শেষটা সুন্দর ২ পর্ব-৪৪+৪৫+৪৬

0
662

#শেষটা_সুন্দর(সিজন-২)
#জান্নাতুল_ফারিয়া_প্রত্যাশা
৪৪।

পরদিন বেশ সকালেই বাড়ি ছাড়ল সারাজ। প্রথমেই সে গেল রাবীরের অফিসে। এত সকালে রাবীর তার অফিসে সারাজকে আশা করেনি। তবুও তাকে দেখে খুশি হয়েছে বেশ। সারাজ জামাই জামাই একটা ভাব নিয়ে গিয়ে রাবীরকে সালাম করে। রাবীরের খুশির মাত্রা এতে যেন আরো বৃদ্ধি পায়।

সারাজ চেয়ারে সোজা হয়ে বসে বলল,

‘বাবা, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

রাবীর বসল তার মুখোমুখি চেয়াটাতে। জিজ্ঞেস করল,

‘কী সিদ্ধান্ত?’

সারাজ একটু রয়ে সয়ে জবাবে বলে,

‘আমি দুইদিক একসাথে সামলাব। আব্বুর অফিস আর তোমার সভা দুটোই।’

চিন্তার ভাঁজ পড়ল রাবীরের প্রশ্বস্থ কপালে। টানটান কপালের চামড়া কুঁচকে এল। জিজ্ঞেস করল,

‘পারবি তুই? সাদরাজ নারাজ হবে না?’

‘না, হবেন না। আমি আব্বুকে সামলে নিব। তুমি শুধু আমাকে সাপোর্ট করো, তাহলেই হবে।’

রাবীর সহসা এক হাত নিয়ে ঠেকাল সারাজের কাঁধের উপর। আশ্বস্তের সুরে বলল,

‘আমি তোর পাশে আছি, বাবা।’

সারাজ নিশ্চিন্ত হলো। আরো কিছুক্ষণ রাবীরের অফিসে থেকে তারপর বেরিয়ে গেল সাদরাজের অফিসের উদ্দেশ্যে।

______

সকালের নাস্তা শেষ করেই পুতুল গেল রিতার রুমে। রিতা রুমে তখন আধশোয়া হয়ে বই পড়ছিল। পুতুল নিঃশব্দে তার শিউরে গিয়ে স্থান নিল। বলল,

‘মামনি, একটা কথা বলার ছিল?’

রিতা বইখানা বুকের উপর রেখে বলল,

‘বল, কী বলবি।’

‘আজকে একটু বাড়িতে যাই?’

‘বাড়িতে যাবি? যা।’

‘এখনই যাই?’

‘সারাজকে বলেছিস?’

‘না, উনি তো অফিসে। আসলে তুমি বলে দিও। আমি যাই এখন?’

‘আচ্ছা, আমি বলে দিব। তুই ড্রাইভারকে নিয়ে যাস।’

পুতুল হেসে বলল,

‘ঠিক আছে।’

নিজের রুমে এসে দ্রুত তৈরি হলো সে। অনেকগুলো দিন পর আবারও বাড়িতে যাচ্ছে, খুশি যেন আর ধরছে না তার। মায়ের জন্য আনা জিনিসপত্রগুলো একটা ব্যাগে পুরেই ছুট লাগাল।

বাড়ি পৌঁছাতে সময় নিল এক ঘন্টা। আধ ঘন্টার রাস্তা জ্যামের বদৌলতে এক ঘন্টা খুইয়েছে। গাড়ি মেইন গেইটের সামনে থামতেই দৌড়ে বাসার ভেতর প্রবেশ করল পুতুল। “মা মা” বলে চেঁচিয়ে দুনিয়া উদ্ধার করল যেন। রান্নাঘর থেকে একপ্রকার ছুটে বেরুত হলো মেহুলকে। বসার ঘরে এসে মেয়েকে দেখে খুশিতে দুহাত দুদিকে মেলে দিল। পুতুলও ছুটে এসে জড়িয়ে ধরল তাকে। অনেকক্ষণ এভাবেই ছিল মা মেয়ে। এতদিন পর মেয়েকে বুকে জড়িয়ে চিত্তপটে প্রশান্তির স্রোত বইল মেহুলের। পুতুলেরও তাই। মা’কে টেনে নিয়ে বসাল সোফায়। তারপর সে তার ব্যাগ খুলে এক এক করে সব জিনিসপত্র বের করতে আরম্ভ করল। মেহুল অবাক হয়ে বলল,

‘এতকিছু এনেছিস কেন?’

‘এতকিছু কোথায় আনলাম? অল্প অল্প এনেছি সব। এখানে যা যা আছে সব তোমার আর মামনির জন্য ডাবল ডাবল আনা হয়েছে। কালারও সব এক কিন্তু, যাতে দুই বান্ধবীর মধ্যে কোনো ঝগড়া না হয়।’

মেহুল হেসে পুতুলের মাথায় চাটি মেরে বলল,

‘পাজি মেয়ে। তা, সারাজকে নিয়ে আসিসনি কেন?’

‘আর সারাজ! উনার কি এত সময় আছে? সকালে আমি ঘুম থেকে উঠার আগেই তো ফুড়ুৎ।’

‘দেখেছিস, আমার ছেলেটা কত প্ররিশ্রমী।’

‘হ্যাঁ হ্যাঁ, অনেক।’

তারপর মা মেয়ের খোশগল্প জারি রইল আরো কিছুক্ষণ। এতদিন পর মা’কে পেয়ে পুতুল তার পেটের কথা সব উগলে বের করছে। মেহুলেরও যেন মনে হচ্ছে, আজ এই বাড়িতে ফের প্রাণ ফিরেছে। এতদিনের সেই নির্জীব গৃহ পুনরায় সতেজ হয়ে উঠেছে, পুতুলের আগমনে।

মধ্যাহ্নভোজ’টা আজ পুতুল মায়ের সাথেই সেরেছে। এর মাঝে তার রিতার সাথে একবার কথা হলেও, সারাজের সাথে আর কোনোরূপ যোগাযোগ হয়নি। এতদিন পর অফিসে গিয়ে সারাজ নিশ্চয়ই একটু বেশিই ব্যস্ত।

দুপুরের রোদ একটু প্রশমিত হতেই পুতুল লীনাকে কল দিয়ে তাদের বাড়ি আসতে বলে। লীনাও এক কথায় রাজি হয়ে যায়। এক ঘন্টার ব্যবধানেই বাড়িতে এসে হাজির হয় সে। পুতুলকে পেয়ে খুশিতে আপ্লুত যেন। পুতুল তাকে নিয়ে যায় বাড়ির ছাদে। একসাথে অনেক গল্প করে, লীনা আর মাহাতের প্রেমের কথাও শুনে। লীনা জানায়, তাদের প্রেম বেশ জমে উঠেছে। আরো জানায়, এই মাহাত ছেলেটা উপরে যতই ভোলাভালা হোক না কেন, ভেতরে ভেতরে সে মারাত্মক ফাজিল। এই কয়দিনে বেশ ভালোমতোই চেনা হয়ে গিয়েছে তাকে।

তাদের কথাবার্তার একপর্যায়ে লীনা বলে উঠে,

‘তোকে তো একটা কথা বলা হয়নি, পুতুল। আমি না তোকে না জানিয়েই একটা কাজ করে ফেলেছি।’

পুতুল সন্দিহান চোখে চেয়ে বলল,

‘কী কাজ?’

‘আসলে গত পরশু আমাদের ভার্সিটিতে একটা গানের রিয়েলিটি শো থেকে লোক এসেছিল, ভার্সিটিতে যারা গান গাইতে ইচ্ছুক তাদের একটা লিস্ট নিয়ে গিয়েছেন; অডিশনের জন্য। সেখানে আমি তোর নামটাও দিয়ে দিয়েছি। আগামী মাসের পাঁচ তারিখ অডিশন। আমাদের ভার্সিটিতেই হবে। তুই প্লিজ অংশগ্রহণ করিস।’

চোখ জোড়া গোল গোল করে চাইল পুতুল। কথাটা বিশ্বাসযোগ্য ঠেকল না। অতি মাত্রায় বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞেস করল,

‘কী বলছিস এসব?’

‘হ্যাঁ, দোস্ত। তুই তো ছিলি না, আর আমি তখন অনেকবার কলও দিয়েছিলাম তোকে। কলটাও তুই ধরিসনি। আর এত বড়ো একটা সুযোগ আমি কী করে হাতছাড়া হতে দিতাম, বল? তুই না সবসময় বলতি, গানটা তোর ভীষণ পছন্দের? তাই এখন যখন সুযোগ এসেছে, তখন সুযোগটাকে কাজে লাগা। আমাদের ভার্সিটির অনেকে নাম দিয়েছে। একবার অডিশনে টিকে গেলে জেলা পর্যায়ে যেতে তোকে আর কেউ আটকাতে পারবে না।’

পুতুল একপল ভেবে বলল,

‘কিন্তু, সারাজ যদি রাজি না হয়?’

‘হবে না মানে? অবশ্যই হবে। তুই আজই কথা বল ভাইয়ার সাথে।’

পুতুল চিন্তিত ভঙ্গিতে মাথা নাড়িয়ে বলল,

‘আচ্ছা।’

সন্ধ্যা পড়তেই লীনা আবার বাড়ি ফিরে গেল। পুতুল ছাদ ছেড়ে এল মায়ের রুমে। বাবা ফিরেছেন কিছুক্ষণ আগেই। বাবার জন্যও বেশকিছু জিনিস এনেছে সে। সেগুলো বাবাকে দিয়ে, সে গিয়ে বসল বিছানার এক কোণে। রাবীর আর মেহুল বিছানার অপর পাশে বসে কী নিয়ে যেন কথা বলছে। এর মাঝেই পুতুল বলে উঠল,

‘আমার একটা কথা বলার ছিল?’

