পার্ট: ২২
আয়নার সামনে বসে চুল আছড়াচ্ছি আর বার বার কাব্য’র দিকে নজর পড়ছে। আয়নাতে ওকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে খুব মায়াবী লাগছে কিন্তু ওর ঘুম দেখে হিংসেও হচ্ছে। ইচ্ছে হচ্ছে ঘুমটা ভাঙিয়ে দেই। কোনো ইচ্ছে অপূর্ণ রাখতে নেই তাই কাব্য’র পাশে এসে দাঁড়ালাম, ভেজা চুলগুলো মুঠো করে ওর মুখের উপর ধরলাম। চুল থেকে টুপটুপ করে পানি ওর চোখে মুখে পড়তেই এক রাশ বিরক্তি নিয়ে ঘুম ঘুম চোখে তাকালো।
কাব্য: তিলো কি হচ্ছে?
আমি: যা হবার তাই হচ্ছে।
কাব্য: ঘুমুতে দাও প্লিজ।
আমি: উঁহু হবে না উঠে পড়ো।
কাব্য: তুমি কিন্তু বলেছিলে নামাজ পড়লে ঘুমুতে দিবে, তোমার সাথে তো নামাজ পড়েছি তাহলে এ…
আমি: রাতে আমাকে ঘুমুতে দাওনি এখন তুমি নাক ডেকে ঘুমাবে তা কি করে হয় উঠো বলছি।
কাব্য: প্লিজ লক্ষীটি। (নাহ ওর ঘুম এভাবে ভাঙানো যাবে না অন্য কিছু ভাবতে হবে। আচমকা দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে উঠলাম)
আমি: এই দশটা বাজে তুমি হসপিটালে যাবে না। (হিহিহি কাজ হয়ে গেছে কাব্য এক লাফে উঠে বসে গেছে)
কাব্য: মাত্র সাতটা বাজে আর আজ তো শুক্রবার ফাজি মেয়ে। (ঘড়ি দেখে আবার শুয়ে পড়লো দ্যাত)
আমি: রাতে আমাকে ঘুমুতে দিবে না শুধু দুষ্টুমি করবে আর সকালে উনি নাক ডেকে ঘুমুবে আমার ঘুমাবার উপায় নেই। আজ কে দুষ্টুমি করে দেখবো। (ইচ্ছে করেই হাতের চিরুনিটা কাব্য’র উপর ছুড়ে ফেলে দিলাম। চলে আসতে চাইলাম আচমকা কাব্য আমার হাত ধরে হেচকা টান দিয়ে আমাকে ওর বুকে শুয়ে দিলো)
আমি: উফফ কোমরটা বোধহয় ভেঙেই গেছে।
কাব্য: পড়েছ তো আমার উপর তোমার কোমর ভাঙবে কিভাবে। ভেঙেছে তো আমার কোমর যা মুটকি তুমি।
আমি: আমি মুটকি হ্যাঁ, আর আমি পড়েছি নাকি তুমিই তো হাত ধরে টান দিয়েছ।
কাব্য: আস্তে কিল দাও লাগছে তো।
আমি: আর আমাকে মুটকি বলবে? (আরো কতোগুলো কিল দিলাম ওর বুকে)
কাব্য: এমন চিকনিকে মুটকি বলতে আমার বয়েই গেছে।
আমি: হুহ।
কাব্য: ভেজা চুলে তোমাকে খুব স্নিগ্ধ লাগছে ইচ্ছে হচ্ছে…
আমি: আবার দুষ্টুমি শুরু করেছ ছাড়ো বলছি।
কাব্য: প্লিজ। (কাব্য আমার গলায় চুমু দেওয়ার জন্য ওর মুখ এগুতে শুরু করলো, একটা হাত দিয়ে আটকে দিলাম। কাব্য এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে)
আমি: কি হলো রাগ করেছ?
কাব্য: আমাকে ছেড়ে চলে যাবে নাতো কখনো? (আমার চোখের সামনে চলে আসা চুলগুলো কানের কাছে গুঁজে দিয়ে আবার আমার চোখের দিকে তাকালো, ওর চোখে পানি ছলছল করছে)
আমি: হঠাৎ এসব বলছ কেন আর আমি তোমাকে ছেড়ে যাবোই বা কেন?
কাব্য: জানিনা খুব ভয় হয় যদি তোমাকে হারিয়ে ফেলি। (আমাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো, ওর বুকে মাথা রেখে চুপচাপ শুয়ে আছি)
কাব্য: গতকাল এতোটা সময় তোমার থেকে দূরে থাকতে চাইনি, হঠাৎ হসপিটাল থেকে ফোন এসেছিল আমার ফোনটা আদনান এর বাসায় রেখেই চলে গিয়েছিলাম তারপর আর সুযোগই হয়নি। জানো তুমি কতোটা কষ্ট হয়েছিল আমার, তুমি কখনো চলে গেলে আমি মরেই যাবো।
আমি: পাগলের মতো কি বলছ এসব আর কখনো যেন এসব না শুনি।
কাব্য: হু। (কাব্য’র চোখের পানি মুছে দিয়ে ওর কপালে আলতো করে একটা চুমু দিলাম)
কাব্য: তিলো তোমার সাথে কিছু কথা ছিল হিয়াকে নিয়ে এখন বলবো?
আমি: বলো।
কাব্য: হিয়াকে এর আগেও অনেক বার বিয়ের কথা বলেছি ও সোজা না করে দিয়েছে এখন তো ও দেশে এসেছে ভাবছিলাম বিয়েটা দিয়ে দিলে…
আমি: হিয়া রাজি না কেন?
কাব্য: ওইযে আমার উপর রেগে আছে।
আমি: ভাইয়া অয়ন ওরা জানে?
কাব্য: না আজ বলবো সবাইকে।
আমি: ছেলে দেখেছ?
কাব্য: হুম ছেলের পরিবার ব্যাংকক থাকে, বিয়ের পর হিয়াকেও নিয়ে যাবে।
আমি: তোমরা কথা বলো আমি হিয়াকে রাজি করাবো।
কাব্য: প্লিজ তুমি চেষ্টা করে দেখো, হিয়াকে ভালো ছেলে দেখে ভালো পরিবার দেখে বিয়ে দেওয়াটাই এখন আমার সবচেয়ে বড় দায়িত্ব।
আমি: তুমি চিন্তা করোনা আমি ওকে ঠিক রাজি করাবো। এখন উঠে ফ্রেশ হয়ে নাশতা খেতে আসো।
কাব্য: ওকে।
টেবিলে নাশতা আনছি আর আরশির বলা কথা গুলো ভাবছি, সত্যি ও হিয়ার কোনো ক্ষতি করবে নাতো? একবার হাত কেটেছে পরে আবার কি করে বসবে কে জানে। হিয়ার বিয়েটা হয়ে গেলে ওকে তো ব্যাংকক নিয়ে যাবে তখন আরশি আর হিয়ার খুঁজ পাবে না, আমিও এই চিন্তা থেকে মুক্তি পেতাম। কিন্তু হিয়া কি রাজি হবে?
ভাবি: তিলোত্তমা কি হয়েছে তোর অন্যমনস্ক হয়ে আছিস।
আমি: হুম কিছু হয়নি।
সবাই নাশতা খাচ্ছে কাব্য বার বার হিয়ার দিকে তাকাচ্ছে, বলতে ভয় পাচ্ছে ও। আমাকেই শুরু করতে হবে।
আমি: ডাক্তারবাবু তুমি না আজ কি যেন বলবে বলছিলে সবাইকে।
ভাইয়া: কিরে কাব্য কি বলবি?
কাব্য: আসলে…(আবার হিয়ার দিকে তাকাচ্ছে, কোনো ভাই ছোট বোনকে এতোটা ভয় পায় এই প্রথম দেখলাম)
ভাইয়া: হ্যাঁ বল।
কাব্য: আমি হিয়ার জন্য ছেলে দেখেছি ওর বিয়ে দিতে চাই। (একদমে বলেই হিয়ার দিকে তাকালো, হিয়া তো খুব রেগে গেছে। সবাই হিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে)
হিয়া: আগের কথা গুলো ভুলে গেছ? ভুলে গেলে আবারো বলছি আমি বিয়ে করবো না। (হিয়া উঠে রুমে চলে গেলো। কাব্য হাতের খাবারটা রেখে দিয়ে চুপচাপ বসে আছে)
আমি: তোমরা খাও আমি হিয়াকে দেখছি।
হিয়া চুপচাপ বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে। আমি ওর পাশে এসে দাঁড়ালাম।
আমি: হিয়া একটা প্রশ্ন করবো?
হিয়া: হুম।
আমি: তুমি কি কাউকে ভালোবাস?
হিয়া: এই ভালোবাসা সম্পর্ক এসব তো আমি ঘৃণা করি।
আমি: কেন?
হিয়া: কারণ ওই…(আমার দিকে তাকিয়ে হিয়া থেমে গেলো। আব্বু আম্মুর সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তো হিয়া জানে না তাহলে ও কিসের জন্য ভালোবাসা সম্পর্ক এসব ঘৃণা করে? আর হিয়া কি বলতে গিয়ে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থেমে গেলো?)
আমি: বিয়ে করতে চাও না কেন?
হিয়া: যে বিয়েতে আমার আব্বু আম্মু থাকবে না সে বিয়ের কোনো মানে হয় না।
আমি: আর যদি আব্বু আম্মু থাকেন তাহলে বিয়ে করবে? (হিয়া অবাক হয়ে তাকালো আমার দিকে)
হিয়া: কি বলছ এসব?
আমি: যা জিজ্ঞেস করেছি তার উত্তর দাও।
হিয়া: ভাইয়ার জন্য সম্পর্ক ভালোবাসা এসবে ঘৃণা জন্মেছিল কিন্তু তোমাকে দেখে এসবে কিছুটা হলেও বিশ্বাস জন্মেছে আর তাই আব্বু আম্মু উপস্থিত থাকলে আমি আজই বিয়ে করবো। ভাইয়া আমার চোখে অপরাধী কিন্তু সমাজের চোখে তো না। ভাইয়াকে আমি সমাজের কাছে ছোট করতে চাই না কিন্তু আব্বু আম্মু…
আমি: বললাম তো আব্বু আম্মু বিয়ের দিন উপস্থিত থাকবেন।
হিয়া: সত্যি?
আমি: হুম। হয়তো এতো তাড়াতাড়ি খুঁজে পাবো না কিন্তু কথা দিচ্ছি তুমি কবুল বলার ঠিক আগের মুহূর্তে হলেও আমি আব্বু আম্মুকে বিয়ের আসরে উপস্থিত করবো।
হিয়া: আব্বু আম্মু না আসা পর্যন্ত আমিও কবুল বলবো না। যাও ভাইয়াকে বিয়ে ঠিক করতে বলো।
আমি: হুম।
হিয়াকে তো কথা দিলাম ঠিকি কিন্তু পারবো তো আমি? খুব তাড়াতাড়ি করতে হবে সবকিছু, বিয়েটা খুব তাড়াতাড়ি দিয়ে দিতে হবে। আরশির নজর থেকে হিয়াকে দূরে সরাতে হবেই।
কাব্য: তিলো রাজি হয়েছে হিয়া?
আমি: হুম তুমি বিয়ের তারিখ ঠিক করো।
কাব্য: তুমি পারলে কিভাবে ওকে রাজি করাতে?
আমি: (মৃদু হাসলাম। কতো বড় রিস্ক নিয়েছি সেটা তো একমাত্র আমি জানি)
আমি: ছেলে দেখতে কেমন ভালো তো?
কাব্য: হিয়া আমার কলিজার টোকরা ওকে আমি ভালো ছেলের হাতেই তুলে দিবো বিশ্বাস রাখো আমার উপর।
আমি: ঠিক আছে।
ভাবির সাথে রান্নায় হেল্প করছি হঠাৎ দেখি কাব্য আর ভাইয়া রেডি হয়ে এদিকে আসছে। কোথায় যাবে ওরা?
ভাইয়া: নিরা আমরা আসছি।
আমি: কোথায় যাচ্ছ দুজন।
কাব্য: হিয়ার বিয়ে ঠিক করতে।
আমি: আসবে কখন?
কাব্য: রাত হয়ে যাবে।
আমি: ঠিক আছে। (ভাইয়া আর কাব্য বেরিয়ে যেতেই ভাবির হাত ধরে ভাবির মুখের দিকে তাকালাম)
ভাবি: কিছু বলবি?
আমি: হুম একটা হেল্প করো প্লিজ।
ভাবি: কি?
আমি: একটু বাইরে যাবো আসতে অনেক দেরি হবে এর মধ্যে কাব্য চলে আসলে তুমি অন্যকিছু বলো।
ভাবি: কিন্তু যাবি কোথায়?
আমি: পরে বলবো শুধু এই টুকু জেনে রাখো সবার ভালোর জন্যই যাচ্ছি আর অয়নকে সাথে নিয়ে যাচ্ছি তুমি চিন্তা করোনা।
ভাবি: ঠিক আছে সাবধানে যাস।
আমি: ওকে।
অয়নকে সাথে নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম জানিনা ওই ঠিকানায় গিয়ে আদৌ কিছু পাবো কিনা।
অয়ন: ভাবি গাড়ি নিলেই ভালো হবে তাড়াতাড়ি চলে আসতে পারবো।
আমি: ড্রাইভ করতে পারো তো?
অয়ন: এইটা আমরা তিন ভাই ভালোই পারি।
আমি: ঠিক আছে চলো।
অয়ন খুব স্পিডে গাড়ি চালাচ্ছে কিন্তু তাও যেন রাস্তা শেষ হচ্ছে না। ভয়ে আমার শরীর ঘামছে, কাব্য এসব জানতে পারলে আমাকে আস্ত রাখবে না। আর ওই আরশির লোক গুলো তো সবসময় আমাদের উপর নজর রাখছে কখন কি করে বসে ঠিক নেই। আচ্ছা আরশি আমাদের ক্ষতি করবে এটাই শুধু ভাবছি একবারো তো এইটা ভাবছি না আরশি কাব্য’র উপর এতো ক্ষেপে আছে কেন? কাব্য তো কারো সাথে প্রতারণা করার মতো মানুষ নয়, তাহলে আরশি কিসের প্রতিশোধ নিচ্ছে?
অয়ন: ভাবি গাড়ি এখানে রেখে কিছুটা জায়গা হেটে যেতে হবে।
আমি: ঠিক আছে চলো।
অয়ন: ভাবি আমরা কোনো ভুল করছি নাতো?
আমি: ভুল হবে কেন আমরা তো আব্বু আম্মুকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে এসেছি আর আমার বিশ্বাস আব্বু আম্মুও নিজের ছেলে মেয়ের কাছে ফিরে যেতে চান।
অয়ন: চলো দেখি কি হয়।
এতোকিছুর পর আসতে পারলাম, কিন্তু বাসা তো…
অয়ন: ভাবি বাসা তো তালা দেয়া।
আমি: তাইতো দেখছি।
অয়ন: এখন কি করবে।
আমি: কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে দেখি।
অয়ন: কার জন্য অপেক্ষা করবে আমরা তো জানিই না এই বাসায় কে থাকে।
আমি: কাউকে একটু জিজ্ঞেস করো প্লিজ।
অয়ন: দাঁড়াও আমি দেখছি।
বাসার সামনে দাঁড়িয়ে আছি, অয়ন একটু দূর যেতেই আমার ফোন বেজে উঠলো। এইটা তো শুভ্রার নাম্বার তাহলে কি ওরা আমাদের ফলো করছে। চারপাশে একবার চোখ বোলালাম সন্দেহজনক তো কাউকে দেখছি না। ফোন রিসিভ করলাম, আমি কিছু বলার আগেই শুভ্রা বলে উঠলো…
শুভ্রা: হাই মিস তিলোত্তমা সরি মিসেস কাব্য।
আমি: কেন ফোন করেছ?
শুভ্রা: একটা গুড নিউজ দেওয়ার জন্য।
আমি: মানে?
শুভ্রা: একটু আগে কাব্য’র ফোনে একটা মেসেজ গেছে “তুমি বোনের বিয়ে ঠিক করতে ব্যস্ত আর তোমার তিলো পাগলী তোমারই ছোট ভাইয়ের হাত ধরে ঘুরতে ব্যস্ত তাও কাছে কোথাও নয় একেবারে লং ড্রাইভে”
আমি: এতো গুলো থাপ্পড় খেয়েও শোধরাওনি দেখছি।
শুভ্রা: থাপ্পড় গুলোর প্রতিশোধ নিতে হবে না?
আমি: এসব নোংরা কথা বলে প্রতিশোধ নিতে পারবে না কারণ কাব্য তোমার এসব নোংরা কথায় কান দিবে না।
শুভ্রা: সেটা নাহয় পরেই বুঝতে পারবে এখন সামনে যে বিপদ এসেছে সেটা সামলাও তো দেখি।
আমি: মানে। (হঠাৎ পিছনে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে পিছনে তাকালাম। ভয়ে আমার শরীর শিউরে উঠলো, ওরা তো সেই দুজন লোক। আজকেও রোমাল দিয়ে মুখ ঢাকা)
শুভ্রা: আরশির বুদ্ধির প্রশংসা করতে হয়। সেদিন তো মরতে মরতে বেঁচে গিয়েছিলে কিন্তু আজ… (ফোনটা কেটে দিলাম। কি করবো এখন আমি)
অয়ন: ভাবি তুমি যা…(অয়ন লোক দুইটাকে দেখে থেমে গেলো, আমার পাশে এসে দাঁড়ালো)
অয়ন: কে তোমরা?
–ভয় নেই তোর ভাবিকে বেশি কষ্ট দিয়ে মারবো না। সেদিন তো বেঁচে গেছে কিন্তু আজ আর সুযোগ নেই।
লোক দুটু আমাদের দিকেই এগিয়ে আসছে। আমি তো ভাবতেও পারিনি এমন কিছু হবে। এই আরশি আর শুভ্রা তো আমাকে মারার জন্য পাগল হয়ে গেছে। ভয়ে আমার হাত পা কাঁপছে, অয়নের পিছনে গিয়ে ভয়ে ওর হাত চেপে ধরলাম।
চলবে?