রিভেঞ্জ পর্বঃ ১৭
– আবির খান
নেহাল স্বাভাবিক ভাবে শাওয়ার নিয়ে খালি গায়ে শুধু ট্রাউজার পরে বেরিয়ে আসে। কিন্তু বাইরে এসে যাকে রুমে দেখে নেহাল যেন একটা সক খায়। নেহাল দেখে তনু নাইট ড্রেস পরে দাঁড়িয়ে আছে। নেহাল আশেপাশে তাকিয়ে কিছুনা পেয়ে হাত দিয়ে মেয়েদের মতো গা ঢেকে আছে। নেহালের কাছে তনুকে এখন অন্যরকম লাগছে।
নেহালঃ তনু তুমি এখানে কেনো?? আর এভাবে?? অবাক হয়ে।
হঠাৎই তনু আস্তে আস্তে নেহালের দিকে এগুতে থাকে। নেহালের একদম কাছে এসে পরে। তনু নেহালের খালি শরীরটা কেমন জানি অন্যরকম দৃষ্টিতে দেখছে। নেহাল কি করবে বুঝতে পারছে না। হঠাৎই তনু নেহালের খালি বুকের উপর হাত রাখে। নেহাল জিম করে বলে ওর বডি অনেক ফিট। তনু নেহালের বুক, বাইসেফ এ হাত দিয়ে স্পর্শ করছে। নেহালের কপাল ঘাম দিয়ে যাচ্ছে তনুর স্পর্শে। আসলে তনু আজ অব্দি কোনো দিন কোনো ছেলেকে এতো কাছ থেকে খালি গায়ে দেখেনি। তনু আজ প্রথম কোনো পুরুষের খালি শরীর স্পর্শ করে দেখছে। তনু অপলক দৃষ্টিতে নেহালের শরীরের দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাৎই তনু নেহালকে জড়িয়ে ধরে।
নেহালঃ ছেড়ে দে শয়তান্নি ছেড়ে দে। তুই আমার দেহ পাবি কিন্তু মন পাবি না। মজা করে।
তনুঃ হ্যাঁ। আমি আজ তোর দেহই ভোগ করবো। চল আমার সাথে।
তনু নেহালকে টেনে এক ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে দেয়। আর নেহালের খালি গায়ের উপর শুয়ে পরে।
নেহালঃ তনু কি হয়েছে তোমার?? আজ এত্তো রোমান্টিক কেনো??
তনুঃ আজ আপনি আমাকে অনেক খুশি করেছেন। মানে অন্নেক বেশি। তাই আমি একটা জিনিস আপনাকে দিতে চাই।
নেহালঃ কি??
তনুঃ আমার সবটা আজ আমি আপনাকে দিতে চাই।আমি আর পারছি না। আমার সেই গভীর ভালোবাসা সেই গভীর স্পর্শ আপনাক দিতে চাই। আপনাকে খুশি করতে চাই।
নেহালঃ না তন….
নেহাল কিছু বলার আগেই তনু নেহালের ঠোঁটে ওর ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়। তনু পাগলের মতো নেহালকে এই ভালোবাসার পরশ বুলিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। নেহাল প্রথমে সাড়া না দিলেও পরে তনুর অবস্থা দেখে আর সাড়া না দিয়ে পারলো না। অনেকটা সময় ধরে চললো তাদের এই পরশের লেনদেন। হঠাৎই তনু এমন কিছু করে ফেললো যা নেহাল কখনো ভাবে নি। নেহাল এক ঝটকায় তনুকে ছেড়ে দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে পরে। তনু সে অবস্থা নেহালের সামনে দাঁড়ায়। নেহাল চোখ বন্ধ করে আছে। তনু সে অবস্থায় নেহালকে জড়িয়ে ধরে। নেহাল কি করবে কিচ্ছু বুঝতে পারছে না। নেহাল তনুকে সরিয়ে ওর নাইট ড্রেসটা পাশ থেকে উঠিয়ে কোনোরকম পরিয়ে দেয়।
তনুঃ আপনি এমন কেন করছেন?? আমার সবটাতো দেখলেন??তাও??
নেহালঃ আমি দেখেনি। শুধু একঝলক দেখেছি। এদিকে আসো।
নেহাল তনুকে বিছানায় বসায়। ও তনুর সামনে নিচে বসে। আর বলে,
নেহালঃ আমি জানি তনু, শুধু আমাকে খুশি করার জন্য তুমি এমন করছো। তোমার জীবনের প্রথম মিলন এটা। তুমি কি চাও এটা অপবিত্র ভাবে হোক??
তনু মাথা নাড়িয়ে না বলে।
নেহালঃ আমার কথাগুলো খুব গুরুত্ব সহকারে শোনো।
তনুঃ হুম। আস্তে করে।
নেহালঃ তুমি আমাকে ভালোবেসে চুমু দেও আমিও তোমাকে ভালোবেসে চুমু দি। এটুকু ঠিক আছে। কিন্তু তাই বলে জীবনের প্রথম মিলনটা বিয়ের আগে এখন করে তুমি কেনো তোমাকে সাড়া জীবনের জন্য অপবিত্র করবে?? আমাকে খুশি করার জন্য তুমি এখন কষ্ট সহ্য করবে। কিন্তু এই কষ্ট যে সবটাই ভুল। কারণ বিয়ের আগে একটা মেয়ে ছেলের মিলন কখনোই ঠিক না। কারণ সেই ছেলেটাই যে তোমার স্বামী হবে তার গ্যারান্টি কি?? আমাদের দেশের মেয়েরা অনেক বেশি আবেগি প্লাস একটু কামুক প্রিয়। ফলে তারা তাদের প্রেমিককে খুশি করতে গিয়ে তাদের পবিত্রটা বিসর্জন দিয়ে দেয় এমন এক ছেলের কাছে যার সাথে আদও কি তার বিয়ে হবে কিনা তার কোনো ঠিক ঠিকানা নেই। এটা ঠিক না। এই ভুলের ফলে শেষমেশ একটা মেয়ে তার জীবন দেয়। কারণ আলটিমেটলি দেখা যায় ছেলেটা তার সব হরন করে কোনো পবিত্র মেয়েকে বিয়ে করেছে। কারণ সব ছেলে যতই মেয়ের ইজ্জত হরন করুক না কেনো এই পশুরূপি ছেলেটা একটা পবিত্র মেয়েকেই বিয়ে করবে। মাজখানে সেই মেয়েটা সারাজীবনের জন্য অপবিত্র হলে।
তনুঃ আমি অনেক খারাপ?? কাঁদো কণ্ঠে।
নেহালঃ না তনু, তুমি আমার কাছেও মোটেও খারাপ না। কারণ তোমার আমার মাঝে গভীর একটা সম্পর্ক। আমাকে খুশি করতে তোমার ইচ্ছা করতেই পারে। ঠিক তখন আমরা যারা প্রেমিক তাদের উচিৎ তোমাদের থামানো। কারণ একটা মেয়ের জীবনের প্রথম মিলন তার কাছে যেমন অনেক কষ্টের আর আনন্দের। ঠিক তেমনি প্রেমিকের কাছেও তা খুব আনন্দের। কিন্তু সে অবশ্যই তোমার স্বামী হতে হবে। না হলে তুমি সাড়াজীবনের জন্য অপবিত্র হয়ে গেলে। তোমার পবিত্রতা রক্ষা করা যেমন তোমার দায়িত্ব ঠিক তোমার প্রেমিকেরও সেই একই দায়িত্ব। বিয়ের আগে এই অপবিত্র মিলনের ফলে তোমার প্রতি তোমার প্রেমিকের ভালো লাগা বা তোমার প্রতি তার যে একটা টান ছিলো সেটা একসময় শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু বিয়ের পর হলে সে কখনো যদি মানুষের মতো মানুষ হয় তাহলে কোনোদিনও অন্য মেয়ের কথা ভাববে না এবং শুধু তোমাকেই সারাটা জীবন ভালোবেসে যাবে। তার সবটা শুধু তোমাকেই দিবে। বিয়ের বন্ধনে আব্ধ থাকায় সে কখনো তোমাকে ছাড়তে পারবে না। তাই বিয়ের আগে এসব মোটেও ঠিক নয়। আমি অন্য সব বয়ফ্রেন্ডের মতো না। যে কামুক হয়ে আমাদের সম্পর্কটাকে সাড়াজীবনের জন্য অপবিত্র করেদিবো।
তনুঃ আমাকে মাফ করে দেন প্লিজ। আসলে আপনি আজ আমাকে অনেক কিছু দিয়ে খুশি করেছেন। তাই আপনাকে কিছু দেওয়ার মতো আমার ছিলোনা। আমি জানতাম ছেলেরা এটাই বেশি পছন্দ করে। তাই আমিও তাই করেছি। অসহায় ভাবে।
নেহালঃ হুম তা আমি বুঝেছি। এখানেই আমাদের সমস্যা। দোষ তোমাদের না। দোষ আমাদের ছেলের। কারণ এখন ভালোবাসা মানে শুধু শরীরের চাহিদা মেটানোর মাধ্যম মাত্র। একবার এ কাজে লিপ্ত হলে সব শেষ। জানো তনু, ধর্ষন কতো প্রকার??
তনু অবাক হয়ে মাথা নাড়িয়ে না বললো।
নেহালঃ বর্তমানে অামার মতে ধর্ষন এখন দুই প্রকার।
১. জোর করে।
২. ইচ্ছা করে।
১. তো প্রতিদিন খবরের কাগজে দেখো। কিন্তু ২ কি??একটা মেয়ে ইচ্ছা করে কিভাবে ধর্ষতি হয়?? হয় তনু হয়। কারণ প্রেমিকের কাছে নিজের সব তুলে দিয়ে দিনের পর দিন সে এটা করে তার প্রেমিকের কাছে সে ধর্ষিত হচ্ছে। প্রেমিক তার চাহিদা মিটিয়ে সে মেয়েটাকে নষ্ট করে চলে যায়। ফলে মেয়েটা নিজ ইচ্ছায়ই ধর্ষিত হলো। কিন্তু মেয়েটা কিন্তু তার প্রেমিককে ধরে রাখার জন্য কিংবা তাকে খুশি করার জন্য নিজ থেকেই তার সব প্রেমিককে।তুলে দিলো। তাই বিয়ের আগে এসব করা মানে নিজের ইচ্ছায় ধর্ষিত হওয়া এবং ছেলেদের ক্ষেত্রে ধর্ষন করা। আমার যে বন্ধু আছে ৪ জন, ওদের আমি এই শিক্ষা অনেক বছর আগেই দিয়েছি। ওরা কোনোদিন বিয়ের আগে কিছু করবে না। তাই আমি ওদের একসাথে ঘুমাতে দিয়েছি। কারণ ওরা কোনো দিন ধর্ষনকারী হবেনা। বুঝলে এবার??
তনু সমানে কাঁদছে।
নেহালঃ একি তুমি কাঁদছো কেনো??
তনুঃ আপনিতো আমার সব দেখে ফেলছেন।
নেহালঃ একঝলক দেখেছি। তুমি অনেক সুন্দর তনু। আমি তোমাকে পেয়ে অনেক খুশি। তোমাকে আমি খুব শিগগিরই বিয়ে করছি। সে পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকো আমাদের প্রথম মিলনের।
তনু নেহালকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে মাফ চায়।
তনুঃ সত্যিই আমাকে মাফ করে দেন। আমি আপনাকে খুশি করার জন্য এটা করেছি।
নেহালঃ আহহা হয়েছে তো। একটু দেখেছিতো কি হয়েছে। মজাই লেগেছে। বাকা হাসি দিয়ে মজা করে বলল।
তনুঃ এ আপনিইইই আমাকে এখন খালি লজ্জা দিবেন। কাঁদো কণ্ঠে।
নেহালঃ হয়েছে অার কেঁদো না। তনু…
তনুঃ হুম…
নেহালঃ তুমি অনেক সুন্দর।
তনুঃ আমি অসুন্দর হলে বুঝি আমাকে ছেড়ে দিতেন??
নেহালঃ কখনোই না। কারণ আমি তোমাকে ভালোবাসি তোমার দেহকে না। তবে হ্যাঁ তোমার স্পর্শ আমার অনেক ভালো লাগে।
তনুঃ আমারো।
নেহালঃ আচ্ছা আসো এখন ঘুমাবে।
তনুঃ আপনার বুকে ঘুমাবো কিন্তু।
নেহালঃ আচ্ছা পাগলি ঘুমিও।
নেহাল তনুকে ওর খালি বুকে জড়িয়ে ধরে তনুর কপালে একটা ছোট্ট চুমু একে দিয়ে ঘুমিয়ে পরে। তনুও পরম শান্তিতে নেহালকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরে। অবশ্য নেহালের খালি বুকে কতবার চুমু দিয়েছে তার কোনো ঠিক নেই।
সকাল ৮.৪৫ মিনিট,
নেহাল আর ওর বন্ধুরা মিলে বাগানে একসাথে বসে আছে।
সালমানঃ কিরে নেহাল কি হইছে?? এতো গম্ভীর হয়ে আছিস যে??
নেহালঃ আচ্ছা তোরা আগে বলতো, রাতে কিছু করিস নি তো??
সবাইঃ না না মাথা খারাপ। শুধু ভালোবাসার মানুষটাকে বুকে নিয়ে ঘুমিয়েছি। ভাই কি যে শান্তি।
নেহালঃ ভালো।
সালমানঃ আমি জানি দোস্ত কাল রাতে তোর সাথে কি হইছে। শোন বিয়েটা এবার করে ফেল। অনেক হইছে তনুর এখন তোকে দরকার। সংসারটা এবার ধর। বাবার ব্যবসাটাও ধর। তোর বাবা অনেক খুশি হবে। আর সাথে তোর মনের মতো বউতো আছেই।
নেহালঃ ভাই তুই আমার মনের মতো কথাটাই বললি। কিন্তু আমিতো তোদের ছাড়া বিয়ে করবো না। করলে সবাই একসাথে।
শামিমঃ আমি করতে পারবো। কারণ আমার বাসায় সবাই জানে৷ আর রুহির বাসায়ও জানে। আমার সমস্যা নেই।
রাফিঃ আমারো সেইম। আম্মু জানে। আম্মুকে আজ বললে কালই সুমির বাসায় যাবে।
নিলয়ঃ আমাকেতো তমার মা জামাই বলেই ডাকে৷ আমার কোনো সমস্যা নাই।
নেহালঃ সালমান তুই??
সালমানঃ দোস্ত তোর আর আর কেইসতো এক। প্রেমার পরিবারের কেউ জানে না। আর প্রেমা কি চায় এখন তাও জানি না। কারণ তনু আর প্রেমা আমাদের মধ্যে সবার ছোট। ওরা কি এখন আমাদের বিয়ে করবে কি না তাই জানার বিষয়। আর কত কাল এভাবে ছন্নছাড়া জীবন যাবে। ওরাও তো কিছু আশা করে আমাদের থেকে তাইনা। তাই বিয়েটা করে সব কিছু পবিত্র ভাবেই হোক।
নেহালঃ চল এখনই জিজ্ঞেস করে আসি। ওরা হ্যাঁ বললে সামনের সপ্তাহেই বিয়ে করে ফেলবো। বাবা কাল আসছে মা বললো।
সালমানঃ আন্টিকে বলেছিস কিছু??
নেহালঃ হ্যাঁ। আজ সকালে সব খুলে বললাম। মা রাজি। বলছে তনুকে নিয়ে তাড়াতাড়ি ঢাকায় আসতে।
সালমানঃ তাহলেতো ভালোই।
নেহালঃ কিন্তু তার আগে আমার কিছু কাজ আছে তা করতে হবে। এটাও তনুর জন্য একটা বিশাল বড় সারপ্রাইজ হবে।
শামিমঃ আমাদের বলবি না??
নেহালঃ সবার জন্য এই সারপ্রাইজ।
সবাইঃ আচ্ছা সমস্যা নাই।
নেহালঃ আচ্ছা বন্ধুরা না আমার ভাইরা, তোমরা কি আমাকে ভালোবাসো??
সবাইঃ অবশ্যই অনেক বেশি। তুই আমাদের সব।।
নেহালঃ তাহলে সেই সুবাদে আমি একটা প্রস্তাব রাখতে চাই আর সবার মতামত চাই।
সবাইঃ কি দোস্ত??
নেহালঃ আমাদের বিয়েটা আমরা ইসলামিক ওয়েতে করবো। আর এই বিয়ের পর আমরা সবাই একদম ভালো হয়ে যাবো। আগে যা করছি করছি। কিন্তু বিয়ের পর থেকে সব ধরনের খারাপ কাজ বা আল্লাহ তায়ালা যা না করেছেন তা আমরা করবো না। ধর এই বিয়েটাই ভালো হওয়ার বা আল্লাহর পথে আবার ফিরে আসার আমাদের প্রথম পদক্ষেপ। এবং সাথে আমাদের বউদেরও আল্লাহ তায়ালা দেখানো পথে নিয়ে আসবো। তাহলে দেখবি এই জীবন এবং মৃত্যুর পরের জীবন দুটোই শান্তিতে কাঁটাতে পারবি। এখন তোরা কি বলিস??
সবাই নেহালকে উঠে জড়িয়ে ধরে। আর বলে,
সবাইঃ সত্যিই দোস্ত এটা খুব ভালো উদ্যোগ। আমরা যে একেবারেই খারাপ ছিলাম তানা। নামাজটা পড়া হতো না। আর আড্ডা মাস্তি এসব করতাম শুধু। কিন্তু কোনো খারাপ কাজ আমরা আজ পর্যন্ত করিনি। হ্যাঁ আমাদের ভালোবাসার মানুষের সাথে হয়তো আমরা অনেক ঘনিষ্ঠ ছিলাম যা হয়তো ঠিক ছিলো না। তাই তোর কথা মতো আমাদের এই সম্পর্কটাকে পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ করে আমরা সবাই ইসলামের রীতিমতো জীবন যাপন করবো। অতীতের সব পাপকে ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে ফেলবো। আল্লাহর কাছে মাফ চাবো। যদি কোনো বড় পাপ করে থাকি তিনি যেন আমাদের মাফ করে দেন।
নেহালঃ এই না হলো আমার ভাইরা। তাহলে এই কথাই রইলো। নাস্তা খেয়ে সালমান তুই প্রেমার পারমিশন নিয়ে আমাকে জানা আমিও তনুকে বলি।
সালমানঃ আচ্ছা চল।
নাস্তা খাওয়ার পর,
নেহালঃ তনু একটু এদিকে আসো। কিছু কথা আছে।
তনু নেহালের সাথে চিন্তিত ভাবে বাইরে সবার আড়ালে চলে আসে।
তনুঃ কি হয়েছে এভাবে ডাকলেন যে কোনো সমস্যা হয়েছে?? আপনার কিছু হয়েছে?? চিন্তিত কণ্ঠে।
নেহালঃ আমার কিছু হয়নি। তবে তোমার কাছে একটা বড় চাওয়া নিয়ে আসছি।
তনুঃ তাড়াতাড়ি বলেন আমার চিন্তা হচ্ছে। অস্থির হয়ে।
নেহালঃ তনু আমি তোমাকে অনেক বেশি ভালোবাসি। তুমিও আমাকে বাসো আমি জানি। আমাদের ভালোবাসাটা একদম পবিত্র। কিন্তু আমরা যেভাবে ভালোবাসা আদান-প্রদান করছি তা ঠিক না। আমাদের পাপ হচ্ছে। তাই আমি চাচ্ছি, তোমাকে বিয়ে করে একদম পবিত্র ভাবে ভালোবাসতে চাই সারাটা জীবন। আর আমার বন্ধুদের বলেছি বিয়ের পর আমরা সবাই এই ছন্নছাড়া জীবন যাপন করবো না। আল্লাহ তায়ালা আমাদের যেভাবে চলতে বলেছেন ঠিক সেভাবেই চলবো। কারণ এতোদিন আমরা যা করেছি তা হয়তো আমাদের কাছে ঠিক কিন্তু তনু তা কি আদৌ ঠিক ছিলো?? বলো?? হয়তো ছিলো।হয়তো ছিলো না। কারণ আমরা খারাপ কিছু করিনি। তোমাকেই ভালোবেসেছি আজ তোমাকেই বিয়ে করবো। কিন্তু গতরাতে তো বললামই অনেকেই সব শেষ করে দিয়ে পালিয়ে যায়। তাই তনু আমি তোমাকে আগামী সপ্তাহে বিয়ে করতে চাই তুমি রাজি আছো??
তনুঃ আপনাকে স্বামী হিসেবে পাওয়া আমার সৌভাগ্য৷ আমি সেখানে কিভাবে না বলবো। অবশ্যই আমি রাজি। খুশি হয়ে।
নেহালঃ যাক আমাকে চিন্তা মুক্ত করলে। এভাবেই সবসময় আমার সাথে থাকবে। কাল আমরা সবাই ঢাকা ফিরে যাবো। আমরা ৫ বন্ধু একসাথেই তোমাদের বিয়ে করবো। এখন শুধু সালমান এসে সুখবরটা দিলেই হয়।
এরমধ্যেই সালমান দৌড়ে এসে নেহালকে বলে,
সালমানঃ দোস্ত প্রেমা রাজি।
নেহালঃ মাশাল্লাহ। তাহলে সবাইকে বল কাল আমরা ঢাকায় ফিরে যাবো। আর প্রেমার মার কাছে তোর মায়ের সাথে আমিও যাবো। টেনশন নাই।
সালমান নেহালকে জড়িয়ে ধরে। আর বলে,
সালমানঃ সত্যিই দোস্ত তোর কাছ থেকে অনেক কিছু শিখার আছে। তুই আমাদের সবসময় সঠিক পথ দেখাস।
নেহালঃ শুন, মানুষ ভুল করেই ভালো কিছু শিখে। আমরাও প্রথমে ভুল করেছি তবে খারাপ কিছু করিনি। তাই এবার ভালো ভাবে ওদের নিয়ে জীবনযাপন করবো।
সালমানঃ হ্যাঁ। এই তনু তোমার মন খারাপ কেনো??
নেহালঃ হ্যাঁ। কি হয়েছে??
তনুঃ আমার বাবা-মা?? অসহায় ভাবে।
সালমানঃ তুমি ভুলে গিয়েছো তনু তোমার এই ৪ টা ভাই আছে। তাদের বাবা-মা আছে। আরো লাগবে?? আমার আদরের বোনটাকে আমরা বিয়ে দিবো।
নেহালঃ হাহা। আচ্ছা তা দেখা যাবে নে। তনু তুমি মন খারাপ করোনা সব ঠিক হয়ে যাবে। এখন শুধু বাবার সাথে দেখা করার জন্য রেডি হও। বাবার সামনে তোমাকে নিয়ে যাবো। মাকে সব বলছি।
তনুঃ আমারতো ভয় করছে।
নেহালঃ আরে পাগলি কোনো ভয় নাই। আমার বাবা আমাকে অনেক ভালোবাসে। সে কখনো আমাকে না করবে না।
সালমান বাকিদের কাছে চলে গিয়েছে।
তনুঃ আচ্ছা। একটা কথা বলবেন??
নেহালঃ হ্যাঁ বলো??
তনুঃ বিয়ের পর আমাকে আদর করবেন তো??
নেহালঃ উমমমম নাহহ।
তনুঃ কিহহহ…কেনো?? অবাক হয়ে।
নেহালঃ আহহ বাবু হবে না। আমার ২ টা মেয়ে চাই ঠিক তোমার মতো। তাদেরকে শুধু আদর করবো।
তনুঃ আপনে অনেক দুষ্ট। আমিতো নিজেই একটা বাবু। আমি কিভাবে বাবু দিবো!! মজা করে।
নেহালঃ তুমি যেমন পাপ্পি নিয়ে নেও আমিও বাবু নিয়ে নিবো।
তনুঃ ধুর এভাবে বলে নাকি। আচ্ছা ২ টা মেয়ে না আপনার মতো একটা ছেলে চাই আমার৷
নেহালঃ আচ্ছা। একটা ছেলে একটা মেয়ে নিবো। কিন্তু তার জন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে ফরিয়াদ করে চাইতে হবে। তিনি খুশি হয়ে যা দিবেন তাই মেনে নিতে হবে।
তনুঃ আপনার মতো এত্তো ভালো মানুষের ফরিয়াদ করলে আল্লাহ তায়ালা কখনো নাখোশ করবেন না।
নেহালঃ আমিন। চলো ওদেরকে বলে তাড়াতাড়ি রেডি হই বিয়ে করতে যাবো যে। সময় নষ্ট করা যাবে না। মজা করে।
তনুঃ আপনিও না। চলেন। হাসতে হাসতে।
চলবে…?
কাল এই গল্পের ইতি টানছি। আজকের পর্বটিতে কিছু মেসেজ দিয়েছি আশা করি তা আপনারা বুঝেছেন। কাল গল্পের শেষে বিস্তারিত বলবো। সাথে থাকবেন। আর কেমন লেগেছে জানিয়েন কিন্তু। ??