গল্প: যোগ্যতা
লেখক: অতিথি পাখি
পর্ব: ০৫
৪ বছর পর,,,,,,,,,,,,
নীড়: আলবু(আব্বু) উত আমরা ইতকুল এ যাবে না ???।।
আমি: বাবা আমার স্কুল এ যাব ।।
নীড়: তলো তাহলে।।।
রাফসান আহমেদ নীড় । আমার ছেলের নাম । আমার আর নীলার নাম মিলিয়ে রেখেছি । আমি এখন আছি নিজের শহর থেকে দূরে। আমার ব্যাংকে
যথেষ্ট টাকা আছে যা আমি ৮বছর ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম করেছি । যা দিয়ে আমরা কয়েক প্রজন্ম বসে বসে খেতে পারবে। তার পরও আমি এখানে একটা উচ্চ বিদ্যালয় ও চাকরি নিয়েছি । আমাদের বাবা ছেলের জীবন নিয়ম মাফিক চলে । সকালে ঘুম থেকে উঠে রান্না করা তারপর নীড় কে নিয়ে স্কুলে যাওয়া স্কুল থেকে ফিরে এসে আবার রান্না। বাবা ছেলে মিলে খুনসুটি করতে করতে নীড় কে ঘুম পাড়িয়ে দেওয়া তারপর রাত জেগে ফ্রিল্যান্সিং করা । ছুটির দিনে ঘুরতে যাওয়া । এত কিছুর মাঝেও আমি নীলা কে ভুলতে পারিনি। তাকে যে খুব ভালোবাসি।
নীড় : আব্বু চলো ।
নীড় কে নিয়ে চলে আসলাম স্কুলে। এখানে আমি বাংলার ও আইসিটির শিক্ষক।
হাসি ম্যাম: রাফসান বাবু কেমন আছো??? (হাসি মেডাম হলো আমাদের স্কুলের শিক্ষিকা)
নীড়: ভালো আতি। আপনি তেমন আছেন??
মেডাম: ভালো।
উনার সাথে কিছু কথা বলে আমি সেখান থেকে চলে আসলাম।
ক্লাসের সময় নীড় আমার কাছে থাকে ।
টিফিনের সময়,,,,,,,,,
আমি নীড় কে খাইয়ে দিচ্ছি । সে অনেক দুষ্টুমি করতে করতে খেয়ে নিচ্ছে ।
হাসি ম্যাম: আপনি একজন পুরুষ হয়ে কেমন করে পারেন এগুলো। বাচ্চা স্কুল সবকিছু। আসলে একজন বাবাও যে অনেক দায়িত্ব পালন করে তা আপনাকে না দেখলে বুঝতেই পারতাম।
আমি: ম্যাম করতে হবে। নইলে কে করবে বলেন । আর সন্তানের জীবনের শুধু মায়ের নয়, বাবারও কিছুটা অবদান থাকে ।
হাসি ম্যাম: আপনি একটি বিয়ে করলেও তো পারেন । আপনার স্ত্রী মারা গেছেন।
আমি এখানে কাউকে আমার অতীত সম্পর্কে কিছু বলিনি । সবাই মনে করে আমার স্ত্রী মারা গেছে তাই আমি নীড়কে নিয়ে একা থাকি।
আমি: আমি একজন কে ভালোবেসে ছিলাম। আর আমার সন্তান এর উপর সৎ মায়ের ছায়া ফেলতে চাই না
আমার পক্ষে সকল দিক সামলানো অনেক কষ্ট তাও আমি চাই আমার সন্তান কে মানুষের মতো মানুষ করতে। জানিনা নীলা কেমন আছে। হয়তো সে নতুন কাউকে খুঁজে নিয়েছে নিজের জন্য।
যাইহোক আমাদের জীবন এভাবেই চলে যাচ্ছিল। আমি জানি হাসি ম্যাম আমাকে পছন্দ করেন। তবে আমি তাকে নিজের জীবনের সাথে জড়াতে চাই না।
ওদিকে,,,,,,,,,,,,,,,,
নীলা রায়হানের বাড়ি তে থাকে। সে বাড়ির বাইরে যায় না । সে সবসময় কান্না করে । সে অনেক শুকিয়ে গেছে। নীলা বাবা মা কেউ সাথে যোগাযোগ রাখে না । তাই সে শ্বশুর বাড়িতে থাকে।তার বিশ্বাস তার স্বামী সন্তান ফিরে আসবে । সবাই রায়হান কে খোঁজার চেষ্টা করেছে কিন্তু পায়নি। নীলা রায়হানের ভালোবাসা বুঝতে পারে কিন্তু তা অনেক দেরিতে।
আজকে স্কুল শেষে স্যার বললেন আগামী সপ্তাহে আমাদের স্কুলে সংগীত অনুষ্ঠান হবে । তার সব দায়িত্ব আমাকে আর হাসি ম্যাম কে দেওয়া হলো । সেখানে অনেক বড় বড় শিল্পী আসবে। আমার নিজের কথা মনে পড়ে গেল । আমি আমার সময়ের একজন ভালো গায়ক ছিলাম । কিন্তু নিয়তি,,,,,,,
যাইহোক আমরা অনুষ্ঠানের সকল আয়োজন শেষ করলাম। হাসি ম্যাম অনেক ভালো গান গাইতে পারে। আর সবাই জানে আমি ও ভালো গান গাইতে পারি । সবার অনুরোধে আমারা কালকে গান গাইবো । রাতে বাসায় গিয়ে নীড় কে নিয়ে ঘুমিয়ে গেলাম।
সকালে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
ঘুম থেকে উঠে রান্না করে খেয়ে নীড় কে নিয়ে চলে গেলাম স্কুলে। সারাদিন বিভিন্ন ব্যাস্ততার মধ্যে কাটলো।
বিকালে আমাদের অনুষ্ঠান শুরু হলো। আমি আর হাসি ম্যাম স্টেজে উঠে আমাদের গান গাইতে শুরু করলাম।
আমি: কোন কাননের ফুল গো তুমি
কোন আকাশের চাঁদ গো তুমি
কোন রাখালের বাঁশির ধুন
জ্বালাইলা আগুন বুকে জ্বালাইলা আগুন
হাসি ম্যাম: কোন ফাগুনের কোকিল তুমি
কোন নয়নের কাজল তুমি
ভ্রমর হয়ে কর,,,, যে গুন গুন
জ্বালাইলা আগুন বুকে জ্বালাইলা আগুন
বাকিটা আপনারা নিজ নিজ দায়িত্বে শুনে নিবেন।
আমরা ভালো ভাবে গান শেষ করলাম
সাথে সাথে আমার,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,