রঙ বেরঙের খেলা পর্ব-১৯+২০

0
724

#রঙ বেরঙের খেলা
#আলিশা
#পর্ব_১৯+২০

মন খারাপের সুর বুকে বয়ে ঢাকা থেকে রাজশাহীতেই চলে এলো সভ্য। রাত তখন তিনটে পনেরো বাজে। ফারজানা বেগমকে ফোন করে ঘুম থেকে উঠিয়ে ঘরে প্রবেশ করা হয় সভ্যর। এরশাদ রাতে রাতেই পুনরায় পারি জমিয়েছে ঢাকা। সভ্যর কোনো মিটিং, কাজের কথা সব তো তাকেই সামলাতে হবে। বিধায় তার সভ্যর সাথে রাজশাহী থাকা মোটেও উচিত হবে না।

— সভ্য, ফ্রেশ হয়ে আয় আমি খাবার নিয়ে আসি।

ফারজানা বেগমের মমতাময়ী কথা। সভ্য ড্রয়িং রুমের সোফায় বসে কেডস হতে পা উন্মুক্ত করছিলো।

— না মা। তুমি যাও ঘুমিয়ে পরো। আমি এখন কিছু খাবো না।

— ক্ষুধা লাগেনি? কখন খেয়েছিস না খেয়েছিস। আর এরপর আসার আগে ফোন করে আসবি। যা তা অবস্থা। কতক্ষণ বাইরে দাড়িয়ে ছিলি কে জানে?

সভ্য মায়ের কৃত্রিম রাগ হাসি মুখে দেখে গেলো। কেডস, ঘড়ি খুলে মাথার চুলগুলোয় একবার হাত ছুঁয়ে বলল

— মা এক গ্লাস পানি দেও আমাকে।

ফারজানা বেগম ‘যাচ্ছে’ বলে পা বাড়ালেন পানি আনবেন বলে। সভ্য সোফায় পিঠ ঠেকিয়ে গা এলিয়ে দিলো। বিযুক্ত আঁখিতে কাটলো তার মিনিট দুয়েক। অতঃপর খানিকটা চমকে দেওয়া কন্ঠ তার কর্ণপাত হলো। চোখ খুলল নিমিষেই।

— এই নিন পানি।

সাবিহার কন্ঠ। সে হাতে ঝকঝকে কাঁচের গ্লাস নিয়ে দাড়িয়ে আছে। সভ্য হাত বাড়িয়ে পানির গ্লাস নিজের হাতে স্থানান্তর করলো। সভ্য আশপাশ নজর করে বলল

— মা কোথায় গেলো?

— বড় মাকে আমি ঘরে পাঠিয়ে দিয়েছি। আজ সকালে ওনার প্রেশার বেড়ে গিয়েছিল। ঘুম কম হলে অসুস্থ হবে।

সাবিহা আজ বেশ স্বাভাবিক হয়ে কথা ব্যাক্ত করছে সভ্যর সম্মুখে। সভ্য পানির গ্লাস মুখে নেওয়ার আগে বলে উঠলো

— ওহ। তুমি এতো রাতে জেগে আছো, ঘুমাওনি?

— ঘুমিয়েছিলাম। কিছুক্ষণ আগে আবার ঘুম ভেঙেছে।

কথাটা বলতে বলতে সাবিহা নিঃশব্দে বসে পরলো সভ্যর পাশে। সভ্য পানি পান করে গ্লাসটা সম্মুখের ছোট টেবিলে রেখে দিলো। হুট করে জরো হলো আড়ষ্টভাব। তার ফ্রেশ হতে হবে। কিন্তু সাবিহা যে হুট করে পাশে বসলো! আচমকাই যাওয়া যাচ্ছে না।

— সন্ধ্যার বাবা?

সভ্যর বিড়াট অস্বস্তির ভাবনার মাঝে হঠাৎ সাবিহার গাঢ় অনুভবের ডাক। বুকের মাঝখানটায় যেন দুম করে পরলো কিছু। সভ্য চমকে পাশ ফিরে চাইলো। অদ্ভুত সুন্দর এক ডাক! সভ্যর ঘোর কাটে না কাটে না ভাব। সে কি বলবে? তার কি বলে সাড়া দেওয়া উচিত? বলবে কি, বলো সাম্যর মাম্মা।

— বলো..

বহু কষ্টে অপ্রস্তুতের আসক্তি তাড়িয়ে সভ্য সাড়া দিলো সাবিহার ডাকে। সাবিহা হঠাৎ চোখের দৃষ্টি গাঢ় করলো। সভ্যকে আরো এক দফা চমকে দিতে সে বলে উঠলো ফিসফিস করে

— স্যালুট ব্যাক সাম্যর বাবা।

— কেন?

— আপনি আজ আমাদের আপনার পরিচয়ে পরিচিত করে দিয়েছেন বলে। সুষ্মিতার…..

