#শুধু তুই ৩
#পর্বঃ২৪
#Tanisha Sultana
থরথর করে কাঁপছে নিধি। আদি দুইহাতে নিধির কোমর জড়িয়ে আছে। আদি ছেড়ে দিলেই নিধি পড়ে যাবে। চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে আছে নিধি। ঠোঁট দুটো ঠকঠক করে কাঁপছে। দাঁতে দাঁত লেগে ঠকঠক শব্দ হচ্ছে। নিধির এই রূপ আদি আগে কখনো দেখেনি। এরকম মুহুর্তে আসেও নি। একটা ঘোরের মধ্যে চলে যায় আদি। খুব করে নিধির ওই থরথর করে কাঁপা ঠোঁটটা ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছে করছে। নিধির মুখটায় কেমন নেশা নেশা লাগছে আদির। মনে হচ্ছে নিধির মুখটা একটা মদের বোতল। আদি আস্তে আস্তে নিজের মুখটা একদম নিধির কাছে নিয়ে আসে। নিধির নাকের কাছে আদির ঠোঁট। আদির নিশ্বাস নিধির মুখে আচড়ে পড়ছে। অদ্ভুত শিহরণ বয়ে চলেছে নিধির মধ্যে।
“আআপনি
নিধি কিছু বলতে নেয়। আদি নিধির ঠোঁটে আঙুল রাখে। হা করা মুখটা ওমনিই চুপ হয়ে যায়। চোখ খুলে তাকায় আদির দিকে। বেলকনি দিয়ে আলো এসে পড়ছে আদির মুখে। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে আদির গভীর চোখ দুটো। অদ্ভুত লাগছে আদিকে। নিধি চোখ বন্ধ করে নেয়।
আদি আলতো করে নিধির ঠোঁট জোড়া স্পর্শ করে। স্পষ্ট গভীর না হলেও আদি সরে না। ওভাবেই থাকে। নিধি কেঁদে ফেলে। আদি ঘাবড়ে যায়। তারাহুরো করে মুখটা সরিয়ে নেয়। কোমর থেকে হাত সরিয়ে নিধির দুইগালে হাত দেয়।
“প্লিজ কিস করবেন না। আমি অসুস্থ?
কেঁদে কেঁদে বলে নিধি। আদি ভ্রু কুচকে ফেলে। দম ফাটা হাসি পাচ্ছে আদির কিন্তু হাসিটা আদির মন ওবদিও আসে ঠোঁট হাসে না।
” স্টুপিট
আদি বিরবির করে বলে নিধিকে ছেড়ে দেয়। ছাড়া পেয়ে নিধি বুকে হাত দিয়ে শ্বাস নেয়। আদি নিধির হাত ধরে টেনে খাটে বসিয়ে দেয়। তারপর নিধির হাত থেকে টাওয়াল নিয়ে নিধির চুল মুছিয়ে দিতে থাকে।
“আপনি তো আমাকে চুমু দিয়েই দিলেন এখন
নিধির চোখে আবার পানি টলমল করছে।
” সাট আপ। গাঁধা কোথাকার।
নিধির মাথায় গাট্টি মেরে বলে আদি।
তারপর টাওয়াল ছেড়ে নিধির শার্টের হাতা গুটিয়ে দেয় খুব যত্ন করে। আদিকে অন্য রকম লাগছে। একদম বর বর। খুব ভালো লাগছে নিধির। ইসসস এমনই যদি প্রতিটা দিন হতো। আদি যত্ন করে নিধিকে খাইয়ে দিতো। কোচিং এ দিয়ে আসতো। খুনশুটি করতো সারাদিন। বিকেল হলেই ছাঁদে চলে যেতো আদি আর নিধি। নিধি আদির কাঁধে মাথা রেখো গোধূলি দেখতো। ছোট একটা সুখের সংসার হতো ওদের। যেখানে ভালোবাসায় ভরপুর থাকতো। ওদের ছোট্ট একটা বেবি হতো। এরকম একটা সংসার কবে হবে নিধির?
সব কল্পনা ভাবনা একপাশে রাখে নিধি।
“আজ এতো যত্ন করছেন কেনো?
নিধি আদির দিকে তাকিয়ে শান্ত গলায় বলে।
” কারণ আছে?
কারণ আছে শব্দটা শুনে নিধির মাথায় ধপ করে আগুন জ্বলে ওঠে। কারণে আদি ভালোবাসা দেখাতে এসেছে? নিধি সরে যায় আদির কাছ থেকে। মারাক্তক রেগে যায় নিধি। চোখ দুটো টলমল করে আসে।
“সব সময় কারণ নিয়ে আসেন আমার কাছে? লাগবে না আপনাকে। আসবেন না আমার ধারের কাছে। যখন ইচ্ছে হবে বকবেন আবার ইচ্ছে হলে হাতা গুটিয়ে দেবেন। লাগবেনা আপনার দয়া। নিধি দুর্বল নয়। ” যে মানুষ প্রয়োজনে মানুষ কে ব্যবহার করে সে আর যাইহোক ভালোবাসার যোগ্য হতে পারে না”
রাগে গজগজ করে চিৎকার করে বলে নিধি। আদি হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ এতো রেগে যাওয়ার কারণ বুঝতে পারছে না আদি।
” আপনার জীবনের কি অতীত আছে। কাকে ভালোবাসতেন। তার কাছেই যান। লাগবে না আমার কাউকে।
বলতে বলতে চোখে পানি চলে আসে নিধির।
এই প্রথমবার আদি নিধিকে এতোটা রেগে যেতে দেখলো।
“বলা শেষ
বুকে হাত গুঁজে দাঁড়িয়ে বলে আদি।
” না শেষ না। দয়া দেখাতে আসবেন না আপনি।
“তোমার দয়া দেখানোর কোনো ইচ্ছেও নেই আমার ওকে। দয়া কাকে বলে বোঝো তুমি? না বুঝে আমার মুখের ওপর কথা বলতে আসবা না মাইন্ড ইট
এবার আদিও রেগে যায়। এসেছিলো নিধির মধ্যে নিজের সুখ খুঁজে নিতে আর এই মেয়ে উল্টো বুঝে মোমেন্টটায় নষ্ট করে দিলো।
” আমি আর কিছু বুঝি আর না বুঝি এই টুকু ঠিকি বুঝি কে ভালোবাসে আর কে
বলতে বলতে থেমে যায় নিধি। হেঁচকি তুলে কাঁদে
“আস্ত একটা ইডিয়েট তুমি
” আপনিও আস্ত একটা হনুমান
নিধি বেরিয়ে যায়। আদি কপালে হাত দেয়।
“সব সময় উল্টোটা বুঝে। সেইজন্যই মানুষ বলে বাচ্চা মেয়েদের বিয়ে করতে নেই।
দুপুরের খাওয়া হয় নি কারোই। টম দরজার কাছে দাঁড়িয়ে লেজ নারাচ্ছে। আদি রান্না করছে। নিধি রুমে বসে আছে গাল ফুলিয়ে। রাগ হচ্ছে খুব।
” আচ্ছা আমি এতো রেগে কেনো যাচ্ছি? কে ওই গোমড়ামুখোটা? ও তো কেউ না। হনুমানটা মরুক আমার কি? না না মরবে কেনো? আমি তো বিধবা হয়ে যাবো। বেঁচে থাকুক। কিন্তু আমি ওনার সাথে কথা বলবো না। ইগনোর করবো ওনাকে। আমার কি সম্মান নেই। ভালোবাসি বলেই এমন করে তো বাসবো না আর ভালো।
নিধি বিরবির করে বলে।
আদি রান্নার ফাঁকে ফাঁকে নিধির রুমের দিকে উঁকি মারে। কিন্তু নিধির পাত্তা নেই। কয়েকবার দরজার কাছ থেকে ঘুরেও গেছে।
“নিধি বাইরে এসো
আদি গলা উঁচু করে ডাকে নিধিকে। নিধির খবর নেই।
” খাবার ঠান্ডা হয়ে যাবে তারাতাড়ি এসো। আমি আবার অফিসে যাবো।
আদি খাবার টেবিলে খাবার সাজাতে সাজাতে বলে।
নিধি ততোখনে রেডি হয়ে বাইরে বের হয়। আদি নিধিকে দেখে এগিয়ে আসে।
” কোথায় যাচ্ছো?
নিধির সামনে দাঁড়িয়ে বলে।
“টম কাউকে বলে দিস। আমি কোচিং এ যাচ্ছি এটা কাউকে বলবো না।
আদি ঠোঁট মেলে। বোকাটা রেগে কোথায় যাবে সেটাই বলে দিলো।
” ওকে যেখানে খুশি যাও। কিন্তু খেয়ে যাও
“টম কাউকে বলে দিস। আমি খাবো না।
মুখ ফিরিয়ে বলে নিধি।
” খেতে হবে। আদি জোর গলায় বলে।
“টম আমি খাবো না বলে দিলাম। দাঁত কটমট করে বলে নিধি।
” টম তোমাকে খাওয়ার জন্য জোর করে নি। আমি বলেছি।
“টম কাউকে বলে দিস। আমি তার সাথে কথা বলবো না।
” ও মা কেনো?
“টম কাউকে বলে দিস বলবো না।
নিধি যেতে নেয়। আদি হাত ধরে। টম বেচারি ওদের পাশে দাঁড়িয়ে একবার নিধির মুখের দিকে তাকাচ্ছে আবার আদির মুখের দিকে তাকাচ্ছে।
” বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে না। শ্বাস ফেলে বলে আদি।
“টম কাউকে বলে দে আমার হাতটা ছেড়ে দিতে। হাত মুচরা মুচরি করে বলে নিধি।
“কান মলে দেবো কি?
আদি কিছুটা রেগে বলে।
নিধি রেগে গাল ফুলায়। আদি ফোস করে একটা শ্বাস নেয়।
” ইডিয়েট। এতো ড্রামা করো কি করে?
“ড্রামা দেখতে আসেন কেনো?
তেঁতে উঠে বলে নিধি।
” ভালোই সাহস বেড়েছে দেখি।
“আমি আগে থেকেই সাহসী
” জানা আছে। এবার খাবার খেয়ে উদ্ধার করো আমাকে।
নিধিকে চেয়ারে বসিয়ে দেয় আদি। নিধি বুকে দুই হাত গুঁজে। কিছুতেই খাবে না।
আদি নিধির প্লেটে খাবার বেরে দেয়।
“খাও
নিধি কথা বলে না।
আদি এবার নিধির পাশে চেয়ার টেনে বসে ভাত মেখে নিধির মুখের সামনে ধরে।
নিধি বিশ্ব জয়ের হাসি দিয়ে খাবার মুখে পুরে নিয়ে লাফাতে থাকে।
” ইয়ে আমি জিতে গেছি
আদি কপালে দুটো ভাজ ফেলে নিধির দিকে তাকিয়ে থাকে।
“কি জিতে গেছে ইডিয়েটটা?
নিধি উরাধুরা লাফাচ্ছে।
আদি গালে হাত দিয়ে তাকিয়ে ভাবছে। হলো টা কি? এতোখন তো রেগে বম হয়ে ছিলো। হঠাৎ কি জিতলো? বসে বসে স্বপ্ন দেখলো না কি? না কি পাগল হলো?
এরই মধ্যে কলিং বেল বেজে ওঠে। নিধি মুখে চওড়া হাসি টেনে টুপ করে আদির গালে চুমু দিয়ে দরজা খুলতে যায়। আদি হাবলার মতো তাকিয়ে আছে।
” হচ্ছে টা কি?
চলবে
#শুধু তুই ৩
#পর্বঃ২৫
#Tanisha Sultana
“কি হলো? বাঁদরের মতো লাফাচ্ছো কেনো?
আদি আবার ভাত মাখাতে মাখাতে বলে। নিধি দেয়ালে সাথে মোবাইল বেঁধে রেখেছিলো। সেটা খুলে আনে।
আদি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে।
” একচুয়েলি আপনার এক্স আমাকে কল করেছিলো। আর সে আমাকে থ্রেড করেছে। বলেছে আপনার থেকে দুরে যেতে। তো আমি বলেছি আপনি আমাকে ভালোবাসেন। সে বিশ্বাস করলো না৷ তো এখন এই ভিডিওটা তাকে পাঠাবো।
এতোখনে নিধির এতো রাগ দেখানোর উদ্দেশ্য বুঝলো।
“বাঁদরামি বাদ দিয়ে খেতে খাওয়াটা শেষ করো।
প্লেটের দিকে তাকিয়ে বলে আদি।
নিধি এসে বসে। আদি ভাত মুখের সামনে ধরে।
” সত্যিই ভালোবাসেনা না? নিধি আদির চোখের দিকে তাকিয়ে বলে।
“নাহহহ একটু বাসি না। আদি সোজাসাপ্টা বলে দেয়।
” পবলেম নাই। মনা বলেছে ভালোবাসাটা আস্তে আস্তে হয়।
নিধি বকবক করছে আর খাচ্ছে। আর আদি মন দিয়ে নিধির কথা শুনছে। ধীরে ধীরে নিধির প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে। বাচ্চামোগুলোকে ভালো লাগে। আদি বেশি করে ভাত মুঠো করে নিধির মুখে পুরে দেয়।
” এতো স্টুপিট কেনো তুমি?
হুট করে বলে আদি। নিধি ভ্রু কুচকে তাকায়। মুখে এতো বেশি ভাত ঢুকিয়েছে যে ভাত না শেষ হওয়া ওবদি কথা বলা যাচ্ছে না। নিধি জোরে জোরে চিবতে যাচ্ছে তাতে লাভ হচ্ছে না। গাল ব্যাথাকরছে।
আদি ঠোঁট মেলে দেয়।
“খাওয়ার সময় বেশি কথা বলতে নেই
নিধি রাগী দৃষ্টিতে তাকায় আদির দিকে।
পাক্কা এক মিনিট পরে নিধির মুখের ভাত ফুরায়।
” আপনি না
নিধি আঙুল তুলে বলতে যায়। আদি আঙুলটা ধরে
“খাবো আমি। প্রচন্ড খিধে পেয়েছে। তোমাকে তো খাওয়ালাম। এবার আমি খাই?
নিধি আর কিছু বলে না। পানি খায়। আদি নিজের জন্য খাবার বেরে খেতে থাকে। কলিং বেল বেজে ওঠে। নিধি গিয়ে দরজা খুলে দেয়। ইভা এক গাল হাসি নিয়ে দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।
” আপু তুমি
নিধি খুশি হয়ে বলে।
ইভা ভেতরে ঢোকে।
“তোমাদের নিতে এসেছি।
” কোথায়?
“মানিকগঞ্জ। আর দুইদিন পরে আমার আর রাফিনের বিয়ে। ইভা লজ্জা পেয়ে বলে।
নিধি লাফিয়ে ওঠে। নিজের দেশে যাবে কতোদিন পরে।
” আমি যেতে পারবো না। কাজ আছে।
মুখে ভাত পুরে চিবতে চিবতে বলে আদি।
“বললেই হলো? তোকেও যেতে হবে। জাস্ট কয়েকদিনের বেপার। না করবি না প্লিজ
মুখটা কালো করে বলে ইভা।
” উনি না গেলে নাই। আমি তো যাবোই। ইসসস কতো সুন্দর করে সাজুগুজু করবো। ঘুরবো ফিরবো। আপু আমি কিন্তু তোমার মতো করেই সাজবো।
হাত নাচিয়ে নাচিয়ে বলে নিধি।
“ঠিক আছে।
এখন তারাতাড়ি গিয়ে প্যাকিং করে নাও।
নিধি এক দৌড়ে চলে যায়। ইভা আদির পাশে গিয়ে দাঁড়ায়।
” তুই যাবি না?
আদি কিছু বলে না৷ নিজের মতো খেতে থাকে।
“তুই না গেলেও পবলেম নাই। তোর বউ তো যাচ্ছে। আমার আবার সুন্দর সুন্দর স্মার্ট স্মার্ট কাজিন আছে। যদি তোর পিচ্চি বউকে পটিয়ে নেয়। তাহলে তো তুই বিধবা হয়ে যাবি রে দোস্ত
আদির পিঠ চাপকে বলে ইভা।
আদি বিষম খায়। নিধি পানি এগিয়ে দেয়। এক নিশ্বাসে পুরো গ্লাস ফাঁকা করে দেয় আদি।
“চল না রে।
অনুরোধের সুরে বলে ইভা।
” হুমমমম
আদি হুম বলাতে ইভা খুশি হয়ে যায়।
বিকেল বেলাতেই ওরা বেড়িয়ে পড়ে ইভাদের বাড়ির উদ্দেশ্য। ইভার পরিবারে বাবা মা কাকিমা আর কাকাতো ভাই ছাড়া আর কেউ নেই।
আদি ডাইভ করছে ইভা আর নিধি পেছনে বসে আছে। নিধিকে খুব খুশি দেখাচ্ছে। আদি ভাইভিং এর ফাঁকে ফাঁকে গাড়ির আয়নায় নিধিকে দেখছে। অদ্ভুত একটা মায় আছে এই মেয়েটার মধ্যে।
ইভাদের বাড়িতে পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাত আটটা বেজে যায়। আদিদের বাড়ি বেশি দুরে নয়। আদি চেয়েছিলো বাড়ি যেতে কিন্তু ইভা আর ইভার মা বাবা যেতে দেয় নি।
আদি নিধি ইভার মা বাবা আর কাকিমার সাথে কথা বলছিলো।
হঠাৎ কেউ নিধির নাম ধরে ডাকে
“নিধিরা নিধি
নিধি আদি দুজনই চমকে যায়। কারণ এখানের কারও নিধিকে চেনা সম্ভব নয়।
নিধি পেছনে তাকিয়ে দেখে সৌরভ এক গাল হাসি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
” তুমি এখানে? ইসসয় জানো আমার মন বলছিলো তুমি আসবে।
নিধির দিকে এগিয়ে আসতে আসতে বলে সৌরভ।
নিধিও একটু হাসে। আদি কপালে দুটো ভাজ ফেলে তাকিয়ে আছে ওদের দিকে।
“তুই ওকে চিনিস? সৌরভের মা বলে।
” হুমম চিনি তো। সেইদিন দেখা হয়েছিলো। জানো মা খুব ভালো মেয়ে।
সৌরভ বলে।
সৌরভের চোখ যায় নিধির পাশে বসা আদির দিকে।
“স্যার আপনি? অবাক হয়ে বলে সৌরভ।
” হুমমম আমি। তোমার বোনের বিয়ে খেতে এসেছি।
“কেনো এসেছেন? আদি চোখ পাকিয়ে তাকায় সৌরভের দিকে
না মামনানে ভালোই হয়েছে এসেছেন। কোনো অসুবিধা হলে আমাকে ডাকবেন।
কথা ঘুরিয়ে বলে সৌরভ।
নিধি বেশ ভালোই বুঝতে পেরেছে আদি আসাতে সৌরভ বেশ বিরক্ত।
” আমি চেন্জ করবো। একটা রুম দেখিয়ে দাও
সৌরভ নিয়ে যায় আদিকে। নিধিও আদির পেছন পেছন যায়। রুমে এসে লাগেজ রেখে সৌরভ বলে
“স্যার আপনার বোনটা কিন্তু খুব মিষ্টি।
নিধি চোখ বড়বড় করে তাকায় সৌরভের দিকে। আদি বিরক্ত হয়ে রাগী গলায় বলে
” ও আমার বোন না বউ। এখন তুমি এখান থেকে যাও
সৌরভ বউ কথাটা খুব স্পষ্ট শুনে নি৷ তাই কোনো রিয়েক্ট না করে নিধির দিকে তাকিয়ে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে চলে যায়।
সৌরভ চলে যেতেই আদি দরজা বন্ধ করে দেয়। শার্টের বোতাম খুলতে থাকে। মারাক্তক গরম পড়েছে। মাথার ওপর সেলিনফ্যানটা ভো ভো করে ঘুরছে। যতটা ফ্যানের আওয়াজ হচ্ছে তার থেকে কম বাতাশ লাগছে।
নিধি ধারাম করে শুয়ে পড়েছে। এতোটা জার্নি করে বেশ ক্লান্ত নিধি।
“সৌরভের সাথে মিশবা না।
নিধির পাশে বসে বলে আদি।
” উনি আমার জুতো ছিড়েছে। জুতো না দেওয়া পর্যন্ত ওনার সাথে মিশবো।
নিধি চোখ বন্ধ করে বলে।
“বললাম তো মিশবা না। আমি কিনে দেবো তোমায় জুতো।
রেগে বলে আদি। নিধি ধাপ করে চোখ খুলে।
” বিয়ের এতোদিন হয়ে গেলো কখনো কিছু দিয়েছেন? দেন নাই। এখন একজনের ওপর জেদ করে আমাকে কিছু দিলে আমি নেবো না। বাচ্চা হতে পারি কিন্তু বোকা না। হেসে হেসেই বলে নিধি। কিন্তু হাসির পেছনে লুকিয়ে আছে একরাশ অভিমান। যা আদি বুঝতে পারে। কিছু বলার মতো ভাষা খুঁজে পায় না।
নিধি একটু এগিয়ে এসে আদির কোলে মাথা রাখে। আদি চমকে যায়।
“থাকি এভাবে? আদির দিকে তাকিয়ে বলে নিধি। নিধি কিছু বলে না। চুপ থাকা সম্মতির লহ্মণ ভেবে নিধি সরে যায় না। আদির হাতটা টেনে এসে নিধি নিজের মাথায় রাখে।
” হাত বুলিয়ে দেন।
আদেশের সুরে বলে নিধি। আদি বাধ্য ছেলের মতো নিধির চুলে বিলি কাটতে থাকে। নিধির মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে।
“জানেন আমার ক্লাসমেট মনা। ওর বর ওকে কতো ভালোবাসে৷। জড়িয়ে ধরে কিস করে আরও কতো কিছু। আপনি করেন না কেনো?
নিধি এরকম কথায় আদি কেশে ওঠে।
“বলেন না?
” তুমি বাচ্চা। আগে বড় হও।
আদি বিলি কাটতে কাটতে বলে।
“আমার সাথে এক বেডে ঘুমান না কেনো?
পাল্টা আবার প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয় নিধি।
আদি এবার কি বলবে বুঝতে পারছে না।
“ভালো লাগে না তাই।
আদি মনের বিরুদ্ধে গিয়ে কথাটা বলে।
” ওহহহহ
নিধি মন খারাপ করে বলে।
“একন থেকে আমরা এক সাথেই থাকবো। আদি বলে। নিধি তাকায় না আদির দিকে। উঠে লাগেজ খুলে জামাকাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে যায়।
” আমার অভিমানী ফুল
আদি আপন মনে বলে
চলবে