রাবীর, মেহুল একসঙ্গেই তার মুখের দিকে দৃষ্টিপাত করে। মেহুল জিজ্ঞেস করে,

‘কী কথা?’

পুতুল একটু সময় নিয়ে ভেবে বলল,

‘আসলে মা, লীনা একটা গানের কম্পিটিশনে আমার নাম দিয়ে দিয়েছে। আমি জানতাম না। আজকেই ও বলল। আগামী মাসের পাঁচ তারিখ নাকি অডিশন। এখন তোমরা কী বলো?’

মেহুল রাবীরের দিকে চাইল। রাবীর সবসময় তাকে বলত, পুতুল নাকি তার মতোই চমৎকার এক গানের গলা পেয়েছে। পুতুল যখন সুর টানত মেহুলের মস্তিষ্কে তখন তার গানের সময়গুলোর স্মৃতি বিচরণ চলতো। শাশুড়ির কথা রাখতে তার তো আর গান গাওয়া হলো না। এখন মেয়ের বেলাতেও এমন কিছু হোক, সে চায় না। তাই নির্লিপ্ত সুরে বলল,

‘অবশ্যই গান গাইবি তুই। মন প্রাণ দিয়ে গান গাইবি। আমার স্বপ্ন তুই পূরণ করবি। পারবি না, মা?’

পুতুল এতটাও সম্মতি আশা করেনি। খুশিতে অন্তর নেচে ওঠল। বলল,

‘অবশ্যই পারব, মা। কিন্তু, মামনি আর সারাজ কি রাজি হবেন?’

‘ওদের সাথে তুই কথা বল। আমার বিশ্বাস, ওরা রাজি হবে।’

_____

বাড়ি এক ভৃত্য তখন সেই রুমে এসে বললেন,

‘খালা, নিচে ছোট সাহেব আসছেন।’

“ছোট সাহেব” মানে সারাজ, সেটা সবাই জানে। তাই খালার সাথে সাথে মেহুল আর পুতুলও পা বাড়াল সিঁড়ির দিকে। মেহুল সারাজের কাছে গেলেও পুতুল ঠাঁই দাঁড়িয়ে রইল সিঁড়ির কোণে। মেহুলকে সারাজ সালাম করল। তারপর ভালো মন্দ জিজ্ঞেস করল, অথচ পুতুল এক চুলও জায়গা ছেড়ে নড়ল না। কথা শেষ করে মেহুল পা বাড়াল রান্নাঘরে উদ্দেশ্যে, নাস্তা বানাতে। সারাজের তীক্ষ্ণ চোখের দৃষ্টি ততক্ষণাৎ আপতিত হলো পুতুলের উপর। দুহাত পকেটে পুরে সে বুক টানটান করে দাঁড়াল। পুতুল ড্যাবড্যাব করে চেয়ে বোঝার চেষ্টা করছে, ‘সে কি রেগে আছে?’ কিন্তু সারাজের মুখ দেখে ক্লান্ত বৈ আর কিছুই মনে হচ্ছে না। সারাজ চিবিয়ে চিবিয়ে জিজ্ঞেস করল,

‘কাকে বলে এখানে এসেছিস?’

চলবে…..

#শেষটা_সুন্দর(সিজন-২)
#জান্নাতুল_ফারিয়া_প্রত্যাশা
৪৫।

পুতুল এক কদম এগিয়ে এল। ঘন পল্লবে বেষ্টিত আঁখি যুগল পরপর ঝাপটে বলল,

‘তুমি কি কোনো কারণে রেগে আছো, সারাজ?’

‘এখানে আসার আগে আমাকে বলে আসিসনি কেন?’

‘মামনিকে বলেছিলাম তো।’

‘আমাকে বলিসনি কেন?’

পুতুল চোখ সরিয়ে অন্যদিকে চেয়ে বলল,

‘তুমি ব্যস্ত ছিলে, তাই।’

‘আমি ব্যস্ত ছিলাম বলে, নাকি কাল তোর কথা শুনেনি বলে রাগ দেখিয়ে চলে এসেছিস; কোনটা?’

‘না, রাগ দেখাব কেন? আর এটা আমারও বাড়ি, এখানে আসতে কোনো কারণ লাগবে নাকি?’

‘না, সেটা লাগবে না। তবে আসার আগে আমাকে বলে আসবি। আর আজ বলে আসিসনি বলে আমি বর্তমানে ভীষণ রেগে আছি। এই রাগ কমাতে হলে পরপর তিনটা চুমু খাবি। চুমু ছাড়া রাগ কমবে না।’

পুতুল নাক মুখ কুঁচকে বলল,

‘দরকার নেই তোমার রাগ কমার। তুমি থাকো তোমার রাগ নিয়ে।’

বলেই পুতুল সেখান থেকে চলে যেতে উদ্যত হয়। সারাজ ডেকে উঠে বলে,

‘ভেবে বলছিস তো? এখন রাগ কমাতে চাইলে তিনটা চুমুতেই হয়ে যাবে, পরে কিন্তু চুমুর সংখ্যা আরো বাড়বে পুতুল। তাই যা করার ভেবে চিন্তে কর।’

ফের ঘুরে চাইল পুতুল। ক্ষিপ্ত আওয়াজে বলল,

‘তোমার মতো অসভ্য মানুষ আমি আর দুটো দেখিনি।’

হাসে সারাজ। রগড় সুরে বলে উঠে,

‘রুমে যাবি? নাকি এখানেই পারবি?’

পুতুল কোমরে দুই হাত ঠেকিয়ে গর্জে উঠে বলে,

‘উফ, বাজে বকা বন্ধ করো। আমার মাথায় এমনিতেই অনেক টেনশন। তোমার সাথে আমার জরুরি কথা আছে।’

সোফায় গা এলিয়ে দিল সারাজ। ভাব নিয়ে বলল,

‘আগে চুমু, তারপর বাকি সব।’

পুতুল দাঁতে দাঁত পিষে বলল,

‘চুমু খাওয়ার ব্যারাম ধরেছে নাকি তোমার? রাতদিন চব্বিশ ঘন্টা কেবল চুমু চুমু করো কেন?’

‘তুই কি থাপ্পড় খেতে চাস, পুতুল? এমনিতেই অফিস করে বাসায় ফিরে তোকে না পেয়ে মাথা গরম। এখন আবার এসব আজাইরা কথা বলে আমার মাথা আরো গরম করছিস। কী সমস্যা তোর? কথা কম বলে কাজের কাজ কিছু কর। এদিকে আয়, মা রান্নাঘরে আর বাবা উপরে। এখনই মোক্ষম সময়। জলদি আয়।’

পুতুল মাথা চাপড়ে বলল,

‘তোমার জ্বালায় আমি মরি না কেন?’

সারাজ দুঃখি দুঃখি কন্ঠে বলল,

‘হায় হায়! এখনই মরমি কেন? এখনও আরো কতকি করার বাকি; বাচ্চা-কাচ্চা হবে, বাচ্চা-কাচ্চার বিয়ে হবে, নাতিপতি হবে, আমরা নানা নানু, দাদা দাদু হব, তারপরই না মরবি। এখনই মরে গেলে আমার এত বড়ো স্বপ্ন পূরণ হবে কী করে, বলতো?’

পুতুল বিরক্ত গলায় বলল,

‘আরেকটা বিয়ে করে নিও।’

সারাজ ফিচেল হেসে বলল,

‘ভালো আইডিয়া দিয়েছিস। তোর চেনা পরিচিত কেউ আছে নাকি? থাকলে আগে থেকেই তাকে বলে রাখিস যেন, তুই মরলে আমাকে আর কষ্ট করে বউ খুঁজতে না হয়।’

পুতুল এগিয়ে এসে সারাজের পাশেই স্থান নিল। হেসে হেসে বলল,

‘তাই না? বিয়ে করার খুব শখ তোমার? তবে আমি মরলে কেন? এখনই বিয়ে করো। ইসলামে চার বিয়ে জায়েজ। যাও, বিয়ে করে বউ নিয়ে এসো; আমার কোনো আপত্তি নেই।’

কথাখানা সমাপ্ত করেই দাঁতে দাঁত খিঁচে বসল সে। সারাজ যেন এই সুযোগই খুঁজছিল। অকস্মাৎ সে কোমর টেনে নিজের অতি নিকটস্থ করল পুতুলকে। পুতুল আঁতকে উঠে বলল,

‘এই এই, মা চলে আসবেন; ছাড়ো।’

সারাজ ছাড়ল না। উল্টো হাতের বাঁধন আরো দৃঢ় করল। এগিয়ে গেল পুতুলের দিকে। পুতুলের মোচড়ামুচড়ি তীব্র হলো। সারাজও তাই পাল্লা দিয়ে বাড়াল তার স্পর্শের গভীরতা। পুতুল ততক্ষণাৎ সারাজের দুহাত চেপে ধরল। ক্ষিপ্ত সুরে বলল,

‘পাগল হয়েছ?’

ক্রূর হাসে সে। বলে,

‘ছাড়া পেতে চাইলে এক্ষুনি চুমু খা।’

পুতুল ফুঁস করে নিশ্বাস ফেলল। বলল,

‘মা চলে আসবেন।’

‘আসবেন না।’

পুতুল সতর্ক দৃষ্টিতে একবার চারদিক পরখ করে নিল। তারপর একটু এগিয়ে গেল সারাজের দিকে। সারাজের চোখের দৃষ্টি এলোমেলো। সহসা সে ডান গালটা এগিয়ে দিল পুতুলের পানে। পুতুল সলজ্জা সমেত এক গাঢ় চুম্বন আঁকল সারাজের কপোলে। হাসল সারাজ। এবার বাম গালটাও এগিয়ে দিল। পুতুল পুনরায় ঠোঁট বসাল সেই স্থানে। আই-ঢাঁই করে বলল,

‘এবার ছাড়ো।’

‘আরো একটা চুমু বাকি।’

এই বলেই এবার সে তার ওষ্ঠযুগল এগিয়ে দিল তার দিকে। পুতুল দু হাত দিয়ে সহসা সারাজের বুকে ধাক্কা দিয়ে বলল,

‘একদম না। আমি তোমার মতো নির্লজ্জ না, সারাজ।’

সারাজ হেসে ফেলল। বলল,

‘ঠিক আছে। এটা তবে তোলা থাক, রুমে গিয়েই দিস।’

হাঁফ ছেড়ে যেন বাঁচল পুতুল। চট করে উঠে দাঁড়াল। একটু সময় দাঁড়িয়ে কিঞ্চিৎ দূরত্ব রেখে ফের বসল। অতঃপর সারাজের দিকে চেয়ে ইতস্তত সুরে বলল,

‘একটা কথা বলার ছিল?’

মেহুল নাস্তা নিয়ে এল সেই সময়। টি টেবিলে নাস্তা রেখে বলল,

‘তোরা নাস্তা খা, আর কথা বল। আমি উপরে আছি।’

মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানাল দুজন। মেহুল সে জায়গা ছেড়ে প্রস্থান ঘটাতেই সারাজ বলল,

‘বল, কী কথা?’

পুতুল মনে মনে ভেবে সমস্ত বাক্য পরপর সাজিয়ে সারাজকে বলতে আরম্ভ করল। অতি মনোযোগের সহিত সব কথা শুনে সারাজ বলল,

‘তোর গানের ব্যাপারে আমার কোনো বাঁধা নেই, পুতুল। এই ক্ষেত্রে তুই একদম স্বাধীন।’

খুশিতে চোখ জোড়া জ্বলজ্বল করে উঠল পুতুলের। আপ্লুত সুরে বলল,

‘সত্যি?’

‘হ্যাঁ।’

পুতুলের বুক চিরে স্বস্তির নিঃশ্বাস নির্গত হলো। আবার একপল ভেবে চিন্তিত সুরে বলল,

‘তবে মামনি রাজি হবেন তো?’

সারাজ চায়ের কাপে চুমুক বসিয়ে বলল,

‘কেন রাজি হবেন না? অবশ্যই হবেন। আর না হলে আমি আছি না?’

আশ্বস্ত হলো পুতুলের বক্ষঃস্থল। সিঁড়ির মাথায় দাঁড়িয়ে এতক্ষণ তাদের সব কথাই শুনছিল মেহুল। সারাজের কথা শুনে চিত্তপটে প্রশান্তির জোয়ার বইল। তার বেলায় সে তার স্বামীর একচ্ছত্র সমর্থন না পেলেও, তার মেয়ে পেয়েছে। আজ মনে হচ্ছে, তার মেয়ে তার থেকেও ভাগ্যবতী। আর সে জানে, রিতা একজন বান্ধবীর চেয়েও একজন শাশুড়ি হিসেবে অধিক চমৎকার; সে কখনোই পুতুলের গলায় শিকল পরাবে না।

_______

রাতের খাবার খেয়েই পুতুলকে নিয়ে সারাজ বেরিয়ে পড়ে। মেহুল পুতুলকে এক রাতের জন্য রাখতে চাইলেও রিতার ক্রমাগত ফোনের জ্বালায় রাখতে পারেনি। এতদিন পর পুতুল বাড়িতে ফিরেছে, তাই সে কোনোভাবেই এখন পুতুলকে ছাড়া থাকবে না। মায়ের বাসায় পড়ে থাকবে, আগে শাশুড়ির মন পুষুক। এই নিয়ে দুই বান্ধবী একদফা ঝগড়াও করে ফেলেছে। পুতুল দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সেই ঝগড়া দেখেছে আর হেসেছে, তার দুই মা কেমন অবুঝের মতো তাকে নিয়ে ঝগড়া করছেন। আজ মনে হচ্ছে, ভাগ্যিস, সেদিন সেই মহিলা তাকে হাসপাতালে ফেলে গিয়েছিল; নয়তো এমন একটা পরিবার কোথায় পেত সে?

________

বাড়িতে পৌঁছেই সর্বপ্রথম রিতার রুমে গেল পুতুল। পুতুলকে দেখেই খুশিতে মজে উঠল রিতা। হেসে বলল,

‘ভাগ্যিস, ঐ অসভ্য মহিলাটা তোকে ছেড়েছে। নাহলে আজ একটা কেলেঙ্কারি বাঁধিয়ে দিতাম।’

পুতুল ঠোঁট চেপে হেসে বলে,

‘সেই অসভ্য মহিলাটা কিন্তু তোমার বেয়ান লাগে, মামনি।’

রিতা বলে উঠে,

‘আগে বান্ধবী, তারপর সব। এখন বল, তোর মা তখন কী কথা বলতে চাইছিল? ফোনে তো পুরোটা বলেওনি, বলেছে তোর থেকে শোনার জন্য। কী কথা, বলতো?’

পুতুল কিঞ্চিৎ হেসে বলে,

‘একটা জরুরি কথা, মামনি। বলব?’

‘হ্যাঁ, বল না।’

সাদরাজও আছে সেই রুমে। পুতুল ভাবল, এটাই ভালো সময়। দুজনকে একসাথেই উপলব্ধি করানো যাবে ব্যাপারটা। তাই আর সময় না নিয়ে পুতুল সবটা খুলে বলল। সুন্দর মতো গুছিয়ে বলল সবটা। সব শুনে রিতা চোখ মুখ কুঁচকে বলল,

….

চলবে…..

#শেষটা_সুন্দর(সিজন-২)
#জান্নাতুল_ফারিয়া_প্রত্যাশা
৪৬।

রিতার সংকুচিত মুখপানে চেয়ে প্রথম দফায় ভয়ে কুন্ঠিত হলো পুতুলের চিত্ত। মনে মনে আওড়াল, “মামনি আদৌ রাজি হবেন তো?” তবে কয়েক পল অতিবাহিত হতেই, বক্ষঃস্থল নিমিষেই হালকা হলো তার। চিরচেনা এক নিরুপম সুন্দর হাসি প্রস্ফুটিত হলো রিতার অধর কোণে। উচ্ছ্বসিত সুরে সে বলে উঠল,

‘এ তো ভালো খবর। তুই অবশ্যই গান গাইবি। আমাদের কারোর কোনো আপত্তি নেই।’

ঈষৎ কম্পিত বক্ষঃস্থলে নেমে এল শান্তির স্রোত। খুশির রঙ মাখল চোখে মুখে। একবার অতি উৎসাহে চাইল সাদরাজের পানে। সাদরাজের প্রসন্ন হাসিমাখা মুখাবয়ব দেখে, জবাব পেয়ে গেল পুতুল। অফুরন্ত আনন্দে শরীরে অন্যরকম এক শিহরণ জাগল তার। সহস্তে রিতাকে ঝাপটে জড়িয়ে ধরল। আপ্লুত সুরে বলল,

‘তুমি বেস্ট বেস্ট বেস্ট শাশুড়ি। আই লাভ ইউ।’

রিতাও দুহাতে অতি সন্তর্পনে আগলে নিল পুতুলকে। বলল,

‘আই লাভ ইউ টু।’

পুতুল আর বিলম্ব না ঘটিয়ে নিজের রুমের দিকে অগ্রসর হলো। এই খুশির সংবাদখানা এক্ষুণি সারাজ অবধি পৌঁছাতে হবে। একপ্রকার ছুটে রুমে এসে দম নিল সে। সারাজ বিছানায় আধ শোয়া হয়ে বসে মোবাইল দেখছে। পুতুলকে হাঁপাতে দেখে তার দিকে নিগূঢ় দৃষ্টি নিক্ষেপ করে জিজ্ঞেস করে,

‘কী ব্যাপার, এভাবে হাঁপাচ্ছিস কেন? মনে হচ্ছে পেছনে বাঘ ভাল্লুক কিছু তাড়া করেছে।’

পুতুল দুলতে দুলতে এসে সারাজের পায়ের কাছে বসল। অতি উৎসাহের সমেত বলল,

‘মামনিও রাজি, সারাজ।’

স্বস্তি পেল সারাজ। একটু হেলান দিয়ে বসে বলল,

‘বলেছিলাম না, আম্মু রাজি হবেন’ই। তাহলে তোর অডিশন কবে?’

‘আগামী মাসের পাঁচ তারিখ।’

‘ওহ, আজকে ত্রিশ তারিখ। হাতে গুণে আর চারদিন। ভালো মতো প্র্যাকটিস কর তবে।’

__________

অপেক্ষার প্রহর অবশেষে সমাপ্তির পর্যায়ে। আগামীকাল’ই পুতুলের গানের অডিশন। মেয়েটা তাই অতিরিক্ত উত্তেজিত। উত্তেজনার পাশাপাশি এক বিশ্রী রকমের ভয়ও অন্তঃকরণে তার চেপে বসেছে। গানের অনুশীলন বেশ জম্পেশ হলেও, ভয়ের চোটে গোলমাল লাগছে সবকিছু। এই কয়দিন তাকে সারাজ, রিতা, মেহুল আর লীনাসহ সবাই বুঝিয়ে গিয়েছে, ভরসা দিয়েছে। পুতুল তাও তার এই কদর্য ভয়কে কাটিয়ে উঠতে পারছে না। মাইক হাতে গান গাওয়ার অভ্যাস থাকলেও, কখনো তো বিচারকের মুখোমুখি হয়নি; সেই নিয়েই তো তার যত দুশ্চিন্তার বাহার।

আগামীকাল অডিশন বিধায় আজ একটু বেশিই প্র্যাকটিস করছে পুতুল। নিয়ম করে রিতা তাকে কুসুম গরম পানি আর আদা দিয়ে রং চা করে দিচ্ছে, গলা পরিষ্কারের জন্য। মেহুল বারবার ফোন দিয়ে খোঁজ নিচ্ছে তার। মেয়ের চোখে সে যেন নিজের স্বপ্ন পূরণ হতে দেখছে। আনন্দে তাই শব্দবহল খুইয়ে বসেছে যেন।

____________

সন্ধ্যার একটু আগেই বাড়ি ফিরে সারাজ। পুতুলের জন্য হাতে করে নিয়ে আসে একগুচ্ছ লাল গোলাপ। গোলাপের ঘ্রাণ পুতুলের মাত্রাধিক পছন্দ। তাই সারাজের হাতে লাল গোলাপ দেখেই সমস্ত ভয়, চিন্তা নিমিষেই উবে গেল তার। সারাজ ফুলের গুচ্ছ এগিয়ে দেয় পুতুলের দিকে। নিবিষ্ট জড়ানো আওয়াজে বলে,

‘আমার পুতুল জীবনের সব প্রতিযোগিতায় জয়ী হোক।’

সুগভীর, নির্মল এক হাস্যরেখা ফুটল পুতুলের অধর কোণে। হাসি জারি রেখেই বলল,

‘আমিন।’

তারপর সারাজের হাত থেকে ফুলের গুচ্ছটা গ্রহণ করে বলল,

‘ধন্যবাদ।’

সারাজ একটু এগিয়ে এল। ভ্রু নাচিয়ে বলল,

‘শুধু ধন্যবাদ?’

সরু চোখে পুতুল চেয়ে বলল,

‘আর কী চাই?’

সারাজের দুর্জ্ঞেয় দৃষ্টিজোড়া ততক্ষণাৎ আপতিত হলো পুতুলের পাতলা ফিনফিনে ঠোঁটের উপর। আরেকটু এগিয়ে এসে ফিচের স্বরে বলল,

‘যা চাইব তাই দিবি?’

পুতুলের অসেচতন দৃষ্টিও নিক্ষিপ্ত হলো সারাজের পুরু ঠোঁটের অভিলাষে। বুঝতে বাকি নেই, সারাজের ধূর্জটি অভিব্যক্তি। সহসা আরক্ত হলো পুতুলের গাল যুগল। পিছিয়ে গেল সে। বলল,

‘অসভ্য।’

‘আর কত বলবি?’

‘তুমি সভ্য না হওয়া অবধি বলেই যাব।’

‘জীবনেও হব না।’

‘তবে, আমিও তোমাকে আজীবন অসভ্যই বলে যাব।’

সারাজ ড্রেসিং টেবিলের কাছে গেল। হাত থেকে ঘড়ি খুলে রাখল সেখানে। অতঃপর পুতুলের দিকে অটল, নিবিড়, নিগূঢ় দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলল,

‘কালকে এই ঠোঁট দিয়ে গান গাইবি বলে আজকে বেঁচে গিয়েছিস। নয়তো আমাকে অসভ্য বলার শাস্তি অবশ্যই আজ এই ঠোঁট পেত।’

ঠোঁট চেপে রগড় হাসল পুতুল। সারাজ আজ আর ক্ষেপল না। তাকে পাশ কাটিয়ে ঢুকে পড়ল ওয়াশরুমে।

________

রাতে খেতে বসে আরেক ঝামেলার উদয় হলো। পুতুলের আজ গলা দিয়ে কোনোভাবেই খাবার নামছে না। এত চেষ্টা করেও মেয়েটা খেতে পারছে না কিছু। পেটের ভেতর কেমন যেন গুরগুরি করছে সব। একটু পরপর বুকে মোচড় দিয়ে উঠছে। তার সাথে সাথে হাত পাও কেমন যেন ঝিমঝিম করছে। পুতুল তো ভয়ে আছে এই ভেবে যে, আজই এমন অবস্থা; না জানি কাল মাইক হাতে নেওয়ার পর তার কী অবস্থা হয়।

পুতুল কোনোরকমে কিছু খেয়ে উঠে পড়ল। কেউ আর জোর করল না তাকে। সবাই পুতুলের মনের ভীত সন্ত্রস্ত ভাবটা টের পাচ্ছে। তাই এই সময় আর খাবার নিয়ে কেউ তাকে অযথা বিরক্ত করল না। পুতুল রুমে আসতেই, পেছন পেছন হাতে গরম দুধের গ্লাস নিয়ে হাজির হয় রিতা। রিতার দুধ সমেত হাত দেখে বিষন্নতায় ছেয়ে যায় পুতুলের মুখশ্রী। হতাশ সুরে বলে উঠে,

‘এখন আবার দুধও খেতে হবে?’

হাসে রিতা। বলে,

‘জি, অবশ্যই। তাড়াতাড়ি দুধটুকু খেয়ে একটা আরামের ঘুম দে। তাহলে দেখবি, সকাল সকাল মন আর শরীর দুটোই ফ্রেশ লাগবে। তখন গানটাও ঠিক মতো গাইতে পারবি।’

পুতুল নিমিষ চেয়ে রইল রিতার মুখ পানে। বিস্ময়াবিষ্ট সুরে বলে উঠল,

‘তুমি এত ভালো কেন, মামনি?’

রিতা প্রসন্ন হেসে পুতুলের চিবুক নাড়িয়ে বলল,

‘কারণ তুই আমাকে ভালোবাসিস। আর কারোর ভালোবাসার মানুষ কখনো খারাপ হতে পারে না।’

পুতুল স্মিত হেসে জবাব দিল,

‘আমি দোয়া করি, প্রত্যেক মেয়ে যেন তোমার মতো একটা শাশুড়ি পায়।’

পরপর প্রত্যুত্তর করল রিতা,

‘আমিও দোয়া করি, প্রত্যেক শাশুড়ি যেন তোর মতো একটা পুতুল বউ পায়।’

_________

পরদিন অতি প্রত্যুষেই ঘুম ভেঙে যায় পুতুলের। পিটপিট করে চোখ মেলতেই, নিজেকে আবিষ্কার করে সারাজের প্রশ্বস্থ বক্ষে। মাথাটা একটু তুলে সে মোহনীয় দৃষ্টি নিক্ষেপ করে সারাজের মুখপানে। তার এলোমেলো চুলে হাত বুলায়। তারপর একটু এগিয়ে এসে ঠোঁট ছোঁয়ায় তার চওড়া ললাটে। চট করে ঘুম ছুটে যায় সারাজেরও। এক চোখ মেলে ঠোঁট কামড়ে ধরে। পুতুল অতি সন্তর্পনে সরে আসতে চায়, কিন্তু সারাজের দৃঢ় হাতের বাঁধনে সহসা আটকে পড়ে সে। সারাজ এবার দু চোখ মেলে তাকায়। ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করে,

‘ঘুমের মধ্যে সুযোগ নিচ্ছিলি?’

পুতুল ক্ষিপ্ত কন্ঠে বলে,

‘জি না, আমি কারোর কোনো সুযোগ নেই না। আমি অতি ভদ্র মেয়ে।’

‘তা তো দেখতেই পাচ্ছি। সেদিনও ঘুমের মাঝে চুমু খেয়েছিলি, আজও খেলি। তারপরও নিজেকে এত ভদ্র বলে দাবি করছিস কী করে?’

পুতুল কপাল গুঁটিয়ে তাকায়। বলে,

‘আমি দুটো চুমু খাওয়াতেই অভদ্র হয়ে গিয়েছি আর, তুমি যে রাত দিন চব্বিশ ঘন্টা আমাকে চুমু থেরাপি দাও, তখন?’

সারাজ আরেকটু শক্ত করে স্বীয় হাতের বাঁধন। মাথাটা একটু তুলে ফিসফিসিয়ে বলে,

‘চুমু থেরাপি দিলে শরীর সুস্থ থাকে, বুঝলি?’

পুতুল দুহাতে সজোরে সারাজের বুকে ঘুষি মেরে বলে উঠে,

‘না, বুঝিনি। আর বুঝতে চাইও না। ছাড়ো, উঠতে হবে আমাকে।’

সারাজ তাকে ছাড়ল না, বরং তাকে আরো ঘনিষ্ঠ করে বলল,

‘এখন পনেরো মিনিটের জন্য চুমু থেরাপি দিলে, আজকে গানটা আরো ভালো গাইতে পারবি।’

পুতুল বিস্ফোরিত চোখে চেয়ে বলে,

‘না না, আমার এখন কোনো থেরাপি লাগবে না।’

পুতুলের “নাকচ” কি সারাজ আগে কখনো শুনেছে যে, আজ শুনবে? বরাবরের ন্যায় তাই আজও তাকে সারাজের নিকট পরাস্ত হতে হলো।

চলবে…..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে