রোমান্টিক_অত্যাচার_১২লেখিকাঃ #Israt_Jahanধারণাঃ #Kashnir_Mahiআশফিঃ ঘুরেই দেখলাম মাহি ড্রয়িংরুমে দাড়িয়ে আমাদের সব কথা শুনেছে। কিন্তু ওর চোখে তো কোনো বিস্ময় বা রাগ কিছুই দেখছিনা।– মাহি তুমি উঠে এসেছো কেনো? তুমি কি এখন সুস্থবোধ করছো?
মাহিঃ একটু আগেও খানিক টা অসুস্থ ছিলাম এখন এই মূহুর্তে পুরোপুরি সুস্থবোধ করছি।
আশফিঃ (নিশ্চুপ)
মাহিঃ আশফি তোমার একটা জিনিস আমাকে ভিষণ মুগ্ধ করেছে। এতো বড় একটা অপকর্মের এতো সুন্দর একটা পুরষ্কার দিলে ওদের আমি সত্যিই ইমপ্রেসড। কি অবাক হচ্ছো হঠাৎ আপনি থেকে তুমি তে চলে আসলাম। আসলে আপনি করে সম্বোধন করলে সম্মান অনেক বেশি দেওয়া হয়ে যায়। আর তুমি এতোটাই নিকৃষ্ট যে তোমাকে তুমি করেও সম্বোধন করা উচিত না। কিন্তু আমি এর থেকে আর নিচে নামতে পারছিনা। Revenge!! Revenge নিয়েছো না?? Good job. (স্বাভাবিক কন্ঠে বলছিল)
– ডাইনিং টেবিলে একটা ছুরি দেখতে পেলাম দৌড়ে গিয়ে সেটা নিয়ে এসে ওর কলার চেপে গলায় ছুরিটা ঠেকিয়ে ধরলাম।
কি ভেবেছিলে তুমি আশফি এগুলো আমি কোনো দিনও জানতে পারবোনা? তোমাকে তো খুন করলেও আমার শান্তি হবেনা। এগুলোর পরেও আমি বিশ্বাস করবো তুমি আমাকে ভালোবাসো? এটাকে কি ভালোবাসা বলে?
আমি ওর গলায় অনেক শক্ত করে ছুরিটা ধরে ছিলাম তাতে ওর গলার এক পাশ কেটে রক্ত পড়ছে কিন্তু তা দেখে আমার একটু ও মায়া হচ্ছেনা। ও একদম স্বাভাবিকভাবে দাড়িয়ে আছে শুধু চোখ থেকে পানি পড়ছে। আমি ওর চোখ থেকে এক ফোটা পানি আঙ্গুলে ধরে ওকে বললাম,
-এগুলো কি সত্যি চোখের পানি? নাহ্ এটাও নকল।
আশফিঃ মাহি তুমি আমাকে যা খুশি করো যা খুশি বলো আমার ভালোবাসা তোমার কাছে নাটক অভিনয় পাগলামি যাই মনে হোক কিন্তু আমাকে তুমি ছেড়ে যেওনা। আজকের পর থেকে আমি তোমাকে আর কোনো কিছুতেই জোড় করবোনা আমি তোমাকে তোমার মত করে থাকতে দেবো তবুও আমাকে ছেড়ে যেওনা। আমাকে তুমি যা করতে বলবে আমি তাই করবো তবুও আমাকে ছেড়ে তুমি যেওনা মাহি, প্লিজ। কথাগুলো আমি ওকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে বলছিলাম।
মাহিঃ ওকে ধাক্কা দিয়ে আমি সরিয়ে দিলাম। তারপর ছুরিটা আমি নিচে ছুড়ে ফেলে দিলাম। কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললাম,
– ঠিক আছে আমি আমার planing change করলাম। তোমাকে খুন করলে আমার সম্মান ফিরে আসবেনা। আমি তোমাকে এখন যেটা করতে বলবো সেটা যদি করতে পারো তাহলে আমি ভেবে দেখবো।
আশফিঃ কি করতে হবে বলো তুমি যা বলবে আমি তাই করবো। কিন্তু প্লিজ আমাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা তুমি ভেবোনা।
মাহিঃ আজকে সন্ধ্যার ভেতরে একটা পার্টির arrangement করতে হবে। আর সেখানে তোমার সমস্ত অফিস কলিগ, স্টাফ আমার এলাকার কিছু পড়শি সবাইকে ইনভাইট করতে হবে। আর হ্যা মিডিয়াপ্লেক্স ও থাকবে। তারপর তুমি সবার সামনে স্বীকার করবে আমার সাথে যা যা করেছো সব। কি? পারবে তো?
