রোমান্টিক_অত্যাচার_১০
লেখিকাঃ #Israt_Jahan
ধারনাঃ #Kashnir_Mahi
আশফিঃ তখন আমি ওকে কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। তাই রেগে গিয়ে ওর পেটে খুব জোড়ে চাপ দিয়ে ধরলাম আর ওর গালে অনেক জোড়ে একটা কামড় বসিয়ে দিলাম।
মাহিঃ আআআআ…… আপনি কি মানুষ নাকি সত্যিই গন্ডার? এভাবে মানুষ মানুষকে কামড়ায়। ?। দেখুন কি করেছেন একদম কামড়ের দাগ বসে গেছে। এখন আমি সবার সামনে যাবো কি করে?
আশফিঃ ভালো হয়েছে। যাও তুমি এখান থেকে। মুড টাই নষ্ট করে দিল অসহ্য একটা মেয়ে।
মাহিঃ আপনি……………. (বলতে গিয়ে থেমে গেল)
মনে হল মায়ের গলাে আওয়াজ শুনলাম। মা কখন এলো??
আশফিঃ মামনিকে অনেক সকালেই চাচ্চু নিয়ে এসেছে।
মাহিঃ কিন্তু এসে তো আমার সাথে দেখাও করলোনা।
আশফিঃ কি করে করবে? সে তো তোমার মত বসে থাকার মানুষ না। এসে ব্রেকফাস্ট বানাচ্ছে। তোমার তো আর রান্না করার যোগ্যতা নেই।
মাহিঃ ? হুহ। আমি বেরিয়ে কিচেনে গেলাম মা তখন রান্না করছে।
-মা তুমি এসে আমার সাথে দেখা করোনি কেনো?
মাঃ তুই তো ঘুমোচ্ছিলি। আর আমি এসে আগেই রান্নাঘরে ঢুকেছি।রান্না শেষ আমি টেবিলে খাবার দিয়ে দিচ্ছি তুই যা ওকে ডেকে নিয়াই।
মাহিঃ আমি পারবোনা। তুমি যাও। বলেই বাইরে চলে আসলাম বাগান টা ঘুরে দেখবো বলে।
-আরে বাড়ির চারপাশে এতো সিকিউরিটি গার্ড কেনো? এর আগে তো দেখিনি।
পেছন ঘুরে দেখলাম উনি আর চাচ্চু কথা বলতে বলতে বাইরে আসছে। চাচ্চু আমাকে এখানে দেখে আমার কাছেই আসছে আর উনি ফোনে কথা বলছিল।
চাচ্চুঃ গুড মর্নিং মামনি।
মাহিঃ গুড মর্নিং চাচ্চু।
চাচ্চুঃ কি সকালের আবহাওয়া উপভোগ কোরছো?
মাহিঃ হ্যা ভালো লাগছে ওয়েদারটা।
চাচ্চুঃ হ্যা। সবসময় এভাবেই হাসিখুশি থাকবে। ঠিক আছে?
মাহিঃ হুম। উনি কথা বলা শেষ করে এদিকেই আসছে।
আশফিঃ কি কথা হচ্ছে তোমাদের? গল্প পরে কোরো ব্রেকফাস্ট করতে হবে চলো।
মাহিঃ ব্রেকফাস্ট টেবিলে বসে ওনাদের কথা শুনতে শুনতে আমার কান ঝালাপালা হয়ে যাচ্ছে। অনুষ্ঠান কিভাবে করবে কি করে সাজাবে এগুলো নিয়েই।
আশফিঃ চাচ্চু তোমার সাথে আমার আরও কিছু কথা আছে নাস্তা শেষ করে আমার ঘরে এসো।
চাচ্চুঃ হুম। ঠিক আছে। তুই যা আসছি।
আশফিঃ চাচ্চু আমাদেন কিন্তু আরও কড়া গার্ড ব্যবস্থা করতে হবে। আজকে ওরা সুযোগ নিলেও নিতে পারে। ওরা হয়তো জেনে গেছে আমার আর মাহির বিয়ে হয়ে গেছে। তাই তুমি খুব ভালো ভাবে চেক কোরো সব ঠিক আছে কিনা। আর বাইরের কাউকেই accept করা যাবেনা।
চাচ্চুঃ হুম। আজকে অনেক কেয়ারফুল থাকতে হবে। কিন্তু একটা বিষয় আমি ভাবছি পার্লার থেকে লোক আসবে ওকে সাজাতে সেটা কি আমাদের এলাও করা ঠিক হবে?
আশফিঃ একদম না। এই ভুল টা তো করাই যাবেনা।
মাহিঃ মা বাইরে এতো গার্ডের ব্যবস্থা কেনো?
মাঃ তোর সিকিউরিটির জন্য। সেদিন তোকে যারা আঘাত করেছিলো তারা যাতে আর তোর তোনো ক্ষতি না করতে পারে তাই।
মাহিঃ কিন্তু ওরা কারা ছিল? কেনো আমাকে মারতে এসেছিল?
মাঃ সেটা তো আমিও জানিনা।
আশফিঃ মামনি আজকে কিন্তু তোমাকেই তোমার মেয়েকে সাজাতে হবে। বাইরের কেউ সাজাতে পারবেনা ওকে।
মাঃ ঠিক আছে আজকে আমিই ওকে সাজাবো।
মাহিঃ বাবা…. মায়ের সাথে যেভাবে কথা বলছে তাতে মনে হচ্ছে কত আগে থেকেই না মা কে চিনে। ভালোই পারে।
আশফিঃ মাহি আমার ঘরে এসো। একটু দরকার আছে।
মাহিঃ জি বলুন কি করতে হবে?
আশফিঃ এটা ধরো, এই ক্যামেরা টা তোমার শরীরে এমন জায়গায় ফিট করবে যাতে তোমার আশেপাশে কারা আছে সেটা দেখা যায়। আমিও সবসময় তোমার সাথে থাকার চেষ্টা করবো। তারপরও…….
মাহিঃ আমার কাছে ক্যামেরা থাকলে আপনি কিভাবে দেখতে পাবেন সব?
আশফিঃ এই ক্যামেরা টার সাথে আমার মোবাইল কানেক্ট করা আছে তাই তুমি কি করছো তোমার আশেপাশে কে আছে সব আমি মোবাইলে দেখতে পাবো। বুঝেছো? আর হ্যা দয়া করে নিজে সাজতে যাবেননা। না হলে আমার প্রেস্টিজের ১২ টা বাজবে। আপনার যা পছন্দ??
মাহিঃ কি বলতে চাচ্ছেন আপনি? আমি সত্যিই unsmart??
আশফিঃ তাতে কোনো সন্দেহ আছে??
মাহিঃ এইভাবে আমাকে অপমান করলো? আজকে আমি সত্যিই আপনার প্রেস্টিজের ১২ টা বাজাবো? দেখে নিয়েন।
(সন্ধ্যায়)
মাহিঃবাব্বাহ!! এক দিনের ভেতরেই এতো সুন্দর করে সাজিয়েছে?? জবাব নেই ??।
এতক্ষনে আমাকে চোখে দেখে এখন আমার কাছে আসছেন।
আশফিঃ হুম। ভালোই লাগছে। মামনি সাজিয়েছে বলেই রক্ষা। না হলে যে……
মাহিঃ না হলে কি??
আশফিঃ কিছুনা।
মাহিঃ কি খুঁজছেন উনি এভাবে?
-কি হয়েছে? কি দেখছেন এভাবে?
আশফিঃ সেটা কোথায়?
মাহিঃ এই যে। মাথার এক পাশ ঘুরিয়ে কানের ওপরে দেখালাম গয়নার ভেতর।
আশফিঃ বাহ্।একদম পারফেক্ট। বোঝাই যাচ্ছেনা। এখন এসো আমার সাথে। সবাই প্রায় চলে এসেছে।
মাহিঃ সবার সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন। আমিও হ্যালো হ্যালো করছি সবার সাথে। কি একটা বিরক্তিকর পরিস্থিতি আর ভালো লাগছেনা। উনি আমাকে নিয়ে সবার মাঝখানে দাড়িয়ে সবাইকে গুড ইভিনিং জানালে। তারপর উনি আমার সম্পর্কে ওনার সম্পর্কে অনেক কিছুই বললেন। কিন্তু তার পর উনি এটা কি বললেন?
আশফিঃ আর হ্যা আজকে মাহি নিজেই একটা গান গেয়ে অনুষ্ঠান টা শুরু করবে। ও অনেক সুন্দর গান গাইতে পারে।
(ক্লাব ক্লাব ক্লাব)
মাহিঃ আশ্চর্য উনি কি করে জানলেন আমি গান ভালো গাই না খারাপ গাই। উনি তো আমার গান গাওয়া কোনোদিন শুনেইনি। আমার কাছে না শুনেই উনি এভাবে বলে দিল। কাজটা উনি ভালো করলো না।এখন আমি সত্যিই ওনার প্রেস্টিজের ১২ টা বাজানো শুরু করবো।
আশফিঃ মাহি, তুমি শুরু করো আমি মিউজিক বাজাতে বলছি।
মাহিঃহুম।আমি একটা টেবিলের কাছে গিয়ে বসলাম। আর উনি আমার সামনে গিটার হাতে নিয়ে বসলো। গিটার টা উনিই বাজাবে।
মাহিঃ তাহলে শুরু করি?
আশফিঃ অবশ্যই।
মাহিঃ সামনে টেবিল ছিল। উনি যখনই গিটার বাজাতে যাবে আমি তখই টেবিল থাবড়িয়ে টেবিল বাজানো শুরু করলাম। তারপর গান শুরু……..
Ai ai aiyoo,,,ai ai aiyoo
Dreamum wekeupum critical conditionam…..
Heee…..artham krekapum hiladola saab shetapum….
Face to faceum dhartibothram, taaf to besum tamasoterum.
Kraijaam khandaram daun dan mandram, fraijaam nataram thinktom mandaram
Jumpingummm…. pumpingummm… thahapingum…. thumpingummm………..
hondu rande monenale
(টেবিল মিউজিক)
Ummmmwahhhhhhhh
( টেবিল মিউজিক)
Ummmmwahhhhhhhh
( টেবিল মিউজিক)
Ummmwahhhhhhhhh
(টেবিল মিউজিক)
Ummmwahhhhhhhhh
-আমার গানটার সাথে মিউজিসিয়ানরা ও মিউজিক বাজাতে গিয়ে তাকিয়ে থাকলো। আর উনি তো অলরেডি থ হয়েই আছেন। গানটা শেষ করে সবার দিকে তাকিয়ে দেখলাম সবার মুখ গুলোই একি রকম হা হয়ে আছে। আমার অবশ্য একটু লজ্জা লাগছিল। কিন্তু তার চেয়ে বেশি ভালো লাগছিল ওনার প্রেস্টিজকে একদম খিচুরি বানিয়ে দিয়ে।????
হঠাৎ পেছন থেকে একজন নাদুসনুদুস লোক তালি বাজানো শুরু করলেন। ওনার তালি বাজানোর শব্দ শুনে সবাই একে একে তালি বাজালো।
তারপর ঐ নাদুসনুদুস লোক তালি বাজাতে বাজাতে আমার কাছে এসে বললো,
-excellent mam excellent. kya gaati hain aap. bengali hone ke baad bhi aap kitni acchi gaati hain tamil gaana…..superb
মাহিঃ ওহ!!?? thanks thanks.
তার মানে এ ইন্ডিয়ান?
আর উনি তো লজ্জায় বার বার সবার মুখের দিকে তাকাচ্ছেন যে তারা কি ভাবলো তারপর গরুর মত চোখ দুটো করে মনে মনে গর্জন করছে হয়তো। হুহুহু?।
আশফিঃ মাহি এটা ইচ্ছে করে গাইলো সবার সামনে আমাকে ছোটো করবে বলে। ওর আজকে কপালে দুঃখ আছে।
-(গলায় কাশির শব্দ করে) সবাই এখন আপনারা প্লিজ নিজেদের মত enjoy করুন। আমি উঠে যখন ওর কাছে যাবো ও তাড়াতাড়ি উঠে কিছু গেস্টদের কাছে গিয়ে দাড়ালো।
– কি মনে করছো তুমি কতক্ষন এভাবে আমার থেকে পালাবে। পার্টি শেষ হোক তোমাকে দেখছি।
তোমার প্ল্যানিং আমি বুঝে গেছি এখন থেকে তোমাকে চোখে চোখেই রাখছি।
মাহিঃ ওনার কিছু স্পেশাল গেস্টদের সাথে আমরা খেতে বসলাম। আমি ওনার ভয়ে মায়ের পাশে গিয়ে বসতে যাবো তার আগেই উনি এসে মায়ের পাশে বসে পড়লো আর আমাকে ওনার পাশের সিটে হাত ধরে টেনে ঠাস করে বসিয়ে দিল। এখন তো ওনার পাশে বসে আমি কিছুই করতে পারবোনা। নাহ্ আর হলোনা। কিছুক্ষণ পর আমাদের খাবার সার্ভ করে হল।প্লেটে ইয়া বড় একটা মুড়গির রান দেখে মাথায় শয়তানি বুদ্ধিটা চলে আসলো। এগুলো করতে আমার নিজের কাছেই লজ্জা লাগছিল।কিন্তু উনি সবসময় আমাকে ছোটো করে কথা বলে আমি এত স্মার্ট হওয়া সত্তেও আমাকে আনস্মার্ট বলে তাই ভেবেছি সবার সামনে নিজেই আনস্মার্ট সাজবো ওনাকে তো আর আনস্মার্ট করা সম্ভবনা। আমি সাজলেই ওনার প্রেস্টিজ যাবে।আমি এখন ভাবছি এই রানটাকে ঠিক কিভাবে কাটলে ওটা ছুটে সামনে পড়বে। হুম বুঝে গেছি।
আশফিঃ তুমি কি ভেবেছো আমি বুঝিনি কিছু তুমি ঠিক কি করবে এখন? রানটার দিকে তাকানো দেখেই আমি বুঝতে পেরেছি। আমার নজর এখন তোমার দিকেই আছে শুধু।
মাহিঃ আমি প্রস্তুতি নিচ্ছি রানটাকে খুন করার জন্য। মানে ছুরি দিয়ে যেভাবে মানুষকে খুন করে ঠিক সেভাবে। ছুরিটা উঁচু করে যখনি রানটা কাটতে যাবো তখনি উনি আমার হাতটা ধরলেন।
আশফিঃ কি হয়েছে ডিয়ার তুমি এভাবে এটাকে কাটছো কেনো?(দাতে দাত চেপে) ও আঙ্গুল কেটে গেছে? আমাকে বলবে তো দাও আমি তোমাকে হেল্প করছি। কি ভাবছো আমি কিছু বুঝিনা? ভালোভাবে খাবার গুলো খাও তারপর তোমাকে দেখছি।
মাহিঃ এটা কি হলো। উনি বুঝে গেলো? তাহলে তো আর কিছুই করা যাবেনা।
খাওয়া শেষ করে আমি দাড়িয়ে আছি মুডটা খারাপ করে। হঠাৎ করেই উনি পাশে এসে দাড়ালেন।
আশফিঃ একটু ফিল্মি ফিল্মি হয়ে গেছে, প্ল্যানিংগুলো চেইন্জ করো। কথাটা বলেই ওর মুখের দিকে তাকালাম। রেগে তাকিয়ে আছে। তারপর আমি অন্যসব গেস্টদের সাথে কথা বলতে চলে গেলাম। পার্টি শেষ করতে করতে অনেক রাত হয়ে গেছে। ঘরে এসে দেখলাম ও ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বেরোলো।ওকে দেখে মনে পড়লো ও আজকে যে কাজটা করেছে তার তো একটা শাস্তি দেওয়া দরকার। আমি জামা কাপড় ছেড়ে হাফ কুয়ার্টার একটা প্যান্ট পড়লাম।
-মাহি? এদিকে এসো।
-কি হয়েছে এভাবে চিল্লাচ্ছেন কেনো?
-আসলে আমি এতোটাই tired ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হওয়ার energy টুকুও নেই।
-তো? আমি কি করবো?
-তুমি টাওয়াল টা ভিজিয়ে আমার পুরো শরীর টা মুছে দাও।
-কি????
-হ্যা। আর শোনো হালকা গরম পানিতে টাওয়াল ভিজিয়ে এনো। একটু শীত শীত লাগছে।
– তার থেকে আমি আপনাকে কোলে করে নিয়ে গিয়ে ফুটন্ত পানিতে চুবিয়ে আনি।
– এই তুমি আমাকে সত্যিই কোলে নিবে!! প্লিজ নাওনা তাহলে ফুটন্ত পানিতে চুবিয়ে আনলেও সমস্যা নেই।
-থামুন তো আমি পারবোনা এগুলো করতে।
-মাহি আমার সত্যিই খুব খারাপ লাগছে। আমার মাথা গরম হয়ে গেলে কি করবো আমি কিন্তু নিজেও জানিনা। তাই ভালোভাবেই বলছি। যাও।
মাহিঃহুহ??যাচ্ছি। টাওয়াল এনে আমি ওনার সব জায়গা মুছে দিলাম।
– কি রকম মানুষ একটু লজ্জা ও করেনা।
-ওটা আমার আগেও ছিলনা আর এখন তো আরও থাকার কথা না।
– ধুর। আমি মুছে দিয়ে উঠে যেতে গেলাম।
-মাহি আর একটু কষ্ট করো।আমাকে ধরে একটু শুইয়ে দাও নড়তে চড়তে ও কষ্ট হচ্ছে। দাওনা সোনা।??
– মাগো এ আমি কার কাছে এসে পড়লাম। ওনাকে ধরে শুইয়ে দিলাম। তার কিছুক্ষণ পর আমি এসে শুয়ে পড়লাম।
আশফিঃ এতো তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়লো? ওয়েট তোমার ঘুম আমি ছোটাচ্ছি।
-মাহি? এই মাহি? কি ঘুম কানেও শুনছেনা। মাহিইইইই……
মাহিঃ কি হয়েছে?(চমকে উঠে) এত রাতে এভাবে ষাঁড়ের মত চেচাচ্ছেন কেনো?
আশফিঃ চেচাবোনা তো কি করবো? আমার পিঠ টা একটু চেপে দাও খুব ব্যথা
করছে।ঘুম আসছেনা।
মাহিঃ উনি কি আসলেই মানুষ!!??ঘুমিয়েই তো পড়েছিলাম। এভাবে ঘুম থেকে ডেকে তুলে সেবা করাচ্ছে? আর সহ্য হচ্ছেনা। ধুর ছাই। কাছে গিয়ে পিঠ চেপে দিচ্ছি। থামতেও বলছেনা। কতক্ষন হয়ে গেলো। কি ব্যাপার কোনো সারা শব্দ নেই ঘুমিয়ে পড়লো নাকি? মুখটা ভালো করে দেখলাম। হুম ঘুমিয়ে পড়েছে। উফফ শান্তি পেলাম। আমিও এসে শুয়ে পড়লাম। ভাবছি এখন পর্যন্ত ও সেভাবে আমার কাছে আসার চেষ্টা করেনি। আমি তো ভেবেছিলাম বিয়ের পর থেকেই আমাকে……..
যাক, তাহলে এতোটাও খারাপ না। এই একটা জিনিসই আমার একটু ভালো লাগলো।
আজকে সকালে আমাকেই নাস্তা বানাতে হবে। মা কাল রাতেই চলে গেছে।অনেক করে বলেছিলাম থাকতে। থাকলোনা। ওনাকে কি কি যেনো বলে তারপর চলে গেলো।রান্নাঘরের সেল্ফ গুলো এতো উঁচু কেনো? নিতেই তো পারছিনা কিছু।
আশফিঃ খাটো মানুষ হলে কি আর নাগাল পাওয়া যায়???
মাহিঃ পেছনে ঘুরে দেখলাম উনি মুখ চিপে হাসছে।
কে খাটো? আমি মোটেও খাটো না। আমার height যথেষ্ট পারফেক্ট।
আশফিঃ হ্যা। যেভাবে জাম্প দিচ্ছিলে তাতে তো বোঝাই যাচ্ছে কত লম্বা।
মাহিঃ ??হুহ। নিজে তো একটা জিরাফ। তাই সবাইকেই ছোটো ভাবেন।
আশফিঃ আমার গলা জিরাফের মত লম্বা না। আমি মানুষটা নিজেই অনেক লম্বা। আর লম্বা হওয়ার জন্য লাক থাকা লাগে। অবশ্য খাটো মেয়েরা বৌ হলে অনেক সুবিধা হয়।
মাহিঃ সুবিধা? কিসের সুবিধা?
আশফিঃ এইযে খুব সহজেই বুকের মধ্যে জড়িয়ে রাখা যায়।( মাহিকে টেনে নিয়ে বললো)। তারপর আদর করতেও খুব সুবিধা হয়।( মাহির ঠোঁটের কাছে ঠোঁট নিয়ে কিস করার সময়)
মাহিঃ আমি ওনাকে আস্তে করে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম।(কিস করার আগেই) সরুন তো। আর আমাকে জিনিসগুলো পেরে দিন।
আশফিঃ হায়!!! এখন আপনার রান্না করার সময় ও আমাকে হেল্প করতে হবে।আমার সেফ গুলো কত লম্বা ছিল।
মাহিঃ হ্যা তো ওদেরকেই বিয়েটা করতেন!! ইসস কি বলে ফেললাম।(জিহ্বায় কামড়ে ধরে)?উনি রান্না করার জিনিস গুলো পেরে দিচ্ছিল আমার কথা শুনে পেছন ঘুরে রেগে তাকালো।
উনি কিছু বলার আগেই সামনে থেকে সরে গেলাম।
আশফিঃ কখন যে কি বলে মেয়েটা নিজেও জানেনা। পাগল একটা।নাস্তা করে কিছুক্ষণ পর রুমে আসলাম।আজকে অফিস যেতে হবে অনেক কাজ পরে আছে।বাথরুমে ঢুকবো গোসলের জন্য তখন দেখলাম মাহি মনের সুখে গান গাইছে আর গোসল করছে।
-মাহি তাড়াতাড়ি করো আমি গোসলে ঢুকবো অফিস যেতে হবে।
মাহিঃ বাড়িতে এতগুলো রুম থাকতে এই বাথরুমেই কেনো ঢুকতে হবে? অন্য বাথরুমে যান।
আশফিঃ আমি আমার রুমের বাথরুম ছেড়ে অন্য রুমে যাবো কেনো? আমি এখানেই ঢুকবো। দরজা খুলো।
মাহিঃ এই আপনি দেখতে পাচ্ছেন না আমি গোসল করছি?
আশফিঃ তো কি হয়েছে? আমি তোমার সাথেই করবো। খোলো বলছি।একটু জোড়ে ধাক্কা দিতেই দরজা খুলে গেলো। ছিটকিনি টা আস্তে করে লাগানো ছিল তাই খুলে গেলো। আর খুলেই যেটা দেখলাম,
-তুমি গোসল না করে এভাবে বসে আছো কেনো? তার মানে তুমি ইচ্ছে করেই আমার সাথে এগুলো করছিলে?আমাকে লেট করানোর জন্য?
মাহিঃ সরি সরি সরি আমার ভুল হয়ে গেছে আমি আর করবোনা আমি বেরিয়ে যাচ্ছি আপনি গোসল করুন।আমি বেরিয়ে যেতে গেলাম উনি আমার সামনে এসে দাড়ালো।
আশফিঃ বেরোতে হবেনা এতক্ষন গোসলের নাটক করছিলে এখন সত্যি সত্যি গোসল করবে আমার সাথে। আমি ওর দিকে যত আগাচ্ছি ও ততো পিছু হাঁটছে। তারপর ও একদম মিশে গেল দেওয়ালের সাথে। আমি যখনি দেওয়াল এক হাত দিয়ে ওকে আটকে ধরবো ও তখন আমার এক পাশ দিয়ে দৌঁড়ে চলে গেলো।?☺হাহাহা আসলেই বাচ্চা।
মাহিঃ উহহ ওনাকে জালাতে গিয়ে আমি তো নিজেই ফেসে যাচ্ছিলাম। আমি রুমের বাইরে চলে আসলাম। ১৫ মিনিট এর মধ্যেই ওনার ডাক পড়ে গেছে।
-হুম বলুন।
আশফিঃ তোমাকে আমার ডাকতে হলো কেনো? আমি না তোমাকে বলেছিলাম আমি বাইরে যাওয়ার আগে তুমি আমার সামনে থাকবে আমি তোমাকে আদর করে বেরোবো। তাহলে তুমি আমার সামনে থাকলেনা কেনো? আমি তোমাকে ভালোভাবে বলেছিলাম তুমি শোনোনি। তুমি কি সবসময় এটা চাও আমি তোমাকে জোড় করে সবকিছু করি?
মাহিঃ হায় হায়!!ওনার এইসব রুলসের কথা তো আমার মাথায় ই নেই। আর এসব রুলস কি মেনে চলা যাই?
-আসলে আমার……
আশফিঃ একদম চুপ।আমার কাছে এসো।
মাহিঃ আমি ওনার কাছে গেলাম ভয়ে ভয়ে। উনি আমাকে আরও কাছে টেনে জড়িয়ে ধরে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। তবে চোখে রাগ নেই। তারপর উনি আমার কপালে গালে আদর করে দিল। আর সব শেষে ঠোঁটে। এখানে করার সময় উনি ওনার টাইম সেন্স একদম ভুলে যান। কতক্ষন যে এভাবে করছিল জানিনা। আর এদিকে আমার অসহ্য লাগছিল এভাবে থাকতে।
আশফিঃ অনেক্ষন ওকে আদর করে তারপর ছাড়লাম।
-নেক্সট যেনো এই ভুলটা আর না হয়। আসি।
মাহিঃ ওহ বাবা বাঁচলাম। আমি দিন দিন অধৈর্য্য হয়ে পরছি ওনার এইসব ব্যবহারে। কোনোভাবেই নিজেকে এভাবে মানাতে পারছিনা। আর সারাদিন এইভাবে ঘরে পড়ে থাকা সম্ভব না। কারণ আমার চিন্তা ভাবনা ছিল স্বাধীন জীবন। ঘর সংসার করবো সাজিয়ে গুছিয়ে এরকমটা আমি কখনো ভাবিইনি। বিশ্বাস জিনিসটা এতো সহজে আসতে চাইনা। আমাকে যা করার খুব তাড়াতাড়িই করতে হবে এভাবে আর থাকা সম্ভব না।
(দুপুরবেলা)
আশফিঃ মাহি? মাহি?
মাহিঃ কি ব্যাপার উনি আজ দুপুরবেলাই চলে আসলেন যে?
– এইতো। বলুন।
কি হলো চুপ করে আছেন যে।
আশফিঃ কিছুই হয়নি।
মাহিঃ তাহলে এভাবে ডাকলেন কেনো??
আশফিঃ এমনি। এসেই তোমার মুখ টা দেখবো তাই।
মাহিঃ অদ্ভুত মানুষ আপনি।
আশফিঃ তোমার কাছে তো এগুলো অদ্ভুত লাগবেই।
মাহিঃ আচ্ছা আপনাকে একটা কথা বলবো?
আশফিঃ এই তার আগে এই আপনি আপনি বলা বন্ধ করো তো। অসহ্য লাগে। তুমি বলবা। না হলে পানিশমেন্ট আছে।
মাহিঃ আচ্ছা ঠিক আছে ট্রাই করবো। এখন এটা বলুন I mean বলো তোমাকে যদি…….উফফ আনইজি লাগছে খুব তুমি করে বলতে নেক্সট টাইম থেকে ট্রাই করি? প্লিজ
আশফিঃ হুম।
মাহিঃ ঠিক আছে এখন কথাটা বলি। ধরুন আপনি অনেক চেষ্টা করার পরও আমি আপনাকে ভালোবাসতে পারলামনা বা আপনাে সাথে আর থাকতে চাচ্ছিনা। তখন আপনি কি করবেন???
কথাটি বলা শেষ করার আগেই উনি বসা অবস্থা থেকে উঠেই আমাকে টেনে ধরলেন।(রাগী লুকে)।আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললাম। তারপর……….
চলবে…….
( গল্পে ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন