#রুপালি_মেঘের_খামে
লিখা- Sidratul Muntaz
১.
ভরা প্ল্যাটফর্মে মুখ ভার করে বসে আছে অরা। তার মাথা উত্তেজনায় টনটন করছে। সামনে বসে থাকা লোকটি তার সদ্য বিয়ে করা বর! ব্যাপারটা এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না। অরার অদ্ভুত লাগছে।
ভ্রু-তে হাজার টন বিরক্তি নিয়ে এদিক-ওদিক তাকাচ্ছে সামির। তাকে দেখে মনে হচ্ছে বিয়েটা করে সে মহা ঝামেলায় আছে। পুরো নাম- ‘ফাইজান সামির চৌধুরী’। বয়স ছাব্বিশ অথবা সাতাশ হবে।
টুয়েন্টি ওয়ান সেঞ্চুরির যুগে এসেও অরা সম্পূর্ণ না দেখেই একজনকে বিয়ে করে ফেলেছে। হ্যাঁ, ব্যাপারটা অবিশ্বাস্যই।
সামিরের সাথে অরার বিয়েটা হয়েছে ঠিক সিনেমাটিক ভাবে। একজনের সাথে বিয়ে ভেঙে অন্যজনের সাথে জোড়া।
ছোট থেকেই অরা তার পরিবারের একান্ত বাধ্য মেয়ে। সে প্রচন্ড ইন্ট্রোভার্ট আর কল্পনাবিলাসী। কথা-বার্তায় ভীষণ লাজুক। তার অদ্ভুত স্বভাবের জন্য বন্ধুমহলে সে ‘লজ্জাবতী’ নামে পরিচিত। বিশ বছরের দীর্ঘ জীবনে কখনও বাবার আদেশ অমান্য করেনি অরা। তাই নিজের বিয়েতেও তার কোনো দ্বিমত ছিল না।
আরিফুল ইসলাম আদরের মেয়ের বিয়ের আয়োজন শুরু করেছিলেন মহা উৎসাহ নিয়ে। পুরো বাড়িতে এক সপ্তাহ ধরে উৎসব লেগে ছিল। কিন্তু বিপত্তি ঘটল ঠিক বিয়ের দিন সন্ধ্যায়।
হঠাৎ করেই অরার বাবা বিয়ে ভেঙে দিলেন। ছেলের মধ্যে নাকি বিরাট সমস্যা আছে। কি সেই সমস্যা? তা অরাকে জানতে দেওয়া হলো না।
অরা শুধু এইটুকু জানল, সমস্যা খুবই গুরুতর। নয়তো বাবা একেবারে বিয়ে ভেঙে দিতেন না। তবে আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীদের মধ্যে সবাই বিয়ের খবর জেনে গেছে। আয়োজনও হয়েছে বিশাল। গেইট সাজানো হয়েছে। বাবর্চিদের রান্নাও শেষ পর্যায়। এমন অবস্থায় আচমকা বিয়ে স্থগিত করা যায় না। তাই তথাকথিত সিনেমার মতোই হঠাৎ করে উদয় হলো অরার জীবনের নায়ক।
বিয়েতে আসা গেস্টদের মধ্য থেকে একজনকে বাছাই করা হলো। আরিফুল ইসলাম আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করলেন, সামির নামের যুবকের সাথেই অরার বিয়ে হবে। আশ্চর্য জনক ব্যাপার হলো, সেই যুবক অরাকে না দেখেই বিনা বাক্যে বিয়েতে রাজি হয়ে যায়। অরাকে বিয়ে করে সে আরিফুল ইসলামকে অতল সাগরে ডুবে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে।
বিয়ের পর নিজের বরের মুখ দেখে বিস্ময়ে বাকরুদ্ধ অরা। আগে পাত্রের মুখ দেখলে সে জীবনেও কবুল বলতো না। এর চেয়ে তো ভালো ছিল একবোতল হারপিক খেয়ে মরে যাওয়া!
তার মনে পড়ে শৈশবের কথা। সেই চাশমিশ মাস্টারমশাই,যে চোখ রাঙালেও ভয়ে শিউরে উঠতো অরা। তের বছর বয়সে যার ভয়ে তটস্থ থাকতো, বিশ বছরে এসেও তার প্রতিচ্ছবি নিজের বিয়ে করা বরের মধ্যে খুঁজে পাচ্ছে। আর ক্ষণে ক্ষণেই বিস্মিত হয়ে উঠছে। কি অদ্ভুত একট ব্যাপার!
সামির হঠাৎ কাছে এসে তার ব্যাগটা অরার দিকে বাড়িয়ে বলল,” এটা রাখো। আমি চা আর স্ন্যাক্স নিয়ে আসছি। এখান থেকে নড়ো না কিন্তু। অনেক ভীর। হারিয়ে গেলে খুঁজে পাবো না তোমায়।”
ব্যাগ রেখে চলে যাচ্ছে সামির। অরা স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে রইল। বিয়ের পর বরের সাথে এটাই তার প্রথম আলাপ। অথচ লোকটা এমনভাবে কথা বলল যেন অরা তার দশবছর আগের পুরনো বউ!
একবোতল ঠান্ডা পানি ঢকঢক করে অর্ধেকটা গিলে শেষ করল অরা। সে ভীষণ নর্ভাস। সারাদিন নানান ক্লান্তি আর দুশ্চিন্তায় কেটেছে। তাই মাথায় অনেক অদ্ভুত চিন্তা আসছে। এই যেমন… তাদের বাসর রাতে কি হবে?
এই রসকষহীন লোকটি কি তখনও এমন স্বাভাবিকই থাকবেন? অরা তার বাসর ঘরের দৃশ্যপট মনের আয়নায় একটু সাজানোর চেষ্টা করল।
সামির সহজ-স্বাভাবিক ভঙ্গিতে বিছানায় বসেছে। তার পেশিবহুল হাত অরার গায়ে রেখেছে। অরা কাঁপা কণ্ঠে উচ্চারণ করল,” দেখুন, হাত সরান।”
” কেন?”
অরা একটু সরে বসল। অসন্তোষ নিয়ে বলল,” আপনি আমার কাছে আসবেন না।”
সামির তার অনুরোধ অবজ্ঞায় উড়িয়ে দিল। আরও কাছে এলো। গম্ভীর গলায় বলল,”কেন আসবো না? তোমাকে বিয়ে করেছি আমি। তুমি আমার বউ। আমি কাছে না এলে আসবে কে?”
অরা চোখ বড় বড় করে তাকালো। ঢোক গিলল। এক কদম পিছিয়ে বলল,” আমি এই বিয়ে মানি না।”
” মানো আর না মানো। আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে। এখন এটাই বাস্তব। তুমি না মানলেই তো আর বাস্তবতা পাল্টে যাবে না!”
সামিরের ঠোঁটে হাসি। অরা থরথর করে কাঁ’পল। চোখ বুজে বলল,” একটা মেয়ের ইচ্ছের বিরুদ্ধে তাকে স্পর্শ করা উচিৎ নয়। এটা যারা করে তারা কা’পুরুষ!”
সামিরের চোয়াল শক্ত হয়ে এলো। চট করে অরার গাল চেপে ধরল,” কি বললে? কা’পুরুষ?”
ধাক্কা মেরে অরাকে বিছানায় ছুঁড়ে ফেলল সামির। তারপর…আর ভাবতে পারছে না অরা। সামিরের ডাকে তার ভাবনার সুঁতো ছিঁড়ল।
সামির বলল,” আর ইউ ওকে? তোমার কি ঘুম পাচ্ছে?”
অরা লজ্জিত হলো। খুব ধীরে মাথা নেড়ে বলল, সে ঠিকাছে। সামির তার পাশেই বসল।
এতোক্ষণ যে কল্পনায় অরা নিজের বাসর দেখছিল, এটা সামির বুঝে ফেলবে না তো? হঠাৎ এমন জঘন্য কল্পনা মনে আসার কারণ বুঝতে পারছে না অরা। তবে সামিরকে অপছন্দ করার পেছনে দু’টি কারণ রয়েছে।
প্রথমত মানুষটা খুব গম্ভীর আর স্বল্পভাষী। সে সাধারণ কথা বললেও মনে হয় ধমক দিচ্ছে। এতো রুক্ষ মানুষ অরার পছন্দ নয়। সে নিজে খুব কোমল, শান্ত। বর হিসেবে চেয়েছিল প্রাণচঞ্চল আর হাসি-খুশি কাউকে। এমন আঙ্কেল জাতের কাউকে না। যাকে দেখতে ইয়াংম্যান লাগলেও আচরণ মুরব্বির মতো।
আর দ্বিতীয় কারণটা হচ্ছে সবচেয়ে মুখ্য কারণ।সেই গম্ভীর চেহারার স্যারের সঙ্গে সামিরের চেহারার প্রায় নব্বই শতাংশ মিল। পার্থক্য শুধু সামীরের দাড়ি আছে। ওই ভাইয়ার দাড়ি ছিল না।
এই বিষয়টিই অরাকে সবচেয়ে অস্বস্তি দিচ্ছে। সেই স্যারকে য’মের মতো ভ’য় পেতো অরা। সামনে অনেক সম্মান দেখালেও পেছনে তাকে গা’লা-গা’ল দিতো। তার ছোটবেলার সবথেকে অপছন্দের ব্যক্তির সঙ্গেই কেন তার বরের চেহারার এতো মিল থাকতে হবে?
সামির নিজের ব্যাগটা বালিশের মতো ফোল্ড করে বলল,” তুমি চাইলে কিছুক্ষণ এখানে শুয়ে থাকতে পারো। ট্রেইন আসতে লেইট হবে। তোমার রেস্ট দরকার।”
মানুষটা মনে হচ্ছে খুব যত্নশীল। অরার আসলেই রেস্ট দরকার। তার মাথা ঝিমঝিম করছে। তাই সে কিছু না বলে শুয়ে পড়ল।
একটু চোখ বন্ধ করতেই কিছুক্ষণ আগের কল্পনার দৃশ্যটা আবার ভেসে উঠল। অরা সাথে সাথে চোখ মেলল। আজরাতে ভ’য়ংকর কোনো ঘটনা ঘটার সুযোগ নেই। কারণ আজ সারারাত তারা ট্রেনে থাকবে। সকাল পৌঁছাবে ঢাকায়। বাসর হলেও হবে আগামীকাল রাতে। তাই চব্বিশ ঘণ্টার জন্য অরা নিরাপদ আছে। এই ভেবে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। কিন্তু চব্বিশ ঘণ্টা পর কি হবে?
সামির কাঁধে নিজের ব্যাগ তুলল। আরেক হাতে নিল অরার লাগেজ। অরাকে একটা ইশারা দিয়েই ছুটতে লাগল স্টেশনের দিকে। ট্রেন কি চলে এসেছে? অরা মাথা নিচু করে সামিরের পেছন পেছন গেল।
তার গায়ে বিয়ের শাড়ি। সামিরের গায়ে শুধু ফরমাল শার্ট-প্যান্ট। মানুষ জন অবাক হয়ে তাকাচ্ছে। অরার খুব অস্বস্তি হচ্ছে। সে ঘোমটা খুলে রেখেছে। মাথায় কেবল খোপা বাঁধা। তবে গায়ের লাল বেনারসি দেখেই সবাই যা বোঝার বুঝে ফেলবে।
অরার মনে হচ্ছে, সামনের মানুষটি যে তার বর এটা লোকজন বুঝে ফেললে খুব লজ্জার ব্যাপার হবে। অরা লজ্জায় কারো দিকে তাকাতেও পারবে না।
সামিরকে দেখতে অতোটাও খারাপ নয় যতটা অরার কাছে লাগছে। স্বাভাবিক দৃষ্টিতে দেখতে গেলে সামির ভীষণ সুপুরুষ। শক্ত চোয়াল, খোচা-খোচা গাল ভরা দাড়ি, ঘন চুল।
গায়ের রঙ তামাটে। পেটানো লম্বা শরীর। সবচেয়ে সুন্দর তার মুখের গঠন আর চশমার আড়ালের দু’টো তীক্ষ্ণ চোখ। অথচ তার কোনো সৌন্দর্য্যই অরার নজরে পড়ছে না একটা কারণেই। ওইযে, ছোটবেলার ভ’য়াবহ স্মৃতি! রূ’ঢ় মাস্টারমশাইয়ের সাথে নব বরের চেহারার বাড়াবাড়ি মিল!
সামির সম্পূর্ণ আলাদা একটা বগী ভাড়া নিয়েছে। এসি সংযুক্ত বলে জানালা খোলার উপায় নেই। অরার এখনি দমবন্ধ লাগছে। সামিরের গা থেকে অদ্ভুত একটা পারফিউমের ঘ্রাণ ভেসে আসছে। ঘ্রাণটা সুন্দর হলেও সেই ঘ্রাণে অরার পেট ব্যথা করছে। যাকে একবার অপছন্দ হয়, তার সব ব্যাপারই ক্রমাগত অপছন্দ হতে থাকে। এটা যেন একটা ধারাবাহিক ব্যাপার।
সামির অরার লাগেজ বাঙ্কারে তুলে রেখে সিটে বসল। এই ছোট্ট বগীতে কেবল তারা দু’জন। কি অদ্ভুত!
” তোমার কি ক্ষিদে পেয়েছে?”
” না, একদম না।”
অরা এমনভাবে জবাব দিল যেন ক্ষিদে পাওয়াটা দ’ন্ডনীয় অ’পরাধ। সামির মৃদু হেসে বলল, “আন্টি- আঙ্কেলকে ফোন করে জানিয়ে দাও যে আমরা ট্রেনে উঠে গেছি। নয়তো টেনশনে থাকবে।”
সামিরের হাসিটা দেখে অরা অবাক হলো। মানুষটা হাসতে জানে তাহলে। কিন্তু তার হাসিও অরার কাছে অদ্ভুত ঠেকছে। মনে হচ্ছে, হাসির চেয়ে তার গম্ভীর মুখই ভালো। কি আশ্চর্য! অরা তার সদ্য বিবাহিত বরকে একদমই মেনে নিতে পারছে না। এমন কেন হচ্ছে?
সামির নিজের ফোন এগিয়ে দিল। অরা ডায়াল করল বাবার নাম্বারে। সামিরের ফোনে বাবার নাম্বার ‘আরিফ আঙ্কেল’ লিখে সেইভ করা। ব্যাপারটি দেখে অরা কিঞ্চিৎ অবাক। এর মানে কি বাবা সামিরকে আগে থেকেই চিনতো? অরা তাহলে চেনে না কেন?
বাবার সাথে কথা শেষ করে অরার বড্ড মনখারাপ হলো। সে বাড়ি থেকে চলে এসেছে এই নিয়ে বাবা অথবা মা কারো কণ্ঠেই সামান্যতম দুঃখের আভাস নেই৷ দু’জনেই ভীষণ আনন্দিত কণ্ঠে কথা বলছেন। যেন অরাকে বিয়ে দিতে পেরে তাদের আনন্দের সীমা নেই৷ অরা কি তার পরিবারের কাছে বোঝা ছিল যে তাকে দূর করতে পেরে এতো আনন্দ সবার?
” অরা, তুমি কি বই পড়ো?”
” জ্বী, না। কেন?”
” আমার কাছে গল্পের বই আছে কিছু। পড়তে চাইলে দিতে পারি। জার্ণিটাইমে বোরিং লাগবে না।”
” আমার বই পড়তে ভালো লাগে না।”
” তাহলে লং জার্ণিতে তোমার কি করতে ভালো লাগে?”
” আমি লং জার্ণিতে জানালার কাছে বসি। আর বাইরের পরিবেশ দেখি। এটাই আমার ভালো লাগে।”
” তাহলে তো ভুল হয়ে গেল। এসি কেবিন নেওয়া উচিৎ হয়নি। নন এসি হলে তুমি জানালা খুলতে পারতে। তাও সমস্যা নেই। লাইট নিভিয়ে দিচ্ছি। রিফ্লেকশনের কারণে বাইরের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে না। লাইট নিভিয়ে দিলে ভালো করে দেখতে পারবে। জানালা না খুলেও।”
লাইট নেভানোর কথা শুনে অরার বুক ধ্বক করে উঠল। এই লোকের মনে কু মতলব ঘুরছে নিশ্চয়ই। নাহলে লাইট বন্ধ করার কথা বলবে কেন? অরার মস্তিষ্কে ভেসে উঠল আবার সেই ভয়ংকর কল্পনা।
অরা জানালার দিকে তাকিয়ে থাকবে। চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। এই সুযোগে একটা হাত তার কোমর স্পর্শ করবে। অরার শরীর শিউরে উঠবে সেই স্পর্শে। কাঁপা কাঁপা গলায় সে বলবে,”প্লিজ কাছে আসবেন না।”
এই বলে যখনি সামিরের দিকে তাকাবে তখনি দেখবে সামির হলদে দাঁত বের করে হাসছে। তার ঠোঁট অরার ঠোঁটের কাছে চলে আসবে!
অরা চিৎকার করতে নিয়েও নিজেকে সামলে নিল। উফ, সে এসব কি ভাবছে? অতিরিক্ত কল্পনা করা তার ছোটবেলার স্বভাব। টেনশনের সময় তো তা আরও বেড়ে যায়। মানুষটা তার সামনেই বসে আছে। লাইটও জ্বলছে। সামিরের মুখভঙ্গি অতি স্বাভাবিক। তবে তার দাঁত হলদে কি-না সেটা বোঝা গেল না। কারণ মানুষটা অরার সামনে দাঁত বের করে একবারও হাসেনি। সামির ডাকল,”অরা?”
“হ্যাঁ?”
অরা খুব ভ’য় পেয়ে জবাব দিয়েছে। সামির ভ্রু কুঞ্চিত করে বলল,” তুমি কি কোনো বিষয় নিয়ে টেনশনে আছো? ইউ ক্যান শেয়ার উইদ মি।”
” না। কোনো টেনশন নেই তো আমার!”
অরা হাসার চেষ্টা করল। কিন্তু হাসিতেও দুশ্চিন্তার ছাপ স্পষ্ট। সামির বলল,”তাহলে বার-বার কোথায় হারিয়ে যাচ্ছো? কি ভাবছো?”
” কিছু না।”
” লাইট কি তবে নিভিয়ে দিবো?”
“না, না, প্লিজ। আপনি তো বই পড়ছেন। লাইট নিভিয়ে দিলে আপনার অসুবিধা হবে না?”
” কোনো অসুবিধা নেই আমার।”
সামির সত্যি সত্যি লাইট নেভাতে গেল। অরা কিছু বলতে নিয়েও পারল না। প্রয়োজনের সময় সে কথা বলতে পারে না, এটাই তার দোষ। লাইট নিভে গেল। চারদিকে এখন ঘুটঘুটে অন্ধকার। ঠিক অরার কল্পনার মতো। অরা জানালায় দৃষ্টিপাত করল। সামির তার পাশে বসেনি। বসেছে তার বরাবর সিটে। তার থেকে যথেষ্ট দূরে। অরা নিশ্চিন্ত মনে জানালার কার্নিশে মাথা এলিয়ে দিল। এই অস্বস্তিময় দীর্ঘ রজনী কাটবে কতক্ষণে? কে জানে?
চলবে।