আর কিছু ব্যাক্ত করতে চাইলো না সাবিহা। সভ্য কিয়ৎক্ষণ নিষ্পলক তাকিয়ে রইলো সাবিহার দিকে। অতঃপর অনুচ্চ স্বরে বলে উঠলো

— থ্যাঙ্কস

এরপরই এক চিলতে হাসি সভ্যর মুখে। সকল আড়ষ্টতা শূন্যে উবে দিয়ে উঠে পরলো সভ্য। নিজ ঘরের দিকে পা বাড়িয়ে চলতে চলতে বলল

— শুনলাম আমার ঘরের মানুষগুলো নাকি আমার ঘরেই থাকছে? আই হ্যাভ গট ফান্সি ফর ইট।

সাবিহা সোফায় বসেই লাজুক মুখে হাসলো সভ্যর কথার পিঠে। সভ্য সেদিন চলে যাওয়ার পর সাবিহা আর ঘর ছাড়েনি। পুরোদস্তুর সভ্যর ঘরের ঘরোনী হয়েছে সে। নিজের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র স্থানান্তর করেছে সভ্যর রুমেই।

.
ফ্রেশ হয়ে ড্রেস চেঞ্জ করে সময়ের খোঁজ নিতেই জানা হলো ভোর সাড়ে চারটা বজতে চলেছে। সভ্য আর বিছানায় গা এলিয়ে দিলো না। ভোর হতে চলল। এখন আর ঘুমিয়ে লাভ নেই। ঘুমোলে আবার ঘন্টা দুয়েকের মাঝেই উঠতে হবে। তারচেয়ে বরং সকালের নাস্তা সেরে আটটা ন’টায় ঘুমের সাথে সাক্ষাৎ করলে ঢের ভালো হবে। এই ভাবনা মনে চেপে সে রুমের একটা চেয়ার টেনে এনে স্থাপন করলো বিছানার কাছে। বেলকনিতেই বসতে চেয়েছিল কিন্তু সাবিহার জন্য বসা হলো না। একটু আগে সভ্যর মা এসেছিলেন আবার। তার ফোন ছিল এঘরে। নিতে এসে সভ্যকে সতর্কবার্তা জানিয়ে দিয়ে বলে গেলেন সাবিহার নাকি দু’দিন হলো প্রচন্ড জ্বর। আজ একটু কমেছে। দু’দিন হলো।সেবা যত্ন তিনিই করছেন। ঘুম হয় না তার দুই রাত হলো মূলত এ কারণেই তার প্রেশার বেড়ে গিয়েছিল আজ। রাহেলা ইসলামেরও জ্বর। মূলত এখন তাদের পরিবারে জ্বর আত্নীয় হয়ে এসেছে। সভ্য পরখ করে এটাও বুঝেছে ফারজানা বেগম কথা বলতে বারংবার গলা পরিষ্কার করেছেন। ওনারও বুঝি ঠান্ডা লেগেছে।

— ঘুমাবেন না?

হঠাৎ ড্রিম লাইটের মৃদু আলোয় সভ্যকে পরখ করে সাবিহা প্রশ্ন ছুড়লো। সভ্য ঠোঁট প্রসারিত করে বলল

— নাহ। তুমি ঘুমাও।

সাবিহা বিছানার প্রস্থ ধরে শুয়েছিল। মাথায় চাপা যন্ত্রণা হচ্ছে তার। সে উঠে সোজা হয়ে বিছানার দৈর্ঘ্য বরাবর শুতে চাইলো। মাথা তুলতেই সভ্য নিষেধ করে জানিয়ে দিলো

— যেভাবে আছো ওভাবেই থাকো। বললাম তো আমি ঘুমাবো না।

— আচ্ছা।

সভ্যর আদেশ মেনে নিয়ে সাবিহা শুয়ে পরলো পুনরায়। বন্ধ করলো চোখ। সভ্য চেয়ারে বসেই অনিমেষ তাকিয়ে রইল সাবিহার পানে। একটা সময় এই মেয়েটা ছিল আদব বিমীন। বিনয়, নম্রতা তার মাঝে একটুও ছিল না। সবসময় তার অহংকার ছিল। রূপ নিয়ে তার অশেষ অহংকার ছিল। কিন্তু আজ তারই মাঝে কোমল এক সত্ত্বার দেখা মিলেছে। কত পরিবর্তন সাবিহার! সভ্য এর কারণ খুঁজে পেয়ে হুট করে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। সন্তান সত্যিই বড় একটা নেয়ামত। এই ছোট একটা প্রাণ কতগুলো পরিবর্তন আনতে পারে! সাবিহাকে পরিবর্তন করে দিলো। সভ্যর মনের ঘৃণা চাপা দিচ্ছে। মা বাবা নামক সুন্দর একটা অনুভূতি জাগিয়ে দিয়ে দু’টো মানব মানবীকে এক করে দিচ্ছে। যারা হয়ে উঠেছিল একে অপরের চোখের বালি। এই ভাবনা গুলো সময় নিয়ে সভ্য পরখ করে একটা সময় আলতো স্পর্শ করলো সাবিহার কপালে। তাপমাত্রা অত্যধিক নয়। তবে জ্বরের আছে তা বুঝতে কষ্ট হয় না।

— সভ্য ভাই, একটা কথা বলবেন?

হাতের স্পর্শ কপালে পরতেই সাবিহা আচমকা বাঁক ফুটালো। সভ্য মৃদু চমকালেও ধীর কন্ঠে বলল

— বলো।

— আমাকে কি সত্যিই কখনো ভালোবাসবেন না?

— বাসবো। সাম্য সন্ধ্যার মা ছাড়া আমার ভালোবাসার মতো আর কে আছে?

হঠাৎ নরম সুরে জবাব দিলো সভ্য। সাবিহার বুকে মুহূর্তেই উঠলো প্রশান্তির ঢেউ। সে চোখ খুলে চাইলো সভ্যর পানে। বলে উঠলো

— সত্যি?

সভ্য মনের কিছু অবাধ্যতা, কিছু অনিচ্ছা দমিয়ে রেখে বলল

— হুম। মিথ্যা কেন মনে হয়?

সাবিহা সভ্যর প্রশ্নে শুধু মুখে হাসি নিয়ে পলকহীন দেখলো সভ্যকে। জ্বরের দরুন তার চোখ লাল। মুখটা শুকিয়ে চুপসান হয়েছে।

— আপনি আমার থেকে একটা কামড় পাবেন। সুষ্মিতা কে গোলাপ দেওয়ার কারণে। বাংলাদেশে তো ফুলের কোনো অভাব ছিল না। আপনি তাহলে সুষ্মিতাকে গোলাপ কেন দিলেন?

.
.
.
— সভ্য, বুঝলাম না কিছু। জ্বর ঠান্ডা সাবিহার লেগেছে। কিন্তু তুই কেন গলায় কাপড় পেচিয়ে রেখেছিস?

সকাল সকাল সভ্য সম্মুখীন হলো এহেন কথার। ফারজানা বেগম অবাক হয়ে তাকিয়ে আছেন ছেলের দিকে। দৃষ্টি তার সভ্যর গলায়। সভ্য আচমকা থতমত খেয়ে গেলো। হাতে তার গ্রিন টি। প্রত্যহ খেতে হয়। কিন্তু আজ খেতে এসে বোধ হয় বেজায় ভুল হয়ে গেছে।

— আ… আমারও ঠান্ডা লেগেছে মা। গলা ব্যাথা, প্রচুর গলা ব্যাথা করছিলো তাই গলায়…

থতমত ভাব নিয়ে সভ্য এটুকুই বলল। ফারজানা বেগম ছেলের কথা নিঃসন্দেহে সত্য ভেবে আফসোসের সাগরে ডুবে গেলেন। এহেন সময় পাশ থেকে রওনক বিষ্ময় নিয়ে বলে উঠলো

— ভাইয়া, গলার স্বরে তো কোনো সমস্যা নেই। একদম পরিষ্কার কন্ঠ আপনার।

সভ্য এবার অসহায় হয়ে গেলো। হুট করে তার দৃষ্টি গেলো নিজের রমের দরজায়। সাবিহা নিশ্চয়ই নিশ্চিতে ঘুমায় এখন। আর সভ্য নিশ্বাস আটকে পরিস্থিতি সামলায়।

— গলার ভেতরে সমস্যা নেই আমার। সমস্যা হলো আমার উপরে।

বিরক্ত আর দুঃখের মিশ্রণে বলা কন্ঠ সভ্যর। ফারজানা বেগম চলে গেছেন রান্না ঘরে। রওনক বুঝলো না সভ্যর কথা। সে সোফায় বসে হা হয়ে তাকিয়ে রইলো সভ্যর পানে। পুনরায় বলল

— আপনি পুরাই বলদ। ঠান্ডা লাগছে তাও আবার গোসল দিছেন সকালে।

চলবে…..

#রঙ_বেরঙের_খেলা
#আলিশা
#পর্ব_২০

সময়ের ঘুড়ি উড়ছে আকাশে। অবিরত উড়তে উড়তে চলে গেছে সে বহুদূর। সাবিহার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার নয়মাস পূর্ণ হলো সেদিন। এখন চলে নয় মাস দশদিন। ভয়ে, শঙ্কায় সর্বদা তটস্থ থাকে সাবিহার চেয়ে সভ্য বেশি। ভালোবাসা এই কয়েকমাসে সাবিহার প্রতি জন্মেছে কিনা সে জানে না। হয়তো বা জন্মেছে। খুব গভীরেই প্রবেশ করেছে ভালোবাসা নামক গাছের শেকড়। কিন্তু সভ্য যে আদোতেই বড্ড জেদি। সে পুরোদস্তুর মানতে নারাজ। মনের কোণো এক কোণে দ্বিধার প্রদীপ এখনো নিভুনিভু করে । পুরোপুরি মুছে যায়না সাবিহার অপমান গুলো। তবুও সে ভালোবাসে। বড্ড গোপনে। নিজের অজান্তে। এই যে সাবিহা অন্তঃসত্ত্বা, ঘুম নেই সভ্যর চোখে। সাবিহার যখন ছয় মাস চলল তখন সভ্য সপ্তাহে তিন চারবার রাজশাহী যেতো। ঘুমোর খোঁজ না রেখে শুধু রাতে সাবিহার পাশে বসে, বা সাবিহা বুকে রেখে রাত্রি যাপন করে আবারও শুটিংয়ের জন্য চলে এসেছে ঢাকায়। এভাবে চলতে চলতে যখন সাবিহার আটমাস পরলো তখন সভ্য পুরোপুরি বিরতি নিলো শুটিং হতে। মন বলেছিল তাকে খুব বেশি প্রয়োজন এই সময় সাবিহার। ততদিনে সাজিদ আহমেদ সভ্য হয়ে উঠেছে মিডিয়ায় মধ্য মণি। চারটা থিয়েটার আর দু’টো সিনেমা রিলিজ হয়ে গেছে। হিট হয়েছে ব্যাপক। দেশ ব্যাপি সুপরিচিত। ভক্তের সংখ্যা বেড়ে একাকার। গাড়ি বাড়ি অত্যধিক অধিক না হলেও ঢাকা, চট্টগ্রাম আর সিলেটে নিজস্ব কিছু ফ্লাট কেনা হয়ে গেছে। মোট চারটা ব্যায়বহুল গাড়ি তার হাতের পরশ পায়। যা একান্তই এখন তার। বনানীতে বেশ খানিকটা জায়গা কেনা হয়েছে। আগামী বছর বাড়ির কাজ শুধু করবে সভ্য। এসব নিয়ে সভ্য বেশ ভালো আছে। সুখে আছে সাবিহাও। নতুন অতিথিদের বরণ করে নিতে তারা পুরোদস্তুর প্রস্তুত। খুশি সকলে। সফল সভ্যও। সে চেয়েছিল সাবিহা বলবে, তার সভ্যকেই চাই। সে চেয়েছিল তার থু থুর দামও হবে লাখ টাকা। হয়েছে সবই। সে ছাড়া এখন বড় বড় ডিল প্রডিউসারদের প্রায় হয় না। ডিরেক্টররা মাসের পর মাস পরে থাকে তার পিছনে। একবার শুধু একটা মিটিংয়ে আশায়। তবে সভ্য এখন ছাড়তে চাইছে এসব। সাবিহার কথা মতোই। সাবিহা বলেছে,

” সভ্য ভাই, আমি একটা স্বাভাবিক জীবন চাই। একটা সুন্দর সংসার চাই। এই ক্ষণস্থায়ী কয়েক দিনের পৃথিবীতে ব্যাস্তহীন আপনাকে চাই। রাতে বাচ্চাদের নিয়ে আপনার পাশে ঘুমোতে চাই, সকালে ঘুম থেকে উঠে আপনার ঠোঁটের পরশ চাই। আমি ভুল ছিলাম। আমার গাড়ি-বাড়ি, টাকা-পয়সা এতো চাই না। আমি চাই বহু চিলতে সুখ আর প্রশান্তি। রবের দরবারে নির্দোষ থাকতে চাই। ফিরে আসেন আপনি মিডিয়া থেকে। আপনার এই ব্যাস্ততা আমার ভালো লাগে না। ”

সাবিহার একথা সভ্যর খারাপ লাগেনি। বরং বেশ করে আঁচড় কেটেছে হৃদয়ে। মিডিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় যায়। তবে সাবিহার সেদিনের শব্দ ‘ফকির আর রূপহীন’ এ দু’টো কথা বড্ড খোঁচায় সভ্যকে। তাই সভ্য সবশেষে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সে পেশায় ক্রিকেটার হয়ে থাকবে। টিভিসি করবে আর মডেলিং-ও করতে থাকবে। তবে মেয়েদের সাথে নাটক সিনেমায় আর যোগ হবে না। হওয়া উচিতও নয়। সাবিহা টিকটিক করে নিজেকে জাহির করে পাপ করেছে। সাভ্য যদিও বা জেদের বশে থিয়েটার, সিনেমা করে যায় তবুও তা পাপ। সাবিহার পথেই হাঁটা হবে তার।

.
শোকে শোকাহত সব। গগন বিদরিত কান্না এক কণ্যার। বিলাপ বিহীন ক্ষণে ক্ষণে চিৎকার করা কান্না। সভ্য হতভম্ব হয়ে দাড়িয়ে আছে। খুব বিশাল ন হলেও বেশ বড় ড্রয়িং রুমটা ভর্তি মানুষে মানুষে। বাংলাদেশের সকল অভিনেতার পদচারণ চলছে আজ মোবারক হোসেনের বাসায়। সভ্য তাদের ভিড়ে চোখে মুখে বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে আছে। সুষ্মিতা কাঁদছে। চোখ মুখ কান্নার দাপটে লালে লালময়। লম্বা চুল এলোমেলো। নয়ন শক্ত হাতে ধরে আছে টালমাটাল সুষ্মিতাকে। ক্যামেরা তাক করা রিপোর্টদের ঠেলে সরিয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তারা ব্যাকুল হয়ে সুষ্মিতার কান্নাকেই ধারণ করছে ক্যামেরায়। অনেকের সাথে কিছু নামি দমি অভিনেতারাও দিশা হারিয়ে ধমকে যাচ্ছে রিপোর্টারদের। তারা প্রচন্ড শোকাবহ। আজ হঠাৎ মোবারক হোসেনের মৃত্যুতে সকলে ব্যাথিত, বিস্মিত। বড় মিশুক লোক ছিলেন তিনি। আজ দুপুর দু’টোর সময় হঠাৎ তার মৃত্যু। হার্ট অ্যাটাকে। সভ্য খবর পেয়ে মাত্রই এসেছে। হতভম্ব সে। এনারই কথা মতো সভ্যর প্রথম সিনেমা করা হয়েছিল। সুষ্মিতা সেদিনের পর থেকে আর সভ্যর সম্মুখে ভুলেও পরতে চায় না। সভ্যর সাথে আর কোনো প্রকার মডেল বা টিভিসি, থিয়েটার কোনোটাই করা হয়নি সুষ্মিতার। এই কিছু দিন আগে। মাস দেড়েক হবে সুস্মিতার সাথে নয়নের বিয়ে হয়েছে। মোবারক হোসেনের কথামত। সুষ্মিতা বাবার বাধ্য মেয়ে এ বলা চলে না। বরং সে বাবার হাসিখুশি। বাবার ভালো থাকার কারণ। মোবারক হোসেন যখন সুষ্মিতার ভেঙে গুড়িয়ে যাওয়া দশা অবলোকন করলেন তখন তিনি নয়নের সাথে বিয়ে দিতে চাইলেন মেয়েকে। পাশে থাকুক কেউ। আগলে রাখুক ভেঙে যাওয়া মেয়েকে। আর নয়ন তো সুষ্মিতাকে ভালোই বাসে। এমন ভাবনা নিয়ে সুষ্মিতাকে স্নেহের সাথে আবদার নিয়ে মোবারক হোসেন বললে সুষ্মিতা না করলো না। তবে অবশ্যই তাকে প্রথমে মানাতে কষ্ট হয়েছে। অতঃপর জীবন মানে যে সময়ের গতি ধরে এগিয়ে যাওয়া এ কথা স্বরণে নিয়ে সুষ্মিতা বিয়ে করলো নয়নকে। ভালোবাসা হয়। এ পৃথিবীতে অসংখ্য মানুষ একপাক্ষিক ভালোবাসা বুকে যত্ন করে রাখে। পাওয়া হয়না প্রাণের চেয়েও প্রিয় মানুষটাকে। তারমানে এ নয় যে জীবন পথ থমকে দিতে হবে। সুষ্মিতা ভেবে নিয়েছিল নিজের জন্য বাবার শান্তি কেড়ে নেওয়া তার অন্যায়। আর ভালোবাসার মানুষকে তারাই হারিয়ে ফেলে, যাদের ধৈর্য বেশি। তাদেরই প্রকৃতি দেয় না, যারা না পাওয়ার ব্যাথায় সইতে পারবে। আবারও উঁচু করে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে।

— আমার জীবনেই হঠাৎ এমন ঝড় কেনে আসছে? কেন বারবার আমি সব হারিয়ে ফেলছি? এতো কষ্ট আমায় কেন দেওয়া হচ্ছে?

হঠাৎ সুষ্মিতার কান্নারত বিলাপ। সভ্য চমকে উঠলো। ধ্বক করে উঠলো তার বুক। সুষ্মিতার দৃষ্টিতে সভ্য। সম্মুখে খাটিয়ায় অচেতন সুষ্মিতার বাবা। সভ্যর বুকটা আচমকা ভারি হয়ে গেলো। তাকেই ইঙ্গিত করে পুনরায় সুষ্মিতা বলে উঠলো

— সবাই আমাকে ঠকায়। আমায় কেন শুধু শুধু কষ্ট পাই? বাবা তুমিও আমাকে কষ্ট দিয়ে চলে গেলা।

সভ্যকে দেখে বুকের দহন যোগ করে কান্না বেড়ে দ্বিগুণ সুষ্মিতার। সভ্য অস্বস্তিতে পরে গেলো। রইলো না সে আর সুষ্মিতার সম্মুখে। ঝটপট হাঁটা দিলো অন্যদিকে। সত্যিই সুষ্মিতার সাথে বড্ড নিষ্ঠুর কিছু হচ্ছে। সভ্য অনুভব করতে পেরেছিলো সুষ্মিতাকে। তাকে দেখে সুষ্মিতার অস্থিরতা আর হৃদপিণ্ডের গলা কাটা মুরগির মতো লাফালাফি সে যেন চোখের সামনে প্রত্যক্ষ দেখলো। ভালোবাসার অনুভূতিটা কি এতোই নাজে? এতোটাই যন্ত্রণাদায়ক? এর এক পিঠ যতটা সুখময়, অপর পিঠ ঠিক ততটায় যন্ত্রণাময়। আচ্ছা সাবিহা কে ঠিক এভাবেই সভ্যকে ভালোবাসে? ঠিক সুষ্মিতার মতো পাগল প্রায় হয়ে? নাকি এরচেয়েও বেশি। সভ্যর বুকটা হু হু করে উঠলো। দশ মাস আগেও সে ছিল একজনের চোখে মলিন রঙের। বেরঙ ছিল। আজ এখন সে রঙিন দু’টো রমনীর ভালোবাসার মানুষ। রঙ আর বেরঙের খেলা এটাই। অহরহ স্থানে এমন। কেউ রঙিন হয়ে প্রাণ উজাড় করে ভালোবেসে যাচ্ছে বেরঙের মানুষটাকে। কেউবা অবজ্ঞায় পায়ে ঢেলছে। অতঃপর সুযোগ বুঝে খেলা শেষ হচ্ছে এমন জায়গায় যেখানে আবার অবজ্ঞা করা মানুষটা ফিরে এসে ভালোবাসছে বেরঙের মানুষটাকে। কিন্তু ততদিনে সব এসপার ওসপার হয়ে যায়। ফিরে এসে পাওয়া হয় না অবজ্ঞা করা ব্যাক্তিকে। কিন্তু সাবিহা পেয়ে গেছে। তবে অবশ্যই তার ক্ষেত্রে এই রঙ বেরঙের খেলা শেষ হয়নি। চলছেই এখনো।

.
— শরীরের কন্ডিশন কেমন?

— ভালো।

— ওরা কি খুব বেশি জ্বালাচ্ছে?

— মাঝে মাঝে খুব জোরে কিক করে। মনে হয় দুজন ফুটবল খেলছে।

সভ্য মুচকি হাসলো সাবিহার কথায়। মোবারক হোসেনের জানাজা শেষ করে বাসায় এসে এখন রাত ন’টায় কথা হচ্ছে সাবিহার সাথে। ল্যাপটপের স্ক্রিনে দেখা যায় গোল হয়ে যাওয়া সাবিহাকে। চোখ মুখে অকৃত্রিম এক চিকচিক আভা। বড্ড মায়াবী দেখতে লাগে।

— শীতের মাঝেও পা খালি রেখেছো কেন? মোজা পরো।

ভ্রু কুঁচকে ধমকের সুরে বলল সভ্য। সাবিহা ওপাশে তড়িঘড়ি করে পা ঢেকে৷ নিলো। ল্যাপটপটা পুনরায় এমন করে বিছানায় স্থাপন করলো যেন পা দর্শন করতে না পারে সভ্য। অতঃপরকথা ঘুরাতে বলে উঠলো

— আর দশদিন পর ডাক্তার যেতে বলেছে। ভয় লাগছে আমার। এরমাঝে পেইন উঠবে।

— ভয় নেই। আমি তাড়াতাড়ি চলে আসবো। চারদিন পরই।

সাবিহা হুম বলে থেমে রইলো। সভ্য আরো কিছুক্ষণ কথা বলল। কনকনে শীত পরেছে। সাবিহাকে কড়া করে জানিয়ে দিলো নিয়ম মাফিক চলতে।

চলবে…..

#রঙ_বেরঙের_খেলা
#আলিশা
#বোনাস_পার্ট

কুয়াশার চাদরে মুড়িয়ে যাওয়া এক সকাল। চোখের দৃষ্টি সম্মুখের পথ দূর হতে সুদূর পর্যন্ত স্পষ্ট দেখতে পারে না। লতাপাতা, ডাল পালায় বিন্দু বিন্দু শিশির জমেছে। প্রত্যেকের গায়ে জরিয়ে গেছে শীতের পোষাক। পরিবেশ বলে দেয় গত দু’দিনের মতো আজও বুঝি সূর্য উঠবে না। টিভিতে আজ খেলা আছে বাংলাদেশ আর শ্রীলঙ্কার। ক্রিকেট খেলা। সভ্যও একজন খেলোয়ার হিসেবে আছে। বহু পরিশ্রমের পর আজ সেও একজন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দলের খেলোয়ার। সুষ্মিতার বাবা মারা যাওয়ার পর সভ্য সেদিন রাজশাহী থেকে ঢাকা গেলো। তারপরই আটকে গেছে খেলার দরুন। সাবিহার থেকে একটু আগেই সে কথা বলল। খেলার মাঠে নামবে বলে। সাবিহাও হাসি মুখে শুভ কামনা জানিয়ে বসে ছিল ড্রয়িং রুমে। দশ মিনিট ওভাবে বসে থাকার পর হুট করে চিনচিন ব্যাথা। কলিজা মোচড় দিয়ে ওঠা। দরদর করে ঘেমে চোখের পলকে সাবিহা সিক্ত হয়ে যাচ্ছে এই কঠিন শীতে। তলপেটে অনবরত যেন শুরু হলো বিরতিহীন আঘাত। অসহ্য। সাবিহা বুঝে গেলো ওদের বুঝি পৃথিবীতে আসার সময় হয়েছে। চিৎকার করে উঠলো সাবিহা। ‘আম্মহ’ বলে ডেকে উঠলো উচ্চস্বরে। মেয়ের চিৎকারে রাহেলা ইসলাম ছুটে চলে এলেন এলোমেলো পায়ে। সকাল দশটা বাজে। শীতের দরুন তিনি বিছানায় লেপের ভেতর পা রেখেছিলেন।

— সাবিহা কি হয়েছে?

ব্যাথায় খিঁচে চোখ বন্ধ করে ছিল সাবিহা। মায়ের প্রশ্নে হাশফাশ করা দশায় বলে উঠলো

— মনে হয় পেইন উঠেছে আম্মা। তাড়াতাড়ি আমাকে হসপিটালে নিয়ে চলো।

প্রায় কেঁদেই দিলো সাবিহা। রাহেলা ইসলাম দিশেহারা হয়ে পরলেন। বাসায় তিনি আর রওনক ছাড়া কেউ নেই। ফারজানা বেগম কলেজে গেছেন। তিনি ডেকে উঠলেন রওনক কে। এ বাসায় সভ্য একটা গাড়ি রেখে দিয়েছে। সাবিহার সুবিধার্থে। ড্রাইভার ঠিক করা আছে। শুধু ফোন করার অপেক্ষা। সাবিহার বাবার যদিও গাড়ি আছে। কিন্তু তিনি তা নিজের কাজেই ব্যাবহার করেন। ডিসি হিসেবে এখানে ওখানে যাতায়াত কালে তার লাগে সে গাড়ি।

সাবিহা হাত পা ছুড়ে একটা সময় অসহ্য ব্যাথায় আর্তনাদ করতে লাগলো। চোখে পানি এসেছে আপনা আপনি। রওনক ফোন করলো তড়িঘড়ি করে ড্রাইভারকে। প্রায় দশ মিনিট লাগলো তার আসতে। যদিও সভ্য নিকটস্থ কাউকেই ঠিক করে রেখেছিল। সাবিহাকে যখন গাড়িতে ওঠানো হয় তখন রওনক ফোন করে তার বাবাকে। জানায় বোনের পরিস্থিতির কথা। ফারজানা বেগমকে ফোন করার জন্য রওনক প্রস্তুত হতেই হঠাৎ সাবিহা নিষেধ করে বসলো। বলে দিলো যেন তাকে ফোন না করা হয়। বড় মা জানা মানেই সভ্য জানা। সভ্য জানলে আর খেলবে না। দূর হতে ছুটে আসবে সে। কিন্তু সাবিহা মোটেও চায় না এমনটা। সেবার সভ্য খেলতে পারেনি তার বাবার জন্য। আজ সাবিহার জন্যও এমন হবে? সাবিহা চায় না। সভ্যর ভেঙে গুড়িয়ে যাওয়া স্বপ্ন অনেক পরিশ্রমের পর জোরা লেগেছে। তা আবারও ভাঙবে? মোটেও না। সাবিহা ভাঙতে দেবে না।

.
গাড়িতে তুলে দেওয়া হলো সাবিহাকে। রওনক যাচ্ছিলো ড্রাইভারের কাছে। সামনে বসে যেতে হবে। ইতিমধ্যে রাহেলা ইসলাম গাড়িতে ওঠার আগে সাবিহা হঠাৎ পানি খাওয়ার জন্য ছটফট করে উঠলো। অগত্য রওনককে রেখে রাহেলা ইসলাম ছুটলেন পানি আনার জন্য। বাড়ির ভেতরে গেলেন তিনি। রওনক গাড়িতে ওঠার জন্য প্রস্তুত হলো। কিন্তু এমন সময় অদ্ভুত এক কান্ড। আচমকা গাড়ি স্টার্ট দিয়ে ধাঁ করে মোড় ঘুরিয়ে নিলো ড্রাইভার। কিশোর রওনক চমকে উঠলো। অজানা কারণে আত্মায় পরলো টান। সাবিহার বিষয়টা বুঝতে সেকেন্ড কয়েক সময় লাগলো। সগর্ভা নারী হয়ে সন্তান জন্ম দেওয়ার আগ মুহূর্তের মরণ ব্যাথার সাথে যুক্ত হলো সাবিহার ভয় আর বিষ্ময়। আত্মার ধড়ফড়। সাবিহা চিৎকার করে বলে উঠলো

— কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আপনি? আমার মা ভাইকে নিলেন না কে?

কথা বলে না লোকটা। সে আপন কর্মে রত হয়ে গাড়ির বেগ বাড়িয়ে ছুটছে। সাবিহা কান্নায় ভেঙে পরলো। শরীরে কাঁপন ধরলো অজানা আশঙ্কা আর ভয়ে। সে আবারও বলে উঠলো

— আমি কিন্তু চিৎকার করবো। সভ্যকে বলে দেবো।

সাবিহার হা হা কার আর থতমত কন্ঠের শাসিত বাণী যেন পৌছালোই না লোকটার কানে।

.
ওভাবেই সাবিহার কাতর কন্ঠ আর বয়াথার চিৎকার চলল প্রায় মিনিট বিশেষ। সময়ের প্রবাহে সাবিহার দশা বড্ড করুণ। গাড়ি এসে থামলো এক নির্জন স্থানে। বলা চলে এক গাছের বাগানে। শীতের কুয়াশার চাদর বড্ড পুরু। সাবিহাকে টেনে হিঁচড়ে নামানো হলো গাড়ি থেকে। নামাতেই সাবিহা বল শক্তি হারিয়ে লুটিয়ে পরলো মাটিতে। বেশ উঁচু মোটা সাড়ি সাড়ি গাছের ফাঁকে অস্থির হয়ে শুয়ে ছটফট করতে লাগলো সাবিহা। সাথে ‘ওমা গো, সন্ধ্যার বাবা’ বলে চিৎকার। একেকটা চিৎকারে যেন মাটি কেঁপে উঠছে ভয়ে। মায়া হচ্ছে প্রকৃতির। মায়ের প্রসব বেদনা যে সকলে বোঝে। সকলে কাঁদে এই নির্মম মুহূর্ত দেখে। কোনো এক উচু গাছে ছিল কিনা দু এক মা ঘুমু। সে যেন ভয়ে পাখা মেলে উড়াল দিলো দূরে। ড্রাইভার লোকটা পাশে দাড়িয়ে হন্যে হয়ে প্রতীক্ষা করতে লাগলো কারো আগমনের। প্রায় মিনিট পাঁচেক পর। একটু দূরে ঐ রাস্তার মোড়ে এসে থামলো এক প্রাইভেট কার। হন্তদন্ত হয়ে এগিয়ে এলো কেউ। সাবিহার হুঁশ হীন প্রায় বয়াথার দরুন। এরই মাঝে সেই একজন এসে দাড়িয়ে পরলো সাবিহার নিকট। দেখলো কিয়ৎক্ষণ মন ভরা রাগ, ক্রোধ নিয়ে। তারপরই নির্মম লাথি। আচমকা একটা শক্ত লাথি সাবিহার পেট বরাবর। প্রাণ যেন এবার বেড়িয়েই গেলো সাবিহার। মাটিতে গড়াগড়ি খাওয়া দেহটা নিয়ে আকাশ কাঁপিয়ে চিৎকার করে উঠলো সাবিহা। এমন সময় কানে বেজে উঠলো সেই নরপিশাচের কন্ঠ।

— সেদিন তোর সভ্য বাচিয়েছিল। আজ কে বাঁচাবে।

সাবিহা স্পষ্ট শুনলো। এটা আজিজের কন্ঠ। চোখ ঘুরিয়ে সাবিহা দেখতে চাইলো আজিজকে। কিন্তু সাধ্য হচ্ছে না। বরাবরই যেন উল্টেে যাচ্ছে চোখ।

.
সভ্য প্রথম দফাতেই মাঠে নামেনি। ব্যাট হাতে নিয়েও সে হঠাৎ ফিরে এসেছে। বুকের মাঝে আচমকা ছটফট ভাব। ফিরে এসেই সে ফোন করে যাচ্ছে ক্রমাগত সাবিহাকে। রিং হচ্ছে। কিন্তু ফোন রিসিভ করছে না কেউ। সভ্যর কপালে ভাজ পরে গেছে। এমনটা কখনো হয় না। কেউ না কেউ ফোন রিসিভ করেই। সভ্য দমে না গিয়ে ফোন করতেই লাগলো একাধারে। বুকের মাঝে বেয়ারা হৃদপিণ্ড ধড়ফড় করছে।

চলবে….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে