#শত্রু_শত্রু_খেলা
#পর্ব_২৫
#মেঘা_সুবাশ্রী (লেখিকা)
হন্তদন্ত হয়ে ছুটে চলছে সৌরভ। মস্তিষ্কে ভয়ার্ত সব দৃশ্য ভেসে আসছে তার প্রিয়ারানী ঠিক আছে তো? হৃদকোণে তার র-ক্তক্ষরণ হচ্ছে। ব্যথিত মানসপটে শুধু প্রিয়ার ঐ হাস্যোজ্জ্বল মুখশ্রীই ভেসে ভেড়াচ্ছে। ঝাপসা আর এলোমেলো দৃষ্টি তার। আচমকা থমকালো সে। তড়িৎ বাইকের ব্রেক কষলো পার্কের এককোণে গুটিসুটি মেরে বসে থাকা নারী অবয়বটি দেখে। পায়ের কদমের জোর বাড়িয়ে আলোরবেগে ছুটে চলে সে অবয়বটির দিকে।
প্রিয়া হাঁটুর উপর ভর করে দু’হাতের উপর থুতনি রেখে বসে আছে। সে তো ভাবতেও পারছে না সৌরভ তাকে এতটা খারাপ মেয়ে ভাবে। তার অন্তঃকরণে বিষাক্ত এক তিক্ত অনূভুতি হচ্ছে। শক্তপোক্ত হাতের সেই চড়ের চেয়েও তার ভাবনা জুড়ে শুধু সৌরভের অবিশ্বাস্য আর সন্দিহান দৃষ্টি বিচরণ করছে। তার বলা সেই দু’শব্দ বেহায়া, নির্লজ্জ মেয়ে বার বার প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। কিন্তু আচমকা কারো হেঁচকা টানে প্রিয়া ভাবনার জগৎ থেকে নিজ বাস্তব জাগতিকে ফিরে আসে। কিন্তু তখনো তার মস্তিষ্ক পুরো ঘোরের মধ্যে আছে। নিশ্বাসের তীব্র উঠানামায় হাঁফাতে থাকা এক বলিষ্ঠ পুরুষের বাহুবন্ধনীতে আবদ্ধ সে। তাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছে। সেই পুরুষের বা-পাশের হৃদপিন্ডের ধুঁকপুকানির ঢিপঢিপ শব্দও তার কর্ণকুহুরে প্রতীয়মান হচ্ছে।
প্রিয়া হাঁসফাস করতে লাগলো আচমকা কোনো পুরুষের এমন হেঁচকা টানে। মস্তিষ্ক যখন জানান দিলো পুরুষটি আর কেউ নয় স্বয়ং সৌরভই। প্রিয়ার বোধগম্য হতেই এক ঝটকা মেরেই সে সৌরভ থেকে নিজেকে ছাড়ালো। হুঁশজ্ঞানহীন সৌরভের প্রিয়ার মোলায়েম হাতের ঝটকা খেয়ে সম্বিৎ ফিরে আসলো। সে অতর্কিতে মাটিতে পরতে গিয়েও দাঁড়িয়ে পড়লো।
প্রিয়া অগ্নিদৃষ্টিতে তাকালো সৌরভের দিকে। ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলে উঠল,
এত সাহস কোত্থেকে পেয়েছেন। নির্লজ্জের মত গায়ে হাত দেন। আপনি আমার কাছে শুধুমাত্র একজন বাড়িওয়ালা। আর বাড়িওয়ালা হিসেবে নিজের সীমার মধ্যে থাকুন। নয়তো আপনি ভাবতেও পারবেন না আমি কি করতে পারি?
সৌরভের চোখে মুখে আকুলতা। নিজের ভুলে নিজেই অনুতপ্ত। তবুও মুখ ফোটে প্রকাশ করতে পারছেনা নিজের অভিব্যক্তি। তার দৃষ্টি প্রিয়ার রক্তিম চোখের মধ্যে। সে জানে তাকে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হবে। যার জন্য সে প্রস্তুতও। ব্যথিত গলায় বললো,
অ্যাই এ্যাম সর্যি প্রিয়া। বিশ্বাস করো তখন আমার মাথা ঠিক ছিলো না। যখন গৌরব তোমাকে সাথে করে নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছিল। আমার কাছে ব্যাপারটা খুবই দৃষ্টিকটু লেগেছিল। মনে হচ্ছিলো তোমার সাথে খুব খারাপ কিছু হতে চলেছে। তাই খুব বেশি ভাবার সময় পাইনি। তোমাদের পিছু পিছুই দ্রুতই বেরিয়েছি।
“আমি না হয় বেহায়া, নির্লজ্জ কিন্তু নিজের ভাইকেও বিশ্বাস করতে পারলেন না। তাকেও সন্দেহ করেছেন।”
‘ও আমার ভাই হয়েছে তো কি হয়েছে? সে একজন পুরুষ মানুষ। আর আমি কোনো পুরুষকে বিশ্বাস করি না। সে যেই হোক না কেনো?’
প্রিয়ার মুখে তাচ্ছিল্যের হাসি,
তা, তো’ অবশ্যই! কেনো বিশ্বাস করবেন? সব পুরুষকে তো আপনি নিজের মতই ক্যারেক্টরলেস ভাবেন। সে জন্যই বিশ্বাস করেন না।
সৌরভের চোয়াল শক্ত হয়ে গেলো প্রিয়ার কথা শুনে। বজ্রকন্ঠে বলল,
অনেক কথা বলেছো কিন্তু আমার চরিত্র নিয়ে কোনো বাজে কথা বলবে না। তোমার সাথে কখনো বাজে ব্যবহার করেছি না’কি বাজে কোনো স্পর্শ করেছিলাম।
প্রিয়ার রাগে পিত্তি জ্বলে যাচ্ছে। আবার জিজ্ঞেসও করে কখনো স্পর্শ করেছি। একটু আগে তাহলে কি ছিলো? সে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে আছে।
সৌরভ প্রিয়ার নিশ্চুপতা দেখে হাত নাড়িয়ে জিজ্ঞেস করল,
কি ব্যাপার এখন উত্তর দিচ্ছো না কেনো?
“উত্তর দেওয়া আর না দেওয়া দুইটাই সমান আপনার জন্য। কিন্তু আমি চাই আপনি আপনার লিমিটে থাকুন।”
“যদি লিমিটে না থাকি কি করবে?”
“মানুষ ডাকবো তারপর সবাইকে ডেকে বলবো আপনি আমাকে ইভটিজিং করছেন।”
সৌরভের কপাল কুঁচকে গেলো প্রিয়ার কথা শুনে। সেও দেখতে চাই প্রিয়া কি করে। তাই সেও প্রিয়ার কথায় সায় দিয়ে বলল,
“ডাকো।”
প্রিয়া কিছুটা ঘাবড়ে গেলো সৌরভের কথা শুনে। কিন্তু গম্ভীরতা বজায় রেখে বলল,
যদি বাড়াবাড়ি পর্যায়ে কিছু করেন তো তাহলে অবশ্যই মানুষ ডাকবো।
সৌরভ আর সিনক্রিয়েট করলো না। এই মেয়েকে এখন বোঝানো তার পক্ষে সম্ভব নয়। বাসায় গিয়ে ধীরে সুস্থে বোঝাতে হবে। সে চুপচাপ বেঞ্চের এককোণে বসে পড়লো।
প্রিয়া উঠে দাঁড়ালো। পিছন ফিরে একবারও তাকালো না। তাকালে হয়তো দেখতে পারতো এক ব্যথাকাতুর তৃষার্ত প্রেমিকের হাহাকার। মনে মনে নিজেকে শ’খানেক গালি দিলো। কি দরকার ছিলো সৌরবিদ্যুত এর সাথে এত তর্ক করার। কিন্তু এই বে*য়াদব আমাকে পিছন থেকে একবারও ডাকলো না। আমার না হয় রাগ হয়েছে তাই উঠে এসেছে। কিন্তু ঐ সৌরবিদ্যুৎ তো আমাকে একবারো আটকালো না। থা*প্পড় মারার সময় অনুমতি নেয় না, জড়িয়ে ধরার সময়ও অনুমতি নেয় না। শুধু ভালোবাসি বলতে উনার যত রকম ফর্মালিটি। বে*য়াদব একটা।
প্রিয়ার চোখ ছলছল করছে। ব্যথিত মনটা বার বার বলছে এটা ঠিক হয়নি।
_______________________
ফুল সজ্জিত গাড়িতে বসে আছে আলিশবা, আরাভ। সৌরভ সামনেই বসেছে ড্রাইভারের সাথে। গৌরব বেহায়ার মত ছুটে এসে গাড়িতে বসেছে। সৌরভ বলেই দিয়েছে তুই বাড়ির ত্রিসীমানায় যাবি না। আরাভকে আমিই মানুষ করবো। তোর প্রয়োজন নেই। গৌরব কপাল কুঁচকে বলল বিয়ে করলাম আমি, বউ আমার, বাচ্চা পয়দা করলাম আমি, মারও খেলাম আমি, গালিও শুনলাম আমি। মাঝখানে বাচ্চা তোর? বাহ্, কি দারুণ দৃশ্য!
গৌরব সৌরভের কোনো কথাকে তোয়াক্কা না করেই গাড়িতে উঠে পড়লো। যা হবার হোক। সে মুখোমুখি হবেই সবকিছুর।
তাদের গাড়ি বাড়ির প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে থামলো। সবার প্রথমেই সৌরভ গাড়ি থেকে নামলো। গৌরব নামার জন্য উদ্বত হতেই সৌরভ দমকালো। চুপচাপ বসে থাক গাড়িতে। নামবি তো তোর ঠাং ভেঙে তোর গলায় ঝুলিয়ে দেবো। গৌরব তাচ্ছিল্যের হাসি দিল। মনে মনে বিড়বিড় করলো,
হাতি গর্তে পড়লে চামচিকাও লা*থি মারে। আমারও সময় আসবে ভাই।
নাজমা বাসার দরজার অভিমুখে দাঁড়ানো। সৌরভ এসে প্রথম মা’কে বললো,
যাও আম্মা’ তোমার নাতি আর বউকে ঘরে নিয়ে আসো। তোমার ঐ বাঁদড় বড়ো ছেলেকে কিন্তু বাসায় ঢুকতে দিবে না। নিজের বউ-বাচ্চাকে হোটেলে রেখে সে আরামছে বাসায় এসে বসে আছে। কত খারাপ মানুষ তোমার ছেলে ভাবো?
নাজমে কাঁদবে না’কি হাসবে বুঝতে পারছে না। এত খুশি সে কবে হয়েছে জানে না। তার ছেলে বিয়ে করেছে শুনে যতটা না রাগ হয়েছে তার চেয়ে বেশি খুশি হয়েছে তার একটা ফুটফুটে নাতি আছে শুনে। নাজমা খুশিতে কেঁদেই দিলো। কিন্তু আরও একটা কাজ করতে ভুললো না। নাজমা দৌড় দিয়ে প্রিয়াদের ঘরে গেলো।
প্রিয়া কিছুক্ষণ আগেই বাসায় ফিরেছে। গোসল করে মাত্রই বসেছে। কিন্তু নাজমার ডাক শুনে সে হতভম্ব।
নাজমা প্রিয়ার দিকে তীক্ষ্ণদৃষ্টিতে তাকালো। ফোঁস করে বলল,
তোর কাছে আর ভালো জামা নাই।
প্রিয়া যারপরনাই অবাক। নাজমা আন্টি নতুন জামা দিয়ে কি করবে? সে কিছু বলার আগে নাজমাই বলল,
জলদি জামা চেইঞ্জ করে নিচে যা। নতুন বউরে নিয়ে আসতে হবে তোকে আর শোভাকে। তাড়াতাড়ি কর।
প্রিয়া মাথা নাড়ালো। ঝটপট তৈরি হয়ে সে নিচে গেলো।
শোভা আর প্রিয়া মিলে আলিশবাকে নিয়ে উপরে উঠে এলো। ছোট ছোট বাচ্চারা আলিশবাকে ফুল বর্ষণ করলো। দরজার অভিমুখে নাজমাসহ বিল্ডিং এর অনেক মহিলা দাঁড়ানো। আলিশবার শাশুড়ীকে চিনতে একটুও কষ্ট হলো না। সে অশ্রুসজল দৃষ্টিতে শাশুড়ীর দিকে তাকালো। তার পাশে গৌরব আর আরাভ দাঁড়িয়ে আছে।
নাজমা এগিয়ে এসে প্রথমেই আলিশবাকে গলায় লাগালো। তারপর মুখ তুলে বলল,
মাশা’আল্লাহ’ এইজন্য বুঝি আমার বেয়ারা বাঁদর ছেলে নিজের দেশের কথা ভুলে গিয়ে পাঁচবছর কাটিয়ে দিয়েছে। আলিশবা মনে মনে ভীষণ লজ্জা পেলো। কিন্তু মুখে তার মৃদু হাসি। শাশুড়ীকে সালাম দিলো। নাজমাও খুশি মনে সালাম নিলো। তারপর এগিয়ে গেলো আরাভের দিকে। আরাভকে কোলে নিয়ে বুকের মধ্যে জড়িয়ে হুঁ হুঁ করে কেঁদে উঠল। মন ভরে আদর করল। কেঁদেকেটে মা’ছেলে দুজনকে বরণ করলো সে।
পুরো ঘরজুড়ে অতিথিতে পরিপূর্ণ। কেউ নতুন বউ দেখতে আসছে কেউবা সত্যতা যাচাই করতে। গৌরব এক হুরপরি নিয়ে এসেছে সবার মনে কৌতুহল আর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। তার ওপর মেয়েটা পাকিস্তানি। তাই দলে দলে মানুষ আসছে বাসায় বউ দেখতে।
___________
মাসুদ ছেলের উপর ভীষণ ক্ষেপেছে। একেতো পাকিস্তানী তারওপর বিয়ে করেও তাদের জানানোর প্রয়োজনবোধ মনে করেনি। বিয়ের এত বছর পেরিয়ে একটা ফুটফুটে বাচ্চা হয়েছে তাও জানালো না। বউকে দেশে নিয়ে এসেও তাকে হোটেলে রাখলো। কত ষ্টুপিড চিন্তা ভাবনা তার ছেলের। এই ছেলের সাথে সহজে আর কথা বলবে না। একদম না।
সৌরভ জানে তার বাবা ভীষণ রেগে আছে। তাই সে আরাভকে নিয়ে বাবার রুমের সামনে আসে। আরাভকে শিখেয়ে দেয় দা,,দা বলতে। আরাভ কি বুঝলো কে জানে। সেও মাসুদের সামনে গিয়ে সরু চারখানা দাঁত দেখিয়ে খিলখিল করে হেসে বললো,
দা,,দা।
মাসুদ চকিতে তাকালো। মনের মধ্যে ক্রোধে ফেটে পড়লেও আরাভকে দেখে তার সব রাগ হাওয়া হয়ে গেলো। কত মিষ্টি একটা নাতি তার। অথচ তার বে*য়াদব ছেলে এতদিন তাদেরকে বঞ্চিত রেখেছে এই নাতির আদর থেকে। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে সে আরাভকে কাছে টেনে নিল। আদরে আদরে ভরিয়ে দিলো সে। দাদা-নাতি খুঁনশুটিতে মেতে উঠলো।
সৌরভ দরজার পাশে দাঁড়িয়ে সব দেখলো। সে জানতো তার বাবা এমনিই। বাইরে থেকে শক্ত খোলসের মত কিন্তু ভিতরে নরম কাঁদামাটি।
নাজমা মারিয়াকে আগেই বলে দিয়েছিল আজকে তাদের বাসায় দুপুরের খাবার খাবে। তাই রান্না যেনো না বসায়। এদিকে রান্না ঘরে কাজ করতে করতে হাঁপিয়ে গেছে মাজেদা। অগত্য নাজমাকে ডাকতে আসলো,
আপা আর কি করা লাগবো? আমি তো একা এতকিছু করতে পারতাছি না। ফল কাটতে কাটতে দম শ্যাষ আমার। একজনরে পাঠান না।
নাজমা প্রিয়া আর শোভাকে ডাক দিলো। প্রিয়া শুনে দৌড়ে আসলো। কি হয়েছে আন্টি? নাজমা ইশারায় বললো,
যা তো কিচেনে যা। মাজেদা রে সাহায্যে কর।
মারিয়া বললো আপা আমি যাই। ও কি করবে? সব তো ঘেটে দেবে। নাজমা মারিয়াকে থামিয়ে দিলো। যার কাজ তাকে করতে দাও। তুমি কেনো করবে?
প্রিয়া অবাকের চূড়ান্ত পর্যায়ে। নাজমা আন্টি তাকে আজ শুধু কাজ করতে বলছে। বাসার দেখাশুনা করতে বলেছে। অতিথির পরিমাণ বেশি তাই সবাইকে চোখে চোখে রাখতে বলেছে। এই কাজটা অবশ্যই একটু কঠিন ছিল। কিন্তু ফল কাঁটা, নাস্তা বানানো তার থেকে কিছুটা সহজ।
প্রিয়া ফল কাটতে কাটতে শেষ। তার কাছে মনে হচ্ছে সে ফলের দোকান দিয়েছে আজকে। এত সহজ কাজ এখন তার কাছে কঠিনই লাগছে।
নাজমা সৌরভকে ডাকলো।
যা, তো’ কিচেন থেকে নাস্তা নিয়ে আয়। সব মেহমান খালি মুখে বসে আছে।
সৌরভ সাতপাঁচ না ভেবেই কিচেনে আসলো। কিন্তু যাকে দেখলো সে কস্মিনকালেও তার চিন্তা মাথায় আনেনি। সে তো কিংকর্তব্যবিমূঢ়। এই মেয়ে তাদের কিচেনে কাজ করছে।
প্রিয়া পিছনে তাকাতেই সৌরভের সাথে চোখাচোখি হয়ে গেলো। সে মনে মনে ভীষণ লজ্জা পেলো। এই ব*জ্জাত তার পেছনে কি করছে?
সৌরভ দুই হাত বগলদাবা করে সটান হয়ে দেয়াল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। মুখে কোনো টুঁশব্দ নেই দুজনের। অথচ প্রিয়ার হাত কম্পমান সে ফল কাঁটতে গিয়ে কাঁটতে পারছে না। পিছনে না তাকিয়ে সে দিব্যি বলতে পারবে তার পিছনে সৌরবিদ্যুত দাঁড়িয়ে আছে। পুরাই বে*য়াদব লোক।
চলবে,,,,,,,,,