মেয়েটা অসত্বী পর্ব/ ২
লেখক/ ছোট ছেলে
********
আমি/ কি যতবড় মুখ নয় ততবড় কথা
রিমির চুলের মুঠি ধরে একটা চড় মেরে বিছানা ফেলে দিয়ে বললাম
অসত্বী নষ্টা মেয়ে আর কখনও আমার সামনে আসবিনা
তোকে আমার একদম সহ্য হয়না
রিমি একটা বালিশ জড়িয়ে কান্না করছে
আমি ঘর থেকে বেরিয়ে গেলাম
পুরো শরীর ঘেমে গেছে
বন্ধুরা দেখে জানতে চাইলো
রৌদ্র/ কিরে শালা বিয়ে করে বউ পেয়ে আমাদের তো ভুলে গেলি
অন্য আরেকটা বলে উঠলো
কিরে দোস্ত…. কিরে দোস্ত বাঁসর রাত কেমন কাটলো
যা যা বলেছি তার কোন প্রমাণ পেতেছিস
আমি একটু হতাশ হয়ে বললাম না
বন্ধুরা সবাই কেমন জানি নিস্তব্ধ হয়ে গেলো
হঠাৎ একজন বলে উঠলো
বিয়ে যখন করে ফেললি তখন আর কি করা সংসার তো করতে হবে
হয়তো আমরা যা ভাবছি তা ভুলও হতে পারে
যা বাসায় ফিরে যা
রোদ্র/ হ্যাঁ ও ঠিক-ই বলছে
যা বাসায় ফিরে যা দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে একদিন
অন্য আরেকজন বন্ধু বলে উঠলো
তোরা যা বুঝিসনা তা নিয়ে কথা বলবিনা
এমন বউ নিয়ে সংসার না করলে কি হয়
উফফফফ….তোরা থামতো আমাকে তো পাগল করে দিলি
দ্যাতততত…. ওদের ওখান থেকে চলে আসলাম
বাসায় যেতেও মন চায়না
কার কাছে যাবো আর কিসের টানে যাবো
তারপরও বাসায় চললাম
বাসায় গিয়ে দেখি রিমি নেই
হয়তো চলে গেছে যাক ভালোই হলো গেলেই তো বাঁচি আমি এমন মেয়ের সাথে ঘর করার চাইতে একা থাকাই অনেক ভালো
তারপরও সব ঘর ভালো করে আবার দেখতে লাগলাম
না কোথাও পেলামনা
মনে হয় সত্যি সত্যি চলে গেছে
উফফফফ…. একবার ছাদে গিয়ে দেখতে হয়
ছাদে গিয়ে দেখি রিমি কার সাথে কথা বলছে
কিন্তু কে সে ছেলে নাকি মেয়ে
আচ্ছা যদি ছেলে হয় তবে এটা সেই ছেলে নয়তো
যার সাথে রিমি…….
না কি বলে একটু শুনে দেখি
রিমি/ প্লিজ আমি আর পারছিনা আমাকে এখান থেকে মুক্ত করে নিয়ে যাও
এখানে আমার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে একরাতে
কি ব্যপার রিমি এসব কাকে বলছে আর কাছে যেতে চাইছে
সে মানুষটা কে আমাকে খুঁজে বের করতে হবে
একটু পরে দেখি ফিসফিস করে কি বলে রিমি ফোনটা রেখে দিলো
আমিও তাড়াহুড়ো করে নিচে চলে আসলাম এসে বসে রইলাম
নুপুরের শব্দ পেয়ে বুঝতে পারছি রিমিও নিচে আসতেছে
নিচে নামতে
আমি/ নাগরটা কে
রিমি/ মানে
আমি/ যার সাথে এতক্ষণ পিরিতের কথা বলছো সে মানুষটার কথা বলতেছি
রিমি/ কই নাতো আমি কারও সাথে কথা বলিনি
আমি রিমির চুল ধরে রাগী গলায় বলতে লাগলাম
আমি/ এই তোমার কি মনে হয় আমি অন্ধ কানে শুনতে পাইনা
বল এতক্ষণ কার সাথে কথা বলতেছিস
আর কাছে যেতে চাইছিস
রিমি/ আহহহহহহ….ছাড়ুন ছাড়ুন বলছি
আমি আমার ভাইয়ের সাথে কথা বলছি
আমি/ ভাই নাকি পিরিতের নাগর সেটা আমি তোর সব কথা শুনে বুঝেছি
তুই মুক্তি চেয়েছিস আমার থেকে তাইনা যা চলে যা
তোকে আমি মুক্তি দিয়ে দিলাম বেরিয়ে যাবার দরজা খোলায় আছে তবে ঢুকবার দরজা বন্ধ হয়ে যাবে চিরতরে
একথা বলতে
রিমি/ হ্যাঁ তাই করবো চলে যাবো এই সংসার ছেড়ে চাইনা আমার এমন স্বামী চাইনা আমার এমন ঘর
তুমি মানুষ নয় তুমি পশু
রিমির মুখে যা আসে তাই বলে চিৎকার করতে লাগলো
করুক তাতে কি…। কে শুনবে তার কথা
চুপ করে বসে রইলাম
রিমি দেখি ব্যাগ গুঁছিয়ে নিচ্ছে
মনে হয় সত্যি সত্যি চলে যাবে যাক ও গেলে আমি বাঁচি
চোখের জল মুছতে মুছতে মেয়েটা সব গুঁছিয়ে নিলো
ততক্ষণে আমি ছাদে গিয়ে বসে রইলাম
ছাদে বসে দেখতে লাগলাম রিমি যাচ্ছে নাকি
অনেক্ষণ ধরে বসে রইলাম না ঘর থেকেতো দেখি কেউ বের হয়না
ঘটনা কি রিমি কি যাবেনা
বুঝেছি কষ্টের বোঝাটা আরও বাড়াতে হবে
একটু পরে আবার নিচে নেমে আসলাম ফুফিয়ে ফুফিয়ে দেখি কাঁদছে রিমি
আমি কোনকিছু না বলে আবার বেরিয়ে পড়লাম
মন বসেনা কোন খানে
না বাসায় না দোকানে
বন্ধুদের সাথেও আড্ডা দিতে মন চায়না
ওরা সবসময় আমার দিকে আঙ্গুল ইশারা করে এটাই বোঝাতে চায়
তোর বউ অসত্বী
নিজের বউয়ের সম্পর্কে এমন কথা শুনতে কার কাছেই বা ভালো লাগে
টং দোকানে গিয়ে একটা চা খেলাম আর একটার পর একটা সিগারেট টানতে লাগলাম
দোকানদার/ কি ভাই একটার পর জ্বালালে তো তুমি নিজেই জ্বলে যাবে
আমি কি করে এই দোকানদারকে বোঝাবো
তুমিতো শুধু আমার মুখের ভিতর সিগারেটের আগুনটা দেখলে
মনের ভিতর যে দাঁউ দাঁউ করে আগুন জ্বলছে সেটা নয়
দোকানদার/ কি ভাই কি ভাবো
যাও অনেক বেলা হয়েছে খেতে যাও
বউ অপেক্ষা করছে খাবার নিয়ে
আমি মনে মনে বলি
খাবার তো পরের কথা
আজ তার সাথে যা করেছি তাতে এক গ্লাস পানি পাই কিনা সন্দেহ আছে
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি সত্যি অনেক বেলা হয়েছে
যাই বাসায় ফিরে যাই
চলবে….???