রিভেঞ্জ পর্বঃ ১৪
– আবির খান
পরদিন সকালে,
নেহাল ওর বন্ধুদের জন্য অপেক্ষা করছে। নেহাল নিজেকে একদম দুঃখী করে দাঁড়িয়ে আছে। ওকে এখন কেউ দেখলেই বলবে ওর চেয়ে দুঃখী মনে হয় আর কেউ নেই। অন্যদিকে তনু রুমের ভিতর লুকিয়ে আছে। জানালা দিয়ে দেখছে নেহালকে। নেহালকে আজ খুব ভালো লাগছে তনুর। কালো টিশার্ট আর ট্রাউজার পরেছে। হেব্বি লাগছে নেহালকে। তনু মন ভরে নেহালকে দেখছে।
নেহালের অপেক্ষা শেষ হলো। নেহাল দেখছে দুটো অডি ওদের বাগানবাড়ির দিকেই আসছে। হ্যাঁ নেহালের বন্ধুরা এসে পরেছে। গাড়ি দুটো বাগানবাড়িতে ঢুকে গ্যারেজে পার্ক করা হলো। এরপর সবাই গাড়ি থেকে নেমে এলো। একটা গাড়িতে সালমান আর প্রেমা ছিলো। আরেকটায় রাফি,নিলয় আর শামিম। সালমান দৌড়ে এসে নেহালকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়। সাথে বাকি বন্ধুরাও এসে নেহালকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়। প্রেমা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলো।
সালমানঃ কি অবস্থা তোর ভাই!!! তুই ভালো নাইরে ভাই তুই ভালো নাই।
শামিমঃ বন্ধুদের ফেলে একা এখানে চলে এলি আমাদের সাথে কথাও বলিস না।
নিলয়ঃ আমাদের ভুলে গেছে ও।
রাফিঃ আরে তোরা কি বলিস। ও নিজেই কষ্টে আছে।
নেহালঃ তোদের ছাড়া আমি ভালো থাকতে পারি?? তোরাইতো আমার সব।
সালমানঃ ভাই মাফ করে দিস। আমরা পারি নি তনুকে তোর করতে।
নেহালঃ বাদদে ওর কথা। ওকে ওর আশিক তুলে নিয়ে গেছে।
রাফিঃ ওর আশিক তো খালি তুই। তুইতো তুলিস নি তাহলে!!
শামিমঃ আরে বোকা ও রাগে বলছে।
রাফিঃ ওহহ।।
নেহালঃ আরে প্রেমা ওখানে দাঁড়িয়ে আছো কেনো এদিকে আসো।
প্রেমা নেহালের কাছে আসে। নেহাল প্রেমার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।
নেহালঃ কি হয়েছে মন এতো খারাপ কেনো??
সালমানঃ তনুর কোনো খবর নাই। ওর খুব খারাপ লাগে তনুর জন্য।
নেহালঃ ওও। আচ্ছা চলো ভিতরে এই তোরাও আয়। পরে ব্যাগ আনবো নে।
সবাইঃ আচ্ছা চল।
নেহাল সবাইকে নিয়ে ভিতরে গেলো।
সালমানঃ আরে রামু কাকা কেমন আছেন?? অনেক দিন পর আপনাকে দেখলাম।
রামু কাকাঃ হ বাবারা তোমগো সবাইরে মুই মেলা দিন পর দেখতাসি। মোর খুব ভালা লাগতাছে। তোমরা বও মুই শরবত লইয়া আই।
শামিমঃ আচ্ছা কাকা যান।
নেহালঃ তোরা বস সবাই। প্রেমা তুমিও বসো সালমানের পাশে।
প্রেমাঃ জ্বি ভাইয়া বসছি।
সালমানঃ আরে তুই বস আমার কাছে। তোর সাথে কত দিন মন ভরে কথা হয়না ভাই।
নেহালঃ আচ্ছা বসলাম।
সবাই সোফাতে বসলো। এর মধ্যে রামু কাকা সবার জন্য শরবত নিয়ে আসলো আর সবাইকে দিলো। নেহাল ইশারা করে রামু কাকাকে বুঝিয়ে দিলো।
প্রেমাঃ আচ্ছা ভাইয়া আপনি তনুকে খুঁজেন নি??
নেহালঃ নাহ। ওকে কই খুঁজবো বলো?? ওতো ওর আশিকের কাছে।
শামিমঃ কি আশিক আশিক কছ!! তনু এমন নাকি!!
প্রেমাঃ হ্যাঁ ভাইয়া ওর তো আপনি ছাড়া আর কেউ ছিলো না। তাহলে তনু যে কোথায় গেলো কোনো খোঁজই পাচ্ছি না। মন খারাপ করে।
সালমানঃ তনুর বাবা মাও যত টেনশন করে না তার চেয়ে বেশি করে ও।
তনু উপরে আড়ালে লুকিয়ে সব কথা শুনছিল।
প্রেমাঃ আরে টেনশন করবো না আমার কত্তো কাছে ছিলো ও। জানেন ভাইয়া ও সত্যিই আপনাকে অনেক ভালোবাসতো। ওর বাবার কারণে আপনাকে সেদিন ও না বলেছে। কিন্তু এরপর কি থেকে কি হলো কিচ্ছুই বুঝলাম না। অসহায় ভাবে।
নেহালঃ আচ্ছা আচ্ছা বুঝলাম। তুমি মন খারাপ করো না। আমার এখনো যেহেতু এসেছো দেখবা সব ঠিক হয়ে গিয়েছে।
সালমানঃ আর কি বলবো বল সারাদিন মন খারাপ করে থাকে। অবশ্য আমাদেরও তোর আর তনুর জন্য মন কাঁদে।
প্রেমা মন খারাপ করে বসে আছে।
নেহালঃ আচ্ছা বুঝলাম।এখন বল আসতে কোনো সমস্যা হয় নাইতো??
শামিমঃ আমাদের হয়নাই। তবে সালমান এর গাড়ি আমাদের পিছনে ছিলো। বুঝলাম না ব্যাপারটা।
নেহালঃ বন্ধু…উহুম উহুম…হুম…সালমানকে গুতো দিয়ে।
সালমান আর প্রেমা লজ্জা পাচ্ছে। বাকিরা হাসাহাসি করছে। এই তনুর সুযোগ। তনু আস্তে করে নিচে নেমে সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রেমার পিছনে গিয়ে ওর ঘারে টোকা দেয়। প্রেমা একবার তাকিয়ে সামনে তাকায়। আর এই সুযোগে তনু নিচে বসে পরে। প্রেমা অবাক হয়ে যায়। ও ভাবে আমি কি একটু আগে তনুকে দেখলাম। আবার মন বলে হয়তো ভুল দেখেছি। তনু আবার উঠে প্রেমাকে টোকা দেয়। প্রেমা আবার তাকিয়ে দেখে তনু। প্রেমা সবার দিকে তাকিয়ে তনুর কথা বলতে নিলেই তনু আবার লুকিয়ে পরে।
প্রেমাঃ তনু….ততত…নু….
সালমানঃ কি হয়েছে প্রেমা??
প্রেমাঃ আমি মাত্র তনুকে এখানে দেখলাম। অবাক হয়ে।
নেহাল হাসছে। বাকিরা প্রেমার দিকে তাকিয়ে আছে।
সালমানঃ এখানে তনু কোথা থেকে আসবে?? ভুল দেখেছো হয়তো।
প্রেমাঃ না আমি দুবার দেখলাম।
শামিমঃ তুমি হয়তো ওর কথা অনেক ভাবছো তাই দেখেছো।
প্রেমাঃ কিন্তু…
সালমানঃ আহ শান্ত হও। এতো চিন্তা করো না।
প্রেমাঃ হুম।
প্রেমা আবার পিছনে তাকায় এবার ও তনুকে দেখতে পায়।
তনুঃ কেমন আছিস??
প্রেমাঃ তুইকি ভুত হয়ে গিয়েছিস??
তনুঃ হ্যাঁ। ভোওওওওও।
তনু সোফার পিছন থেকে বের হয়ে সবাইকে ভয় দেখিয়ে সামনে এসে পরে। সবাই বিশাল বড় একটা সক খায় সবচেয়ে বেশি প্রেমা। আর নেহাল হাসতে হাসতে মাটিতে পরে গিয়েছে।
সবাইঃ তনু তুমি এখানে???
প্রেমা লাফ দিয়ে তনুকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়। সাথে তনুও। বাকিরা নেহালের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আর নেহাল ওদের দিকে তাকিয়ে সে কি হাসি। বেচারার হাসতে হাসতে চোখ থেকে পানি পরছে। সালমান, নিলয়, রাফি আর শামিম উঠে চারজন মিলে নেহালকে ধরে বলে,
সবাইঃ বল শালা তনু এখানে কেমনে?? বল শয়তান??
নেহাল এখনো হেসেই যাচ্ছে। ওর হাসি দেখে বাকিরা রাগ করবে কি ওদেরও হাসি ছুটে যাচ্ছে।
সালমানঃ তুই হাসি বন্ধ কর। আগে বল তনু এখানে কেমনে শালা?? হাসতে হাসতে।
প্রেমাঃ তনু তুই এখানে কিভাবে??
তনুঃ বস আগে তারপর সব বলছি।
তনুর কথা শুনে বাকিরা নেহালকে ছেড়ে তনুর কাছে গিয়ে বসে।
সালমানঃ বলোতো তনু তুমি এখানে কিভাবে??
এরপর তনু শুরু থেকে এখন অব্দি শুধু ওদের প্রাইভেট সময় বাদে বাকি সব খুলে বলল। নেহালের বন্ধুরা রাগে নেহালের দিকে তাকিয়ে দেখে নেহাল মেইন গেইট দিয়ে আস্তে আস্তে পালাচ্ছে।
সালমানঃ শালাকে ধর আজ ওর খবর আছে।
সবাই নেহালের পিছনে দৌড়। ওরা বাগানে দৌড়াদৌড়ি করছে। এদিকে প্রেমা সব শুনে অভিমান করে বসে আছে।
তনুঃ কি হলো তুই রাগ করলি যে??
প্রেমাঃ তুই আমাকে বলতে পারতি। আমার কত্তো টেনশন হয়েছে তুই জানিস??
তনুঃ আরে আমার ফোনতো আনি নি। আর তোর নাম্বারও মনে নাই। আর সব কিছু এত্তো তাড়াতাড়ি হয়েছে যে কি বলবো বুঝতে পারছিনা।
প্রেমাঃ যাক নেহাল ভাইয়া সঠিক সময়ে সঠিক কাজ করছে। নাহলে তোর লাইফটা শেষ হয়ে যেতো। আয় বোন একটু বুকে আয়। আজ কতোদিন তোকে দেখি না। তুই ছিলি আমার বোন আমার সবচেয়ে কাছের বান্ধবী। তোকে ছাড়া আমি অনেক একা হয়ে গিয়েছিরে৷ তুই কেমন আছিস কোথায় আছিস এই চিন্তাই আমার রাত দিন কেঁটে যেতো। যাক তুই ভালো আছিস আমার এখন অনেক ভালো লাগছে।
তনুঃ তোদের এই সারপ্রাইজ দিবো বলেই এখানে আনা।
প্রেমাঃ আমিতো প্রথমে ভয়ই পেয়ে গেছি তোকে দেখে।
তনুঃ হুম। সব ওনার প্লান।
প্রেমাঃ ওরে ভালো কথা, তোরা এতো দিন একসাথে মানে ভাইয়া আর তুই। কি কি করলি বলনা??
তনুঃ আমার লজ্জা লাগে।
প্রেমাঃ আরে বলনা। প্লিজজজ..
তনুঃ সে আর কি করবে প্রথমে অনেক রাগারাগি পরে অনেক ভালোবাসা দিছে। লজ্জা মুখ লুকিয়ে।
প্রেমাঃ উহুম… ইয়ে টিয়ে আবার করিস নাইতো?? মজা করে।
তনুঃ আরে না। উনি অনেক ভালো। বলছে বিয়ের আগে না।
প্রেমাঃ দেখছিস আমি বলছি না ভাইয়া কতো ভালো।
তনুঃ হ্যাঁ আসলেই উনি অনেক ভালো। ওনি আজ না থাকলে আমার জীবনটা শেষ হয়ে যেতো। এটা ভেবেই ওনাকে অনেক ভালোভাসতে ইচ্ছা করে অনেক আদর করতে ইচ্ছা করে।
প্রেমাঃ বাবাহ।
তনুঃ এই তোরটার খবর কি?? মানে সাল্লু ভাই??
প্রেমা অনেক লজ্জা পাচ্ছে।
তনুঃ একি তুইওতো আমার মতো লজ্জা পাচ্ছিস। বলনা প্লিজ।
প্রেমাঃ ধুর লজ্জা লাগে।
তনুঃ আচ্ছা কানে কানে বল।
প্রেমা তনুর কানে কিছু বলল।
তনুঃ ওররে…আমারটার কাছ থেকেতো আমি জোরে করে নি। এমন নেওয়া নি বুঝছিস একদম ফুলায় দি। হিহিহিহি।
প্রেমাঃ তুই যে কি আমার থেকে ভালো আর কে জানে। হাসতে হাসতে।
তনুঃ আমি কি?? হাসি দিয়ে??
প্রেমাঃ পাকা বুড়ি। হিহিহি।
তনুঃ তুমিও কম না। মজা করে।
এরপর তনু আর প্রেমা ওদের মনের সব জমানো কথা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলো। অন্যদিকে নেহালকে ওর বন্ধু ধরে ওকে সেকি মার। আদরে মার যাকে বলে। মানে ব্যাথা নাই।
সালমানঃ তুই এমন একটা গেইম কেমনে খেললি ভাই??
নেহালঃ আরে তোদের সারপ্রাইজ দিবো বলে বলিনি। আর তোদের জরাতে চাইনি। যদি ধরা খেতাম তাহলে আমার জন্য তোরাও ফাসে যেতি। তাই তোদের বলিনি।
শামিমঃ দেখছিছ শালাটা সব সময় আমাদের কথা ভাবে।
নিলয়ঃ আসলেই আমাদের কিছু করতেই দেয়না ওর জন্য।
সালমানঃ আরে তোরা বুঝিস নি আমি বুঝছি। শালায় এখানে তনুর সাথে আরামে একা প্রেম করবে বলে আমাদের বলে নায়।
সবাইঃ ওওওওও…
নেহালঃ তুমি আমারে কও না। প্রেমার লিপিস্টিক তোমার ঠোঁটে ক্যা??
সবাইঃ কই দেখিতো…আররে..আসলেইতো। হাহাহাহ।
সালমানঃ শালা তুইও না। মার দিয়ে।
সবাই সবাইকে জড়িয়ে ধরে কোলাকুলি করছে৷
নেহালঃ আচ্ছা শুন, এখানে আসছি মজা হবে, মাস্তি সব হবে। তাই আমাকে একটা হেল্প করতে হবে।
সবাইঃ বল দোস্ত কি??
নেহালঃ কাল তনুর জন্মদিন। ও ১৮ বছরে পা দিবে কালকে।
সালমানঃ মাম্মায়ায়া…
নেহালঃ ধুর বেটা আগে শুন, কাল আমি ওকে নিয়ে বাইরে যাবো। ওকে কেউ উইশ করবি না। প্রেমাকেও বলে দিবি। আমি ওকে নিয়ে বাইরে গেলে তোরা সুন্দর করে বাসাটা সাজাবি। মানে এই বাগান টাতে। কাল ওকে দুইটা সারপ্রাইজ দিবো।
সবাইঃ আরেকটা কি??
নেহালঃ আমি কাল আবার ওকে প্রপোজ করবো। বুঝলি। সালমান সব দায়িত্ব তোর। এমন ভাবে সাজাবি যেনো ওর চোখ জ্বলজ্বল করে।
সালমানঃ হয়ে যাবে ভাই। নো টেনশন ডু ঘুরাঘুরি।
সবাই একসাথে হেসে দেয়।
রাতে,
নেহালের কোলে তনু বসে আছে। নেহাল তনুকে পিছন থেকে জড়িয়ে আছে। প্রেমা আর সালমান পাশাপাশি বসে আছে। বাকিরা যে যার মতো।
শামিমঃ এই কাহানি বুঝলে আমারটাকেও নিয়া আসতাম। তোমারা দুই বন্ধু আমগো এহন জ্বালাইতাছোছ।
নেহাল আর সালমান হাসাহাসি করছে। তনু আর প্রেমা লজ্জা পাচ্ছে।
নেহালঃ তাহলে এখন বল আসতে একসাথে পিকনিকে গেলাম সবাই।
নিলয়ঃ সত্যিই??
শামিমঃ আরে ও মজা করে।
রাফিঃ মামা কমু আইতে??
নেহালঃ আরে বল। অনেক মজা হবে।
সালমানঃ হ্যাঁ বল।
শামিমঃ কিন্তু এত্তো রুম পাবি কই??
নেহালঃ তোকে এক রুমে তোরটার লগে বন্দী করে দিমু শালা। ফোন দে।
শামিম, রাফি আর নিলয় ওদের গার্লফ্রেন্ডকে কল দিয়ে কথা বলে আসলো। তিন জনেরই মুখ কালো।
নেহালঃ কিরে কি হলো?? আসবে না।
তিন জনই মাথা নাড়িয়ে না করলো। ওদিকে সালমান এই সিন দেখে অট্টো হাসিতে ভেঙে পরলো সাথে নেহালও। আয় হায় কিছুক্ষন পর ওরা তিন জনও হাসিতে ভেঙে পরে।
সালমানঃ দোস্ত ওরা মনে হয় কষ্টে পাগল হয়ে গেসে। মজা করে।
নেহালঃ আমারও তাই মনে হয়।
শামিমঃ শালা আমরা পাগল হইছি না?? প্র্যাংক করছি তোদের সাথে। আমাদের গার্লফ্রেন্ডরাও কাল আসতাছে। তখন তোদের দেখিয়ে প্রেম করবো।
নেহাল আর সালমান একে অপরের দিকে তাকিয়ে সেকি হাসাহাসি। তনু আর প্রেমাও হাসছে।
সালমান হঠাৎই উঠে বাসার ভিতরে চলে গেলো।
রাফিঃ কিরে ও এভাবে না বলে কই গেলো।
নিলয়ঃ আরে নেচার কল বুঝোছ না।
আবার সবাই হাসাহাসি।
সালমান সবাইকে বোকা করে গিটার হাতে এগিয়ে আসলো।
সালমানঃ নে ধর নেহাল।
নেহাল গিটার ধরলো।
নেহালঃ গিটার আনলি যে।
সালমানঃ তনু তোমার প্রেমিকটা কিন্তু সেই গিটার বাজায় আর গান করে।
তনুঃ কি বলেন সত্যিই?? এই যে প্লিজ একটা গান শুনান না। প্লিজ। পাশে সরে বসে।
নেহালঃ তোরাও না। একদম জায়গা মতো হিট করিস। আচ্ছা শুনাচ্ছি। অনেক দিন পর গাচ্ছি ভুল হলে আমার দোষ নাই।
সবাইঃ আরে গা বেটা।
তনুঃ হ্যাঁ হ্যাঁ শুরু করেন।
নেহালঃ আচ্ছা। তনু এটা তোমার জন্য।
নেহাল গান শুরু করলো,
কি জানি কেমন করে,
বাঁধা পরে গেছি আমি পুরোটাই।
চুপি চুপি মন বলে,
সারাক্ষণই আমি তোমাকে চাই।
মনেরই অতল ছুঁয়ে ছুঁয়ে,
তুমি কি আমায় নেবে ধুঁয়ে?
এ মন বোঝেনা কি করি।
আমার এ অবুঝপনা দেখে,
তুমি কি যাবে মেঘে ঢেকে?
নাকি তুমিও এমনি।
কি জানি কেমন করে,
বাঁধা পরে গেছি আমি পুরোটাই।
চুপি চুপি মন বলে,
সারাক্ষণই আমি তোমাকে চাই।
তোমারই সুরভী
ছড়ালো যে বাতাসে।
দুজনে দুটি পথ
মিলে মিশে দুরে ভাসে।
এভাবেই যদি যায় কেটে
যাক রাত্রি দিন।
যেখানেই তুমি যাও
পৃথিবী হয় রঙিন।
ও ভেজা কোন জোছনায়,
ভালোবাসা বিঁধে যায় ভাবনায়।
মনেরই অতল ছুঁয়ে ছুঁয়ে,
তুমি কি আমায় নেবে ধুঁয়ে?
এ মন বোঝেনা কি করি।
আমার এ অবুঝপনা দেখে,
তুমি কি যাবে মেঘে ঢেকে?
নাকি তুমিও এমনি।
কি জানি কেমন করে,
বাঁধা পরে গেছি আমি পুরোটাই।
চুপি চুপি মন বলে,
সারাক্ষণই আমি তোমাকে চাই।
– অবুঝপনা বাই হাবিব।
তনু নেহালের গান শুনে অবাক হয়ে যায়। এত্তো সুন্দর গান গেতে পারে নেহাল তনুর জানা ছিলো না। তনু সবার সামনেই নেহালকে জড়িয়ে ধরে আবেগে। আসলেই গানটা অনেক সুন্দর ছিলো। সবাই হাত তালি দিচ্ছে।
প্রেমাঃ নেহাল ভাই কি সুন্দর গান করে। অার তুমি একটা গানও গাইতে পারো না আমার জন্য। অভিমানী কণ্ঠে।
নেহালঃ বন্ধু হয়ে যাক একটা।
সালমানঃ আচ্ছা দে। প্রেমা এটা তোমার জন্য। তবে একটা শর্ত আছে।
সবাইঃ কি??
সালমানঃ প্রেমাকেও আমার সাথে গাইতে হবে।
প্রেমাঃ আচ্ছা।
সালমান গাইতে শুরু করলো,
কেনো ভাবো ছেড়ে যাবো তোমায়
ছেড়ে গেলে তোমায় পাবো কোথায়
তোমাকে নিয়ে জীবন আর
জীবন তো হয়না দু বার
তুমি আমার বসুন্ধরা
তুমি আমার বাঁচামরা
তুমি আমার রঙিন আশা
তুমি আমার ভালোবাসা
ওওও…….
তুমি আমার মন আকাশে
আলো হয়ে আছো পাশে
সে আলোতে নিভে গেলে
কি হবে দীপ শুধু জেলে
তোমাকে নিয়ে জীবন আর
জীবন তো হয়না দু বার
তুমি আমার বসুন্ধরা
তুমি আমার বাঁচামরা
তুমি আমার রঙিন আশা
তুমি আমার ভালোবাসা
নদী হারায় মোহনাতে
খুঁজি তোমায় দিন রাতে
এ পৃথিবী ধসে গেলে
তোবুও আমায় পাশে পাবে
তোমাকে নিয়ে জীবন আর
জীবন তো হয়না দু বার
তুমি আমার বসুন্ধরা
তুমি আমার বাঁচামরা
তুমি আমার রঙিন আশা
তুমি আমার ভালোবাসা
তুমি আমার বসুন্ধরা
তুমি আমার বাঁচামরা
তুমি আমার রঙিন আশা
তুমি আমার ভালোবাসা
তুমি আমার বসুন্ধরা
তুমি আমার বাঁচামরা
তুমি আমার রঙিন আশা
তুমি আমার ভালোবাসা
– তুমি আমার বাই হৃদয় খান।
গান শেষে সবাই কড়ো তালি দেয়।
নেহালঃ সত্যিই তোদের যুগল সেই ছিলো দোস্ত। সেই।
সালমানঃ প্রেমা যে এত্তো ভালো গায় আমি জানতামই না।
তনুঃ ও আগে গান শিখতো ভাইয়া।
নেহালঃ ওও..তাহলেতো ভালোই বিয়ের পর দুজন একসাথে বাসর ঘরে গান গাবি। হাহা।
সবাই হাসছে।
শামিমঃ আচ্ছা চল অনেক রাত হলো এবার ঘুমাই অনেক টায়ার্ড লাগছে।
সবাইঃ আচ্ছা।
নেহালঃ কিন্তু কে কোথায় ঘুমাবি??
তনুঃ আমি আর প্রেমা এক সাথে ঘুমাবো।
নেহাল ভ্রু কুঁচকে ইশারায় না করে। তনু দুষ্ট ভাবে মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে। নেহাল আবার না করে। তনু আবার হ্যাঁ বলে।
সালমানঃ তনু, নেহাল মনে হয় তোমাকে ছাড়া ঘুমাতে চাচ্ছে না।
নেহালঃ আরে না না। আমার কোনো সমস্যা নেই।
সবাইঃ সত্যিই তো। মজা করে।
নেহালঃ হ ভাই।
সবাইঃ আচ্ছা। চল তাহলে।
তনুঃ প্রেমা চল।
নেহাল ভ্রু কুঁচকে তনুর দিকে তাকিয়ে সবাইকে নিয়ে ঘুমাতে চলে গেলো।
পরদিন সকালে,
নেহালের রুমে হঠাৎ…
চলবে….?
– কোনো ভুল হলে জানাবেন।
সবার কেমন লাগছে?? মনে সাড়া দিচ্ছেতো আমার এ গল্পটি??জানাবেন কিন্তু। ☺❤