#রোদহীন বিকালে তুমি
#ইশা_আহমেদ
#পর্ব_১৪
৪২.
আলভি ও বাড়ি থেকে বের হয়ে অফিসে চলে আসে।রা*গ এখনো কমছে না ওর।রোদ কিভাবে বলতে পারে ডি’ভো’র্সের কথা।রা*গ ক’ন্ট্রো’ল করতে না পেরে দেওয়ালে ঘু’ষি মা*রে।হাত দিয়ে র*ক্ত পরলেও সেদিকে আলভির খেয়াল নেই।কিন্তু সে নিজেই অবাক হচ্ছে তার ডি’ভো’র্সের কথা শুনে কেনো রা*গ হচ্ছে এতো।ও নিজেকে সামলানোর চে’ষ্টা করলো।
আপন মনে বলল,,,,”আমি কখনোই আনিশাকে ডি’ভো’র্স দিবো না।কখনোই না!আনিশা না চাইলেও আমার কাছে ওকে থাকতে হবে।ও থাকতে বা’ধ্য”
আলভি আনিশাকে ফোন দিলো।রিসিভ করলো আনিশা রিসিভ করেই আলভি কিছুটা রে*গেই বলল,,,,”তুমি কি আমাকে ডি’ভো’র্স দিতে চাও”
আনিশা ভয় পেলো আলভির কন্ঠ শুনে। কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলল,,,,”ভা..ইয়া যা চায় আমিও তাই চাই”
আলভির রা*গ বেড়ে গেলো দ্বি’গু’ণ।ও রে*গে চি’ল্লি’য়ে বলল,,,”তোর আর তোর ভাইয়ের সাহস অনেক বেড়েছে।তুই যদি কখনো ডি’ভো’র্সের কথা মা*থায় আনিশ তো তোকে মে’রে নিজেও ম’র’বো।আর আমি আসছি তোকে নিতে।এই কয়দিনে সাহস বেড়েছে না!”
আনিশাও কিছুটা চি’ল্লি’য়ে বলল,,,”আপনি আমায় কি পেয়েছেনটা কি হ্যা অনেক হয়েছে আর না।আপনাকে ডি’ভো’র্স দেবো না তো কি করবো আপনি আমায় ভালোবাসেন। আমায় স্ত্রীর মর্যাদা দিয়েছেন যে আমি আমি আপনার সাথে থাকবো নাহ আমিও আর থাকতে চাই না”
শেষের কথাগুলো বলে আনিশা কাঁদতে লাগলো।আলভি শেষের কথাগুলোর উত্তর দিতে পারলো না।ও বসে পরলো চেয়ারে কি করবে ভেবে পাচ্ছে না।ও কি ভালোবাসে আনিশাকে।কিন্তু এতো সহজে কিভাবে ফারিহাকে ভু*লতে পারলো।আসলে কখন কে কার প্রেমে পরবে বা ভালোবাসবে বলা যায় না।আলভি কিছু সময় ভেবে ঠিক করে নিলো ও কি করবে।
৪৩.
আলভি হনহন করে আনিশাদের বাড়িতে ঢুকলো।গেট খোলাই ছিলো।রোদ আনিশা রুহানা ফারিহা আর রুহান দুপুরের খাবার খেয়ে সবাই কিছু সময় গল্প করার জন্য বসেছে।আলভিকে দেখে অবাক হয়ে যায়।রোদ হাসে।ও জানতো আলভি আসবে।ফারিহাও আলভির দিকে তাকিয়ে হাসে।ও বুঝতে পেরেছে ছেলেটা খুব ভালোবেসে ফেলেছে আনিশাকে নিজের অজা’ন্তেই।
আলভি এসেই আনিশাকে টেনে দাড় করায়।আনিশাকে বলে,,,,”চলো তুমি অনেক হয়েছে আর না”
আনিশা হাত ছা’ড়ানোর চে’ষ্টা করলো কিন্তু আলভি আরো জো’ড়ে চে’পে ধরলো।ও হাত ছাড়ানোর চে’ষ্টা করতে করতে বলল,,,”আপনাকে আমি ফোনেই সব বলে দিয়েছি। আমি কোথাও যাচ্ছি না চলে যান আপনি”
আলভি রে*গে আনিশার দিকে তাকিয়ে বলে,,,,”আমি তোমাকে ছাড়া যাচ্ছি না তুমি আমার সাথে যাবে মানে যাবে ব্যাস আর কোনো কথা না।”
রোদ রা*গার ভান করে চি’ল্লি’য়ে বলে,,,”আলভি আমি তোকে আগেও বলেছি ও এখন একা না ওর ভাই বাবা সবাই আছে।আর ওর হাত ছা’ড় আমার রোদুবুড়ি ব্যা’থা পাচ্ছে।আর ও তো বলেছে ও যেতে চায় না। আর তুই ওকে ভালোবাসিস যে ওকে নিয়ে যেতে চাচ্ছিস”
আলভি বলে,,,”আমি ওকে ভালোবাসি কিনা জানি না কিন্তু ওকে ছাড়া থাকতে পারছি না। আর ও আমার বউ তাই আমি ওর সাথে যা ইচ্ছা তাই করতে পারি!”
কথাটা বলেই আলভি আনিশাকে নিয়ে ওখান থেকে বের হয়ে আসে।আলভি বের হতেই রোদ হাহা করে হাসতে থাকে।রোদের হাসি থামছেই না।সবাই ওর দিকে তাকিয়ে আছে হা করে।ও বলল,,,,
“এভাবে তাকিয়ে থেকো না আলভি তার বউকে নিয়ে গিয়েছে এতে আমাদের কিছুই করার নেই।আর বাবাই তুমি তোমার বউকে নিয়ে যাও আমিও আমার বউকে নিয়ে গেলাম”
ফারিহা আর রুহানা ল*জ্জায় পরে গেলো।রুহান হাসতে থাকে।রুহানকে হাসতে দেখে রুহানা পেটে গু’টা মে’রে বলে,,,”তোমার মতোই নি’ল’র্জ্জ হয়েছে তোমার ছেলে চলো এখান থেকে”
কথাটা বলেই রুহানা হনহন করে চলে গেলো।রুহান আলভির দিকে তাকিয়ে হেসে সেও তার বউয়ের পেছনে যেতে লাগলো।সবাই যেতেই রোদ ফারিহাকে কোলে তুলে নিলো।ফারিহা নামার চে’ষ্টা করে বলল,,,”কি করছেনটা কি আপনি দিনদিন অ’স’ভ্য হয়ে যাচ্ছেন।”
রোদ ফারিহার নাকের সাথে নাক ঘ’ষে বলে,,,”নিজের বউয়ের কাছেই তো অ’স’ভ্য হতে চাই।তো আমি কি এখন পাশের বাসার ভাবির সাথে অ’স’ভ্য’তা’মি করবো”
ফারিহা রা*গি চোখ তাকিয়ে বলে,,,,”একেবারে চোখ গে’লে দেবো অন্য মেয়ের দিকে তাকালে।আমি আনি না যে চুপচাপ স*য্য করবো হুহ”
রোদ ফারিহার কথায় মুচকি হাসে।ফারিহাকে রুমে এনে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে জানালার পর্দা টেনে ফারিহাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরে।ঘুমানোর আগে ফারিহাকে শা’সি’য়ে বলে,,,,”আমার ঘুমে মোটেও ডিস্টার্ব করবে না”
ফারিহা মুচকি হাসে।বিড়বিড় করে বলে,,”পা*গ*ল লোক”[লেখিকা ইশা আহমেদ]
৪৪.
আলভি আনিশাকে টানতে টানতে বাড়ির ভেতরে নিয়ে আসে।মিসেস নাফিয়া দেখে বলেন,,,,”কি অবস্থা আলভি তুমি ওকে এভাবে টে’নে নিয়ে এসেছো কেনো”
আলভি রে*গে বলে,,,,”ওর কতো বড় সাহস ও আমাকে ডি’ভো’র্স দিতে চায় আম্মু আমিও ওকে জো’ড় করে নিয়ে এসেছি”
আলভি আনিশাকে টেনে রুমে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।নাফিয়া মুচকি হেসে বলে,,,,”আমার ছেলেটা তাহলে আনিশার মায়ায় বন্ধি হয়েই গেলো”
আলভি দরজা আ’টকে আনিশার দিকে এগোতে থাকে।আনিশাও এক পা এক পা করে পেছোতে থাকে।পেছাতে পেছাতে দেওয়ালের সাথে লেগে যায়।আলভি আনিশার একদম কাছে চলে আসে।আনিশার উ’ন্মু’ক্ত কোমড় এক হাতে জড়িয়ে ধরে।আনিশা কেঁপে উঠে। হুট করে আলভি আনিশার ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়।আনিশার চোখ বড়বড় হয়ে যায়।ও নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।কিন্তু ছেলে মানুষের শক্তির কাছে কি মেয়ে মানুষ পারে।আনিশা হাল ছে’ড়ে দেয়।
আলভি অনেক সময় পর আনিশাকে ছেড়ে দিয়ে বলে,,,”মিষ্টিটা জোস ছিলো।এখন থেকে আমি প্রতিদিনই এই মিষ্টি খেতে চাই।”
আলভি শেষের কথাটা আনিশাকে চোখ মেরে বলল।আনিশা আলভির কাজে শুধু অবাকই হয়ে যাচ্ছে।সে এতো কিছু স*য্য করতে না পেরে আলভির বুকে ঢলে পরলো।
আলভি ওকে নিজের সাথে আগলে নিয়ে বলে,,,
“আনিশা পরি এখন থেকে এক নতুন আলভিকে দেখবে তুমি।আগে আমার অ’ত্যা’চা’রে কষ্ট পেতে এখন আমার ভালোবাসার অ’ত্যা’চা’র স*য্য করতে হবে জান।আমি বুঝতে পেরেছি আমি তোমায় ভালোবেসে ফেলেছি”
আলভি আনিশাকে বিছানায় শুইয়ে দেয়।আলভি আনিশার কপালে চুমু দিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পরে।দুপুরে অনেক ভেবেছে সে।তার শুধু আনিশার হাসিমাখা মুখটাই চোখের সামনে ভাসছিলো।
৪৫.
“স্যার আজকে তো আলভি শাহরিয়ার ম্যামকে জো’ড় করে তার বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়েছে”
সুহান তুহিনকে কথাটা বলতেই তুহিন হাতে থাকা ম’দের গ্লাসটা ছুঁ’ড়ে ফেলে দেয়।তুহিনকে দেখতে সা’ই’কো’দের মতো লাগছে। সুহান কাঁ’পতে থাকে।তুহিন চি’ল্লি’য়ে সুহানকে বলল,,,,”এখান থেকে চলে যাও”
সুহান একপ্রকার দৌড়ে রুম থেকে বের হলো।সুহান জানে তুহিন রে*গে গেলে খু*ন করতেও হাত কাঁ’প’বে না।সুহান যেতেই তুহিন রুমের সব জিনিস ছু’ড়ে ফেলতে থাকে।
চলবে…..!