শুধু তুই ৩ পর্ব-২৬+২৭

0
1481

#শুধু তুই ৩
#পর্বঃ২৬
#Tanisha Sultana

ইভা আদি নিধিকে রাতে খাওয়ার জন্য ডাকে। আদির একদম ইচ্ছে করছে না সবার সাথে খেতে। সৌরভটাকে একদম পছন্দ না আদির। নিধির খুব ভালো লাগছে। কতোদিন পরে সবাই এক সাথে খাবে। এতোদিন আদির সাথে বসে খেতো। দুজন খেতে ভালো লাগে না। টম নিধির পায়ের কাছে বসে লেজ নারাচ্ছে। টমেরও খিধে পেয়েছে। সেই তখন খেয়েছিলো। আদি বিছানায় ঘাপটি মেরে বসে আছে।
“আমি খেতে গেলাম।
বলে নিধি যেতে নেয়।
” দাঁড়াও
আদি দাঁড়িয়ে বলে ওঠে। নিধি থেমে যায়
“কি হলো? আদির দিকে তাকিয়ে বলে নিধি।
” এক সাথে যাবো।
নিধি আদির দিকে তাকিয়ে ভেংচি কাটে।
নিধি আর আদি বের হয়। ওদের পেছন পেছন টম যায়।
নিধি সৌরভের মায়ের কাছে এক্সটা থালা চায় টমকে খাবার দেওয়ার জন্য। উনি দেয়। নিধি টমকে ভাত মেখে দিয়ে চেয়ারে বসে। আদির পাশে বসে আছে নিধি। নিধির ডান পাশে আদি। বা পাশের চেয়ারটা ফাঁকা। ইভা আর ইভার বাবা সামনাসামনি বসেছে।

খাবার মাখিয়ে মুখে দিতেই কোথা থেকে সৌরভ এসে বসে পড়ে নিধির পা পাশে। আদি ভ্রু কুচকে তাকায়।
“হাই
এক গাল হেসে নিধিকে বলে সৌরভ। নিধিও একটু হাসে। যাকে বলে জোর করে হাসা।
” মা তারাতাড়ি দাও
প্লেট ঠিক করতে করতে তারা দিয়ে বলে সৌরভ। সৌরভের মা খাবার দেয়। সৌরভ নিধির দিকে তাকিয়ে খাচ্ছে।
আদি পুরোটা সময় সৌরভের দিকে খেয়াল রাখছিলো। সৌরভ কেমন করে তাকিয়ে থাকে নিধির দিকে। মাথায় আগুন জ্বলে ওঠে আদির। কতোবড় সাহস নিধির দিকে নজর দেয়।
কোনোরকমে খাওয়া শেষ করে আদি রুমে চলে যায়। ইভার বাবাও চলে যায়। সৌরভ এবার দম ছাড়ে।
“যাক বাবা দুটো হিটলারই চলে গেছে। তো নিধিরা নিধি কেমন লাগলো আমাদের বাড়িটা।
খাবার মুখে পুরতে পুরতে বলে সৌরভ।
নিধি একবার সৌরভের দিকে তাকায়। তারপর উওর দেয়।
” ভালো।
“কাল কে ছাঁদ দেখাতে নিয়ে যাবো তোমায়। আর হ্যাঁ কাল তোমার জুতোও কিনে দেবো। তুমি নিশ্চয় ভেবেছিলে আমি জুতোর কথা ভুলে গেছি?
” আরে নাহহ এরকমটা ভাবি নি। আমি জানতাম আপনার মনে আছে৷ তাছাড়াও মনে না থাকলেও আমি মনে করিয়ে দিতাম। আমি আবার পাওনা জিনিস না দিয়ে ছাড়ি না।
একটু হেসে বলে নিধি।
ইভা সৌরভের ভাব চক্কর দেখছে।
“ভেরি গুড। আমার এরকম মেয়ে ভীষণ পছন্দ। সৌরভ লাফিয়ে উঠে বলে।
” ওমা শুধু পছন্দ? কিন্তু পছন্দ হয়ে কি হবে? আমি কিন্তু মিঙ্গেল। সো চান্স নেওয়ার চেষ্টা করে লাভ নেই।
বলেই নিধি চলে যায়।
সৌরভ বুকে হাত দেয়।
“ইসসসস এই মেয়েটার কথা গুলো এখানে (বুকের বা পাশে) এসে লাগে কেনো?

নিধি টমকে নিয়ে রুমে যায়। আদি বিছানায় বসে ছিলো। নিধি রুমে যেতেই উঠে দাঁড়ায়।
” ওই ছেলেটার সাথে কিসের এতো কথা?
চোখ মুখ শক্ত করে বলে আদি।
নিধি টমকে টমের বিছানায় দিয়ে এসে খাটে বসতে বসতে বলে।
“তেমন কোনো কথা না। জাস্ট জিজ্ঞেস করছিলো।
” বলছিলাম না ওর সাথে কথা বলবা না?
নিধির পাশে বসে বলে আদি।
“জেলাস?
এক গাল হেসে বলে নিধি।
আদি আমতাআমতা করে। নিধির কথায় চমকে ওঠে। সত্যিই কি আদি জেলাস? কিন্তু কেনো?
এদিক সেদিক চোখ ফেরায় আদি।
” নাহহহ তো। জজেলাস কেনো হবো। ওর স্বভাব মেয়েদের সাথে ফ্লাট করা। ততাই বললাম।
নার্ভাস হয়ে বলে আদি।
“আমার সাথে ফ্লাট করা ওতো সহজ নয়। জুতোটা নিয়ে নেই তারপর ফ্লাট করা বের করবো।
নিধি পা নাচিয়ে বলে।
” তোমার যত জুতো লাগে আমি দেবো। কিন্তু তুমি ওর থেকে নেবে না।
নিধির দুই বাহু ধরে ঝাঁকিয়ে গর্জে উঠে বলে আদি।
নিধি ভয় পেয়ে যায়। বুক ধক করে ওঠে।
আদির চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে। কপালে ঘাম লেপ্টে আছে।
“আআপনি এতো রেগে আছেন কেনো?
নিধি ভয়ে ভয়ে বলে।
আদি নিধির কাঁধ ছেড়ে দেয়। চোখ বন্ধ করে রাগ কমানোর চেষ্টা করে। নিধি বুকে থু থু নেয়। জোরে শ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করে নেয়।
” কিছু হয়েছে?
নিধি প্রশ্ন করে।
“তুমি সৌরভের সাথে মিশবা না। দাঁতে দাঁত চেপে বলে আদি।
” আমি তো ওট সাথে মিশি না জাস্ট কথ
বলতে বলতে আদির চোখের দিকে তাকিয়ে থেমে যায় নিধি। আদি আগুন চোখে তাকিয়ে আছে নিধির দিকে। নিধি ভয়ে একটা ঢোক গিলে।
“আর কখনো মিশবো না। দুই কানে হাত দিয়ে কাঁদো কাঁদো ফেস করে বলে নিধি।
আদি আলতো হাসে। কিন্তু চোখে মুখে এখনো রাগ রয়ে গেছে।
” মনে থাকবে তো?
“হুমমম থাকবে।
” পরেরবার দেখলে হাত পা ভেঙে রেখে দেবো।
নিধি আর কিছু বলে না। দুইজনই চুপচাপ বসে আছে।
” ঘুমবেন না।
নিরবতা ভেঙে বলে নিধি।
“হুমম
নিধি এক পাশে গুটিশুটি মেরে শুয়ে পড়ে। কোমর ওবদি চাদর টেনে নেয়।
আদি নিধির দিকে তাকিয়ে আছে। নিষিদ্ধ ইচ্ছে গুলো মনের মধ্যে উঁকি দিচ্ছে। ভুলভাল কিছু করে ফেলতে ইচ্ছে করছে।
খুব করে নিধিকে বুকে জড়িয়ে ঘুমতে ইচ্ছে করছে। নিধির নরম কমল কপালে চুমু দিতে ইচ্ছে করছে।
আদি নিজের ভাবনায় নিজেই অবাক হচ্ছে। নিজের প্রতি নিজের রাগ হচ্ছে। নিধির পাশে শুলে অনেক ইচ্ছে জাগবে।
” কি হলো বসে আছেন কেনো? নাকি আমার সাথে ঘুমতে ইচ্ছে করছে না? ইচ্ছে না হলে থাকার দরকার নেই।
নিধি একরাশ অভিমান নিয়ে বলে।
আদি নিধির অভিমান বুঝতে পারে। দুই পা তুলে নিধির পাশে শুয়ে পড়ে। মাঝখানে কোলবালিশ দেয় আদি। নিধি মন খারাপ করে আদির দিকে পেছন ফিরে শয়।
ভেবেছিলো আদির বুকের ওপর মাথা দিয়ে ঘুমবে। মনা বলে স্বামীর বুকে মাথা রাখলে না কি ভালো ঘুম হয়। তাই তো নিধি ট্রাই করতে চেয়েছিলো।
আদি চাদর টেনে নেয়।
দুইজন দুইদিকে মুখ করে শুয়ে আছে। নিধি অপেক্ষায় আছে কখন আদি ঘুমবে আর ও আদির বুকে মাথা রাখবে। আর আদি অপেক্ষায় আছে কখন নিধি ঘুমবে আর আদি নিধির কপালে চুমু দেবে। দুজনই দুজনের অনুভূতি ইচ্ছে প্রকাশ করতে নারাজ।

কিছুখন পরে নিধি আস্তে আস্তে কোলবালিশটা সরিয়ে নেয়। আদি ঘুময় নি। নিধিকে নরাচরা করতে দেখে চোখ বুজে থাকে। দেখবে নিধি কি করে।
কোলবালিশ এক পাশে রেখে নিধি মাঝখানে এসে শয়। কম্বলের মধ্যে ঢুকে আদির গা ঘেসে। আদি কাত হয়ে শুয়ে আছে। নিধি আস্তে করে আদিকে টান দেয়৷ আদির বুকের কাছ থেকে হাতটা সরিয়ে নিজের মাথাটা আদির বুকে রাখে।
আদির সারা শরীরে শিহরণ বয়ে যায়। অদ্ভুত ভালো লাগা ছুয়ে যায় সারাশরীরে। বুকটা ঠান্ডা হয়ে যায়। মনে হয় জলন্ত আগুনে কেউ ঠান্ডা বরফ দিয়েছে।
নিধি আদির হাতটা টেনে এনে নিধির পিঠে রাখে।
“এভাবে ঘুমতে চাই আমি। এটা আপনি বুঝেন না কেনো?
নিধি বিরবির করে বলে।
আদি শুনে ফেলে। আলতো হাসে। একটু শক্ত করে আকড়ে ধরে নিধিকে। নিধি ভাবে আদি ঘুমের ঘোরেই আকড়ে ধরেছে।
প্রশান্তির হাসি হেসে নিধি ঘুমিয়ে যায়। আদির আর ঘুম আসে না। মুহুর্তেটাকে অনুভব করতে থাকে।
“পৃথিবীর সব থেকে সুখী ব্যক্তি মনে হচ্ছে নিজেকে।

চলবে।

#শুধু তুই ৩
#পর্বঃ২৭
#Tanisha Sultana

এক মনে তাকিয়ে আছে আদি নিধির মাথার দিকে। এক অদ্ভুত মায়ায় জড়িয়ে গেছে আদি। এই এক রত্তির মেয়েটা আদিকে পাল্টে দিচ্ছে। আদি সেটা বেশ বুঝতে পারছে। চাইলেও মেয়েটাকে দুরে সরাতে পারছে না। কিন্তু এই মেয়েটাতো ছোট। এখনো মেচরিটি আসে নি। তাই আদিকে ভালোবাসি ভালোবাসি বলছে আর আদির সাথে থাকছে। কিন্তু যখন বড় হবে ভালো মন্দ বুঝবে তখন তো বুঝতে পারবে এরকম একটা ছেলের সাথে ওর যায় না। এই ছেলে ওর যোগ্য নয়। তখন তো চলে যাবে। যেমনটা জুঁই চলে গেছিলো। তাই আর আদি মায়াতে জড়াতে চায় না।
পুরো জীবনটা পরে আছে নিধির। নিধি যখন ঠিক ভাবে প্রাপ্ত বয়ষ্ক হবে তখন তো আদির চুল পেকে যাবে। নিধি বুঝতে পারবে এরকম বুরোর সাথে সংসার করা যায় না। আদিকে নিজেকে কন্ট্রোল করতে হবে। জড়াবে না নিধির সাথে। নিধির একটা উজ্জ্বল ভবিষ্যতে গড়ে দেবে। তারপর নিধির জীবন থেকে সরে যাবে।
দীর্ঘ শ্বাস ফেলে আদি।
“তুমি যদি আরও কয়েক বছর আগে পৃথিবীতে আসতে বা আমি যদি আরও পরে দুনিয়াতে আসতো তাহলে ভালো হতো। তোমার আমার বয়সের ডিফারেন্স এতোটা না হতো।
ধ্যাত কি সব ভাবছি। এসব ভাবা ঠিক না।।
আদি চোখ বন্ধ করে নেয়।
নিধির মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।

প্রায়,রাত শেষের দিকে চলে এসেছে। এখন পর্যন্ত আদির চোখে এক ফোটা ঘুমের ছিটেফোঁটাও নেই।
ফজরের আজানের শব্দে নিধির ঘুম ভেঙে যায়। নিধিকে নরতে দেখে আদি চোখ বন্ধ করে নেয়। নিধি মাথা উঁচু করে আদির মুখটা দেখে মুচকি হাসে। আর একটু এগিয়ে এসে আদি কপালে লেপ্টে থাকা সিল্কি গুলো হাত দিয়ে এলোমেলো করে দেয়।
” এতো কিউট কেনো আপনি? খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করে। আচ্ছা আপনার কি আমাকে ভলাোবাসতে ইচ্ছে করে না? কেনো করে না? আমি কি সুন্দর না? না কি আপনাকে ইমপ্রেস করতে পারি না?
নাহহহ আমাকে তিথির থেকে টিপস নিতে হবে৷ কি করে আপনাকে আচলে বাঁধবো। আজ থেকেই উঠে পড়ে লাগবো কাজে।
নিধি বিরবির করে বলে।
মুখটা এগিয়ে এনে আদির কপালে চুমু দেয়। আদির বুকের ভেতর তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। আর চোখ বন্ধ করে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। তবুও অনেক কষ্টে আছে।
নিধি আদির থেকে সরে যায়। মাঝখানে কোলবালিশ দিয়ে অন্য পাশে শুয়ে থাকে।

ভোরের দিকে আদির চোখ লেগে আসে। সব চিন্তা ভাবনা বাদ দিয়ে ঘুমিয়ে যায়।
তিথির কাছ থেকে টিপস নেয় নিধি। এখন থেকে তিথির কথা মতো চলবে। তাই আদি নিধিতে মগ্ন হয়ে যাবে। তিথি বলেছে।

সকাল সকাল গোছল সেরে ইউটিউব দেখে শাড়ি পড়ে নেয়। লাল পারে নীল শাড়ি পড়ে। শাড়িটা খুব পাতলা। ঠোঁটে গাড়ো লিপস্টিক কানে নীল ঝুমকো গলায় চেকন স্বর্নের চেইন নাকে সাদা পাথরের ছোট নাক ফুল হাত ভর্তি নীল চুড়ি পায়ে নুপুর। চোখে মোটা করে কাজল পড়েছে। উঁচু হিল পড়ে নেয়।
বেশ লব্ধা দেখাচ্ছে নিধিকে। নিধি হাইট ৫’ আর আদির হাইট ৬’ আদির মাথা ছুঁতে গেলে নিধিকে মোরার ওপর দাঁড়াতে হয়।
আয়নায় নিজেকে নিজে দেখেই নিধি হাজার বার ক্রাশ খাচ্ছে। ফোন নিয়ে ফটাফট কয়েককটা সেলফি তুলে ফেসবুকে পোষ্ট করে নেয়। তারপর হাঁটতে যায়। ওমা নিঅি হাঁটতে পারছে না। শাড়ি উঁচু করে ধরে লাফাতে লাফাতে কিচেনে যায়।
ইউটিউব দেখে শাড়ি পড়ে নিয়েছি কিন্তু শাড়ি পড়ার পর কি করে হাঁটতে হয় সেটা কেনো ইউটিউব এ দেওয়া নেই?
নিধি ইউটিউবকে বকতে বকতে যায়।

কিচেনে সৌরভ আর সৌরভের মা রান্না করছে। নিধির লাফানোর শব্দে ওরা ভ্রু কুচকে নিধির দিকে তাকায়।
“ও মা নিধি তুমি লাফাচ্ছো কেনো?
সৌরভের মা এগিয়ে এসে বলে।
” আর কাকিমা বলো না
ইউটিউব দেখে শাড়ি পড়া শিখে নিয়েছি কিন্তু শাড়ি পড়ে কি করে হাঁটতে হয় এটা ইউটিউব এ নেই। তাই এমন করে হাঁটছি।
বিরক্তি নিয়ে বলে নিধি।
সৌরভের মা বোকার মতো তাকিয়ে থাকে। সৌরভ হা করে তাকিয়ে আছে।
“আমি কফি বানাবো। নিধ একটা লাফ দিয়ে বলে।
” এই না না আমআমি করে দিচ্ছি
সৌরভের মা বলে।
“আমার সুইট কাকিমা
গাল টেনে বলে নিঅি।
সৌরভের মা কফি বানাতে যায়।
” তোমাকে এতো বড় বড় লাগছে কেনো? পা থেকে মাথা পর্যন্ত চোখ বুলিয়ে বলে সৌরভ।
“সত্যি বড় বড় লাগছে। নিধি লাফিয়ে উঠে বলে। সৌরভ আর সৌরভের মা ছিটকে ওঠে।
সৌরভ বুকে থু থু দেয়।
” ইসসসস আমাকে বড় বড় লাগছে। ভাবতেই লজ্জা লজ্জা লাগছে। নিধি লজ্জা পাওয়ার ভঙ্গিতে বলে।
“পাগল হয়ে গেলো না কি? হঠাৎ এমন বিহেব করছে কেনো?
সৌরভ মনে মনে ভাবছে।

” কাকিমা হয়েছে?
এক লাফ দিয়ে একটু এগিয়ে বলে নিধি।
“হ্যাঁ হ্যাঁ হয়েছে।
তারাতাড়ি করে নিধিকে কফির মগ এগিয়ে দিয়ে বলে উনি। নিধি ধন্যবাদ বলে লাফাতে লাফাতে চলে যায়।

রুমে এসে আদির পাশে কফির মগ রেখে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে একবার দেখে নেয়। তারপর আদির পাশে বসে মুচকি একটা হাসি দেয়। কেমন নার্ভাস নার্ভাস লাগছে৷
একটা ঢোক গিলে নেয়।
” ও গো শুনছেন? উঠুন না? ও সুয়ামি উঠুন না।
আদিকে ধাক্কা দিয়ে বলে নিধি।
এরকম ডাক শুনে আদি ধরফরিয়ে লাফ দিয়ে উঠে বসে।
“ককে
এদিক সেদিক চোখ ফিরিয়ে কিছু খোঁজার চেষ্টা করে বলে।
নিধি লজ্জা লজ্জা মুখ করে বসে আছে।
নিধির দিকে চোখ পড়তেই আদি স্তব্ধ হয়ে যায়। এ কাকে দেখছে আদি? এটা কি নিধি?
এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নিধির দিকে। চোখ ফেরানো দায় হয়ে পড়েছে।
আদি ভ্রু কুচকে ফেলে। কারণ নিধি সত্যি সত্যি লজ্জা পাচ্ছে না কিন্তু লজ্জা পাওয়ার ভাব করছে।
” আপনার জন্য কফি এনেছি।
কফির মগটা এগিয়ে দিয়ে বলে। আদি কফির মগটা নেয়। নিধি রেগে যায়। আদির হাত থেকে মগটা নেয়। আদি কপালে দুটো ভাজ ফেলে।
“কি হলো?
” আমি এতো সুন্দর করে সাজুগুজু করেছি। পাক্কা এক ঘন্টা লজ্জা পাওয়ার একটিং করে লজ্জা পাওয়া শিখেছি। আর আপনি নিরামিষের মতো কফির মগ নিলেন।
শুনুন। আমি যখন কফির মগ এগিয়ে দেবো তখন আপনি মগ নেওয়ার বাহানায় আমার হাত ছুঁয়ে দেবেন। আমি লজ্জায় নুয়িয়ে পড়বো। বুঝছেন?
আঙুল তুলে ঝাঁঝালো গলায় বলে নিধি।
আদি হাবলার মতো তাকিয়ে আছে। কি বলছে এই মেয়ে? আদির মাথায় ঢুকছে না? হঠাৎ হলো টা কি?
নিধির পেটের দিকে চোখ আটকে যায় আদির। ফর্সা পেটের ওপর নীল রং। মাতাল হওয়ার জন্য যথেষ্ট। আদি একটা ঢোক গিলে।
“এই কি হলো? কথা কানে যাচ্ছে না।
নিধি বলে।
” তুমি আমার মুখ
নিধি আদিকে থামিয়ে বলে
“একদম বাজে কথা না। আমি যা বলবো তাই।
আদি নিধির কথা শুনে ঢোক গিলে। বেড়াল হঠাৎ সিংহ হলো কি করে?
“আজ আর আদি নিরামিষ থাকতে পারলো না।

চলবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে