হাতে ফোন নিয়ে সাগরও তাকিয়ে আছে মহুয়ার দিকে এ যেন হাজার বছরের না দেখার তৃষ্ণা কিন্তু আফসোস সাগরকে দেখে তার ঘৃণা ছাড়া কিছুই আসছেনা না আসছে সেই প্রথম দেখার মতো ভয়মিশ্রিত দেখার অনুমতি ।তিথিয়া নিজের মাকে চুপ থাকতে দেখে হাত ধরে ঝাকিয়ে ডাক দেয় মাম্মাম কি হলো কথা বলো।
মেয়ের ডাকে সম্বিত ফিরে পায় মহুয়া।তারপর মেয়েকে কোলে তুলে নিয়ে বলে মাম্মাম এই মানুষটস আমার বন্ধু কোন এককালে ছিলো এখন নেহাতই অপরিচিত কেউ ছাড়া কিছুই হন না উনি তুমি উনার সাথে কথা বলবেনা ওকে চলো বাসায় চলো বিকেলে তোমার রাহাত আঙ্কেলের সাথে শপিং এ যেতে হবে তোমার রিতুশা আন্টির জন্য চলো বাসায় ফিরা যাক।
মহুয়ার কথায় মাথা নাড়ায় তিথিয়া। সাগর সবশুনে একটু অবাক হয়েই তাকিয়ে আছে।এত ঘৃণা এত ঘৃণা করো তুমি আমায় এর থেকে তো ভালো আমায় মেরে ফেলো মহুয়া ভালো হতো এত যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতাম।একটা বাবার কাছে নিজের সন্তানের মুখের ডাক না শুনা আর অপরিচিত কেউ বলে নিজের পরিচয় পাওয়া এর থেকে মরণ যন্ত্রণা আর কিই বা হতে পারে।লমনে মনে বলে সাগর।তারপর মহুয়ার দিকে তাকিয়ে জিগাসা করে,
আমি তোমার এতটা ঘৃণার পাত্র মহুয়া যে আমাদের মেয়েকে আমার পরিচয়টা দিতেও বাধছে তোমার?
মহুয়া সাগরের প্রশ্নে তিথিয়াকে কোল থেকে নামিয়ে বলে মাম্মাম সোনা তুমি গাড়িতে গিয়ে বসো মাম্মাম এখুনি আসছি।তিথিয়াও মায়ের কথায় দৌড়ে গাড়িতে চলে যায়। মহুয়া মেয়েকে গাড়িতে বসতে দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে সাগরের দিকে তাকিয়ে জবাব দেয়,
ইউ নো হোয়াট সামথিং মিঃ সাগর চৌধুরী আপনাকে কোনো এককালে এতটা ভালোবেসেছি যে আপনাকে ছাড়া দুদণ্ড সময় একা বাচার কথা কল্পনাতেও আসেনি অথচ দেখুন এখন একা পুরো জীবন পার করার আশা রাখছি তাহলে বুঝুন একটা মানুষের প্রতি কতটা ঘৃণা জন্মালে এমনটা আশা করা যায়।আর কি বললেন আমাদের মেয়ে নো মিঃ সাগর তিথিয়া শুধু আমার মেয়ে আমার একার আপনার মেয়ে ঠিক কোন দিক দিয়ে বলুন আপনি নিজেই বলেছিলন সে আরাফদত ভাইয়া আর আমার সন্তান তাহলে আপনার কোন হবে আর মোস্ট ইম্পরট্যান্ট কথা হচ্ছে ওকে জন্ম দিলাম ছয়টা বছর বড় করলাম আমি কষ্ট করলাম আমি সমাজের কাছে হেয় হলাম আমি আর আপনি এতদিন পর কোথা থেকে উদয় হয়ে নিজেকে বাবা দাবী করছেন সেম ওন ইউ মিঃ সাগর চৌধুরী লজ্জার শেষ সীমা পার করছেন আপনি জন্ম দিলেই যেমন মা হওয়া যায়না তেমন বাবাও হওয়া যায়না বাবার দায়িত্বটা পালন করতে হয় আর এর আগেও বলেছি সুযোগ জীবনে একবারই আসে বারবার না দিয়েছিলাম দ্বিতীয় সুযোগ কিন্তু আপনি বুঝেননি তাই আপনার সাথে এসব ব্যাপার নিয়ে কথা না উঠালেই ভালো আশা রাখবো এবার অন্তত একটু মেয়ের সাথে শান্তিতে থাকতে দিন আপনি তো শান্তি দিলেন না জানেনই তো মেয়ে মানুষ সুখের পায়রা কিন্তু কিছু মেয়ে বোধহয় কষ্ট পেতেই জন্মায় যার কাতারে আমি পরেছি।যাই হোক আরও আশা রাখি আপনার কাছে অতীত আকড়ে থাকা জীবন নয় অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে মুভ ওন করাই জীবন আমি মুভ করেছি আপনিও করুন আর একটা কথা তিথিয়া আপনারও মেয়ে যতই বলি কিন্তু রক্ত তো বদলাবে না তাই চাইলে দেখা করতে পারবেন কিন্তু কখনও বলবেন না আপনি ওর বাবা আর আমার সাথে সব অন্যায়ের এই একটাই শাস্তি আমি আপনাকে দিলাম এসব নিয়ে যেন দ্বিতীয় বার কথা না বলতে হয় আপনার সাথে ফি আমানিল্লাহ ভালো থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
কথা গুলো শেষ করে মহুয়া পদ বাড়ায় গাড়ির দিকে এক সেকেন্ড ও দেরি করেনা কারণ এই মানুষটার সামনে থাকলে সে দুর্বল হয়ে পড়বে যা সে একদমই চায়না একদমই না।সাগরও নিরবে মহুয়ার কথা শুনে চোখের জল ফেলছে একদৃষ্টিতে মহুয়ার যাওয়ার পানে তাকিয়ে আছে কতদিন পর মহুয়াকে থ্রিপিস এ দেখলো এর আগে দেখলেও দেখেছে বদলে যাওয়া মহুয়াকে যে টপস জিন্স পড়ে ঘুরে বেড়ায়।
আমি যা করেছি তার ক্ষেত্রে আমার শাস্তিটা নেহাতই কম মহুয়া তবুও তুমি যা বললে মাথায় রেখে জীবনটা কাটাবো ধন্যবাদ তোমায় এত ভালো ভাবে আমায় শক্তি দেওয়ার জন্য তোমার অজান্তেই। কথাগুলো বিরবির করতে করতে গাড়িতে গিয়ে বসে সাগর। গাড়ি স্টার্ট করে বাসার দিকে রওনা হয়।

রাহাতদের বাসা মেহমান দিয়ে গিজগিজ করছে কাল গায়ে হলুদ সবাই সোজা কমিউনিটি সেন্টার এ চলে আসবে যারা দাওয়াত পেয়েছে কিন্তু কাছের মেহমানরা যেমন রাহাতের মামা ফুফি কাকা জেঠু তারা আগেভাগেই বাসায় এসে পড়েছে। তাই বাসায় একা হওয়ার সুযোগ নেই রাহাতের সব কাজিনরা রাহাতকে ঘিরে ধরে থাকে গান শুনবে বলে বলে কানের পোকা নাড়িয়ে দিচ্ছে। রাহাতের বাবারা চার ভাইবোন দুই ভাই দুই বোন সবার বড় হওয়ায় সব কাজিনই প্রায় রাহাতের ছোটো শুধু একজন তার সমবয়সী নাম রায়হান বড় ফফুর ছেলে সে। একমাত্র সেই একটু রাহাতকে শান্তি দিচ্ছে, রাহাতের কাছে মনে হচ্ছে তার বোনের নয় তার বিয়ে সবাই যেভাবে জোকের মতো ধরেছে তাকে।মহুয়াকে কল করা হয়নি আজ কাল রাতে বাসায় আসার পর সকাল এগারোটায় কাজিনদের চিল্লানিতে ঘুম ভাঙে তার। তারপর থেকে এই চিপায় পড়ছে। মোট বারো জন কাজিন তারা তারউপর রায়হানের এক বোন নাম রাত্রি সে রিতুশার বয়সী হয়েছে ন্যাকা ষষ্ঠী সবসময় রাহাতের পিছে চিপকুর মতো লেগে থাকে।কোনো রকম ফাঁকফোকর কেটে নিজের রুমের ব্যালকনিতে এসে ফোন করে মহুয়াকে।

মেয়েকে নিয়ে বাসায় এসে মেয়েকে ফ্রেশ করিয়ে নিজে ফ্রেশ হয়ে খাওয়াদাওয়া সেরে মিসেস শিরিনকে ওষুধ দিয়ে নিজের রুমে গা এলিয়ে একটু শোয়ার কথা ভাবছিলো মহুয়া কিন্তু তখন আচমকা ফোনটা বেজে উঠে তার আর শোয়া হলোনা। ফোন হাতে নিয়ে দেখে রাহাতের কল এতক্ষণে রাহাত কেন ফোন করে ভাবতে বিরক্তিতে ভ্রু কুচকায় মহুয়া কলটা কেটে গিয়ে আবার কল আসে রাহাতের এবার রিসিভ করে কানে ধরে মহুয়া। ধরার সাথে ভেসে রাহাতের রাগী কন্ঠের স্বর,
এতক্ষণে ফোন তবে ধরলেন তা কোন মহা রাজকার্যে ব্যস্ত ছিলেন রাণীসাহেবা যে কল ধরতে এত সময় লাগলো?
আরে মেয়েকে খাওয়ালাম নিজে খেলাম ফুফুমাকে ওষুধ দিলাম তো এগুলো কি কাজ নয়।
হ্যা তা অবশ্য ঠিক শুনো যে জন্য ফোন করা বিকেল চারটায় রেডি থাকিও মার্কেটে যাবো তাছারা সব কাজিনরা আসছে ওরাও নাকি মার্কেট করবে তাই সময় লাগবে খানিকটা, সমস্যা হবে কোনো।
রাহাতের কথায় রুমের দেয়াল ঘড়িটার দিকে তাকায় মহুয়া দুটো পয়তাল্লিশ বাজে মানে সময় মাত্র একঘন্টার মতো আছে।তাই চটপট মাথায় একটা বুদ্ধি আসে তার। মহুয়াকে চুপ থাকতে দেখে রাহাত আবার বলে,
কি হলো মহু লাইনে আছো না ফ্রিজে ঢুকে বরফ হলে?
বাজে কথা বন্ধ করো শুনো আমার একটা আইডিয়া আছে।
কি আইডিয়া?
তোমার সব কাজিন আর বোনকে নিয়ে আমার ফ্যাশন হাউজে এসে যাও আশা করি সবার আমার আর তাসলির করা ডিজাইনের হলুদ সঙ্গীত মেহেন্দি বিয়ের প্যাকেজ গুলো ভালো লাগবে এতে করে মার্কেটে দশ দোকান ঘুরতেও হবেনা আমারও ইনকাম হয়ে যাবে তোমাদেরও খাটুনি কম হবে যে যার মনমতো বসে বসে দেখে কাপড় নিয়ে নিবে।
শেষের কথাগুলো বলে হেসে দেয় মহুয়া।
রাহাতেরও মহুয়ার কথা ভালো লাগে তাই সেও হ্যা বলে দেয়।
আচ্ছা তাহলে ফ্যাশন হাউজে দেখা হচ্ছে। কথাটা বলে ফোন কেটে দেয় রাহাত।

চৌধুরীর ভিলার ড্রয়িং রুমে বসে আছে পরিবারের প্রতিটা সদস্য আলোচনা হচ্ছে সবার মাঝে। আলোচনার মূল বিষয় সাদিফের বিয়ে, কাল যেহেতু গায়ে হলুদ তাই মেয়ের জন্য যা যা লাগবে সব দিয়ে আসা হবে তাদের পক্ষ থেকে কিন্তু মেয়ের কি রকম পছন্দ তা সম্পর্কে কারো ধারণা না থাকয় সবাই মিলে বসেছে। মেহমানরা সব হলুদের দিন সকাল থেকে আসবে।সাগরের বাবার ভাইবোন বলতে একজন বোনই শুধু আছে তারাও আউট ওফ কান্ট্রি, ছোট ভাতিজার বিয়ে উপলক্ষে রাতের ফ্লাইটে আসবে তারা স-পরিবারে।আর একজন সাগরের চাচা সে ছোটো ছোটো দুই সন্তান রেখে মারা যায় কার এক্সিডেন্ট এ স্ত্রী সহ, সন্তান দুটোকে তাদের মামা মামী নিয়ে কাতার চলে যায় কারণ তাদের মামার কাতারে জব বর্তমানে তারা সেখানেই সেটেল।সাগরের বাবা যেতে দিতে চাননি কিন্তু তারা জোড় করে নিয়ে যায়। এতদিন ফোনে খোজখবর নিতেন তিনি। সাদিফের বিয়ের খবরে তারাও আসছে দেশে তাদেরও ফ্লাইট রাতে।সবাই যখন কোনো সিদ্ধান্ত এ আসতে পারছিলো না সাগরের বাবা ফোন করেন নিজের বেয়াইকে। সেই সূত্রে জানতে পারে তারা রাহাতের ফ্রেন্ডের ফ্যাশন হাউজে যাবে সবাই তাই রাহাতের বাবাও সেখানে আসতে বলে দেন।সাগর তা শুনে বুঝতে পারে মহুয়ার ফ্যাশন হাউজ কারণ রাহাতের ফ্রেন্ড বর্তমানে মহুয়া ছাড়া কাউকে দেখেনি আর মহুয়ার বর্তমান অবস্থাও হাতরাতে গিয়ে জানতে পারে মহুয়ার ফ্যাশন হাউজ আছে একটা।তাই সবার মাঝেই বলে উঠে,
ওটাতো মহুয়ার ফ্যাশন সেখানে যাবে রাহাতরা।
সাগরের কথা শুনে সবাই চুপ বনে যায় কারণ এবাড়িতে মহুয়ার কথা তোলা বন্ধ করে দিয়েছেন সাগরের বাবা।
চারটায় বড় বৌমা মিলি আর সাদিফ সিফাত চলে যেয়ো ওখানে আর সাগর তুমি তোমার বড় ভাইয়া সাদিদ তো আসছে শুনেছো নিশ্চয় চারটা পঞ্চাশ এ ফ্লাইট ল্যান্ড করবে তোমার ভাইয়াকে এয়ারপোর্টে রিসিভ করতে যাবে।
কথাটা বলে তিনি উপরে চলে যান।সাগর অসহায় চোখে তাকিয়ে থাকে বাবার দিকে। মহুয়াকে দেখার সুযোগটা হাতছাড়া হয়ে যাওয়ায় কান্না পাচ্ছে তার।সাগরের বাবা চান না মহুয়া সাগর একত্রিত হোক একটু মুহুর্তেও জনসাদিফ যেদিন বাড়িতে জানায় মহুয়ার খোজ পাওয়া গেছে সেদিনই তিনি সবাইকে বলেছেন মহুয়ার কথা যেন না উঠে।কারণ তিনি নিজেও চান না মহুয়া এই বাড়িতে ফিরুক কেন ফিরবে সে এই বাড়িতে যেখানে তার স্বামী এত অপমান করেছে ভাগ্য বশত সেদিন তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না ব্যবসার কাজে দেশের বাইরে থাকতে হয়েছিলো তিন বছর ছেলেকে বিয়ে করিয়েই তিনি চলে যান নয়তো ঠাটিয়ে চর দিতেন ছের গালে। মহুয়া যদি নিজের মেয়ে হতো তাহলে তিনি কি করতেন নিজেও জানেন। মেয়ে নেই তার জন্য তিনি মেয়ের কদর করতে জানেন।কথায় আছে না যার যেটা থাকে সে সেটা নিয়ে আফসোস করে যার না থাকে সে কদর করেনা।একটা মেয়ের আত্মসম্মান সবার আগে এটাই মানেন তিনি এজন্য মহুয়ার কথা এ বাড়িতে কারো মুখে শুনতে তিনি চান না কারণ সবাই অন্যায় করেছে মেয়েটার সাথে। তিনিও আজও আফসোস করেন কেন তিনি সেদিন ঘটনাস্থলে ছিলেন না কেন দুবছর পর ফিরলেন।সব ঘটনা যখন খুতিয়ে দেখেন নিজের ছেলের একটার পর একটা অন্যায় যেন তাকে বুঝিয়ে দিচ্ছিলো এমন ছেলে থাকার থেকে না থাকা ভালো কিন্তু তিনিই বা কি করবেন শতহোক ছেলে তো।

সাড়ে তিনটায় যে যার বাসা থেকে রওনা দেয় মহুয়ার ফ্যায়ন হাউজে পরিবার তিনটা এখন গন্তব্য সবার একটাই।

চলবে?

(আসসালামু আলাইকুম, ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন,রিচেক করিনি একটু বুঝে নিবেন ভুল শব্দ গুলো😊)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে