#সম্পর্কের_বন্ধন
#লেখিকাঃজিন্নাত_চৌধুরী_হাবিবা
#পর্ব_০৩
আধারিয়া রজনী বিলীন হয়ে মেদিনীর বুকে ধরা দিয়েছে হরিদশ্ব।ভোরের মৃদু আলো শেষে কমলা রঙের আভা ছড়িয়ে বৃত্তাকার সূর্য চোখ মেলে তাকায়।সকাল সকাল মিষ্টি কিরণ দিলেও বেলা গড়াতেই তার উপচে পড়া তেজ ঢেলে দিচ্ছে ধরনীর বুকে।নিস্তব্ধতা কেটে গিয়ে ভোরের পাখিদের কলকল ধ্বনি মুখরিত করলো চারিপাশ।সূর্যের তেজ বাড়ার সাথে সাথে মানুষের আনাগোনা শুরু হয় রাস্তায়।জানালার পর্দাগুলো মৃদুমন্দ বাতাসে দুলছে।জানালার কাঁচ খোলা থাকায় এক চিলতে রোদ্দুর এসে উঁকি দিচ্ছে রুমের আনাচে-কানাচেতে।ঘুম ভাঙতেই ঠোঁটে মিষ্টি হাসি নিয়ে চোখ পিটপিট করে তাকালো তুহা।হাই তুলে খাট থেকে নামলো।পাশেই শুয়ে আছে তৃষা।
তুহা বারান্দার দরজা সহ সব জানালা খুলে পর্দাগুলো সব সরিয়ে দিয়েছে।প্রতিদিন রাতে সে একটা জানালার গ্লাস খোলা রাখে।যেটা দিয়ে মিষ্টি রোদ্দুর এসে তাকে ছুঁয়ে দিয়ে ঘুম ভাঙায়।বাকি সব দরজা জানালা বন্ধ থাকে।সব দরজা জানালা খুলে দেওয়াতে পুরো রুম রোদের আলোয় ঝলমলিয়ে উঠেছে।সূর্যের কিরণ তীর্যকভাবে এসে ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় পড়েছে।সেখান থেকে আলো এসে তৃষার চোখেমুখে পড়ছে।মেয়েটা বিরক্তিতে চোখমুখ কুঁচকে এপাশ ওপাশ করছে।শেষে বাধ্য হয়ে ঘুম ছেড়ে উঠে।
ততক্ষণে তুহা ওয়াশরুমে চলে গেছে।
দরজা জানালা সব খোলা দেখে তৃষার মেজাজ খিঁচড়ে গেলো।রাতে ঠিক করে ঘুমোতে পারেনি আর এখন ও ঘুমাতে পারলোনা।এমনিতেই তুহার উপর প্রচন্ড রাগ আছে এখন তা তেলে বেগুনে একসাথে হলে যেমন ছ্যাত করে ওঠে তেমনি হলো।উগ্রকণ্ঠে হাঁক ছেড়ে তৃষা বলল,’ফালতু কাজ করে আমার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে চাইছিস?
তুহা ওয়াশরুম থেকে তৃষার চেঁচামেচি শুনলেও উত্তর দিলোনা।নিজের মতো করে ফ্রেশ হয়ে নিলো।হাতের তোয়ালে বারান্দায় মেলে দিতে যাওয়ার সময় তুহা চোখেমুখে অবজ্ঞার ছাপ রেখেই বলল,’চাইলেই অন্যরুমে গিয়ে থাকতে পারো।কারো জন্য আমার প্রতিদিনকার সকাল নষ্ট করতে পারবোনা।
ধপ করে আগুন জ্বলে উঠলো তৃষার গায়ে।কিন্তু তুহাকে কিছুই বললোনা।উঠে ওয়াশরুমে চলে গেলো।গতরাতে ইভানের নাম্বার থেকে তুহার নাম্বারে কল আসাতে তৃষা ধরেই নিয়েছিলো ওদের দু’জনের মাঝে রোজই কথপোকথন হয়।
তুহা নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানাতেই ইভানকে কল দিয়েছিলো।ইভান কল ধরতে না পারায় পরে নিজ থেকেই কল দিয়েছিলো।যা তৃষার চোখে পড়ে।ইভানের কল আসার মুহূর্তে তৃষার চেহারাটা দেখার মতো ছিলো।তুহা বেশ তৃপ্তি নিয়ে হেসেছিলো।লোকটা একেবারে সঠিক মানুষের সামনেই কল দিয়েছে।তুহা ইভানের কল পেয়ে বারান্দায় উঠে যায়।দু’মিনিট কথা বলে বাকি আটান্ন মিনিট বারান্দায় ফোন কানে নিয়েই কাটিয়ে দিয়েছে।তৃষাকে জ্বালাতে বড্ড আনন্দ লাগছে।তৃষাও ধরে নিয়েছে তুহা আর ইভান একঘন্টা যাবত প্রেমালাপ করেছে।কিন্তু বেচারা ইভানের কি সেই সময় আছে?সে তো তুহার কথা শেষ হওয়ার পরপরই ফোন কেটে দিয়েছে।এদের দুজনকে নিয়ে ভাবতে ভাবতেই তৃষার ঘুমোতে দেরি হয়ে গেছে।
খাবার টেবিলে তুরাগ বলল,’কিরে তৃষা!তোর চোখদুটো এরকম লাল হয়ে আছে কেনো?রাতে ঘুমাসনি?
তৃষা কথা কাটাতে আমতা আমতা করতে লাগলো।তার আগেই তুহা বলে উঠলো,’নাগো ভাইয়া।ঘুম হবে কি করে?আমরা দুবোন যে জমিয়ে গল্প করেছি।তারপর আমার ঘুম আসার পরও তৃষা আপু না ঘুমিয়ে আমার মাথায় বিলি কেটে দিয়েছে।
তুহার কথা শুনে তুরাগের কাশি উঠে গেলো।পানি পান করে বলল,’তৃষা আর চুলে বিলি কাটা?অবিশ্বাস্য!’
তুহার মনে হচ্ছে সে একটু বেশিই বলে ফেলেছে।
তৃষা থমথমে মুখে বলল,’কেনো?আমি বুঝি বোনটাকে আদর করতে পারিনা?দুদিন পরইতো একেবারে বিদায় হয়ে যাবে।
আফসান বললেন,’সেকি কথা মামনি!একেবারে বিদায় হবে কেনো?এটাতো তুহারই বাড়ি।তাই বিয়ের পরও যখন ইচ্ছে সে এবাড়িতে আসতে পারবে।
তৃষা চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,’হুম সেটাই।
এরপর আর কারো কথা শোনা গেলোনা।যে যার মতো খেয়ে উঠে গেলো।
বিকেলের দিকে বাড়ির সবাই বের হলো শপিং এর জন্য।বড়রা সবাই বাড়িতেই রইলো।বাকি সব ছেলেমেয়েদের উপর দায়িত্ব দিয়ে দিলেন।দুই বাড়ি থেকেই শুধু ছোটরা আসবে।যেগুলোতে বড়দের প্রয়োজন আছে সেগুলোর লিস্ট তৈরি করে দিয়েছেন বড়রা।
বেশ পরিপাটি হয়েই সবাই বেরিয়েছে।কোলাহল পূর্ণ রাস্তায় শাঁই শাঁই করে দুদিক থেকে গাড়ি আসা যাওয়া করছে।ঢাকা শহরের চেয়ে কুমিল্লায় ট্রাফিক জ্যাম অনেক কম বললেই চলে।যথা সময়ে গাড়ি এসে থামলো শপিংমলের সামনে।
ইভানের পরিবারের কেউই এখনো আসেনি।তাদের অপেক্ষাতেই সবাই মলের বাইরে দাঁড়িয়ে রইলো।
বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি।পাঁচমিনিটের মাথায় একটা গাড়ি এসে থামলো।সেখান থেকে একে একে ইভানের ছোট ভাই রাফি,ছোট বোন মান্নতা,চাচাতো ভাই ও তাদের বউরা সহ সবাই নেমে আসলো।
সবাই কুশলাদি সেরে ইভানের ভাবিরা তুহাকে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলো।
মান্নতা নির্নিমেষ চেয়ে রইলো তৃষার দিকে।মেয়েটাকে কি সুন্দর লাগছে।তার ভাবি আর ভাবির বোন যেমন মিষ্টি দেখতে তেমনি এই আপুটাকেও অনেক মিষ্টি দেখতে লাগছে।
মান্নতা আগ বাড়িয়েই তৃষার সাথে কথা বলল,’হাই আপু!আপনি তুহা ভাবির কি হন?’
কারো চিকন কন্ঠস্বর কানে আসতেই তৃষা পেছন ফিরে তাকায়।শ্যামলা চিপচিপে গড়নের একটা মেয়ে মুখে মৃদু হাসি রেখে তার দিকে তাকিয়ে আছে।
তৃষা জবাব দিলো,’আমাকে বলছো?’
মান্নতা দ্রুত মাথা নেড়ে বলল,’হুম!আপনাকেই বলছি।আমি ইভান ভাইয়ার ছোট বোন,আপনি তুহা ভাবির কি হন?
তুহার কথা জিজ্ঞেস করাতে তৃষা বিরক্ত হলো।মুখে কৃত্রিম হাসি ঝুলিয়ে বলল,’আমি তুহার বড়চাচার মেয়ে।আমার নাম তৃষা।
মান্নতা ভুবন ভুলানো হাসি দিয়ে বলল,’আপনি দেখতে অনেক সুন্দরী।’
তৃষা মুখে হাসি টেনে এদিক ওদিক তাকিয়ে উৎসুক হয়ে বলল,’আমাকে যেকারো সাথে মানাবে তাইনা?
মান্নতা সভাব সুলভ হেসে মাথা নাড়লো।
তৃষা ঠোঁটের হাসি আরেকটু প্রসারিত করে বলল,’তোমার আমাকে ভালোলাগে?
মান্নতা বলল,’হ্যাঁ!অনেক ভালোলাগে।
তৃষা মান্নতার গালে হাত রেখে বলল,’তোমাকেও আমার অনেক পছন্দ হয়েছে।
শাড়িতে চোখ বুলাতে গিয়েই শপিং মলের আয়নায় তুহার নজর পড়লো।আয়নার দিকে তাকিয়ে অপলক চেয়ে রইলো।মনের ভ্রম ভেবে একবার পেছন ঘুরে দেখলো।না সে ভুল দেখেনি।পেছনে দাঁড়িয়ে ঠোঁট নাড়িয়ে ইভান তার চাচাতো ভাইয়ের সাথে কথা বলে যাচ্ছে।চোখেমুখে বিরক্তির ছাপ।তার চাচাতো ভাই ইভানকে আবার কিছু একটা বুঝিয়ে চলেছে।তুহা চোখ ফিরিয়ে নিলো।যদি ইভানের চোখে চোখ পড়ে যায় তবে তাকে বেহায়া ভাববে।আবারও শাড়ি দেখায় মনযোগ দিলো।
ইভান কালই চলে যেতে চেয়েছিলো ঢাকায়।কিন্তু সবাই মিলে আজকের জন্য আটকে রেখেছে।কুমিল্লায় যখন এসেছে তখন নাহয় শপিংটাও করে যাবে।সবাইকে একটা গাড়িতে জায়গা হচ্ছিলোনা বলে ইভানে পেছনে একটা সিএনজি দিয়ে এসেছিলো।
একটা শাড়িতে গিয়ে তুহার চোখ আটকে গেলো।বেশি গর্জিয়াস ও না আবার সিম্পল ও না।কিন্তু দেখতে অনেক সুন্দর।তুহা হাত দিয়ে শাড়িটা ছুঁয়ে দেখলো।পেছন থেকে সবাই তাকে ডেকে নিয়ে দুই তিনটা শাড়ি একের পর এক তার কাঁধে দিয়ে দেখতে থাকলো কোনটাতে তুহাকে বেশি ভালোলাগে।শেষে একটা শাড়ি সবার পছন্দ হলো।সবাই এই শাড়িটাই নেবে বলে ঠিক করে।তুহা সবার পছন্দ হয়েছে বলে আর কিছু বললনা।সবার পছন্দে সায় জানালো।
দোকানদার যখন শাড়িটা প্যাকেট করতে ব্যস্ত তখনই ইভান একটা শাড়ি এনে বলল,’ওটা রেখে এটা প্যাকেট করুন।সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো।পরমুহূর্তেই মিটিমিটি হাসতে লাগলো।তুহা ইভানের হাতে নিজের পছন্দ করা শাড়িটি দেখে মৃদু হাসলো।
সবাই খুশি হলেও তৃষা এককোনায় দাঁড়িয়ে ফুঁসতে লাগলো।
পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ইভান নিচুস্বরে তুহার উদ্দেশ্যে বলল,’অন্যের খুশির জন্য নিজের পছন্দ বিসর্জন দেওয়া বোকামি বৈ আর কিছুই নয়।’
তুহা চেয়ে রইলো ইভানের যাওয়ার পানে।
সবাই শপিং শেষে একটা রেস্তোরাঁয় গিয়ে বসলো।একটা বড় টেবিলে সবাইকে বসিয়ে সবাই মিলে ইভান আর তুহাকে স্পেস দেওয়ার জন্য অন্য টেবিলে পাঠিয়ে দিলো।
কিছুক্ষণ না যেতেই সেখানে হট্টগোল শুরু হলো।একজন ছেলে আর দুজন মেয়ে মিলে কিছু তর্কাতর্কি করছে।ব্যাপারটা তাদের তিনজন থেকে ছাড়িয়ে পুরো পাবলিক হয়ে যাওয়াতে উৎসুক জনতা অধীর আগ্রহে তাদের তিনজনের দিকে দৃষ্টিপাত করলো।
মূলত ছেলেটার গার্লফ্রেন্ড আর বউ দুজনের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে।তাদের দুজনকে সামাল দিতে গিয়ে ছেলেটা প্যাঁচে পড়েছে।কারণ সম্পুর্ণ দোষ তার।সে একসাথে বউ,গার্লফ্রেন্ড দুইটাই মেইনটেইন করছে।
তুহাকে মনযোগ দিয়ে দূরের টেবিলের তিনজনের ঝগড়া দেখতে দেখে ইভান তুহার মনযোগ পাওয়ার চেষ্টা করলো।টেবিলে হাত দিতে ঠকঠক আওয়াজ করেও লাভ হলোনা।তুহার সম্পুর্ণ মনযোগ সেদিকে।গলা ঝেড়ে ইভান ভরাট কন্ঠে ডাকলো,’তুহা!’
পূনরায় তুহা বলে ডাকতেই তুহা হকচকিয়ে যায়।চোখেমুখে জড়তা।মিইয়ে যাওয়া কন্ঠে বলল,’আমাকে ডেকেছিলেন?শুনিনি আমি।
ইভান তুহার দিকে চোখ রাখলো।গাম্ভীর্য পূর্ণ কন্ঠে বলল,’আমার সম্পর্কে তোমার সবকিছুই জেনে নেওয়া উচিত।তোমার অতীত আছে কিনা আমি জানিনা।থাকলেও আমার সমস্যা নেই।
আমি আমারটা বলছি।ভার্সিটি লাইফের আমার একটা অতীত আছে।বর্তমানে যার কোনো অস্তিত্ব নেই।আর না ভবিষ্যতে থাকবে।আমি চাইছি তুমি আগে থেকেই সব জেনে নাও।পরে এসব নিয়ে আমি প্রবলেম ফেস করতে চাইনা।
তুহা চুপ করে ইভানের কথা শুনলো।জবাব দিলোনা।
ইভান কপালে ভাঁজ ফেলে বিরক্ত সূচক শব্দ করে৷তিক্ত কন্ঠে বলল,’সবকিছুতেই কি তোমার চুপ করে থাকার অভ্যেস আছে?’আমি জানতে চাইছি তোমার কোনো প্রবলেম আছে কিনা আমাকে নিয়ে।
তুহা ইভানের দিকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকালো।আলতো হেসে জবাব দিলো,’নিজের জায়গা ধরে রাখার মতো সক্ষমতা আর আত্মবিশ্বাস আমার আছে।
জবাবে ইভানও ঠোঁট এলিয়ে মৃদু হাসলো।খাবারের দিকে ইশারা করে তুহাকে বলল,’দ্রুত খাবার শেষ করো।এখান থেকেই আমাকে বাসে উঠতে হবে।
তুহারা সবাই গাড়িতে চড়ে বসার পর সৌজন্য রক্ষার্থে ইভান একবার দেখতে গেলো সবাই ঠিকঠাক বসেছে কিনা?সবাইকে দেখে নিয়ে একপলক তুহার দিকে তাকালো।মেয়েটা জানালার দিকে মুখ করে বসে আছে।
রাফি মান্নতাকে খোঁচা মেরে বলল,’আরেকটু চেপে বস।মান্নতা রাফিকে চুপ করিয়ে বলল,’হিসসস!
রাফি বলদের মতো বলল,’কিন্তু আমারতো এখন হিস আসতেছেনা বইন।আমি বাসা থেকে একেবারে হিস হুস সেরেই এসেছি।
মান্নতা বিরক্ত হয়ে রাফিকে থাপ্পড় মেরে বলল,’দিলিতো?ইভান ভাইয়া ভাবিকে লুকিয়ে দেখছে আমি সেটাই দেখছিলাম আর তোকে চুপ থাকতে বললাম।আর তুই কিসব বলছিস?
রাফি ভাব নিয়ে কলার ঝাকিয়ে বলল,’অন্যের রোমান্টিক সিন না দেখে আমি নিজেই সিন তৈরি করবো।
আর তোর যদি এরকম কোনো ইচ্ছে টিচ্ছে হয় আমাকে বলতে পারিস।ভাই হিসেবে বাবা মায়ের কাছে তোর বিয়ের জন্য সুপারিশ করবো।
————————————————————
সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়াশরুমে গিয়ে তুহার চোখ চড়কগাছ।আয়নায় তাকিয়ে তার চুলের দিকে তাকিয়ে দেখছে।লম্বা চুলগুলো বাঁকা ত্যাড়া করে কাটা।কোমর থেকে পাঁচছয় ইঞ্চি উপরে উঠে আছে।তুহার লম্বা চুল অনেক পছন্দের।তাই সে চুলে কোনো কাট দিতোনা,হালকা করে আগা ছেটে দিতো।টলমল চোখে ক্ষুব্ধ হয়ে রুমে ফিরলো।গতরাতে ঘুমানোর আগে তৃষা বলেছিলো,’সকালটা তোর জন্য সারপ্রাইজ হিসেবে রইলো।তবে এটাই ছিলো তার কথার মর্মার্থ!
রুমে ফেরত এসে তুহা দেখলো তৃষা উঠে পড়েছে।তুহাকে দেখেই লম্বা হাসি দিলো।তুহা কোনোদিকে না চেয়ে কা/চি হাতে নিলো।ড্রেসিং টেবিলের উপরেই ছিলো তাই আর খুঁজতে হয়নি।তৃষা কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার চুলে কা/চি চালিয়ে দিলো।তৃষা চুল টেনে ছাড়াতে যাওয়ায় চুল আরো বাঁকা ত্যাড়া হয়ে গেলো।তুহার চেয়ে দ্বিগুণ ছোট করে তৃষার চুলগুলো কেটে দিলো তুহা।
তর্জনী আঙ্গুল তুলে তৃষাকে শাসিয়ে বলল,’ইট মারার পর পাটকেল খাওয়ার জন্য তৈরি থাকবে।’
তৃষা উঠে এসে তুহার গাল চেপে ধরেছে।তখনই দরজায় করাঘাত হলো।কিরে তোরা কি নাস্তা করবিনা?
তুহার গাল ছেড়ে তৃষা সরে গেলো।তুহা ফিচেল হেসে ‘আসছি’বলে ওয়াশরুমে চলে গেলো।
#চলবে……..
(ভুলগুলো ধরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ রইলো।হ্যাপি রিডিং।)