আশফিঃ ( নিশ্চুপ)
মাহিঃ কি হলো চুপ কেনো? আমি জানতাম মি. আশফি চৌধুরীর সম্মান আর জেদ এর কাছে ভালোবাসা মূল্যহীন।
আশফিঃ না। আমার কাছে তোমার থেকে কোনো কিছুর মূল্য বেশিনা। এটা করলে তুমি যদি আমাকে মাফ করে দাও আমার কাছে ফিরে আসো তাহলে আমি সেটাই করবো। আমি আজকেই সবকিছুর ব্যবস্থা করছি।
★ সন্ধ্যাবেলা★
মাঃ কিরে আজকে হঠাৎ কিসের জন্য পার্টির arrangement করেছে আশফি। আর এত লোকজন কেনে?
মাহিঃ একটু অপেক্ষা করো দেখতে পাবে। আজকে আমি নিজে থেকেই খুব সুন্দর করে সেজেছি। কারণ আজকে আমার খুশির দিন আর ওর বিষাদময় দিন। সবাই চলে এসেছে। আমি ওর কাছে গিয়ে ওর হাতটা ধরে সবার মাঝে এসে দাড়ালাম। ও আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে। সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললাম,
– Good evenig everyone. আজকে আমার অনেক বিশেষ একটা দিন। তাই আমার হাজবেন্ড আপনাদের সাথে আমার আর ওর বিশেষ কিছু কথা শেয়ার করবে, আপনারা মনোযোগ সহকারে শুনুন। ডিয়ার শুরু করো। এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছো কেনো সবাই অপেক্ষা করছে তো। বলো!!
তারপর ও কথাগুলো বলা শুরু করলো। কথা বলার সময় ওর গলা কাঁপছিল। আর সবাই ওর দিকে অবাক চোখে চেয়ে সেই কথাগুলো শুনছিল। আজকে আমি সত্যি অনেক খুশি । প্রতিশোধের বদলে প্রতিশোধ। কথাগুলো বলা শেষ করেই ও আমার দিকে তাকালো। চোখ দুটোতে পানি ছলছল করছিল। কিন্তু আমার চোখে ওর জন্য শুধু ছিল ঘৃণা। আমি ওর থেকে চোখ ফিরিয়ে নিয়ে মিডিয়ার উদ্দেশ্যে বললাম আজকের ঘটনা যেনো প্রতিটা নিউজ চ্যানেলে ব্রেকিং নিউজ হয়ে বের হয়। কথাগুলো বলেই আমি রুমে এসেই কাপড়-চোপড় গোছানো শুরু করলাম। মা আর ও আমার পিছু পিছু চলে আসলো।
আশফিঃ মাহি তুমি এগুলো কি করছো? তুমি তো বলেছিলে আমি তোমার কথা শুনলে তুমি আমাকে ছেড়ে যাবেনা আমি তো সেটাই করেছি। তাহলে তুমি এগুলো কেনো করছো? এই মাহি আমার কথা শুনো প্লিজ। মামনি ওকে বোঝাও। ( আশফি মাহিকে আটকানোর চেষ্টা করছিল আর কথাগুলো বলছিল)
মাঃ মাহি তুই থাম। তুই কিন্তু বাড়াবাড়ি করছিস। তুই ওকে যা করতে বলেছিস ও সেটাই করেছে। এখন ওকে ক্ষমা করে দে।
মাহিঃ মা তুমি চুপ করো। ও যেটা করেছে তার কোনো ক্ষমা হয়না।
মাঃ কেনো ক্ষমা হয়না। ও তোর সম্মান নষ্ট করেছিল। তা আজ তোকে ও ফিরিয়ে দিয়েছে। ও সবার সামনে ওর অপরাধ স্বীকার করছে। তোর কাছে ও মাফ চেয়েছে। এখন তো ওর সম্মান ও সবার সামনে নষ্ট হয়ে গেছে। একটু পর টিভি চ্যানেলে আজকের ঘটনা ফ্লাশ হবে। শেষ হওয়ার আর কি বাকি আছে ওর।
আশফিঃ মাহি তোমার দোহাই লাগে আমাকে এত বড় শাস্তি দিওনা। আমি থাকতে পারবোনা তোমাকে ছাড়া। মরেই যাবো আমি। (জড়িয়ে ধরে কেঁদে বলছিল)
মাহিঃ ছাড়ো আমাকে(ধাক্কা দিয়ে) একদম আমার কাছে আসার চেষ্টা করবেনা। তুমি মরে গেলেও আমার আর কিচ্ছু যায় আসেনা। আমার চোখের সামনে থেকে চলে যাও।
আশফিঃ কথাগুলো বলার পর ও মাথা ঘুরে পড়ে যাচ্ছিল। আমি ওকে দৌড়ে ধরতে গেলাম।
মাহিঃ Don’t. Don’t touch me. মা ওকে আমার সামনে থেকে চলে যেতে বলো। আমি ওকে সহ্য করতে পারছিনা। আমি বসে বসে কাঁদছি। আর মনে মনে ভাবছি যে এই লোকটার ওপর কয়েক ঘণ্টা আগেও একটা টান ছিল। আর এখন তাকে আমি আর সহ্য করতে পারছিনা। পারছিনা আর সহ্য করতে।
আশফিঃ মাহি তুমি সত্যি আর আমার কাছে ফিরে আসবেনা, আমি মরে গেলেও তোমার কিছু যায় আসেনা তাইনা? আমাকে তুমি আর একদম সহ্য করতে পারছোনা। ঠিক আছে আমি আর তোমার সামনে আসবোনা। তোমাকে কষ্ট দেবোনা।
(কথাগুলো পাথরের মত দাড়িয়ে স্বাভাবিক কন্ঠে বলছিল)
-তুমি যেতে পারো।
মাহিঃ মা চলো এখোনি। আমি মায়ের হাত ধরে ঘর থেকে বেরিয়ে এলাম।
মাঃ মাহি দাড়া তুই আমার কথা শোন। এরকম কষ্ট ছেলে টাকে দিসনা।
মাহিঃ মা তুমি আর একটা কথাও বলবেনা। কিসের এতো টান তোমার ওর জন্য? কথা গুলোর মাঝেই হঠাৎ ওপর থেকে গুলির আওয়াজ আসলো। তখন আমরা ড্রয়িংরুমে। আওয়াজ টা শুনেই আমি দাড়িয়ে গেলাম।
মাঃ ওপর থেকে গুলির শব্দ শোনা গেলো। মাহি ও কি কিছু করে ফেললো?
মাহিঃ মা আমার হাত ছেড়ে দৌড়ে ওপরে গেলো। যাওয়ার পরই মা চিৎকার করে উঠলো। আমি আর কিছু না ভেবেই ওপরে ছুটে গেলাম। গিয়ে দেখলাম রক্তে ফ্লোর ভেসে যাচ্ছে। ও ওর পেটে নিজেই shoot করেছে। এত রক্ত আমি আগে কখনো দেখিনি।
ওর এই অবস্থা দেখে আমি আর নিজেকে সামলাতে পারিনি। কিছুক্ষণ পর দেখলাম আমি ফ্লোরে পড়ে আছি। আমি sense হারিয়ে ছিলাম। কিন্তু চারপাশে তাকিয়ে দেখলাম কেউ নেই।তার মানে ওকে hospital নিয়ে গেছে। আর আমি ওর রক্তের পাশেই বসে আছি। প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলাম কিন্তু সেটা ওর জীবনের বিনিময়ে নয়। আজকে তো আমি নিজেই অনেক বড় অপরাধী হয়ে গেলাম। ওকে কি আমার ক্ষমা করা উচিত ছিল? হ্যা আমার ক্ষমা করা উচিত ছিল ওকে। কথাগুলো ভাবতে ভাবতে ফোন বেজে উঠলো। আমি ফোন রিসিভ করলাম। মা ফোন করেছে।
মাঃ কিরে খুব শান্তি পেয়েছিস? তুই এরকম নিষ্ঠুর হয়ে গেলি কবে থেকে মাহি? তুই কি ওকে একটাবার ক্ষমা করতে পারতিনা? আজকে আমরা বেঁচে আছি যে আশরাফ ভাইয়ের জন্য আর তুই আজকে তার ছেলেকেই………….. হ্যা মানলাম ও যেটা করেছিল সেটা ওর অনেক বড় ভুল ছিল। তার জন্য তুই যা বলেছিস ও তাই করেছে। কিন্তু তুই কি করলি? এখন ও কি তোর মনে হয় ওর ভালোবাসা শুধু দুইদিনের জন্য ছিল? আজকে যদি ওর কিছু হয়ে যায় তাহলে আমি তোকে কোনোদিনও মাফ করবোনা মাহি, কোনোদিনও না।
মাহিঃ কথাগুলো মা এক নিঃশ্বাসে বলে ফোনটা কেটে দিল। এখন তো আমার চারপাশ শুধু অন্ধকার লাগছে। আমি কল্পনা করতে পারিনি ও এরকম কিছু করবে। আমি বসে বসে ওর সাথে আমার খারাপ ভালো স্মৃতিগুলো মনে করছি। আমাকে পাওয়ার পদ্ধতি ওর ভুল ছিল। কিন্তু ওর ভালোবাসা মিথ্যে ছিলনা। আমার সাথে ও যাই করেছে শুধুমাত্র আমাকে ওর কাছে রাখার জন্য করেছে। এখন আমার কি করা উচিত? কি করবো আমি? হে খোদা এত বড় শাস্তি তুমি আমাকে দিওনা। দিওনা এত বড় শাস্তি(কান্না কন্ঠে)। একমাত্র তুমিই পারো ওকে বাঁচাতে। আমি উঠে গিয়ে ওযু করে নামায পড়তে বসলাম। নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে ওর জন্য মোনাজাত শুরু করলাম। হে আল্লাহ্ তোমার কাছে ছাড়া আমি আর কার কাছে চাইবো? তুমি তো সব দেখছো একমাত্র তোমারই ক্ষমতা আছে তোমার বান্দাকে বাঁচিয়ে তোলার। তুমিই পারো ওকে বাঁচাতে। এই পৃথিবীর কোনো কিছুই তোমার ইশারা ছাড়া চলেনা। তাহলে তুমি ওকে আমার থেকে ছিনিয়ে নিওনা। একটাবার সুযোগ দাও ওর সঙ্গে বেঁচে থাকার। শুধু একটাবার সুযোগ দাও আমাকে। এভাবে অনেক্ষন কান্নাকাটি করে মোনাজাত করেছি। তারপর কখন জায়নামাজ এর ওপরেই ঘুমিয়ে পড়েছি তা জানিনা।
চাচ্চুঃ ভাবি মাহি আসেনি?
মাঃ নাহ্। আমি আমার এই মাহিকে চিনতে পারছিনা। ও এতোটা নির্দয়ালু কবে থেকে হলো জানিনা।
চাচ্চুঃ মেয়েটা ওকে বুঝতে পারলোনা।শুধু ওর ভুল আর ওর রাগ টাই দেখলো। ছেলেটা সবকিছু হারিয়ে শুধু ওকে পাওয়ার জন্য এখানে চলে এলো?
মাঃ সবকিছু হারিয়ে মানে?
( কথাগুলো শোনার আগেই ডঃ বেরিয়ে এলো O.T থেকে।
চাচ্চুঃ ডঃ আশফি এখন কেমন আছে ও ঠিক আছে তো?
ডঃ হ্যা danger টা কেটে গেছে। গুলিটা পেটের এক পাশ থেকে বেরিয়ে গেছিল। তাই এই যাত্রায উনি বেঁচে গেছে। আপনারা সকাল হলে ওর কেবিনে যেতে পারবেন। এখন না।
মাঃ হায় আল্লাহ্ তোমার দরবারে লাখ লাখ শুকরিয়া।
★সকালবেলা★
মাঃ আরমান ভাই আশফি চোখ খুলেছে ওর sense ফিরেছে।
আশফি? বাবা তোর কেমন লাগছে?
আশফিঃ আমি চোখ টা খুলেই মামনিকে দেখলাম। তারপর চারপাশে তাকালাম।
-মামনি, ও আসেনি তাইনা?
মাঃ চুপ থেকে বললো ওর কথা বাদ দে। তুই এখন বল কেমন লাগছে তোর?
চাচ্চুঃ বাবা তোর এখন কেমন লাগছে?
আশফিঃ তোমরা সবাই এখানে? ওকে কোথায় রেখে এসেছো? ও কোথায়? তোমরা ওকে একা রেখে কিভাবে চলে এলে? চাচ্চু তুমি তো জানো ওর লাইফ রিস্ক কতোটা? তারপরেও তুমি কিভাবে ওকে একা রেখে চলে এলে?
চাচ্চুঃ আশফি বেটা তুই একদম চিন্তা করিসনা। ওখানে আমি ওর নিরাপত্তার সব ব্যবস্থা করে রেখেছি।তুই এতো টেনশন নিসনা অসুস্থ হয়ে পড়বি।
আশফিঃ এখানে বসে থাকলে আমি অসুস্থ হয়ে পড়বো। তুমি এক্ষণি আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করো। না হলে আমি নিজেই চলে যাবো এখান থেকে।
মামনিঃ বাবা তুই শান্ত হ। এই অবস্থায় তোকে কিভাবে ছাড়বে বল।
আশফিঃ মামনি আমি একদম ঠিক আছি। এখানে থাকতে আমার একটুও ভালো লাগছেনা।
চাচ্চুঃ আচ্ছা তুই শান্ত হ আমি দেখছি। আমি ডঃ এর সাথে কথা বলে বাসায় নার্সিং এর ব্যবস্থা করছি।
মাহিঃ ঘুম ভাঙ্গলো মুখে রোদের আলো পড়ে। জানালা দিয়ে আলো এসে পড়েছে। আমি তাড়াতাড়ি উঠে বসলাম। আমি এভাবে ঘুমিয়ে আছি? আমার তো hospital যাওয়া দরকার। আমি উঠে তাড়াহুড়ো করে নিচে নেমে এলাম। মনে হলো বাইরে গাড়ি থামলো। আমি দৌড়ে গেলাম দেখলাম ওকে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে। ওকে দেখে আমি খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেলাম। ওকে ধরে যখন বাসার ভেতর আনছিল তখন ও আমার দিকে একবারও তাকালোনা।আর কেউ আমার সাথে কোনো কথাও বলছেনা। আমি ওপরে গেলাম ওর রুমে। দেখলাম দুটো নার্স ওকে ধরে শুইয়ে দিল। তারপর সবাইকে বললো
– এখন আপনারা সবাই বাইরে যান ওনার ঘুমের প্রয়োজন। (নার্স)
মাহিঃ আমি বাইরে চলে আসলাম। আমি মায়ের সাথে কথা বলতে গেলাম মা আমাকে এড়িয়ে চলে গেলো। আমি বার বার ওর রুমে উঁকি দিচ্ছি। ও ঘুমোচ্ছে। আমি ওর রুমে ঢুকে ওর কাছে যেতে গেলাম। একটা নার্স তখন বললো,
-ম্যাম উনি এখনও পুরোপুরি সুস্থ না। আর ওনার কাছে এখন কেউ থাকতে পারবেনা তাতে ওনার জার্ম প্রবলেম হতে পারে। আপনি প্লিজ এখন বাইরে যান। আমার তখন নার্সটার ওপর খুব রাগ হচ্ছিল। আমাকে ওর কাছে এলাও করছেনা? কিছু বলতে গিয়ে না বলে বেরিয়ে এলাম। মা তখন রুমের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল আমাকে দেখে রেগে গেল,
মাঃ তুই এখানে কি করছিস?
মাহিঃ মা??
মাঃ একদম চুপ। আগেই যখন তোর ভুলটা বুঝতে পারিসনি এখন ওর একটা ক্ষতি হয়ে যাওয়ার পর সেই ভুল ভাঙ্গার কোনো মানেই হয়না।
মাহিঃ আমি মায়ের কথা শুনে আর কিছু বলতে পারলামনা। চলে এলাম কাঁদতে কাঁদতে।
রাত ৯ টা বাজে আমি একবার ওর রুমে যেতে চাইলাম। রুমের সামনে গিয়ে ওদের কথা শুনে বাইরে দাড়িয়ে গেলাম। মা আশফি আর চাচ্চু কথা বলছে। ওর এই কথাগুলোই বলছিল আশফি কিছুদিন পরই জাপান ফিরে যাবে। আর সাথে মাকে ও নিয়ে যাবে। মা আমার সাথে আর থাকতে চাইনা। আর এখানে আশফির যা কিছু আছে সেগুলো আমার নামে লিখে দিয়ে যাবে।
আমি এই কথাগুলো শুনে সেখানে আর দাড়িয়ে থাকতে পারলামনা।অন্য ঘরে দৌঁড়ে চলে আসলাম।
মাঃ আশফি? বাবা তুই কিছু খেয়ে নে এখন তো তোর খালি পেটে থাকা উচিত না। অসুস্থ হয়ে পড়বি।
আশফিঃ মামনি আমার কিচ্ছু হবেনা। আর খালি পেটে কোথায় সন্ধ্যার সময়ই তো খেয়েছি। তোমরা এখন যাও গিয়ে রেস্ট নাও। অনেক কষ্ট করেছো। এখন গিয়ে ঘুমাও।
মাহিঃ আমি এত বড় শাস্তি পাবো সেটা কখনও ভাবিনি। ওরা আমাকে ছেড়ে চলে গেলে আমি ওদের ছাড়া কিভাবে থাকবো। আশফি প্লিজ আমাকে এত বড় শাস্তি দিওনা। আমি থাকতে পারবোনা তোমাদের ছাড়া, থাকতে পারবোনা। রাত ১১:৩০ টায় ওর ঘরের সামনে গেলাম। দেখলাম দরজা টা হালকা ভাবে খোলা। আমি রুমে ঢুকে গেলাম ও তখন কপালের ওপর হাত চোখ বন্ধ করে আছে। আমি ভাবলাম ও ঘুমিয়ে রয়েছে। কিন্তু আমার পায়ের শব্দ শুনে ও চোখ খুলে আমার দিকে তাকালো। তবে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকলোনা। চোখটা বন্ধ করে ফেললো আবার। আমি আশফিকে তখন বললাম,
– আমাকে কি আর এক বার সুযোগ দেওয়া যায়না? ও তখন চোখ খুলে অবাক হয়ে তাকালো। আমি ভাবলাম ও এভাবে তাকালো ও কি ভাবলো আমি জাপান যাওয়ার জন্য সুযোগ চাইছি? তাই আমি বলেই ফেললাম,
– জাপান যাওয়ার জন্য নয়।
আশফিঃ তা কিসেন জন্য?
মাহিঃ তোমার সাথে রো…… না না মানে তোমাকে…….ভা
লোবাসার সুযোগ চাই
আশফিঃ Are you sure?
মাহিঃ Damn sure.
আশফিঃ পারবে তো আমার অত্যাচার সহ্য করতে?
মাহিঃ অত্যাচার?? অত্যাচারের কি হলো এখানে?
আশফিঃ না সবাই তো বলে আমি তোমাকে অনেক অত্যাচার করি।
মাহিঃ সবাই কে কে বললো এমন কথা?
আশফিঃ পাবলিকেরা। আমি নাকি তোমাকে খুব অত্যাচার করি। কেউ কেউ তো আমাকে ভিলেইন ই বানিয়ে দিয়েছে।
মাহিঃ আরে ধুর। ওদের কথা বাদ দাও তো। আর ওগুলো তো তোমার
#রোমান্টিক_অত্যাচার তাইনা।
( এখানেই শেষ নয়)
মাহিঃ আচ্ছা তুমি দরজা লক না করেই শুয়ে পড়েছিলে কেনো?
আশফিঃ তোমার জন্য।
মাহিঃ মানে? তুমি জানলে কি করে আমি আসবো?
আশফিঃ আমরা যখন কথা বলছিলাম তখন তুমি দরজার পাশে দাড়িয়ে ছিলে। আর তখন ই জানতাম তুমি আমার রুমে আসবে।
আশফিঃ আচ্ছা এখন যাও আমার জন্য খাবার নিয়েসো। খিদে পেয়েছে।
মাহিঃ ঠিক আছে। আমি ওকে বসিয়ে দিয়ে ওর জন্য খাবার এনে ওকে খাইয়ে দিতে গেলাম। ও তখন বললো,
আশফিঃ চামুচ দিয়ে খাবোনা। হাত দিয়ে খাইয়ে দাও।
মাহিঃ হুম। আচ্ছা। আমি ওকে হাত দিয়ে খাইয়ে দিচ্ছিলাম। খাওয়া শেষ করে উঠে যেতে গেলাম তখন ও আমার হাত ধরলো।
আশফিঃ খাওয়া শেষ হয়নি।
মাহিঃ খাবার তো শেষ। আচ্ছা তুমি বসো আমি খাবার নিয়াসছি।
আশফিঃ উহুম।
মাহিঃ খাবার শেষে আমার আঙ্গুল গুলোতে যে খাবার গুলো লেগেছিল ও প্রতিটা আঙ্গুল মুখের মধ্যে নিয়ে চেটে খেলো সেই খাবার গুলো।
আশফিঃ হয়েছে। এখন পানি দাও।
মাহিঃ তারপর আমি ওকে পানি খাইয়ে ওকে শুইয়ে দিয়ে চলে যেতে লাগলাম।
আশফিঃ কি হল? কোথায় যাও?
মাহিঃ অন্য রুমে।
আশফিঃ এই আমাকে ভালোবাসতে চাইছো আবার অন্য রুমে গিয়ে থাকতে চাইছো।
মাহিঃ না আসলে নার্স বলছিল তোমার সাথে থাকলে তোমার প্রবলেম হতে পারে।
আশফিঃ তুমি…….(থেমে গেলো) আচ্ছা ঠিক আছে যাও।
মাহিঃ কথাটা বলেই ও মুখ ঘুরিয়ে নিলো। বুঝতে পারলাম ও রেগে গেছে।
-আশফি?? আমি তো……
আশফিঃ মাহি চুপ করো। তোমার কি নিজে থেকে কখনো Sense হবেনা? সবকিছুই কি বলে বোঝাতে হবে?
মাহিঃ আমি কিছু না বলেই ওর পাশে গিয়ে শুয়ে পড়লাম। আর তখন ও আমার বুকের ওপর মাথা রাখলো। কিছুক্ষণ পর মাথা উঁচু করে আমার মুখের দিকে তাকালো।
আশফিঃ মাহি? তোমার Heartbeat বেড়ে যাচ্ছে কেনো? তুমি কি ভয় পাচ্ছো? তুমি কি এটা ভাবছো যে আমি তোমাকে এখন……… তাও আবার আমার এই অবস্থায়??
মাহিঃ কি বলছো তুমি এসব? আমি এগুলো ভাববো কেনো? আর আমি বুঝে গেছি তোমার ভালোবাসা, পাগলামী আর তোমার পাগলামী রোমান্স।
আশফিঃ সত্যি??
মাহিঃ হুম। সত্যি। কিছুক্ষণ আমার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকলো।তারপর আবার আমার বুকের ওপর মাথা রাখলো। ২ মিনিট পর আবার মাথা তুলে আমার চোখের দিকে তাকালো। তারপর আমার ঠোঁটের নিচে তিলটার দিকে তাকিয়ে তিলটাই চুমু দিল আর ঠোঁটে আলতো করে চুমু দিয়ে আবার আমার বুকে মাথা রেখে ঘুমালো। এই পাগল টাকেই আমি কতো অবহেলা করেছি।
চলবে……..
(ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)
We use cookies on our website to give you the most relevant experience by remembering your preferences and repeat visits. By clicking “Accept All”, you consent to the use of ALL the cookies. However, you may visit "Cookie Settings" to provide a controlled consent.
This website uses cookies to improve your experience while you navigate through the website. Out of these, the cookies that are categorized as necessary are stored on your browser as they are essential for the working of basic functionalities of the website. We also use third-party cookies that help us analyze and understand how you use this website. These cookies will be stored in your browser only with your consent. You also have the option to opt-out of these cookies. But opting out of some of these cookies may affect your browsing experience.
Necessary cookies are absolutely essential for the website to function properly. These cookies ensure basic functionalities and security features of the website, anonymously.
Cookie
Duration
Description
cookielawinfo-checkbox-analytics
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Analytics".
cookielawinfo-checkbox-functional
11 months
The cookie is set by GDPR cookie consent to record the user consent for the cookies in the category "Functional".
cookielawinfo-checkbox-necessary
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookies is used to store the user consent for the cookies in the category "Necessary".
cookielawinfo-checkbox-others
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Other.
cookielawinfo-checkbox-performance
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Performance".
viewed_cookie_policy
11 months
The cookie is set by the GDPR Cookie Consent plugin and is used to store whether or not user has consented to the use of cookies. It does not store any personal data.
Functional cookies help to perform certain functionalities like sharing the content of the website on social media platforms, collect feedbacks, and other third-party features.
Performance cookies are used to understand and analyze the key performance indexes of the website which helps in delivering a better user experience for the visitors.
Analytical cookies are used to understand how visitors interact with the website. These cookies help provide information on metrics the number of visitors, bounce rate, traffic source, etc.
Advertisement cookies are used to provide visitors with relevant ads and marketing campaigns. These cookies track visitors across websites and collect information to provide customized ads.