শুভ্র নীলের প্রেমপ্রহর পর্ব-২৯

0
1892

#শুভ্র_নীলের_প্রেমপ্রহর
লেখক- এ রহমান
পর্ব ২৯

সকাল সকাল ঘুম ভেঙ্গেই ঈশা দেখল ইভান বিছানায় নেই। উঠে আড়মোড়া ভেঙ্গে বসে পড়ল। এদিক সেদিক তাকাল কোথাও নেই ইভান। ওয়াশ রুম থেকে পানির আওয়াজ আসছে। বুঝতে পারলো ইভান ওয়াশ রুমে। সামনে ঘড়িটার দিকে তাকাল। কেবল সকাল হয়েছে। এতো সকালে ইভান কখনই উঠে না। কিন্তু গত দুই দিন ধরে নিজের রুটিন বদলে ফেলেছে। সকাল হতেই ঘুম থেকে উঠে বাইরে চলে যায়। আর আসে একদম মাঝ রাতে। ঈশা বেশ বুঝতে পারছে এসব নাটক। তার সাথে যাতে কথা বলতে না হয় সেই কারনে এসব নাটক শুরু করেছে। ঈশা দুই দিন ধরে তার নাটক শুধু দেখেই যাচ্ছে কিন্তু কোন কথা বলেনি। বলতেও চায় না। আর বলেও যে খুব একটা লাভ আছে তাও না। ইভান তার সাথে কথা বলবে না সেটা সে জানে। অজথা নিজে থেকে কথা বলতে গেলেই আরও ভাব ধরে বসে থাকবে। তাই ঈশাও এবার নিজেকে এমন ভাবে ব্যস্ত রেখেছে যাতে ইভান বুঝতে পারে তার সাথে কথা বলার সময় ঈশার নেই। ঈশার ভাবনার মাঝেই ইভান বের হয়ে গেলো ওয়াশ রুম থেকে। সোজা আলমারির সামনে দাড়িয়ে নিজের কাপড় বের করতে লাগলো। এমন আচরন করছে যেন সে ছাড়া এই ঘরে আর কেউ নেই। ঈশাও সেরকম ভাব দেখিয়ে উঠে ওয়াশ রুমে চলে গেলো। ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে দেখল ইভান প্রায় রেডি হয়েছে। ঈশা রান্না ঘরে চলে গেলো। এখনও কেউ উঠেনি ঘুম থেকে। ইভান নিজেকে ব্যস্ত প্রমান করতেই এতো সকালে বের হয়ে যায়। যাতে তাদের এই মান অভিমানের বিষয়টা বাসায় কেউ বুঝতে না পারে। ঈশা চা বানাচ্ছে আর ভাবছে ইভান কে কিভাবে জব্দ করা যায়। ইভান এসে টেবিলে বসলো। পানি ঢেলে মুখের সামনে ধরতেই তার ফোন বেজে উঠলো। ফোন ধরে বেশ হেসে হেসে কথা বলছে সে। ইভান কে এমন হেসে হেসে কথা বলতে দেখে সকাল সকাল ঈশার মেজাজটা বিগড়ে গেলো। চা কাপে ঢেলে তীক্ষ্ণ চোখে সেদিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকলো। হঠাৎ করেই মাথায় দুষ্ট বুদ্ধির উদয় হল। বাকা হেসে ইভানের কাপে চিনির বদলে মরিচের গুড়া ঢেলে দিলো। যাতে বুঝতে না পারে তাই ভালো ভাবে মিশিয়ে দিলো। আর নিজের কাপটা আলাদা করে নিয়ে টেবিলে গেলো। ইভান ফোনেই কথা বলছে তখনও। ঈশা পাশের চেয়ারটা টেনে বসে পড়ল। স্বাভাবিক ভাবেই নিজের কাপে চুমুক দিয়ে চা খাচ্ছে। এইদিকে ইভান ফোনে কথা বলতে বলতেই চায়ের কাপটা নিয়ে চুমুক দিলো। গলা পর্যন্ত যেতেই মুখ ভঙ্গি পরিবর্তন হয়ে গেলো। ভ্রু কুচকে একটু ভাবল। স্বাদটা কেমন অদ্ভুত। এরকম চা সে জিবনেও খায়নি। আবারো চুমুক দিলো। কিন্তু এবার মনে হল তার মুখ আর গলা জলে জাচ্ছে। ঈশার দিকে একবার তাকাল। সে খুব স্বাভাবিক ভাবেই নিজের কাপে চুমুক দিয়ে খেয়েই যাচ্ছে। আর এক আঙ্গুলে ফোনে স্ক্রল করছে আর মনোযোগ দিয়ে দেখছে। ইভান আর কথা বলতে পারলো না। ফোনটা কেটে দিলো। জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে। মুখ লাল হয়ে গেছে। নাক চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। অতিরিক্ত ঝালে মাথা ঘুরে যাচ্ছে। কোন কালেই ইভান এতো ঝাল খায়নি। ঈশা জানতো যে ইভান দুই এক চুমুক খাওয়ার পরে সাদের ভিন্নতার কারনে আর খাবে না। তাই সেই আন্দাজ করেই ঝাল দিয়েছিল যাতে দুই একবার খেলেই গলা জলে যায়। ঈশা মুচকি হেসে পাশ থেকে দুধের গ্লাসে কয়েক চামুচ চিনি মিশিয়ে রাখল। ইভান পানির গ্লাসটা হাতে ধরতেই ঈশা সেটা নিয়ে নিলো। জোরে জোরে শ্বাস টানতে টানতে তীক্ষ্ণ চোখে ঈশার দিকে তাকাল। ঈশা এগিয়ে এসে দুই হাতে ইভানের শার্টের কলার চেপে ধরল। ইভান কিছু বুঝে উঠার আগেই তার ঠোটে ঠোট মিলিয়ে দিলো। কলার ছেড়ে এক হাত মাথার পিছনে দিলো। চুল মুঠো করে ধরল। বেশ অনেকটা সময় পর ছেড়ে দিলো। দুজনেই হাপাচ্ছে। ইভান তার ঝালের কারনে হাপাচ্ছে আর ঈশা শ্বাস আটকে যাওয়ার কারনে হাপাচ্ছে। ঈশা স্বাভাবিক ভাবে চিনি মেশানো দুধের গ্লাসটা ইভানের হাতে ধরিয়ে দিয়ে উঠে চলে গেলো। ইভান মুহূর্তটাকে ঠিক ভাবে অনুভব করতে পারলো না ঠিকই কিন্তু সকাল বেলা এরকম একটা ঘটনার জন্য প্রস্তুত ছিল না। হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে থাকলো। ঈশা ততক্ষনে উঠে রান্না ঘরে চলে গেছে।। আর সহ্য করতে না পেরে দুধটা পুরটা খেয়ে নিলো। ঝালটা একটু কমতেই বিষয়টা অনুভব করতে পারলো সে। চোখ বন্ধ করে তৃপ্ত শ্বাস ছেড়ে বেসিনের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। চোখে মুখে পানি দিয়ে কিছুক্ষন দাড়িয়ে ভাবল। সব তার মাথার উপর দিয়ে গেলো। টিস্যু দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে ভাবল এই প্রথমবার ঈশা সকাল বেলা উঠেই তার মেজাজ বিগড়ে দিলেও রাগ করার মতো কোন উপায় রাখল না। প্রথম ইভানের মনে হল তার ঠিক কি ধরনের রিয়াক্ট করা উচিৎ সেটা সে বুঝতে পারছে না।। ঘাড় ঘুরিয়ে একবার রান্না ঘরের দরজার দিকে তাকিয়ে চলে গেলো। ঈশা দরজার দিকে তাকিয়ে হেসে ফেলল।

