রোমান্টিক_ডাক্তার পার্ট: ৬

0
4545
রোমান্টিক_ডাক্তার

পার্ট: ৬

লেখিকা: সুলতানা তমা

কাব্য ল্যাপটপে কি যেন কাজ করছে আর আমি ওর কাধে মাথা রেখে বসে আছি। আজ নিজেকে আর একা মনে হচ্ছে না, কাব্য’র উপর ভরসা করতে ইচ্ছে হচ্ছে। কাব্য’র কাধ থেকে মাথা তুলে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি ওর দিকে আর ভাবছি একটা মানুষ এতোটা ভালো কিভাবে বাসতে পারে।
কাব্য: এইযে মেম কি দেখছেন (আমাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে কাব্য ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করলো)
আমি: ভাবছি আপনি আমাকে এতোটা ভালো কিভাবে বাসেন।
কাব্য: একদিন তুমিও আমাকে ঠিক এতোটাই ভালোবাসবে যতোটা ভালো আমি তোমাকে বাসি। (সে দিনটা বেশি দূরে নয় খুব কাছেই, আমি আপনাকে ভালোবাসি আর এই ভালোবাসা প্রতিটা মুহূর্তে বেড়ে চলেছে)
কাব্য: আবার কোথায় হারালে।
আমি: কোথাও না আমি তিশাকে দেখে আসছি।
কাব্য: কি দেখবে ও তো ঘুমিয়ে আছে।
আমি: আপনি তো কাজ করছেন আমি একবার দেখে আসি এখানে বসে থেকে কি করবো।
কাব্য: কাজ তো তোমার জন্যই করছি, এখন কাজ শেষ করে সারা রাত গল্প করবো তোমার সাথে।
আমি: হুহ সখ কতো।

তিশার কেবিনে এসে দেখি সেই সিস্টারটা কি যেন করছে, আমাকে দেখেই মুখ ফিরিয়ে নিলো। আমি তিশার পাশে এসে বসলাম, ও ঘুমিয়ে আছে। দেখে তো আগের চেয়ে অনেক সুস্থ মনে হচ্ছে তারমানে সকালে বাসায় নিয়ে যেতে পারবো। তিশার একটা হাত আমার দুহাতের মুঠোয় এনে ধরে বসে আছি। কেন যে পাগলীটা বার বার আমার জন্য নিজেকে কষ্ট দিতে যায়।
সিস্টার: পেসেন্ট আপনার কি হয়…? (বাব্বাহ্ যে আমাকে দেখে রাগে মুখ ফিরিয়ে নেয় সে নিজের ইচ্ছায় কথা বলছে)
আমি: বোন।
সিস্টার: আর কাব্য স্যার..?
আমি: প্রশ্নটা নাহয় ওকেই করবেন।
সিস্টার: এতো ভাব কিসের হ্যাঁ জিজ্ঞেস করছি বলে দিলেই তো হয়।
আমি: আস্তে চেঁচামেচি করুন তিশার সমস্যা হবে। আর আগে তো কাব্য বলেই দিয়েছে আমি ওর বউ।
সিস্টার: হুহ বউ। স্যার আসার পর থেকে উনার পিছনে আঠার মতো লেগে আছি পাত্তাই দিচ্ছে না আর এদিকে এই মেয়েকে বউ বানিয়ে বসে আছে। কি আছে এই মেয়ের মধ্যে যা আমার মধ্যে নেই, আমি তো এই মেয়ের চেয়ে যথেষ্ট সুন্দরী। (কথাগুলো খুব আস্তে আস্তে বলছে, আমি শোনেও না শোনার ভান করে ওকে জিজ্ঞেস করলাম…)
আমি: কিছু বলছেন..?
সিস্টার: না।
কাব্য: শুভ্রা একটা কথা মনে রেখো শুধু সুন্দরী হলেই হয় না ভালোবাসা পেতে হলে আরো অনেক যোগ্যতা থাকতে হয়। আর কি যেন বলছিলে তিলোর মধ্যে কি এমন আছে যা তোমার মধ্যে নেই..? উত্তরটা আমিই দিচ্ছি, তোমার মধ্যে অনেক বেশি অহংকার আছে যা তিলোর মধ্যে নেই। আর অহংকারীদের আমি জাস্ট ঘৃণা করি। (কাব্য আবার চলে আসলো কেন, ও তো দেখছি খুব রেগে যাচ্ছে)
সিস্টার: এই মেয়ের সামনে আমাকে অপমান করছেন।
কাব্য: অপমান কোথায় করলাম তুমি ওকে প্রশ্ন করেছ উত্তরটা আমি দিলাম।
আমি: ডাক্তারবাবু ছাড়ুন না অজতা কথা বাড়াবেন না প্লিজ।
সিস্টার: এই অপমানের শাস্তি আপনি পাবেন।
মেয়েটা রাগে গজগজ করতে করতে চলে গেলো। সামান্য বিষয় নিয়ে এতো রেগে যাওয়ার কি আছে, হ্যাঁ ও হয়তো কাব্য’কে ভালোবাসে তাই বলে কাব্য’কেও কি ওকে ভালোবাসতে হবে নাকি। মেয়েটি যদি কাব্য’কে পছন্দ করে তাহলে কাব্য’রও তো মেয়েটিকে পছন্দ হতে হবে তারপর নাহয় একটা সম্পর্ক তৈরি হবে। মেয়েটি তো দেখছি জোর করে কাব্য’কে পেতে চাইছে, জোর করে তো কখনো ভালোবাসা পাওয়া যায় না।
কাব্য: তমা চলো।
আমি: প্লিজ শান্ত হন এতো রেগে গেলে হয় নাকি..?
কাব্য: কি করবো গতকাল রাতে আসছি আর এই মেয়েটা পিছনে লেগে আছে, ভালো মেয়ে হলে কথা বলে বুঝানো যায় কিন্তু শুভ্রা তো খুব জেদি আর অহংকারী মেয়ে।
আমি: মেয়েটি আপনাকে ভালোবাসে তাই এমন করছে।
কাব্য: এই শোনো আমার শুধু তোমার ভালোবাসা চাই অন্য কারো ভালোবাসা লাগবে না।
আমি: সবসময় এতো রেগে যান কেন।
কাব্য: এই রুমে কথা বললে তিশার সমস্যা হবে চলো তুমি।

সোফায় বসে আছি আর কাব্য আমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে শুয়ে ল্যাপটপ টিপছে। কাব্য’র চুলে একমনে হাত বুলিয়ে যাচ্ছি, কাব্য দেখতে ফর্সা স্মার্ট সবকিছু লক্ষ করলেও কাব্য’র চুলগুলো যে এতো সুন্দর আগে লক্ষ করিনি। ইসসস কাব্য সবদিকে সুন্দর আর আমি… মানায় নাকি আমাকে ওর সাথে।
কাব্য: যেভাবে চুলে হাত বুলাচ্ছ কখন জানি ঘুমিয়ে পড়ি (কাব্য’র কথায় লজ্জা পেয়ে হাত সরিয়ে নিলাম)
আমি: আচ্ছা আপনাকে তো আদনান ভাইয়া ডিউটির জন্য রেখে গেছে আপনি ডিউটি রেখে এখানে বসে আছেন কেন।
কাব্য: পাশে বউ থাকলে ডিউটিতে মন বসে নাকি (আমার দিকে তাকিয়ে চোখ টিপ দিয়ে বললো, কি দুষ্টুরে বাবা)
কাব্য: অনেক ডক্টর আছে প্রয়োজন হলে আমাকে ডেকে নিবে তুমি এসব নিয়ে ভেবো না। তুমি এখন বলো আমরা কত তারিখ বিয়ে করছি।
আমি: মানে।
কাব্য: ওমা বিয়ে করতে হবে না, নাকি এমনি আমার বউ হয়ে যাবে।
আমি: দ্যাত আপনি খুব দুষ্টু।
কাব্য: বিয়েটা হয়ে যাক আপনি আপনি ডাকা ছাড়াবো।
আমি: মামি যদি রাজি না হন।
কাব্য: আমি রাজি করাবো তুমি এসব নিয়ে চিন্তা করো না তুমি শুধু ভাবো আমাদের বাচ্চা কয়টা হবে (ওর মুখে দেখছি কিছুই আটকায় না, এসব বলে আবার দিব্বি হাসছে)
কাব্য: লজ্জা পেলে তোমাকে আরো বেশি সুন্দর লাগে।
আমি: আপনাকে তো আমি… (ওর চুলে জোরে জোরে কয়েকটা টান দিলাম)
কাব্য: উফফ লাগছে তো।
আমি: আর এসব বলবেন, বললে আরো দিবো।
কাব্য: কেন তুমি মা হতে চাও না (কাব্য’র এমন প্রশ্ন শুনে লজ্জা পেলাম সাথে কেমন যেন একটা অনুভূতি হচ্ছে, মা হতে কে না চায়। প্রত্যেকটা মেয়েই তো মা হতে চায়)
কাব্য: আমরা কিন্তু এই সপ্তাহেই বিয়ে করছি। ফারাবী আর ভাবীকে ফোন করে সব বলে দিয়েছি আর অয়ন তো রীতিমতো সব আয়োজন করা শুরু করে দিয়েছে।
আমি: আপনার পরিবারে আর কে কে আছে…?
কাব্য: আমরা তিনভাই এক বোন সাথে ভাবী, বোন লন্ডনে পড়াশোনা করছে বিয়েতে আসতে পারবে না।
আমি: আর আপনার বাবা মা (কাব্য কেমন যেন চুপ হয়ে গেলো তাহলে কি ওর আব্বু আম্মু বেঁচে নেই)
কাব্য: আমিই তোমার সব তাই আর কখনো বাবা মা শব্দটা যেন তোমার মুখে না শুনি।
কাব্য ল্যাপটপ রেখে নিশ্চুপ হয়ে শুয়ে আছে। কাব্য কাঁদছে সেটা আমি বুঝতে পারছি কিন্তু আব্বু আম্মুর কথা জিজ্ঞেস করাতে কাঁদছে কেন এইটা ভেবে পাচ্ছি না।
যদি কাব্য’র আব্বু আম্মু মারা গিয়ে থাকেন তাহলে তো ওর এতো রেগে যাওয়ার কথা না তাহলে কি ওর আব্বু আম্মু, রেগে যাওয়া এসবের পিছনে কোনো রহস্য আছে…? কিন্তু কি রহস্য…?
কাব্য’র দিকে তাকালাম আমার কোলে মাথা রেখেই ঘুমিয়ে পড়েছে। ওর চোখের কোণে এখনো পানি জমে আছে, ওর ঘুমন্ত মুখটা কি মায়াবী লাগছে। কাব্য’র চোখের পানি আলতো করে মুছে দিলাম। “জানিনা আব্বু আম্মুর কথা জিজ্ঞেস করাতে আপনি এভাবে রেগে গেলেন কেন আর কাঁদলেনই বা কেন, যদি এসবের পিছনে সত্যি কোনো রহস্য থেকে থাকে তাহলে তা আমি খুঁজে বের করবো আর আপনাকে এই যন্ত্রণা থেকে মুক্ত করবো”

সকালে ঘুম ভাঙতেই তাকিয়ে দেখি কাব্য এখনো ঘুমিয়ে আছে। রাতে কখন যে সোফায় হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম বুঝতেই পারিনি। তিশার কাছে যাওয়া দরকার, কাব্য’র মাথা আস্তে সরাতে চাইলাম কিন্তু ও আমার একটা হাত চেপে ধরে আবার ঘুমিয়ে পড়লো। ওর চুল গুলো আবার আমাকে টানছে ইচ্ছে হচ্ছে চুলে একটা চুমু দেই কিন্তু… কাব্য তো ঘুমে দিলে তো আর দেখবে না। আস্তে করে কাব্য’র চুলে একটা চুমু দিলাম।
কাব্য: আমি কিন্তু ঘুমে না সব বুঝে গেছি (চোখ বন্ধ করে বলছে আর হাসছে। ইসস এইটা কি হলো)
কাব্য: লজ্জা পেলে তো তোমাকে সুন্দর লাগে তাহলে দুহাত দিয়ে মুখটা ডেকে রেখেছ কেন…? (কাব্য উঠে আমার পাশে বসলো তারপর আমার হাত দুটু মুখ থেকে সরিয়ে ওর কোমরে নিয়ে রাখলো)
কাব্য: এতো লজ্জা পাচ্ছ কেন আর তো মাত্র কটা দিন তারপর আমরা স্বামী স্ত্রী হয়ে যাবো আর বিয়ের পর প্রতিটা সকালে তোমার ভেজা চুলের পানি+মিষ্টি একটা চুমুতে আমার ঘুম ভাঙবে (কাব্য আমার একদম কাছে এসে আমার কপালে ওর কপাল ঠেকিয়ে কথা গুলো বললো আর এখন মিটমিটিয়ে হাসছে)
কাব্য: কি ম্যাডাম তোমার ভেজা চুলের পানিতে প্রতিদিন আমার ঘুম ভাঙাবে না…?
আমি: দ্যাত আপনার মুখে কিচ্ছু আটকায় না (লজ্জা পেয়ে কাব্য’র বুকে মুখ লুকালাম। কাব্য এক হাত দিয়ে আমার কোমর জরিয়ে ধরে আছে আরেক হাত দিয়ে আমার ঘাড়ের চুল সরাচ্ছে। চুলগুলো এক পাশে রেখে কাব্য আস্তে আস্তে আমার ঘাড়ে মায়া দেওয়ার জন্য এগুচ্ছে, ওর গরম নিঃশ্বাস আমার ঘাড়ে পড়ছে)
“স্যার আপনার পেসে…” (হঠাৎ কারো কন্ঠ শুনে কাব্য আমাকে ছেড়ে দিয়ে দূরে গিয়ে বসলো, তাকিয়ে দেখলাম শুভ্রা মেয়েটা। বাহ্ কাব্য’র মুখটা এখন দেখার মতো হয়েছে)
কাব্য: শুভ্রা কারো রুমে আসলে যে নক করে আসতে হয় এই মিনিমাম সেন্স টুকু কি তোমার নেই…?
শুভ্রা: আমি তো আর জানতাম না আপনি যে আপনার চেম্বারটাকে নিজের বেডরুম ভাবেন।
কাব্য: জাস্ট সেটআপ, আমি আমার চেম্বার বেডরুম বানাবো নাকি ড্রয়িংরুম বানাবো সে কৈফিয়ত কি তোমাকে দিতে হবে…? বেড়িয়ে যাও এক্ষণি।
শুভ্রা: আপনি কিন্তু আবার আমাকে অপমান করছেন।
কাব্য: তো কি তোমাকে কোলে বসিয়ে আদর করবো (মেয়েটা রাগে কটমট করে আমার দিকে একবার তাকিয়ে চলে গেলো। কাব্য রাগে বেলুনের মতো ফুলছে দেখে খুব হাসি পাচ্ছে)
কাব্য: খুব মজা হচ্ছে তাই না।
আমি: নাতো।
কাব্য: আবার হাসছ।
আমি: ওকে আর হাসবো না।
কাব্য: উহু হাসো তোমার হাসি দেখলে আমার সব রাগ চলে যাবে।
আমি: তিশার কাছে যাচ্ছি।
কাব্য পিছন পিছন ডাকছে তাও তিশার কাছে চলে আসলাম।

তিশা এখনো ঘুমাচ্ছে, এই আদনান ওকে কতো ঘন্টার জন্য ঘুম পাড়িয়ে রেখেছে আল্লাহ্‌ জানেন। তিশার পাশে বসে ওর মাথায় হাত দিতেই ও জেগে গেলো।
আমি: যাক বাবা অবশেষে তোর ঘুম ভাঙলো।
তিশা: বোন আমি সুস্থ হয়ে গেছি আমাকে এইখান থেকে নিয়ে যা।
আমি: হ্যাঁ একটু পরই চলে যাবো।

তিশাকে রিলিজ করে দিলো, ওকে নিয়ে বাসায় চলে আসলাম। কাব্য আমাদের পৌঁছে দিয়ে গেলো। তিশাকে রুমে দিয়েই আমি বাসায় চলে আসলাম। জানিনা আজ কপালে কি আছে।

বাসায় ঢুকতেই মামি সামনে এসে দাঁড়ালো।
মামি: হয়েছে শান্তি ওরা বিয়েটা ভেঙে দিয়েছে।
আমি: আমি তো এই বিয়েতে রাজি ছিলাম না ভেঙে গিয়েছে তো ভালো হয়েছে।
মামি: তোকে কি আমি সারাজীবন এভাবে…
আমি: ভালো লাগছে না পরে কথা বলবো।
রুমে চলে আসলাম, শরীর খুব দুর্বল লাগছে মনে হয় জ্বর হবে। বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই ক্লান্তিতে চোখ দুটু বুজে আসলো।

হঠাৎ ফোনের শব্দে ঘুম ভেঙে গেলো, কাব্য ফোন দিয়েছে। রিসিভ করতেই চেঁচিয়ে উঠলো।
কাব্য: সেই বিকেলবেলা থেকে ফোন দিয়ে যাচ্ছি সন্ধ্যা হয়ে গেছে আর এখন তুমি ফোন রিসিভ করলে।
আমি: আসলে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।
কাব্য: কেন শরীর খারাপ (জ্বর তো ভালোই এসেছে কিন্তু ওকে তো বলা যাবে না টেনশন করবে)
আমি: নাতো।
কাব্য: ওকে রাতে ফোন দিবো রাখছি এখন।
আমি: হুম।
ফোন রেখে তিশার কাছে চলে আসলাম, বসে বসে মোবাইল টিপছে।
আমি: এই তুই না অসুস্থ তাহলে শুয়ে না থেকে মোবাইল টিপছিস কেন…?
তিশা: আসছে ডাক্তারের বউ ডাক্তারনি।
আমি: কি বললি..?
তিশা: মিথ্যে কিছু বলেছি নাকি..?
আমি: জানিনারে কাব্য তো বললো মামির সাথে কথা বলতে আসবে।
তিশা: হুম সব ভালো ভাবে হবে দেখিস।
তিশার সাথে আরো কিছু সময় গল্প করে বাসায় চলে আসলাম।

দরজায় আসতেই ভিতরে মামির হাসির শব্দ পেলাম সাথে দুজন পুরুষ মানুষের কন্ঠ। রাত প্রায় নয়টা বাজে এতো রাতে আমাদের বাসায় কে আসবে। ভিতরে না গিয়ে দরজায় দাঁড়িয়ে ওদের কথা শুনছি।
মামি: এই মেয়েকে নিয়ে আর পারছি না। ভেবেছিলাম কোথাও একটা বিয়ে দিয়ে আপদ বিদায় করবো কিন্তু বিয়েটা ভেঙে গেলো।
–এখন একদম ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হাহাহা।
মামি: হ্যাঁ অনেক সহ্য করেছি আর না এই মেয়ের জায়গা পতিতালয়েই ভালো মানাবে (পতিতালয় শব্দটা শুনে যেন আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো)
–আমরা কি আজকেই ওকে নিয়ে যেতে পারবো..?
মামি: হ্যাঁ তবে সাবধানে।
–ঠিক আছে।
আর শুনতে পারলাম না ওদের কথা। কোনোভাবে হাটতে হাটতে রাস্তায় চলে আসলাম। তিশার কাছে গেলেও ওরা আমাকে ধরে নিয়ে যাবে কারণ মামি আমাকে ওদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। কাব্য’র বাসা তো চিনি না ফোনটা বাসায় ফেলে এসেছি। আস্তে আস্তে হাটতে হাটতে অনেক দূর চলে আসলাম। এমনি গায়ে জ্বর তার উপর এভাবে হাটছি এখন আর পারছি না। রাস্তার পাশের একটা ল্যাম্পপোস্ট এর নিচে বসে পড়লাম। মামি আমার সাথে শেষ পর্যন্ত এমন জঘন্য কাজ করতে পারলো ভাবতেই মাথা ঘুরছে, চোখ দুটু অন্ধকার হয়ে আসছে, আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে ওখানেই পড়ে গেলাম।

চলবে?

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে