শত্রু শত্রু খেলা পর্ব-২৮+২৯

0
636

#শত্রু_শত্রু_খেলা
#পর্ব_২৮
#মেঘা_সুবাশ্রী (লেখিকা)

নাজমা সৌরভের দিকে কোমল দৃষ্টিতে তাকালেন। নিশ্চুপ হয়ে ছেলের কথা শুনলেন। মনের কোণে তারও হতাশা জমলো। আনোয়ারকে কত করে বুঝালো সে কিন্তু লোকটা মানলই না। প্রিয়াকে তিনি দু’বছরের আগে বিয়ে দেবেন না। এ নিয়ে তাদের মধ্যে তুমুল বাক-বিতন্ডার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি তো প্রথমেই আঙ্গুল তুলেছেন শোভার দিকে। আমি যেখানে নিজের মেয়েকে অল্প বয়সে বিয়ে দেবো না সেখানে প্রিয়ার জন্য কিভাবে প্রস্তাব দিতে পারি। কত খোঁড়া যুক্তি! কখন বললাম আমি আমার মেয়েকে বিয়ে দেবো না। তার এইচএসসি শেষ হলেই তো বিয়ে দেবো। এখন প্রিয়ার সাথে সৌরভের আকদ সম্পন্ন করে রাখবো কিন্তু সৌরভ প্রিয়ার সংসার তো আর এখন করতে যাচ্ছে না। পরে আনোয়ারের সাথে তর্কে না পেরে সে শুধু বলেছে তাদের দুইজনের বাগদানের কথা। তাতেও রাজী নন আনোয়ার।

আনোয়ারের একরোখা কথা সে দু’বছর আগে নিজের মেয়েকে বিয়ে দিবেন না। এমনকি এখন কোনোরূপ বাগদান বা আকদ করাবেন না। মেয়ের পড়াশোনার ক্ষতি হোক তিনি চান না। বিয়ে হোক বা বাগদান এসবের পরে মেয়েরা পরাধীন হয়ে যায়।

নাজমা সেই জেদ থেকেই আনোয়ারকে বলেছে ঠিক আছে সে তার ছেলেকে প্রিয়ার বয়সী মেয়েকেই বিয়ে করিয়ে দেখিয়ে দেবো। বিয়ে হলেই পড়াশোনার ক্ষতি হয় না। সে ঐ মেয়েকে পড়াশোনা সব করাবে। তাই তো লুবনাকে দেখতে যাচ্ছে। পছন্দ হলেই পাকা কথা বলে আসবেন।

সৌরভ ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে মা’কে জিজ্ঞেস করলো,

কি হয়েছে আম্মা’ কথার জবাব দিচ্ছো না কেনো? নাজমা ছেলের জবাব না দিয়ে শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে ছেলের মুখপানে চেয়ে আছেন। কি বলবেন তিনি তার তো উত্তরই জানা নাই।

_________________________

গ্রামের বাড়ির উঠোনে এসে নামলো প্রিয়াদের গাড়ি। দীর্ঘ এক বছর পর দাদার বাড়ি এসেছে তারা। আগের থেকে বেশ অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে তার দাদা বাড়ি। দক্ষিণকোণে আরেকটা পাকাঘর নির্মাণ হয়েছে। এটা তার ছোটো চাচ্চুর ঘর। এর আগে এই বাড়িতে দু’টো পাকাঘর ছিলো। একটা দু’তলা বিশিষ্ট যেটাতে তার বাবা আর বড়ো জেঠু থাকে। তার দাদাও সেই দু’তলা পাকাঘরে থাকে। এই ঘর দাদা নিজের হাতে নির্মাণ করেছেন। আরেকটা পাকাঘর সেজো চাচ্চুর।

বাড়ির প্রবেশদ্বারে আগের মতই বাগানবিলাসের গাছটা এখনো আছে। তার পাশে দেয়ালের সাথে লাগানো কৃষ্ণচূড়া গাছে ফুল দিয়েছে। কি অসাধারণ দৃশ্য! তাদের বাড়ি অসংখ্য গাছ-গাছালি দিয়ে ঘেরা। তাই পাখির কিচিরমিচির শব্দ শোনা যায় গাছে গাছে।

উঠোনে পা রাখতেই প্রিয়ার মন আনন্দে ভরে উঠল। কিন্তু এত আনন্দের মাঝেও তার হৃদগহীনে বিষাদের এক তিক্ত ছায়া নেমে এসেছে।

তাদেরকে দেখে তার বড়জেঠি, সেজো আর ছোট চাচীসহ সবাই ছুটে এসেছে। মারিয়া তার জা’ এর সাথে কুশল বিনিময় করলেন। তার কাজিনরা বেশ খুশি তাদের দেখে। সামান্তা বড়ো জেঠুর মেয়ে সে কাজিনদের মধ্যে সবার বড়ো। সে এসে প্রিয়াকে জড়িয়ে ধরলো। কানের কাছে ফিসফিস করে বলল এতদিন পর বুঝি বাড়ির কথা মনে পড়লো। জানিস দাদা ভাই তোদের খুব মিস করে। চল দাদাভাইয়ের ঘরে চল। দাদাভাই তোদের দেখার জন্য সেই সকাল থেকেই মুখিয়ে আছে।

প্রত্যুষ নিজের সমবয়সী কাজিনদের পেয়ে আনন্দে আত্মহারা। সামান্তার ছোট ভাই অভ্র প্রত্যুষকে নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলো।

প্রিয়ার দাদার ঘরে পুরো পরিবারের মিলনমেলা বসেছে। আনোয়ার বাবার সামনে থম মেরে বসে আছে। তার বাবার শারীরিক অবস্থা বেশি ভালো না। জীর্ণশীর্ণ শরীর, চোখ দু’টো কোটরে বসে গেছে, কথাও অনেক অস্পষ্ট। আনোয়ার বাবাকে দেখে হু হু করে কেঁদে উঠলেন। তাকে তো শুধু বলা হয়েছে তার বাবার শরীর সামান্য খারাপ। এত খারাপ অবস্থা বলা হয়নি। তার রাগটা পড়লো গিয়ে তার বড়ো ভাইয়ের উপর। সেই লোকটার জন্যই আজ সে বাড়ি ছাড়া হয়েছে। নয়তো বাবার পাশেই থাকতো। বাবার এত করুণ অবস্থা অন্তত নিজের চোখে দেখতো।

তার বাবা তাকে ইশারায় ডাকলেন। মুখ হা’ করে কিছু একটা বিড়বিড় করলেন। কিন্তু আনোয়ার অনেকবার খেয়াল করেও বুঝতে পারলেন না। শেষে বাধ্য হয়ে সবাইকে বললেন ঘর খালি করতে। বাচ্চারা সব বাইরে চলে গেছে। ঘর মোটামুটি কোলাহল মুক্ত। আনোয়ার পুনরায় বাবার কানের কাছে গিয়ে নিজের মুখটা রাখলেন। তার বাবা অস্পষ্ট সুরে আওড়ালেন,

আর্দ্র আসবে এক সপ্তাহ পর। প্রিয়ার বিয়েটা দিবি তো এবার আর্দ্রের সাথে। ছেলেটা এবার একদম নিজেকে পুরোপুরি সুস্থ করেই ফিরবে কিন্তু।

আনোয়ার বাবার কথা বুঝতে পেরে আৎকে উঠলেন। আনমনে বার কয়েক বিড়বিড় করলেন,

আর্দ্র ফিরে আসবে।
_____________________________

বিধ্বস্ত শরীর নিয়ে সৌরভ বাসায় ফিরলো সন্ধ্যায়। বিষন্ন মনে বাসায় প্রবেশ করতেই চোখে পড়লো প্রিয়াদের বাসায় তালা দেওয়া। উদ্ধিগ্ন মনে ভাবলো প্রিয়ারা আচমকা কোথায় হাওয়া হলো। বাসায় এসে নাজমাকে জিজ্ঞেস করলো। নাজমার মুখে বিষাদের ছায়া। গম্ভীর মুখে বললো আমি জানি না। বাসার বাকিরাও কেউ কিছু জানে না।

মাসুদ সৌরভকে ডাকলেন। সে বাবার সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। মাসুদ ছেলেকে তীক্ষ্ণদৃষ্টিতে একবার পর্যবেক্ষণ করলেন। পরিশেষে বললেন,

তোমার কি আনোয়ারের সাথে কোনো কথা হয়েছিল?

সৌরভ অবাক হয়ে ভাবলো। তার তো আনোয়ার আঙ্কেলের সাথে কোনো কথায় হয়নি। বাবা তাহলে কিসের কথা বলছে। সে ভেবেও কিছু খুঁজে পেলো না। পরে মাসুদকে মাথা নেড়ে বললো,

না ‘তো’, আমার কোনো কথা হয়নি আঙ্কেলের সাথে। কিন্তু কেনো বাবা?

“তাহলে রাতে তোমার কাছে আনোয়ারের কল আসতে পারে?”

সৌরভ গভীর ভাবনায় ডুবে গেলো। আনোয়ার আঙ্কেল কিসের কথা বলবে?
__________________

সামান্তা, প্রিয়া, প্রত্যুষ, অভ্রসহ পুরো কাজিনগুষ্টি মিলে বসে গল্পের আসর জমিয়েছে। সামান্তা নিজের শ্বশুর বাড়ির গল্প, স্বামীর গল্প করছে। তার তিন বছরের দুষ্ট মিষ্টি একটা মেয়ে আছে সামাইরা। সে মেয়ের জন্য ঠিক করে কথায় বলতে পারছে না। এই মেয়ে কথার মাঝে এসে নিজের কথাই বলে। সে ভূত দেখেছে তার দাদু বাড়িতে। সেই ভূত একদম সাদা পানির মত। সামাইরার গল্প শুনে সবাই হো হো করে হেসে উঠে।

সামান্তা কথায় কথায় নিজের ছোট ভাইয়ের কথা প্রিয়াকে বলে উঠে। প্রিয়া জানিস আর্দ্র আসছে আগামী সপ্তাহে।

প্রিয়া আর্দ্রর কথা শুনে চমকে উঠে। এতদিন পর আর্দ্র ফিরে আসছে। বক্ষস্থলে সূক্ষ্ম ব্যথার জায়গায় বরং অস্থির লাগছে তার। আর্দ্র ফিরলে আবার আগের মত জেঠু আর বাবার মধ্যে দ্বন্দ্ব বিবাদ জড়াবে। এসব ভাবতে তার চক্ষুদ্বয় ঝাপসা হয়ে এলো। এক সময় এই আর্দ্রকে দেখলে তার মন কেমনের বৃষ্টি হতো, ফুলের মাঝে হাজারো রঙিন প্রজাপতির মেলা বসতো। আকাশ মাঝে পাখির ডানায় সে ঘুড়ে বেড়াতো। কিন্তু আজ তার সেগুলোর কিছুই অনূভুতি হচ্ছে না। বরং আতঙ্ক তাকে ঘিরে ধরেছে। এই আর্দ্রের জন্যই তার বাবা বাড়ি ছেড়েছে। তার জেঠু আর বাবার সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গিয়েছে।

সেই স্কুল জীবনের এক তপ্ত দুপুরের কথা। সে বাড়ি ফিরছিলো। আর্দ্র তাকে এসে একটা খামসহ চিঠি দিয়ে যায়। চিঠি দেয়ার সময় বলে তাকে একদিনের সময় দিয়েছে শুধু পরেরদিন যেনো তার চিঠির জবাব দিয়ে দেয়। প্রিয়া তো পড়েছে মহা বিপদে। রাতে চিঠি পড়ে অবাক। আর্দ্র তাকে প্রপোজ করেছে।

আর্দ্র তার থেকে গুণে গুণে সাড়ে তিন বছরের বড়ো। বড়ো হলেও সে আর্দ্রের সাথে বন্ধুর মত কথা বলত। প্রিয়া নিজেও আর্দ্রের প্রতি দুর্বল ছিলো। কিন্তু চিঠি পেয়ে দ্বিধায় পড়ে গেলো কি উত্তর দেবে। সে উত্তর দেবার ভয়ে আর্দ্রের সামনে দুইদিন পড়েনি। শেষে আর্দ্র নিজেই একদিন প্রিয়ার রুমে যাই। তখন রাত এগারোটা। প্রিয়া তখন পড়ছিলো।

আচমকা প্রিয়া আর্দ্রকে নিজের রুমে দেখে ভয় পেয়ে যায়। আর্দ্র চুপচাপ বসে থাকে নিজের চিঠির উত্তরের জন্য। অগত্যা প্রিয়া ভয়ের চোটে তাকে হ্যাঁ বলে দেয়। আর্দ্র খুশি হয়ে প্রিয়াকে জড়িয়ে ধরতে যাই। কিন্তু প্রিয়া সরে যাই। আর্দ্র অবাক হয়ে বলে কি ব্যাপার তুই সরলি কেনো? প্রিয়া অস্থির হয়ে বলে দেখ আমরা অবিবাহিত দু’জন। বিয়ের আগে এভাবে কেউ কাউকে জড়িয়ে ধরা উচিৎ নয়।

আর্দ্র চুপচাপ কিছুক্ষণ ভাবলো। তারপর রগড় গলায় বললো যদি বিয়ে করি তখন জড়িয়ে ধরতে পারবো? প্রিয়া উত্তর না দিয়ে বলল প্লিজ আর্দ্র ভাইয়া আমার রুম থেকে এখন যাও।

পরেরদিন আর্দ্র আনোয়ারকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এতেই বাদ সাধে আর্দ্রের বাবা। তিনি বিয়ে তো দূরে থাক ভাইয়ের সাথে সম্পর্ক রাখতেও নারাজ। সেই থেকে তিক্ত হয়ে উঠে সম্পর্ক। এদিকে আর্দ্র ও তার বাবার মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। আর্দ্র ধীরে ধীরে খারাপ সঙ্গের সাথে মিশে নিজেকে বিপথে নিয়ে যাই। বিভিন্ন নেশা থেকে শুরু করে যত নোংরামি ছিলো আর্দ্র সব করতো, এমনকি নারী সঙ্গও।

পরে আর্দ্রের বাবা ছেলেকে সংশোধন করতে রিহ্যাবে পাঠায়। তবে শর্ত ছিল সে ভালো হয়ে ফিরলে প্রিয়াকে যেনো তার সাথে বিয়ে দেওয়া হয়।

সে কথা ভেবে প্রিয়া আৎকে উঠলো। তার যে আর্দ্রের প্রতি কোনো ভালোবাসা নেই। যা ছিলো তা নিছকই ভালোলাগা মাত্র।

সামান্তা প্রিয়ার মজা উড়ালো। এবার তো তুই আমার ভাইয়ের বউ হয়ে যাবি। আমি তোর ননাস হবো। আমাকে তোর পা ধরে সালাম করতে হবে। প্রিয়া সামান্তাকে থামিয়ে দিলো। প্লিজ আপু এগুলো শুনতে ভালো লাগছে না আমার।

সামান্তা হা’ হয়ে আছে প্রিয়ার কথা শুনে।
____________________

আনোয়ার অকূল পাথারে পড়লেন। নাজমার সাথে বাক-বিতন্ডা করে তিনি বাড়ি এসেছেন। শুধু এখন মেয়ে বিয়ে দেবেন না বলে। কিন্তু এখানে এসে উল্টো ঝামেলায় পড়েছেন তিনি। তার বাবাও আর্দ্রের সাথে প্রিয়ার বিয়ের কথা বলছেন। কিন্তু তিনি জানেন তার মেয়ের যোগ্য পাত্র কে?

তিনি মোবাইল হাতে নিলেন কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তির নাম্বারে ডায়াল করলেন। রিসিভ হতেই বললেন,

কেমন আছো বাবা?

অপর পাশের ব্যক্তির মুখে সূক্ষ্ম হাসির রেখা দিলো। যা মোবাইলের এ পাশের ব্যক্তি ঘুণাক্ষরেও টের পেলেন না। সেও জবাব দিলো,

জ্বী, ভালো। আপনি?

আনোয়ার হাসলেন। তিনি ভালো-মন্দ দুটোর মাঝেই আছেন। তবুও বিনয়ের সুরে বললো,

ভালো। তবে তোমাকে কিছু কথা বলতে চাই। একজন বাবা হিসেবে আমি আমার মেয়েকে তোমার হাতে সঁপে দিতে চাই। তবে শর্ত একটাই স্বামী-স্ত্রী হিসেবে এখনো সংসার শুরু করতে পারবে না। আমার মেয়ে আমার কাছেই থাকবে এখন। স্বামী হিসেবে তুমি একবছর পর পূর্ণ অধিকার পাবে। বলো আমার শর্তে রাজি। রাজি হলে বর সেজে পরিবার নিয়ে চলে এসো।

অপর পাশের ব্যক্তি বক্র হাসলো। কি ধঁড়িবাজ শ্বশুর ‘রে তার! একবার মেয়েকে পাই। তারপর এই শ্বশুরের ক্লাস নেবে সে।

চলবে,,,,,,,,,,

#শত্রু_শত্রু_খেলা
#পর্ব_২৯ (বিয়ে স্পেশাল পর্ব)
#মেঘা_সুবাশ্রী (লেখিকা)

আলিশবা গুটিশুটি মেরে গৌরবের বুকে লেপ্টে আছে। গৌরব নিভৃতে নিজের বউকে দেখছে। আলিশবা মাঝে মাঝে চোখ তুলে স্বামীর কাজ দেখে যাচ্ছে আর মিট মিট করে হাসছে। গৌরব আলিশবার থুতনিতে হাত রেখে জিজ্ঞেস করল কি হয়েছে আমার স্নো হোয়াইটের। এভাবে মিট মিট করে কেনো হাসছো? আমাকে কি নতুন দেখছো? গত তিন বছর ধরেই তো দেখে আসছো?

আলিশবা টলমল আঁখিতে স্বামীর মুখ পানে তাকালো। আচমকা ঝর ঝর করে তার নেত্রকোনা থেকে জল পড়া শুরু হলো। গৌরব তার স্নো হোয়াইটকে আরও আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরলো। মুখে আলতো করে চুমু দিয়ে বলল কি হয়েছে এভাবে কেনো কাঁদছো? তোমার আধা-পাগল বর সব সময় তোমার পাশে থাকবে তো কোত্থাও যাবে না। যতই ঝড় আসুক না কেনো সব সয়ে যাবো তবুও তোমার কিছু হবে না। কেঁদোনা প্লিজ।

ক্রন্দনরত আলিশবা কম্পিত গলায় বলল জানো কখনো ভাবিনি আমি এতো সুখী হবো? গৌরব আলিশবার চোখের জল মুছে দিয়ে মাত্রই কিছু বলতে যাবে তখন খট করে দরজায় করাঘাত হলো। ওপাশের ব্যক্তির কথা না শুনেও বুঝে গেছে কে হতে পারে? তাই দরজা খুলে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে আসা ছোট্ট বাবুটাকে খপ করে ধরলো সে। বুকের মধ্যে মিশিয়ে নিলো তার কলিজার টুকরোকে। আরাভকে কোলে নিয়ে তার কানের কাছে ফিসফিস করে বললো,

এভাবে রাতদুপুরে এসে যে পাপাকে ডিষ্টার্ব করেন আপনার কি আর ভাই-বোন লাগবে না আব্বাজান। ঐদিকে আপনার চাচ্চুরও বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। কয়দিন পর আপনার চাচ্চুর বাচ্চা-কাচ্চা এসে তো আপনার দাদা-দাদুর উপর ভাগ বসাবে।

আরাভ কি বুঝলো কি জানে? সে খিলখিল করে হেসে উঠল। আধো আধো বুলিতে আওড়ালো,

দা,,দা বা,,ঘ।
____________________

দো’তলা ঘরের সুবিশাল হলে বসেছে প্রিয়াদের পরিবারের মিলনমেলা। আনোয়ার কোনোরূপ ভণিতা ছাড়াই সবার উদ্দেশ্য বললেন,

আমি প্রিয়ার বিয়ে ঠিক করেছি। বিয়েটা পারিবারিকভাবে আজই সম্পন্ন হবে। বিয়ে হলেও প্রিয়া আমার কাছেই থাকবে। সন্ধ্যায় বরপক্ষ আসবে। তাই এখন যা করার দরকার বাজার থেকে শুরু করে রান্না-বান্না সব করা হবে। খুব বেশি আত্নীয়-স্বজন জানানো হবে না। বরপক্ষ তাদের নিজেদের পরিবার নিয়ে আসবে এই যা। পরবর্তী অনুষ্ঠান প্রিয়ার এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হলে তারপর অনুষ্ঠিত হবে।

এক বাক্যে কথাগুলো বলে দম নিলেন আনোয়ার। তারপর সবার উদ্দেশ্য আবারো বললেন, কারো কোনো দ্বিমত থাকলে বলতে পারো। কিন্তু বিয়ে সম্পর্কিত আমি কিছু শুনবো না। তবে আয়োজন সম্পর্কে কোনো পরামর্শ থাকলে বলতে পারো।

বাকিদের চোখে বিস্ময় আচমকা প্রিয়ার বিয়ে। কিন্তু মুখে কোনো রা’ নেই। হয়তো আনোয়ার ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাই কেউ কোনো প্রশ্ন তুললো না। তবে আর্দ্রর মায়ের চোখে-মুখে আকুতি। তার ছেলেটা আবারও বিপথে চলে যাবে। যদি এসে দেখে প্রিয়ার বিয়ে হয়ে গেছে। তিনি অনেক সাহস সঞ্চার করে বললেন,

ভাইজান, আমার ছেলেটার কথা একবারো ভাব্বেন না। আর্দ্র ফিরে আসলে কি জবাব দিবো?

আনোয়ার তাচ্ছিল্যের হাসি দিলেন। তিনি আর্দ্রর মায়ের প্রতিত্তোরে বললেন,

সেই কথা দু’বছর আগে ভাবলে হয়তো আজকের এই দৃশ্যের জন্মই হতো না। না ছেলেটা বিপথে যেতো, না আমাদের মাঝে তিক্ততার সম্পর্কের দেয়াল হতো। যাই হোক যেটা হওয়ার নয় সেটা নিয়ে আমি আর ভাবতে চাই না। যেভাবে সবাই ভালো থাকতে পারে সেই ব্যবস্থাই করছি। আশা করছি আপনি আর ভাইজান প্রিয়ার বিয়েতে থাকবেন।

আর্দ্রর মা মুখে আঁচল গুজে দিল। কান্নার আওয়াজ যাতে অন্যেরা শুনতে না পায়।

আনোয়ারের ছোট ভাই উঠে দাঁড়ালো। তার কাছে এসে বললো,

মেঝো ভাইয়া, বিয়েটা ছোট্ট পরিসরে হলেও সমাজের কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে দাওয়াত তো দিতে হবে। আনোয়ার ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে কপাল কুঁচকালেন। তোমাদের তাহলে কি জন্য ডাকলাম আর? আয়োজন কিভাবে করতে হবে এজন্যই তো। যাও তুমি গিয়ে দাওয়াত দিয়ে আসো তাদেরকে।

পারিবারিক আলোচনা শেষে আনোয়ার উঠে দাঁড়ালেন। তাকে যে আসল ব্যক্তির সাথে কথা বলতে হবে। তিনি প্রিয়ার রুমে আসলেন।

প্রিয়া বিছানায় গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে। আনোয়ারকে দেখে দ্রুতই উঠে বসলো। বাবাকে এইসময় নিজের রুমে দেখে চমকালো সে। কোমল স্বরে বলল,

আব্বু কিছু বলবে?

আনোয়ার মেকি হাসলেন। আজকের পর থেকে তার মেয়ে অন্যের আমানত হয়ে যাবে। তার জন্য হবে অতিথি মাত্র। বক্ষস্থলে সূক্ষ্ম চিনচিনে ব্যাথা অনুভব করলো। কিন্তু তবুও নিরুপায় সে। সব মেয়েরাই একদিন বাবার বাড়ি ছেড়ে চলে যায় স্বামীর ঘরে। এটাই তো নিয়তি। আনোয়ার মেয়ের হাত দুটো আঁকড়ে ধরলেন। মেয়েকে উদ্দেশ্য করে বললেন,

জানো মা’ আমি কখনই আমার মেয়েটার খারাপ চাইনি। সব সময় ভালোই’টা দেওয়ার চেষ্টা করে এসেছি। আজো তার ব্যতিক্রম নয়। আমি অনেক ভেবে চিন্তে তোমার বিয়ে ঠিক করেছি। বিয়ের কথা শুনে প্রিয়ার বক্ষস্থল কেঁপে উঠলো। তার বিয়ে আচমকাই। সে কিছু বলার আগেই আনোয়ারই বলল আমি জানি তুমি আতংকিত হয়ে পড়ছো আচমকা কেনো তোমার বিয়ে ঠিক করেছি? জানো, মাঝে মাঝে কিছু সিদ্ধান্ত নিজের হাতে থাকে না পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। মনে করো আজকের বিষয়টাও সেইরূপ। তবে চিন্তা করো না, আমি তোমাকে সুপাত্রেই দান করছি। সে তোমার জন্য সবচেয়ে বেশি যোগ্য।

আব্বু আমি জিজ্ঞেস করবো না ছেলেটা কে বা কেনো আচমকা বিয়ে ঠিক করলে। কিন্তু কারন’টা কি আর্দ্র ভাইয়া।

আনোয়ার ছোট্ট করে বললেন, আর্দ্রও একটা কারন মাত্র তবে প্রধান কারন নয়। তুমি পাত্র কে জানতে চাইবে না। প্রিয়া অধীর আগ্রহ নিয়ে বসে আছে পাত্র কে জানার জন্য কিন্তু লজ্জায় জিজ্ঞেস করতে পারছে না। আনোয়ার মেয়ের মনোভাব বুঝতে পারলেন। তাই রগড় গলায় বললেন তুমি কি জানো তোমার পাত্র একজন খুবই শৃঙ্খলাবদ্ধ প্রেমিক। যে প্রেমিকাকে নিজের মনের কথা বলার আগেই প্রেমিকার বাবাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। তাই আমিও সুযোগ বুঝে শর্ত দিয়েছি আমার মেয়ের সাথে প্রেম করা যাবে না। এমনকি তাকে মনের কথাও বলা যাবে না। তার থেকে দুই’শ হাত দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। তখন তোমার ঐ পাগলা প্রেমিক কি বলেছে জানো, তাহলে আপনার মেয়ে যদি অন্য কাউকে মন দিয়ে বসে থাকে। তাহলে আমার কি হবে? তোমার পাগলা প্রেমিক কে তখন বললাম ঠিক আছে তুমি তাকে নজরে রাখতে পারো তবে প্রেম নয়।

প্রিয়া তার বাবার কথা হা’ হয়ে শুনছিলো। মনে মনে বেশ চমকালো। কিন্তু হিসাব মিলাতে পারছেনা। একজনের মুখ তার চোখের সামনে ভাসছে। তাহলে কি সেই লোকটাই?

আনোয়েরের মুখে সূক্ষ্ম হাসির রেখা দিলো। মেয়েকে ভালো করে পরখ করে বললেন। আমি যদি ভুল না হয় এখন যাকে নিয়ে ভাবছো সেই তোমার পাত্র। প্রিয়া বাবার কথায় চমকে উঠলো। তার বাবা তাহলে,, আর কিছু ভাবতে পারলো না। আনোয়ার প্রিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। একদম ভয় পেয়ো না। তুমি সুখী হবে সেইরকম একটা পাত্র এনেছি।

সামান্তার চোখের কোণে জল জমলো। সে জানে তার ভাই প্রিয়াকে কেমন ভালোবাসে। কিন্তু কিছু ঘৃণ্য জিনিস মনে করে চোখের জল মুছলো। প্রিয়ার অধিকার আছে সুখে থাকার। তাই সেও মনে মনে দোয়া করলো প্রিয়া যেনো সুখী হয়।

ঘড়ির কাটায় মধ্যাহ্ন।

প্রীতি হুড়মুড় করে প্রিয়ার রুমে আসলো। বোন কম বান্ধুবীকে জড়িয়ে ধরলো সে। অভিবাদন জানিয়ে বলল, শেষ পর্যন্ত নিজের শত্রুটাকে বেছে নিলি নিজের বর হিসেবে। প্রিয়া ভ্রু কুঁচকালো। মনে মনে শ’খানেক গালি দিলো প্রীতিকে। সে কখনই তাকে শত্রু ভাবতো না। কিন্তু প্রীতি তার মজা উড়ালো বেশ কিছুক্ষণ।

সবাই প্রিয়াকে হলুদ মাখিয়ে তারপর গোসল করালো। গোসল শেষে কাপড় পড়িয়ে তাকে রুমে বসানো হলো। সামান্তা, প্রীতি বসে প্রিয়াকে হাতে মেহেদী লাগিয়ে দিলো। প্রীতি শুধু প্রিয়াকে বার বার খোঁচাচ্ছে তার জামাইয়ের কথা বলে।

বাড়ির সবাই ব্যস্ত প্রিয়ার বিয়ে নিয়ে। মোটামুটি স্বল্প পরিসরে হলেও খাবার আয়োজন কিন্তু বেশ বড়ো আকারে করা হয়েছে। উঠোনে চুলা বানানো হয়েছে। সেখানে বড়ো বড়ো হাড়িতে রান্না বসানো হয়েছে। সামান্তার বিয়ের পর এই দ্বিতীয়বার এই বাড়িতে বিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

সন্ধ্যার আলো ঘনীভূত হওয়ার কিছুক্ষণ পর বরযাত্রী আসলো প্রিয়াদের বাড়িতে।

আনোয়ারসহ সবাই তাদের বরণ করে নিলেন। প্রীতিরা কিন্তু বরের জন্য ছাদে ফুল দিয়ে আলাদা করে স্টেজ সাজিয়ে রেখেছেন। বরের গাড়ি থেকে একজন নয় দু’জন বর দেখে প্রিয়ার চাচা-চাচীরা বেশ অবাক হলেন। এ’কি রকম দেখতে দু’জন বর? তাহলে কোনটা আসল? দু’জন বর একসাথে স্টেজে গিয়ে বসলো? সবাই বলাবলি করলো জামাইয়ের কি জমজ ভাই আছে? আনোয়ার এদের কথা শুনে হাসলেন। গৌরব ছেলেটা এতো ফাজিল। দু’ভাই ইচ্ছে করে সবাইকে বোকা বানাচ্ছে।

আনোয়ার গিয়ে গৌরবকে কান মলে দিলেন। গৌরব মনে মনে লজ্জা পেলেন। সে আনোয়ারের কানের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বললো আঙ্কেল প্রেস্টিজের একটা ব্যাপার স্যাপার আছে। এভাবে কান ধরলে সবাই আপনার মেয়ের ভাসুরের মজা উড়াবে না। ছেড়ে দেন আমাকে। বাকিদেরকে খুঁজে নিতে বলেন কোনটা আসল বর? আনোয়ার কান ছেড়ে হেসে উঠলেন।

আলিশবা, শোভা, আরাভ সবাই প্রিয়ার রুমে আসলো। তখন প্রিয়াকে সাজানো শেষ হয়েছে মাত্র। প্রিয়ার বিয়ের পোশাক বিকেলেই পাঠানো হয়েছিলো পরশকে দিয়ে। গোল্ডেন-খয়েরী মিশ্রণের লেহেঙ্গা, গলায় গোল্ড আর পাথরের গহনা, মাথায় লম্বা ওড়না দিয়ে পুরো মস্তক ঢাকা। প্রিয়াকে দেখে তারা বেশ চমকালো। শোভা হা’ হয়ে প্রিয়াকে দেখছে। তার ভাই তো আজ ফিদা হয়ে যাবে প্রিয়ারানীর এই রূপ দেখে।

প্রিয়া এদের কে দেখে লজ্জায় কাঁচুমাচু করছিল। আরাভ গিয়ে প্রিয়ার কোলে উঠতে চাইলো। কিন্তু আলিশবা দিলো না। সে কোলে নিয়ে প্রিয়ার কাছাকাছি নিয়ে গেলো শুধু। প্রিয়াকে দেখে বলল

ও,য়া,,হ ‘মা’ বা,,হ।

সবাই আরাভের আধো আধো কথা শুনে হাসলো।

মারিয়া আসলো নাজমাকে বরণ করতে। নাজমা তো থম মেরে বসে আছে। অথচ সবার থেকে বেশি সেই খুশি ছিলো এই বিয়েতে। কিন্ত আনোয়ার তার সব খুশি একবারে ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। তাই তার মুখের হাসি উবে গেছে। কিন্তু মনে মনে ভীষণ খুশি। মারিয়া নাজমাকে ভিতরে নিয়ে গেলেন। তার জা’দের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন।

প্রত্যুষের মাথাব্যথা নেই দুলাভাইকে নিয়ে। সে তো আগে থেকে চিনে। তাই সে সৌরভের পাশে গিয়ে বসলো। প্রীতি আর প্রিয়ার কাজিনগুষ্টিরা বরকে মালা পরাতে আসলে দ্বিধায় পড়ে যায়। কোনটা বর? গৌরব গা দুলিয়ে হাসে। ভাইয়ের কানের কাছে গিয়ে বলে মালাটা আমি পরি। শুধু বিয়েটা তুই করিস। সৌরভও হাসলো ভাইয়ের কথা শুনে। সে প্রীতিদের ডাকলো,

গার্লস তোমাদের দুলাভাইকে মালা পরিয়ে দাও। প্রীতি এসে গৌরবকে মালা পরিয়ে দেয়।
সৌরভ ভাইয়ের কানে কানে ফিসফিস করে বলে এবার খুশি তুই। গৌরবও হ্যাঁ বলে মাথা নাড়ায়। প্রীতিরা নজরের জন্য আবদার করলে দু’ভাই একসাথে তাদেরকে নজর দিয়ে দেয়। প্রীতি অবাক হলেও কিছু বললো না। তার তো লাভ হয়েছে দু’জন থেকে নজর পেয়েছে।

পরশ বেচারা হাবাগোবার মত বসে আছে। তার সাথে সৌরভের আরো দুজন বন্ধু আসছে সানি আর রকি। সানি প্রীতির সাথে মজা করছে। বেয়াইন দেখি সুন্দর আছে। বিয়ে-শাদী হয়ছে না’কি প্রস্তাব দেবো। প্রীতি মুখ ভেংচি দিয়ে বললো সেটা আপনার জানার দরকার আছে।

প্রীতি যাওয়ার পর সানি সৌরভকে খোঁচা দিলো। তোর শালী আমাকে গাল ভেংচি দিছে কেনো? বিয়ের প্রস্তাবই দিলাম উঠাই তো নিয়ে যাই নাই। রকি আর পরশ হাসলো। সৌরভ তাদের সাথে সেও হাসলো। পারলে উঠাই নিয়ে যা, দেখি তোর কতো জোর? রকি খোঁচালো সৌরভকে তোর বউ কখন আসবে ইয়ার। তর সইছে না আর ভাবীকে দেখার জন্য। পরশ দুইজনের দিকে তাকালো। অবাক হয়ে বললো বউ সৌরভের, তোর কেনো রে তর সইছে না।

কাজি আসলেন সন্ধ্যা ৭টার পর।

কাজি আসার পর পরই বিয়ে পড়ানো শুরু হয়। কাজিও প্রথমে দ্বিধায় পড়ে যান কোনটা বর? কিন্তু বর মহাশয় তাকে নিশ্চিন্তে থাকতে বলেন।

বিয়ে পড়ানো শেষে সবাইকে খাবার দেওয়া হয়। খাবারের পর্ব শেষ হলে আলিশবা, শোভা, প্রীতিরা মিলে প্রিয়াকে স্টেজে নিয়ে আসে। সেখানে সৌরভ আগে থেকেই বসে থাকে। প্রিয়া স্টেজে উঠতে গিয়ে আচমকা কয়েক সেকেন্ডের জন্য সৌরভের সাথে তার চোখাচোখি হয়। সে মনে মনে ভীষণ লজ্জা পায়। কিন্তু স্টেজে বসার পর আচমকা তার চোখ চলে যায় তার যৎসামান্য দূরে থাকা আরেকটা অবয়বের দিকে। তখন তার হৃদ স্পন্দনের কম্পন অতি মাত্রায় বেড়ে গেলো। মনে মনে হেসে উঠে ফাজিল কোথাকার।

শোভা প্রিয়ার হাতে একটা মালা দেয় সৌরভকে পরানোর জন্য। প্রিয়া সেই মালা সৌরভকে না পরিয়ে উল্টো ফিক করে হেসে দেয়। তারপর লজ্জায় নিজেই মুখে হাত দিয়ে বসে থাকে। সৌরভের বন্ধুরা তার মজা নিচ্ছে। কি ব্যাপার বন্ধু তোর বউ এত হাসে ক্যা?

চলবে,,,,,,,,,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে