রঙ বদল পর্বঃ ০৩
লেখকঃ আবির খান
সায়েম দাঁড়িয়ে যায়। বাবাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে,
– বাবা সবার মতো আমারও কিছু বলার অধিকার আছে। তোমাদের আমার কথা শুনতেই হবে। আমার কথা না শুনে তোমরা আমার উপর কোন কিছু চাপিয়ে দিতে পারোনা।
সায়েমের বাবা রাগী ভাবে বলেন,
– আচ্ছা সবাই বস। দেখি ও কি বলে।
সায়েম আবার বলা শুরু করে,
– কি হয়েছে মেয়েটার কেউ নেই? কি হয়েছে মেয়েটা নতুন মুসলিম? জীবনে চলার পথে কি এগুলোই সব? এগুলো দিয়েই কি জীবন চলবে? একটা মেয়েই যদি ভালো না হয়, সে যদি আল্লাহকে ভয়ই না পায়, সে যদি ঠিক মতো আল্লাহর ইবাদত না করে, সে যদি অলস কিংবা বিলাসী হয়, সেই মেয়ের সাথে কীভাবে সংসার হবে? আমি যাকে ভালবাসি তার মধ্যে সব গুণ আছে। সে তার বাবা-মার ধর্ম ছেড়ে দিয়েছে আল্লাহকে ভালবেসে। এরকম মেয়েতো স্বপ্নেও পাওয়া যাবে না। আমি নিজে ওর সাথে এতোটা বছর কাজ করি অথচ আজ অবধি ওকে দেখিনি। এরকম মেয়ে কোথায় পাবে তোমরা? এই যে বড় ভাবি, তার বাবা-মাকে ছেড়ে আমাদের বাসায় থাকছেনা? সেকি প্রতিদিন তার বাবা-মাকে নিয়ে আছে নাকি সে এখন তোমাদেরকেই তার বাবা-মা ভাবে? একটা মেয়ে বিয়ের পর তার বাবা-মাকে এমনিই ছেড়ে দেয়। সেখানে আমার ফাতেমা তার শান্তির ধর্মের জন্য আগেই ছেড়ে দিয়েছে। তাতে কি এমন ভুল হয়েছে? ও কি কোন পাপ করেছে? আল্লাহর পথে চলা কি পাপ তোমাদের কাছে? উত্তর দেও তোমরা? তোমরা জানো আমাদের সবার চেয়ে ওর মূল্য বেশী।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা
◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।
আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share
সায়েমের কথা শুনে সবাই চুপ করে আছে। সায়েমের বাবাকে কিছুটা শান্ত দেখালেও ওর মা বলে উঠে,
~ দেখ সায়েম সমাজে আমাদের একটা মান সম্মান আছে। মেয়েটার পরিবারে কেউ নাই। কেউ আমাদের প্রশ্ন করলে কি করবো? তখন তো আমাদের নাক কাটা যাবে।
– আচ্ছা মা আজ যদি আমাদের কিছু হয়ে যায় এই সমাজ কি আমাদের মুখে খাবার তুলে দিবে? দিলেও কয়দিন দিবে বলো তো? বড় জোর ১০ দিন কিংবা ১ মাস? তারপর? তারা চলে যাবে। ভুলে যাবে আমাদের। মা সমাজের ভয়ে আমরা সবসময় আমাদের মনের ইচ্ছা গুলোকে দামিয়ে দেই। মাটি চাপা দেই। অথচ সমাজের সময়ই নাই আমাদের নিয়ে ভাবার৷ কিন্তু আমরা তাদের ভয়ে আমাদের ইচ্ছা গুলোকে শেষ করে চোখের পানি ফেলি।
– শরিফ, ওকে বলে দে, ও যে অনেক বড় হয়ে গিয়েছে তা আমি বুঝতে পেরেছি। কাল ওর পছন্দের মেয়েকে নিয়ে বাসায় আসতে বল। মেয়েটার সাথে ওর মা বোন কথা বলে দেখুক। এতোটুকু অধিকার তো আমাদেরও আছে তাই না? (বাবা)
সায়েম মুহূর্তেই অসম্ভব খুশী হয়ে যায়। ওর বিশ্বাসই হচ্ছে না। সায়েমের ভাবি এসে ওর পাশে বসে বলে,
~ কি বলছিনা সব ঠিক হবে? দেখলে তো। যাই হোক কাল নিয়ে আইসো ওকে।
– জ্বী ভাবি। আমি ওকে এখনই জানাচ্ছি।
~ আচ্ছা।
সায়েম উঠে ওর রুমে চলে আসে। এদিকে ওর বড় ভাই বলছে,
– বাবা কাজটা কি ঠিক হবে?
~ হ্যাঁ তুমি রাজি হলে কেন?(মা)
– কারণ সায়েম ভুল কিছু বলে নি। আর তোমাদের মনের জন্য তো কাল মেয়েকে আসতে বলছি। তোমরা ভালো করে দেখে শুনে নিও৷ (বাবা)
লিমা বলে উঠে,
~ মা আর ভাইয়া তোমরা একটু বেশী ভাবছো। সায়েম যথেষ্ট সচেতন। ও কখনো ভুল করবে না।
– ঠিক বলেছো লিমা। (ভাবি)
অন্যদিকে,
সায়েম রুমে এসে দ্রুত ফাতেমাকে কল দেয়। ফাতেমা তখনও কষ্টে বিভোর ছিল। সায়েমের এসময়ে কল দেখে ফাতেমা আশ্চর্য হয়ে যায়। ফাতেমা ভেবেই পাচ্ছে না সায়েম এখন কেন কল দিয়েছে। ফোন ধরবে কি ধরবে না ভাবতে ভাবতেই কল কেটে যায়। ফাতেমার খুব কষ্ট হচ্ছে। মুহূর্তেই আবার কল আসে। এবার ফাতেমা আর না পেরে রিসিভ করে। সায়েম বলে উঠে,
– তোমাকে কিচ্ছু বলতে হবে না। শুধু শুনবে। আমি তখন নিস্তব্ধ ছিলাম কেন জানো? কারণ আমার পরিবার। আমি একটু আগে তাদের সব জানিয়েছি। তারা বিরোধী করেছে। আমি বুঝিয়েছি। এখন আর কোন সমস্যা নেই। কাল তোমাকে আমার মা, বোন আর ভাবি দেখতে চেয়েছে। তুমি আসবে তো?
ফাতেমা নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না। ও আস্তে করে কান্নাসিক্ত কণ্ঠে বলে,
~ আপনি সত্যি বলছেন?
– ১০০ বার সত্যি বলছি। কাল অফিস শেষে তোমাকে আমাদের বাসায় নিয়ে আসবো। ফাতেমা তোমাকে আমার বউ করবোই ইনশাআল্লাহ।
ফাতেমার হাত থেকে ফোনটা পড়ে যায়। অঝোরে কাঁদছে মেয়েটা। এ যে সুখের কান্না। সায়েমের মতো এত্তো ভালো একটা মনের মানুষ ও পাবে কখনো কল্পনা করে নি। ও আর একা থাকবে না। ফাতেমা কান্না করে আল্লাহর কাছে কোটি কোটি শুকরিয়া আদায় করছে।
পরদিন অফিস শেষ করে সায়েম ফাতেমার জন্য অপেক্ষা করছে। একটু পরই ফাতেমা আসে। সায়েম ফাতেমাকে দেখে বলে,
– ভালবাসি তোমাকে। নিজের বউ করার জন্য সব করবো।
~ যদি মেনে না নেয়। আমি যদি অসুন্দরী হই? তাদের মন মতো না হলে? তখন?
– জীবন তো একটা। তোমাকে যখন মনের মাঝে নিয়েছি। তখন তুমি যেরকমই হও তুমি শুধু আমার। তোমাকে ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করবো না।
~ খুব বেশী ভালবাসেন তাইনা?
– খুব সম্মান করি। যে মেয়ে আল্লাহর জন্য সব ছাড়তে পারে তার সম্মান সবার আগে৷ আচ্ছা চলো যাওয়া যাক।
~ একটা প্রমিজ করবেন?
– কি বলো?
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা
◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।
আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share
~ তারা আমাকে মেনে না নিলে আপনি জোর করবেন না। কারণ বাবা-মা পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে কিছু করা ঠিক না। বলুন আমার কথাটা রাখবেন?
সায়েম ফাতেমার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। তারপর বলে,
– আমার বিশ্বাস তুমি আমার হবে। তাও প্রমিজ করলাম।
এরপর ওরা একসাথে রিকশায় করে সায়েমের বাসায় রওনা হয়। দুজন চুপচাপ বসে আছে। জীবনের প্রথম একসাথে রিকশায় উঠেছে ওরা। দুজনের এই নিস্তব্ধতাও অনেক কিছু বলে দিচ্ছে। সামনে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। ফাতেমা ভাবছে যদি আমাকে তারা পছন্দ না করে? সায়েম ভাবছে ফাতেমা শুধু ওর। কি হবে সামনে?
চলবে..?
সবার ভালো সাড়া চাই। কেমন লেগেছে জানাবেন কিন্তু। সাথে থাকবেন সবসময়।