#লাজুকপাতা
#পর্ব-৮
মাঝরাতে ঘুম ভাঙে চেঁচামেচির শব্দে। জামিল ভাইয়ের গলা। আমি ধড়ফড় করে উঠে বসি। নাবিদও চোখ কচলে উঠে বসে। বাইরের ঘরে জিনিসপত্র ফেলে দেবার শব্দ। নাবিদ আমাকে বলে,
“তুমি ঘরে থাকো জরী। বাইরে আইসো না। ”
আমি তবুও যাই। জামিল ভাইয়ের চোখ দুটো লাল। বিশ্রী রকমের কড়া সিগারেটের গন্ধ। নরমাল সিগারেটে বোধহয় এতো কড়া গন্ধ হয় না। নাবিদের টুকটাক সিগারেট খাবার অভ্যাস আছে। তবে আমার সামনে আজ অবধি খায় নি।
জামিল ভাই চিৎকার করে বলছে,
“আমার জীবন টা নষ্ট হয়ে যাইতেছে। আর তোমরা আনন্দ ফুর্তি করো! কিসের এতো আনন্দ তোমাদের!”
আম্মা চাপা গলায় বললেন,
“থাম, ভাড়াটিয়াদের কাছে মান সম্মান কিছু আর থাকলো না। ”
জামিল ভাই রেগে গিয়ে আম্মাকে বলেন,
“তুমি মান সম্মানের বানী কারে শুনাও! তোমার কারণে আজ আমার এই দশা। তোমার জন্য আমার মেয়ে দুটো মা ছাড়া। ”
নাবিদ চেয়ারে বসে ঢুলছে। কাউকে কিছু বলছে না। বাবা জামিল ভাইকে বোঝানোর চেষ্টা করছে। জামিল ভাই খানিকক্ষণ চেঁচামেচি করে হঠাৎই গলা ছেড়ে কাঁদতে লাগলো। মুক্তা আমাকে আস্তে করে বলল,
“ভাবী টুপুর রে একটু কোলে নাও। ভয় পাইছে। টাপুর ঘুমায়। ”
আমি টুপুর কে কোলে নিয়ে মুক্তার রুমে আসলাম। এটা অবশ্য মুক্তার একার রুম না, মনিরও। মেয়েটা ভীষণ ভয় পেয়েছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম,
“টুপুর সোনা পানি খাবা?”
“বাবায় অমন করে ক্যান কাকিমনি?”
“বাবার শরীর টা ভালো নেই। ”
“কি হইছে?”
“একটু জ্বর। ”
“মাথায় পানি দিবে না? আমার জ্বর হইলে আম্মু মাথায় পানি দিতো৷ জ্বর কমে যাইতো। ঘুমায়ে যাইতাম।”
আমার বুকের ভেতর হাহাকার করে উঠলো। মেয়ে দুটো সারাদিন কতো হুটোপুটি করে, খেলে, টিভি দেখে। অথচ একবারও মায়ের কথা জিজ্ঞেস করে না। আম্মা একদিন বলেছিলেন,
“মা’টা এমন পিশাচ দেখেই মাইয়া দুইটার মায়েরে মনে পরে না। একবারও শুনছ ওগো মা মা করতে। ”
আজ টাপুর টুপুর এর জন্মদিন। একটু কেক কাটা, ওদের সঙ্গে যে বাচ্চাগুলো খেলে তাদের ডাকা, আর একটু ভালো রান্না হয়েছে। টেবিলে খাবার দেখেই হয়তো জামিল ভাইয়ের মনে হয়েছে বাড়ির লোক ভীষণ আনন্দ, ফূর্তিতে আছে।
আমি দীর্ঘশ্বাস ফেলি। বসার ঘরে জামিল ভাইয়ের কান্নার শব্দ এখনো ভেসে আসে। টুপুর আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখে। জামিল ভাইয়ের জন্য কেন যেন আমার খারাপ লাগে না। মেয়েটার জন্য খারাপ লাগে। একদিন এই মেয়েটা বড় হবে। পড়াশোনা করে চাকরি করবে, নিজের সংসার হবে। তবুও জন্মদিন পালন করার সময় এই রাতের কথা মনে করে গলায় জমাট বাঁধা কান্নাগুলোও গিলে ফেলবে এক টুকরো কেকের সঙ্গে।
জামিল ভাই পরদিন নিজের কৃতকর্মের জন্য ভীষণ অনুতপ্ত হলেন। আমি এই প্রথম জিজ্ঞেস করলাম,
“ভাইয়া, ভাবী কি ফিরবে না?”
জামিল ভাই অসহায় চোখে তাকিয়ে থাকেন খানিকক্ষণ। তারপর বলেন,
“ও ডিভোর্স পেপার পাঠিয়ে দিয়েছে জরী। মেয়ে দুটোর জন্যও একটু মায়া হয় না। কত পা ধরলাম! ”
“টাপুর টুপুরের জন্য আপনার কী মায়া হয় ভাইয়া?”
জামিল ভাই বোকার মতো তাকিয়ে থাকেন। সেদিন বিকেলে মেয়েদের নিয়ে ঘুরতে যায়। ফেরার সময় মেয়েরা আইসক্রিম, বেলুন নিয়ে খুশিমনে ফিরে আসে। তারপর থেকে মেয়েদের স্কুলে নেবার দায়িত্ব জামিল ভাই নেন।
সেই রাতের পর না চাইতেও আমি টাপুর টুপুরের মা হয়ে উঠলাম একটু একটু করে। এই বাড়িতে অন্যান্য মানুষদের চেয়ে ওরা আমাকে অন্য চোখে দেখে। এর আগে আমার ঘরে এসে জিনিসপত্র নষ্ট করেছে। ড্রেসিং টেবিলে রাখা লিপস্টিক নেইলপলিশ নিয়ে দেয়াল নষ্ট করেছে। ওড়না, বই নিয়ে ভিজিয়ে ফেলেছে। নাবিদ, আম্মা অনেকবার বলেছে ওদের প্রশ্রয় দিও না। দুই একদিন থাপ্পড়, কিল খেলে আর কিছু নষ্ট করবে না।
আমি ওদের কখনো কিছু বলিনি। দিনভর দুষ্টমি করা মেয়ে দুটো যে মায়ের ভালোবাসা না পেয়ে কতটা অপূর্ণতা নিয়ে বড় হচ্ছে সেটা আমি অনুভব করতে পারি।
নিউটনের তৃতীয় সূত্রের হিসেব অনুযায়ী ওরাও আমাকে বুঝতে পারে। এক দুপুরে কলেজ থেকে ফিরলাম। ঘেমে নেয়ে জামাকাপড় এর যাচ্ছেতাই অবস্থা। বসার ঘরে ফ্যান চালিয়ে বসতেই টাপুর এসে জিজ্ঞেস করলো,
“কাকীমনি, তুমি পানি খাবা?”
আমি মাথা নেড়ে হ্যাঁ বললাম। মেয়েটা দৌড়ে গিয়ে পানি নিয়ে আসলো। ছোট মগে অর্ধেকের বেশী পানি। ঠান্ডা পানি। আমাকে বলল,
“তোমার জন্য ফ্রিজে রাখছি। বাইরে থেকে আসলে তোমার কষ্ট হয়। ”
আমি বাড়িতে না থাকলে এরা আমার জিনিসপত্র আগলে রাখে। বিকেলে ছাদে উঠে কেবল আমার জামাকাপড় ই নিয়ে আসে।
আমার চোখে পানি এসে গেল। মাঝেমধ্যে আমার ভাবীর প্রতি অভিমান হয়। জামিল ভাইয়ের ওই কান্নাও মিথ্যে নয়। তবুও এই সংসার টার প্রতি ভাবীর এমন বিতৃষ্ণা।
***
সংসার, পড়াশোনা আর নাবিদ ছাড়াও আমার জীবনে আরও একটা অধ্যায় যুক্ত হলো। তিনতলায় থাকে নাজমা ভাবী। ভাবী ভীষণ মিশুকে স্বভাবের মানুষ। ঘরে ভালো, মন্দ খাবার বানালে আমাদের দিতে ভুলে না। আম্মার অবশ্য ধারণা যে বাড়িওয়ালা বলে তেল দিচ্ছে। আমার তেমন মনে হয় না। শেষ বিকেলে জামা কাপড় তুলতে ছাদে গেলেই ভাবীর সঙ্গে দেখা হয়। প্রায় প্রতিদিনই। আমার ধারণা নাজমা ভাবী আমার সঙ্গে কথা বলবেন বলেই আসেন। ভাবীর সুন্দর ছিমছাম গোছানো সংসার। মেয়েটা সেভেনে আর ছেলেটা ফাইভে পড়ে। ভাবী একদিন বললেন,
“জরী একটা কথা বলব কিছু মনে করবা না তো?”
“জি ভাবী বলুন।”
“মেয়েটার অংক টিচার নিয়ে খুব ঝামেলায় আছি। ব্যাচে পড়তে যায় ঠিকই, কিন্তু তারপরও পিছিয়ে আছে। ফার্স্ট টার্মে অংকে পেয়েছে কত জানো! উনচল্লিশ। ”
আমি ভাবীর কথার মানে বুঝতে পারি। হেসে বলি,
“ভাবী ও কী বিকেলে ঘুমায়? সন্ধ্যেবেলা আমার রান্নার দিকটা দেখতে হয়। ”
“থ্যাংক ইউ জরী। মুক্তাই তোমার কথা বলছিল। আমি অবশ্য সাহস পাচ্ছিলাম না। ”
আমি হাসলাম। ভাবীর বাচ্চা দুটোর নাম রিনি আর সিয়াম। দুজনকে বিকেলে এক ঘন্টা করে অংক পড়ানো শুরু করলাম। আম্মা ভালো চোখে দেখলেন না সেটাও। বললেন,
“এ কী কথা! তুমি এসব কী শুরু করছ! মানুষ কী বলবে?”
“দুটো ছেলেমেয়ে পড়তে আসলে অসুবিধে তো কিছু নেই আম্মা। ”
“লোকে ভাববে নাবিদের টাকা নাই তাই বউরে দিয়ে কাজ করায়। ”
আমি আর জবাব দিলাম না। নাবিদ শুনে বলল,
“তোমার টাকার দরকার হলে আমাকে বলবে তুমি। এতো কষ্ট করতে হবে না। সারাদিন তো কাজ করোই। ”
আমি হেসে বললাম,
“আমার যা দরকার সেটা তো তুমি না চাইতেই দাও৷ আমি শুধু পড়াতে চাইছি নিজেকে যাচাই করার জন্য। কেমন পড়াতে পারি সেটা দেখার জন্য। ”
নাবিদ হেসে বলল,
“তুমি ভালো টিচার হতে পারবে না। অবশ্য কলেজের টিচার হতে পারবে। কিন্তু বাচ্চাদের টিচার হতে পারবে না। ”
“কেন? বাচ্চাদের টিচার হতে পারব না কেন?”
নাবিদ আরও একটু এগিয়ে আসে। গভীর গলায় বলে,
“তুমি হলে মেঘের মতো জরী। কালো মেঘ নয়। নীল আকাশে ভেসে আসা সাদা নরম মেঘ। মেঘের মতো নরম, স্নিগ্ধ, সুন্দর। ”
আমি হেসে চোখ নামিয়ে নেই। জীবনের কাছে আমার বাড়তি কোনো চাওয়া নেই। এই যেমন আছি তেমনই সুন্দর।
চলবে…
#লাজুকপাতা
#পর্ব-৯
নাজমা ভাবী এক মাস পর আমাকে একটা খাম দিলেন। দেয়ার সময় খানিকটা অপ্রস্তুত হলেন। বললেন,
“কম হলে জানাবে জরী। আরেকটু বেশী দেয়া উচিত ছিলো আসলে…
আমি থামিয়ে দিয়ে বললাম,
“ধ্যাৎ! কী বলছেন ভাবী! ”
“অনেক ধন্যবাদ জরী। তুমি আমার অনেক উপকার করেছ। বিকেলে এই দুটোকে নিয়ে টিউশনে দৌড়াতে গেলে আমার অনেক সময়ও নষ্ট হয়। এখন সন্ধ্যের মধ্যেই কাজ শেষ করে একটু রেস্ট নিতে পারি। ”
আমি স্মিত হাসলাম। ভাবীর আন্তরিকতায় মুগ্ধ হয়েছি খুব। খাকি খামে পাঁচশ টাকার পাঁচ টা নোট! আমি আমার জীবনের প্রথম উপার্জন। আমি টাকাটা নাবিদ কে দিতে চাইলাম,কিন্তু ও নিলো না। বলল,
“তুমি খরচ করো জরী। যা কিনতে মন চায় কিনো। ”
আমি টাকাটা খরচ করলাম না। আলমারিতে ছোট ব্যাগে রাখলাম। নাবিদ আমাকে প্রতি মাসে কিছু টাকা দেয় খরচের জন্য। সেটাও জমাই।
আম্মা জিজ্ঞেস করলেন,
“নাজমা নাকি পড়ানোর জন্য তোমাকে টাকা দিছে?”
আমি তখন মাছ ভাজতে ব্যস্ত। বললাম,
“কত দিছে?”
“আড়াই হাজার। ”
“কি করছ টাকা? ”
“আমার কাছে আছে। ”
“নাবিদ কে দাও নাই?”
“দিয়েছিলাম। কিন্তু ও নেয় নি। ”
আম্মা গম্ভীর মুখে বললেন,
“ওহ। ”
আম্মা পরদিন সকালে বললেন,
“জরী এইদিকে আসো, নাজমারে বলবা পরের মাস থেকে তিন হাজার দিতে। ”
আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম। জিজ্ঞেস করলাম,
“কেন আম্মা?”
“দুইজন রে পড়াইতেছ না। ও তো তোমারে ঠকাইতেছে। আমি খোঁজ নিছি, এমন ই নেয় সবাই। ”
আমি স্বভাবসুলভ আচরনের কারণে কোনো কথা বললাম না। বিকেলের দিকে আম্মা বললেন,
“জরী তোমার কাছে দুইশ টাকা হবে?”
“হবে আম্মা। ”
দুইশ টাকা দেবার পর বললেন,
“টাকা, পয়সা সাবধানে রাখবা। ময় মুরব্বিদের কাছে টাকা থাকলে খোয়া যায় না। তোমরা হইলা গিয়া সিধা টাইপ। ”
আমি কিছু বললাম না।
পরদিন মনি আমার ঘরে এলো। প্রয়োজন ছাড়া ও আমার ঘরে আসে না। নরম গলায় বলল,
“ভাবী কি করেন?”
“কিছু না। শুকনো জামা কাপড় গোছাচ্ছি। ”
মিনিট দুয়েক খাটের উপর বসলো। বলল,
“ভাবী আপনার কাছে টাকা হবে?”
আমি দীর্ঘশ্বাস ফেললাম। আরও তিনশ টাকা গচ্চা গেল।
মনটা ভীষণ খারাপ হলো। সারাদিন আমার এতো মন খারাপ হলো যে ভালো করে কিছু খেতেও পারি নি। হোক পাঁচশ টাকা, তবুও এই টাকাটা আমার কাছে স্পেশাল ছিলো।
মন খারাপের দিনে এক পশলা বৃষ্টির মতো পরী আপা এসে হাজির হলো। আপা এবার শুধু নোটন কে নিয়ে এসেছে। দুলাভাই আসতে পারে নি ব্যস্ততার কারণে।
আপাকে দেখার কারণে পাঁচশ টাকার কষ্ট টা আমি ভুলে গেলাম।
আপা আমার সমস্যার কথা শুনে বললেন,
“ভুলেও এই কথা নাবিদ কে বলবি না। সংসারের কোনো কিছুই ওর কানে তুলবি না। যেমন যাচ্ছে যেতে দে। তোর পাঁচশ টাকা আমি তোকে দিয়ে যাব। মন খারাপ করিস না। ”
আপা রাতে খেয়ে গেলেন না। এসেছিলেন একটা বিশেষ কারণে। বিয়ের সময় আমাকে তেমন কিছু দিতে পারে নি। দুলাভাই এর হাতের অবস্থা ভালো ছিলো না তখন। তাই এখন এক জোড়া কানের দুল নিয়ে এসেছে। কানের দুল টা খুব সুন্দর। ডিজাইন টা ভালো। আম্মার চোখ কপালে উঠে গেল কানের দুল দেখে। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখে বললেন,
“তোমার দুলাভাইর আয় রোজগার তো ভালোই। তাই তোমার বোন খরচ করতে পারে। ”
আমি কিছু বললাম না সেই কথার জবাবে।
***
বাড়িতে নতুন ঝামেলা শুরু হতে যাচ্ছে। জামিল ভাইয়ের ঝামেলা তো ছিলোই সেই সঙ্গে আরেক ঝামেলা যুক্ত হচ্ছে। আম্মার কথায় নাবিদ মনি, মুক্তা দুজনকেই মোবাইল কিনে দিলো। সেই ফোন সবসময় ই দুজনের হাতে থাকে। দিনরাত ফোন নিয়ে বসে থাকে। কখনো গান দেখছে, কখনো ভিডিও দেখছে।
এসবের সঙ্গে যুক্ত হলো মনির সারাক্ষণ ফোনে কথা বলা। বাথরুমে গেলেও ফোন টা কানে থাকে। কী বিশ্রী অবস্থা! এভাবে অনেক দিন ধরে চলছে। এসব দেখতে দেখতে আমি বিরক্ত হচ্ছিলাম। কিন্তু পরী আপা নাবিদ কে বলতে বারন করেছে।
একদিন নাজমা ভাবী বলল,
“তোমার বড় ননদের খবর জানো কিছু? ”
“না ভাবী। সারাদিন এতো ব্যস্ত থাকি যে কারোর খোঁজ নেবার সুযোগ পাই না। ”
ভাবী নিচু গলায় বলল,
“খবর ভালো না জরী। কাওরান বাজার মাছ বেঁচে এমন একজনের সাথে তার প্রেম হইছে। সেই ছেলে সন্ধ্যের পর বাড়ির সামনে ঘোরাঘুরি করে। ”
আমি অবাক হলাম। সত্যতা যাচাই করতে একদিন ছাদে গিয়ে সন্ধ্যেবেলা দাঁড়ালাম। কালো, রোগামতন একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। এদিক ওদিক তাকাচ্ছে চোরের মতো। একটু পর মনি বের হলো। সাদা, নীল জর্জেটের জামা পরা।
পরের দিনের ঘটনাও একই রকম। সামনের বিল্ডিং এর তানিয়াদের বাসায় যাই বলে সেজেগুজে বেরিয়ে গেল। গেটের ওখানে ওই ছেলেটা দাঁড়িয়ে। মনি আগে আগে গেল, ছেলেটা পিছনে।
আমি পরী আপার কথা শুনলাম না। নাবিদ কে জানালাম। নাবিদ এক সন্ধ্যেবেলা ছেলেটাকে জিজ্ঞেস করলো,
“ভাই কে আপনি? প্রতিদিন নাকি এখানে দাঁড়িয়ে থাকেন। কাউকে খোঁজেন?”
ছেলেটা আমতা আমতা করতে লাগলো। এরমধ্যে মনিও বেরিয়ে আসলো। নাবিদ স্বভাবসুলভ ভ্রু কুঁচকে মনিকে জিজ্ঞেস করলো,
“তুই কোথায় যাচ্ছিস?”
বেচারি ঠিকঠাক জবাব দিতে পারে নি। নাবিদ সেদিন যথেষ্ট শাসন করলো। আম্মা মেয়ের পক্ষ না নিলেও চুপ করে রইলেন। তার দিন দুয়েক পর সেই মেছো ছেলেটার সঙ্গে মনি পালিয়ে গেল। যাবার আগে আম্মার আলমারি থেকে তার জমানো টাকা আর মুক্তার এক জোড়া জুতা নিয়ে গেল।
চলবে…