শূন্যতায় পূর্ণতা পর্ব-২০ এবং শেষ পর্ব

1
1021

#শূন্যতায়_পূর্ণতা
#হীর_এহতেশাম

||শেষ পর্ব||

★ দোতালার সিড়ি বেয়ে নামার জন্য ঘুরে দাঁড়াতেই পেছন থেকে গম্ভীর কন্ঠস্বর ভেসে এলো। ফারহিন দ্রুত ঘুরে দাঁড়ালো। সামনেই তীব্র কে দেখে ফারহিন অবাক হলো! নিজের বিস্ময় চাপা দিয়ে তীব্র কে প্রশ্ন করলো-
“-আপনি এখানে?
“-আমাকে দেখে অবাক হলে নাকি?
“-অবাক হওয়ারই কথা, বাসায় এলেন কখন? আর আপনি ভেতর থেকে আসছেন কিভাবে?
“-এসেছি আগেই, ফারহানার সাথে কথা বলছিলাম।
“-ওর সাথে আপনার কি কথা?
“-ছিলো কিছু।
বলেই তীব্র ফারহিনের দিকে তাকালো। ঢিলেঢালা ফ্রক পরে আছে মেয়েটি। মুখ ভর্তি ব্রণের দাগ। চুল গুলো হালকা বেনি করা। হাত পা ও খানিকটা ফুলে উঠেছে। আগের চেয়ে হালকা মোটা হয়েছে।
ব্রণের দাগ গুলো চেহারায় ফুটে উঠেছে। ফর্সা মুখটা আরো উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। এই বুঝি প্রেগন্যান্সির হাল!! নিজের অজান্তেই এক পা এগোলো তীব্র। ফারহিন একটু পিছিয়ে বলল-
“-আপনার দরকার শেষ হলে যেতে পারেন।
“-কিছু বলার ছিলো। আজ না বলে যাবো না..
“-কি..?
“-তোমার স্বামীর সবচেয়ে জঘন্য সত্য! যেটা তুমি জানোই না।
ফারহিন ভ্রু কুঁচকালো। তীব্রের এমন ধরনের কথা পছন্দ হলো না তার। চেহারায় কাঠিন্যতার আবরণ এনে বলল-
“-বাজে কথা শোনার মত সময় নেই আমার।
“-আমি বাজে কথা বলছিনা। দিদার আঙ্কেল আর কাদের আঙ্কেলের ডেথ এর জন্য আরশই দায়ী। এটা শুধু আমি না, ফারহানা জানে ইভেন খালামনিও জানে। জানোনা শুধু তুমি। তোমার প্রেগন্যান্সিতে কম্পলিকেশন ছিলো বলেই তোমাকে জানানো হয়নি। আর আশ্চর্য হলেও এটা সত্যি যে, সবাই আরশের এই জঘন্য কাজকে তোমার প্রতি তীব্র ভালোবাসা বলে অ্যাখ্যা দিয়েছে।
তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে অন্যদিকে তাকালো তীব্র। ফারহিন তাকিয়ে আছে এক দৃষ্টিতে তার দিকে। যা শুনলো তাতে তার মাথা ঝিমাচ্ছে। বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে যাকে এতটা বিশ্বাস করেছে সে মানুষটিই বিশ্বাস ভেঙ্গে দিয়েছে। আরশ আসলেই কি এসব করেছে? কিন্তু কেন করেছে? ফারহিনের ভাবনায় ফাটল ধরিয়ে তীব্র বলে উঠলো-
“-তোমায় ভালোবাসি ফারহিন। অনেক! তবে আমাকে দিয়ে সবচেয়ে বড় যে ভুলটা হয়েছে তা হলো তোমাকে বিয়ে না করা। আমি যদি সেদিন তোমায় বিয়ে করে নিতাম তাহলে এত কিছু হতোই না। আজ আঙ্কেল বেঁচে থাকতো। সেদিন বন্ধুত্বের পাল্লা ভারী করতে গিয়ে আমি হেরে গেলাম। নিজের কাছে, নিজের ভালোবাসার কাছে। জঘন্য এক মানুষের হাতে তোমায় তুলে দিলাম। আমি বুঝতে পারিনি আরশ এতটা নীচে নেমে যাবে। আরশ মানসিক ভাবে সুস্থ না। যার কারণে ও যেটা বুঝে সেটা নিয়েই থাকে। আরশ ছোট থেকে একা ছিলো বলেই আমি তোমাকে ছেড়ে দিয়েছিলাম যাতে তুমি ওর জীবনের শূন্যতায় পূর্ণতা হয়ে আসো। কিন্তু হলোনা। সব তছনছ হয়ে গেল। তার রিসেপশনের দিন তোমার উপর অ্যাটাক হওয়ার পরে আরশ আঙ্কেল আর তার নিজের বাবাকে মেরে ফেলে। কারণ তাদেরই কোনো শত্রু তোমার উপর অ্যাটাক করেছিলো। তোমার উপর অ্যাটাক করতে তারা চায়নি, আঙ্কেল এর উপর করতে গিয়ে ভুলবশত হয়ে যায়। যার কারণে তুমি আঘাতপ্রাপ্ত হও। তোমার বাবা ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলো। জড়িত না, ওনার কাজই এটা ছিলো। ওনার কাজ ভুল হলেও উনি যা করেছে তা তোমার জন্য করেছে।

ফারহিন কাঁদছে। কাঁদতে কাঁদতে তার নিশ্বাস আটকে আসছে। অনেকদিন পর তার চোখে আবারও বর্ষণের সৃষ্টি হলো। ফারহিন কে কাঁদতে দেখে তীব্র বলল-
“-কেঁদো না ফারহিন। সব কষ্ট ভুলে আমার কাছে ফিরে আসো। আমি তোমাকে তোমার মত করেই ভালো বাসবো।
বলেই তীব্র এগিয়ে এলো। তীব্র এগিয়ে আসতেই ফারহিন হাত উঁচু করে থামালো।
“-আপনি আমার কাছে আসবেন না। আমি আপনার ছায়াও আমার জীবনে চাই না। চলে যান..
তীব্র অবাক হলো, কঠোর কন্ঠে বলল-
“-তুমি এখানে থাকতে পারো না। আমি তোমাকে এখানে রেখে যেতে পারবো না। আরশ তোমাকে যেকোনো সময় আঘাত করে বসবে ও তোমার জন্য ক্ষতিকর।
“-আপনি আমার জন্য ক্ষতিকর। আপনার চেয়ে ওই ঢের ভালো, কেন বলুনতো? অন্তত ভালোবাসার নামে কাঁদায়নি সে আমাকে। কিন্তু আপনি? আপনি কখনোই আমাকে ভালোবাসেন নি। যখন ইচ্ছে হলো আসলেন, বুকে টেনে নিলেন, আবার যখন ইচ্ছে হলো ছুড়ে ফেলে দিলেন নাহয় অন্য কাউকে দিয়ে দিলেন। আপনার কাছে আমি পন্যের মত৷ ইচ্ছে হলে কাছে রাখা যায় ইচ্ছে শেষ তো অন্যকাউকে দিয়ে দেওয়া যায়। আমার জীবনে যা হয়েছে সব আপনার জন্য। কারণ সেদিন আপনি এলে এত কিছু হতো না। কিন্তু আপনি আসেন নি। এক পলকে সব বদলে দিলেন। আর এখন ভালোবাসা দেখাতে এসেছেন?
“-ফারহিন আমি জানতাম না আরশ….
তীব্রকে বলতে না দিয়ে থামিয়ে দিলো ফারহিন,
“-জানতেন না? নিজের এত ক্লোজ বন্ধু সম্পর্কে এইটুকু খোঁজ রাখেন নি? আমিতো ফারহানার আনাচকানাচ সব জানি। আপনি তো ছোট থেকেই ওনার সাথে তাহলে কেন জানতেন না? না জেনেই দয়ার সাগরের ঢেউয়ে ভেসে আমাকে তার কাছে দিয়ে দিলেন? আর আজ এসেছেন নিয়ে যেতে? অদ্ভুত…
“-তুমি আমায় ভুল বুঝছো ফারহিন। আমার কথাটা একবার শোনো..
“-একদম এগোবেন না। একদম না…
কথা বলতে বলতে পেছনে পা রাখতেই সিড়ি থেকে পা পিছলে গেল ফারহিনের। গড়িয়ে গেল নিচের দিকে। তীব্র চিৎকার করে ডাকলো-
“-ফারহিইইন…
তীব্র ছুটে যাওয়ার আগেই গাড়ির হর্ণের শব্দ হলো। হয়তো আরশ এসেছে। তীব্র আর সামনে অগ্রসর হলো না। ঠিক যেভাবে বাড়ির পেছন দিক দিয়ে এসেছিলো সেভাবেই চলে গেছে।

বাড়ির দরজায় আ রাখতেই ব্যস্ত হয়ে এগিয়ে আসা পা দুটি থেমে গেল। আরশের হাতে থাকা শপিং ব্যাগ গিফট বক্স সব মাটিতে পড়ে গেল। ড্রয়িংরুমে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা ফারহিন কে দেখে আরশ যেন বরফের ন্যায় জমে গেল। সালমা দ্রুত এগিয়ে গেল। ৮মাসের অন্তঃসত্ত্বা ফারহিন সিড়ি থেকে পড়ে যাওয়ায় মাত্রাতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হচ্ছে। মাথায় আঘাত দেখে সালমা বুঝে গেল সিড়ি থেকে ফারহিন পড়ে গেছে। দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা আরশের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে ডেকে উঠলো সালমা-
“-আরশ! ফারহিনের সেন্স নেই।

আরশের ঘোর কাটলো। আরশ দ্রুত দৌড়ে ফারহিনকে কোলে তুলে নিলো। গাড়ির পেছনের সিটে শুইয়ে দিয়ে দ্রুত ড্রাইভিং সিটে বসে পড়লো। গাড়ি নিয়ে ছুটলো হাসপাতালের উদ্দেশ্যে।

★দরজা খুলে দিতেই সালমা কে এড়িয়ে ফারহিনের ঘরের উদ্দেশ্যে ছুটলো ফারহানা। ফারহানা কিছুদূর এগিয়ে যেতেই সালমা বলে উঠলো-
“-ফারহিন নেই।
“-নেই মানে! কোথায় গেছে? তীব্র ওকে উল্টো পাল্টা কিছু বলে দেয়নি তো?
তীব্র নামটা শুনেই কলিজা ছ্যাত করে উঠলো সালমার। ভ্রু কুঁচকে বিস্ময় নিয়ে প্রশ্ন করলো-
“-তীব্র???
“-হ্যাঁ আন্টি! তীব্র এসেছিলো। ও আমাকে ঘরে আটকে ফারহিনের কাছে গিয়েছিলো। জানিনা কি বলেছে..
“-তুই চুপ করে কেন ছিলি? ও ভেতরে আসলো কিভাবে?
সালমার ক্ষিপ্ত কন্ঠস্বর শুনে চমকে গেল ফারহানা। বলল-
“-ফারহিন কোথায় আন্টি…
“-হাসপাতালে! আমি এসে দেখলাম ও নিচে পড়ে আছে। আরশ হাসপাতালে নিয়ে গেছে জানিনা কি হবে মেয়েটার।
ফারহানা ধপ করেই ফ্লোরে বসে পড়লো। অস্ফুটস্বরে বলে উঠলো-
“-তীব্র!!

ফারহিনের প্রেগন্যান্সির ৮মাস৭ দিন চলছে। প্রেগ্ন্যাসিতে নানানরকম সমস্যা ছিলো বলে আরশকে কিছুই বলতে দেয়নি সালমা। খারাপ প্রভাব পড়বে এই ভেবে ফারহানাও যথেষ্ট বুঝিয়ে শুনিয়ে রেখেছিলো। আরশ বলেনি, নিজের করা কাজ গুলোর স্বীকারোক্তি ফারহিনের সামনে রাখেনি। ভেবেছিলো বাবু চলে আসার পর ঠান্ডা মেজাজে সবটা বলবে। কিন্তু এক মুহুর্তেই বদলে গেল সবটা।

৩ ঘন্টা যাবত পায়চারি করছে ওটির সামনে আরশ। সালমা আর ফারহানা আসতেই ছুটে গিয়ে নিজের মধ্যে দমিয়ে রাখা অস্থিরতা কিছুটা প্রকাশ করলো আরশ। সালমা কিছুতেই কিছু বলে তাকে শান্ত করাতে পারলো না। হুট করেই নার্স বেরিয়ে এলো। আরশ দ্রুত উঠে ওটির সামনে গেল। নার্স একটি ফর্ম এগিয়ে দিয়ে বলল-
“-সাইন করুন।
“-কি.. কিসের সাইন?
“-আপনার মেয়ে হয়েছে, মেয়ে যার হাতে দেব তার একটা স্বাক্ষর আর সম্পর্ক এখানে উল্লেখ করতে হবে।

আরশ পিছিয়ে গেল। অন্য একটি নার্স সাদা তোয়ালেতে প্যাচানো একটি বাচ্চা নিয়ে বের হলো। সালমা দ্রুত এগিয়ে গেল। আরশের কাধে হাত রেখে বলল-
“-সাইন করো আরশ।
আরশ সালমার দিকে তাকাল। কাঁপা হাতে সাইন করতেই নার্স বলে উঠলো-
“-সম্পর্ক?
আরশ অস্ফুটস্বরে বলে উঠল-
“-বাবা!

নার্স এগিয়ে এসে বাচ্চা আরশের দিকে এগিয়ে দিলো। আরশ ঘুমন্ত শিশুটির দিকে তাকিয়েই হেসে দিলো। মাথার এক পাশে খানিকটা লাল দেখে ভ্রু কুঁচকে তাকালো নার্সের দিকে, নার্স বুঝতে পেরে বলল-
“-আঘাত পাওয়ায় এদিকে একটু রক্তজমাট বেধেছে তবে বাচ্চা সুস্থ আছে হেলদি আছে।
“-আমার ওয়াইফ..? সে কেমন আছে?
“-সরি স্যার! উনি সি সেকশনের মাঝপথেই মারা যান। অতিরিক্ত ব্লিডিংয়ের কারণে ওনাকে আমরা বাঁচাতে পারিনি। উই আর সরি।

নার্সের বলা শেষ কথাটা আরশের কান ঝালাপালা করে দিলো। আরশ ধপ করে ফ্লোরে বসে পড়তেই সালমা সামলে নিলো। বাচ্চার দিকে তাকিয়ে রইলো আরশ, সালমা বলল-
“-আরশ ফারহিন…
“-নেই মা। তোমার মেয়ে আমাকে ধোকা দিয়ে চলে গেছে। আমাকে সুযোগ দিলো না!
“-আরশ!
“-মা ও ভাবলো না আমি ওকে ছাড়া কিভাবে থাকবো। ও আমার দিক ভাবলো না। ও নিজেরটা ভাবলো শুধু নিজেরটা। আমার হাতে এত বড় দায়িত্ব দিয়ে নিজে দেখোনা কেমনভাবে ফাঁকি দিলো। আস্ত একটা ফাঁকিবাজ ও।

আরশ কাঁদছেনা। চোখ গুলো লাল হয়ে আছে। সালমা ফারহানা কেঁদেই চলেছে। ফারহিন আর কখনো আসবেনা, কখনো মা বলে ডাকবেনা। ফারহানা নিজের সবচেয়ে প্রিয় বন্ধুটি হারালো। ফারহানার এক মাত্র আশ্রয়স্থল। কাঁদতে কাঁদতে ফারহানা বলে উঠলো-
“-সব তীব্রের জন্য হয়েছে। উনি আজ না এলে এসব হতোই না। আমার ফারহিন বেঁচে থাকতো..
আরশ ত্রস্তনয়নে তাকালো। ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করলো-
“-তীব্র??
ফারহানা কাঁদতে কাঁদতে সবটা বলে দিলো৷ আরশ উঠে দাঁড়ালো৷ সামনে পা বাড়াতেই সালমা বলল-
“-যত যাই করো ফারহিন কিন্তু আর ফিরে আসবেনা আরশ। নিজের মেয়ের জন্য হলেও সব বাদ দাও। তোমার মেয়ের তোমাকে প্রয়োজন, তাই ওর কথা ভেবে তুমি আর কারো কোনো ক্ষতি করবেনা। তুমি অসুস্থ নও আরশ! তা তুমি প্রমাণ করবে তোমার মেয়েকে রক্ষা করে।

সালমা থামলো। স্ট্রেচারে ফারহিনের লাশ নিয়ে আসা হলো। আরশ ঘুরে দাঁড়ালো। ধীর পায়ে স্ট্রেচারের পাশে গিয়ে দাঁড়ালো। লাশের মুখ থেকে কাপড় সরিয়ে দিতেই আরশ নিজের দাঁতে দাঁত চেপে নিলো। নিশ্বাস আটকে আসছে তার। সামনেই ঘুমন্ত মানুষটি আর কখনো উঠবেনা এটা ভাবতেই আরশ নিজেকে শূন্যতার শেষ শিখরে দেখতে পেল। হাটু ভাজ করে বসে পড়লো স্ট্রেচারের পাশে।
“-এ কেমন পরিস্থিতিতে ফেলে দিলে আমাকে? আমি মেয়ে আসার আনন্দ উদযাপন করবো নাকি তুমি চলে যাওয়ার শোক? কোনটা করা উচিত আমার? তোমার শোক পালন করলে মেয়ের প্রতি অন্যায় হবে, আর মেয়ে আসার আনন্দ উদযাপন করলে তোমার প্রতি অবিচার! আমি কি করবো? তুমি আমার উপর এত অভিমান করলে? এত অভিমান? চলে গেলে কেন তুমি? আমাকে বলার সুযোগ দিলে না। এক পাক্ষিক কিছু হয়না ফারহিন। আমি যা করেছিলাম তোমাকে ভালো রাখতে তোমার পেতে করেছিলাম! কিন্তু লাভ টা কি হলো? আমি দিনশেষে একাই রয়ে গেলাম। আজীবনের মত তুমি আমায় নিঃস্ব করে দিয়ে চলে গেলে। এত কিছু কেন করলাম আমি? কার জন্য করলাম? আমিতো তাকেও ধরে রাখতে পারিনি। আমি আজীবন এই আক্ষেপ নিয়ে কীভাবে বেঁচে থাকবো ফারহিন? মেয়ের জন্মদিন পালন করবো নাকি তোমার শোক?
তোমার কাছে অনেক প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করছে কিন্তু উত্তর তো তুমি দিতে পারবেনা ফারহিন। আমি কখনো নিজের অতীতে ফিরে যাবোনা। আমার সবচেয়ে বড় শাস্তি এটাই। তুমি যেতে যেতে আমায় সবচেয়ে বড় শাস্তিটি দিয়ে গেলে বউ। আমার করা সমস্ত কাজের একটাই শাস্তি তোমার শূন্যতা! আমি সব ছেড়ে দেব ফারহিন, কারণ আমি তোমাকে পাইনি। এতকিছু করে যেখানে তোমাকে পাইনি সেখানে আমার এসবের কোনো মানে হয়না। আমি সব ছেড়ে দিয়ে শুধু একজনের বাঁচবো আমার মেয়ের জন্য। তোমায় একটা কথা বলা হয়নি ফারহিন, আমি তোমাকে কখনোই তোমার জন্য ভালোবাসিনি আমার জন্য বেসেছিলাম। অথচ আজ তোমার জন্যই তোমাকে ছেড়ে দিতে হলো। তুমি এভাবে না গেলেও পারতে ফারহিন। অন্তত আমার এত আক্ষেপ থাকতো না।

শান্ত পরিবেশ, সবার নিশ্বাসের শব্দ শোনা যাচ্ছে। কান্নার শব্দও ভেসে আসছে বাতাসের সাথে। আরশ শেষ বারের মত চোখের পানি মুছে নিলো। উঠে দাঁড়িয়ে ঘুমিয়ে থাকা বাচ্চাটির দিকে তাকালো। তারপর হালকা হেসে বলল-
“-ওয়েলকাম প্রিন্সেস!!

সমাপ্ত….

1 মন্তব্য

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে