গল্প: যোগ্যতা
লেখক: অতিথি পাখি
পর্ব: ০৪
এর কিছু সময় পর একটি নার্স বেরিয়ে আসে এসে,,,,,,,,,,,,,,,,
আমার হাতে একটি বাচ্চা দিল । আর বলল,,,,
নার্স: এই নিন আপনার ছেলে হয়েছে।
আমি: ধন্যবাদ আপনাকে।
ছেলে দেখতে একদম তার মায়ের মতো হয়েছে। কিন্তু তার মা তো তাকে সন্তান হিসেবে মানে না।
নার্সের কাছে আমার ছেলে কে দিয়ে আসলাম আর বললাম তাকে যেন তার মায়ের কাছে না দেয় । সেখান থেকে চলে আসলাম বাড়ীতে। আমি নীলা কে কথা দিয়েছিলাম আমার সন্তান কে নিয়ে চলে যাব অনেক দূরে। সব কিছু গুছিয়ে নিলাম। নীলার জন্য একটি চিঠি লিখে আসলাম হাসপাতালে। নার্সের কাছে চিঠি দিয়ে চুপি চাপি ছেলে কে নিয়ে চলে আসলাম ।
ছেড়ে যাব আজকে এই শহর । ছেড়ে যাব আজকে আপন মানুষদের। তারা কোনো দোষ করেনি । কিন্তু কিছু করার নেই। এ যে আমার সন্তানের জীবনের মূল্য। উঠে পড়লাম বাসে । রওনা দিলাম এক অজানা ঠিকানায়। যেখানে থাকবো আমি আর আমার ছেলে।
হাসপাতালে,,,,,,,,,,,,
নীলার জ্ঞান ফেরার পর নিজেকে বিছানায় পায় । সে মনে মনে ভাবতে থাকে ,,, এতদিন তা হয়েছে সবকিছু ভুলে গিয়ে স্বামী সন্তান নিয়ে নতুন করে শুরু করবে। নীলা এতদিন বাচ্চাটাকে নিজের মাঝে রেখে তার প্রতি মায়া সৃষ্টি হয়েছে। এটাই মায়ের ভালোবাসা । আর সে যে রায়হান কে ভালোবেসে ফেলেছে।
হঠাৎ তার খেয়াল হলো তার পাশে কেউ নেই। সবাই কে ডাক দিলে সবাই আসে । শুধু দেখতে পায় না তার স্বামী সন্তান কে।
এমন সময় নার্স এসে তাকে রায়হানের সেই চিঠি দিয়ে যায়। নীলা কাঁপা কাঁপা হাতে চিঠি খুলে পড়তে থাকে,,,,,,,,,,,,,
প্রিয় নীলা,
জানি প্রিয় বলার অধিকার আমার নেই। তোমাকে কতটা ভালোবাসতাম তা বলে বোঝাতে পারবো না। জীবনে কখনো প্রেম করিনি। কারণ একটাই ছিল ভালোবাসবো নিজের স্ত্রী কে । কিন্তু তুমি আমার সেই স্বপ্ন শেষ করে দিয়েছ । তোমাকে অনেক ভালোবেসেছিলাম । কিন্তু যে দিন তুমি আমার সন্তান কে খারাপ বলেছ সেইদিন আমার ভালোবাসা শেষ হয়ে গেছে । তুমি সব সময় আমাকে অপমান করে বলতে আমি অশিক্ষিত। তোমার কলেজর তোমার বিভাগের ফাস্ট বয়ের নাম ছিল নীল খান । সেই নীল খান হলাম আমি। আর তুমি তো ছিলে খুব খারাপ ছাত্রী । এ ছাড়াও আমার আরো একটি পরিচয় আছে তা হল বাংলাদেশের বিখ্যাত গায়ক নীল খান হলাম আমি।( নীলা আমাকে কখনো কলেজে দেখেনি কারণ আমি শুধু পরীক্ষা দিতাম ব্যাবসা দেখাশোনা করার জন্য। শুধু সুমন আর প্রিয়া আমাকে চিনতো কারণ তারা আমার মতো বিখ্যাত গায়ক ছিল এবং আমরা তিনজন একেঅপরের প্রাণ। তবে আমরা নিজেদের পরিচয় গোপন রাখতাম ) এখন তুমি চিন্তা করে দেখ আমি তোমার যোগ্য নই নাকি তুমি আমার যোগ্য ন ও । আমি কখনো যোগ্যতা নিয়ে বড়াই করিনি আমি গরিব ঘরের সন্তান তাই ভালো কিছু হবার পরও নিজের মাটির সাথে মিশে থাকতে চেয়েছি। তোমার কাছে কখনও আমি আমার সেই পরিচয়গুলো দেয়নি কারণ আমি চেয়েছি তুমি আমাকে ভালোবাসো আমার যোগ্যতা কে নয়। কিন্তু তুমি তো শুধু শিক্ষিত অশিক্ষিতর পিছনে দৌড়ালে। চিঠির মাঝে তোমার জন্য একটি ১০ লক্ষ টাকার চেক আছে ধরে নাও এটা আমার সন্তানকে তোমার গর্ভে এতদিন রাখার মূল্য। যাই হোক চলে যাচ্ছি আমার সন্তানকে নিয়ে তোমার থেকে বহু দূরে। তার মুখ কখনো তোমায় দেখতে দেবো না। আর হ্যাঁ তোমাকে আমি ডিভোর্স দিয়ে গেলাম না তবে চিন্তা করো না কোনদিন সেই অধিকার নিয়ে সামনে আসব না। আমার সন্তানের সাথে করা এই অন্যের জন্য আমি তোমাকে কোনদিন ক্ষমা করব না । ভালো থেকো আর নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী কাউকে খুঁজে নিও।
ইতি
তোমার অযোগ্য স্বামী,,,
চিঠি পড়া শেষ হতে হতে চিৎকার দিয়ে কান্না করতে থাকে। সে কান্না করতে করতে বলতে থাকে আমার স্বামী সন্তানকে আমার কাছে ফিরিয়ে দাও দয়া করে কেউ ফিরিয়ে দাও।
নীলার মা : তুই যা করেছিস এরপ রেও কি তোর মনে হয় তোর কাছে ফিরে আসবে।
নীলার বাবা :ছেলেটা কত ভালো ছিল। সে আমার সম্মান বাঁচিয়েছিল । আর তুই কিনা তার সাথে এমনটা করতে পারলি । তোকে আমার মেয়ে বলতে ঘৃণা হচ্ছে । আজ থেকে আমার কোন মেয়ে নেই ।
এই কথা বলে তারা সেখান থেকে চলে যায়। নীলা কে তার শ্বশুর শাশুড়ি খুব ভালোবাসতো তাই তারা তাকে নিজেদের বাসায় নিয়ে আসে।
৪ বছর পর,,,,,,,,,,,,,
চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,
**আচ্ছা কেউ কি বলতে পারবেন গল্পে ৪ বছর পরই কেন দেওয়া হলো?? যদি জানেন তাহলে কমেন্টে লিখুন।।।।
ধন্যবাদ,,,,,,,,,