————
সব কাজ শেষ করে ঈশা ঘরে চলে গেলো। আলমারি থেকে কাপড় নিয়ে ওয়াশ রুমে গেলো গোসল করতে। অনেকটা সময় নিয়ে গোসল শেষ করে বের হয়েই সামনে তাকাতেই চোখ কপালে উঠার উপক্রম ঈশার। ইভান বিছানায় বসে ফোনের দিকে তাকিয়ে আছে। এই ভর দুপুরে ইভান যে বাসায় আসবে সেটা ঈশা কল্পনাতেও আনেনি। কারন রাত ছাড়া সে তো বাসায় আসেনা। আর সবাই ঘুমিয়ে পড়লে তারপর। সকালের কথাটা মনে পড়তেই ঈশা ঠোট চেপে হাসল। ঠিক সেই সময় ইভান চোখ তুলে ঈশার দিকে তাকাল। হাসিটা চোখে পড়লেও তার মুখ ভঙ্গি একদম স্বাভাবিক। আবার চোখ ফিরিয়ে নিয়ে ফোনের দিকে তাকাল। ঈশা দ্রুত পায়ে বারান্দায় চলে গেলো। ভেজা কাপড় মেলে দিয়ে ঘরে চলে এলো। আয়নার সামনে দাড়িয়ে চুল আঁচড়াতে যাবে ঠিক তখনই মাথায় আবার দুষ্ট বুদ্ধি চেপে বসলো। ইভানের থেকে একটু দূরে দাড়িয়ে চুল গুলো ঝাড়া দিলো। সব পানি ইভানের মুখে গিয়ে পড়ল। বিরক্তি নিয়ে ইভান চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে ফেলল। ঈশা আয়নায় সবটা দেখল। ঠোট চেপে হেসে আবার ঝাড়া দিলো। ইভান এবার চোখ খুলে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাল। ঈশা এমন ভাব করলো যেন সে কিছুই বুঝতে পারলো না। ইভান বিরক্ত হয়ে উঠে আলমারির সামনে দাড়াতেই ঈশা অনিচ্ছাতেই ঘুরে গেলো। ইভানের সাথে ধাক্কা খেলো। পড়ে যেতে নিলেই ইভান ধরে ফেলল। ঈশা শক্ত করে ইভানের শার্ট চেপে ধরল। ইভান ঈশাকে সোজা করে দাড় করিয়ে ছেড়ে দিলো। ইভান আলমারি থেকে কাপড় বের করে ওয়াশ রুমে চলে গেলো। ঈশা নিশব্দে হাসল। ভালো করে চুল মুছে নিচে গেলো। টেবিলে খাবার সাজিয়ে রাখতেই ইফতি এসে বসলো। একটা প্লেট বেশী দেখে বলল
–একটা প্লেট আজ বেশী কেন?

ঈশা প্লেট সাজাতে সাজাতেই বলল
–তোর ভাইয়া এসেছে।

ইফতি সামনে তাকিয়েই ইভান কে দেখে বলল
–আরে ভাইয়া তুমি এই সময় বাসায়?

ইভান এসে চেয়ার টেনে বসতে বসতে বলল
–কেন আমার কি এই সময় বাসায় আসতে নিষেধ?

ইফতি হেসে বলল
–না না তা কেন হবে? কয়দিন ধরে তোমার তো দর্শন পাওয়া যাচ্ছিলো না। আজ হঠাৎ এমন কি ঘটনা ঘটল যে তোমার দর্শন মিলল। সেটাই বুঝতে চেষ্টা করছিলাম।

ঈশা স্বাভাবিক ভাবেই গ্লাসে পানি ঢালতে ঢালতে বলল
–খাবার টা টেস্ট করে দেখ তো ইফতি ঝালটা কেমন? আজ কাল মনে হচ্ছে আমি খাবারে খুব বেশী ঝাল দিচ্ছি। রান্না বান্না কি ভুলে গেলাম নাকি বুঝতে পারছি না।

কথাটা কানে আসতেই ইভান আড় চোখে ঈশার দিকে তাকাল। ঈশা খুব স্বাভাবিক। নিজের মতো সব খাবার নিয়ে বসে পড়ল। খাবার মুখে তুলেই ইভান ইফতিকে বলল
–বাবা মা কি বাসায় নাই?

ইফতি ছোট্ট করে বলল
–না। দুজনই গ্রামে গেছে। কাল আসবে।

ইভান ভ্রু কুচকে আনমনে বলল
–আমি জানিনা কেন?

ঈশা তাচ্ছিল্যের সুরে বলল
–বাসার মানুষের খবর জানতে বাসায় থাকতে হয়। দিন রাত বাইরে থাকলে জানা যায়না।

ইফতি সন্দিহান চোখে তাকিয়ে বলল
–ভাইয়া তুমি কোন ভাবে রাতেও বাইরে থাক? আমি তো জানি তুমি রাতে বাসায় চলে আসো।

ইভান ধমক দিয়ে বলল
–তোকে এসব নিয়ে কেউ গবেষণা করতে বলেনি। চুপচাপ খা।

ইফতি খাবারে মনোযোগ দিলো। ইভান পানি খাওয়ার জন্য হাত বাড়াতেই ঈশা গ্লাসটা নিয়ে নিলো। পানিতে চুমুক দিয়ে গ্লাসটা পাশে রাখল। ঈশার গ্লাসটাতে পানি ভর্তি তবুও সে সেখান থেকে পানি খেলো না। ইভান হাত বাড়িয়ে ঈশার গ্লাসটা নিতে গেলেই ঈশা সেটাকেও সরিয়ে একটু দূরে রাখল। ইভান শান্ত ভাবে দেখছে ঈশার সব কাজ কর্ম। কিছু বলছে না। ঈশা এতো কিছু করছে শুধু যাতে ইভান তার সাথে কথা বলে। কিন্তু ইভানও ঠিক করেছে এতো সহজে কথা বলবে না। সেও দেখতে চায় ঈশা আর কি কি করতে পারে। কিন্তু এই মুহূর্তে পানি খাওয়ার জন্য জীবন বের হয়ে যাচ্ছে। তাই উপায় না পেয়ে ঐ গ্লাস থেকে পানি খেলো। ঈশা ঠোট চেপে হাসল। ইভান অতি বিরক্তি নিয়ে আড় চোখে ঈশার কাণ্ড দেখছে। খাওয়া শেষ করে সব গুছিয়ে ঘরে গেলো সবাই। দুপুর বেলা আর কোন কাজ না থাকায় রেস্ট নিবে এখন। ইভান আগেই ঘরে চলে এসেছে। সে বিছানায় শুয়ে টিভি দেখছে। ঈশা এসে অপর পাশে শুয়ে পড়ল। ইচ্ছা করেই খোলা চুল গুলো এমন ভাবে এলিয়ে দিয়ে শুয়ে পড়ল যাতে ইভানের মুখে গিয়ে পড়ে। ইভান চোখ বন্ধ করে ফেলল। কিছুক্ষন ওভাবে থেকে আলতো করে চুল গুলো মুখের উপর থেকে সরিয়ে ফেলে ঈশার দিকে তাকাল। সে উলটা ঘুরে শুয়ে আছে। কিছু বলল না। মুচকি হেসে চুল টেনে দিলো। ঈশা ‘আহ’ শব্দ উচ্চারণ করে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাল। ইভান খুব স্বাভাবিক ভাবেই টিভি দেখছে। ঈশা বুঝতে পারলো ইভান তার চুল টেনেছে। কিন্তু কোনভাবেই সে স্বীকার করবে না। তাই আর কথা না বাড়িয়ে শুয়ে পড়ল। ইভান ঠোট চেপে হাসল।

—————-
আলো অন্ধকারের খেলা। গোধূলি বিদায় নিয়ে সন্ধ্যা নামলো বলে। ইভান ঐ যে এসেছে তারপরে আর বাইরে যায়নি। দুপুরে শুয়ে থাকতে থাকতে একটু ঘুমিয়ে পড়েছিলো। মাত্র ঘুম ভেঙ্গে গেলো। উঠে দেখল ঈশা কোথাও নেই। বুঝতে পারলো রান্না ঘরে আছে। বের হয়ে দেখে ইফতি টিভি ছেড়ে দিয়ে চা খাচ্ছে আর মনোযোগ দিয়ে সেদিকে তাকিয়ে আছে। ইভান চোখ ফেরাতেই দেখল ঈশা রান্না ঘর থেকে বের হচ্ছে। শাড়ির আঁচলটা কোমরে গুঁজার কারনে কোমরের অনেকটা দৃশ্যমান। ইফতির দিকে একবার তাকিয়ে সেদিকে এগিয়ে গেলো ইভান। রান্না ঘরের দরজার সামনে দাড়াতেই ঈশার মুখোমুখি হল। ঈশা শান্ত চোখে ইভানের দিকে তাকিয়ে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে যাবে তখনই ইভান নিজের পা বাড়িয়ে দিলো। পায়ের সাথে পা লেগে পড়ে যেতে নিলেই ইভান ধরে ফেলল কোমর জড়িয়ে। ঈশা থেমে গেলো। ঘাড় ঘুরিয়ে ইভানের দিকে তাকাল। সামনে তাকিয়েই ঈশার কোমর থেকে আঁচলটা খুলে দিলো সে। অনেক জোরে কোমরে চিমটি কাটতেই ঈশা চিৎকার করে উঠলো। ইফতি ঘাড় বেকিয়ে তার দিকে তাকিয়ে বলল
–কি হয়েছে? চিৎকার করলে কেন?

ঈশা একটু অপ্রস্তুত হয়ে বলল
-কিছু না। এমনিতেই।

ইফতি আর কথা বাড়াল না। টিভির দিকে মনোযোগ দিলো। ঈশা তীক্ষ্ণ চোখে ইভানের দিকে তাকাল। ঠোটে জ্বালাময়ী হাসি দেখে ঈশার মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো। দ্রুত পা ফেলে ইফতির কাছে এসে ছুরি আর আপেল হাতে নিয়ে কাটতে গেলো। ইভান রান্না ঘরের দরজায় দাড়িয়ে দেখছে। রাগ করেই জোরে চাপ দিতেই ঈশার হাত কেটে গেলো। ইভান দৌড়ে এসে হাত ধরে ফেলল। রক্ত বের হচ্ছে। ইফতি সেদিকে তাকিয়ে বলল
–অনেকটা কেটে গেছে। আমি ডেটল আর তুলো আনছি।

বলেই চলে গেলো। ইভান চেপে ধরে আছে তবুও রক্ত বের হচ্ছে। ইভান রক্তিম চোখে ঈশার দিকে তাকিয়ে আছে। ঈশা চোখ তুলে তাকাতেই ভয় পেয়ে চোখ নামিয়ে কাদ কাদ কণ্ঠে বলল
–আমি ইচ্ছা করে কিছু করিনি। বুঝতে পারিনি কিভাবে কেটে গেছে।

কথাটা শেষ করতেই ইভান ঈশার গালে একটা থাপ্পড় মারল। ঈশা হা করে তাকিয়ে আছে। থাপ্পড় টা এতটাই আস্তে ছিল যে ঈশা একটুও ব্যাথা পায়নি। সেটা নিয়েই সে ভাবছে যে থাপ্পড় মারল কিন্তু এতো আস্তে কেন। এর মাঝেই ইফতি এসে পড়ল। ইভান যত্ন করে ব্যান্ডেজ করে দিলো। ইফতির ফোন আসায় সে ঘরে চলে গেলো। ঈশা আবারো চোখ তুলে ইভানের দিকে তাকাতেই তার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দেখে ভয়ে চোখ নামিয়ে নিলো। ইভান মুচকি হেসে যে গালে থাপ্পড় দিয়েছিল সেই গালে আলতো করে চুমু দিলো। ঈশা একবার ইভানের দিকে তাকাল। ঠোটের কোনে মৃদু হাসি। ঈশাও একটু হেসে ইভানের বুকে মাথা রাখল। ইভান দুই হাতে জড়িয়ে ধরল। বেশ কিছুক্ষন ওভাবেই থাকলো তারা। কিছুক্ষন পর ইভান শান্ত কণ্ঠে বলল
–ঈশা।

ঈশা ছোট্ট করে ‘হুম’ বলতেই ইভান আবার বলল
–তোমার সাথে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা আছে।

ঈশা মাথা তুলে তাকাল। বলল
–আবার কথা?

ইভান ভ্রু কুচকে ফেলল। সন্দিহান কণ্ঠে বলল
–ভয় পাচ্ছ কেন? আবার কি করেছ?

চলবে………

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে