রোমান্টিক_অত্যাচার_৪
লেখিকাঃ Israt_Jahan
ধারণা : Kashnir Mahi
আশফিঃ না চাচ্চু আমি আর ওখানে যেতে চাইনা। ওখানে গেলে যে আমার সেই ভয়ংকর দিনগুলোর কথা মনে পড়ে। ঐ স্মৃতিগুলো মনে পড়লে আমার চারপাশ অন্ধকার লাগে।আমি সহ্য করতে পারিনা। তুমি যাও, গিয়ে সবকিছু দেখেশুনে আসো।
ঠিক আছে রাখছি।
আমিঃ স্যার কে কালকের ফাইলগুলো দেওয়ার জন্য স্যারের রুমে এসেছি।দেখলাম উনি কারো সাথে ফোনে কথা বলছিলেন। আমার দিকে যখন তাকালো তখন দেখলাম চোখ দুটো লাল হয়ে আছে। রাগে লাল হয়ে আছে নাকি কান্না করার কারণে লাল হয়ে আছে বুঝতে পারলামনা। কিন্তু চোখ থেকে এখন পর্যন্ত পানি পড়েনি। O my god?আমি তো রুমে ঢোকার সময় নক করে ঢুকিনি। এর জন্য না জানি এখন কি বলে। তবে ওনার মুখ দেখে তো মনে হচ্ছেনা উনি রেগে আছেন। যেভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে তাতে মনে হচ্ছে চোখ দুটো তে অনেক কথা জমে আছে যেটা আমাকে উনি বলতে চাচ্ছে। ধুর…. কি সব ভাবছি আমি
আশফিঃ মাহি, তোমাকে যদি জরিয়ে ধরে অনেকক্ষন কান্না করতে পারতাম তাহলে হয়তো একটু হলেও শান্তি পেতাম। ওহ্ ও তো অনেক্ষন ধরে দারিয়ে আছে।…….. বসো মাহি।
আমিঃ??? এটা আমি কি শুনলাম!!উনি আমাকে এতো সুন্দর করে তুমি বলে বসতে বলছে??
আশফিঃ কি হলো হা করে দাড়িয়ে আছো কেনো?
আমিঃ (হা বন্ধ করে)ও হ্যা স্যার। actually কালকের ফাইলগুলোর correction করা হয়ে গেছে সেগুলোই দিতে এসেছি। এইযে…..
আশফিঃ হ্যা দাও।……. হুম ঠিক আছে।
আমিঃ ওকে স্যার আসছি।
আশফিঃ না।
আমিঃ জি….???
আশফিঃ না কিছু না। যাও
আমিঃ ওকে স্যার।বেরিয়ে আসলাম। কি হলো? কিছু বুঝতে পারলামনা। আজকে ওনাকে এমন লাগলো কেনো। তবে ওনাকে যতটা কঠোর ভেবেছি অতোটাও না।
স্যারকে দেখলাম ওনার রুম থেকে বেরিয়ে ম্যানেজারের সাথে কি কথা বলে বেরিয়ে গেলেন।
আশফিঃ ভালো লাগছেনা আর কিছু। অফিস থেকে বেরিয়ে এসে চাচ্চুকে ফোন করলাম।
হ্যালো চাচ্চু…..
চাচ্চুঃ হ্যা বাবা বল।
আশফিঃ চাচ্চু আমি সেদিন ই ওখানে যাবো যেদিন অসমাপ্ত কাজের সমাপ্ত করতে পারবো আর ওদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে পারবো।
চাচ্চুঃ আমিও সেই প্রতিক্ষাতে আছি বাবা।
রাখছি।
…………………….. ……..
আমিঃ কাজ শেষ করে বাসায় ফিরলাম। এসে দেখলাম মা বসে আছে। মনে হলো মা মাত্রই এসেছে। মা তোমার আসতে এতো দেরি হলো যে?
মাঃ আর বলিসনা রাস্তাই এতো পরিমাণ জ্যাম কতক্ষন যে বসে ছিলাম গাড়িতে।
আমিঃ হুম। তুমি যাও ফ্রেশ হয়ে কিছু খেয়ে রেস্ট নাও। আমিও যাচ্ছি।
তারপর রাতে খেতে বসে কথা বলছি।
মাঃ তুই একটু সাবধানে চলা ফেরা করিস তো মা। আমার কিছু ধরে কেমন যেনো অস্বস্তি অস্বস্তি লাগছে তুই বাইরে গেলে।
আমিঃ হুম, তোমার তো শুধু আমাকে নিয়ে যত বাজে চিন্তা। অকারণে এতো টেনশন করো বলেই তো কিছুদিন পর পরই অসুস্থ হয়ে পড়ো।
মাঃ নারে। তুই বুঝবিনা। তার ওপর আজকে কি হয়েছে জানিস, বাসায় ফেরার সময় মনে হলো কেউ আমার পিছু নিয়েছে। পুরো রাস্তা আসার সময় এরকম মনে হয়েছে।
আমিঃ মার কথা শুনে আমারই এখন চিন্তা হচ্ছে। আমারও তো কিছুদিন এরকম মনে হচ্ছে। যাইহোক, মাকে আমার বিষয় টা কিছু বললামনা। না হলে আবার বাড়তি টেনশন করবে। খাবার খেয়ে রুমে এসে কালকে পরে যাওয়ার জন্য প্যান্ট আর শার্টটা ন্যারো করলাম
তারপর ল্যাপটপে কিছু কাজ করে শুয়ে পড়লাম। সকালে উঠে অফিসের জন্য রেডি হচ্ছিলাম। মা আমাকে দেখে রেগে আগুন।
মাঃ মাহি….??। তুই আবার এসব ড্রেস পড়া শুরু করেছিস? এগুলো পড়ে তুই একদম অফিসে যাবিনা বলে দিলাম
আমিঃ মা মর্ডান ড্রেসআপ একদমই পছন্দ করেনা।
মা এগুলো কি আমি ইচ্ছে করে পরছি নাকি। স্যার নতুন নিয়ম করেছে। আজ থেকে এগুলো পরেই সবাইকে অফিসে যেতে হবে।
মাঃ তোর এই নতুন স্যার টাকে আমার একদমই ভালো লাগছেনা। আজকালকার Young generation এর ছেলেদের তো মেয়েদের টাইট ফিটিং ড্রেসে দেখতে খুব মজা লাগে। তুই কিন্তু খুব সাবধানে থাকবি।
আমিঃহুম একদম ঠিক বলেছো। আচ্ছা মা এখন আমি আসি।………………..
আজকে খুব স্মার্ট হয়ে সেজে গুজেই অফিসে আসলাম…..। হিহিহিহি ?? সবাই আমাকে কেমন হা করে দেখছে। বুঝতে পারছি অনেক সুন্দর লাগছে আমাকে???।
আসিফঃ আরে মাহি নাকি!?আজকে তো তোমার থেকে চোখ সরাতে পারছিনা। পুরো প্রেমে পড়ে গেলাম।
আমিঃ হয়েছে হয়েছে এখন off যাও। আর thanks.
এখন যাচ্ছি বুলডগের চেম্বারে তাকে দেখাতে যে আমি কতটুকু cultured.
-Good morning sir☺
উনি বসে একটা ফাইল দেখছিলেন।
আশফিঃ Good morning (অবাক হওয়ার দৃষ্টিতে)
আমিঃ উনি আমাকে মর্নিং বলার সময় একবার তাকিয়ে মাথা নিচু করতে গিয়ে আবার দ্বিতীয়বার তাকালেন। বুঝতে পারলাম অবাক হয়েছে।মজা পেলাম☺?। কিন্তু উনি আমার দিকে তাকিয়ে কেমন শয়তানি মুচকি হাসি দিলেন। বুঝতে পারলামনা কি জন্য।
আশফিঃ বাহ্…. দেখতে তো বেশ লাগছে।কিন্তু ও কি জানে এই ড্রেসআপ পড়ার রুলটা আমি কেনো করেছি? জানতে পারলে বাচ্চাটা হয়তো ভুলেও এগুলো পরে আসতোনা। হাহাহাহাহা।( শয়তানি মুচকি হাসি)।
মাহি আমাকে এক গ্লাস পানি দিন তো।(গলায় হালকা কাশির ভাব নিয়ে)
আমিঃ হুহুহু…. আমাকে দেখে নিশ্চই বিসম খেলো।
-দিচ্ছি স্যার, এই নিন।
আশফিঃ হুম। গ্লাসটা আমাকে দেওয়ার সময় ইচ্ছে করেই ওর হাতে ধাক্কা দিলাম যাতে পানিটুকু আমার শার্টে এসে পড়ে।আর সেই বাহানায় ও আমার কাছে আসবে শার্টটা পরিষ্কার করে দিতে।………………… .
-এটা কি করলে ? এতোটা careless তুমি কি করে হও। অসহ্য….মুছে দাও।
আমিঃ এটা কি হলো। ওনার ধাক্কা লেগেই তো পানি পড়লো। আর আমাকেই বকা দিলো??।
-জি স্যার দিচ্ছি। আমি পরিষ্কার করে দিচ্ছি আর উনি গরুর মতো চোখ করে আমারদিকে তাকিয়ে আছে। উফফঃ আর নিতে পারছিনা ওনার জন্য আমার জীবনটা পুরো টিসু পেপার হয়ে যাচ্ছে। হয়েছে স্যার।
আশফিঃ হুম। এখন যাও এখান থেকে।
আমিঃ চলে আসলাম। ধুর আর ভালো লাগেনা প্রতিদিন সকাল সকাল ওনার ঝারি আর নিতে পারছিনা।??
আশফিঃ আমি জানি তোমার খুব খারাপ লাগছে মাহি। কি করব বলো আমার মেজাজ টাই যে এমন
নীলাঃ কি খবর মাহি দিনকাল কেমন যাচ্ছে?
আমিঃ চোখের সামনে ফানি শো দেখতে পাচ্ছোনা??
নীলাঃ ফানি শো??? ও হ্যা বুঝতে পেরেছি আসিফ আমাকে বলেছে। কি আর করার বস মানুষ। সহ্য তো করতেই হবে। তবে তোমার জায়গায় আমি হলে স্যারকে ইমপ্রেসড করার চেষ্টা করতাম।
আমিঃ আরে… মানুষ মানুষকে ইমপ্রেসড করতে পারে কিন্তু মানুষ হয়ে একটা গন্ডারকে কিভাবে ইমপ্রেসড করবো?
নীলাঃ হাহাহাহাহা। দারুন বলেছো। তবে অনেকসময় যে যেমন তার সাথে তেমনই করতে হয়।
আমিঃ কিভাবে?
নীলাঃ উফফঃ মাহি সবকিছুই কি ভেঙ্গে বোঝাতে হবে?? আমি আসছি।
আমিঃ আরে…নীলা? যাহ্ চলে গেলো? কিন্তু কি বলে গেলো ও যে যেরকম তার সাথে তেমনই করতে হয়…….
হুম বুঝতে পেরেছি। ওহ্ Thank u dear.আজ থেকেই গন্ডার টার ট্রিটমেন্ট শুরু। lunch time এ গন্ডারটার ফোন আসলো।নিশ্চই খাবার সার্ভ করে দেওয়ার জন্য ডাকছে। তাই আগে থেকেই তার ব্যবস্থা করে রেখেছিলাম। স্যার এর রুমে গেলাম।
-স্যার আসবো?
আশফিঃ হুস এসো। আর খাবারটা……(কথা থামিয়ে দিয়ে)
আমিঃ সার্ভ করে দেব তাই তো,এক্ষনি দিচ্ছি স্যার আপনি বসুন। এবার আমাকে দিয়ে খাবার সার্ভ করানোর ঝাল টের পাওয়াবো….ওয়েট।প্রত্যকটা আইটেম এ এত্ত পরিমাণ ঝাল দিয়েছি যে সারাদিন পানি খেলেও কাজ হবে না।
-নিন স্যার শুরু করুন
আশফিঃঅদ্ভুত, আজকে বলার আগেই করা শুরু করে দিল। হুম, তাহলে বাচ্চাটার অভ্যাস হয়ে যাচ্ছে। Good.
_তুমিও বসো আমার সাথে।
আমিঃ এ্যাঁ…. নানা।আমি খাবোনা।(রাগি চোখে তাকালো)।
-আসলে মা খাবার দিয়ে দিয়েছে ওগুলো না খেলে মা বকবে।আপনি খান না???
আশফিঃএ্যাহহ্,বাচ্চা মানুষ তো তাই না খেলে মা বকবে??ঢ়ং।
-ঠিক আছে ঠিক আছে, যাও।
আমিঃ ওহ গড বড় বাচাঁ বেচেঁ গেছি। চলে আসলাম আমার চেম্বারে। এখন শুধু দেখার অপেক্ষায় আছি ঝালে কিভাবে বুলডগ টা ডান্স দেই। হিহিহিহি।
আশফিঃউফফ!! তরকারিটাই এত্ত পরিমান ঝাল হয়েছে যে মুখ পুরো জ্বলে শেষ হয়ে যাচ্ছে,,,এটা আর খাওয়া যাবেনা অন্যগুলো খাই। উমমমঃ আর সহ্য করতে পারছিনা প্রত্যকটা আইটেম এ এত ঝাল!!! আজ বাড়ি গিয়ে সেফ এর কপালে দুঃখ আছে । মাগো! মরে যাবো পানি খেয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না।(ঝালে শোষাতে শোষাতে)। উঠে দাড়িয়ে পেছনের গ্লাসে হাত দিয়ে মাথা ঠেকিয়ে দাড়ালাম। গ্লাসে মাহিকে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু মাহি আমার দিকে তাকিয়ে এভাবে হাসছে কেনো? আমি সামনে ঘুরে তাকালাম ও সাথে সাথে ও চোখ ফিরিয়ে নিলো।তার মানে ঐ কি?…………… হুম আমার আর বুঝতে বাকি রইলোনা। মাহি তুমি কল্পনাও করতে পারবেনা এখন তোমার কি অবস্থা হবে।আমি ওকে ফোন করে আসতে বললাম। ও ভেতরে আসলো।
আমিঃ হ্যা স্যার বলুন।
আশফিঃ খাবার গুলো সরাও।
আমিঃ কেনো স্যার আপনি খাবেন না?(চোখ গরম করে তাকালো)
-জি স্যার এখনি সরাচ্ছি।
ঝালে চোখ,নাক,মুখ লাল হয়ে আছে।বেশ হয়েছে।
আশফিঃও যখন খাবার সরাচ্ছিলো আমি তখন ওর হাত ধরে টান দিয়ে গ্লাসের সাথে মিশিয়ে ওর কোমোরটা চেপে ধরলাম।ও কিছু বলার আগেই ওর ঠোঁটে আমার ঠোঁট চেপে ধরলাম।যতক্ষন পর্যন্ত আমার ঝাল না কমছিলো ততক্ষন পর্যন্ত ওকে কিস করে যাচ্ছিলাম। ও আমাকে ছারানোর চেষ্টা করছে কিন্তু পারছেনা। এভাবে কতক্ষণ করেছিলাম জানিনা। অনেকক্ষণ পর যখন ঝাল কমলো তখন ওকে ছেরে দিলাম। ও পুরো রোবট হয়ে দাড়িয়ে আছে। আমি চেয়ারে এসে বসলাম। পানি খেতে গিয়ে থেমে গেলাম ভাবলাম এখন ঠোঁটে ওর ছোঁয়া আছে তাই আর খেলামনা। ওর দিকে তাকালাম, ওকে দেখে খুব হাসি পাচ্ছে।বুঝলাম অনেক বড় shocked খেয়েছে। হাহাহাহাহা ও এখনো রোবট হয়ে দাড়িয়ে আছে। বেচারি আমাকে জব্দ করতে গিয়ে নিজেই কুপোকাত। আমি উঠে ওর সামনে দাড়ালাম।
ওকে বললাম,
-এরপর থেকে যেনো ঝালটা আরও বেশি হয়।
ও আমার দিকে চোখ বড় বড় করে অবাক হয়ে তাকালো _কি কথাটা মনে থাকবে তো। কারন ঝালের পরিমান টা বেশি হলে কিসটা ও অনেক্ষন ধরে করতে পারবো।কথাটা ওর কানেন কাছে মুখ নিয়ে আস্তে করে বললাম।
আমিঃ আমি আর এক মূহুর্ত দাড়িয়ে থাকতে পারলামনা। দৌড়ে নিজের চেম্বারে চলে আসলাম।
আশফিঃইসস, বাচ্চাটা খুব লজ্জা পেয়েছে। হুহুহু এটা তো মাত্র শুরু ডিয়ার, এরপর থেকে যে আরও কত রোমান্টিক_অত্যাচার সহ্য করতে হবে you’ve no idea.(মুচকি হেসে)
চলবে…..